প্রেমের_প্রদীপ_জ্বলে [১৪] প্রভা আফরিন

0
551

প্রেমের_প্রদীপ_জ্বলে [১৪]
প্রভা আফরিন

মেহযাবীনের বাড়ি ফেরা হলো না। বাড়ির ওপর দিয়ে সারাদিন যা মানসিক দুশ্চিন্তা ও আতঙ্ক গেল এরপর সকলেই পরিশ্রান্ত। জাওয়াদের তাগিদ না পেয়ে যাবীনও চুপ হয়ে গেল। কিন্তু শিলার আগমনের সংবাদে কিছু মানুষের মাঝে বেশ চনমনে আবহ খেলে গেল। আফিয়া ও তার ছোটো পুত্র অনন্ত একটু বেশিই খুশি। আফিয়া ইতিমধ্যে রান্নাঘরে খাবারের তোড়জোড় শুরু করেছেন। রাতের খাবার না খাইয়ে ছাড়বেনই না। কিন্তু অনন্তের অতি গদগদ ভাব দেখে যাবীন সন্দিগ্ধ স্বরে বলল,
“সম্ভাব্য ভাবি আসবে। তাতে এত খুশির কী আছে?”

অনন্ত সে কথাটাকে বুড়ো আঙুল প্রদর্শন করে বলল, “ভাই বিয়ে করলে ভাবি। তার আগে অবধি আমার ক্রাশ।”

“খেলি তো খেলি একদম সিনিয়রের ওপর!”

“সাডেনলি ইট জাস্ট হেপেন্ড। জীবনে খেয়েছিস? বুঝবি কী করে?”

“আমি ওসব পচা জিনিস খাই না।” যাবীন ঠোঁট বেঁকায়।

“ওহ আসছে আমার শিল্পপতির ব্র‍্যান্ডেড কন্যা। গরীবের সস্তা ক্রাশ তিনি খান না!” অনন্ত যাবীনের মতো করেই ঠোঁট বাঁকা করতে চেষ্টা করে।

যাবীন, শাওন ও সে বসে আছে দোতলার খোলা বারান্দার সামনে। তাম্রাভ সন্ধ্যা তখন সদ্যই বিদায়ের পথ ধরেছে। ক্ষয়াটে আভার উপস্থিতি পরিবেশকে ম্লান করে তুলেছে। যাবীন ছেলেটির ঠোঁট বাঁকানোর অপচেষ্টা দেখে মৃদু স্বরে হেসে ফেলল। বলল,

“আবেগটা কিন্তু প্রতিটা মানুষের জন্যই ব্র‍্যান্ডেড হওয়া উচিত, অনন্ত। সেটা এমনই আকাঙ্ক্ষিত বস্তু হবে যেটা পেলে অপরজন বহুমূল্য কিছু পেয়েছে ভেবে আগলে রাখবে। আমরা যেমন সোনা-দানা, হীরা পথে অবহেলায় ফেলে দেই না, বরং সিন্দুকে তুলে রাখি। আমার আবেগটাও যেন কেউ ফেলে না দিয়ে মনের সিন্দুকে তুলে রাখে আমি তাই চাইব।”

অনন্ত ও শাওন একযোগে হাততালি দিয়ে ওঠে। অনন্ত নাটকীয় ভঙ্গিতে বলে, “আরেকটু জ্ঞান দিয়ে এইসব অশিক্ষিত, মূর্খদের একটু শিক্ষিত করুন শিল্পপতির কন্যা।”

যাবীন ওর বাহুতে থাপ্পড় দিয়ে বলল, “তোর বোনও কিন্তু আমার পরিবারের সদস্য। মানে শিল্পপতির পুত্রবধূ।”

অনন্ত শাওনের দিকে অবাক চোখে চেয়ে বলল, “তারমানে তোরও স্ট্যান্ডার্ড উপরে উঠে গেছে!”

শাওন ভাব নিয়ে হাত নেড়ে বলল, “ইউ ফকির! লেভেলে এসে কথা বলিস। আমি যার তার সঙ্গে কথা খরচ করি না।”

কথা শেষ করে ওরা তিনজন একযোগে হেসে ওঠে। শাওন বলে,
“ফাইজাকে মিস করছি। বিয়ের পর আমাদের চারজনের একসঙ্গে আর আড্ডা দেওয়া হয়নি।”

যাবীন পিঞ্চ করে বলল, “তোমার সময় হয়নি। আমরা ফ্রি-ই ছিলাম।”

শাওন প্রত্যুত্তর করল না। ওদের মাঝে এই মেয়েটিই একটু বেশি লাজুক। রান্নাঘর থেকে খাবারের সুবাস ভেসে আসায় অনন্তের আবারো শিলার কথা মনে পড়ল। বলল,
“আমার একটু পরিপাটি হওয়ার উচিত, রাইট? শিলা এসে একটা কামলা পুরুষ দেখবে এটা আমার প্রেস্টিজে লাগবে।”

“গুরুজনদের সম্মান দিতে শেখ। লাগামহীন আবেগ নয়।”

যাবীনের কথার বিপরীতে অনন্ত বলল,
“তোর আবেগ হীরে, পান্না। আমার আবেগ ইমিটেশন। তাই সকল বিভেদ নির্বিশেষে সবাইকে বিলি করি। একটা ক্রাশ খেয়েই দেখ না। আমার ওপরই খা।”

“সব জিনিস সবার জন্য না। তেমনই সব মানুষও না। যে আমার না তার প্রতি কেন নিজের মুগ্ধতাখানি খরচ করব শুনি! অস্বীকার করব না আমার মনও একসময় উড়ু উড়ু ছিল। টিনেজ টাইমে ভীষণ বোকা ছিলাম। বন্ধুদের প্রেম ভালোবাসা দেখে ভাবতাম, না জানি কত মধুময় জীবন। ওরাও বিষয়টা এমনই সুন্দর করে উপস্থাপন করত যে মনের মাঝে দুষ্টু সত্ত্বা নড়েচড়ে বসত। তাছাড়া আমি খরুচে ছিলাম। তাই অনেক বন্ধুবান্ধব জুটে গেছিল। কে ভালো কে খারাপ বিচার করার চেয়ে আমার অনেক বন্ধু এটা ভাবতেই বেশি আনন্দ পেতাম। বুঝতাম না ওরা নিজের সুবিধার্থেই আমার চারপাশে ঘোরে। প্ররোচনার ফাঁদে পড়ে মনকে আশকারা দিতাম। ভাগ্যিস বিগড়ে যাইনি।”

“ইউ শ্যুড থ্যাংকফুল টু মি।”

ফুরফুরে আড্ডায় মিলিটারি মহাশয়ের রুক্ষ উপস্থিতি ঘটল। যাবীন পিছু ফিরে প্রশ্নোক্ত চোখে চাইতেই কথাটা সম্পূর্ণ করল নিশান্ত, “বিগড়ে যাওয়ার আগে সোজা পথ দেখিয়ে দিয়েছিলাম।”

বিরক্ত হলে সকলে যেমন কপাল কুচকায়, যাবীন কুচকায় নাক। এই সময় ওর মুখাবয়বে একটা অদ্ভুত সৌন্দর্য আসে। যেন কেউ শৈল্পিক ভঙ্গিতে নিটোল ত্বকে ভাজ ফুটিয়ে তুলেছে। যাবীন তার বিগড়ে না যাওয়া নিয়ে যেমন সন্তুষ্ট তেমন এই খোঁচামারা ব্যক্তির ওপর অতিশয় বিরক্ত। সে কখনোই নিজের এই শুভবুদ্ধির সূতিকাগার এই ব্যক্তিকে ভাবতে নারাজ। চড়ের জ্বালা সে আজন্ম ভুলবে না। রেস্টুরেন্ট ভর্তি লোকের সামনে অপমানিত হবার ক্ষোভ ওর কখনো যাবে না। একটি সাদা কাগজকে দলামোচড়া করে আবার সোজা করলে যেমন ভাজের দাগ যায় না, তেমনই যাবীনের অবুঝ কিশোরী কোমল মনকে তখন দলামোচড়া করে সোজা পথে আনলেও ভাজে ভাজে ক্ষোভের উপস্থিতি রয়েই গেছে। অন্যসময় হলে যাবীন এড়িয়ে বা পালিয়ে যেতে চাইতো। কিন্তু এই লোকটার সামনে ক্রমাগত নিচ হতে হতে এবার যেন ক্লান্তিতেই সরল স্বীকারোক্তি ফুটল ঠোঁটে,
“অবুঝ ছিলাম, খারাপ না।”

নিশান্ত স্থির চোখে চেয়ে থাকে ওর দিকে। বলে, “খারাপ কেউ থাকে না। ভুল পথে গেলে আপনাতেই হয়ে ওঠে।”

কলিংবেল বাজল তখনই। অনন্ত লাফিয়ে উঠে বলল,
“শিলা না মানে শিলা আপু এসে গেছে।”
ভাইয়ের সামনে মেকি সম্মান দেখাল সে। শাওন ঠোঁট টিপে হাসে। নিশান্ত কিছু না বলে নিচে নেমে গেল।
_____________

শিলা নামের মেয়েটিকে আগে দেখেনি যাবীন। ফলে প্রথম দেখাতে একটু অবাকই হলো। বিমানবাহিনীর সুদক্ষ এক কর্মী শিলা। যেমন লম্বা তেমনই তার গড়ন। নারীসুলভ কোমলতা নেই অঙ্গে। আছে রুক্ষতা, দৃষ্টি তীক্ষ্ণ, দৃঢ় চলাফেরা। সব মিলিয়ে এই নারীটির মাঝে একটি অন্যরকম আকর্ষণ আছে যা উপেক্ষা করা যায় না। শিলা বাড়িতে ঢুকে সর্বপ্রথম নিশান্তের সঙ্গে করমর্দন করল। পাঁচ ফিট সাত ইঞ্চির মেয়েটি নিশান্তের চেয়ে এক ইঞ্চি খাটো হয়েও জুতোর উচ্চতায় আজ একদম সমানে সমানে দাঁড়িয়ে আছে। ঠোঁটে ঝলমলে হাসি।

“হ্যালো মি. ক্যাপ্টেন! আবার দেখা হয়ে গেল।”

“মাই প্লেজার, ম্যাম।”

“রিয়েলি প্লেজার অর ফর্মালিটি, ক্যাপ্টেন?” চালাকি করে কথার জালে আটকাতে চাইল তুখোড় ক্যাপ্টেনকে। এই পুরুষটির প্রতি গতকালই প্রেম নিবেদন করেছে সে। কিন্তু সম্মতি পায়নি। কোনোরকম ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা যেন না করে তাই আজ শাওনের বিয়ের বাহানায় একেবারে বাড়িতে চলে আসা। নিশান্তও কম যায় না। স্মিত হেসে প্রত্যুত্তর করল,
“আমাদের সাক্ষাৎ সর্বদা আনন্দের। যদি না তিক্ততা আসে।”

“আমার তরফ থেকে তা হবে না, ক্যাপ্টেন। মিষ্টত্বের নিমন্ত্রণ আমিই আগে দিয়েছি যে।” ক্ষুরধার হাসিটা শিলার ঠোঁট দখল করে নেয়। দুজন বুদ্ধিমান ব্যক্তির চৌকস বাক্যবিনিময়ের মাঝেই হলরুম ভরে গেল বাড়ির লোকেদের পদচারণায়। শিলা এগিয়ে গিয়ে আফিয়া বেগমকে জড়িয়ে ধরে। আফিয়া শিলাকে পছন্দ করেন অনেক আগে থেকেই। বড়ো ছেলের জন্য মেয়েটিকে উনার পছন্দ। পড়াশোনা, ক্যারিয়ার সব দিক থেকেই নিশান্তের উপযোগী সে। শিলারও এতে সম্মতি আছে। এবার শুধু ছেলের সুমতি হবার অপেক্ষা।

এরই মাঝে চারিদিকে আলোড়ন তোলা সুবাস গায়ে মেখে নেমে এলো অনন্ত। সটান শিলার সামনে দাঁড়িয়ে গিয়ে হাত বাড়িয়ে বলল,
“হেই মিস শিলা। কতদিন পর আমাদের দেখা।”

শিলা হাত বাড়াল। দুষ্টুমি করে বেশ শক্ত হাতেই করমর্দন করল ছেলেটির সঙ্গে৷ অনন্ত ব্যথা পেয়ে হাত ঝাড়া দিয়ে বলল,
“শিলাপাথর, আমার হাতটাই ভেঙে দিলে।”

আফিয়া ধমক দিয়ে বললেন, “এসব কী নাম! আপু ডাকবি।”

“বয়েই গেছে!” অনন্ত বিড়বিড় করে সরে যায়। যাবীনের নিকটে গিয়ে দাঁড়াতেই ও বলল,
“পুরো পারফিউমের বোতল ঢেলেছিস নাকি?”

“তাতেও কারো এটেনশন জুটল না।”

শিলা যাবীনকে চেনে না। ওর পরিচয় জিজ্ঞেস করতেই অনন্ত বলল,
“ওকে চেননি? তোমার পদাতিক পেইন্টিংটা তো ওরই হাতের করা।”

“আই সী!” শিলার ঠোঁটে হাসি থাকলেও কপালে সুক্ষ্ম ভাজ ফোটে। মনোযোগ দিয়ে দেখে পাতলা গড়নের অতিশয় রূপবতী তরুণীকে। কথার পিঠে সংযোগ করে, “তাই বুঝি ছবিটা অনেকাংশে নিশান্তের বডি স্ট্রাকচারের সঙ্গে মিলে গেছে!”

যাবীন থতমত খেয়ে গেল। প্রতিবাদের চেষ্টা করে বলল, “এটা নিছকই কাকতালীয় ব্যাপার। আমিও জানতাম না কার জন্য আর কাকে ভেবে আঁকছি।”

শিলা প্রশ্ন করল,
“তুমি কী এ বাড়ির আত্মীয়?”

“আমি মেহযাবীন শেখ মিহা। সম্পর্কে শাওনের ননদ হই।”

সকলের সঙ্গে আলাপ শেষ করে শিলা গিয়ে নিশান্তের পাশে বসে। দূর থেকে ওদের দুজনকে জরীপ করে অনন্ত বলল,
“আমার মনে হয় না এদের কিছু হবে।”

“কেন হবে না?” কৌতুহলে প্রশ্ন করে যাবীন।

“কারণ ওরা দুজনই লোহা। লোহা লোহাকে আকর্ষণ করবে না। খালি ঠোকাঠুকি করবে। আমার হার্ডনাট ভাইকে একটা চুম্বকই ভালোবাসায় আটকাতে পারবে। যেমন আমি চুম্বক হয়ে শিলার মতো লোহার প্রতি আকর্ষিত হই।”
________________

চাঁদনি বেগম অনেকটা সময় বাদে ছোটো নাতনির খোঁজ করলেন। সবাই আছে কিন্তু শোভার কোনো সাড়াশব্দ নেই। খোঁজ নিয়ে দেখলেন সেই মেয়ে ঘরেই নেই। কোন ফাঁকে বেরিয়ে গেছে কেউ জানে না। তিনি বিরক্ত হয়ে ছোটো বউমাকে বললেন,
“মেয়েকে চোখে চোখে রাখতে পারো না? পা-টা এখনো পুরোপুরি সাড়েনি। ভর সন্ধ্যায় বেরিয়ে গেছে বাড়ি থেকে। তোমার মতো টইটই করে ঘুরে বেড়ানোর স্বভাব পেয়েছে।”

শিরীম বেগম তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বললেন, “আমি টইটই করে ঘুরে বেড়াই? বেড়াতে দিয়েছেন আপনি? বিয়ের পর শাওনের বাবার সঙ্গে সিনেমা দেখতে যেতেও পারতাম না আপনার জন্য।”

“কোনো কথা বললে পুরোটা বলবে। পেটে সাত মাসের বাচ্চা নিয়ে কোন মা সিনেমাহলে যায়, হ্যাঁ? তোমাকে ড্যাংড্যাং করে বেড়াতে দিয়ে আমি আমার নাতনির জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে দিতাম?”

“দেখলেন, জন্মের আগের থেকে আপনি ওদের ওপর খবরদারি শুরু করেছেন। তাহলে এখন আমাকে দোষ দেন কেন? আমি তো কখনো আপনার দোষ দিয়ে বলিনি মেয়ে আপনার মতো দজ্জাল হয়েছে।”

চাঁদনি বেগম হা হয়ে গেলেন, “যত বড়ো মুখ নয় তত বড়ো কথা! আমি দজ্জাল?”

দ্বীপশিখায় যখন শাশুড়ি-বউতে ধুন্ধুমার লেগেছে ঠিক তখনই হোয়াইট হাউজের সামনে দেখা যায় তাদের ঝগড়ার একমাত্র কারণটিকে। শোভা বিড়াল পায়ে হোয়াইট হাউজের গেইটের ভেতর উঁকিঝুঁকি দেয়। চোরের মতো বাড়ির ভেতর ঢুকে সদর দরজার সামনেই পেয়ে যায় টফিকে। শোভা গদগদ হয়ে ওর কাছে গিয়ে বলে,
“ওহে আমার কুকুররূপী পায়রা, তোকে খুঁজেই আমি দিশেহারা। আজকে আমার তুই-ই ভরসা, তোর কোনোদিন না হোক আমাশা। ছি! কি বাজে ছন্দ মেলালাম। যাইহোক তুই রাগ করিস না চারপেয়ে পাখি। পত্রখানি পৌঁছে দে কানা ডাক্তারের কাছে। তোকে গোপনে চিকেন ফ্রাই কিনে খাওয়াব। প্রমিস।”

শোভা টফির গলার বেল্টের সঙ্গে একটা চিরকুট আটকে কপালে একটা চুমু দিয়ে দিল। টফি সেটা দিলশানের বদলে নিয়ে গেল সুলেখার কাছে। সুলেখা চিরকুট খুলে দেখলেন ভেতরে লেখা,

“পৃথিবীর সবচেয়ে তেতো মতিচুর হলেও আমি তোমাকেই চাই।”

তিনি হতবুদ্ধি হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। এরপরই ঠোঁটে ফুটল লাজুক হাসি। দিলশানের বাবা আদর করে মাঝে মাঝেই উনাকে মতিচুর বলে ডাকে।

চলবে…
(এটা এক্সপেরিমেন্টাল গল্পের কাতারে থাকুক। বেশি প্রেশার নেব না আপাতত। হয়তোবা গতানুগতিক গল্প হবে, অথবা কিঞ্চিৎ ফ্যান্টাসি টাইপ। স্রোতের মাঝে ছেড়ে দিলাম, ভাবনা যেদিকে যাবে আমি সেদিকেই নেব।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here