আমার_নিঠুর_মনোহর #লেখিনীতে_জেনিফা_চৌধুরী #পর্ব_একুশ

0
202

#আমার_নিঠুর_মনোহর
#লেখিনীতে_জেনিফা_চৌধুরী
#পর্ব_একুশ

“আমার স্বামী আমাকে ভালোবাসে না____এর থেকে বিষাক্ত বাক্য কোনো মেয়ের কাছে হতে পারে, মাস্টার মশাই? আমাকে এখনো ভালোবেসে উঠতে পারলেন না তাইনা, মাস্টার মশাই?”
তামজিদ নিশ্চুপ। শুধু অসহায় চোখে একবার তারিনের দিকে তাকালো। তারপর গাড়ি স্টার্ট দিলো। তারিনের চোখে কোনে জল জমেছে। মনের কোনে জমেছে অভিমান। সারা রাস্তা তারিন দৃষ্টি বাইরের দিকে দিয়ে রেখেছিলো। তামজিদ অবশ্য বার কয়েক অসহায় দৃষ্টিতে তারিনকে দেখেছে। কিন্তু কিছু বলার সাহস পায়নি। বাসায় আসতেই জাহেলা দরজা খুলে দিলো। তামজিদ নিজের রুমে না গিয়ে সবার আগে আমজাদ সাহেবের রুমে গেলো। আমজাদ সাহেব তখন নামাজ শেষ করে জায়নামাজে বসে ছিলেন। তারিনকে দেখেই হেসে ফেললেন। জিজ্ঞেস করলেন,
“কখন আসলে, মা?”
তারিনও হেসে ফেললো। বললো,
“এক্ষুনি আসলাম, বাবা। আপনার শরীর কেমন আছে? ঠিক আছেন আপনি?”
আমজাদ সাহেব আগের ন্যায় হেসে শান্ত স্বরে উত্তর দিলেন,
“হ্যাঁ রে মা, ঠিক আছি। মাত্র এসেছো। যাও আগে ফ্রেশ হয়ে, গোসল সেরে নামাজ আদায় করে নাও। তারপর একসাথে সবাই খেতে খেতে তোমার কলেজের প্রথম দিন কেমন কাটলো শুনবো।”
তারিনও সম্মতি জানালো। তারপর রুমে ঢুকে, আমজাদ সাহেবের ওষুধের বক্স থেকে একটা ওষুধ বের করলো। এক গ্লাস পানি আর ওষুধটা আমজাদ সাহেবের হাতে দিয়ে, অভিযোগ আর মিছি মিছি রেগে বলল,
“খেয়ে নিন আগে। আমি না দিলে তো একদিনও খাবেন না। আপনার কিন্তু অভ্যাস খারাপ হয়ে যাচ্ছে, বাবা। এভাবে অনিয়ম করবেন না একদম। আমি যদি কখনো ভুলে যাই, তখন তো না খেয়েই থাকতে হবে। সেটা কি ভালো হবে?”
আমজাদ সাহেব হেসে ফেললেন৷ ওষুধটা খেয়ে নিলেন চুপচাপ। তারপর তারিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন,
“আমার পাগলী মা থাকতে কি আমার কোনো অযত্ন হবে? সে সব ভুলে গেলেও আমার কথা কিছুতেই ভুলবে না।”
তারিন প্রশান্তির হাসি হাসলো। তামজিদ দরজার বাইরে থেকে দাঁড়িয়ে সবটা দেখছে। ঠোঁটের কোনে তৃপ্তির হাসি। মনে মনে মাকে একবার ধন্যবাদ জানিয়ে বলে উঠল,
“মা, তুমি আজ থাকলে খুশি হতে কি না জানিনা। তবে এই দৃশ্য দেখে তোমার মন ভরে যেতো। তোমার অনুপস্থিতিতে কেউ একজন তোমার স্বামীকে খুব যত্নে রেখেছে। তুমি একদম সঠিক মানুষকে বাছাই করে এনেছো৷ তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ মা। তোমার প্রতি যত অভিযোগ ছিলো, আজ সব ধুয়ে মুছে পানি হয়ে গেলো।”
তামজিদের ভাবনার মাঝে তারিন বেরিয়ে আসতেই একদম তামজিদের মুখোমুখি পড়লো। তামজিদের দিকে তাকাতেই তামজিদ স্নিগ্ধ একটা হাসি উপহার দিলো। কিন্তু তারিন সেদিকে খেয়াল না করে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। তামজিদ বেশ বুঝতে পারলো তারিনের মনে অভিমান জন্মেছে। বুক চিড়ে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসলো। রুমে এসে দেখলো তারিন তামজিদের জামাকাপড় রেডি করে বিছানায় রেখেছে। তামজিদ আসতেই তারিন থমথমে স্বরে বলে উঠল,
“আপনি আগে গোসল করে আসুন। তারপর আমি যাচ্ছি।”
তামজিদ শার্টটের বোতাম খুলতে খুলতে, বলে উঠল,
“আগে তুমি যাও, সমস্যা নেই।”
তারিন মুখ ঘুরিয়ে আগের ন্যায় থমথমে হয়ে উত্তর দিলো,
“আমার রান্না ঘরে কাজ আছে একটু। আপনি আগে যান।”
বলেই তারিন তামজিদকে আর কিছু বলতে না দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। তামজিদ অসহায় চোখে তারিনের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। তারপর কিছু সময় কি যেনো ভাবলো। অতঃপর মুখে হাসি ফুটলো। হাসি মুখে ওয়াশরুমে যেতে যেতে বলে উঠল,
“আমার ঝাঁঝ লবঙ্গ ফুল।”



তারিন রান্না ঘরে আসতেই জাহেলা হেসে বলে উঠল,
“ছোট্ট আফা, আপনার কলেজ কেমন গেলো?”
তারিন হেসে হেসে আজকের ঘটে যাওয়া সব ঘটনা গুলো বলা শুরু করলো। সব শুনে জাহেলা হাসতে হাসতে শেষ। দুজনে মিলে এই সেই কত গল্প বলে হাসাহাসি করছে। তামজিদ তারিনকে ডাকতেই রান্নাঘরে এসে তারিনের এমন হাস্যজ্বল মুখ দেখে শান্তি পেলো। ঘড়ির দিকে একবার নজর দিয়ে, শান্ত স্বরে বলল,
“তারিন, গোসলে যাও এবার। দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
তারিন পেছন ফিরে তামজিদকে দেখতেই ওর মুখের হাসি বিলীন হয়ে গেলো। মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো শুধু। তারপর জাহেলাকে খাবার টেবিলে নিতে বলে, নিজে তামজিদকে পাশ কাটিয়ে রুমে চলে গেলো। তামজিদ ঠিক বুঝতে পারছে তারিন ওকে ইগ্নোর করা শুরু করেছে। কেনো যেনো তামজিদের বুকের ভেতরটায় চিনচিন ব্যাথা করছে। কেনো করছে? তারিন ইগ্নোর করছে বলে? তামজিদ মাথার এলোমেলো ভাবনা গুলো সাইডে রেখে রুমে গিয়ে জায়নামাজ বিছিয়ে তারিনের অপেক্ষা করতে লাগলো। তারিন ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসতেই, তামজিদ বলে উঠল,
“আসো। নামাজে দাঁড়াও।”
তারিনও কোনো রকম কথা না বলে চুপচাপ তামজিদের পেছনে দাঁড়িয়ে পড়লো। দুজনে মিলে একসাথে নামাজ শেষ করে নিলো। নামাজ শেষ করেই তারিন আগে বেরিয়ে গেলো। তামজিদ ও ওর পিছু পিছু ডাইনিং টেবিলে গিয়ে বসলো। আজকে তারিন তামজিদের পাশে বসেনি। তামজিদের দিকে একবার তাকাচ্ছেও না। শুধু যখন যা দেওয়ার দরকার পড়ছে দিচ্ছে। খেতে বসে আমজাদ সাহেব, জাহেলা সবাই মিলে মজার মজার গল্প বলছে আর হাসছে। শুধু তামজিদ নিরব শ্রোতা। তামজিদকে নিরব দেখে আমজাদ সাহেব প্রশ্ন করলেন,
“কি রে বাবা, তুই চুপ কেনো?”
তামজিদ শান্ত স্বরে বলল,
“তোমরা বলো। আমি শুনছি।”
তারিন এবারো তামজিদের দিকে তাকালো না। সবার সাথে এত হাসিখুশি অথচ তামজিদের দিকে একবার ফিরেও তাকাচ্ছে না____ব্যাপারটাহ ঠিক মেনে নিতে পারছেনা তামজিদ। রাগ উঠছে। খাবারটা মাঝ পথে রেখে উঠে চলে গেলো। তারিন তবুও কিছু বললো না দেখে তামজিদ রাগে হাত ধুয়েই বাইরে বেরিয়ে গেলো। তামজিদকে এভাবে উঠে পড়তে দেখে আমজাদ সাহেব অবাক স্বরে জিজ্ঞেস করলেন,
“হঠাৎ কি হলো ওর?”
তারিন হেসেই জবাব দিলো,
“কিছু হয়নি, বাবা। সকালে ক্লাসের মধ্যে পচানি খেয়েছে তো, তাই আমার উপর একটু আধটু রেগে আছে।”
বলেই জোরে হেসে উঠলো। আমজাদ সাহেবও তারিনের সাথে তাল মিলিয়ে হাসলেন।



দিন গড়িয়ে ঘড়ির কাটা রাত ১০টায় এসে ঠেকেছে৷ তামজিদের এখনো বাড়ি ফেরার নাম গন্ধ নেই৷ রাতের অন্ধকার কালো মেঘে দ্বিগুণ আঁধার করে ফেলেছে। ঝর শুরু হবে কিছুক্ষণ পর হয়তো৷ ফোনটাও বাড়ি রেখে গেছে। তারিনের এবার বড্ড দুশ্চিন্তা হচ্ছে। রুমের মধ্যে পায়চারি করতে করতে ভাবছে, বেশি করে ফেললো নাকি? তামজিদও আজ স্বাভাবিক স্বামীর ন্যায় ব্যবহার করেছিলো, তাহলে তারিন কেনো ইগ্নোর করলো? মনে মনে অনুশোচনা হচ্ছে। তারিন বেলকনিতে ছুটে গেলো। বাইরে ঠান্ডা বাতাস বইছে। হুট করে তারিনের চোখ গেটের কাছে যেতেই দেখলো গেট দিয়ে গাড়ি ঢুকছে। তার মানে তামজিদ এসেছে৷ হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো ও৷ পরক্ষণেই আবার রাগ হলো। এভাবে হুটহাট বেরিয়ে যাওয়ার বাজে স্বভাব কেনো হবে? বাসার মানুষের কি দুশ্চিন্তা হয় না? কিন্তু তামজিদ এখন রুমে আসলে তারিন কি করবে? কিভাবে ইগ্নোর করবে? ঘুমিয়ে পড়বে? না, না। তা কি করে হবে? তামজিদকে খাবার দিতে হবে তো৷ তাহলে কি করবে? তারিনের এমন আকাশ কুসুম চিন্তার মধ্যে কলিং বেল বেজে উঠলো। তারিনও দেরি না করে ছুটলো সেদিকে৷ দরজা খুলে দিয়েই তামজিদকে কোনো প্রশ্ন না করে ভেতরে চলে আসলো। শুধু শান্ত স্বরে বললো,
“ফ্রেশ হয়ে এসে, খেয়ে নিন। আমি সব খাবার টেবিলে দিচ্ছি।”
তামজিদ ভেবেছিলো তারিন হয়তো ওকে বকাঝকা করবে৷ রাগ দেখাবে। চিন্তিত হয়ে হাজারটা প্রশ্ন করবে। কিন্তু তারিনের এমন শান্ত প্রতিক্রিয়া দেখে তামজিদের রাগ আগের ন্যায় দ্বিগুণ বেড়ে গেলো। রাগে গিজগিজ করতে করতে বললো,
“খাবো না।”
বলেই রুমে চলে গেলো। তারিনও আর কোনো প্রশ্ন করলো না। কোনো রকম জোর করলো না। অন্যদিন হলে জোর করে নিয়ে খাইয়ে দিতো। কিন্তু আজকে তা করলো না। বরং সব কিছু গুছিয়ে রেখে, আমজাদ সাহেবকে একবার দেখে এসে রুমে চলে আসলো। রুমে আসতেই দেখলো তামজিদ ফ্রেশ হয়ে বিছানার উপর খালি গায়ে শুয়ে আছে। পড়নে শুধু কালো ট্রাউজার। চোখের উপর বাম হাত রাখা। ঘুমিয়ে পড়েছে নাকি বুঝা যাচ্ছে না। তারিন এখন কি করবে? শুয়ে পড়বে? কিন্তু শুয়ে পড়লে নিশ্চয়ই ঘুমের ঘোরে তামজিদকে জড়িয়ে ধরবে! প্রতিরাতে তামজিদের বুকে মাথা রেখে ঘুমানো তারিনের অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। তারিন মনে মনে নিজেকে শান্ত করলো। প্রতিজ্ঞা করলো আজ কিছুতেই তামজিদের কাছে ধরা দিবে না। উপায়ন্তর না পেয়ে পড়ার টেবিলে একটা বই নিয়ে বসে পড়লো। কোনো পড়া নেই, জানা সত্ত্বেও বসে রইলো। বইটা কোনোরকমে খুলে রেখে নিজের ভাবনায় মত্ত হয়ে পড়লো। মনে মনে ভাবতে লাগলো,
“আপনি আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে, মাস্টার মশাই। আপনার চোখে আমি আমার জন্য মায়া দেখেছি। আজ আমি খুব ভালো করে বুঝতে পেরেছি, আপনি আমার উপর দূর্বল হয়ে পড়ছেন। কিন্তু সেটা নিজে বুঝতে পারছেনা। খুব শিঘ্রই আপনি বুঝবেন। আমাকে খুঁজবেন। ভালোবেসে কাছে টেনে নিবেন। আমি সেদিনের অপেক্ষায় রইলা। ততদিন না হয় একটু দূরে থাকি।”
তারিনের ভাবনার মাঝেই তামজিদ কঠিন স্বরে প্রশ্ন করলো,
“কয়টা বাজে দেখেছো? বসে বসে কি করছো?”
তারিন উত্তর দিলো না। এবার তামজিদ উঠে বসলো। আগের ন্যায় শক্ত হয়েই বলল,
“কিছু বলেছি, শুনছো?”
তারিন সোজাসাপটা উত্তর দিলো,
“শুনছি৷”
তামজিদ রেগে বললো,
“শুনছি মানে কি? লাইট অফ করে বসে আছো। ঘুমাবো না নাকি?”
তামজিদের এমন রগচটা কথা শুনে তারিনের এই প্রথম কেনো যেনো কান্না পেলো। তবুও কাঁদলো না। চুপচাপ লাইটটা অফ করে দিলো। তারপর টেবিল লাইট জ্বালিয়ে বই পড়ার ভান করলো। তারিনের কান্ডে তামজিদ বড্ড অবাক। কিছু বলতে পারলো না আর। চুপচাপ শুয়ে পড়লো। অনেকক্ষণ এপাশ ওপাশ করেও কিছুতেই ঘুম আসছে না। কি ব্যাপার কেনো ঘুম আসছে না? খালি খালি লাগছে বুকের ভেতরটা। কি যেনো নেই নেই মনে হচ্ছে? সব তো আছে তবুও কেনো এমন লাগছে? মস্তিষ্ক থেকে তৎক্ষনাৎ জবাব এলো,
“আজ বুকের ভেতর তারিন নেই। যে প্রতি রাতে শক্ত করে ঝাপটে ধরে তামজিদের বুকে গুটিশুটি মে’রে ঘুম আসে।”
তামজিদ একবার উঠে বসছে তো একবার শুয়ে পড়ছে। একবার বাম পাশে ফিরছে তো একবার ডান পাশে ফিরছে। চোখে ঘুম অথচ ঘুম আসছে না। কী এক অদ্ভুত যন্ত্রণা! এমন করে প্রায় ঘন্টাখানেক কে’টে গেলো। তারিন এখনো আসছে না। এবার তামজিদ অপেক্ষা করতে পারলো না। উঠে বসে দেখলো তারিন টেবিলে মাথা রেখে আছে। জেগে আছে নাকি ঘুমিয়ে গেছে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রশ্ন করলো,
“তুমি কি ঘুমাবে না?”
তারিন অস্পষ্ট স্বরে বলল,
“আপনি ঘুমান। আমি পরে ঘুম আসবো।”
বলে এবার টেবিল লাইটটাও বন্ধ করে দিলো। কয়েক মিনিটের মাথায় তারিন নিজের হাতের উপর অতি চেনা স্পর্শ টের পেলো। অন্ধকারে হাতড়ে টেবিল লাইটটা জ্বালাতেই তামজিদের মুখটা চোখে পড়লো। ধড়ফড়িয়ে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো। ভয়ার্ত স্বরে প্রশ্ন করে বসলো,
“আপনি! আপনি এখানে?”
তামজিদ কোন রকম উত্তর দিলো না৷ সোজা তারিনকে কোলে তুলে নিতেই তারিন ভয় পেয়ে তামজিদের গলা জড়িয়ে ধরলো। তারিন এবার নড়াচড়া করতে করতে জোরে চেঁচিয়ে বলে উঠল,
“কি করছেন? ছাড়ুন আমাকে। ছাড়ুন বলছি।”
তামজিদ রাগী স্বরে বলল,
“বেশি লাফালাফি করলে এক্ষুনি কোলের থেকে ফেলে দিবো।”
তারিন ভয় পেয়ে তামজিদের গলা আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। নড়াচড়া করা অটোমেটিক থেমে গেলো। তামজিদ তারিনকে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো। শক্ত করে তারিনকে বুকের ভেতর জড়িয়ে ধরলো। প্রশান্তির স্বরে বললো,
“এবার ঘুমাও। এতক্ষণ আমার ঘুম হারাম করার জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।”
তারিন কিছুক্ষণ বিস্ময়ে নড়াচড়া করতে ভুলে গেলো। সবকিছু কেমন গুলিয়ে গেলো মুহূর্তেই। যখনি সকালের কথা মনে পড়লো, তখনি তামজিদকে দুই হাতে ঠেলতে ঠেলতে অভিমানী স্বরে বলল,
“ছাড়ুন আমাকে। একদম ধরবেন না। যখন মন চাইবে কাছে আসবে, আবার মন চাইবে দূরে যাবেন। আমি এসব মেনে নিবো না৷ যেদিন ভালোবেসে কাছে টানবেন সেদিন সব মেনে নিবো। আ…।”
তামজিদ এক হাতে তারিনের মুখ চেপে ধরলো। ফিসফিস করে বলে উঠল,
“বকবক থামাও। নয়তো এমন ভাবে চুপ করিয়ে দিবো যে, কাল সকালে কাউকে মুখ দেখাতে পারবে না।”
কথাটা শোনা মাত্রই তারিন স্তব্ধ হয়ে গেলো। কয়েক সেকেন্ড লাগলো কথাটার মানে বুঝতে। যখন বুঝলো তখন লজ্জায় কান গরম হয়ে উঠল। তামজিদের অবশ্য সেদিকে খেয়াল সে তারিনের গলায় মুখ ডুবিয়ে শান্তিতে ঘুমের দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। আর তারিন তামজিদের উদাম বুকে লজ্জায় মুখ লুকিয়ে হাসছে। মনে মনে ভাবছে,
“স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক উপরওয়ালা শান্তিতে ভরপুর করে দিয়েছেন।”

#চলবে

[কেমন লাগলো তামজিদের কাহিনী বলুন তো? গঠন মূলক মন্তব্য চাই কিন্ত নয়তো সত্যি দিবোনা😒]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here