অর্ধ_নক্ষত্র ।৯। #লেখনীতে_Aiza_Islam_Hayati

0
203

#অর্ধ_নক্ষত্র ।৯।
#লেখনীতে_Aiza_Islam_Hayati

জুনায়না প্রশান্তর চোখ একটি লাল কাপড়ে বেঁধে প্রশান্তর হাত শক্ত করে ধরে সাবধানে একেক কদমে এগিয়ে আসছে।জুনায়না তার শাড়ির আঁচলে প্রশান্তর
হাতের কব্জির দিকটি বেঁধে রেখেছে।

প্রশান্ত অস্থির হয়ে বলে উঠলো,”জুনায়না কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস আমায়?”

জুনায়না সামনের দিকে কদম ফেলা বন্ধ করে দিলো জুনায়না থেমেছে তা বুঝতে পেরে প্রশান্ত থেমে যায়।জুনায়না আলতো হাতে প্রশান্তর চোখের বাঁধন খুলে দিতেই প্রশান্ত বারকয়েক নেত্রপল্লব ঝাপটায়,যখন চোখের সামনে সকল কিছু স্পষ্ট হয়ে উঠলো তখনই আরশমান,ফাইজ,মেহরা,জাহরা প্রশান্তর উপর সাদা গোলাপের পাপড়ি ছুঁড়ে বলে উঠে,”আমাদের গোলাপ কে শুভ জন্মদিন।”

প্রশান্ত বিস্তর হাঁসলো।ছোট বেলায় তার মা আর বাবা এমন সাদা গোলাপের পাপড়ি ছুঁড়ে গোলাপ বলে শুভেচ্ছা জানাত।আর তার এই বন্ধুমহল’ও তাই করে যাচ্ছে।

জুনায়না প্রশান্তর মুখ পানে তাকিয়ে বলল,”কীরে প্রশান্ত বাবু খুশি তো তুই?”

প্রশান্ত ঠোঁটের কোণে হাঁসি বজায় রেখে বলল,”অসম্ভব রকমের খুশি।কিন্তু আমি এখন এত বড় একটা দামড়া ছেলে এমন জন্মদিন মানায় নাকি।”

আরশমান,ফাইজ,জুনায়না হেঁসে বলল,”তুই তো আমাদের ৩৭ বছর বয়সের এক দামড়া বাবু।”

মেহরা,জাহরা ওদের কথন শুনে হো হো করে হেঁসে উঠল।আরশমান,ফাইজ হাত তুলে চোখ বন্ধ করে একসাথে বলল,”প্রশান্ত বাবু তোমায় আমরা দোয়া করলাম যেনো শীঘ্রই বিয়ে করে আমাদের চাচ্চু ডাক শোনাতে পারো।”

প্রশান্ত মৃদু হাসলো,কিন্তু এইদিকে জুনায়না লজ্জায় ছেয়ে আসছে।জুনায়নার এহেন লজ্জা দেখে ফাইজ অবাক কণ্ঠে বলে উঠলো,”তুই লজ্জা পাচ্ছিস কেনো রে জুনায়না!এমন ভাবে লজ্জা পাচ্ছিস যেনো মনে হচ্ছে প্রশান্ত তোর জামাই আর আমরা তোর জামাইকে চাচ্চু ডাক শোনাতে বলেছি বলে তুই লজ্জায় ডিজে লাইটের মত একেক রং ধারণ করছিস।”

জুনায়না ঠিক হয়ে দাঁড়াল মুখ ফুটে কিছু বলার আগেই আরশমান বলল,”তোরা জায়গাটাকে
যু দ্ধ ক্ষেত্রে পরিনত করিস না এর থেকে ভালো সবাই বসি প্রশান্ত কেক কাটুক।তারপর খাওয়া দাওয়া সেরে নেয়া যাক।”

.
বসা হলো গোল,কেক কাটা হলো একসময় খাওয়া দাওয়ার পর্ব’ও শেষ হলো।আরশমান ফাইজ কে চোখে কিছু ইশারা করতেই ফাইজ জাহরার হাত ধরে উঠে দাড়ালো,জাহরা বিস্মিত নয়নে চাইলো ফাইজ এর দিকে।আসার পর থেকে ফাইজ এর কথা হয়নি তার তাহলে হুট করে এমন হাত ধরার কারণ কী?

ফাইজ জাহরা কে নিয়ে বসার জায়গা থেকে নেমে বলল,”চলুন বেয়াইন আমরা সামনে থেকে হেঁটে আসি।”,বলে চোখে ইশারা করে জুনায়না ও প্রশান্ত কে দেখলো।জাহরা বুঝতে না পেরে ভ্রু কুঁচকে বলে,”কী ইশারা করছেন কিচ্ছু বুঝিনা।”

ফাইজ এর ভ্রু কুঞ্চিত হলো দাড়িয়ে না থেকে জাহরা কে নিয়ে হাঁটা ধরলো।এইদিকে আরশমান মেহরা কে চোখে ইশারা করে মেহরা কে নিয়ে চলে গিয়েছে।

জুনায়না নিজের হাতের ভাঁজে প্রশান্তর হাত সন্তর্পনে নিয়ে নিলো, প্রশান্তর দিকে চেয়ে মলিন কণ্ঠে বলল,”ভালোবাসি তোকে।তুই কী আমায় ভালবাসিস না প্রশান্ত?”

প্রশান্ত চাইলো না জুনায়নার দিকে,বলল,”কেনো বাসবো না অবশ্যই খুব ভালোবাসি তোকে নিজের বন্ধু কে,কে না ভালোবাসে!”

জুনায়না প্রশান্তর কাঁধে নিজের মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে ফেললো,বলল,”তুই কী বুঝতে পারিস না আমি কোন ভালোবাসার কথা বলছি।জানিস প্রশান্ত কলেজ লাইফে হুট করেই তোর প্রতি এক অনুভূতি অনুভব করি আমি।তারপর থেকেই এই কৃষ্ণবর্ণের মানুষটিকে খুব ভালোবাসতে শুরু করি।জানিস আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় পুরোটাই তুই তারমধ্যে তোর গায়ের রঙ,তোর এই মুখখানা,তোর নিষ্পাপ মন,আর তোর এই কাঁধ যেইখানে আমি মাথা রেখে বড্ডো শান্তি খুঁজে পাই।খুব যত্নে সৃষ্টি করেছে তোকে সৃষ্টিকর্তা।আমি তো সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ এমন একটি মানুষকে আমার জীবনে পাঠানোর জন্য।”

প্রশান্ত নিঃশব্দে হাঁসলো।যে মেয়ের গায়ের রঙ দুধে আলতা সে কিনা তার মত কৃষ্ণ বর্ণের মানুষকে এত ভালবাসে।তাহলে কী বলা যায় সকলের দৃষ্টিভঙ্গি এক নয়,ভালোবাসায় প্রিয়তম’র যেকোনো কিছুই হৃদয়ের গভীরে গিয়ে প্রিয় হয়ে উঠে।

জুনায়না পুনরায় বলল,”কী ভাবছিস?এত ভাবার দরকার কী সকল খারাপ ভাবনা কে এক পাশে রেখে একবার বলে দে না ভালোবাসি।এই শব্দটি তোর মুখ থেকে শোনার জন্য আমার হৃদয়,কর্ণ,পুরো আমিটাই তৃষ্ণার্ত।”

প্রশান্ত নিশ্চুপ রয়ে গেলো প্রতুত্তর করলো না।জীবনের কিছু অন্ধকার মুহূর্তের জন্য নিজেকে দায়ী করে প্রশান্ত।হ্যাঁ নিজের বাবা মা ও জুনায়নার বাবার মৃ ত্যুর জন্য নিজেকে দায়ী করে প্রশান্ত।তার বাবা মা তাকেই বাঁচাতে গিয়ে দ স্যু র রাখা মাইন বোমে পা রেখে বিস্ফোরণের শিকার হয় তার সাথে তাদের পিছনে থাকা জুনায়নার বাবা।নিজের প্রিয় মানুষদের হারানোর পর এমন শান্ত স্বভাবের হয়ে যায় প্রশান্ত।নিজের জীবনের সাথে এত গভীর ভাবে জড়াতে চায় না জুনায়নাকে,যদি জুনায়নাকেও হারিয়ে ফেলে তাহলে প্রশান্ত বাঁচবে কী করে।সেও ভালোবাসে জুনায়নাকে যা অতি নিভৃতে,অপ্রকাশিত ভাবে।

জুনায়না চোখ খুললো হেঁসে বলে উঠলো,”এই কোলে নে আমায় প্লিজ প্লিজ কোলে উঠতে ইচ্ছে করছে আমার।”

প্রশান্ত হেঁসে বলে,” তুই কী বাচ্চা যে এত কোলে উঠার বায়না করিস?এইসব আবদার তুই তোর জামাইর কাছে করিস আমার কাছে না।”

জুনায়না ভ্রু কুঁচকে ফেললো প্রশান্তর কোলে উঠে পড়লো,প্রশান্তর পাঞ্জাবির করলার টেনে মুখোমুখি নিয়ে এলো বলল,”ওকে ডান তোকে বিয়ে করার পরই এই কোলে উঠার আবদার করবো।আর এখন আপাদত নিজে থেকেই কোলে উঠে বসে থাকবো।”

প্রশান্ত নির্নিমেষ জুনায়নার চোখের দিকে চেয়ে রইল,জুনায়না তা বুঝে উঠে প্রশান্তর দুই চোখে অধর ছুঁয়ে দিলো ফিসফিসিয়ে বলল,”উফ তোর এই চোখ দুটো।”

সঙ্গে সঙ্গে প্রশান্ত জুনায়নাকে নিজের কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে বলে উঠলো,”তুই আসলেই একটা ক্যারেক্টারলেস মাইয়া।আর এই তোর আঁচলের গিট্টু খোল হাত ব্যাথা করছে আমার।”

প্রশান্তর হাত ব্যাথা করছে শোনা মাত্রই জুনায়না ব্যাস্ত হয়ে আঁচল এর বাঁধন থেকে মুক্ত করে দিলো প্রশান্তর
হাত,ব্যাস্ত কণ্ঠে হাতটি নিজের হাতে নিয়ে বলে উঠলো,”এই বেশি ব্যথা করছে?আমাকে আগে কেনো বললি না।আম সরি জান।আমি ব্যাথা দিতে চাইনি তোকে।”

প্রশান্ত জুনায়নার মাথায় মৃদু ধাক্কা দিয়ে বলল,”এমন পা গ লের মত করছিস কেনো সামান্যই তো ব্যাথা। হায় আমি মরে গেলে তখন কী করবি তুই?”

জুনায়নার কপালে কয়েকটি দৃঢ় ভাঁজ পড়ে এলো শক্ত কণ্ঠে বলল,”মরে যাবো।”,বলেই উঠে দাড়ালো জুনায়না একই কণ্ঠে বলল,”আমি বাড়ি যাচ্ছি প্রশান্ত।সকলকে বলে দিস জুনায়না চলে গিয়েছে।”বলে হাঁটা ধরলো জুনায়না।প্রশান্ত উঠে দৌড়ে জুনায়নার সামনে চলে এলো বলল,”চলে যাবি মানে?”

“ভালো লাগছে না আমার।”,বলে পাশ দিয়ে চলে যেতে চাইলে প্রশান্ত জুনায়নার হাত ধরে টেনে নিজের সামনে এনে বলে,”ঠিক আছে কিন্তু তুই এত রাতে একা যাবি?একটাও রিকশা পাবি তুই?আমি তো তোকে এখন একা ছাড়ছি না।”

জুনায়না হাত ছাড়িয়ে নিলো প্রশান্তর থেকে বলল,”আমি একাই যেতে পারবো কে কী করবে আমায়?আমি ইন্সপেক্টর জুনায়না লাইবা নিজেকে প্রোটেক্ট করার মত শক্তি রয়েছে আমার।”

প্রশান্ত শক্ত কণ্ঠে বলল,”থাকুক ইন্সপেক্টর জুনায়না লাইবার শক্তি তাও এই প্রশান্ত তাকে একা ছাড়তে রাজি নয়।”

জুনায়না তাচ্ছিল্য হেঁসে বলল,”কেনো ছাড়তে চাস না হারানোর ভয় হয়?ছেড়ে দে চলে যেতে পারবো আমি।”

প্রশান্ত আর দ্বিরুক্তি করলো না সরাসরি জুনায়নাকে পাঁজা কোলে তুলে নিলো।জুনায়না চমকে উঠলো,ভড়কে গেলো।প্রশান্ত শক্ত চোখ মুখে হাঁটা ধরলো গাড়ির দিকে।জুনায়না ছোটা ছুটি করলো বলল,”কোলে কেনো নিলি?তুই না বলেছিস বিয়ের পর জামাইকে বলতে।”

প্রশান্ত দৃঢ় ভাবে নিজের সাথে মিলিয়ে রাখলো জুনায়নাকে।গাড়ির সামনে এসে জুনায়নার মুখাবয়বের দিকে চাইলো,কেমন করে রাগে গাল ফুলিয়ে রেখেছে জুনায়না।প্রশান্ত ভরাট কণ্ঠে বলল,”গাড়িতে উঠার পর এক পা অব্দি বের করার চেষ্টা করবি তোর সাথে কখনও কথা বলবো না আমি।”

জুনায়না ভ্রু কুঁচকে তাকালো, আজব সে রাগ করেছে তার রাগ ভাঙ্গানো দরকার কিন্তু প্রশান্ত তো উল্টো থ্রেট দিচ্ছে তাকে।জুনায়না দৃষ্টি সরিয়ে ফেললো প্রশান্তর থেকে মুখ অন্য দিকে ফিরিয়ে রাখল।

জুনায়নাকে কোল থেকে নামিয়ে গাড়ির দরজা খুলে জোর করে ড্রাইভিং সিটের পাশের সিটে বসিয়ে দিলো,নিজেও গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়ল।প্রশান্ত গাড়ি স্টার্ট করে চাইলো জুনায়নার মুখ পানে,চঞ্চন মেয়েটি রাগ করেছে সে কী পারবে তার রাগ ভাঙাতে।

.
ফাইজ জাহরার হাত এখনও ছাড়েনি।জাহরা বলে উঠে,”এখন তো হাতটা ছাড়ুন।”

ফাইজ সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেয় জাহরার হাত।বলে,”সরি।”

জাহরা এক রাশ বিস্ময় নিয়ে বলে,”ওরে’বাস মিস্টার ফাজিল সরি বলছে।আপনি তো বড় বড় অকাজ করেও সরি বলেন না তাহলে আজ কেনো?”

ফাইজ আড় চোখে তাকালো বলল,”ঠিক আছে ফিরত নিয়ে নিলাম আমার সরি।আর আমাকে ফাজিল একদম বলবা না আমার বিরক্ত লাগে এই নামটা।”

“ওহ তাই বুঝি আপনিও তো কত নামে সম্মোধন করেন আমায় তখন?”

“আমি করবো কিন্তু তুমি করতে পারবে না।”

“বাহ বাহ বাহ।কী সুবিচার।”,বলে জাহরা পাশে চাইলো কিছুটা দূরেই একটি পুকুর দেখা যাচ্ছে আর ল্যাম্পপোস্ট এর আলো ফুলের গাছ।জাহরা ঠোঁটের কোণে হাঁসি ফুটিয়ে বলল,”চলুন ঐখানে যাই।”

ফাইজ জাহরার দৃষ্টি অনুসরণ করে দেখলো জায়গাটি।এত সুন্দর স্থানটি ফাইজ এর মন কেড়ে নিতে পারল না পুকুরের এক পাশে অনেক গুলো ছেলে বসে আছে।ফাইজ জাহরা কে বারণ করলো বলল,”যেও না জাহরা।”

জাহরা দ্বিরুক্তি করলো,”কেনো যাবো না?দেখুন কী সুন্দর ওই জায়গাটি ল্যাম্পপোস্ট এর পাশেই কত সুন্দর ফুল গাছ।”

ফাইজ পুনরায় বারণ করলো জাহরা শুনলো না এক হাতে শাড়ি সামলে চলে গেলো।

.
পুকুরটির কাছে আসতেই ছেলে গুলোর নজরে পড়লো জাহরা কে।হুট করেই তারা বাঁকা হেঁসে বাজে মন্তব্য আওড়াতে লাগলো।জাহরা ভ্রু কুঁচকে তাকালো তাদের দিকে।ছেলে গুলো উঠে দাড়ালো এগিয়ে আসলো,তাদের মধ্যে একজন জাহরার হাত ধরতে নিজের হাত বাড়িয়ে দিলে ফাইজ মাঝে চলে আসে ছেলেটির হাত মুচড়ে ধরে বলে,”সমস্যা কী?”

ছেলেটির সঙ্গীরা ফাইজ এর দিকে তেড়ে আসতে চাইলে ছেলেটি তার ওপর হাতে থেমে যেতে ইশারা করে।বলে “সমস্যা তো তোর পিছনের মেয়েটি।”

ফাইজ ঘাড় ঘুরিয়ে জাহরার মুখ পানে তাকালো অতঃপর ছেলেটির দিকে তাকিয়ে বলল,”কেনো কী করেছে ও তোদের?”

ছেলেটি জাহরার দিকে তার কুৎসিত নজর দিয়ে বলল,”ওর রূপ”,বাকি কথা বলা হলো না ফাইজ ছেলেটির গাল টিপে ধরলো দাঁতে দাঁত পিষে বলল,”নো মোর ওয়ার্ড’স।”

ছেলেটিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো ফাইজ।ছেলেটির সামনে হাটু ভাঁজ করে বসে এক হাতে ছেলেটির গলা চেপে ধরলো বলল,”নিজের এই কু ৎসিত নজরে ওর দিকে তাকানোর স্পর্ধা কী করে করলি তুই?”

“ফাইজ।”,পিছন থেকে হাঁপাতে হাঁপাতে কথাটি বলল আরশমান।আরশমান এর পাশে দাঁড়িয়ে মেহরাও হাঁপাচ্ছে।তারা দুজন দূর থেকে এতক্ষন যাবৎ সকল কিছু লক্ষ্য করেছে।ফাইজ ফিরে চাইলো আরশমান এর দিকে এই সুযোগে ছেলেটি তার পকেট থেকে একটি ছু রি বের করে ফেললো আরশমান তা দেখলো দৌড়ে গিয়ে ছেলেটির ছুরি ধরা হাত মাটির সঙ্গে চেপে ধরলো চেঁচিয়ে বলে উঠলো,”কার দিকে ছুরি চালাতে চাইছিস তুই?”

ছেলেটির সঙ্গীরা এখন নিজেদের কোমড়ে থাকা অ স্ত্র বের করে আরশমান ফাইজ এর দিকে এগিয়ে গেলো।
মেহরা শাড়ির আঁচল কোমড়ে গুজে বড় বড় পায়ে কদম ফেলে ছেলেগুলোর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।ছেলেগুলোর সামনে মেহরা এসে দাড়াতেই তারা থেমে যায় একজন হেঁসে উঠে বলে,”ওয়া এই তো আরেক মা’ল।”

মেহরা ছেলেটিকে ঠাটিয়ে কানের নিচে থাপ্পর বসিয়ে দেয় হুংকার করে ওঠে,”এই মা’ল আজ তোদের কী করে দেখবি শুধু।সাহস কী করে হয় আমার বোনের দিকে কু ৎসিত নজর দেয়ার।”

এক থাপ্পরে কান ঝিম ধরে গিয়েছে ছেলেটির,হাত থেকে তার ছু রিটিও পড়ে গিয়েছে।ছেলেটি হিং স্র পশুর মত তেড়ে যেতে নেয় মেহরার দিকে,আরশমান শুয়ে থাকা ছেলেটিকে ফাইজ এর হাতে দিয়ে উঠে আসে মেহরার দিকে তেড়ে আসা ছেলেটির বুকে সজোরে লাথি দিয়ে ছেলেটিকে ফেলে দেয়।
সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় এক হাতাহাতি।

.
এরই মধ্যে মেহরা তার থানায় ফোন করে পাঁচ থেকে সাত জন পুলিশ আসতে বলে দিয়েছে।মেহরা জাহরা কে দূরে থাকতে বলছে।হাতাহাতির এক পর্যায়ে জাহরা যখন দেখলো ফাইজ এর দিকে একজন ছু রি নিয়ে তেড়ে আসছে,জাহরা উচ্চ কণ্ঠে ‘ফাইজ’ বলে দ্রুত এগিয়ে গেলো ছু রিটি ধরে ফেললো ছেলেটির হাত থেকে টেনে ছু রিটি ফেলে দিলো।

সঙ্গে সঙ্গে জাহরার হাতের মাঝে বরাবর কে টে লাল তরল ছুটে বেরিয়ে আসতে শুরু করে।ফাইজ চমকে উঠে,জাহরার হাতের পানে তাকিয়ে যখন র’ক্ত দেখতে পায় অস্থির হয়ে যায়।দুই এক না ভেবে ঘুরেই ছেলেটির করলার চেপে ধরে এ লো পা থাড়ি মা রতে শুরু করে।

পুলিশের গাড়ি শব্দ তুলে তার আগমনের ইঙ্গিত জানাচ্ছে।ছেলে গুলো শব্দটি শুনতে পেয়েই পালানোর জন্য উঠে পড়ে।কয়েক মিনিটের মধ্যে সাত থেকে আটজন পুলিশ দৌড়ে আসে প্রত্যেকটি ছেলেকে ধরে ফেলে।মেহরা বলে,”এদের থানায় নিয়ে যাও।
ই ভ টি জিং ও অ বৈ ধ অ স্ত্র মামলা দিয়ে জেলে দেওয়া হোক এদের।”

.
পুলিশ নিয়ে গেলো ছেলেগুলোকে।ফাইজ নিজের পকেট থেকে রুমাল বের করে জাহরার হাতে বেঁধে দিলো ধমকে ব্যাস্ত কণ্ঠে বলল,”জাহরা ঠিক আছো তুমি?কে বলেছিল ছিলো তোমাকে এগিয়ে আসতে। হসপিটাল নিয়ে যেতে হবে হাত টা অনেক কেটেছে।ভালো করে ব্যান্ডেজ করতে হবে।”

মেহরা,আরশমান এগিয়ে এলো দুজনেই অস্থির হয়ে বলে উঠলো জাহরা ঠিক আছে কিনা।

“হম ঠিক আছি আমি।তোমরা নিজেদের দেখো কী হয়েছে তোমাদের।আমার তো সামান্য এইটুকু হাত
কে টে ছে।”

#চলবে।

#কালেক্ট_গল্প_কথা
Story Link-গল্পের লিংক (রিভিউ+আলোচনা)💓https://facebook.com/groups/329590663119170/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here