#অর্ধ_নক্ষত্র ।১০।
#লেখনীতে_Aiza_Islam_Hayati
“মেহরা আপনার একবার থানায় যেতে হবে তার আগে আপনারা আসুন,আপনাদের হাসপাতাল যাওয়া প্রয়োজন।”,পিছন থেকে কথাটি ভেসে আসতে সকলে ঘুরে তাকালো কথাটি সবে বলা উৎসের পানে।
ইন্সপেক্টর আসাদ কে দেখে মেহরা অবাক কণ্ঠে বলল,”আসাদ আপনি?আপনারা যাননি এখনও?”
আসাদ বলল,”না মেহরা আমি আর আরও দুইজন রয়ে গিয়েছে আপনাদের হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।”
মেহরা,আসাদ দুজনের কথনের মধ্যে আরশমানের নজর আটকে যায় মেহরার কনুইর দিক থেকে গড়িয়ে পড়া র ক্তে র দিকে।আরশমান মেহরার বাহু ধরে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে উদগ্রীব কন্ঠে বলে,”এইসব কী মেহরা?আপনি আঘাত পেয়েছেন কখন?আমি একবারও কী দেখলাম না। ব্যাথা করছে?কষ্ট হচ্ছে?চলুন হাসপাতালে যেতে হবে।”
মেহরা নিজের আঘাত পাওয়া স্থানে তাকিয়ে আরশমানের মুখ পানে চায়,হেঁসে বলে,”আরেহ এইসব কিছুই না।এর ব্যান্ডেজ আমি নিজেই করে নিতে পারবো আপনি বরং ফাইজ আর জাহরা কে নিয়ে হাসপাতাল যান আর আমি থানায় যাই।”
আরশমান ধমকে বলল,”একদম না কী পারবেন আপনি?”থেমে আসাদ এর দিকে তাকিয়ে বলে,”চলুন।” বলে মেহরার বাহু ধরে হাটা ধরে হঠাৎ আরশমান লক্ষ্য করে মেহরা খুঁড়িয়ে হাঁটছে।আরশমান থেমে যায় মেহরার পায়ের দিকে তাকিয়ে ব্যাস্ত কন্ঠে বলে,”পায়ে আবার কী হয়েছে মেহরা?এমন করে হাঁটছেন কেনো?”
মেহরার বারংবার আরশমান এর এমন ব্যাস্ত হয়ে ওঠা দেখে খুব হাসি পাচ্ছে,মেহরা মৃদু হেঁসে বলে,”আরশমান এমন করে ব্যাস্ত হচ্ছেন কেনো আপনি,আমি বুঝতে পারছি না।আসাদ কে জিজ্ঞেস করুন না,এমন অনেক মা স্তা ন দের অ্যা টাকে ঘায়েল হয়ে নিজেকে নিজেই সামলে নিয়েছি।এত হাসপাতাল এর প্রয়োজন পড়েনি আমার।”
আরশমান চট করে কোলে তুলে নিলো মেহরাকে বড় বড় পায়ে হাঁটা ধরলো।মেহরার হাঁসি উড়ে গেলো ভড়কে উঠলো সে।চেঁচিয়ে বলে উঠলো,”এই কোলে কেনো নিয়েছেন সাহস তো কম বড় না আপনার
অ স ভ্য লোক।আরশমান আমাকে নামান বলছি।”
আরশমান মেহরার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলল,”আপনি ঐ মা স্তা ন দে র কাছে বাঘিনী হতে পারেন কিন্তু আমার কাছে এই বাঘিনী রূপ সবসময় চলবে না,আপনি আমার কাছে ঐযে আমার পাশের বসার কোমল বিড়াল ছানা টার মত।”
পিছন পিছন আসা আসাদ,জাহরা,ফাইজ মিটমিট করে হাসলো।বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল সেই জায়গাটির সম্মুখ দিয়ে যেতেই ফাইজ জুনায়না,প্রশান্তকে না দেখতে পেয়ে বলে,”দোস্ত প্রশান্ত ,জুনায়না কোথায়?”
আরশমান তার গম্ভীর কন্ঠের রেশ টেনে বলল,”প্রশান্ত ম্যাসেজ করেছিল জুনায়না হুট করেই রেগে বাড়ি চলে যেতে চাইছিল তাও একা,প্রশান্ত ওকে একা ছাড়তে চায়নি বলে ওর সাথে গিয়েছে।আর আমি মেহরা মেসেজটি দেখেই তদের খুজতে বের হই আর এই অবস্থা।”
ফাইজ দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়লো তার পাশে হাঁটতে থাকা জাহরার শুকিয়ে যাওয়া মুখ পানে তাকালো সঙ্গে সঙ্গে ভ্রু কুঁচকে এলো তার,ফিসফিস করে ভরাট কন্ঠে বলল,”কী হয়েছে মুখটা পেঁচার মত করে রেখেছো কেনো?হাত ব্যাথা করছে?গেলে কেনো এত সাহস দেখিয়ে ওই ছু রি ধরতে।”
জাহরা নিমগ্ন চেয়ে হাঁটছিল,ফাইজ এর কথা শ্রবণ হতেই মাথা উঁচু করে চাইলো ফাইজ এর দিকে।তিক্ত কন্ঠে বলল,”হ্যাঁ আমার দো ষ সব,আমি যদি ছু রি টা না ধরতাম চিৎপটাং হয়ে স্বর্গে চলে যেতেন।আর আপনি’ই বা আমার জন্য কেনো ওই ছেলেগুলোর সাথে ঝামেলায় জড়াতে গেলেন।নিজেকে দেখেছেন কপাল,হাত,পা কত জায়গায় আ ঘা ত।”
“আমার কথা ছাড়ো,এখন যে তোমার কষ্ট হবে।হাতে কয়টা সেলাই পড়তে পারে তোমার ধারণা আছে?”
জাহরা উত্তর দিলো না,তার প্রচন্ড বিরক্ত লাগছে নিজের প্রতি।এখন বোধ হচ্ছে সে ঐজয়গায় না গেলেই পারতো তাহলে এত কিছু হতো না।
.
আরশমান তার গাড়ির সামনে আসতেই এক শাড়িতে থাকা তিনটে গাড়ি থেকে কালো পোশাক পড়া হাতে গোনা কয়েকজন যুবক বেরিয়ে এলো।কালো পোশাক পড়া ব্যক্তিদের মধ্যে আকাশ রয়েছে সে ভড়কে গেলো সকলের এই অবস্থা দেখে,অধিক ভড়কালো আরশমানকে দেখে।আকাশ এগিয়ে আসলে আরশমান গম্ভীর কন্ঠে বলে,”এখন কোনো কথাই জিজ্ঞেস করবে না আকাশ,গাড়িতে ওঠো দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে চলো।”
মেহরার প্রচুর রাগ হচ্ছে,কিন্তু পায়ের আঘাতের কারণে ছোটাছুটিও করতে পারছে না সে।মেহরার চোখ গিয়ে আটকে যায় আরশমান এর রক্তিম বর্ণ ধারণ করা মুখখানায়।কী হলো এমন যে আরশমানের মুখ রক্তিম বরণ ধারণ করেছে।মেহরা দৃষ্টি ক্ষীণ নিমগ্ন আনতেই দেখলো আরশমানের ঘাড়ের দিকে ছু রি র আ ঘা ত,ডান হাতের বাহু তে দৃঢ় ছু রি র আ ঘা ত যা সাদা আবরণের ভিতর লাল রঙ্গা মাংশটি দৃষ্টিগোচর করে দিচ্ছে।
.
আরশমান এর একটি গাড়ি ও পুলিশের তিনটে বাইক এসে থামলো হাসপাতালের সম্মুখে।দ্রুত ভিতরে চলে গেলো সকলে,আরশমান তার মুখ মাস্ক দিয়ে ঢেকে রেখেছে।এখনও মেহরা কে কোলে করে বইছে আরশমান।মেহরা মৃদু স্বরে রাগান্বিত কন্ঠে বলে,”আরশমান আপনি বেশি করে ফেলছেন না মানুষ আমাদের,দেখছে কেমন করে তাকিয়ে আছে দেখুন।নামান আমাকে।”
আরশমান পাত্তা দিল না,মেহরা পুনরায় বলল,”আরেহ আমি কী লুলা হয়ে গিয়েছি নাকি যে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছিস ভাই,প্লিজ নামা।আমাকে না নামালে আমি তোর নামে মা ম লা করবো,বিয়ের আগেই এক অবলা নারীকে কোলে নেয়ার মা ম লা,ওহ হ্যাঁ আরও রয়েছে তো কপালে চুমু খাওয়ার জন্যও মা ম লা করবো।জেলের ওইপাশে বইসা তখন মশা, মাছি মারিস।”
মেহরার কথন শুনে আরশমান এর গম্ভীর মুখশ্রী তে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো।বলল,”আপনি অবলা নারী?ঠিক আছে করুন মা ম লা,আপনার ঐ জেলের মশা তো দূর ওই জেল এই আরশমান কে তার বউকে আদর করা থেকে আটকে রাখতে পারবে না।”
.
কেবিনের ভিতরে এসে বসেছে চারজন,নার্স এসে তাদের কাজ আরম্ভ করে দিয়েছে।ফাইজ এর আঘাত পাওয়া স্থান গুলো ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে নার্স।জাহরার হাতে তিনটে সেলাই পড়েছে।আরশমান এর হাতেও সেলাই পড়েছে।
আরশমান ফাইজ এর দিকে চেয়ে বলল,”ফাইজ তুই জাহরা কে নিয়ে বেরিয়ে পর,ওকে বাড়ি পৌঁছে দে।
মেহরা এইখান থেকে থানায় যাবে আমি মেহরার সঙ্গে যাবো নাহয় আমি ওকে দিয়ে আসতাম।”
ফাইজ সম্মতি জানালো।জাহরা কে তার সাথে আসতে বলে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।জাহরা দ্বিরুক্তি না করে চলে গেলো ফাইজ এর সঙ্গে।
.
মেহরার কনুইর দিকে ব্যান্ডেজ করা শেষে নার্স পায়ের ক্ষত দেখতে চাইলো মেহরা আরশমানের দিকে চেয়ে বলল,” একটু কেবিনের বাইরে যান।”
“আজব বাইরে কেনো যাবো দ্রুত পায়ের ক্ষত স্থান দেখান।”,গম্ভীর কণ্ঠে ভ্রু কুঁচকে কথাটি বলল আরশমান।
মেহরা রাগান্বিত কন্ঠে বলে উঠলো,”এই আমার মান সম্মান রাখ একটু যা কেবিনের বাইরে যা।আর আবার যদি বলিস যাবি না তাহলে এইযে যেই সুই সুতা দিয়ে তোর ক্ষত স্থান সেলাই করছে তা দিয়ে তোর মুখ সেলাই করে রেখে দিবো।”
নার্স হো হো করে হেঁসে উঠলো বলল,”আপনারা কিন্তু অনেক কিউট কাপোল।আর আপু ভাইয়া আপনার জন্য টেনশান করছে তাই তো যেতে চাইছে না।”
মেহরা পুনরায় রাগান্বিত কন্ঠে বলল,”ওর ঢঙের টেনশান,অসভ্য নির্লজ্য লোক একটা।এই এমপি,মন্ত্রী গুলা এমন নির্লজ্য হয় কেমনে?জানেন এই রাজনীতি বিদ রা একটু বেশি লাজ হীন হয়।আর আরশমান তোকে তো বিস্তর কেলানি কেলাবো আমি দেখে নিস।”
আরশমান উঠে দাড়ালো বলল,”নার্স আমার বউকে সাবধানে ব্যান্ডেজ করে দিবেন কোমল বিলাইর মত শরীর তার সে কষ্ট পেলে কিন্তু আমার কলিজা কেঁপে উঠে,তাই ভাববেন আমি আমার কলিজা কে প্যাকেট করে আপনার হাতে ধরিয়ে দিয়েছি।আপনি ব্যথা পাবেন কিন্তু আমার কলিজাকে ব্যাথা পেতে দিবেন না।নাহয় আপনাকে নার্স পদ থেকে বরখাস্ত করে দিবো। “,বলে দ্রুত বেরিয়ে গেলো।
মেহরা নাক কুঁচকে বলল,”ইশ কী কু ৎ সি ত ভাষণ!নার্স আমি বলছি আসলে এমপি হওয়ার আগে এই লোক পাবনার পিছন গেট দিয়া পালায়া আসছে বুঝছেন দেখলেন কেমন তার ছেঁড়া।আমি বুঝতে পারি না জনগণ এই পা গ ল কে কেমনে ভোট দেয়!আশ্চর্য ব্যাপার!”
নার্স হাসলো বলল,”আমাদের পাগল এমপি কিন্তু আপু হ্যান্ডসাম আছে অনেক।”
মেহরা কণ্ঠে বিরক্তির রেশ টেনে বলল,”কচু আছে।আপনি এই পা গ লের কথা না বলে আমার পা টা দেখুন।”মেহরা পায়ের দিক থেকে শাড়ি উঠিয়ে ধরলো পায়ের উপরের দিকে ছুরির আঘাতে খারাপ ভাবে অনেকটা কেটে গিয়েছে।চারটি সেলাই পড়লো জায়গাটিতে।
.
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে মেহরা গেলো থানায়,সাথে থাকলো আরশমান।গিয়েই জানতে পারল ছেলেগুলোকে থানায় নিয়ে আসার পথে চার থেকে পাঁচটি কালো রঙের গাড়ি পথ আটকায় পুলিশের সাথে হাতাহাতি করে ছেলেগুলোকে নিজেদের সাথে নিয়ে চলে যায়।মেহরা অবাক হলো,করা নিয়ে গেলো ওদের?থানায় এক ঘণ্টা সময় ব্যায় হলো।থানা থেকে বেরিয়ে আরশমান মেহরাকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়।বাড়ির সামনে এসে মেহরাকে হাত ধরে গাড়ি থেকে বের হতে সাহায্য করে।গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলে আরশমান বলে,”কাল সকালে আপনাকে আমি নিতে আসবো।সাফওয়ান কে দা’ফন করার পূর্বে আপনি দেখবেন সাফওয়ানকে।”
মেহরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো বলল,”আগে তো আমার সাফওয়ান এর নাম অব্দি শুনতে পারতেন না এখন নিজেই এত কিছু করছেন?”
আরশমান হেঁসে বলল,”এইটা সত্যি যে আমি সাফওয়ান কে পছন্দ করতাম না আপনার পাশে,আমি শুধুই অবগত ছিলাম সাফওয়ান খা রা প কাজের সাথে যুক্ত ছিল কিন্তু এর মধ্যে যে আরও রহস্য ছিলো তা আমার কাছে অজানা ছিলো।নাহয় কখনও আসতাম না আপনাদের মধ্যে।দূর থেকেই দেখে যেতাম আপনাকে।কিন্তু মেহরা সাফওয়ানকে যেই
ড্রা গ স দেয় হচ্ছিল তাতে সে একদিন না একদিন আপনার সামনে তার যে নিয়ন্ত্রণ ছিল তা হারিয়ে ফেলত।আমাদের তরুণ সমাজ এই ড্রা গ স নামক
বি ষা ক্ত জিনিসটির কাছে হেরে যাচ্ছে।”
🍁
ভোর হয়েছে কবরস্থান এর বাইরেই সাফওয়ান এর
লা শে র খাট।তার পাশেই সাফওয়ান এর পরিবার, আরশমান সাফওয়ান এর পরিবারকে সকল কিছু জানিয়ে তদের আসতে বলেছিল।
আরশমানের গাড়ি এসে থামতেই মেহরা দ্রুত গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে,ধীর পায়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এগিয়ে যায় লা শে র খাটের দিকে।আজ মেহরার পরনে পুলিশের পোশাক নেই বরং একটি শুভ্র রংয়ের চুড়িদার,থানা থেকে একসপ্তাহর ছুটি পেয়েছে সে।মেহরা মুখের সামনে থেকে কাপড়টি সরিয়ে নিলো তাকিয়ে থাকলো সাফওয়ানের ঘুমন্ত মুখের দিকে, অতঃপর এত সকল মানুষের সামনে নিজের সকল লাজ ভুলে গিয়ে সাফওয়ান এর কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলল,”মাফ করে দিও আমায়।চিন্তা করবে না তোমার এই মহুয়ার মনের এক পবিত্র স্থান জুড়ে তুমি থাকবে।তোমার এই মহুয়া তার সাফুকে সবসময় ভালোবাসে।”
দূর থেকে দাঁড়িয়ে মেহরাকে দেখলো আরশমান,কেনো যেনো কষ্ট হলো আরশমনের,কষ্টের পরিমাণ খুবই ক্ষীণ।সে মনে মনে ভাবলো,ভাগ্য এমনও হতে পারে মেহরা উম্মাদের মত ভালবাসে একজনকে আর সে ভালোবাসে মেহরা কে,যার জন্য আরশমান সকল কিছু করতে রাজি।সে হার মানবে না নিজের ভালোবাসায় মেহরাকে মুড়িয়ে রাখবে তার মৃত্যুর আগ অব্দি,একদিন না একদিন মেহরা বুঝবে তাকে।ক্ষীণ হলেও তার জন্য অনুভূতি জাগবে মেহরার হৃদয়ের কোনো না কোনো এক স্থানে।
.
আজ সেই রোগীকে নিয়ে আসার কথা ছিল।হ্যাভেন ও স্টিভ এরও আসার কথা রয়েছে।তাই তো করিডোর পেরিয়ে ফাইজ এর কেবিনের দিকে যাচ্ছে জাহরা।কেবিনের ভিতর প্রবেশ করতেই একটি ছয়-সাত বছর হবে এমন চঞ্চল ছেলেকে নজরে পড়লো তার।ছেলেটি পুরো কেবিন জুড়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছে হ্যাভেন,স্টিভ তা বসে বসে দেখছে।ফাইজ ছেলেটির পিছন পিছন ছুটে বেড়াচ্ছে।
ছেলেটি দৌড়ে জাহারর সম্মুখে এসে দাঁড়াতেই হাঁসি মুখে বলে,”তুমি ফাইজ ভাইয়ার ঝাড়ু তাইনা?”
জাহরা কটমট চোখে তাকালো ফাইজ এর দিকে।ফাইজ মিটমিট করে হাঁসলো।জাহরা ছেলেটিকে কোলে তুলে নিলো,ফাইজ এগিয়ে এসে বলল,”আরেহ ধূসর বাবু তুমি চিনে ফেললে?”
ধূসর হেঁসে বলল,”হ্যাঁ”,বলে দরজার দিকে তাকাতেই ধুসরের এক পরিচিত মুখ দৃষ্টিগোচর হলো সে হেঁসে চেঁচিয়ে বলে উঠলো,”ফাইজ ভাইয়ার ঝাড়ু দেখো ঐযে টাকলু হোসেন।ওইদিন না তুমি তার মাথার উপর চপ্পল ছুঁড়ে মেরেছিলে আহ ঝাক্কাস একটা মোমেন্ট ছিলো।সে কী আর জানে ফাইজ ভাইয়ার ঝাড়ুর কাছ থেকে তার টাকে চপ্পল টপকেছিল।”বলে হেঁসে উঠলো ধূসর।জাহরা বোকা বোকা হাঁসলো ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে নিলো কোথায় ডক্টর হোসেন কে দেখা যাচ্ছে কিনা হ্যাঁ সুদূরেই দাড়িয়ে নিজের টাকে হাত বুলাচ্ছেন তিনি।
ধূসর তার হাসির ইতি টেনে ঠোঁট উল্টে বলল,”কিন্তু ওই টাকলু হোসেন আমি হেসেছিলাম বলে ধমক দিয়েছিল আমায়।”
জাহরা ধূসর এর দিকে তাকিয়ে বলল,”তোমায় ধমক দিয়েছিল?”
“হ্যাঁ।”
“দাড়াও ওই টাকলা হোসেন কে আবার মজা দেখাচ্ছি।”,বলে পাশের ময়লার ঝুড়ি থেকে একটি কাগজের টুকরা নিয়ে হোসেন এর চকচক করতে থাকা টাকে ঢিল মারলো।একদম টাকে দিয়ে ঠাস করে লাগলো কাগজটি।পারফেক্ট নিশানা।
হোসেন চেঁচিয়ে বলে উঠলো,”কোত্থেকে আসলো এইটা।”,বলেই ঘুরে তাকালো ফাইজ এর কেবিনের দিকে,সঙ্গে সঙ্গে জাহরা ধূসর কে নিয়ে ফাইজ এর পিছন গিয়ে দাঁড়ালো।হোসেন ফাইজকে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে চেঁচিয়ে বলে উঠলো,”ফাইজ তুমি আমার মাথায় কাগজ ছুঁড়ে মেরেছো।”
“টাকলায় কয় কী!”,স্বাভাবিক কণ্ঠে কথাটি বলে উঠে ফাইজ।হোসেন শুনতে না পেয়ে উচ্চ কণ্ঠে বলে,”কী বলছো তুমি শুনতে পারছি না।”
#চলবে।
ভুল ত্রুটি হলে আশা করি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।