#অর্ধ_নক্ষত্র ।১১।
#লেখনীতে_Aiza_Islam_Hayati
“ডাক্তার হোসেন আপনার টাকের কসম দিয়ে বলছি আমি স্পষ্ট দেখেছি উপর থেকে এক পে’ত্নী আপনার টাকলায় ঢিল মেরেছে।বিশ্বাস করেন।”
হোসেন ফাইজ এর কথা শুনে ভ্রু কুচকে বিস্মিত কন্ঠে বলে,”হোয়াট!”
ফাইজ দুঃখের ভাবে অভিভূত হয়ে মুখটি ছোট করে বলে,”দেখেন ডক্টর হোসেন আমি একদম মিথ্যে কথা বলি না তার উপর আপনার টাকের কসম কেটেছি,তাহলে তো মিথ্যে বলার প্রশ্নই ওঠে না।”
ফাইজ এর পিছনে থাকা জাহরা গলা ফাটিয়ে হেঁসে উঠে।হোসেন হাসির শব্দ শুনতেই অবাক কন্ঠে বলে উঠে,”কে হাসছে এমন করে?”
ফাইজ হেঁসে বলে,”আরেহ তেমন কেউ না আমাদের হাসপাতালের পিছনের জঙ্গলের পেত্নীটা।তার হাসি কী চমৎকার তাই না,পুরোই কান বয়রা করে দেয়ার মত হাঁসি।”
হোসেন বিড়বিড় করে,”কী সব বলছে ফাইজ,পা গ ল হয়েছে নাকি?”
ফাইজ এর পিছন থেকে জাহরা ফাইজ এর পিঠে কিল বসিয়ে দেয়।ফাইজ ব্যাথায় কষ্টের সঙ্গে হেঁসে বলে উঠে,”আহ লালা লালা লা!”যেনো বোধ হলো পিয়ানোটা বেজে উঠেছে।
হোসেন সন্দেহের দৃষ্টিতে চেয়ে বলে,”ফাইজ আর ইউ ওকে??”
ফাইজ হাসির সঙ্গে দাঁতে দাঁত পিষে বলে,”নাহ্ ডক্টর আমি একদম ঠিক নেই।আপনি শুনতে পারছেন ওই পেত্নীটা আমাকে ডাকছে তাকে আদর করার জন্য।”
ফাইজ এর এহেন কথন শুনে হোসেন ভেবেই নিয়েছে ফাইজ এর মস্তিষ্কে সমস্যা রয়েছে।তাই বলল,”ফাইজ ভালো দেখে একটা সাইকোলজিস্ট দেখাও আমার মনে হচ্ছে তোমার মাথায় সমস্যা আছে।”বলেই জায়গাটি ত্যাগ করলো হোসেন।
জাহরা,ধূসর হো হো করে হেঁসে উঠল।ফাইজ জাহরার দিকে ফিরে তাকালো সঙ্গে সঙ্গে জাহরার পিঠে ধিরিম করে একটা কিল বসিয়ে দিলো।জাহরার হাসির সমাপ্তি ঘটলো ঠোঁট উল্টে বলে উঠলো,”বে’দ্দ’প ফা জি ল লোক।একটা মেয়ের গায়ে হাত দিস সাহস কত!”
“আর তুমি মেয়ে হয়ে শরম করে না একটা নিষ্পাপ ছেলের পিঠে ধিরিম করে কিল মারো, বে’দ্দ’প মাইয়া।”,বলে হ্যাভেন এর পাশে গিয়ে বসে পড়লো ফাইজ।
জাহরা ফুঁসে উঠতে চাইলে ফাইজ বলে উঠে,”কুল জাহরা পরে আমরা কি লা কি লি করব এখন এসে বসো, আর ধূসর কে ছেড়ে দাও।”
জাহরা ধূসর কে কোল থেকে নামিয়ে দিলো ফাইজ পুনরায় বলল,”ধূসর তুমি নিচে গিয়ে খেলো, যাও।”,ধূসর লাফাতে লাফাতে বেরিয়ে গেলো কেবিন থেকে।
জাহরা গিয়ে ফাইজ এর পাশের চেয়ারে বসে পড়লে ফাইজ বলে,”ধূসর হচ্ছে সেই রোগী।ওর বয়স সবে সাত বছর।ওর সকল রিপোর্ট আপনাদের সামনে রয়েছে।আমি এর আগেও ওর কয়েকটা রিপোর্ট আপনাদের দিয়েছিলাম।”
জাহরার মুখটি ছোট হয়ে উঠল, সাত বছর বয়সের এই শ্যাম বর্ণের চঞ্চল বাচ্চাটির নাকি বিরল ব্রেইন ক্যান্সার,কি করে এমন হতে পারে?বাচ্চাটির এখনও তো বাকি জীবনটা পরে আছে।সে এত সহজে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে যেতে পারে না।
.
জাহরা তার ভাবনা থেকে বেরিয়ে এলো চারজন একসাথে আলোচনা শুরু করলো।
.
দুই ঘণ্টার আলোচনার ইতি টেনে হ্যাভেন বলল,”Faiz we have to take the risk.(ফাইজ আমাদের রিস্ক নিতেই হবে।)
জাহরা শক্ত কন্ঠে বলল,”ফাইজ ওকে বাঁচাতে হলে রিস্ক তো আমাদের নিতেই হবে।নাহয় কী করে হবে।”
ফাইজ এর চোখের সম্মুখে ধূসর এর হাসি মাখা মুখটি সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠলো,ফাইজ নিমগ্ন চেয়ে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলল,”ওকে।আমরা কাল থেকেই শুরু করতে পারি।”
হ্যাভেন,স্টিভ উঠে দাড়ালো বিদায় জানিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।জাহরা’ও কেবিন থেকে প্রস্থান করার জন্য উঠে দাড়ালে ফাইজ জাহরার ক্ষত হাতটি টেনে তীক্ষ্ণ নজরে দেখে বলে,”হাতের অবস্থা কী?কাল রাতে হাতে ব্যাথা করেছিল?”
জাহরা এক টানে হাত ছাড়িয়ে বলল,”আমার হাত ব্যাথা করুক বা না করুক তাতে আপনার কী? আর আরেকটি কথা আমি দুঃখিত আমার জন্য কাল এমনটি হয়েছে, আমার জন্য আপনাদের এই অবস্থা।”
ফাইজ ভ্রু কুঁচকে ফেললো মনে মনে আওড়ালো সত্যি তো জাহরার হাত ব্যাথা করলে তার কী,কিন্তু কেনো এক অদৃশ্য টান অনুভব করছে সে?
ফাইজ উঠে দাড়ালো বলল,”জানি না আমার কী? তবে গতকালকের ঘটনায় তোমার দো’ষ নেই আসলে জাহরা সকলের দৃষ্টি এক নয় কেউ নিজের সম্মুখে চাঁদ কে দেখে তাকে কোনো অধিকার ছাড়াই অপবিত্র স্পর্শে ছুঁয়ে দিতে চায় আবার অনেকে সুদূর থেকে সেই চাঁদ কে মুগ্ধ নয়নে দেখে নিজের হৃদয়কে প্রশান্তিতে সিক্ত করতে চায়।”
জাহরা ভ্রু কুঁচকে বলে,”গতকালকের সঙ্গে চাঁদের সম্পর্ক কী?আর চাঁদ কী ওদের বাপ দাদার সম্মতি নাকি যে গিয়ে ছুঁয়ে আসবে?নাকি ওরা নাসার লোকেদের মত বিজ্ঞানী যে রকেট দিয়ে চাঁদের কাছে গিয়ে চাঁদকে ছুঁয়ে দিবে?আর চাঁদ টাই না কোত্থেকে আসলো।”
ফাইজ জাহরার মাথায় বারি দিয়ে বলে,”এই মাইয়া কথা এত পেচাও কেন জিলাপির থেকেও বেশি পেচ তোমার কথায়।”
জাহরা ফাইজ এর চুল টেনে ধরে নিজের দিকে ঝুঁকিয়ে এনে বলে,”তোর কথা তো আমার থেকেও বেশি প্যাঁচ পুরাই এমাজন জঙ্গলের মত। আর আরেকবার যদি তুই আমার মাথায় মারসোস কসম তোর মাথার একটা চুল অব্দি রাখবো না।বেলু বানায় দিবো তোকে।”
ফাইজ চেঁচিয়ে বলে উঠে,”আহ ছাড় বইন,তোকে আর মারবো না।আমি অনেক নিষ্পাপ একটা ছেলে আমি এইসব মারামারি একদম করি না।ওই হোসেন এর টাকের কসম তোর মাথায় মারবো না প্লীজ এই আর ছাড়।আমার চুল ছিঁড়ে আমাকে টাক্কু বানাইস না।”
“ফাইজ স্যার আপনার সিডিউল অনুযায়ী রোগী দেখার টাইম আজকে তিনটায়।”,একজন যুবক কেবিনে প্রবেশ করে কথাটি বলা মাত্রই তার চোখ রসগোল্লার আকার ধারণ করে।
জাহরা,ফাইজ যুবকটির দিকে তাকায়।জাহরা এখনও ফাইজ এর চুল শক্ত করে টেনে ধরে রেখেছে।ফাইজ করুন কন্ঠে বলে,”প্লীজ বইন ছাড়,আমার মান ইজ্জত গেলো আজকে।”
জাহরা ছেড়ে দিলো।যুবকটি হেঁসে বলল,”স্যার তিনটায় কিন্তু।”,বলে হাসতে হাসতে চলে গেলো।
ফাইজ ধপ করে চেয়ারে বসে পড়লো ফ্যালফ্যাল করে দরজার দিকে তাকিয়ে ভারাক্রান্ত মনে আওড়ালো,”দিসে আমার মান ইজ্জত খাইয়া। এখন এই পোলায় পুরা হাসপাতাল এর চিপায় চাপায় ছড়াবে ডক্টর ফাইজ তার জুনিয়র ডক্টর জাহরার হাতে কেলানী খাইসে।এখন এই মুখ দেখাবো কিভাবে আমি?কেউ এক বালতি বি’ষ খা আমি ম’ই’রা যাই।”
জাহরা আড় চোখে তাকিয়ে বলে,”মুখ না দেখাতে পারলে মাস্ক পরে আসবেন, আর বেশি ম র তে ইচ্ছে করলে আমাকে বলেন আমি খুশি খুশি ইঁদুরের বি ষ এনে দি।চিন্তা করবেন না ঐটা খেয়েই বাংলাদেশের শতশত ইদুর মরেছে এই অব্দি,আপনিও খেলে ম রে যাবেন।”
“আজব এমন ভাবে বলছো যেনো আমি ইদুরের আত্মীয় হই।ওরা ম’রে’ছে আমি কী ওদের বংশের লোক নাকি যে খেলেই টপকে যাবো।”
“আপনি চাইলে আমি নিয়ে আসতে পারি ট্রাই করে দেখতে পারেন।”
“তবে রে।”,বলে ফাইজ উঠে জাহরা কে তাড়া দিলে জাহরা এক দৌড়ে পালিয়ে যায়।
.
প্রশান্ত আজ তড়িঘড়ি করে সকল কাজ শেষ করছে।আজ একটি বারও জুনায়না তাকে ফোন করেনি।এখন দুই ঘণ্টার মিটিং শেষ করে কনফারেন্স রুম থেকে বেরিয়েছে।নিজের কেবিনে গেলো না সোজা নয়না ইন্ডাস্ট্রি থেকে বেরিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করে থানায় চলে এলো প্রশান্ত।
থানা আসা মাত্র জানতে পারে জুনায়না থানায় নেই,থানায় থাকা ইন্সপেক্টর কে জুনায়নার আসার সময় জিজ্ঞেস করলে সে বলে তার আসতে আসতে রাত হতে পারে।প্রশান্ত দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো থানার পিছনের সড়কে গিয়ে গাড়িতে বসে অপেক্ষা করতে থাকলো জুনায়নার।
.
বিকেল হলো,সন্ধ্যা হলো,এখন অন্ধকার হতে শুরু করেছে।প্রশান্ত গা এলিয়ে দিয়েছিল হুট করেই সে চকিতে চাইলো সামনের দিকে, জুনায়না আসছে পাশেই ইন্সপেক্টর আসাদ।
প্রশান্ত গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো জুনায়নার নজরে পড়লো প্রশান্তকে,হুট করেই সে আসাদের হাত ধরে বলে উঠলো,”আসাদ ইউ নো আপনি অনেক হ্যান্ডসাম আমি তো বারবার ক্রাশ খাই।”
আসাদ ভড়কে উঠলো।জুনায়নার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সামনে চাইলো,প্রশান্ত দুই হাত বুকে গুজেই তদের দিকে তীক্ষ্ণ নজরে চেয়ে আছে। জুনায়ানা আসাদ এর গালে হাত দিয়ে তাকে নিজের দিকে ফিরিয়ে চোখ মেরে বলল,”আপনি আমার দিকে তাকিয়ে থাকবেন সবসময় বুঝেলন।”
আসাদ হো হো করে হেঁসে উঠলো সে আসল ব্যাপার টি ধরতে পেরেছে,হুট করে কেনো জুনায়না এমন করছে।আসাদ হেঁসে বলল,”আমার তো আপনার দিকেই তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে হয় জুনায়না।”
দুজন প্রশান্তর পাশ কেটে চলে যেতে চাইলে প্রশান্ত উচ্চ কন্ঠে জুনায়নাকে ডেকে উঠে।জুনায়না ভড়কে যায়,প্রশান্ত তো এত্ত উচ্চ কন্ঠে কথা বলে না।ফিরে তাকায় অস্থির কন্ঠে বলে উঠে,”কী হয়েছে দোস্ত?”
প্রশান্ত এগিয়ে আসে আসাদ থেকে জুনায়নাকে ছাড়িয়ে বলে,”আজ আমি বিকেলের আগে এইখানে এসেছি।এই রাস্তার এক পাশে গাড়ি থামিয়ে বসেছিলাম আর এখন তুই আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছিস?”
জুনায়না প্রশান্তর ঘর্মাক্ত মুখের পানে তাকিয়ে থেকে ফিরে আসাদের দিকে চাইলো,চোখের ইশারায় আসাদকে চলে যেতে বলল।আসাদ চলে যেতেই জুনায়না পকেট থেকে রুমাল বের করে প্রশান্তর ঘর্মাক্ত মুখ মুছে দিতে শুরু করলো বলল,”কী হয়েছে যে তুই এইখানে বসে ছিলি তাও আমার অপেক্ষায়?”
“ফোন ধরছিলি না কেনো?”
“গত কাল আমাদের চলে আসার পর আরশমান,মেহরা,ফাইজ এর সঙ্গে যা ঘটেছে তুই হয়তো জানিস।ওই ছেলেগুলোর তদন্ত নিয়েই আজ ব্যাস্ত ছিলাম আমরা।”
প্রশান্ত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।বলল,”তুই এখনো রেগে আছিস জুনায়না?”
এর প্রতিউত্তর করলো না জুনায়না।রুমালটি নিজের পকেটে গুঁজে নিলো বলল,”বাড়ি যা অনেক রাত হয়েছে।এতক্ষণ যাবত আমার জন্য তুই দাঁড়িয়ে ছিলি আই এম সরি দোস্ত।”বলে জুনায়না চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতে চাইলে প্রশান্ত জুনায়নার বাহু ধরে টেনে নিজের সামনে দাড় করিয়ে বলে,”আমি যাবো মানে আর সরি কিসের?এই অব্দি তো কখনও তুই আমাকে সরি বলিসনি তাহলে আজ কেনো?কী হয়েছে কী তোর?টেল মি জুনায়না,অনেক বাড়াবাড়ি করে ফেলছিস তুই,আমার ভালো লাগছে না একদম।”
জুনায়না প্রশান্তর মুখ পানে তাকালো তার বড্ড হাসি পাচ্ছে।মনে মনে আওড়ালো,”এখন দেখো বাচ্চু কেমন ঘোল খাওয়াই তোমাকে।এই জুনায়না কী জিনিস এইবার তুমি বুঝবে।নিজে থেকে এসে আমাকে ভালবাসি না বলেছ তবে আমি আমার চৌদ্দ গুষ্টির নাম পাল্টে রেখে দিবো বলে দিলাম।”জুনায়না নিজের হাসি সংযত রেখে বলল,”কোথায় দোস্ত কী করলাম আমি?”
প্রশান্ত বিরক্ত বোধ করলো বলল,”যাইহোক,গাড়িতে উঠে বস তোকে বাড়ি ছেড়ে আসবো।”
জুনায়না নিজের বাহু প্রশান্তর থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,”নাহ্ দোস্ত আজ আসাদ এর সঙ্গে বাড়ি যাবো ভাবলাম দুজন এই রাতের সড়ক রিকশায় করে ঘুরবো।”
প্রশান্ত ভ্রু কুঁচকে ফেললো বলল,”হোয়াট ননসেন্স জুনায়না!তুই আসাদ কে কত দিনই বা হলো চিনিস যে এই সময়ে ওর সঙ্গে রিকশায় করে রাতের সড়ক ঘুড়ে বেরাবি?”
“দেখ দোস্ত তুই তো আমাকে পাত্তা দিলি না।আমি কাল রাতে অনেক ভাবলাম যে অনেক জ্বালিয়েছি তোকে আর জ্বালাবো না।এইবার তুই জুনায়নার থেকে মুক্ত।আর তোকে মুক্ত করেছি,এখন আমার জীবনে নতুন কেউ তো লাগবে আমি তো অন্তত দেবদাসী হয়ে থাকব না।তাই ভাবলাম আসাদ কে চান্স দেয়া যায় লোকটা কিন্তু অনেক হ’ট দোস্ত।”
প্রশান্ত রেগে বলে উঠে,”একদম না তুই ওই আসাদ এর থেকে একদম দূরে থাকবি।”
“আজব কেনো দোস্ত তুই আমাকে পাত্তা দিবি না তার উপর অন্য ছেলেদের সাথেও ডেটে যেতে দিবি না তো করবো টা কী আমি?”
প্রশান্ত আমতা আমতা করে বলল,”যাবি না কেনো আমরা সবাই মিলে তোর জন্য ভালো ছেলে খুঁজে আনবো।আর আমার আসাদ কে পছন্দ না।”.
জুনায়না বিড়বিড় করলো,”শা’লা হা রা মী শিকার করলে দোষ কী যে তুই জেলাস।”
প্রশান্ত পুনরায় বলল,”যা গাড়িতে ওঠ।”
“একদম না আমার তো আসাদ কেই চাই।শ্যামলা হলেও হ্যান্ডসাম আমার জন্য পারফেক্ট আছে।আমি তো ওর সাথেই বাড়ি যাবো।জোর করবি না একদম প্রশান্ত।”,বলেই হাঁটা ধরে জুনায়না।
প্রশান্ত বারকয়েক পিছন থেকে ডাকে,জুনায়না শুনতে পায় প্রতেকটি ডাকে তার বক্ষ কেঁপে ওঠে,মনে মনে আওড়ায়,”আহ এমন করে ডাকিস না প্রশান্ত এই জুনায়না নিজেকে আটকে রাখতে পারবে না।পুরো প্ল্যান ভেস্তে যাবে আমার।”
প্রশান্ত শেষ বার উচ্চ কন্ঠে ডাকলো জুনায়না বলে।জুনায়না দাড়ালো না এক দৌড়ে চলে গেলো।প্রশান্ত রেগে গাড়িতে গিয়ে উঠে বসলো স্টিয়ারিং শক্ত করে চেপে ধরে কয়েকবার শ্বাস নিলো বিড়বিড় করে বলল,”উফ আমি তো চাই ও আমার থেকে দূরে থাকুক তাহলে এত অস্থির কেনো লাগছে।বড্ড অসস্তি লাগছে।না একা ছাড়বো না ওকে তাও কয়েকদিনের ছেলে আসাদ এর সঙ্গে তো আরও নয়।”প্রশান্ত গেলো না,জুনায়না আসাদ বের হলে ওদের পিছু নেয়ার কথা ভেবে নিলো সে।
আধ ঘন্টা পর প্রশান্তর গাড়ির পাশ দিয়ে একটি রিকশা গেলো,প্রশান্ত তীক্ষ্ণ চোখে দেখলো।রিকশায় জুনায়না ছাড়া আর কেউ নেই।আর দাঁড়িয়ে থাকলো না ধীর গতিতে রিকশার থেকে অনেকটা দুরত্ব বজায় রেখে গাড়ি চালালো সে।
.
রাত বেড়েছে,ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে এসেছে চারিপাশ।বিস্তর মাঠের এক কোণায় থাকা গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে গত কালকের,রাতের সেই ছেলেগুলোকে।ছেলেগুলোর সামনেই কয়েকটি হিং স্র কুকুরকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে।কুকুর গুলো হিং স্র দৃষ্টিতে চেয়ে আছে ছেলেগুলোর দিকে,বোধ হচ্ছে এখনই ছেড়ে দেয়া হলে কুকুর গুলো ঝা পিয়ে পড়বে ছেলেগুলোর ওপর।
“তোদের শরীরের উ’ত্তে’জ’না ,চোখের কুৎ সিত দৃষ্টি সকল কিছু মিটিয়ে দেবো আজ।আজকের পর থেকে উ’ত্তে’জ’না কী,নিজের পায়ে উঠে দাঁড়ানোর মত ক্ষমতা রাখবনা তোদের নিকট।ভাবিস না মেরে ফেলবো,আমার না তোদের মারার একদম ইচ্ছে নেই আমি তো তোদের করুন থেকে করুন তম অবস্থা করবো নিজেদের মৃ ত্যু তোরা নিজেরাই কামনা করবি।”,গম্ভীর কণ্ঠে কথাটি ভেসে আসতেই ছেলেগুলো চকিত নয়নে অন্ধকারে খুঁজলো কণ্ঠের উৎসকে।
সঙ্গে সঙ্গে সম্পূর্ণ মাঠে কৃত্রিম আলো জ্বলে উঠলো।ছেলেগুলোর সামনে দাড়িয়ে থাকা আরশমান ও তার লোকেদের মুখাবয়ব কৃত্রিম আলোয় স্পষ্ট হয়ে উঠলো।কণ্ঠের উৎসই ছিল আরশমান।আরশমান কুকুর গুলোর দিকে এগিয়ে গেলো ঝুঁকে গিয়ে কুকুর গুলোর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,”আমার আদরের সুন্দর সুন্দর কুকুরছানা গুলো ভালো করে আদর করে দিবি ওদের।ওদের উচিত শিক্ষা দেয়ার দায়িত্ব শুধুই তোদের।”
আকাশ মিটমিট করে হাসলো।আরশমান উঠে আসলো আকাশ এর সম্মুখে এসে দাড়িয়ে বলল,”আকাশ আমাকে যেতে হবে।তুমি তো জানো কী করতে হবে।ওদের চি ৎ কা র আমি মাঠের শেষ প্রান্ত থেকে শুনতে চাই।”,বলে হাটা ধরলো আরশমান।বড় বড় পায়ে মাঠের শেষ প্রান্তে এসে গাড়িতে ওঠা মাত্র আরশমানের শ্রবনেন্দ্রিয়ে ভেসে আসে বিকট
চি ৎ কা র।চি ৎ কা র এর শব্দ যেনো আরশমানের বক্ষ শীতল করে দিয়েছে।এই সকল মা স্তা ন দের মত আবর্জনা তার এলাকায় সে রাখতে ইচ্ছুক নয়।এই সকল আবর্জনাদের জন্যই মেয়েদের স্বাধীন ভাবে চলাফেরায় বিঘ্ন ঘটছে।
#চলবে।
#কালেক্ট_গল্প_কথা
Story Link-গল্পের লিংক (রিভিউ+আলোচনা)💓https://facebook.com/groups/329590663119170/