#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________54
আজ অনেক দিন পর কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে তৃপ্তি । সে এখন পুরো পুরি সুস্থ । ড্রোইং রুমে বসে আছে নিদ্র । আমেনা নিদ্রর পাসে ড্রোইং রুমে সোফার উপর বসে বললেন ।
:+আর যাতে এমন না হয় । মেয়ে’টা কি কলেজ থেকে চলে গেছে ।(আমেনা)
আমেনার কথা শুনে চমকে উঠলো নিদ্র । এরপর আমেনার দিকে প্রশ্ন বোধক দৃষ্টিতে তাকালো । আমেনা নিদ্রর থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে আবার বলে উঠলেন ।
:+তুই আমাকে সত্য কথা না বলতে পারিস । তাই বলে এই না যে, আমি সত্য কথা যানতে পারবো না । রাহুল আমাকে সব বলেছে । পরশু মার্কেটে যাওয়ার পর রাহুলের সাথে দেখা হয়েছে আমার । তখনি রাহুলের কাছ থেকে শুনছি । অবশ্য আমাকে জোর করতে হয়েছে ওর কাছ থেকে কথা গুলো শুনতে ।(আমেনা)
আমেনার কথা শুনে মাথা নিচু করে নিলো নিদ্র । তার বলার মতো আর কিছু থাকলো না । আমেনা বসা থেকে উঠে দারিয়ে আবার বললেন ।
:+ওকে কলেজে নিয়ে যাচ্ছিস ভালো কথা । কিন্তু কলেজের সামনে থেকে এখন আর সরবি না । কলেজ ছুটি হওয়া প্রর্জন্ত কলেজের কাছে দারিয়ে থাকবি । এমনি তেও তোর এখন কোনো কাজ নেই । অফিসে জয়েন করতে বলছিলাম, তাও করলি না । তো এখন এই ডিউটি কর । আসা করছি সামনে আর এমন কিছু হবে না ।(আমেনা)
এই বলে আমেনা সেখান থেকে চলে গেল । আর নিদ্র জোরে একটা নিশ্বাস ছেরে, হাতের ঘড়ির দিকে তাকালো । ৯টা ৩৪ বাজে । বিরবির করে বাম পাসে সিরির দিকে তাকিয়ে নিদ্র । দেখলো তৃপ্তি সিরি বেয়ে নিচে নেমে আসছে । নিদ্র আর বসে না থেকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে, বাইকের উপর চড়ে বসলো । কিছুখন পর তৃপ্তি আসলো আমেনার থেকে বিদায় নিয়ে । তৃপ্তি বাইকের উপর বসতেই, বাইক চালিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসলো নিদ্র । বাইক চলছে তার আপন গতিতে । হঠাৎ তৃপ্তি বলে উঠলো ।
:+আচ্ছা ভাইয়া । আমি একটা কথা বলবো । রাখবে ।(তৃপ্তি)
নিদ্র বাইকের লুকিং গ্লাসে তৃপ্তিকে একবার দেখে নিলো । এরপর বললো ।
:+বল শুনি ।(নিদ্র)
:+বলবো, আগে কলেজে যাই, তারপর ।(তৃপ্তি)
এই বলে নিদ্রর কাধে হাত রেখে চুপচাপ বসে রইলো তৃপ্তি । নিদ্রকে এখন আর বাইকে বসে জরিয়ে ধরে না সে । লোকজন পাস থেকে কেমন করে যেন তাকিয়ে থাকে । আবার নিদ্রও নিষেধ করে দিয়েছে তাকে জরিয়ে ধরতে । যেহেতু এখন আর তৃপ্তি ভয় পায় না । সেহেতু জরিয়ে ধরার মানে হয় না ।
★
:+কেমন আছেন আপা ।(সালমা)
আমেনা সোফার উপর বসে ছোট একটা নিশ্বাস ছেরে বললো ।
:+এই তো ভালো । মেয়েকে ফোন কিনে দিয়েছি? তাই আমার কাছে এখন আর ফোনই করিস না তুই ।(আমেনা)
আমেনার কথা শুনে, সালমা একটু হেসে বললো ।
:+আরে তেমন কিছু না আপা । আসলে,,,,,,,,।(সালমা)
:+হয়েছে থাম । আমাকে রান্নায় যেতে হবে । এখন কেন কল করেছিস চটপট বল ।(আমেনা)
সালমাকে থামিয়ে দিয়ে বললো আমেনা । সালমা আমেনার কথা শুনে বললো ।
:+মেয়ে’টাকে কয়দিন ধরে দেখতে পাইনি । তাই মন’টা কেমন যেন করছে । ওকে ভিডিও কল করতে বললে । ও বলে ওয়াইফাই নাই । কারেন্ট চলে গেছে । এমবি ফুরিয়ে গেছে । এসব ।(সালমা)
সালমার কথা শুনে, আমেনা আবারো ছোট একটা নিশ্বাস ছেরে বললো ।
:+ও ঠিকই বলেছে । এই কয়দিন এমনই হয়েছে । এখন সব ঠিক আছে । বিকেলে ভিডিও কল করে কথা বলিস । ও এখন কলেজে গেছে ।(আমেনা)
:+নিদ্রর সাথে গেছে??(সালমা)
আমেনার কথা শেষ হতে, আমেনাকে প্রশ্ন করলো সালমা । আমেনা মুখে ছোট করে হুম বললো । সালমার মুখে হাসি ফুটে উঠে । ছেলে’টা সাথে থাকলে তিনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন । আমেনা কান থেকে ফোন চোখের সামনে এনে বললো ।
:+তাহলে এখন রাখছি । আমার কাজ পড়ে আছে । পরে কথা বললো ।(আমেনা)
আমেনার কথা শুনে, সালমা ছোট করে আচ্ছা বললো । আমেনা কল কেটে দিয়ে রান্না ঘড়ের দিকে চলে গেল ।
★
:+আমি বাইক চালানো শিখবো ।(তৃপ্তি)
কলেজের ভিরতে বাইক পার্ক করলো নিদ্র । তৃপ্তি বাইক থেকে নেমে দাড়িয়েই এই কথা বললো । নিদ্র চোখ গরম করে তৃপ্তির দিকে তাকালো । এরপর দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বললো ।
:+বাইক চালানো শিখবি মানে । কানের নিচে দু’টো দিয়ে মাথা থেকে ভূত নামিয়ে দেবো । যা ক্লাসে । ইডিয়েট ।(নিদ্র)
এই বলে তৃপ্তির সামনেই বাইক ঘুরিয়ে, কলেজের গেট দিয়ে বেরিয়ে যেতে লাগলো নিদ্র । তৃপ্তি চোখ বড়ো বড়ো করে পিছন থেকে খানিক’টা চিৎকার দিয়ে বললো ।
:+আমি বাইক চালানো শিখবোই । একবার যেহেতু আমার মনে ধরছে । তো আমি শিখে ছারবোই । তোমার থেকে না হলেও, আমি অন্য কোথাও থেকে শিখবো । তবুও আমি শিখে ছারবো ।(তৃপ্তি)
:+এই যে ম্যাডাম । কাকে বলছেন আপনি এগুলো ।(জুই)
জুইর কথা শুনে, থমথমি খেয়ে পিছনে ঘুরে জুইর দিকে তাকালো তৃপ্তি । দেখলো জুই তার দিকে দাঁত কেলিয়ে তাকিয়ে আছে । তৃপ্তি জুইর হাত ধরে বললো ।
:+বাইক চালানো শিখতে চাই । কি করে শিখবো বলতো । আজ রাস্তা দিয়ে আসার সময় একটা মেয়েকে বাইক চালাতে দেখেছি ।(তৃপ্তি)
তৃপ্তির কথা শুনে, জুইর চোখ দু’টো বড়ো বড়ো হয়ে যায় । জুই তৃপ্তির হাতের উপর হাত রেখে শান্ত কন্ঠে বললো ।
:+বাইক চালানো চারটে খানে কথা নয় । আমিও একবার শিখতে চেয়েছিলাম । পরে কান ধরছি জীবনে আর বাইক চালানো শিখবো না ।(জুই)
জুইর কথা শুনে, তৃপ্তি চোখ গোল গোল করে জুইর দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+কেন? কি হয়েছে ।(তৃপ্তি)
জুই তৃপ্তির হাত ধরে ক্লাসের দিকে নিয়ে যেতে যেতে বললো ।
:+বাইক চালানো শিখার সময়, একটা রিকশার সাথে বাইক লাগিয়ে দিয়ে ছিলাম । পরে রিকশারও খতি পুরোন দিতে হয় । আর আমার গা থেকেও রক্ত ঝরে । মানে আমার হাতের কনুই, পায়ের হাটু, রাস্তায় লেগে ছিলে যায় । তখন থেকেই কান ধরছি । জীবনে আর বাইক চালানো শিখবো না ।(জুই)
জুইর কথা শুনে, তৃপ্তি একটু হেসে উঠে বললো ।
:+তুই একটা গাধি । প্রথম প্রথম এমন একটু আদটু হবেই । পরে ধিরে ধিরে ঠিক হয়ে যেতো ।(তৃপ্তি)
তৃপ্তির কথা শুনে, তৃপ্তির দিকে চোখ তুলে তাকালো জুই । মেয়ে’টার মাথায় আবার কি ঢুকছে কে যানে । জুই নিজের মাথা চুলকে কিছুখন ভাবলো । কথা বলতে বলতে দুজনে ক্লাস রুমে চলে আসলো । এরপর একটা বেঞ্জে গিয়ে বসে পরলো দু’জনে ।
★
:+মেয়ে আমরা আগেরই দেখেছি বেয়াইন । এখন সুধু দিন তারিখ ঠিক করতে আসছি ।(সুলতানা)
সুলতানা বেগমের কথা শুনে অবাক হলেন নীলার আম্মু নাজমা বেগম । তিনি আস্তে করে বলে উঠলেন ।
:+আপনাদের চিনি না । যানি না । কি থেকে কি বলবো । নীলার আব্বুও বাসায় নেই । তিনি অফিসে চলে গেছেন । আর আপনারা আমার মেয়েকে কোথায় দেখেছেন ।(নাজমা)
নাজমা বেগমের কথা শুনে, সুলতানা বেগম ইমনের দিকে তাকালো । ইমন মাথা নিচু করে বসে আছে । এদিকে নীলা রুমের ভিতর বসে হেচকি তুলছে । হঠাৎ করে ইমন তার মাকে নিয়ে তাদের বাসায় চলে আসবে নীলা ভাবতেও পারেনি । কাল রাতে বিয়ে নিয়ে ঝগড়া হয়েছে ইমনের সাথে নীলার । ইমন আরো কয়েক’টা দিন সময় চেয়েছিল নীলার কাছে । কিন্তু নীলা ঝারি মেরে বলেছিল । “আমি অন্য কোথাও বিয়ে করে নিচ্ছি । ভালো থাকিস তুই” । কথা’টা শুনে টেনশনে ইমনের মাথা ফেটে যাচ্ছিল । পরে আজ সকালে সুলতানা বেগমকে নিয়ে সরাসরি নীলাদের বাসায় এসে উঠলো ইমন । নাজমা বেগম একবার নীলার রুমের দিকে তাকাচ্ছে আবার ইমনের দিকে তাকাচ্ছে । ছেলে মাশাআল্লাহ উনার পছন্দ হয়েছে । কিন্তু অপরিচিত কারো কাছে কি করে মেয়ে বিয়ে দিবেন । এখন যা দিন কাল পড়েছে । মা বাবা নকল বানিয়ে বিয়ে করে নিয়ে যায় ছেলে’রা । পরে কয়েক দিন না যেতে আবার ডিভোর্স দিয়ে দেয় । নাজমা বেগম ফোন হাতে তুলে নিয়ে, তার স্বামী আরাফাতকে কল করে তাড়াতাড়ি বাসায় আসতে বললো । এদিকে ইমনের রাগ উঠে আছে । সে কোন দিকে তাকাচ্ছে না । সুধু চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে । নীলার এ প্রর্জন্ত প্রায় চার গ্লাস পানি খাওয়া হয়ে গেছে । তবুও যেন নীলার গলা শুকিয়ে আসছে । সুমিও সকালে অফিসের কাজে চলে গেছে । ইমন আজ আসবে যানলে, নীলা সুমিকে কখনোই অফিসে যেতে দিতো না । তার উপর আবার তৃপ্তিও কলেজে চলে গেছে । হঠাৎ নীলার মাথায় এলো নিদ্রকে একটা কল করা যাক । নিদ্র এসে বিষয়’টা সমাধান করবে । যেই ভাবা, সেই কাজ । নীলা নিদ্রকে কল করে ইমনের বেপারে সব বললো । নিদ্র কিছুখন ভেবে জেক আর রাহুলকে বলে, ক্লাব থেকে বাড়িতে চলে আসলো । তৃপ্তির কলেজ ছুটি হবে সেই ২টায় । এর ফাকে বাড়ি থেকে ঘুরে আসা যাক । এই ভেবে নিদ্র বাড়িতে এসে সোজা নীলাদের ফ্লাটে চলে আসলো । নিদ্রকে দেখে নাজমা বেগম সস্তির নিশ্বাস ছারলেন । এরপর নিদ্রর কাছে এগিয়ে গিয়ে নাজমা বেগম বললেন ।
:+দেখো বাবা এনারা কারা আমি চিনতে পারছি না । হুট করে ফ্লাটে এসে বলছেন, আমার মেয়েকে এনাদের পছন্দ হয়েছে । আমার মেয়েকে এনারা কোথায় যেন দেখেছে । এখন বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করতে আসছেন । বিয়ে কি মুখের কথা বলো । একজন মহিলা আর ছেলে আসলেই বিয়ে দিয়ে দেবো ।(নাজমা)
নাজমা বেগমের কথা শুনে নিদ্র বললো ।
:+আপনি শান্ত হয় আন্টি । আমি এনাদের চিনি । আপনার কোন সমস্যা হবে না । এদিকে আসুন ।(নিদ্র)
এই বলে নাজমা বেগমকে নিয়ে ইমন আর তার মায়ের সামনে এসে দারালো নিদ্র । নিদ্রকে দেখে ইমন দাড়িয়ে গেল । নিদ্র নাজমা বেগমকে বললো ।
:+আন্টি আপনি বসুন । আমি দেখছি ।(নিদ্র)
এই বলে সামনে ঘুরে ইমনের দিকে হাত বারিয়ে নিদ্র বললো ।
:+কেমন আছেন ।(নিদ্র)
ইমন নিদ্রর হাতে হাত মিলিয়ে বললো ।
:+এই চলছে দিন কাল । তুমি কেমন আছো ।(ইমন)
:+ভালো । বসুন কথা বলি ।(নিদ্র)
ইমনের হাত ছেরেদিয়ে বসতে বললো নিদ্র । ইমন আবার আগের যায়গায় বসে পড়লো । নিদ্র সুলতানা বেগমকে সালাম দিলো । সুলতানা বেগম সালামের যবাব দিলো । নিদ্র একটা সিঙ্গেল সোফায় বসে নাজমা বেগমের দিকে তাকালো । দেখলো নাজমা বেগম তার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে । নিদ্র খেখিয়ে গলা পরিস্কার করে নাজমা বেগমকে বললো ।
:+আন্টি ইনি হচ্ছে ইমন । আর উনি হচ্ছেন তার মা । আমাদের গ্রামে পরিচয় হয় । আর,,,,,,,,,,।(নিদ্র)
নিদ্র আরো কিছু বলার আগে, লম্বা লম্বা পা ফেলে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করলো আরাফাত সাহেব । নাজমা বেগম বসা থেকে উঠে আরাফাত সাহেবের সামনে গিয়ে দারালেন । আরাফাত সাহেব আস্তে করে নাজমা বেগমকে বললো ।
:+এনারাই কি? (আরাফাত)
:+হুমম । নিদ্র নাকি এনাদের চিনে । তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো তাড়াতাড়ি ।(নাজমা)
নাজমা বেগমের কথা শুনে আরাফাত বললো ।
:+চা পানি দেয়েছো কিছু ।(আরাফাত)
আরাফাতের কথা শুনে, নাজামা বেগম ছোট করে বললো ।
:+না ।(নাজমা)
আরাফাত সাহেব সেই শুনে চোখ গরম করে আস্তে বললেন ।
:+এতো’টা কেয়ার লেচ তুমি । শত হলেও এনারা এখন আমাদের মেহমান । তাড়াতাড়ি চা পানির বেবস্তা করো । আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি ।(আরাফাত)
এই বলে নাজমা বেগমের সামনে থেকে ভিতরের দিকে নিজেদের বেড রুমে চলে গেল আরাফাত । আর নাজমা বেগম সোফার দিকে এগিয়ে এসে বললো ।
:+নিদ্র বাবা তোমরা কথা বলো আমি আসছি ।(নাজমা)
নাজমা বেগম সেখান থেকে চলে যেতেই নিদ্র ইমনকে বললো ।
:+তা হঠাৎ করে চলে আসলেন যে । আমাকে একটা ফোন দিতে পারতেন । আমি আগে সব কিছু মেনেজ করে নিতাম । তাহলে আর বেশি অসুবিধে হতো না ।(নিদ্র)
নিদ্রর কথা শুনে, ইমন নিদ্রর দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+তোমার নাম্বার’টা হারিয়ে ফেলেছি । নাহলে তোমাকেই আগে ফোন করতাম ।(ইমন)
নিদ্র কিছু বলার আগে, সুলতানা বেগম পাস থেকে নিদ্রকে প্রশ্ন করে বসলো ।
:+তোমার নাম কি বাবা ।(সুলতানা)
সুলতানা বেগমের কথা শুনে, নিদ্র তার দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+জ্বি,,,নিদ্রয়ান আহমেদ নিদ্র ।(নিদ্র)
:+এখন কি করছো বর্তমানে ।(সুলতানা)
:+তেমন কিছু না আন্টি । এই ঘুরি ফিরছি খাচ্ছি দাচ্ছি ।(নিদ্র)
নিদ্রর কথা শুনে সুলতানা বেগম হেসে উঠলেন । সাথে ইমন আর নিদ্রও হাসলো । হাসির শব্দ পেয়ে নিজের রুম থেকে উকি দিয়ে বাহিরে তাকালো নীলা । কি হবে কে যানে । ভয়ে কলিজা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে নীলার । আরো এক গ্লাস পানি হাতে নিয়ে ঢক ঢক করে খেয়ে নিলো । এরি মধো আরাফাত সাহেব এসে যোগ দিলেন সেখানে । নিদ্র আরাফাত সাহেবকে ইমন আর তার মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো । ইমন বসা থেকে উঠে এসে আরাফাত সাহেবের পা ছুয়ে সালাম করলো । আরাফাত সাহেব ইমনকে বসতে বলে, তিনিও বসলেন । নাজমা বেগম একটা ট্রে’তে করে কয়েক কাপ চা, বিস্কুট, চানাচুর, ফ্রিজে থাকা মিষ্টি, দদি নিয়ে আসলো । তিনি ট্রে’টা টেবিলের উপর রেখে নীলার রুমের দিকে চলে গেলেন । আরাফাত সাহেব বলে উঠলেন ।
:+আচ্ছা সবই বুঝলাম । সব কিছু ঠিক ঠাক আছে । কিন্তু ছেলে আর ছেলের মা সুধু আসলো । আর কেও আসলো না কেন? ছেলের বাবা কোথায় ।(আরাফাত)
আরাফাতের কথা শুনে, ইমন মাথা নিচু করে নিলো । সুলতানা বেগম নিদ্রর দিকে তাকালেন । নিদ্র আরাফাত সাহেবকে বললো ।
:+আসলে আংকেল, আপনাদের যেমন এখানে তেমন কেও নেই । ঠিক এনাদেরও কেও নেই । যারা আছে সবাই গ্রামে আর প্রবাশে । আর এনার বাবা মানে আংকেল মারা গেছেন । এখন যা করার সব কিছু আন্টিই করবেন ।(নিদ্র)
নিদ্রর কথা আরাফাত সাহেব বুঝতে পেরে চট করে বলে উঠলেন ।
:+ওহহ,,সরি । আসলে আমি যানি নাতো । তাই বলে ফেলছি । আপনারা মন খারাপ করবেন না প্লিজ ।(আরাফাত)
সুলতানা বেগম একটু হেসে বললেন ।
:+এমন’টা হয়ই বেয়াই । বাদ দেন । আপনি না যেনেই বলে ফেলছেন । ধিরে ধিরে আপনারা আমাদের সম্পর্কে যানবেন । আমরা আপানের সম্পর্কে যানবো । তখন সব ঠিক হয়ে যাবে । তখন আর এসব কথা উঠবে না । এখন আমাদের মামুনিকে একটু দেখান । তার চাঁদ মুখ খানা দেখি ।(সুলতানা)
সুলতানা বেগমের কথা শুনে, আরাফাত সাহেব একটু হেসে হাক ছেড়ে নাজমা বেগমকে বললেন ।
:+কৈ নীলার আম্মু,,,। নীলাকে একটু তৈরি করে নিয়ে আসো ।(আরাফাত)
আরাফাত সাহেবের কথা শুনে নীলার রুম থেকে “আনছি” বলে একটা আওয়াজ আসে । কিছুখন পর নীলাকে রুম থেকে বের করে নিয়ে আসলো নাজমা । সুলতানা বেগম নীলাকে দেখে বলে উঠলো ।
:+মাশাআল্লাহ । একে বারে হিরার টুকরা ।(সুলতানা)
নীলা একটু লজ্জা পেল । নাজমা বেগম নীলাকে বললো সবাইকে সালাম করার জন্য । নীলা প্রথমে সুলতানা বেগমকে সালাম করলো । এরপর তার আব্বু আম্মুকে । এরপর নিদ্রর কাছে আসতেই, নিদ্র পা দু’টো চট করে সোফার উপর তুলে বললো ।
:+তেরি তো । আমাকে সালাম করতে বলছি । এখানে গুরুজন আছে না ।(নিদ্র)
নীলা মুচকি হেসে মাথা নিচু করে সরে গেল । সবাই হেসে উঠলো । সুলতানা বেগম সিরিয়াস হয়ে বললেন ।
:+দেখেন বেয়াই । মেয়েও এখানে, ছেলেও এখানে । উভয় পক্ষ সামনা সামনি । তাই এখানে লুকোচুরির কিছু নেই । আমি সামনা সামনি কথা বলা মানুষ । আমার সংসারে আমি আর আমার ছেলে । ঝামেলা করার মতো কেও নেই । আমাদের মেয়ে পছন্দ হয়েছে । আমরা আগেই মেয়েকে দেখেছি । এখন সুধু দিন তারিখ ঠিক করতে আসছি । এখন আপনারা বলেন,, আপনাদের আমার ছেলে পছন্দ হয়েছে কি না । আমার ছেলে একজন ডক্টর,,,, এটা তো শুনলেন এতোখন নিদ্র বাবাজির মুখে । এখন আপনাদের মতামত সরাসরি বলে দেন।(সুলতানা)
সুলতানা বেগমের কথা শুনে, আরাফাত সাহেব একটু ভেবনায় পরলেন । তিনি নাজমা বেগম আর নীলার দিকে তাকালেন । নাজমা বেগম কিছু একটা চোখ ইসারা করলো আরাফাতকে । নীলা মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে । আরাফাত সাহেব বললেন ।
:+ আমাদেরও ছেলে পছন্দ হয়েছে । কিন্তু আমাদের পছন্দই তো পছন্দ নয় । মেয়েরও তো পছন্দ হতে হবে । আমি আমার মেয়ের উপর কোনো কথা বলতে পারবো না । কারন সংসার করবে সে । সে যদি মনে করে এখানেই সে ভালো থাকবে তাহলে আমাদের আপত্তি নেই ।(আরাফাত)
আরাফাত সাহেব কথা শুনে, নিদ্র আর সুলতানা বেগম হাসতে লাগলো । এদিকে ইমন মাথা নিচু করে মুচকি হাসলো । নীলারও একই অবস্থা । এতো সহজে সব কিছু হয়ে যাবে ইমন ভাবেনি । নিদ্র আর সুলতানা বেগমের হাসি দেখে অবাক হয়ে তাদের দিকে তাকালো আরাফাত আর নাজমা । নিদ্র হাসি থামিয়ে বললো ।
:+আংকেল ছেলে আর মেয়েকে একটু একান্ত কথা বলতে দিন । তারা নিজেদের মধ্যে একটু কথা বলে আসুক ।(নিদ্র)
নিদ্রর কথা শুনে, আরাফাত সাহেব একটু ভেবে বললেন ।
:+হুমম,, ঠিক । আচ্ছা নীলা মা । ওকে নিয়ে তুমি একটু আমাদের ফ্ল্যাট’টা ঘুরিয়ে দেখাও ।(আরাফাত)
আরাফাত সাহেবের কথা শুনে, নীলা সুধু মাথা নাড়িয়ে পিছনে ঘুরে হাটা ধরলো । ইমন তো এটারই অপেক্ষা করছিল । চান্দুকে এবার দেখাবে মজা । নিদ্র ইমনকে চোখে ইসারা করতেই, ইমন বসা থেকে উঠে নীলার পিছু পিছু যেতে লাগলো । একটা রুমের কাছে আসতে, নীলার হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে রুমের ভিতরে নিয়ে গেল ইমন । রুমের দরজা’টা লাগিয়ে নীলার দিকে ঘুরে তাকালো সে । ভয়ে মাথা নিচু করে দারিয়ে আছে মেয়েটা । পড়নে নীল একটা শাড়ী । ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক । হাতে কাচের চুড়ি । মাথার উপরে শাড়ীর আঁচল দিয়ে ঘোমটা দেওয়া । কোমরের সাইডে শাড়ী এক পাসে । ফর্সা পেট’টা দেখা যাচ্ছে । যেন এক নতুন বৌ ইমনের সামনে দারিয়ে আছে । ইমন ধির পায়ে নীলার দিকে এগিয়ে গেল । নীলার বুক ধরফর করছে । ইমন নীলার সামনে যেতে যেতে বলতে লাগলো ।
:+আমাকে ছেরে অন্য কোথাও বিয়ে করে নেবে তাই না ।(ইমন)
নীলা শুকনো ঢোক গিললো । ইমন নীলার একেবারে সামনে এসে নীলার খালি পেটে নিজের ঠান্ডা হাত দিয়ে ছুরিয়ে দিলো । নীলা কেপে উঠে দু’পা পিছনে সরে গেল । কিন্তু ইমন নীলার হাত ধরে টান দিয়ে নিজের সাথে মিসিয়ে নিলো । নীলাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো ইমন । তার ঠান্ডা হাত দু’টো নীলার শাড়ীর ফাঁকে নগ্ন পেটের উপর বিচরণ করছে । নীলা কেপে উঠে চোখ মুখ খিচে বুঝে নিয়ে ইমনের হাত দু’টোর উপর নিজের হাত দু’টো রাখলো । ইমন নীলার কাঁধে থুতনি ঠেকিয়ে বললো ।
:+বিয়ে করবেন না অন্য কাওকে ম্যাডাম ।(ইমন)
ইমনের কথা শুনে, নীলা চোখ মুখ খিচেই মাথা এপাস ওপাস করলো । মানে সে অন্য কাওকে বিয়ে করবে না । ইমন মুচকি হেসে বলে উঠলো ।
:+কেন বিয়ে করবেন না । কাল তো আমার সাথে বেশ উচু গলায় কথা বলছিলেন । একেবারে বাঘিনীর মতো । এখন এমন বিরাল হয়ে গেলেন যে ।(ইমন)
ইমনের কথার প্রতি উত্তরে নীলা কিছু বলে না । ইমন নীলাকে ঘুরিয়ে দিয়ে সামনে থেকে জরিয়ে ধরলো । ইমনের ঠোঁট জোরা একে বারে নীলার ঠোঁটের সামনে । ইমন ঘোড় লাগানো কন্ঠে বলে উঠলো ।
:+যানে মেরে দেবো, যদি আর কোন দিন এই মুখে অন্য কারো কথা শুনি ।(ইমন)
এই বলে নীলার ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁট জোরা মিসিয়ে নিলো ইমন । নীলা কেপে উঠে ইমনের শার্ট খামছে ধরলো । লাইফের ফাস্ট কিস প্রিয় মানুষ’টির কাছ থেকে পাওয়ার অনুভূতি’টাই অন্যরকম ।
#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,
[।কপি করা নিশেদ।]
[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]