💖 স্বপ্নের প্রেয়সী 💖
Part – 30
____________________________
সন্ধ্যা 7 টায় ফ্লাইট হওয়ায় 6’30 তে এয়ারপোর্ট এ উপস্থিত হতে হবে।
যেহেতু ফ্লাইট দেশের মধ্যে ই তাই বেশি আগে যাওয়া লাগবে না।
সন্ধ্যার মধ্যে সমস্ত কিছু প্যাক করে রেডি হয়ে গাড়িতে উঠে বসলাম।
হঠাৎ মনে পড়ল আমার কালো গোলাপ গাছটার কথা।
বাসার বাইরে নামিয়ে রেখেছিলাম।
গাড়ি থেকে দৌড়ে চলে আসলাম।
গাছটাকে কোনো মতে টেনে নিয়ে আসলাম গাড়ির কাছে।
আমাকে দেখে সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে।
আমি মুখ কুঁচকে বললাম
– কি হয়েছে?
রিফাত ভাইয়া উচ্চ শব্দে হেসে উঠল, আর তার সাথে সাথে সবাই হেসে উঠলো।
আমি এদের হাসার কারন বুঝতে পারলাম না।
রিফাত ভাইয়ার দিকে ব্রু কুঁচকে তাকাতেই রিফাত ভাইয়া কোনো মতে হাসি থামিয়ে বলল
– এই গাছটিকে এখানে আনলি কেন?
আমি সাধারন ভাবেই উত্তর দিলাম
– কেন এটা তো আমি আমার সাথে নিয়ে যাবো।
রিফাত ভাইয়া গাড়ি থেকে নেমে বলল
– আরে বোকা মেয়ে তুই কি এটা নিয়ে ককপিট দিয়ে উরে যাবি নাকি?
কিছুক্ষণ রিফাত ভাইয়ার দিকে ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে থেকে যখন বুঝলাম বিষয় টা তখন লজ্জা তে কুকরে গেলাম।
আমি ও না ধ্যাত, কিন্তু এই গাছ টিকে এখানে রেখে যাওয়া যাবে না।
আমি রিফাত ভাইয়া কে বললাম
– আমি এই গাছটা কে রেখে যাবো না।
কিছুতেই না , রীতিমতো কান্না জুড়ে দিলাম ।
ফারহান ভাইয়া গাড়ি থেকে নেমে এসে বলল
– ওকে ওকে কান্না করিস না রে ভাই।
ভালো লাগে না , বাচ্চা দের মতো কান্না ।
আমি ওনার দিকে ব্রু কুঁচকে বললাম
– আমি আপনার ভাই ?
ফারহান ভাইয়া কিছু না বলে শুধু আমার দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকালেন।
তারপর বললেন
– বেশি বুঝিস তুই।
এখন কান্না থামা , এই গাছ টা কে পিকাপের সাথে যাওয়ার ব্যবস্থা করছি।
কাল সকালেই পৌছে যাবে।
আমি খুশি হয়ে গেলাম, মনের আনন্দে গাড়িতে উঠে বসলাম।
আসলে বেশ কিছু জিনিসপত্র ঢাকাতে নেওয়া লাগছে যার জন্য পিকআপ এর ব্যবস্থা ও করা হয়েছে।
ফারহান ভাইয়া গাছটিকে উঠিয়ে দিয়ে ড্রাইভ করে সোজা এয়ারপোর্ট এ চলে আসলেন।
গাড়ি এয়ারপোর্ট এর বিশেষ পার্কিং সাইটে পার্ক করে নিলেন।
যাতে করে কোনো সমস্যা না হয়, আর গাড়ি ঠিক সময় ওনার কাছে পৌছে যায় ।
গাড়ি থেকে নেমে দেখলাম আব্বু, আম্মু , বড় মা, বড় আব্বু, মনি আন্টি , রাজিব চাচ্চু আর আরিফ চাচ্চু এসে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন।
ওদের সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই হাতে জুস ধরিয়ে দিলো ।
আমি আপন মনে জুস খেতে লাগলাম।
কিছুক্ষণ পর ফ্লাইট এর জন্য ডাকা হলো আর আমরা সব ফরমালিটিস কমপ্লিট করে ককপিট এ উঠে গেলাম।
_____________________
ফ্লাইট লেন্ড করে বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে 9 টা বেজে গেল।
মনিকা আপুর বাসা আমাদের বাসা থেকে একটু আগে হওয়ায় ওকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে এসেছি।
আমাদের বাসার অপজিটেই ফারহান ভাইয়া দের বাসা আর পাশের বাসাটা মনি আন্টি দের।
আমরা আসাতেই দেখলাম সবাই দাড়িয়ে আছে
আমাদের জন্য।
এদের সবাই কে দেখে মন যে কতোটা শান্তি অনুভব করছে তা বলে বোঝানো যাবে না।
ফারহান ভাইয়ার আব্বু, আম্মু , রিমি , মনি আন্টির আব্বু, আম্মু আর ওনার ভাবি ও আছে।
কতো দিন পর এদের দেখা।
রিমি আমাকে দেখা মাত্র ই দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরল।
জড়িয়ে ধরে তো ফ্যাচফ্যাচ করে কেঁদেই দিলো।
মেয়ে টা অনেক বেশি ইমোশনাল।
আমি ওর চোখের পানি মুছে দিতে দিতে বললাম
– আমি এসেছি তাই খুশি হস নি বুঝি।
রিমি আমাকে আবার জড়িয়ে ধরে বলল
– কে বলল খুশি হই নি।
আমি ওর পিঠে আলতো হাত ছুঁইয়ে বললাম
– আরে বোকা মেয়ে তাহলে এভাবে কাঁদছিস কেন?
রিমি চোখ মুছে বলল
– আর কাদবো না।
আমি আর রিমি দুজোন ই হেসে দিলাম।
ফরহাদ চাচ্চু, রোমা আন্টি, মণি আন্টির পুরো পরিবারের সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বললাম।
সবাই আমাকে আদর করছে , এরা সবাই আমাকে বড্ড ভালোবাসা যে।
সবার সাথে কুশল বিনিময় করে রিমির সাথে গল্প করতে করতে ফারহান ভাইয়াদের বাসায় চলে আসলাম।
আজকে আমরা সবাই এখানেই ডিনার করবো রিফাত ভাইয়া , আর আমি এখানেই থাকবো।
কারন বাসাটা তে কিছু কাজ ও আছে ।
শুধু শুধু আমরা কি করবো তার থেকে ভালো এখানেই থাকবো আজকে ।
3 ফ্যামিলির সবাই মিলে ডিনার সেরে গল্প করে সোজা রিমির রুমে চলে আসলাম।
রিমির সাথে বেডে শুয়ে আছি।
দুজোন ই সিলিং এর দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছি।
রিমি কে ধ্যান ভেঙে বললাম
– এই তুই আমাকে সাত দিন পর পর কেন কল দিতি?
কি হয়েছে তোর আগের মতো নেই মনে হচ্ছে।
কেমন যেন পরিবর্তন এসেছে।
রিমি আমার কথায় বেশ ঘাবড়ে গেল।
তারপর তুতলিয়ে বলল
– তেমন কিছু না রে।
আমি উঠে বসে রিমি কে ও টেনে উঠালাম ।
তারপর বললাম
– আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বল তো।
রিমি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নিলো।
এই মেয়েটা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে একদম মিথ্যে বলতে পারে না।
আমি রিমি কে আসস্ত করে বললাম
– আরে বোকা মেয়ে আমি না তোর বেস্ট ফ্রেন্ড।
আমাকে বলতে দৃধা কিসের হুমম ।
রিমি খানিকটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল
– আসলে একটা ছেলে আমাকে আট মাস ধরে পছন্দ করে।
কখনো বাজে কথা বলে নি, বা বাজে ব্যবহার ও করে নি।
আট মাস ধরে পেছনে পড়ে আছে।
আমি ওর দিকে সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বললাম
– তুই কি বলেছিস ?
রিমি আবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল
– আমি কিছু বলি নি।
আসলে
আমি রিমি কে সোজা করে বললাম
– আসলে কি ?
রিমি চোখ বন্ধ করে বলল
– আসলে আমি জানি না এই অনুভূতির নাম কি।
কিন্তু সারাক্ষণই ও আমার মাথার মধ্যে ঘুরে।
আমি কিছুই বুঝি না , কেন এমন হয়।
কোনো কিছুতে মন দিতে পারি না।
আমি জানি তোর সাথে বেশি কথা বললে তুই বুঝে যাবি তাই কম কথা বলতাম।
আমার সব কিছু তেই অস্বস্তি হয়।
কিছুই ভালো লাগে না ।
আমি ও খানিকটা অবাক হয়ে রইলাম।
কারন এই অনুভূতির সঙে আমি পরিচিত নই।
অনেক প্রপোজ এসেছে কখনো তাদের দিকে দ্বিতীয় বার ফিরে ও তাকাই নি।
আর মনের কোনে কখনো ভালোবাসা নিয়ে কোনো প্রশ্ন ও জাগে নি।
সারাক্ষণ তো রিফাত ভাইয়ার সাথে ফাজলামি আর ফারহান ভাইয়ার ধমক খেয়ে ই কেটে গেছে।
বেশ কিছুক্ষণ পর রিমি আমাকে ঝাঁকিয়ে বলল
– এই ফারাবি তোর কি হলো।
আমি একটু চমকে বললাম
– হুমম । শুনছি , আসলে এই অনুভূতির সাথে আমি পরিচিত নই।
কখনো প্রেম ভালোবাসা এই সব নিয়ে ভাবি নি।
রিমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল
– এখন বল তো কি করি আমি।
কিছুই বুঝতে পারছি না ।
আমি রিমির দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে বললাম
– আরে এত চিন্তা করছিস কেন।
তুই আগে তোর অনুভূতির সাথে পরিচিত হ তারপর সিদ্ধান্ত নিবি।
আর ওনি যদি তোকে ভালোবেসে ই থাকে তো আর ও কয়েক বছর এমনি তেই অপেক্ষা করবেন।
এতো ভাবিস না , এই বলে রিমি কে জড়িয়ে নিলাম।
তারপর রিমির সাথে অনেকক্ষণ গল্প চালিয়ে গেলাম।
রাত বোধহয় দুটো বাজে তখন ফারহান ভাইয়া দরজায় নক করলেন।
রিমি দরজা খুলতেই দেখলাম সাথে রিফাত ভাইয়া ও আছে ।
ফারহান ভাইয়া রিমি কে বলল
– ফারাবি কে নিয়ে ছাদে আয়।
রিমি ব্রু কুঁচকে বলল
– এতো রাতে ভাইয়া ছাদে গিয়ে কি করবো।
ফারহান ভাইয়া কোমরে হাত গুঁজে দাড়ালেন ।
পেছন থেকে রিফাত ভাইয়া বলল
– রিমি তুই এই ফারাবির সাথে থাকতে থাকতে পুরো ওর মতো হয়ে গেছিস।
আমি বেড থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললাম
– সব দোষ আমাকে দিতে পারলেই তোমার শান্তি ।
রিফাত ভাইয়া হালকা হাসলেন।
ফারহান ভাইয়া একবার আমার দিকে তাকিয়ে স্ক্যান করে নিয়ে বলল
– তাড়াতাড়ি চলে আয়।
আমি আর রিমি দুজোন এই এদের পেছন পেছন ছাদে চলে আসলাম ।
_____________________________
( আসসালামুআলাই রির্ডাস । আমি রাতে এই অব্দি ই লিখে রেখেছিলাম । সকালে লেখার কোনো সুযোগ পাই নি। সব ঠিক থাকলে ইনশআল্লাহ সন্ধ্যা বেলা আরেক টা পার্ট দিবো।
📌.
23 মে আমার পেজ এর এক মাস পূর্তি উপলক্ষে আমাকে কি আপনারা 1000 ফলোয়ার গিফট দিবেন না।
মাঝে 3-4 টি দিন আছে। এখনো প্রায় 200 বাকি। প্লিজ সবাই ফ্রেন্ডদের ইনভাইট দেও।
যেকোনো কনফিউশন থাকলে এক দিনের মধ্যে কমেন্ট করে জানাবেন আর যেকোনো সময়ে ইনবক্স এ আসবেন ইনশআল্লাহ আমি আমার সাধ্য মতো চেষ্টা করবো ।
আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ ফলো দিয়ে পাশে থাকুন। )
বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।
💜 হ্যাপি রিডিং 💜
চলবে
ফাতেমা তুজ