#প্রেমাসক্তি
#ফাতেমা_তুজ
#part – 12
আরিয়ান ভাইয়া শুনছেন?
মিহির ডাকে পেছন ঘুরে তাকালো আরিয়ান।
মিহি কে দেখে খানিকটা অবাক ই হলো পরক্ষণেই মুচকি হেসে বলল
– আরে মিহি যে ,,,, তা হঠাৎ কি মনে করে ?
মিহি মাথা চুলকোতে চুলকোতে বলল
– আসলে একটা সাহায্য চাইতে এসেছি।
মিহির কথা তে ভ্রু কুঁচকে তাকালো আরিয়ান।
চিন্তার স্বরে বলল
– রিসব এর সাথে কোনো ঝামেলা হয়েছে কী ?
– নাহহহ ভাইয়া। ওর সাথে কোনো ঝামেলা হয় নি।
আরিয়ান নাক কুঁচকে বলল
– তোহহহহ ?
আচ্ছা বলো কি হেল্প লাগবে ,,,,,,
মিহি মাথা নিচু করে বলল
– এক্সচেলি ভাইয়া রিসব এর কাজিন রিসব কে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে গেছে।
ও নাকি রিসব কে বিয়ে করেই ছাড়বে। রিসব বেশ চিন্তায় আছে সাথে আমি ও।
– আচ্ছা,,,, এই বিষয় ,,, তো ওর কাজিন কে বোঝাতে হবে তাই তো ?
কোনো ব্যাপার নাহহহ কন্ট্রাক্ট নাম্বার জোগাড় করে দিয়ো বুঝিয়ে বলবো।
– আসলে ভাইয়া এমন টা নয় ।
আমি বলতে চাইছিলাম যে ,,,,,
মিহি কে থামিয়ে দিয়ে আরিয়ান বলল
– এতো ভনিতা করছো কেন মিহি,,, সরাসরি বলে দাও।
সমস্যা নেই তো ,,,,
আমি তো তোমাদের বড় ভাই ই হই।
মিহি মাথা ঝাঁকিয়ে বলল
– আসলে আমরা একটা প্ল্যানিং করেছি ভাইয়া।
সেই বিষয়ে ই কিছু হেল্প লাগবে।
আরিয়ান খানিকটা অবাক হলো সাথে চোখে মুখে ফুটিয়ে তুললো বিস্ময়ের রেখা।কৌতুহলী কন্ঠে বলল
– কিহহহ প্ল্যান?
– আসলে আমরা ঠিক করে ছি যে সকলের অগোচরে বিয়ে টা আই মিন রেজিস্ট্রি টা করে রাখবো।
যাতে পরবর্তী তে কেউ আমাদের ওপর বিয়ে নিয়ে চাপ দিলে আমরা রেজিস্ট্রি দেখিয়ে দিতে পারি।
তখন ঝামেলা টা ও কম হবে।
– কিন্তু মিহি এটা তো ঠিক হবে না ।
ফ্যামিলি ছাড়া এভাবে,,,,, তাছাড়া তোমরা তো বাসায় জানিয়ে দিতেই পরো।
আচ্ছা রিসব কে আমার সাথে কথা বলতে বলো।
মিহি কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল
– প্লিজ ভাইয়া বারন করবেন নাহহ।
রিসব আপনাকে বলার সাহস পাচ্ছে না দেখেই আমি বললাম।
ওও তো আপনাকে বড় ভাই মানে তাই নাহহ ।
প্লিজ ভাইয়া সাহায্য করুন,,,, প্লিজ।
আর রিসব র আব্বু ওর কাজিন র সাথে বিয়ে দিতে চায়।
এখন এটাই উপায়,,, আমরা যখন আমাদের কথা বলবো ,,, যদি তখন না মানে তো রেজেস্ট্রি দেখাবো।
তখন আর এতো ঝামেলা পোহাতে হবে নাহহ,, যদি ও রাগ করবে কিন্তু আমাদের ফেলে দিতে পরবে না ।
আর আমি ও রিসব কে নিয়ে ইনসিকিউর ফিল করি ,,,, যদি রিসব ওর কাজিন কে বিয়ে করে ফেলল কিংবা আমার বাসা থেকে আমাকে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হলো ।
দুজন চাই নিজেদের মন কে শান্তি তে রাখতে ,,,,
আরিয়ান দীর্ঘশ্বাস টেনে ব্যস্ত হয়ে বলল
– আচ্ছা আচ্ছা কেঁদো নাহহ আমি সাহায্য করবো।
আরিয়ানের কথাতে মিহি লাফিয়ে উঠলো ।
উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলল
– থ্যাংক্স ইউ ভাইয়া,,,, অনেক অনেক থ্যাংক্স
আরিয়ান মৃদু হাসলো ,, আর মিহি লাফাতে লাফাতে চলে গেল।
রিসব নামক ছেলেটা কে রক্ত দিয়ে বাঁচিয়ে ছিলো আরিয়ান।
সেই থেকে রিসব তাকে বড় ভাই হিসেবে মানে।
দুজনের সম্পর্ক ও বেশ ভালো।
আরিয়ান দীর্ঘশ্বাস টেনে ভাবতে লাগলো।
ইসসস তার জীবন টা ও যদি সহজ হতো তাহলে সে ও নীলিমা কে দু হাতে জড়িয়ে নিতে পারতো।
মেয়েটাকে এতো যন্ত্রণা সহ্য করতে হতো না।
কিন্তু ঐ যে ভাগ্য,,, ভাগ্য দুজন কে আলাদা করতে ব্যস্ত।
কথায় আছে না ভাগ্যের বেশি কেউ দিতে পারে না।
ওদের ও কেউ দিতে পারবে না।
আরিয়ান দীর্ঘশ্বাস টেনে মৃদু হাসলো ,,,, তারপর দ্রুত গতিতে বাসার দিকে রওনা হলো ।
*
নীলিমা চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেখছে।
সবাই বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে দেখে মনে হচ্ছে না।
সেই কখন থেকে মিহি কে প্রশ্ন করেই যাচ্ছে নীলিমা তারা কোথায় যাচ্ছে।
কিন্তু মিহি কোনো প্রশ্নের জবাব দিচ্ছে নাহহ।
কিছুক্ষণ আগে নীলিমা কে কলেজ থেকে এক প্রকার টেনে হিঁচড়ে বের করে নিয়ে এসেছে মিহি।
মিহির মুখের ভঙ্গি বলে দিচ্ছে সে একটা রা ও কাটবে নাহ।
নীলিমা দীর্ঘশ্বাস টেনে কনা কে বলল
– এই কনা শোন নাহহ ,,,, তুই অন্তত কিছু বল প্লিজ।
আমরা কোথায় যাচ্ছি?
কনা হাই তুলে বলল
– ভোর পাঁচ টার দিকে জাগিয়ে তুলেছে আমাকে ঐ শয়তান্নি মিহি ।
তারপর সকাল সাত টা হতে না হতে টেনে বের করিয়েছে।
আমি কি জানি নাকি আমরা কোথায় যাচ্ছি।
নীলিমা মুখ গোমড়া করে নিলো।
এরা কেউ কেন যে কিছু বলছে না কে জানে।
খানিকটা ঝুঁকে রুমি কে দেখে নিলো নীলিমা।
রুমির মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে,,,, রুমি কোনো ধ্যান এ মগ্ন।
আদৌ কি রুমি কে কিছু জিগ্যেস করবে না কি করবে না এই সব নিয়ে ভাবতে লাগলো নীলিমা।
যদি রুমি ও এই দুটোর মতো আচারন করে।
কিন্তু নীলিমার কৌতুহলী মন টা কেমন আকুবাকু করছে তাই নীলিমা ভয় কাটিয়ে জিগ্যেস করেই ফেলল।
কিন্তু রুমির তীক্ষ্ম কন্ঠস্বরে কেঁপে উঠলো।
রুমি তেড়ে এসে বলল
– দেখ মাথা টা পুরো ধরে গেছে।
ঐ ছাগলে সকাল সকাল গরুর মতো টেনে হিঁচড়ে নিয়ে এসেছে।
এখন তুই ও মাথা টা খাচ্ছিস।
ঐ পাগলের রাগ তোর ওপর দেখাতে চাচ্ছি না ।
প্লিজ কিছু বলবি নাহহহ
রুমির দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢোক গিলে নিলো নীলিমা।
নাহহহ এরা সব পাগল হয়ে গেছে।
এদের বলে আর কাজ নেই ,,,,,
নীলিমা আর কিছু না বলে চুপচাপ গাড়ি তে বসে রইলো।
গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে।
থেকে থেকে কয়েকটা পাখির কলরব ও শোনা যাচ্ছে।
বাহহহ আজকাল ঢাকার এই ব্যস্ত নগরীতে ও পাখির কিচিরমিচির শোনা যায়।
অবশ্য নেহাত ই মন্দ নয় বিষয়টা,,, বরং খুব ই উপভোগকর বিষয়।
বিষাক্ত বাতাস কে ছাপিয়ে মৃদু হাওয়া এসে নীলিমার গাল কে স্পর্শ করে যাচ্ছে।
বেশ ফুরফুরে লাগছে নীলিমার।
নীলিমা পাখির গুনগুন শব্দে কখন যে চোখ বুজে তলিয়ে গেল ঘুমের অতলে তা টের ই পেল না।
*
মিহি নীলিমা কে ডাকতে ডাকতে হয়রান হয়ে গেছে।
নীলিমার এই গভীর ঘুমের কারন বুঝতে পারছে না মিহি।
মেয়েটা কি আজকাল রাতে ঘুমোয় নাহহহ ?
মিহি চিন্তার রেখা মুখে ফুটিয়ে গাড়ি থেকে নেমে রিসবের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।
রিসব কোমরে হাত গুঁজে দাড়িয়ে আছে।
মিহি দীর্ঘশ্বাস টেনে বলল
– নীলু তো ঘুমে বিভোর,,, কিহহ ভয়ঙ্কর এতো ডাকার পর ও উঠলো নাহহহ।
একটু পানি নিয়ে আসো তো,,,, বোধহয় নীলুর শরীর টা সুস্থ।
তাই চোখ মেলে তাকাতেই পারছে নাহহহ বার বার চোখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
রিসব মাথা ঝাঁকিয়ে পাশের দোকান থেকে ওয়াটার বোতল কিনতে গেল।
মিহি দীর্ঘশ্বাস টেনে রুমি কে বলল
– নীলু মেইবি অসুস্থ,,, সকালে বুঝতে পারি ই নিইই।
নাহলে জোড় করে নিয়ে আসতাম নাহহহহ।
রুমি ছলছল নয়নে নীলিমার দিকে তাকিয়ে আছে।
সবাই প্রচন্ড রকম ভালোবাসে নীলিমা কে।
সেই ছোট্ট সময় থেকে চারজন একই সাথে চলা ফেরা করে।
কনার মুখে উপচে পড়া চিন্তার ছাপ।
চোখ দুটো স্থির করে কিছু ভাবছে।
নীলিমা অলয়েজ নিজেকে ফিট আর সুস্থ রাখতে ব্যস্ত থাকে।
তাহলে এমন টা হলো কি করে?
কনার ভাবনার ছেদ হলো মিহির ডাকে।
কনা নীলিমার মাথা টা খানিকটা উচু করে ধরলো আর মিহি নীলিমার মাথায় পানি দিতে লাগলো ।
খানিক টা পানি চোখে মুখে ছিটিয়ে দিতেই নীলিমার ঘুমের ঘোর কাটলো।
নীলিমা পিট পিট করে তাকাতেই সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়লো।
মিহি তো কেঁদেই দিলো,,,, নীলিমা সবার দিকে ভ্যবলার মতো চেয়ে থেকে হঠাৎ ই ফিক করে হেসে দিলো।
সবাই কৌতুহল নিয়ে তাকাতেই নীলিমা হাসি থামিয়ে ছোট করে বলল
– তোরা যেভাবে কাঁদছিস মনে হচ্ছে আমি মৃত্যুসজ্জায়ী,,,, আসলে কিছু দিন ধরে ঘুম হচ্ছে নাহহহ।
ঘুমের ঔষধে ও কাজ হচ্ছে নাহহ,,,, আজকের নরম আবহাওয়া গায়ে পড়তেই সব ঔষধ এর রিয়্যাকশন পড়েছে।
সবাই কিছুক্ষণ নীলিমা কে বেশ বকা ঝকা করলো। তারপর গাড়ি থেকে নেমে পড়লো।
নীলিমা নামতে যেতেই পা ফসকে পড়ে যাচ্ছিলো।
দুটো হাত এসে নীলিমার এক হাত ধরে ফেলল নীলিমা পিট পিট করে তাকাতেই দেখলো অচেনা একজন।
ছেলে টা নীলিমা কে সোজা করে দার করিয়ে বলল
– আর ইউ ওকে ?
নীলিমা শুধু মাথা ঝাকালো।
মিহি এসে নীলিমা কে ধরলো ,,,, ব্যস্ত হয়ে বলল
– নীলু ঠিক আছিস তুই ?
নীলিমা মৃদু হাসলো,,,, অথার্ৎ সে ঠিক আছে।
নীলিমা পাশে তাকাতেই দেখলো ছেলে টা এক দৃষ্টি তে নীলিমার দিকে তাকিয়ে আছে।
নীলিমার অস্বস্তি হতে লাগলো,,,,, মিহি নীলিমা কে অস্বস্তি তে পড়তে দেখে বলল
– ডোন্ট ওরি নীলু,,,,, ওনি রিসব এর বন্ধু রেহান ভাইয়া ।
ছেলেটা কিঞ্চিত হাসলো,,,, হাসি টা নীলিমার ভালো লাগলো না।
নীলিমা চোখ নামিয়ে ছোট্ট করে বলল
– ওহহহহ
*
কনা আর রুমি আঁকড়ে ধরে আছে নীলিমাকে।
নীলিমা এখনো জানে না তারা কোথায় আছে,,,,,ভেতরে আসার সময় দৃষ্টি মাটির দিকেই ছিলো আর মন নিবন্ধন ছিলো অন্য একজনের কাছে।
মানুষ টা দূরে থেকে ও নীলিমার মনের খুব গভীরে আছে।
ভেতরে ঢুকে নীলিমা যা বুঝলো এটা কোনো অফিস।
কিন্তু নীলিমা কে নিয়ে সবাই এখানে কেন এসেছে?
এখানে কি কাজ থাকতে পারে?
ভাবতেই পাশের রুম থেকে দুজন মালা গলায় দিয়ে করিডোর দিয়ে হাসতে হাসতে যেতে লাগলো।
নীলিমা সামান্য ভ্রু কুঁচকে তাকালো পরক্ষণেই মাথায় খেলে গেলো এটা রেজেস্ট্রি অফিস।
কিন্তু কার বিয়ে ?
মিহির তো বিয়ে এভাবে হওয়ার কথা নাহহহ।
আর মিহির বিয়ে হলে তো মিহি প্রথমেই বলতো।
নীলিমার মাথায় কিচ্ছু ঢুকলো নাহহহ।
নীলিমা যে কাউকে কিছু জিঙেস করবে শরীরে যেন সেই শক্তি টুকু ও নেই।
নীলিমা বেশ কিছুক্ষণ বসে ভাবতে লাগলো কিন্তু কিছু ই বুঝে উঠতে নাহহহ।
মিহি রিসবের পাশে গিয়ে বসে বলল
– কিহহহ সমস্ত কিছু তৈরি তো ?
কিছু ভুল হলে আরিয়ান ভাইয়া কিন্তু খুব রেগে যাবেন ,,,,
পরে বিয়ে টাই হবে নাহহহহ।
অনেক কষ্ট করে দুটিকে রাজি করিয়েছি।
তিন্নি আপু তো রাজি ই হচ্ছিলো নাহহ।
মিহির মুখে আরিয়ানের নাম টা শুনেই নীলিমার বুকে ধুক করে উঠলো।
আরিয়ান,,, কোন আরিয়ানের কথা বলছে মিহি ?
নীলিমার মাথায় প্রচন্ড চাপ পড়তে লাগলো ,,,,,,
তিন্নি নামের একজন তো আরিয়ানের ক্লাসমেট,,, আরিয়ানের সাথে মোটামুটি বন্ধুত্ব আছে।
ফেসবুকে কতো রকম ফাজলামির পোস্ট করে তিন্নি ।
আর আরিয়ান মাঝে সাঝে কমেন্ট ও করে,,,,
তবে দেখে তো মনে হয় নি ওদের মধ্যে কিছু আছে।
নীলিমার বুক টা পানি শূন্য হয়ে গেল।
নাহহ নাহহহ এ অন্য কোনো আরিয়ান হবে ।
আরিয়ান তিন্নি কে বিয়ে করতে পারে নাহহহহ।
আরিয়ানের চোখের ঐ দৃষ্টি মিথ্যে হতে পারে নাহ।
নীলিমার মুখে বিষাদের ছায়া নেমে এলো।।
যখন তিন্নি আর আরিয়ান মালা হাতে হাসতে হাসতে করডোর দিয়ে রুমে ঢুকছিলো।
নীলিমার চোখ দুটিতে পানিতে টুইটুম্বর হয়ে গেল।
তবে সত্যি ই কিহহহহ আরিয়ান তিন্নি কে ভালোবাসে যার জন্য নীলিমাকে ভলো বাসতে পারলো নাহহহহ।
আর আজ ওদের দুজনের বিয়ে,,,,
নীলিমার নিজেকে পৃথিবীর সব থেকে অসহায় মনে হচ্ছে।
শরীর কেমন অষাঢ় হয়ে যাচ্ছে।
আরিয়ান কে কেমন ঘোলাটে দেখাচ্ছে।
আরিয়ান বুঝি তার কখনোই হবে নাহহ?
নীলিমার ঠোঁটের কোনে ফুটে উঠলো অসহায়ত্বের ছায়া। শরীর থর থর করে কাঁপতে লাগলো,,,,,
চোখ দুটো হাজার চেষ্টা করে ও খুলে রাখতে পারলো নাহ নীলিমা,,, বন্ধ করে নিলো চোখের পাতা,,, মুহূর্তেই ঢলে পড়লো কারো গাঁয়ের উপর।
বি : দ্র :ভুল ত্রুটি মাফ করবেন ।
চলবে