সুখের_ঠিকানা #শারমিন_হোসেন #পর্ব২৯

0
216

#সুখের_ঠিকানা
#শারমিন_হোসেন
#পর্ব২৯

“বাচ্চা মেয়েটার মা নেই।আর বাবা থেকেও নেই। এরকম বাবা থাকা আর না থাকা সমান কথা। কোনোদিন এসে খোঁজখবর পর্যন্ত নেয়না নাতাশার। তার উপর মেয়েটা অসুস্থ।একবারো ফোন করেও ভালমন্দ খোঁজ নেয়না।আজ পাঁচ বছর পেরিয়ে যাচ্ছে।এতদিনেও যখন নাতাশার বাবা মেয়ের খোঁজখবর নেয়নি। আমার মনেহয় না আর ভবিষ্যতেও নিবে।নাতাশাকে সারাজীবন নানার বাড়িতেই থাকতে হবে।বাবা বেঁচে থাকলেও বাবার আদর,স্নেহ মেয়েটার কপালে নেই।”

আফসোসের সুরে বলতে থাকেন কল্পনা বেগম। জাহানারা বেগম হালকা কেশে নিয়ে স্পষ্ট স্বরে বলে উঠলেন,,”তাতে কি হয়েছে?আমরা আছি তো।এখন পর্যন্ত নাতাশাকে কখনো বাবা মায়ের অভাব বুঝতে দেইনি।অসুখ আছে। সৃষ্টিকর্তা চাইলে একসময় সুস্থ হয়ে যাবে।নাতাশা নানার বাড়ির বোঝা হয়ে বড় হবে এরকম আচরণ আমি বা আমাদের পরিবারের কেউই এখনো করেনি।আর আমার বিশ্বাস ভবিষ্যতেও করবে না। জন্ম দিয়ে নামে মাত্র বাবা হওয়া যায়।আর সেই নামে মাত্র একজন বাবার মধ্যে পরে নাতাশার বাবা।এরকম বাবার ছায়াও যেনো আমার নাতনীর উপর না পরে আমি মনেপ্রাণে চাই।তবে একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে।নাতাশার বাবা ওকে আমাদের কাছে রেখে আমাদের উপকারই করেছে। নাতাশার মধ্যে আমি আমার মেয়েকে খুঁজে পাই। আমার মেয়ের সবচেয়ে বড় জীবন্ত স্মৃতি তো নাতাশা। আমার মেয়ের নাড়ি ছেঁড়া ধন আমার কাছে ।আমি তো এইজন্য মনেমনে নাতাশার বাবাকে ধন্যবাদ জানাই।আর সৎ মায়ের কাছে মানুষ হওয়ার থেকে নানা নানীর কাছে বড় হওয়া ভালো নয় কি?নাতাশার নানা নানী এখনো বেঁচে আছে।তার উপর নাতাশার মামা আছে।জারিফ ওকে কম ভালোবাসে না।বাবার আদর স্নেহ পাবেনা তাতে কি হয়েছে।বাবা,মামা,চাচা এরাই তো হলো একটা মেয়ের আসল অভিভাবক। সৃষ্টিকর্তা চাইলে জারিফ একাই নাতাশার সব অভাব পূরণ করতে পারবে। এতটুকু বিশ্বাস আমার ছেলের উপর আছে।”

জাহানারা বেগম দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কাজে মনোযোগ দিলেন ‌।কল্পনা বেগম ফোড়ন কাটলেন। ওষ্ঠদ্বয় প্রসারিত করে ফের বললেন,,”আরে ভাবী চিন্তাটা তো আমার মূলত এইখানেই।জারিফ নাতাশাকে খুব আদর করে ভালোবাসে তা আমিও জানি।এখনকার ছেলেমেয়ে বিয়ে শাদি করলে বদলে যায়।তার উপর যখন নিজের বাচ্চা কাচ্চা হবে তখন কি আর বোনের মেয়ের উপর এতো আদর যত্ন থাকবে?আর এই মেয়েটাকেও আমার ঠিক অতটা সুবিধার ঠেকছে না।দেখো বলে রাখলাম দিনদিন নাতাশার উপর জারিফের আদর ভালোবাসা ক্ষীন হয়ে আসবে। আল্লাহ না করুক,তোমাদের অসম্ভবে জারিফের বউ এতিম মেয়েটার সাথে কিকরম আচরণ করবে।সেই ভেবে আমার খুবই টেনশন হচ্ছে। এখনকার ছেলেরা বউয়ের বিরুদ্ধে গলা উঁচিয়ে কথা বলতে পারেনা।কিছু বললেই হুমকি স্বরূপ সংসার ছেড়েছুড়ে যাওয়ার ভয় দেখায়।আর শান্ত শিষ্ট ভদ্র ছেলেরা মানসম্মানের দরুণ বউয়ের সব কিছু মেনে নেয়।তাই বলছি,নিজের নাতনির ভবিষ্যৎ নিয়ে একটু হলেও ভেবো,কেমন?”

জাহানারা বেগম যথেষ্ট বিরক্ত হলেন কথাগুলো শুনে।কড়া করে কিছু বলার ইচ্ছে হলেও ভদ্রতার জন্য সেটা করলেন না।তবে ঠান্ডা মাথায় কিয়ৎক্ষন ভেবে নিলেন। অতঃপর বেশ ভদ্রভাবে শান্ত কন্ঠে বললেন,,”এখনই নেগেটিভ ভাবছো কেনো? পসিটিভও তো ভাবা যায়।এরকম বলছো কেনো?নাতাশা ওর মতো করে লেখাপড়া করবে।ভালো কোনো পজিশনে যাবে।তখন ওর দায়িত্ব কাউকে নিতে হবে না।আর সেই পর্যন্ত যাওয়ার জন্য তোমার ভাই আছে।তার অবর্তমানে জারিফ থাকবে।জারিফ একটা দায়িত্ববান ছেলে। কখনোই জারিফ ওর মরালিটি থেকে বিচ্যুত হবে না।আমার ছেলে আমি তাকে চিনবো না।এতদিনে আমার ছেলেকে এতটুকু যদি নাই চিনি,তাহলে কেমন মা হলাম আমি।”

কথাটা বলে মৃদু হাসলেন। অতঃপর থেমে ফের বললেন,,”আর তোমাকে বলি এতো এসব নিয়ে চিন্তা না করে, তুমি বরং ওদের জন্য দোয়া করো।জারিফ লিয়ার জন্য মন থেকে দোয়া করো।যাতে ওদের সংসার জীবন হুরঝুর এককথায় ঝামেলা মুক্ত হয়।এখন তো ঝামেলা ছাড়া জীবনযাপন করাই দায়। প্রায় সংসারেই হুটহাট এটাসেটা নিয়ে ভুলবোঝাবুঝি অশান্তি লেগেই থাকে। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কাছে প্রে করো ওদের সংসার লাইফটা যেনো অনাবিল আনন্দ প্রশান্তিতে কাটাতে পারে।”

কল্পনা বেগমের মুখে যেনো আমাবস্যা নামলো। ফর্সা মুখটা লহমায় কালো হয়ে যায়।তবে আর বলার মতো কিছু খুঁজে পেলেন না। মনেমনে আওড়ালেন,ধূর!ভাবীকে কি বোঝাতে আসলাম।আর উনি তো নিজের বুঝ নিয়ে অটল রইলেন।আরো উল্টো আমাকে বুঝিয়ে গেলেন।তবে আমিও দেখতে চাই কতদিন জারিফের বউ নাতাশার উপর আলগা দরদ দেখায়।এখনকার মেয়েরা ছোট সংসার চায়।সময় গেলেই দেখা যাবে।এসব কথা মনেমনে বললেও মুখে ফের বলার ফাঁকফোকর পেলেন না।
.
জারিফের রুমে বেডের একপাশে লিয়া বসে।লিয়ার সামনে বেডের মাঝখানে নাতাশা বসে। নাতাশা আর লিয়া দুজনে মিলে জারিফের ফোনে এন্জেলা গেইম খেলছে। দাঁত ব্রাশ করিয়ে দিচ্ছে,গোসল করিয়ে খাবার খাওয়াচ্ছে।যখন খাবার খেতে চাইছে না তখন ঠাসঠাস করে মা’র’ছে ।লিয়ার হাতে ফোন। নাতাশা সামনে বসে থেকেথেকেই খিলখিলিয়ে হেসে উঠছে।জারিফ ব্যালকনি থেকে রুমে আসে। এদের দুজনের কারবার দেখে জারিফের কপালে কিঞ্চিৎ ভাঁজ পড়ে।তবে মনেমনে হাসিও পায় লিয়ার ছেলেমানুষী দেখে।লিয়া সহজেই সব পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে।এটা দেখে জারিফের খুব ভালো লাগে।নাতাশার আর লিয়ার আদূরে মিষ্টি সম্পর্ক দেখে জারিফের মনে প্রশান্তি হয়।জারিফ লিয়ার পাশে বিছানায় সটান শুয়ে পড়ে।পা বেডের বাইরে ঝুলছে।জারিফ লিয়ার শাড়ির আঁচল একহাতে পেচাতে পেচাতে মায়াময় স্বরে বললো,,

“এই লিয়া।”

লিয়া একটু সময় নিয়ে ছোট করে বলল,,”হুম।”

জারিফ মৃদু আওয়াজে ফের বললো,,”আজকে থেকে যাও-না।”

লিয়া তড়িৎ বিস্ফোরিত নয়নে জারিফের দিকে চাইলো।জারিফের শান্ত নজরজোড়ায় নিজের প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলো লিয়া।জারিফ শাড়ির আঁচল একহাতে পেঁচিয়ে রেখেছে।সেই হাতের কনুই ভর দিয়ে মাথাটা হাতের উপর রেখে কাঁৎ হয়ে শুয়ে লিয়ার দিকে চেয়ে আছে।লিয়া কপট রাগ দেখিয়ে মোটা চোখে চাইলো।জারিফ ভ্রু কুঁচকে বললো,,”ইয়ে মানে বলছি যে রাত হয়ে গিয়েছে। রাত-বিরাতে নতুন বউয়ের বাইরে যাওয়া ঠিক নয়।ভূত পেৎ এর কুনজর পরে এরকম একটা ইথিকস আছে না। অনেকে তো বিশ্বাস করে।সেই কথায়ই বলতে চাইছি।”

কথাটা বলে জারিফ অপর হাতের সাহায্যে মাথা চুলকায়।লিয়ার ভীষণ হাসি পাচ্ছে।লিয়া ঠোঁট টিপে হাসলো।লিয়া মৃদুস্বরে বললো,,”আপনি ভূত-পেৎ এসবে বিশ্বাস করেন?আমার তো বিশ্বাস-ই হচ্ছে না।”

জারিফ ফেসটা অসহায় বানিয়ে করুণ সুরে বললো,,
“বিশ্বাস করিনা।তবে এখন বিশ্বাস করে যদি কোনো বেনিফিট পাওয়া যায়।সেই বেনিফিট পাওয়ার জন্য আজকের জন্য বিশ্বাস করলে মন্দ হয়না। কি বলো?”

জারিফ ভ্রু নাচায়।লিয়ার থেকে উত্তরের অপেক্ষায় থাকে।লিয়া ত্যাড়া করে বললো,,”জানিনা।”

এরমধ্যে জারা খাবার খাওয়ার জন্য ডাকতে আসে।ঘড়ির কাঁটা রাত আটার ঘর পেরিয়েছে। প্রতিদিনকার থেকে আজকে অনেক আগেই খাবার রেডি করছেন জাহানারা বেগম।লিয়া যেহেতু বাসায় যাবে তাই শুধুশুধু বেশি রাত করে পাঠানো ঠিক হবে না।লিয়া জারার সাথে ডায়নিং এর উদ্দেশ্য রুম থেকে যেতে থাকে।নাতাশা নানুভাইয়ের কাছ থেকে গল্প শুনবো বলে একদৌড় দেয়।জারা পিছনে ফিরে জারিফকে ডেকে বললো,,

“এই ভাইয়া তুইও আয়। সবাই একসাথেই খাবার খাবো।আয়।”

“আমি আসছি।যেতে থাক।”

ডায়নিং এ গিয়ে একটা চেয়ারে নীলকে দেখতে পায় লিয়া।নীলের চুলগুলো ভেজা।নীল ফলের ঝুড়ি থেকে একটা আপেল হাতে নিয়ে বড় করে বাইট দেয়।নিরুপমা বেগম ছেলের দিকে মোটামোটা চোখে চাইলেন।কিছুটা রাগান্বিত স্বরে বললেন,,”সারাদিন পর এখন রাত করে বাসায় ফিরলি।ভাব দেখে মনে হচ্ছে রাজ্যের কাজ সেরে নবাব পুত্র গৃহে ফিরলেন।এখন এসে ক্ষুধা লাগছে বলে পা’গল বানিয়ে দিচ্ছে। দুপুরে বাসায় এসে খাবার খেয়ে গেলে কি এমন ক্ষতি হতো?জানি সারাদিন তো পেটে ভাত পরেনি।কিছু খেয়ে থাকলেও ঐ ফাস্টফুড হাবিজাবি।আর এখন কিনা খালি পেটেই ফল খাচ্ছে। বললাম একটু অপেক্ষা কর সবাই এই চলে আসবে বলে।তোর যে আর তর সইছে না।”

নীল গালে থাকা আপেলের টুকরো গলাধঃকরণ করে বলে উঠলো,,”ও আম্মু।মাঝে মাঝে মনেহয়,তুমি আমার আম্মু না।আমাকে বোধহয় কুড়িয়ে পেয়েছিলে।সব সময় খিটখিটে মেজাজ তো দেখাও।আবার দেখছো মুখে কিছু একটা দিয়েছি।এখন আবার বকা শুরু করে দিয়েছো। জানানো কিছু খাওয়ার সময় বকলে বেষম উঠে।বেষম উঠে খাবার তালুতে উঠবে।আবার খাবার গলায় আঁটকে যেতেও পারে।তারপর

নিরুপমা বেগম ধমক দিলেন। তারপরের কথা উনার জানা।এরকম বলতে বলতে একদম উপরে চলে যাওয়া পর্যন্ত বলে তবেই নীল থামবে।এর আগে নয়।তাইতো ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিলেন।জারা শব্দ করে হেসে বললো,,”এতদিনে তুই বুঝতে পারলি।তোকে কুড়িয়ে পেয়েছে ছোটোমা ‌।আরে আমি তো আমার বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই জানি।তুই আমাদের বংশের কেউ না।বক্ষ্মপুত্র নদের তীর থেকে কোনো এক কাক ভেজা ভোরে ছোটমা তোকে কুড়িয়ে পেয়েছিলো।”

“আরেকজন আসলো চাপাবাজ।আর এই চাপাবাজ এতোকাল শুনে আসলাম কাক ডাকা ভোর হয়।কাক ভেজা ভোর এইটা কোথায় পেলি তুই, হ্যা?”

দাঁত কটমট করে ঘাড় ঘুরিয়ে জারার দিকে তাকায় নীল।জারার পাশে লিয়াকে দেখে অপ্রস্তুত হয়ে যায় ।লিয়াকে দেখে মাথা চুলকিয়ে অপ্রস্তুত হাসলো নীল। তাৎক্ষনিক চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো।একহাতে ইশারা করে একটা চেয়ার দেখিয়ে ভদ্রভাবে বললো,,”ভাবী বসেন।এসে আপনার কথা প্রথমেই আম্মুকে জিগ্গেস করেছি। আম্মু বললো আপনি রুমে আছেন। বাইরে থেকে আসলাম গরম লাগছিলো। তাই ভাবলাম শাওয়ার নিয়ে এসে পরে আপনার সাথে দেখা করবো।”

জারা একটা চেয়ার টেনে লিয়াকে বসতে বলে।লিয়া বসে।নীল এটাসেটা বলছিলো সেই সময় কথা এসে চেয়ার টেনে বসলো। জাহানারা বেগম আর নিরুপমা বেগম খাবার সার্ভ করতে শুরু করেন। জাহানারা বেগম জারাকে শুধালেন,,

“জারা জারিফকে ডেকেছিস?জারিফ এখনো আসছে না যে।”

“ভাইয়া রুমেই ছিলো।বলেই তো আসলাম। ভাইয়া বললো আসছি।ও মা! এখন আবার তোমার ছেলেকে ডাকতে যেতে বলোনা, প্লিজ।তোমার ছেলের তো এত আগেই ডিনারের অভ্যাস নেই।তাই মনেহয় এখন খাবে না।পরে খাবে।”

একনাগাড়ে চঞ্চল গলায় কথাগুলো বলে থামলো জারা। এরমধ্যে কথা চেয়ার ছেড়ে উঠতে উঠতে বললো,,”ব্যাপার না জারা।তোমাকে যেতে হবে না।আমি ভাইয়াকে ডেকে দিচ্ছি কেমন।”

লিয়া প্লেটে একহাতে খাবার নাড়তে নাড়তে কথার দিকে আড়চোখে চাইলো। জাহানারা বেগম বলে উঠলেন,,”থাক কথা তোমাকে যেতে হবে না।তুমি খাবার খাও।জারিফ আসলে নিজেই চলে আসবে।”

কথা ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছেড়ে চেয়ারে বসলো। নীল লিয়াকে উদ্দেশ্য করে শুধালো,,”ভাবী শুনলাম আপনার আপুর বিয়ে।তা বিয়ে উপলক্ষে বাড়ি যাচ্ছেন কবে?”

“শুক্রবার আপুর বিয়ে। আমরা হয়তো বুধবারে যাবো।”

কথা ভ্রু বাকিয়ে বললো,,”লিয়া তোমার আপু মানে তো ভাইয়া যাকে পছন্দ করতো। মানে যার সাথে ভাইয়ার বিয়েটা হওয়ার কথা ছিলো।সে রাইট?”

মাত্র লিয়া মুখে খাবার তুলেছে এমন সময় কথার এহেন কথা শুনে মুখটা মলিন হয়ে আসে।লিয়া খাবারটা গলা দিয়ে নামাতে পারছে না।যদিও কথা ভুল কিছু বলেনি।কথাটা সত্যি তারপরেও লিয়ার কষ্ট অনুভব হতে থাকে।লিয়া মনেমনে আওড়ায়,এখানে সবার সামনে এই সত্যি কথাটা না বললে কি এমন ক্ষতি হতো?এটা বলা কি খুব জরুরী ছিলো? উফ্!কিছু কিছু মানুষের নেচারই হয়তো এমন।ঠিক দুর্বল পয়েন্টে আঘাত করবে।লিয়া হ্যা না কিছুই বলতে পারছে না।

যতটা না কথার উপর রা’গ হচ্ছে তার থেকে দ্বিগুণ রা’গ নীলের নিজের উপরই হচ্ছে।নীলের নিজের মাথার চুল নিজেরই টেনে ছিঁড়তে ইচ্ছে হচ্ছে।নীলের মনে হচ্ছে আমি যদি এই কথাটা না বলতাম তাহলে এই বেয়াদব মেয়েটা এরকম বলার সুযোগই পেতো না। উফ্!আমার অপ্রয়োজনীয় কথার জন্য ভাবীর মনটা গেলো খা’রাপ হয়ে।জারা দাঁত কটমট করে বললো,,

“তাসনিম আপুর বিয়ে।শুনেছো?”

কথা খাবার চিবাতে চিবাতে ফের বললো,,”বাই দ্য ওয়ে,লিয়া তোমরা ঈদে বাড়ি যাওনি।না মানে ঈদ তো বেশিরভাগ মানুষ পরিবারের সবার সাথেই করে।এইদেখো আমাকে,আমি দাদুবাড়ি থেকে ঈদ করে।বিকেলে নানুবাড়িতে আসলাম।”

লিয়া ছোট করে বললো,,”নাহ্!এবার যাওয়া হয়নি।”

বারবার লিয়া লিয়া করে সম্বোধন করছে। জাহানারা বেগমের কাছে ভালো লাগছে না।উনি গম্ভীর মুখায়ব করে শান্ত স্বরে বললেন,,”কথা লিয়াকে নাম ধরে সম্মোধন করছো।এটা কেমন যেনো লাগছে।আমার কথায় কিছু মনে করো না,মামনি।আসলে তুমি তো শিক্ষিত একটা মেয়ে তোমার থেকে এমন সম্বোধন ঠিক ভালো দেখাচ্ছে না।”

“বড় মামী লিয়া আমার থেকে জুনিয়র।ও সবে এইচএসসি দিলো।আর আমি অনার্সে। ওর থেকে মিনিমাম দুই বছর খানেকের সিনিয়র তো হবো।”

জাহানারা বেগম তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললেন।ভরাট গলায় ফের বললেন,,”এখানে লিয়ার আর তোমার বয়সের ব্যবধান ম্যাটার করছে না। এখানে লিয়ার পরিচয় জারিফকে দিয়ে।জারিফের পরিচয়ে পরিচিত হবে লিয়া।লিয়া এবাড়ির বউ।জারিফের বউ হিসেবে লিয়ার প্রাপ্য সম্মান ওকে দিতে হবে।আর জারিফ যেহেতু তোমার বড়।বড় ভাইয়ের বউকে বারবার নাম ধরে ডাকা এটা আমার কাছে শোভা পায় না।তাই আমি চাইবো বড় ভাইয়ের বউকে সম্মান দিয়ে কথা বলবে।”

কথা ভিতরে ভিতরে ফুঁসছে। মনেমনে আওড়ায়,আজ বড় মামী শুধুমাত্র এই মেয়েটার জন্য সবার সামনে আমাকে এত্তগুলা কথা শোনালো। একদিন এসেই সবাইকে বশীভূত করে ফেলেছে নাকি?এসব কথা মনেমনে ভেবেই মাথা ঝাড়া দিলো। অতঃপর মৃদুস্বরে বললো,,”সরি!বড়মামী। নেক্সট খেয়াল রাখবো।”

এরমধ্যে জারিফ এসে চেয়ার টেনে বসে পড়ে। জাহানারা বেগম শুধালেন,,”জারিফ তোর দেরি হলো যে।জারা সেই কখন না ডেকে আসলো।”

“সরি!দেরি হয়ে গেলো।রুপম ফোন করেছিলো।কথা বলতে গিয়ে লেইট হয়ে গিয়েছে।”
.
খাওয়া দাওয়া পর্ব শেষে লিয়া সবার থেকে বিদায় নিতে থাকে। লিয়া জাহানারা বেগমের সামনে দাঁড়িয়ে মৃদু আওয়াজে বললো,,”আন্টি আসি।”

জাহানারা বেগম হঠাৎ করে নিজের গলার মোটা স্বর্ণের চেইনটা খুলে লিয়ার গলায় পড়িয়ে দিতে দিতে বললেন,,”আমার দেওয়া ঈদের সালামি হিসেবে দিলাম। যদিও পুরাতন।তুমি আবার মন খা’রাপ করো না। যে আমার শ্বাশুড়ি মা তার ব্যবহার করা জিনিস আমাকে দিলো। জারিফ তোমাকে আনবে তা জানতাম না। আগে থেকে বললে ভালো হতো।”

লিয়া হতবাক চোখে কিয়ৎক্ষন চাইলো । আনন্দে লিয়ার দুচোখ ছলছল করে উঠলো। চোখে ছলছল পানি নিয়েই লিয়া মৃদু হাসলো। কন্ঠে একরাশ শীতলতা নিয়ে ঠোঁট আওড়িয়ে বললো,,”মোটেই ওরকম কিছু ভাববো না।আর গিফটের থেকে বড় হলো আপনার দোয়া।আপনাদের দোয়া পেলে আর কিছু চাইনা আমার।”

জাহানারা বেগম অমায়িক হাসলেন। লিয়ার মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে দিতেই।লিয়া জাহানারা বেগমেকে জড়িয়ে ধরে কাঁধে মাথা রাখলো। জাহানারা বেগম লিয়ার পিঠে হাত বুলিয়ে দেন। অতঃপর সবার থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে বসে লিয়া।গাড়ি মূহূর্তেই চোখের আড়াল হয়ে যায়। জাহানারা বেগম আর নিরুপমা বেগম মেইন দরজার সামনে এতক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন।নিরুপমা বেগম অবাক চোখে বড় জা’য়ের দিকে তাকিয়ে আছে।নিরুপমা বেগম জিগ্গাসু দৃষ্টিতে চেয়ে আছেন।ছোটো জা’য়ের চোখের দৃষ্টি দেখেই জাহানারা বেগম বুঝতে পারেন।তাইতো প্রশ্ন করার আগেই বললেন,,

“এইভাবে বিয়ে হওয়া।আবার সেদিন লিয়াকে ওর বাড়ির সবাই এতকরে বললো,তবুও লিয়া নিজের সিদ্ধান্ত থেকে একচুল নড়লো না।আর সেদিন আমার ছেলে সহ পুরো পরিবার সবার সামনে অপমানিত হয়েছিলো।লিয়া যদি হলুদের পরের দিন বিয়েতে বসতো,তাহলে এতটা সম্মান ক্ষুন্ন হতো না। ইনভাইট করা অতিথিদেরকে ফোন করে বিয়ের অনুষ্ঠান ক্যান্সেল করার কথা বলা।এতটা সহজ বিষয় ছিলো না ছোটো।

থেমে আবার বললেন,,”উফ্ফ!কেউকেউ তো সামনের উপরই কতকি বলেছিলো তোর নিশ্চয় মনে আছে।আমার এসবের জন্য একটু হলেও লিয়াকে দায়ী মনে হতো।তবে আমার ছেলের মনের অবস্থা যখন আমি বুঝতে পারলাম।তখন থেকে মনে হলো,যা হওয়ার হয়েছে।এসব কিছু মনে পুষে রেখে ছেলের বউয়ের উপর রা’গ করে থাকা বো’কা’মি আর ছেলেমানুষি হয়ে যাচ্ছে।মেয়েটাও তো ছোট কতই বা বয়স ওর।ওর উপর অভিমান করা আমার সাজে না।আরো উপলব্ধি করলাম,কখনো কোনো জায়গায় ফাঁকফোকর রাখতে নেই।যদি সামান্যতমও ফাঁকফোকর থাকে তবে ঠিক সেখান দিয়েই তৃতীয়পক্ষ সু্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে।”

কথাটা বুঝতে নিরুপমা বেগমের এতটুকু সময় দেরি হলো না।মৃদু হেসে বললেন,,”একদম ঠিক বলেছো ভাবী।”

দুই জা আরো কিছুক্ষণ কথাবার্তা চালিয়ে যায়।

গাড়ি চলছে শা শা করে।লিয়া বড় করে হামি দেয়।জারিফ তা দেখে কপাল কুঁচকে লিয়াকে শুধালো,,”এই তোমার ঘুম পাচ্ছে?”

লিয়া কাধটা সিটের উপর রাখলো। ঠোঁট মেলে বললো,,”হুম। দুপুরে ঘুমানোর অভ্যাস তো। আজকে ঘুমানো হয়নি।তাই এত দ্রুতই ঘুম পাচ্ছে।”

জারিফ মুচকি হেসে বললো,,”তাহলে দেরি করছো কেনো?ঘুম যখন পাচ্ছে ঘুমিয়ে নাও।শিমুল তুলার বালিশ হিসেবে আমার কাঁধটা তো আছেই।যা কিনা বিয়ের আগে থেকেই ব্যবহার করে আসছো।”

লিয়ার পাঁচ সেকেন্ড লাগলো কথাটা বুঝতে।সেই ঢাকা থেকে ফেরার দিন বাসে জারিফের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে ছিলো। সেইকথা মনে হতেই লিয়া লজ্জা পায়।জানালা দিয়ে হুহু করে মৃদু শীতল বাতাস আসছে ‌রাতের আলো অন্ধকার পথে জারিফের পাশে বসে সময়টা লিয়া দারুন উপভোগ করছে।লিয়ার ভীষণ ভালো লাগছে।জারিফ একমনে ড্রাইভ করছে। আচমকা লিয়া জারিফের কাঁধে মাথাটা এলিয়ে দেয়।জারিফের কাঁধে মাথা রাখলো।জারিফ একহাতে ড্রাইভ করছে।অন্যহাতে লিয়াকে আগলে নেয়।লিয়ার হৃদয়ে অনাবিল প্রশান্তি বইতে থাকে।লিয়ার ঘুমুঘুম চোখ এভাবে প্রশান্তিতে থাকতে থাকতে অবশেষে ঘুমিয়ে পরে।গাড়ি এসে লিয়াদের কোয়ার্টারের সামনে থামে। লিয়া ঘুমের মধ্যে একহাতে জারিফকে জড়িয়ে ধরে আছে।জারিফ নিজের কাঁধের দিকে মাথাটা কিঞ্চিৎ ঘুরিয়ে চাইলো।লিয়া বাচ্চাদের মতো বিভোরে ঘুমাচ্ছে। লিয়ার ঘুমন্ত ফেসটা অসম্ভব সুন্দর লাগছে।জারিফ কিছুক্ষণ লিয়ার ঘুমন্ত নিষ্পাপ মুখশ্রীর দিকে চেয়ে থাকলো।একহাতে লিয়ার কপালের উপর আসা এলোমেলো ছোট ছোট চুলগুলো হাত দিয়ে ঠেলে দেয়।লিয়া এবার একটু নড়ে উঠলো।নাক মুখ কুঁচকালো।জারিফের যদিও ইচ্ছে করছিলো না লিয়ার ঘুম ভাঙ্গাতে তবুও ডাকতে হবে লিয়াকে।এমনিতেই রাত দশটা বেজে আসলো।জারিফ লিয়ার গালে একহাত রাখলো। মৃদুস্বরে ডাকলো,,

“লিয়া।এই লিয়া।”

লিয়া চোখের পাতা টেনে তুললো। ঘুমুঘুম চোখেই তাকালো।ইশারায় করে বললো,,”কি হয়েছে?”

কথাটা বেধে যাচ্ছিলো ঘুমের কারনে।জারিফ বললো,,”উঠো এবার।থাকতে বললাম থাকলে না তো।থাকলে পরে সারারাত এভাবে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে পারতে।এখন গাড়িতেই সারারাত এভাবে কাটানোর প্লান করেছো নাকি?”

জারিফের কথাটা কানে বারি খেতেই লিয়ার হুঁশ ফেরে।লিয়া দেখে সত্যিই জারিফকে জড়িয়ে ধরে আছে ‌।লিয়া দ্রুত সোজা হয়ে বসে।জড়তা নিয়ে ঠোঁট আওড়িয়ে বলে,,”চলে এসেছি।আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।বুঝতে পারিনি।”

জারিফ বিনিময় স্মিত হাসলো।লিয়া গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালো। সৌজন্যতার খাতিরে বললো,,”ভিতরে আসুন।”

“নাহ্।আজ আর নয়।রাত অনেক হয়েছে।”

একটু সময় নিয়ে দুষ্টুমি করে জারিফ ফের বললো,,
“তবে যদি মিষ্টিমুখ করাও তাহলে যেতে পারি।”

লিয়া জারিফের ফা’জ’লা’মো বুঝতে পেরে আর বাক্য ব্যয় না করে সোজা ভেতরে যেতে থাকে।
.
আজ মঙ্গলবার। পড়ন্ত বিকেল। এনামুল খাঁন সোফায় বসে কল লিস্টে গিয়ে কাংখিত নম্বরটা বের করে কলে চাপ দিলেন।ফোনের ওপাশ থেকে আনোয়ার রহমান রিসিভ করে সালাম দিয়ে কুশলাদি বিনিময় করলেন। ভালোমন্দ খোঁজ খবর নেওয়ার পরে এনামুল খাঁন বললেন,,”ভাইজান আমি অসুস্থ। জানেনই তো।ডায়াবেটিস,হাই পেশার আরো এটাসেটা রোগ আছেই। অসুস্থতার কারণে যেতে পারলাম না।তুষার তো গতকাল গিয়েছিলো ইনভাইট কার্ড নিয়ে।আমি যেতে না পারায় ক্ষমা প্রার্থি।যেতে পারিনি তাই ফোনেই বলছি, আপনারা সবাই বিয়ের আগের দিন আসবেন কিন্তু।”

ওপাশ থেকে আনোয়ার রহমান ভদ্রভাবে বললেন,,
“আরে ভাইজান ব্যাপার না।তুষার আসছিলো তো।আর কেউ না এসে শুধু ফোনে বললেও আমরা মাইন্ড করতাম না।এসব কোনো ধরার বিষয়ই না। ‌আর ভাইজান আগের দিন হয়তো যাওয়া সম্ভব নয়। বিভিন্ন ব্যস্ততা আছে।তবে বিয়ের দিন যাবো ইনশাল্লাহ।”

আরো কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে ফোন রাখেন।
.
সন্ধ্যার পর লিয়া বিছানায় বসে ছিলো।ফোন স্ক্রল করছিলো। চুলগুলো খোলা থাকায় ফ্যানের বাতাসে উড়ছে।কিছু মনে হতেই লিয়া জারিফের কাছে কল করে। জারিফ ল্যাপটপ সামনে নিয়ে কিছু একটা করছিলো।এমন সময় ফোন বেজে উঠলো।লিয়ার নামটা জ্বলজ্বল করছে।জারিফ রিসিভ করে বলে,,

“হ্যা বলো।”

লিয়ার মৃদু রা’গ হলো।হ্যা বলো এটা কেমন কথা। কোথায় মিষ্টি করে কিছু বলবে। কেমন আছো? হেনতেন আরো কতকি আছে।সেসব না বলে। উফ্!লিয়ার ভীষণ অভিমান হলো।লিয়া নিশ্চুপ রইলো।লিয়ার কোনো উত্তর না পেয়ে জারিফ ফের বললো,,

“এই লিয়া কথা বলছো যে।হ্যালো। শুনতে পাচ্ছো।”

“হুম।”

“কি করছো?”

“কিছু না। আপনার সাথে কথা বলছি।”

জারিফ শব্দহীন হাসলো।লিয়া ফের বললো,,

“আমরা সকালে দাদুবাড়িতে যাচ্ছি। আব্বু বিকেলে আঙ্কেলের কাছে ফোন করেছিলো। আঙ্কেল নাকি বলেছে শুক্রবারদিন আসবে।তাহলে আপনিও তো শুক্রবার দিন আসছেন আপনার শ্বশুর বাড়িতে।”

“উঁহু।আমি আমার শ্বশুর বাড়ি শুক্রবার যাচ্ছি না।”

লিয়ার কপাল কুঁচকে যায়।লিয়া তড়িৎ বললো,,”মানে আপনি বিয়েতে আসছেন না? কিন্তু কেনো?”

”তোমাকে এত করে বললাম ডিসিশনটা চেন্জ করো।প্যানিশমেন্টটা একটু কমাও।চার বছর অপেক্ষা না করে দ্রুত আমার বাড়িতে চলে আসো।তুমি তো শুনলেই না। তাই ভেবেছি চার বছরের আগে আমিও জামাই পরিচয়ে তোমার দাদুবাড়িতে যাবো না।সো জামাই হিসেবে ও বাড়িতে আমি যাচ্ছি না,ম্যাডাম।”

লিয়ার মুখটা ভার হয়ে আসলো।লিয়া রাশভারী স্বরে বললো,,”তারমানে আপনি সত্যিই শুক্রবার দিন আসছেন না।আমি আরো ভাবলাম আপনি আসবেন।ভাইয়া গিয়ে দাওয়াত দিয়ে আসলো। আবার আব্বু নিজে ফোন করে বললো। তারপরেও আপনি আসবেন না।সত্যিই আসবেন না?”

“জানিনা।”

জারিফের এরকম হেঁয়ালিপূর্ণ উত্তর শুনে লিয়ার রা’গ হয়।লিয়া ঠোঁটে ঠোঁট চেপে বললো,,”আমি চার বছর অপেক্ষা করতে বলেছি।তার সাথে এখানে না আশার কি সম্পর্ক! আশ্চর্য!”

“যদি তুমি ডিসিশনটা চেন্জ করতে।তাহলে আমি ভেবে দেখতাম।তোমাকেই ফাস্ট প্রায়োরিটি দিতাম। তোমার বর পরিচয়ে খাঁন বাড়ির জামাই হিসেবেই যেতাম।সরি লিয়া তুমি যেহেতু জিদ ধরে আছো তাই আমার পক্ষেও তোমার বর পরিচয়ে এই প্রোগ্রামে যাওয়া সম্ভব নয়।”

লিয়ার এবার রা’গের মাত্রা বেড়ে যায়।লিয়া ঠোঁট চেপে ফের বললো,,”আচ্ছা আপনি না আসলে আমিও আর ফোনেও কথা বলবো না আপনার সাথে,হু। একেবারে চার বছর পরই সামনাসামনি কথা বলবো, হুঁম। এবার আপনি কি করবেন দেখা যাবে।”

লিয়ার কথাশুনে জারিফ এবার শব্দ করে হেসে ফেললো। ঠোঁটের কোণে হাসি রেখেই বললো,,”ওকে দেখা যাবে।তবে একটা কথা মনে রেখো।আমি যেহেতু বলেছি জামাই হয়ে নিমন্ত্রণ রক্ষার্থে যাবো না।তখন এই কথা আর উইথড্র করা সম্ভব নয়, হাবিবী।”

এরমধ্যে মেয়েলি কন্ঠস্বর আসলো,,”ভাইয়া আসবো।”

জারিফ ভ্রু কুঁচকে দরজার দিকে চাইলো।কথা দরজার দাড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে।জারিফ বললো,,”লিয়া তুমি লাইনে থাকো।আমি একটু পর কথা বলছি, কেমন?”

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here