হিয়ার_মাঝে ৫২. #মেঘা_সুবাশ্রী

0
359

#হিয়ার_মাঝে ৫২.
#মেঘা_সুবাশ্রী ®️

অভাবিতরূপে আগমন ঘটল জিতুর। সোনালী রঙা পাঞ্জাবী পরিহিত বলিষ্ঠ গড়নের সুদর্শন পুরুষ। ওষ্ঠদ্বয়ের হাসিতে দু’গালের টোল তার স্পষ্টত। এমন নজরকাড়া সৌন্দর্যে নুবাহ যেন বার বার মুগ্ধতায় মূর্ছিত। হাসলে যে মারাত্মক লাগে এই পুরুষকে। চোখের পলক ফেলতেও সে ভুলে গেছে। দৃষ্টি তার ধীর ও স্থির। জিতু আরও দু’কদম এগিয়ে এসে নিজের দূরত্ব ঘোচাল। নুবাহর দিকে এক ভ্রু উঁচিয়ে ইশারায় জিজ্ঞেস করল, ‘তারপর বলুন কেমন ছিল?’

নুবাহর চোখেমুখে মুহুর্তে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ল। দু’ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটালো তড়িৎ। প্রশংসার ফোয়ারায় ভাসালো জিতুকে।

‘আপনার গানের গলা বরাবরই অসাধারণ। আজকে তো একদম ফাটিয়ে দিয়েছেন। এত দারুণ ছিল! ব্যাখ্যাও করতে পারছি না, কেমন সুন্দর হয়েছে।’

জিতুর মুখের হাসি উধাও। নিজেকে নিজেই বিদ্রুপ করল। বাহ! তোর বউ প্রশংসা করছে। কিন্তু পরক্ষণেই মন বিদঘুটে এক তিরস্কার করল। সে যে এতকিছু করল। গানের মাঝে বউকে নিজের অতীত মনে করিয়ে এত সুন্দর প্রপোজ করল, তা কি ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি। নুবাহর আপাদমস্তক পর্যবেক্ষণ করল। না সে আগের মতই প্রশংসায় পঞ্চমুখ। জিতু গলার স্বর গম্ভীর করল মুহুর্তে। নিজেকে সংযত করতে না পেরে ডানহাতের শাহাদাৎ আঙ্গুল উঠিয়ে বউয়ের কপালে জোরে একটা টোকা মারল। সাথে মুখ ভেংচিও কাটলো।

‘আপনার প্রশংসার জন্য গান করেনি, ম্যাডাম।’

নুবাহ টোকা খেয়ে উঁহু’ করে শব্দ করে উঠল। হাত উঠিয়ে কপালে মালিশ করল। আহত গলায় জবাব দিল, ‘আশ্চর্য! তাই বলে আমাকে মারবেন?’
‘তাহলে কি আদর করা উচিৎ ছিল?’

নুবাহ দমে গেল। জবাব নেই তার কাছে। জিতু ফের বুলি আওড়ালো, ‘কি আদর লাগবে আপনার? কিন্তু আপনাকে তো আদর দেওয়া যাবে না এখন। আর কিছু লাগলে বলেন।’

থ’ হয়ে আছে নুবাহ। সে কখন আদর চাইল। আশ্চর্য তো! আদর দেয়ার হলে দেবে এত ডং করার কি আছে? বেয়াদব লোক! জিতুর চোখেমুখে স্পষ্টত ক্রোধের আভাস। হল থেকে বেরিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসল। নুবাহ বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমুঢ়। তার বেয়াদব জামাই এড়িয়ে চলে গেল কেন? সে পিছু নিতেই ডাক পড়ল বন্ধুমহল থেকে। চিন্ময় ডাক দিল,

‘নুবাহ ভাবী এদিকে আসুন।’

নুবাহ না চাইতেই বন্ধুমহলের সামনে দাঁড়ালো। চিন্ময় পরিচয় করাতেই ডাকলো তাকে। কিন্তু সে এক অজানা ভয়ে আৎকে উঠল। তমা কি আজও বলবে কে আপনি? তমার মুখোমুখি হতেই সে অস্থিরতার হাসফাস করল। অথচ তমা স্থির নয়নে বসে আছে। তাকে দেখে কিঞ্চিৎ অবাকও হল না। যেনো সে আগে থেকেই জানতো সে এখানে আসবে। মুখের কোণে ঈষৎ হাসিও তার। তাকে দেখে বলে উঠল, ‘আসসালামু আলাইকুম ভাবী।’

নুবাহ অবাক হল তমার মুখে ভাবী ডাক শুনে। জবাবে কি বলবে তাই হাতড়ে বেড়াচ্ছে। আচমকাই আর্বিভাব হল জিতুর। হুট করে তার কোমর জড়িয়ে দাঁড়ালো। টিপ্পনী মেরে বলল,
‘ছোট জা’ সালাম দিলে তার জবাব দিতে হয় নুবাহ। সালামের উত্তর দাও।’

যারপরনাই অবাক নুবাহ। এই লোক না রাগ করে চলে গেছিল। কিন্তু এখন আবার ফেরত এল কেনো? তার ভাবনায় আবারও এক বালতি জল ঢেলে জিতু ইশারা করল সালামের উত্তর দিতে। সে তড়িঘড়ি সালামের উত্তর দিল।
‘ওয়াইলাকুম আসসালাম।’

পরের অংশটুকুতে জিতুই কুশল বিনিময় করল। তমার উদ্দেশ্য বলে উঠল,
‘আমার একমাত্র স্ত্রী, আপনার বড়ো জা’ নয় শুধু, সে আপনার মেয়ের শাশুড়ীও হয় বেয়ান সাহেবা।’

নুবাহ তমা দু’জনেই হতবাক। কিন্তু বন্ধুমহল হেসে হেসে কুটি কুটি। জিমান মুখ টিপে হাসছে। জিতু জিমানের আরও নিকটবর্তী হল। নিজের কান তার মুখের সামনে ধরে ফিসফিস করে বলে উঠল,

‘অতি উত্তেজনায় বিয়ের রাতে বউকে আবার প্রেগন্যান্ট করে দিবেন না। আরও কিছুদিন সময় নিন। আপনার মেয়ের জামাই আসতে আরও বছর’দুই লাগবে। তাই যা করবেন একটু ভেবে চিন্তে করবেন, বেয়াইসাব।’

জিমান ভ্রু কুঁচকালো মুহুর্তে। জিতুর পাঞ্জাবীর কলার চেপে ধরল হুট করে। দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলল, ‘হারামী, তোর নিজের কার্যসিদ্ধি শেষ। এখন আমার কাজেও তোর বাগড়া দিতে হবে।’

জিতুর ভাবলেশহীন জবাব।
‘লজ্জা করে না আপনার? এভাবে মেয়ের শ্বশুরের কলার চেপে ধরতে। ছিঃ বেয়াইসাব! ছিঃ!’

বন্ধুমহলে হাসির রোল। অথচো নুবাহ তমার মাঝে পিনপতন নীরবতা। একে অপরকে কি বলবে তা নিয়ে দ্বিধান্বিত। কারও মনে সংশয় তো কারো মনে লজ্জা। দু’জন দু’জনকে আড়চোখে দেখছে। হৈ-হুল্লোড়ের মাঝে সহসাই আগমন ঘটল মিউমির। হলুদ শাড়ির সাথে খোলা চুলে বেলীফুলের গাজরা পরিহিত এক সুদর্শনা রমণী। তার আগমনে বেশ আড়ম্বরপূর্ণ হয়ে উঠল হলের পরিবেশ। অনেকের দৃষ্টি তার উপর পতিত। এত ভুবনমোহিনী সৌন্দর্যের নারী যে খুব একটা সচরাচর চোখে পড়ে না। জিতু জিমান তাদের খুঁনশুটি থামালো। জিমান কানের কাছে ফিসফিস করল,

‘তোর সুন্দরী প্রেমিকা হাজির। দেখ রূপ এখনো ঠিকরে পড়ছে।’

বাকিটা বলার আগে জিতুর অগ্নিদৃষ্টির সম্মুখীন হল সে। তাই চুপ হয়ে গেল। কিন্তু জিমানের বলা শেষোক্ত কথা নুবাহ ঠিকই শ্রবণ করল। মিউমি এসে জিমান তমাকে অভিনন্দন জানালো। জিতুর দিকে তাকাতে দেখল পাশে দাঁড়িয়ে আছে নুবাহ। দৃষ্টিতে চঞ্চলতা হলেও গলার স্বরে বেশ উৎকন্ঠা তার। জিতুকে উদ্দেশ্য করে বলল,
‘কেমন আছো জিতু?’

জিতুর দৃষ্টি মেঝেতে। দ্বিধাহীন জবাব তার।
‘আলহামদুলিল্লাহ।’
‘আমাকে জিজ্ঞেস করবে না কেমন আছি?’
‘দেখেই বুঝা যাচ্ছে ভালো আছো।’

জিতুর থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে মিউমি নুবাহর দিকে নিল। বলল, ‘কেমন আছো নুবাহ?
নুবাহও জবাব দিল,
‘জ্বী ভালো, আপনি ভালো আছেন আপু?’
মিউমি আলতো হাসল। মাথা নাড়ালো কিঞ্চিৎ।
‘হুমম ভালো আছি। তুমি কার সাথে এসেছো নুবাহ?’

নুবাহর জবাবের পূর্বেই জিতু জবাব দিল দ্রুত। ‘আমার সাথে এসেছে।’
মিউমি যারপরনাই অবাক।
‘ও তোমার কি হয়?’
‘আমার অর্ধাঙ্গিনী, আমার স্ত্রী।’ জিতুর সোজাসাপ্টা জবাব।

মিউমি অবাকের চরম শিখরে। সে জিতুর বিয়েতে যায়নি ইচ্ছে করে। কিভাবে সহ্য করত এসব। এতদিন আড়ালে রেখেছিল নিজেকে। ভার্সিটিও পর্যন্ত যায়নি। জিমানের অনুরোধে সে তার হলুদে আসতে এক প্রকার বাধ্য হয়েছে। কিন্তু আজকে এত বড় বিস্ময় ছিল তার জন্য। তার দৃষ্টি পুরোটাই নুবাহতে নিবদ্ধ। কিন্তু সে অবাক হল এটা ভেবে জিতু নুবাহকে এত সহজে মানিয়ে নিল কিভাবে? চোখেমুখে রাজ্যের বিস্ময়। ফের প্রশ্ন ছুঁড়লো জিতুর দিকে,

‘এত সহজ হয়ে গেলে কীভাবে বউয়ের সাথে?’

জিতু হাসল। ফের নুবাহর কোমরে হাত রেখে দাঁড়ালো। মুখে জবাব নেই তার। মিউমি হা’ হয়ে আছে। এ কোন জিতুকে দেখছে সে। মস্তিষ্ক অসাড় হওয়ার উপক্রম। যেভাবে আসল ঠিক সেইভাবেই চলে গেল। বন্ধুমহল আফসোস করল মুখে। আহ! মিউমি চলেই গেল। কিন্তু জিতুর মুখে তখনও হাসি উপচে পড়ছে। নুবাহও অবাকের শীর্ষ পর্যায়ে। জিতুর আবার কি হল? এভাবে কেউ কথা বলে। এক্সকে এত তুচ্ছতাচ্ছিল্য কেন করলো? কিন্তু মেয়েটা এতটাও খারাপ নয়।
___

বাড়ি ফিরতেই ফ্রেশ হয়ে নিল নুবাহ। জিতুও ফ্রেশ হয়ে বসল মাত্রই। নুবাহ কেমন উশখুশ করছিল কিছু জানতে? বিছানায় সটান হয়ে বসল সে। আচমকাই দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছেড়ে জিতুকে বলে উঠল,
‘আচ্ছা, আপনার আর মিউমি আপুর সম্পর্ক ভাঙ্গলো কেন?’

জিতুর মাথায় যেন বজ্রপাত পতিত হল। কপাল কুঁচকালো মুহুর্তে। নুবাহর জবাব না দিয়ে রক্তিম চোখে তাকালো তার দিকে। নুবাহ ফের প্রশ্ন ছুঁড়লো। ‘রাগ করছেন কেন?’

জিতু এবারও জবাবহীন। রাগে কপালের রগসমূহ দপদপ করছে। ইচ্ছে করছে এই বেয়াদব বউকে দু’গালে থাপ্পড় দিয়ে লাল করে দিতে। জিতুর এমন নিশ্চুপতায় নুবাহ কিছুটা ভড়কালো। কিন্তু দমে যায়নি। ফের প্রশ্ন ছুঁড়লো, ‘তাকে বিয়ে করেননি কেন?’

জিতু বিছানা ছেড়ে উঠল। ড্রয়ার হাতড়ে একটা চাবি বের করল। নুবাহর হাতে সেই চাবি গুঁজে দিয়ে বজ্রধ্বনি তুললো মুখে।
‘এই নাও, এটা তোমার রুমের চাবি। তোমার রুমে যাও। এর পরেরবার তোমাকে যেনো আমার সামনেও না দেখি। যা বের হও।’

নুবাহ হতভম্ব হয়ে আছে। জিতু এরকম রাগলো কেনো? নিজেই তো সারাদিন এক্স এক্স করে। এখন সে বলাতে এত ক্ষেপলো কেন? সটান দাঁড়িয়ে আছে সে। জিতু দেখেও দেখল না। বিছানার অন্যদিকে মুখ ঘুরে চোখ বন্ধ করে রাখলো। নুবাহ ধীরপায়ে জিতুর পাশে এসে শুয়ে পড়ল। ভেজানো গলায় বলে উঠল,

‘স,,সর‍্যিই! আর কখনো জিজ্ঞেস করব না।’

দুজনের রাত বিছানার দু’দিকেই মুখ করে কাটল। নুবাহর কাটল ভয়ে আর জিতুর কষ্টে। আর কতদিন এভাবে দিন যাবে। জিতুর বড্ড কষ্ট হচ্ছে। বউ কেন বুঝে না তাকে। অভিমান জমল মনগহীনে।
___

বিয়ে বাড়ি উৎসবমুখর পরিবেশ। হৈচৈ আর মানুষের সমাগমে গমগম করছে সেনা মালঞ্চ। সন্ধ্যো ঘনিয়ে আসতেই হালকা গোলাপী রঙা বিয়ের পোশাকে বর বউয়ের আগমন ঘটল। ফুলেল আসনে বসানো হল তাদের দু’জনকে। কাজি আসতেই বিয়ে পড়ানোর তোড়জোড় শুরু হল। বিয়ের কার্যক্রম শেষ হতেই ফের খাবারের আয়োজন শুরু হল তক্ষণাৎ। কালোসাদা রঙা লেহেঙ্গা জড়ানো নুবাহর গায়ে। জিতুর গায়ে কালো শেরওয়ানী। নুবাহ, লিমা, তমাকে একসাথে বসানো হল। জিমান বসতেই জিতুকেও বসালো। কিন্তু জিতুর মুখের কোণে গতদিনের মত হাসি নেই। নিষ্প্রাণ মুখমণ্ডল। যেন একটুকরো বরফখন্ড। জিমান ইশারায় জিজ্ঞেস করল কি ব্যাপার! জিতু কিঞ্চিৎ মাথা নাড়িয়ে জবাবে কিছু না’ বলল। ব্যাপার’টা হজম হল না জিমানের। কিন্তু এত মানুষের ভীড়ে ঘাটালো না আর। কোনোভাবে খেয়ে জিতু উঠে গেল মানুষের শোরগোল ছেড়ে।

সেনা মালঞ্চের দক্ষিণের বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। একাকী চুপচাপ নিজের সাথে অজস্র বাক্য বিনিময় করছে সে। আচমকাই এক রমণীর আগমন ঘটল তখন। জিতু না চাইতেও তাকালো তার দিকে। সেই রমণী উশখুশ করে তার পাশে দাঁড়িয়ে সালাম দিল। ভদ্রতাসূচক বলে উঠল,
‘ভাইয়া আমার কিছু কথা ছিল আপনার সাথে। যদি অভয় দেন তাহলে বলতে পারি।’
জিতুর দৃষ্টি পূর্বের ন্যায় আকাশপানে। একপলক লিমার দিকে তাকালো। ফের বলে উঠল, ‘জ্বী, বলুন।’

‘আপনি নিশাতকে কতদিন ধরে জানেন?’
‘কেনো বলুন তো?’
‘বলুন না, কেনো জানতে চান?’
‘আসলে নিশাত, তমা আর আমি আমরা তিনজনেই একই স্কুলে পড়তাম।’
‘হুমম, তারপর।’

লিমা কিঞ্চিৎ ভাবলো। ফের বলে উঠল,
‘নিশাত মেয়ে হিসেবে ভালোই ছিল। কিন্তু তমার ভাইয়ের সাথে তার গভীর প্রেম ছিল।’
জিতু চোখ তুলে তাকালো লিমার দিকে। দৃষ্টিতে কৌতুহল। ফের বলে উঠল,
‘তারপর।’
‘একবার তো হোটেলে দু’জন ধরাও পড়েছে।’
‘তারপর।’

‘পুরো বরিশালের আনাচে-কানাচে তাদের এই প্রেমের খবর ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তে। ওর বাবা লজ্জায় রাতের আঁধারেই পুরো পরিবার নিয়ে গা ঢাকা দেয়। আমি ভেবেছিলাম নিশাতের বিয়ে হয়ে গেছে। নিশ্চয়ই এখন ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু কাল দেখি তমালের সাথে ভরা মজলিসে প্রেমের আলাপ করছে। আমার কাছে তার সব ছবি আছে। দেখবেন।’

‘দেখান তো, আমিও দেখি।’

লিমা নিজের ফোন বের করে নুবাহর সব ছবি দেখালো। জিতু শীতল দৃষ্টি বুলিয়ে যাচ্ছে। আচমকাই একটা ছবিতে তার চোখ আটকে গেল। তার দেয়া কালো সেই হিজাব পরিহিত নুবাহ। তাদের প্রথম সাক্ষাতের দিন সে কালো হিজাব’টা পরতে বলেছিল। এটা সেদিনেরই ছবি হবে। সে হুট করে লিমাকে প্রশ্ন ছুঁড়লো,
‘এটা কবেকার ছবি?’
লিমা কিঞ্চিৎ ভাবলো। ফের বলে উঠল, ‘অনেক আগের ছবি।’
‘এই ছবিটা আপনাদের এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার দিনের, ৫ ই মার্চের, তাই না!’

লিমা অবাক হল। কিঞ্চিৎ মাথা দুলিয়ে বলে উঠল, ‘জ্বী, মনে পড়েছে। সেদিন দু’জনে হোটেলে দেখা করতে গিয়েছিল। আর সেদিনই ধরা পড়েছিল। এটা সেইদিনেরই ছবি।’

জিতু সবগুলো ছবি নিজের মুঠোফোনে নিয়ে নিল। লিমার গ্যালারি আর গুগল ফটোস থেকে নুবাহর সব ছবি রিমুভ করল। লিমা ফের অবাক হল। ঘাবড়ে গিয়ে বলল,
‘ছবি রিমুভ দিলেন কেন?
‘কারণ, আমার বউয়ের ছবি অন্যের ফোনে থাকবে কেনো?
‘এরকম একটা দুশ্চরিত্রা বউ নিয়ে আপনি থাকেন কিভাবে?’

জিতুর চোয়ালদ্বয় কঠিন হল মুহুর্তে। দু’চোখে অগ্নিদহন হচ্ছে। কোপিত কন্ঠস্বর বজ্রধ্বনি তুললো মুখে।
‘ভাগ্য ভালো আপনি আমার বড় ভাইয়ের বউ। নয়ত যে মুখ দিয়ে আমার বউকে দুশ্চরিত্র বলেছেন না, সেই মুখটায় সটিয়ে লাল করে দিতাম।’

‘আপনি না পারলেও আমি তো পারবো দু’গাল সটিয়ে লাল করে দিতে।’
আচমকাই দরজায় দাঁড়ানো এক মানবীকে দেখে থমকায় দু’জন।

চলবে,,,,,,

তো বলুন এই মানবী কেঠা?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here