অ্যারেঞ্জ_ম্যারেজ #অবন্তিকা_তৃপ্তি #পর্ব_২৯

0
357

#অ্যারেঞ্জ_ম্যারেজ
#অবন্তিকা_তৃপ্তি
#পর্ব_২৯

শুভ্র-তুলির বিয়ে উপলক্ষে শুভ্রদের দাদার বাড়ির গুটিকয়েক আত্মীয়স্বজন এসেছিলেন। দুপুরে খেয়েদেয়ে তারা যে যার বাড়ি চলে গিয়েছেন। সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটটা আপাতত খালি পড়ে আছে। বর্তমান শুভ্র বাসায় নেই। কনস্ট্রাকশন এরিয়াতে গিয়েছে। ফ্ল্যাটে শুধু আফরোজা ও তুলি। তুলি এতোক্ষণ রুমে ঘুমাচ্ছিলো। আসরের আজান শুনে মাত্রই ঘুম থেকে উঠে নামাজ পরলো। দুপুরে আফরোজা ভাত খেয়েই ঘুমিয়েছে। এরপর আর দেখেনি তুলি। তুলি নামাজ শেষ করে চুলগুলো হাতখোপা করতে করতে আফরোজার রুমে গেল। আফরোজা জায়নামাজে বসে তাজবীহ পরছেন। তুলি গিয়ে আফরোজার পাশে মেঝেতেও হাঁটু ভেঙে বসলো। আফরোজা তাসবিহ শেষ করে কথা বললেন- ‘ঘুম শেষ?’

তুলি হালকা হেসে মাথা দুলালো। আফরোজা হাসলেন। নিজের কোল দেখিয়ে বললেন- ‘মাথা রাখ এখানে। মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।’

তুলি এ কথা শোনে অবাক চোখে কিছুক্ষণ আফরোজার দিকে চেয়ে থাকে। তারপর মুগ্ধ হয়ে আফরোজার কোলে মাথাটা রাখে। আফরোজা মাথা থেকে আঁচল সরিয়ে চুলে এক হাত দিয়ে বুলিয়ে দিচ্ছেন অপরহাতে তাজবীহ পরছেন। আরামে তুলির আবারও ঘুম পাচ্ছে। তুলি বললো- ‘আম্মু মাত্র ঘুম থেকে উঠলাম। আবারও ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছো আমাকে তুমি।’

আফরোজা হাসলেন। নিজের মতো করে চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বললেন- ‘তুই যখন আমাকে শুভ্রর মতো আম্মু ডাকিস না, তুলি? আমার না তোকে নিজের মেয়ে মেয়ে মনে হয়। ভালো লাগে শুনতে। এভাবেই ডাকিস কিন্তু সবসময়।’

তুলি হেসে আফরোজার হাত চেপে ধরে মুগ্ধ চোখে বলল- ‘আর তুমি যখন এভাবে কোলে মাথা রাখিয়ে চুলে হাত বুলাও না? তোমার হাত- গা থেকে কেমন মা মা একটা গন্ধ আসে। শাশুড়ি শাশুড়ি গন্ধ পাই-ই না।’

তুলি শেষের কথাটা বাচ্চাদের মতো মুখ ফুলিয়ে বললো। আফরোজা হেসে উঠলেন। তুলির চুল হাত দিয়ে নাড়তে নাড়তে বললেন-‘চুলে তেল দিস না কতদিন? পাখির বাসা হয়ে আছে চুল।’

তুলি চুল দেখলো, তারপর বললো- ‘অনেক ম্যাসাজ করতে হয়, তাই প্রতিদিন দেইনা। শুধু শুক্রবার দেই, দিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলি আবার। বেশিক্ষণ তেল মাথায় রাখলে মাথা ব্যাথা করে আমার।’

আফরোজা তুলির চুলটা হাত দিয়ে নেড়ে দেখে বললেন- ‘তেলের কৌটাটা নিয়ে আয়। আমার ড্রয়ারের উপর রাখা- যাহ।’

তুলি অবাক হয়ে বললো- ‘তুমি তেল দিয়ে দিবে?’

‘হ্যাঁ, দিবো। যা নিয়ে আয় এখন।’

আফরোজার সোজাসোজি জবাব। তুলি প্রথমে অবাক হলেও,পরপরই নিজের বিস্ময় কাটিয়ে উঠে তেল নিয়ে বসলো। আফরোজা তাজবীহর গোটা একপাশে রেখে তুলির চুলে তেল দিয়ে দিচ্ছেন। তুলি আরামে চোখ বুজে আছে। অদ্ভুতভাবে আবার ঘুম পাচ্ছে তুলির। আফরোজা চুলে তেল দিতে দিতে বললো- ‘চুলে প্যাক দিস না? মেহেদী প্যাক দিবি? আমি বানিয়ে দিবো? আমি তো প্রতি বুধবার দিই।’

‘নিজে বানিয়ে?’
‘হ্যাঁ।’
‘আড়ং এ কিনতে মিলে, ওখান থেকেই কিনে নাও না কেন? খামোকা এত কষ্ট।’

‘ধুর, ওগুলো ভালো নাকি? কী না কী মেশায়। আমি আমার নিজের মেহেদী গাছ থেকে মেহেদী এনে বেটে তারপর প্যাক বানিয়ে মাথায় দেই।’

‘নিজেদের মেহেদী গাছ? কোথায় লাগানো? আমি দেখলাম না।’

‘ছাদে আছে। তোকে একবার ছাদ ঘুরিয়ে আনবো। শুভ্র তো অনেক গাছ লাগিয়েছে ছাদে। ফুল গাছও আছে। আমি মাথায় দেই বলে- মেহেদী গাছও এনে লাগিয়েছিলো গতবছর।’

তুলি অবাক হয়েছে। পরপর খুশিও হয়েছে আবার। শুভ্র তার মতোই গাছ লাগাতে জানে। এখন থেকে তুলি ও শুভ্র একসঙ্গে গাছের জড় এনে লাগাবে টবে।তারপর গাছগুলোর বড় হওয়া, ডালপালা ছড়ানো দুজন এসব একসঙ্গে উপভোগ করবে।

বউ-শাশুড়ির গল্পের মধ্যে কলিং বেল বাজলো। আফরোজা তুলির চুলে বেনুনি করে বেধে দিলেন। তারপর বললেন- ‘দরজা খুলে আয়, শুভ্র এসেছে হয়তো।’

তুলি তেলের কৌটা জায়গায় রেখে উঠে গেল। দরজা খুলে ওপাশে ইন করা ব্ল্যাক শার্ট-প্যান্ট পরে ক্লান্ত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা শুভ্রকে দেখে হাসল তুলি। দরজায় ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে শুভ্রকে আপাদমস্তক দেখে বললো- ‘ডাক্তার সাহেবের শেষ অব্দি ঘরে ফেরার কথা মনে পড়লো?’

শুভ্র তুলির দিকে চেয়ে আছে। মসৃণ কোমরটা বাঁকিয়ে দরজার সাথে হেলান দিয়ে আছে তুলি। মারাত্মক একটা দৃশ্য। এমন দৃশ্যে শুভ্রর কী কন্ট্রোল থাকে নিজের উপর। মোটেও না, আর থাকলো না। শুভ্র এগিয়ে এসে দুহাতে তুলির কোমর আগলে পেছন থেকে দরজা লাগিয়ে দিল। শুভ্র কোমর আগলে ঘনিষ্ঠ হতেই তুলি হইহই করে উঠল। শুভ্রকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বারবার আফরোজার রুমের দরজার দিকে চেয়ে বললো- ‘আহ, ছাড়ুন মা, আম্মু ও ঘরে কিন্তু। চলে আসবে যেকোনো সময়।’

তুলি বারবার আফরোজার রুমের দিকে তাকাতে লাগলো। শুভ্র একবার উকি দিয়ে দেখলো। আফরোজার রুমের দরজা কিছুটা ভিড়িয়ে রাখা। শুভ্র যেন আরো লাই পেল। তুলির কাঁধে শেষবারের ন্যায় নাক ঘষে বললো- ‘রুমে আসো, বোঝাপড়া আছে।’

কথাটা বলে শুভ্র চট করে তুলিকে ছেড়ে সোজা হেঁটে চলে গেল আফরোজার রুমে। তুলি হা হয়ে গেলো। এই লোকটা বাইরের মানুষের সঙ্গে একরকম আর তুলির সাথে কী না- এসব অসভ্যতামি করে। হায়, তুলি এই পাগলাটে শুভ্রকে নিয়ে কই যাবে। তুলি কই যাবে আর। যাওয়ার জায়গা তো নেই। শুভ্রর সংসারে তুলির শেকড় ছড়িয়ে গেছে। যেতে চাইলে উপড়ে যাবে। তুলি হালকা হেসে দরজায় সিটকিনি তুলে রান্নাঘরে গেলো। দুধ চা বসাল দু কাপ, এক কাপ রঙ চা-ও আফরোজার জন্য বসালো।

শুভ্র বেশ অনেকটা সময় আফরোজার রুমে কাটিয়ে নিজের রুমে এলো। ফ্রেশ হয়ে ধোয়া কাপড় বারান্দায় মেলে রুমে এসে বসলো। তুলি আফরোজাকে চা দিয়ে নিজেদের চা নিয়ে রুমে এলো। চুরির রিনেঝিনে শব্দ কানে যেতেই শুভ্র ল্যাপটপ থেকে মাথা তুললো। তুলি দরজা খোলা রেখেই রুমে ঢুকে যাচ্ছিল। শুভ্র সঙ্গেসঙ্গে বললো- ‘দরজা লক করে আসো।’

তুলি চায়ের কাপ হাতে নিয়ে হা করে শুভ্রর দিকে চেয়ে থাকল। কিছুক্ষণ তাকিয়ে নিজেকে সামলে তুলি ভ্রু কুচকে বললো- ‘দিন দুপুরে কীসের দরজা বন্ধ করা? চা নিয়ে এসেছি, চুপচাপ চা খাবেন, অসভ্য পুরুষ।’

শুভ্র ভ্রূ নাড়ালো। তারপর মাথা নিচু করে ল্যাপটপের কিবোর্ডে দক্ষ হাত চালাতে চালাতে বললো- ‘ওকে ফাইন। আমার কী? তবে কেউ লজ্জা পেয়ে যেন বারবার দরজার দিকে না তাকায়- বলে রাখলাম।’

তুলি কিছুক্ষণ ভ্যাবলার মতো শুভ্রকে দেখলো। পরপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো। লক করে চায়ের কাপ নিয়ে শুভ্রর পাশে বিছানায় বসলো। শুভ্র তুলির হাত থেকে চায়ের কাপ নিলো। শুভ্র চায়ে চুমুক দিয়ে বললো- ‘আমাদের বাসায় এই প্রথম তোমার চা বানানো, রাইট?’

তুলি চায়ে চুমুক দিতে দিতে নিজেই আগ বাড়িয়ে শুভ্রর গা ঘেঁষে বসলো। শুভ্রও তুলিকে একহাতে আগলে ধরলো। তুলি শুভ্রর বুকে মাথা রেখে বললো- ‘মজা হয়েছে?’

শুভ্র এ প্রশ্নে টিপ্পনী কেটে বললো- ‘মজা হয়নি বললে আমার ঘাড় থাকবে?’

তুলি ভ্রু কুচকে শুভ্রর চোখে তাকালো। বললো- ‘ঘাড় থাকবে না মানে? আমি এত খারাপ বৌ নাকি?’

শুভ্র তুলির এভাবে ফ্যাকাসে হয়ে কথা বলার কারণ ধরতে পারল। আলগোছে তুলিকে আগলে কপালে গাঢ় চুমু খেয়ে বললো- ‘উহু, তুমি আমার ঘরের লক্ষ্মী, তুলি। তুমি আমার ঘরে শাড়ি পরে হাটছো, আমার জন্যে চা বানাচ্ছো নিজের হাতে, আমায় এতটা ভালোবাসো-পুরো ব্যাপারটার জন্যে আ’ম লাকী। তোমার চেয়ে ভালো কেউই আমার বৌ হতে পারতো না। তুমি আমার পাশে আছো বলেই আমার জীবনে আজ এত সুখ, এত পূর্ণতা। শুভ্র শ্যুড থ্যাংক ইউ ফর দিস, অ্যান্ড অলসো-‘

তুলি আগ্রহ নিয়ে শুভ্রর কথা শুনছে। শুভ্র চা শেষ করে কাপটা আলগোছে টি-টেবিলের উপর রেখে তুলিকে দুহাতে আগলে নিজের সঙ্গে চেপে ধরলো। তুলিও বাধ্যগত বৌয়ের ন্যায় শুভ্রর সঙ্গে একদম মিশে গেল। শুভ্র তুলিকে বললো- ‘এন্ড ফর ইওর আনলিমিটেড লাভ, শুভ্র শ্যুড অলসো গিফট ইউ অ্যা কিউট লিটল প্রিন্সেস।’

শুভ্র থামলো। তুলি লজ্জায় মাথা নিচু করলো। শুভ্র বাচ্চার জন্যে এতটা উন্মাদ হয়ে আছে- ভেবে তুলি লজ্জায় শেষ হয়ে যাচ্ছে। শুভ্র তুলির কপালের চুল কানের পেছনে গুঁজে কানের লতিতে ঠোঁট ছুঁইয়ে ফিসফিস করে বললো- ‘শ্যুড অ্যাই, মিসেস শুভ্র?’

উফ- এতটা নেশালো গলা। তুলি ডুবে যাচ্ছে যে। তুলি থামলো। উত্তর দিলো না। গলায় সমস্ত কথাগুলো কাটার ন্যায় আটকে আছে। নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে না তুলি। শুভ্র তুলিকে চুপ দেখে তুলির কানের কাছে আবারো ফিসফিসালো- ‘মিসেস শুভ্র কয়টা প্রিন্সেস গিফট চায় বলুক। যতগুলো চায় বলুক- মিস্টার শুভ্র সবেতেই একদম প্রস্তুত।’

তুলি আবেশে শুভ্রর টিশার্টের কলার খামছে ধরলো। জোরেজোরে নিঃশ্বাস ফেলে বললো- ‘মিস্টার শুভ্র কী চায়?’

‘অ্যা ক্রিকেট টিম।’

শুভ্র আগের চেয়েও ফিসফিসিয়ে উত্তর দিলো। তুলি আবেশে শুভ্রর কথা না শুনেই বলে দিল- ‘মিসেস শুভ্রও তাই চায়।’

সঙ্গেসঙ্গে শুভ্র তুলিকে ছেড়ে পিছিয়ে গেলো। তুলির লাজুক মুখটার দিকে চেয়ে চোখ বড়বড় করে বললো- ‘ক্রিকেট টিম? শিউর তো? এতগুলি বাচ্চার ধকল সামলাতে পারবে? পারলে চলো- আজকে থেকেই প্রসেসিং শুরু করি।’

দুষ্টু হেসে দুহাত তুলির দিকে বাড়িয়ে এগিয়ে এলো শুভ্র। তুলি হা করে এতোক্ষণ শুভ্রর দিকে চেয়ে ছিল। নিজের কথার অর্থ এতক্ষণ বুঝতে না পারলেও শুভ্রর দুষ্টু হাসি দেখে এখন ঠিক বুঝল। শুভ্র তুলিকে ছুঁবে- তার আগেই তুলি চায়ের কাপদুটো নিয়ে উঠে গেলো বিছানা থেকে। শুভ্র ভ্রু নাড়িয়ে তাকালে, তুলি হেসে বললো- ‘দিল্লি আভি ভি বহুত দূর হ্যা।স্বপ্ন দেখা বন্ধ করুন- ডাক্তার সাহেব।’

‘অ্যাই কী বল-‘

শুভ্র তুলিকে পাকড়াও করতে চাইলো, তার আগেই তুলি চায়ের কাপদুটো নিয়ে পালালো। শুভ্র মাথার পেছনে চুলকে হেসে উঠলো।

তারপর- তারপর শুভ্র সারাটাদিন তুলিকে জ্বালিয়ে খেলো। তুলি যেখানেই যায়- বারবার তুলির কানের কাছে এসে জানায় ক্রিকেট টিম কিভাবে বানানো যায়, একটা ক্রিকেট টিমের উপকারিতা কী, নিজেদের বাসা থেকেই একটা ক্রিকেট টিম তৈরি হলে দেশের কতবড় লাভ, এসবই শুভ্রর আজকের সারাদিনের কথা বলার টপিক।

এই তো- এখন। সবাই খেতে বসেছে। শুভ্রর দুষ্টুমিও এখানেও একটাসময় শুরু হয়ে গেলো। খাবারের একফাঁকে খোপ করে তুলির হাত ধরে নেয়। থমকে যায় তুলি। আড়চোখে শুভ্রর দিকে চেয়ে, টেবিলে বসে থাকা আফরোজার দিকে চোখ ঘুরায়। আফরোজা খেতে মগ্ন। তুলি সবার অগোচরে ডান হাতে শুভ্রর হাতে থাপ্পড় বসায়, ফিসফিসিয়ে বলে,

‘কী হচ্ছে কী? স্যার হয়ে ছাত্রিকে ইভটিজিং করা হচ্ছে?’

শুভ্র দুষ্টু হেসে বললো,

‘হু, বাকি ইভটিজিং রুমে চলো, দেখিয়ে দিচ্ছি। প্লিজ গিভ মি অ্যা চান্স মিস ছাত্রি।’

শুভ্র শেষের কথাটা বেশ করুণ গলায় বললো। তুলি আরও দু কথা বলবে তার আগেই আফরোজা খেতে খেতে বললেন,

‘তুলি, খাবার ঠান্ডা হচ্ছে। ক্ষুধা নেই আজ তোর?’

তুলি সোজা হয়ে বসল। চেয়ারে নড়েচড়ে বলল,

‘হ্যা আম্মু খাচ্ছি তো।’

পাশ থেকে শুভ্র বললো,

‘আম্মু বুঝতে পারছে না আসলে, তার ছেলের বৌর আপাতত কী খেতে মন চাইছে? আমি হেল্প করবো?’

তুলি চোখ রাঙাল। সকাল থেকে এই ছেলেটা তাকে জ্বালিয়েই যাচ্ছে। মূলত তার হয়েছেটা কী? শুভ্র ভদ্র ছেলের ন্যায় খেতে মশগুল। তুলি শুভ্রর দিকে চেয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। কে জানে, এই শুভ্র মশাই মোটেও শুভ্র অর্থাৎ ভালো না। বরং নেহাতই অসভ্য পুরুষ। ইশ- তুলি যদি মানুষটার অসভ্যতা সবাইকে জানাতে পারতো। একদম টাই টাই ফুশ হয়ে যেত এই ভদ্র মুখোশ পরা অসভ্য পুরুষের।

শুভ্র এখনো তুলির হাত চেপে ধরে আছে। তুলি ভালো করে খেতেও পারছে না। সারাদিন পর খেতে বসেছে, শুরু হয়েছে তার অসভ্যতা। তুলি একটাসময় বিরক্ত হয়ে বললো,

‘মশাই, এসব ছোয়াছুঁয়ি আমরা রুমে গিয়ে করি, হু?’

শুভ্র দুষ্ট হাসলো। তুলির দিকে চেয়ে ফিসফিস করে বললো,

‘ক্রিকেট টিম বানাবে বললে, তাহলে তো সবসময় ছোয়াছোঁয়ি ইজ মাস্ট,মিসেস শুভ্র! আম ট্রায়িং ম্যাই বেস্ট টু মেইক অ্যা বেস্ট ক্রিকেট টিম, ইউ নো?’

শুভ্র ডান চোখটা টিপলো। তুলি হা হয়ে শুভ্রর দিকে তাকাল। বিকেলের কথা নিয়ে এখনো টিজ করে যাচ্ছে? তুলি এবার জোর করে নিজের হাত শুভ্রর থেকে ছাড়িয়ে নিলো। তারপর শুভ্রর দিকে ঝুঁকে ফিসফিস করে বললো,

‘দুটি সন্তানের বেশি নয়-একটি হলে ভালো হয়, মিসেস শুভ্র সম্পূর্ণভাবে এই রুলসে বিশ্বাসী। এর বেশি আবদার করে মিসেস শুভ্রকে লজ্জা না দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি,শুভ্র মশাইকে।’

#চলবে
আজকে আপনাদের কাঙ্ক্ষিত ‘তৃপ্তি স্পেশাল পর্ব’ দিতে পারলাম না, দুঃখিত, অলরেডি পর্ব অনেক বড় হয়ে গেছে। আগামী পর্ব মাস্ট আপনাদের ‘তৃপ্তি স্পেশাল পর্ব’ হবে- ফর শিউর❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here