#তোমার_জন্য_সিন্ধুর_নীল
#পর্ব_১৯
#সারিকা_হোসাইন
নির্ঝর আবাসিক
চারপাশে সবুজ গাছ আর ফুলের সমারোহ,সাথে একটি বড় লেক।চারপাশের নারিকেল গাছের চিরল পাতা গুলো হালকা বাতাসে থেকে থেকে দোলে উঠছে।পাখির কিচিরমিচির এ পুরো জায়গাটা অসাধারন লাগে।
এই অমায়িক পরিবেশে থমথমে মুখে দাঁড়িয়ে আছে পিউ আর সৌম্য।
পিউএর চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ছে জল।সে আর কখনো স্বর্গকে মুখ দেখাতে পারবে না।
পিউ কান্না থামিয়ে শক্ত কন্ঠে বলে উঠলো―
তোমাকে সব জানানোর পর ও মেজর মুহিত কে কেনো জানালে না সৌম্য?
পিউ এর এহেন অভিযোগ এর আঙ্গুল উঠানো দেখে অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে গেলো সৌম্য।
এই মেয়ে এখনো তাকে চিনতে পারেনি?
এতো বড় অপবাদের আঙ্গুল তুলে ফেললো?
তবুও কন্ঠে স্বাভাবিকতা বজায় রেখে বললো
―তোমার কি মনে হয় পিউ?
“”মেজর সম্পর্কে এতো বড় একটা কথা গোপনে চেপে যাবো আমি ?
আমি রেকর্ড সমেত মেজর কে সব বলেছি।
উনি আমাকে কি বলেছে জানো?
প্রশ্নবিদ্ধ নজরে সৌম্যের পানে চাইলো পিউ।সে জানতে চায় কি বলেছে মেজর?
মেজর মুহিত বলেছে এসব কথা যেনো আমি কাউকে না বলি,শুধু তাই নয় ডিপার্টমেন্ট কেও জানাতে নিষেধ করেছে
উনি সকল প্রমান এক সাথে জোগাড় করে লড়াই করতে চেয়েছিলো।
ভাগ্য সহায় না হলে আমাদের কি কিছু করার থাকে পিউ?
থেকে থেকে সৌম্যের চোখ লালচে বর্ন ধারণ করছে, টলটলে অশ্রু জমা হচ্ছে মনিতে।কন্ঠ রোধ হয়ে আসছে।
কিন্তু ছেলে মানুষ চাইলেই কি যখন তখন কাঁদতে পারে?
পিউ তোমার কাছে আমার অনুরোধ তুমি রিস্ক নিয়ে আর কিছু করতে যেও না।তোমার বাবা তোমাকে জিম্মি করতে এক মিনিট ও সময় নেবেনা।প্লিজ এখানেই স্টপ যাও।
******
ফোনের গ্যালারি থেকে নিজেদের আনন্দঘন মুহূর্তের ছবি স্ক্রল করে করে দেখছে স্বর্গ।টুপটুপ করে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে কপোল বেয়ে।মুহিত নেই এটা ভাবতেই তার বুকে ব্যাথা হচ্ছে।আজকাল কান্না করতে গেলেও কষ্ট হয় অনেক।নিঃশাস বন্ধ হয়ে আসে।নিজেকে অপয়া মনে হয়।
―আমার সংস্পর্শে এসেই তোমার ক্ষতি হয়ে গেলো মুহিত!
দুজনের কতো প্ল্যানিং ছিলো, এখনো কতোটা পথ হাটতে বাকী।এভাবে চলে গেলে আমি কিভাবে বাঁচবো?
হঠাতই চিল্লাচিলি শুরু করে দিলো স্বর্গ
―তুমি ধোঁকাবাজ মুহিত, ইউ চিট
―আই উইল নেভার ফরগিভ ইউ
বেড সাইড টেবিলের উপর থাকা ফুলদানি ছুড়ে মারলো ড্রেসিং টেবিলের আয়নায়।
মুহূর্তেই পুরো রুম ঝনঝন শব্দে আলোড়িত হয়ে গেলো।
বাইরে থেকে তনুজা আর সুখ দরজা কড়া নেড়ে যাচ্ছে,কিন্তু স্বর্গ দরজা খোলে না।
মেয়ের এমন দুরবস্থা মা হয়ে সহ্য করতে পারছেন না তনুজা।এমন কঠিন পরিস্থিতিতে কোনো দিন তার পড়তে হবে এটা তিনি দুঃস্বপ্নেও ভাবেন নি।
সুখ দরজার বাইরে থেকে বলে উঠলো
―প্লিজ আপু শান্ত হয়ে যা,ভাইয়া ঠিক ফিরে আসবে,মাম্মা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে,,প্লিজ হুঁশে আয়।
তনুজা কাঁদতে কাঁদতে স্বর্গকে উদ্দেশ্য করে বললো
―মাম্মা যেখান থেকে পারি মুহিত কে এনে দেব তবুও এমন করিস না বাবা!
হঠাৎ ই শান্ত হলো স্বর্গ।স্বাভাবিক গলায় মাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো
―কিচ্ছু হয়নি মাম্মা আমি ঠিক আছি।
চলে যাও দরজার সামনে থেকে।
――――――
ট্রাক ড্রাইভার ছেলেটিকে আদ্রিয়ান ঢাকায় এনে সিএমএইচ এ ভর্তি করেছে ,ছেলেটিকে তাদের প্রয়োজন।ভয়ে ঘাবড়ে আছে ছেলেটি।একটু স্বাভাবিক হলেই জবানবন্দি নেয়ার কাজ শুরু হবে।
ছেলেটির মা আর ছোট ছোট ভাই বোনকেও ঢাকা এনে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে।
এই মুহূর্তে ছেলেটির স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা সবার কাছে বেশি ইম্পরট্যান্ট।
আর্মি দেখলেই ভয়ে কেঁদে উঠছে ছেলেটি, আর বলছে সে কিছুই জানেনা।
বিভিন্ন কায়দা করে তাকে ট্রমা থেকে বের করতে হবে।
কিভাবে ছেলের মুখ থেকে কথা বের করতে হবে তা মেজর আদ্রিয়ান এর খুব ভালো করে জানা আছে।
অপেক্ষা শুধু উপযুক্ত সময়ের।
******
জুন মাস শেষ হয়ে জুলাই এ পড়েছে।এক লহমায় কেটে গেছে পঁচিশ টি দিন।অসহায় দরিদ্র পরিবারটি অচেনা লোকটিকে নিয়ে ভীষন বিপদে পড়েছে।।কবে লোকটির জ্ঞান ফিরবে ,কবে তার আসল পরিচয় জানা যাবে?
প্রতিদিনের মতো সেদিনও তারা খুব সকালে অন্ধকার না কাটতেই দেবতার পূজা দেবার জন্য সুরমা নদীর তীরে গিয়েছিলো।
নদীর তীরে তারা রহস্য জনক কিছু দেখতে পেয়ে দৌড়ে এগিয়ে যায়।
কাছে যেতেই গৃহ কত্রী দেখতে পায় একটি যুবক নদীর তীরের কাঠের গুড়ির সাথে আটকে আছে।হয়তো স্রোতে ভেসে এসেছে।পরনের কাপড় ছেড়া।
প্রথমে তারা ভেবেছিলো মৃত কোনো লাশ হয়তো ভেসে এসেছে।কিন্তু নাকের কাছে আঙ্গুল ছোয়াতেই কর্তা চমকে উঠে।
এখনো শ্বাস চলছে।
স্বামী স্ত্রী দুজনে মিলে টেনে হিচড়ে শুকনো পাড়ে তোলার চেষ্টা করে।
লোকটির অত্যাধিক উচ্চতা,আর ওজনের ভারে দুজনেরই বেগ পোহাতে হয়।
যুবক টিকে উল্টে পাল্টে দেখতেই তাদের মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
―বুকে ক্ষত, একটা হাত আর পা ভেঙে ভাঁজ হয়ে আছে,গালের চামড়া ছিলে গেছে,পিঠে বুকে অসংখ্য জখম।
স্বামী স্ত্রী দুজনেই দুজনের মুখ চাওয়া চাওয়ি করে নিজেদের ঘরে নিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
কোনো মতে টেনে হিঁচড়ে বাড়িতে এনে ভেজা পোশাক পাল্টে নিজেদের পোশাক পরাতে চায়।
কিন্তু তাদের পোশাক কোনোভাবেই ছেলেটির দেহে ঢুকানো গেলো না।
যুবকটির গড়ন তাদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ।শুধু একটা লুঙ্গি পরিয়ে কাঁথা দিয়ে শরীর ঢেকে দিয়ে চলে গেলো বৈদ্য খুঁজতে।
তাদের কাছে মনে হয় ডাক্তার এর ওষুধ থেকে বৈদ্যর জরিবুটি তে বেশি কাজ হয়।
আর ডাক্তার এর কাছে নিতে গেলেও ঝামেলা অনেক।এখান থেকে উপজিলা হাসপাতাল অনেক দূর।যানবাহন এর ও তেমন ভালো ব্যাবস্থা নেই।পাহাড় আর কাঁচা রাস্তার কাদামাটি পার হয়ে তার পর যেতে হবে উপজেলায়।
লোকটির এহেন অবস্থায় তাকে নিয়ে উপজেলায় যাওয়াও দুষ্কর।আপাতত সুস্থ হলে পরে ভেবে দেখা যাবে কি হয় না হয়!
বৈদ্য এসে লোকটি কে দেখে চিন্তিত হয়ে পড়লেন―
ধারালো কিছু দিয়ে তার বুকে আঘাত করা হয়েছে যা বুক ভেদ করে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে গেছে।হাত পা এমন ভাবে ভেঙেছে জরিবুটি তে কাজ হবে কিনা সে জানেনা,কিন্তু গালের,বুকের পিঠের জখম ঠিক করতে পারবে তিনি।
অসহায় পরিবার টি তবুও বৈদ্য কে সাময়িক চিকিৎসা চালাতে অনুরোধ জানান।
বৈদ্য জরিবুটি লাগিয়ে চলে গেছে সেই কবেই লোকটির জ্ঞান তবুও ফিরছে না।
পল্লীর আরো জাত গোষ্ঠীকেও এব্যাপারে বলা যাচ্ছে না।তারা বলবে অজাতের মানুষ ঘরে কেনো জায়গা দিয়েছি?
তখন আমাদের সমাজ থেকে বিতাড়িত করবে।
যতটা গোপনে পারা যায় লোকটিকে সুস্থ করে বিদেয় করতে হবে।
ছোট মেয়েটা প্রতিদিন আগন্তুক লোকটির দিকে তাকিয়ে থাকে।তার কাছে লোকটিকে দেবতাই মনে হচ্ছে।মানুষ হলে তো ঘুম ভাঙতো এতোদিনে।মেয়েটির অনেক প্রশ্ন জমা আছে এই দেবতার কাছে সাথে নানান স্বপ্ন পূরণের বাহানা।দেবতা জেগে উঠলেই প্রথমে এক বস্তা চাল দিতে বলবে,যাতে তারা প্রতিদিন তিন বেলা পেট ভরে ভাত খেতে পারে।
সেজন্য সারাক্ষন মেয়েটা তার শিয়রে বসে থাকে।
――――――
তুমি এভাবে কাপুরুষের মতো পালিয়ে এসেছো ভাইয়া?তুমি তো ভীতু!তুমি আমাদের সবাইকে কষ্ট দিয়েছো।বাবা আর তোমার সাথে কোনোদিন কথা বলবে না।তুমি দুর্বল,তুমি তো বিবেক কাজে লাগিয়ে কাজ করোনি,তুমি নির্বোধ।চলে যাও আমাদের বাড়ির দরজা থেকে ,বেরিয়ে যাও।তুমি কাপুরুষ।
হঠাৎই আগন্তুক অস্থিরতা শুরু করলো,তার কপাল কুঞ্চিত হলো,ঠোঁট নড়ে উঠলো কিন্তু কিছু বলছে তা বোঝা যাচ্ছে না।হঠাৎই বড় বড় করে চোখ মেলে চাইলো দেবতা সম্বোধন করা লোকটি।
বাচ্চা মেয়েটা খুশিতে হাততালি দিতে শুরু করলো।হঠাৎই বাচ্চা মেয়েটা মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটিয়ে তার বাবা মায়ের উদ্দেশ্যে চিল্লিয়ে বলতে শুরু করলো―
――স্যান ইউ ইসঙ্গী(দেবতা জেগে গেছে)
লাফাতে লাফাতে হাত তালি দিতে দিতে একই কথা বার বার বলছে মেয়েটা।
মেয়েটির কথা শুনে তার বাবা মা দৌড়ে আসে ,এসে দেখতে পায় লোকটি অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে।মেয়েটির বাবা মা এসে তাদের প্রথা অনুযায়ী আগন্তুক এর পায়ে লুটিয়ে পড়ে হাত ছোয়ায়।
আগন্তুক ভড়কে যায়,পা সরিয়ে ফেলতে চায়,কিন্তু ব্যাথায় পারে না।
আগন্তুক হাত ইশারায় লোকটিকে কাছে ডেকে কিছু বলে উঠে।ঠোঁট নাড়ানো দেখা যাচ্ছে কিন্তু কথা বোঝা যাচ্ছে না।
লোকটি বুঝতে পেরে যায় হয়তো সে কোথায় আছে তা জানতে চাচ্ছে।
লোকটি তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলতে শুরু করলে যুবক বহু কষ্টে শক্তি সঞ্চয় করে তার হাত দিয়ে লোকটির গায়ের জামা টেনে ধরে।এবং আবার ঠোঁট নাড়ায়।
লোকটি কথা শোনার জন্য ঠোঁটের কাছে কান আনলে যুবক শুধায়
―আমি কোথায়?
এবার লোকটি বুঝতে পেরে যায় আগন্তুক এর কথা
তখন সে বলতে শুরু করে―
বাবু তোহকে থ হামরা ছুরমার কিনেরত পাইহেচি,
তোর কায়া থ ঘায়ে ভৈরে ছিবে(তোমার শরীর ক্ষততে ভরা ছিলো)
লোকটি আরো কিছু বলতে চাইলো কিন্তু হাতের ইশারায় যুবক থামিয়ে দিলো।
যুবকটি মনে মনে ভাবলো
সে কোথায় আছে এটা পরে দেখা যাবে, আগে নিজেকে সুস্থ করা দরকার,হাত পায়ের অবস্থা বেগতিক, বুকের ক্ষততে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে,
যুবক আর কিছুই ভাবতে পারলো না পেট গুলিয়ে উঠলো,বমির উদ্রেক হচ্ছে।অস্থির হয়ে উঠলো যুবক।
যুবকের অস্থিরতা দেখে দৌড়ে চলে গেলো বাড়ির কর্তী, একটু পরেই ফিরে এলো হাতে একটি গ্লাস সমেত।
মধু,আর পাহাড়ি উদ্ভিদের রসের সমন্বয়ে তৈরি করা পানীয় বাড়িয়ে দিলো যুবকের উদ্দেশ্যে।
কর্তা লোকটি যুবকটিকে ধরে পিঠের পিছনে দুটো বালিশ দিয়ে আধশোয়া করে বসিয়ে দিলো।
ব্যাথায় চোখ মুখ কুঁচকে এলো তার কিন্তু মুখে শব্দ করার শক্তি অবশিষ্ট রইলো না।
বাচ্চা মেয়ে টি পানীয় টি খাইয়ে দিতে উদ্দত হলো
ওহিদু―(খেয়ে নে)
যুবক এক নিঃশ্বাসে পুরো পানি টুকু খেয়ে ফেললো, অমৃতের মতো স্বাদ ঠেকলো তার কাছে।
পানীয় টি পান করার পর সকল অস্বস্তি এক নিমিষেই গায়েব হয়ে গেলো।
শরীরে শক্তি ফিরিয়ে আনতে হলে প্রথমে দরকার ভালো খাবার।কিন্তু এদের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে দরিদ্র সীমার নীচে এদের বসবাস।নিজেরাই হয়তো ভালো ভাবে খেতে পায়না,তাকে খাওয়াবে কোথা থেকে?
একটু পর ছোট মেয়েটি হাতে করে খাবারের একটি প্লেট নিয়ে এলো
খাবারের চেহারা দেখেই যুবকের পেট গুলিয়ে উঠলো,কিন্তু বেঁচে থাকতে হলে এটাই তাকে খেতে হবে।
উঠে বসতে চাইলো সে,শরীর সায় দিলো না,আবারো চেষ্টা করলো একটু নড়তে সক্ষম হলো,তিন বারের চেষ্টায় বসতে সক্ষম হলো।মনোবল বাড়াতে হবে,এই ব্যাথায় ভেঙে পড়ল হবে না।
আপনজন দের চেহারা মনের কোঠায় ভাসতেই চোখের মণিতে জলে টলমলে হলো।পলক ফেলে জল গুলোকে লুকিয়ে ফেললো।
নিজের হাতে খাবার খেতে চেষ্টা করে ব্যার্থ হলো,ছোট মেয়েটির সহায়তায় পুরো খেতে না পারলেও অল্প খেলো।
পেরিয়ে গেছে আরো এক সপ্তাহ।হাত পা নাড়ানো গেলেও তাতে ব্যাথা প্রচুর।জরিবুটি কি হাড্ডি জোড়া লাগাতে পারে,?
বুকের ক্ষত ড্রেসিং না করলে ইনফেকশন হবে মাস্ট।এখান থেকে আমাকে কোনো শহরে যেতে হবে।
তার আগে হাঁটার ক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
বাঁশ ধরে ধরে ভালোই হাঁটা যায়,তাই বলে কি পঁচিশ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দেয়া সম্ভব??
তবুও যেতে হবে,একটা কচ্ছপ যদি খরগোশের সাথে রেসে জিততে পারে তাহলে সে কেনো পারবে না?
এতো এতো অর্জিত মেডেল, এক্সারসাইজ,মিশন ,প্রতিকূল পরিবেশে যুদ্ধ,ট্রেনিং তাহলে তো বৃথা হয়ে যাবে সব।
উপজাতি লোকটিকে কোনো মতে বুঝিয়ে উদ্ভট পোশাক গায়ে চেপেই,কালো একটি চাদরের সহিত সারা শরীর,মুখ ঢেকে শক্ত বাঁশে ভর দিয়ে চলতে লাগলো সে।
উপজাতি লোকটির নাম মারুং।
মারুং যুবকের হাঁটার ভাবভঙ্গি দেখে বুঝে ফেললেন এই ছেলে কোনো সাধারণ মানুষ নয়।
বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে তিন ঘন্টা হাঁটার পর তারা একটি গরুর গাড়ি দেখতে পায় সামনে।দুজনের চোখ ই চকচকে হয়ে উঠে।
গাড়িয়াল কে অনুরোধ করে মারুং তাদের উপজেলার রাস্তায় নামিয়ে দিতে।
গাড়িয়াল লোকটি পাশের যুবকের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে রাজি হয়।
মুখের হাসি প্রশস্ত হয় মারুং এর।
★★★★★
চৌকষ মেজরকে কেউ অনায়াসে গায়েব করে দিলো এটা কেউ টের ও পেলো না? ডিপার্টমেন্ট এটা কিছুতেই মানতে পারছে না ।আর্মি হেডকোয়ার্টার এ মিটিং বসেছে এই বিষয়ে।
অফিসিয়াল ভাবে তারা মেজর মুহিত কে মৃত ঘোষণা করে তার প্রাপ্ত জিনিসের প্রতি সম্মান জানিয়ে মেডেল সহ তার পরিবার কে প্রদান করবে।এজন্য মেজর মুহিতের মাকে প্রয়োজন।
আর্মি জেনারেল বক্তব্য দিচ্ছেন এমন সময় ক্যাপ্টেন সৌম্যের ফোনে একটি ফোন এলো।
সৌম্য গুরুত্ব না দিয়ে বক্তব্য শুনতে মনোযোগ দিলো।
আবারো কেঁপে উঠলো সৌম্যের ফোন
ফোন বের করে আননোন নম্বর দেখে ভ্রু কুঁচকে উঠলো সৌম্যের।
হল রুম ছেড়ে বাইরে এসে ফোন কানে তুলতেই
ওপাশ থেকে ভাঙা ভাঙা গলার গমগমে আওয়াজ এলো আওয়াজ এলো
―ইটজ ইউর মেজর স্পিকিং ক্যাপ্টেন সৌম্য।
শরীরের লোম দাঁড়িয়ে গেলো সৌম্যের,চোখের কোনে জমা হলো খুশির জল।
আর্মি জিপ স্টার্ট দিয়ে দ্রুত ছুটে চললো
গন্তব্য অজানা শহর।
#চলবে ।