রিদ-মায়ার প্রেমগাঁথা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া ৩০

0
571

রিদ-মায়ার প্রেমগাঁথা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া

৩০
[ কপি করা নিষেদ্ধ ]
রাতের শেষ প্রহরে ঘড়ির কাটা। ভোর চারটার দিকে। ধুরনীতে আযান পড়তে আরও অল্প সময় বাকি। মাত্র মুক্তার গায়ের হলুদের অনুষ্ঠান শেষ করে মেয়েরা যাঁর যাঁর রুমে গিয়ে শুলো গেঁদাগেঁদি করে। আজ বিয়ে বলে কথা, তাই বাড়ির বড়দের চোখে ঘুম নেই। আরিফসহ তাঁর বাবা-চাচারা সবাই বিয়ের বাড়ির খাবার দিকটা সামলাচ্ছে। গরু জবাই থেকে শুরু করে বাবুর্চির কাজের পরিষদ করছে একেক জন। বাড়িতে বড়োরা ছাড়া বাকি সবাই ঘুমিয়ে যাচ্ছে একটু আরামের জন্য। রুম অল্প সংখ্যক হওয়ায় মানুষের সংখ্যা বেশি। প্রত্যেকটা রুমেই মেহমানরা গেঁদাগেদি করে শুয়ে। মায়া আর জুইয়ের রুমে ওদের দুজন ছাড়া আরও পাঁচ সদস্য উপস্থিত। বাকি পাঁচজন মায়া আর জুইয়ের স্কুলফ্রেন্ড। সাত সদস্যের মেয়েরা এলোমেলো ভাবে রুমের খাটে আর নিচে জায়গা করে শুলো। মায়ার জায়গা হলো নিচে। জুই ক্লান্তিতে আজ আর ফোনের খোঁজ করলো না। বরং অনেকটা অভিমান নিয়েই ফোনে কথা না বলে শুয়ে পড়েছে খাটের এক পাশে। আজ জুইয়ের ফোনে কথা না বলার কারণটায় হলো, রাদিফ বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত থেকেও জুইয়ের সঙ্গে দেখা করেনি। সেজন্য জুই অভিমানে অভিযোগ তুলে ফোনালাপ না করেই ঘুমিয়ে পড়েছে। মায়া মাত্রই গোসল সেড়ে ওয়াশরুম থেকে বের হলো। ডিম লাইটের আলোয় দেখলো বান্ধবীদের রুমে এলোমেলো ভাবে ঘুমিয়ে থাকতে। মায়া মাথায় তোয়ালে পেঁচিয়ে পা টিপে টিপে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গেল। রুমের নিচে শুয়ার জায়গা করায় মায়া অন্ধকারে হাঁটতে একটু অসুবিধা হলোও বটে। মায়ার সাথে নিচে সুমি আর মাইশা শুয়ে। বাকি চারজন আড়াআড়ি ভাবে জুইয়ের সাথে খাটে গেঁদাগেদি করে ঘুমিয়ে। মায়া ড্রেসিং টেবিলের উপর থেকে গায়ের ওড়নাটার সাথে ফোনটাও হাতে নিল চার্জার থেকে খোলে। মাথার পেঁচিয়ে রাখা তোয়ালেটা খুলতে খুলতে আবছায়া অন্ধকারে হাঁটল রুমের বারান্দার দিকে। তোয়ালেটা বারান্দায় একপাশে মেলে দিয়েই ভেজা চুল পিঠে ছড়িয়ে ফোন নিয়ে বসল বে’তে মুরাই। ফোনের ডায়াল নাম্বারে ফটাফট রিদের মুখস্থ নাম্বারটা টাইপিং করে কল মিলিয়ে কানে ধরলো। ভোর চারটার দিকে রিদ মায়ার কল রিসিভ করবে কিনা তা না জেনেই কল দিল মায়া। তবে মায়ার বিশ্বাস আজ মায়ার কলটা রিসিভ হবে। আজ রিদ মায়ার প্রতি অভিমান করে মায়াকে দূরে সরিয়ে রাখবে না। মায়া জানে এতো রাতে হয়তো রিদ ঘুমিয়ে আছে। কিন্তু মায়ার ভিতরকার অস্থির ছটফটে সে ঘুমাতে পারছে না বলেই রিদকে কল দিয়ে বসল। যবে থেকে মায়া বুঝতে পেরেছে রিদ মায়ার নিখোঁজ স্বামী হয় তখন থেকে মায়া ব্যাকুল হয়ে আছে রিদের সাথে একটু কথা বলবে বলে। এমন না মায়া রিদকে বলে দিবে যে সে রিদকে চিনতে পেরেছে স্বামী স্বরুপ। মায়া এমন কিছুই করবে না। রিদকে ভুলেও জানতে দিবে না যে মায়া সবটা জেনে গেছে। বরং মায়া সেই আগের মতোই অজানা, অচেনা একজন হয়ে থাকবে আর রিদকে জ্বালাবে। এই লোক মায়াকে কম হেনস্ত করেনি। সবটা জেনেও চুপচাপ অজানা হয়ে বসেছিল। মায়াকে সাহায্য করার নাম করে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরিয়েছে। এবার মায়াও রিদকে হেনস্ত করবে। তবে অন্যভাবে। রিদ মায়াকে শারীরিক ভাবে কষ্ট দিতো আর মায়া রিদকে মানসিক কষ্ট দিবে। এই লোকের কলিজা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই না করলে মায়া নামও মায়া না। এই লোকের জন্য মায়া কি কি না করলো। শেষ পযন্ত সে স্বামী খোঁজ করতে গিয়ে এই লোকের পায়ে পড়লো। অথচ মায়ার স্বামী সে নিজেই ছিল। মায়ার অস্থির ছটফট দেখে পৈঁচাশিক আনন্দ নিয়েছে। এবার মায়াও ছেড়ে দিবে না। সহজে ধরা দিবে না এই লোককে। মায়া কিছুই জানে না, অজানা হওয়ার ভান ধরে এই লোকে কলিজা ছিঁড়ে খাবে। পরকীয়া প্রস্তাব দেয় না মায়াকে? ঠিক আছে মায়াও এই লোককে বুঝাবে যে, পরকীয়া কাকে বলে। মায়া বে’তে মুরাই পা ঝুলিয়ে বসল। দু’ পা দোলাতে দোলাতে পরপর রিদকে কল দিল। প্রথমবার কলটা রিসিভ না হলেও দ্বিতীয়বার ঠিকই হলো। মায়া কিছু বলার আগে ওপাশ থেকে মিষ্টিস্বরের একটা মেয়ের সালাম ভেসে আসল। মায়া বুকটা মূহুর্তে ধুক করে উঠলো। রিদের ফোনে মেয়েলি কন্ঠ শুনে থমকে বসল। অজানা ভয়ে বুক ভারি হলো। উৎফুল্লতা দোলানো পা দুটোও থেমে গেল। কান খাঁড়া হলো, দৃষ্টি কুঁচকে আসল। মায়ার নিশ্চুপতা বুঝে ফোনের ওপাশ থেকে আবারও মিষ্টি কন্ঠের স্বর ভেসে আসল….

‘ হ্যালো কে বলছেন? আমাকে শুনতে পারছেন?

মায়ার কুঁচকানো ভ্রুর সোজা হলো। এতো রাতে রিদের ফোন কার কাছে হতে পারে? ভেবে তীক্ষ্ণ গলায় পাল্টা প্রশ্ন করে বলল…

‘ আপনি কে?
‘ আমি শশী। আপনি কে মিস?

শশীর পরিচয় পেয়ে মায়া বুক ভারি হলো। অজানা কষ্টে কন্ঠে কথা আঁটকে আসল। ঠোঁট কাঁপলো কান্নায়। শশীর সাথে রিদের সম্পর্কের কথা মায়া আগেও অনেক বার শুনেছিল। কিন্তু তখন মায়া তেমন একটা পাত্তা দেয়নি এই বিষয়ে। কারণ মায়া তখন জানত না রিদ খান মায়া নিখোঁজ স্বামী হয় সেটা। মায়ার আজ খান বাড়িতে যাওয়া অবধি চাইতো রিদের সাথে শশীর বিয়ে হোক কিন্তু এখন সেই একই চিন্তা করতে গেলে মায়া মাথায় আকাশ ভেঙে পরার নেয় মনে হয়৷ মায়া এখন আর তেমন কিছুই চাই না। মায়া নিজের স্বামীকে না দেখে এতোই ভালোবেসে ছিল যে সামনে রিদ খান হোক, আর যেই হোক না কেন? মায়া সাদরে নিজের স্বামী হিসাবে সেই মানুষটাকে গ্রহণ করতো। কিন্তু তাই বলে মায়ার কোনো দুশ্চরিত্রের মানুষকে স্বামী হিসাবে মানবে কখনোই।
এখন ভোর চারটার দিকে। এতো রাতে রিদের ফোন শশীর কাছে মানে শশীও রিদের সাথে আছে। দুজন একত্রে কি করছে? আচ্ছা দুজন কি একই রুমে? দুজনের সম্পর্ক এতোটা ডিপ হয়ে গেছে?
মায়া কি দুজনের মাঝে চলে আসল? মায়ার ধ্যান আবারও ভাঙলো শশীর মিষ্টি স্বরের কথায়। শশী সেই আগের নেয় মায়ার উদ্দেশ্যে বলল…

‘ হ্যালো মিস শুনছেন পারছেন আমাকে?
‘ জ্বি আপু।
‘ কাকে চাই আপনার?
‘ উনি কোথায়?

শশী সন্দীহা গলায় জিগ্যেসা করে…

‘ উনি কে?
‘ ফোনটা যার সে কোথায়?
‘ জ্বি সে রুমে। কিন্তু আপনি কে?
‘ উনার ফোন আপনার কাছে আপু?
‘ হ্যাঁ। কিন্তু আপনি কে?
‘ ফোনে নামটা সেইভ আছে আপু। সেখান থেকে দেখে নিন।

‘ ফোনে ‘বেয়াদব বউ’ নামে নাম্বারটা সেইভ। কিন্তু রিদ খানের তো বিয়ে হয়নি। আমি তার ফিয়ন্সে। তাহলে আপনি কে?

‘ আপনি ফিয়ন্সে?
‘ হ্যাঁ। কিন্তু আপ…

টুটু করে মায়ার কলটা কেটে গেল। শশীর বাকি কথা গুলো শুনার আগেই মায়া কলটা কেটে দিয়েছে। শশী সত্যি বলছে মায়া জানে। রিদ শশীর বিয়ে নিয়ে মায়া অনেকবার খান বাড়িতে কথা বলতে শুনেছে। তখন মায়ার এতো গায়ে লাগেনি বিষয়টা কিন্তু এখন বুক কাঁপছে এই একই কথাটা শুনতে। হাহাকার করে জ্বলছে মায়ার মন। মায়ার হঠাৎ করেই যেন কিছুই ভালো লাগছে না। অসহ্য, তেঁতোয় ভরে উঠল মন। হাতের ফোনটা ঠাস করে ফেলল পাশের চেয়ারটায়। মাথা ঝুঁকে দু’হাতে মুখ ঢেকে নিঃশব্দে ফুপিয়ে উঠল। আর তাতে মায়ার ভেজা চুল পিঠ গুলিয়ে পরলো ফ্লোরে। চুলের সিক্ত পানিতে ফ্লোর স্যাঁতস্যাঁতে ভেজা হলেও মায়া সেদিকে লক্ষ করলো না। নিজেকে শুধু তৃতীয় পক্ষ মনে হলো। দুটো মানুষের সম্পর্কে সে তৃতীয় ব্যক্তির ভূমিকা পালন করছে এমন। যার কোনো মূল নেই। একটা সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তি শুধু আগাছার নেয় হয়। যাকে মানুষ তুচ্ছ মনে করে দিন শেষে উগ্রে ফেলে অপ্রয়োজনীয় জিনিসের মতোন। মায়া নিজেকে শুধু তাই মনে হলো রিদ আর শশীর সম্পর্কে। হবে নাই কেন? এই ভোরে শশীর হাতে রিদের ফোনটা থাকা মানে দুজন এই রাত্র পযন্ত একত্রে আছে। মায়া কি কোনো ভুল পথে পা বাড়াল? রিদ খান কি দুই নৌকায় পা দেওয়া মানুষ? বউও রাখবে, আবার গার্লফ্রেন্ড চালাবে। মায়া-তো সেচ্ছায় রিদ খানের মতোন মানুষের সাথে জড়াতে চাইনি। কিন্তু মায়ার ভাগ্য মায়াকে বাজে ভাবে জড়িয়ে ফেলেছে এই সম্পর্কে। মায়া এখন কি করবে? রিদ খান যদি শশীকে বিয়ে করতে চাই তাহলে মায়ার কোনো ক্ষমতা নেই সেটা ঠেকানোর। তাছাড়া দেখা গেলে রিদ খানের সঙ্গে শশীর মতোন পারফেক্ট কাউকেই মানায়। শশী পড়াশোনায় ওয়েল এডুকেটেড। দেখতেও মায়ার থেকে উঁচু লম্বা আর সুন্দর। রিদের হাইটের সাথে যায়। সবচেয়ে বড় কথা মায়া মধ্যেবিত্ত পরিবারের এক সাধারণ মেয়ে। শশীর মতোন অসাধারণ টাকাপয়সা ওয়ালা পরিবারের কেউ নয় সে। রিদ খানের বংশ, স্ট্যাটাস সাথে শশীর মতোন কাউকে মানায়। মায়াকে নয়। মায়া শুধু শুধু ওমন মরীচিকা পিছনে ছুটে নিজের আত্মাসম্মান হুয়াচ্ছে। মায়াকে কখনো রিদ খানের বড়লোকী পরিবার মেনে নিবে না। তারা শশীকেই রিদের বউ হিসাবে খান বাড়িতে চাই। মায়া শশীর সম্পর্কে শুধু তৃতীয় ব্যক্তি ভূমিকা পালন করছে। এর বেশি কিছু নয়। যতোই রিদ খান মায়ার প্রতি আগ্রহ দেখাক না কেন? শশীর সাথে যে রিদের একটা সম্পর্কে আছে সেটা তো মিথ্যা নয়। এই সম্পর্কে কথা সবাই জানে। এমনকি রিদ নিজেও কখনো অস্বীকার করেনি শশীর সাথে এই সম্পর্কটা নিয়ে। এমনটা-তো হতে পারে রিদ মায়াকে বউ হিসাবে চিনার পর মায়ার প্রতি ইন্টারেস্ট ফিল করায় শশীর সাথে চিট করছে। সে আসলে দুই নারীতে আসক্ত। এখন মায়ার উচিত না রিদ খান থেকে নিজেকে দূরে রাখা? অবশ্য উচিত! যে লোক বউ রেখে এতো রাতে গার্লফ্রেন্ডের সাথে রাতকাটায় সে লোক আর যায় হোক না কেন সে মায়ার স্বামী হতে পারে না৷ মায়া জীবনে সে সবাইকে ক্ষমা করবে কিন্তু এমন কোনো লোককে গ্রহণ করবে না যে শরীরের তাড়নায় অন্য নারীকে ছুঁয়ে দেয়। দরকার হলে মায়া নিজের জান দিবে তারপরও নাম দিবে না। সে এই রিদ খানকে কক্ষুনো গ্রহণ করবে না যদি শশীর সাথে রিদের রাত কাটানোর বিষয়টা সত্যি হয়।
~~
বিয়ে বাড়িতে এতো এতো হৈচৈয়ের মধ্যেও মায়া চুপচাপ। বিয়েতে মায়ার মধ্যে খুবই বেশি উৎফুল্লতা না দেখা গেলেও একদমই নিরবতা দেখা যায়নি। সবার মতো করেই বোনের বিয়েতে সাজগোজ করল। সুন্দর দেখতে একটা পাকিস্তানি জামা পরলো সাদার মধ্যে। জুইও সেইম তাই পড়লো। মায়া মাথায় হিজাব করতে গিয়েও করলো না রিদের কথা মনে করে। রিদের তো শশীর সাথে সম্পর্ক আছে তাহলে মায়া কেন রিদের কথা মেনে হিজাব পরবে? পড়বে বা। মায়া অনেকটা জেদ ধরেই হিজাব পড়লো না। বরং বিয়ের গেইটে বরে সাথে রিদকে দেখতে না পেয়ে আরও হতাশ হলো। মায়া প্রথম থেকেই জানতো রিদ বিয়ে বাড়ির ঝামেলার মধ্যে সে আসবে না। হলো তাই। কিন্তু তারপরও মায়া অবুঝ মন রিদের অনুপস্থিতিতে আরও বিষিয়ে গেল। গাল ফুলিয়ে পার করলো সম্পূর্ণ বিয়েটা। দেখা গেল বর যাত্রীতে ফাহাদের সঙ্গে সকলেই উপস্থিত ছিল। এমনকি আয়ন, রাদিফ এই দুজনও ছিল। তাহলে সবার সাথে রিদ আসলে কি এমন হতো? এই রিদের জন্য আসিফও কোথায় যেতে পারে না। নিজেও যায় না আবার আসিফকেও যেতে দেয় না। মন খারাপে মায়া বউ বিদায়ের সময় বর যাত্রীর সঙ্গে যেতে বেঁকে বসল, যাবে না বলে। মায়া যাবে না বলে জুইও মানা করল যেতে। এদিকে মায়ার মা জুইকে মুক্তা সঙ্গে যেতে আদেশ করলেও মায়াকে যেতে কড়াকড়ি ভাবে নিষেধ করল। সামনে মায়ার বিয়ে এই অবস্থায় মায়াকে কোথাও যেতে দেওয়া দৃষ্টিকটু দেখায় বলে তিনি যেতে নিষেধ করলো। কিন্তু জুই মায়াকে ছাড়া একা কোথাও যেতে নারাজ বলে বাধ্য হয়ে মায়াকে যেতে দিলেন তিনি। নাদিম অবশ্যই মায়ার যাওয়া নিয়ে তেমন আপত্তি জানায়নি বরং সে নিজ থেকেই মায়া যাওয়া নিয়ে আরিফ অনুরোধ করে জানায়, মায়া ছোট মানুষ। বড় বোনের বিয়ের আনন্দ যেন মাটি না হয় সেজন্য মায়াকে বর যাত্রীর সঙ্গে যেতে দিতে। নাদিমের পরিবার মায়ার বোনের শশুর বাড়িতে যাওয়া নিয়ে কোনো আপত্তি নেই এটাও শিওর করে।

মায়ার মন খারাপের উদাসীনতা আকাশসম হলো যখন দেখল মায়ার পাশের সিটে শশী বসেছে। মায়াকে দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে কি সুন্দর হাসি হাসি ভাবে ভদ্রতা দেখিয়ে মায়ার সঙ্গে কথা বলছে শশী। মায়া যতোই শশীর সাথে কথা বলছে ততই যেন হতাশ হচ্ছে। মায়া মনে হচ্ছে শশীর থেকে পারফেক্ট মেয়ে আর হতেই পারে না। কথাবার্তায়, আচার- ব্যবহারে যথেষ্ট ভদ্র। এই যে মায়া এতো মন খারাপ করে বসে আছে সেটা কিভাবে যেন শশী বুঝতে পেরেই মায়াকে হাসানোর চেষ্টা করছে। অথচ মায়া শশীকে কিভাবে বলবে যে, সে আসলে শশীর জন্যই মন খারাপ করে বসে আছে। মায়ার নিজেকে খুব ছোট মনে হলো। কষ্ট বুক ভারি করে তাকাল কোলের উপর শশীর ফর্সা হাতটার দিকে। কি সুন্দর ঝলঝল করছে। মায়া শশীর হাতের সাথে নিজের হাতের তুলনা করলো। মায়া হাতটা হলুদে ফর্সা বলে মায়ার মন কেমন অসন্তোষ্ট হলো। শশীর মতোন সাদা ফর্সা হলেই তো মায়া শশীর বরাবর হতে পারতো। মন খারাপে সারাটা রাস্তা মায়া ঘুমের ভান ধরে শশীকে এড়াতে জুইয়ের কাঁধে মাথা ফেলে ছিল। কিন্তু শশীর মায়ার কষ্টটা দ্বিগুণ বাড়িয়ে জুইয়ের কাঁধ থেকে মায়ার মাথাটা নিজের কাঁধে নিলো যাতে জুইয়ের কষ্ট না হয়। শশীর এতো ভালো আচরণে মায়া সত্যি সত্যি কেঁদে বসল। ঘুমের মধ্যে ফুঁপানো শব্দে শশী তাড়াহুড়োয় মায়ার কাঁধ চেপে মুখে তুলে জিগ্যেসা করতে লাগল মায়ার কি হয়েছে? কেন কান্না করছে সে? মায়াকে নিয়ে শশীর এতো অস্থিরতা দেখে মায়ার কান্নার বেগ আরও বাড়লো৷ মায়া কিভাবে বুঝাবে শশীকে যে, ওকে দেখেই তো মায়ার কান্না পাচ্ছে।
~
রাত নয়টা পেরিয়ে দশটার ঘরে। ফাহাদদের তিন তলা বাড়িটি মেহমানে টাঁসা। বাড়ির বড়রা নিজ তলায় মেহমানদের খাবারের তদারকিতে ব্যস্ত। মুক্তাকে বসানো হয়েছে ফাহাদের পাশের ঘরটায়। মায়া জুই এতক্ষণ মুক্তার সাথেই বসে ছিল। কিন্তু মুক্তাকে এখন ফ্রেশ করাতে এসেছে ফাহাদের কাজিন ভাবিরা। সেজন্য মায়া আর জুই, সেঁজুতি সঙ্গে দোতলায় ড্রয়িংরুমে সোফায় গিয়ে বসল। মায়ার মন খারাপে জুইয়ের পাশে চেপে বসে। ফাহাদের বাসায় এসেও মায়ার অবুঝ মন রিদের খোঁজ করেছিল। কিন্তু আয়নের কাছে জানতে পারলো রিদ বিয়ে বাড়িতে আসেনি। তাঁর এসব পছন্দ না। মায়া যে ফাহাদদের বাড়িতে আসল তারপরও তাঁকে একটা বার দেখতে আসল না রিদ। আসলে মায়া ঠিকই ভাবে রিদ খান মায়াকে পছন্দই করে না। মায়ার মন খারাপের মধ্যেই সেঁজুতি টুথ অর ডেয়ার খেলার আয়োজন করে বসল। সোফার টেবিলে উপর বোতল রেখে তাতে সবাই গোল হয়ে বসল। মায়া অবশ্য খেলতে চাইল না। কিন্তু সেঁজুতি মুখের উপর না করতে পারিনি বলে সেও চুপচাপ বসল। খেলায় মায়া, জুই, সেঁজুতি, শ্রেয়া, আর সেঁজুতির কয়েকজন কাজিন বোনদের মধ্যে চলল। একত্রে খেলা যখন জমে উঠল তখন মায়াও নিজের মন খারাপের দুঃখ ভুলে গিয়ে আনন্দে মেতে উঠলো। উৎফুল্লতা নিয়ে বোতল ঘুরিয়ে একেকজনকে টুথ অর ডেয়ার দিলো। শেষ বার যখন জুই বোতল ঘোরাল তখনই দোতলার ঘরের দরজা দিয়ে ড্রয়িংরুমে হাজির হলো রিদ, রাদিফ, আয়ন। মেয়েদের খেলার হৈচৈয়ের মাঝে সবাই প্রথমে ছেলে তিনজনকে তেমন লক্ষ না করলেও শেষে যখন বোতল ঘুরে গিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা রিদের মুখোমুখি পড়লো, তক্ষুনি মায়ার দৃষ্টি গেল রিদের দিকে। মুখ তুলে তাকাতেই চোখাচোখি হলো দু’জনের। রিদ মায়ার উৎফুল্লর মুখটার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তাকিয়ে। মায়া রিদের তীক্ষ্ণ নজরে হঠাৎই গাল ফুলাল। সেঁজুতি যখন বোতলটা তুলে আবারও রাউন্ড দিতে নিবে তক্ষুনি বাঁধা দিল মায়া। সেঁজুতি মায়াকে বাঁধা দিতে দেখে আপত্তি জানিয়ে বলল…

‘ আরে বোতলটা তো কারও দিকে ঘুরে পড়েনি মায়া। বোতলের মুখ তো দরজা দিকে ঘুরে আছে। তাহলে কাকে ধরবে তুমি?

মায়া বোতলটা দিক অনুসরণ করে দরজার সামনে রিদের দিকে এক পলক আঁড়চোখে তাকিয়ে সেঁজুতিকে আঙ্গুল দিয়ে রিদকে দেখিয়ে বলল…

‘ এখন তোমার ভাইয়ের টার্ন আপু। বোতল যার দিকে ঘুরেছে এখন সে উত্তর দিবে আপু।

মায়া কথায় সবাই ঘাড় ঘুরে দরজা দিকে তাকাল। দরজা সম্মুখে আয়ন, রাদিফের মধ্যস্থে রিদকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সবাই চমকে উঠলো। সেঁজুতি ভয়ে মায়াকে আবারও বাঁধা দিয়ে বলল…

‘ আরে এসব কি বলছো তুমি? রিদ ভাই কি আমাদের সাথে খেলছে নাকি যে বোতল ঘুরলেই হলো। তুমি ছাড়ো এসব! আমি আবার নতুন করে বোতল ঘুমাচ্ছি।

মায়া জেদি গলায় সেঁজুতি শুধিয়ে বলল…

‘ উনি উত্তর দিবে আপু!

সেঁজুতি কিছু বলার আগে শ্রেয়া মায়া হাত চেপে বাঁধা দিয়ে বলতে চাইল…

‘ মায়া তুই রিদ ভাইকে এসবের মধ্যে টানিস না বইন। রিদ ভাই যে রাগী মানুষ। তোকে…

শ্রেয়ার কথার মাঝেই মায়া দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রিদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করে বলল…

‘ কাল রাতে কোথায় ছিলেন আপনি?

মায়া প্রশ্ন করার ধরণে, প্রশ্ন কম রিদ থেকে কৈফিয়ত চাওয়া বেশি মনে হলো সবার। উপস্থিত সবাই কেমন বিস্ময়ে মায়ার সাহসীকতার দিকে তাকিয়ে। শ্রেয়া তো ভেবেই নিয়েছে রিদ মস্ত বড়ো একটা ধমক দিবে মায়াকে। অথচ মায়ার এমন অদ্ভুত প্রশ্নটা করার কয়েক সেকেন্ড পরও পরিবেশ নিরব। রিদ কিছুই বলল না মায়াকে। মায়া তখনো অস্থির নেয় উত্তরের আশায় রিদের মুখের দিকে তাকিয়ে। রিদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি খানিকটা নরম হয়ে আসলে ছয় সেকেন্ডে মাথায় নিরবতা ভেঙ্গে রিদ সবাইকে আবাক করে দিয়ে মায়ার অদ্ভুত প্রশ্ন উত্তর দিয়ে ঠান্ডা গলায় বলল…

‘ রাতে আমি বাড়ি ফিরে গিয়েছিলাম।
‘ কোন বাড়ি?
‘ নিজ বাড়িতে!
‘ সাথে কে ছিল?
‘ আসিফ।
‘ একা ঘুমিয়েছেন?
‘ হ্যাঁ।
‘ সত্যি?
‘ হুম!

আহা কি প্রেম? আয়ন রিদের পাশে দাঁড়িয়ে হেঁসে বিরবির করে কথাটা বলল। চতুর রিদ চট করে আয়নের কথাটা শুনেই ভ্রু কুঁচকে তাকাল আয়নের দিকে। আয়ন রিদের দৃষ্টি বুঝে ফের গা জ্বালা ভাবে হাসল। রিদ বিরক্তি নিয়ে দৃষ্টি ঘুরাল মায়ার দিকে। মায়া কৈফিয়ত চাচ্ছে আর রিদ কৈফিয়ত দেওয়ার মতোন করে ভদ্রভাবে উত্তর দিচ্ছে দেখে হতভম্ব হয়ে একেক জন হা হয়ে গেল। একবার মায়ার দিকে তো অন্যবার রিদের দিকে তাকাচ্ছে। রিদের জীবনে সে কাউকে কৈফিয়ত দিয়ে কথা বলেছে কিনা সন্দেহ। অথচ মায়া কৈফিয়ত নেওয়ার মতো করে একটা পর একটা প্রশ্ন করেই যাচ্ছে আর রিদ তাল মিলিয়ে উত্তরও দিচ্ছে। এর মাঝে মায়া আবারও কৈফিয়ত চাওয়া মতো করে মিনমিন গলায় বলে…

‘ কাল রাতে ফোন কই ছিল আপনার?
‘ আসিফের কাছে।
‘ মিথ্যা।
মায়া আর কিছু বলবে পাশ থেকে আয়ন ফোঁড়ন কেটে মায়াকে শুধিয়ে বলল…

‘ রিদের ফোনটা রাতে আমার কাছে ছিল। আসিফ দিয়েছিল। আমি শশীকে দিয়েছিলাম রাখতে।

রিদকে ঘিরে মায়ার সকল ভুল গুলো মূহুর্তে ঝরঝর করে ভাঙ্গা কাঁচে নেয় ভেঙ্গে গেল। মায়া সারাদিনের মন খারাপ গুলো মূহুর্তে শেষ হয়ে গেল। উজ্জ্বল আলোয় নেয় চকচক করে উঠলো মায়ার মুখশ্রী। ভুল ভেঙ্গে যাওয়ার মূহুর্তে লাজুকতায় চট করে হেঁসে ফেলল মায়া। রিদ দেখল মায়া মূহুর্তে পরিবর্তন হওয়া মুখটা। কিছু একটা আচও করে ফেললো সে। মায়া লাজুকতায় সিঁটিয়ে ফের রিদকে কিছু বলবে পাশ থেকে শ্রেয়া বিস্ময়ে টেবিলের নিচ থেকে মায়ার হাত চেপে বাঁধা দিয়ে বলল…

‘ বইন এবার থাম! আর আগাস না। রিদ ভাইরে তুই টুথ অর ডেয়ার নিতে পযন্ত দিলি না। তার আগেই গোয়েন্দা মতোন প্রশ্ন শুরু করে দিলি। আরে ভাই, টুথ নিলেও তো মানুষরে একটা বেশি প্রশ্ন করা যায় না আর তুই তো আসামির মতোন জেরা শুরু কইরা দিছোস ভাইয়ের সাথে। বইন তুই একটু থাম, নয়তো আমার ভাই রাইগা যাইবো।

মায়া সত্যি সত্যি থেমে যায় আশেপাশের সবার হতবাক দৃষ্টি দেখে। সবাই যে এতক্ষণ রিদ-মায়াকে লক্ষ করছিল সেটা বুঝতে পেরেই মায়া আরও লজ্জা সিঁটিয়ে গেল। মায়া ধ্যান ভাঙতে হাত বাড়িয়ে বোতলটা নিজের কাছে টানতে টানতে মিনমিন করে বলল…

‘ এবার আমি দেয়।

মায়ার বোতল রাউন্ডের মধ্যে হঠাৎ শশী আসল ট্রে-তে করে তিনটা গ্লাসে করে পানি নিয়ে। আয়ন, রাদিফের মতো করে রিদকেও দেখল সেই গ্লাসের পানি তুলে পান করতে। মূহুর্তে মায়ার মন খারাপ হয়ে যায় মুখে অন্ধকার ছেয়ে। রিদ খালি গ্লাসটা ট্রে-তে রাখতে রাখতে মায়ার অন্ধকার মুখটা পরখ করে নিল।
~
রাত প্রায় বারোটা ছুঁই ছুঁই। ক্লান্তিতে সবাই সকাল সকাল শুয়ে পরেছে। মায়াদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে মুক্তাদের পাশের রুমের সেঁজুতি সাথে। বিগত কয়েকদিনের বিয়ের ঝামেলায় সবাই আজ একটু তাড়াতাড়ি শুয়ে পরলো। তবে ঘুমিয়েছে কিনা জানে নেই। মায়া জুইয়ের পাশ থেকে উঠে বসল। ওড়নাটা গায়ে চাদরের মতোন জড়িয়ে মাথায় কাপড় টানল। উদ্দেশ্য তিনতলায় উঁকি মারবে। মায়া শুনেছে রিদ তিন তলায় থাকছে। মায়া সেঁজুতিকে দেখল শুয়ে শুয়ে ফোন চালাতে। মায়া মনে মনে একটা বুদ্ধি বের করে সেঁজুতিকে বলল। মায়া উপরে যাবে শ্রেয়ার কাছে। শ্রেয়া মায়াকে মেসেজ করেছে তিনতলায় যেতে। দুজন মিলে একটু ছাদে হাঁটাহাঁটি করেই আবার চলে আসবে মায়া। সেঁজুতি আর নিষেধ করলো না। মায়াকে যেতে দিয়ে ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। মায়া দোতলা ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে আশেপাশে তাকাল। মানুষের কলরব শুনা যাচ্ছে, তবে কম। হয়তো সবাই শুয়ে পরেছে এজন্য কম শব্দ পাচ্ছে মানুষের। মায়া আশেপাশের ফ্ল্যাটের দিকে তাকাল। সবগুলো ফ্ল্যাটের দরজা চাপানো ভিতর থেকে। ধাক্কা দিলেই খোলে যাবে। এমনত্ব অবস্থায় মায়া ভয় করলো তিন তলায় যেতে। আবার শ্রেয়া তিন তলায় আছে ভেবে মনে সাহস জুগিয়ে আস্তে ধীরে হেঁটে গেল উপরে। ঠিক একই ভাবে তিনতলার ফ্ল্যাটের দরজা গুলোও ভিতর থেকে চাপানোর ছিল বলে মায়া আস্তে করে ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢুকল। আশেপাশে তাকিয়ে দেখল ড্রয়িংরুমে তেমন কেউ নেই সবাই যার যার মতো করে রুমে শুয়ে। মায়া জানে শ্রেয়া কোন শুয়ে। সেঁজুতি সাথে যখন মায়া উপরে এসেছিল তখন দেখেছিল শ্রেয়া কোন রুমে শুয়েছে। এমনকি এটাও জানে রিদের কোন রুমটায় থাকছে। মায়া ভাবল শ্রেয়া রুমে যাওয়ার আগে রিদের রুমের সামনে একবার উঁকি মারবে। লোকটাকে যদি দেখা যায় সেই আশায়। ভাবনা অনুযায়ী মায়া শ্রেয়ার রুমে যাওয়ার আগে রিদের রুমের দরজার সামনে গেল। দরজাটা ভিতর থেকে চাপানো দেখে ফাঁক দিয়ে উঁকিঝুঁকি মেরে দেখতে চাইল ভিতরে কে। বেশ করে উঁকিঝুঁকি মেরেও যখন মায়া সুবিধা করতে পারলো না, তখন মায়া দরজার ফাঁকে একচোখ রেখে উঁকি মারতেই পিছন থেকে কেউ মায়ার মাথা ঠুকা মারতে মারতে বলল…

‘ হ্যালো ম্যাডাম। আমাকে খোঁজচ্ছেন?

রিদ কন্ঠে চমকে উঠে তৎক্ষনাৎ ধর-ফরিয়ে পিছন ঘুরতেই রিদের প্রশস্ত বুকের সাথে মায়ার মুখ ঠেকে গেল। অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে ভারিটা খেয়েই মায়া পিছিয়ে যেতে চাইল পিঠ ঠেকাল দেয়ালে। রিদ মায়ার পিঠের সঙ্গে লেগে দাঁড়ানোতে কাঙ্ক্ষিত এই ধাক্কাটা লাগে। রিদ জানতো এমনটা হবে। সে জেনে বুঝে মায়ার সঙ্গে লেগে দাঁড়িয়েছিল। মায়া হঠাৎ রিদের উপস্থিতি পেতেই ভয়ে বুকে থুপথুপিয়ে দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে মিনমিনিয়ে মিথ্যা বলে বলল….

‘ আমিতো শ্রেয়াকে খোঁজছিলাম। মনে করেছিলাম এই রুমে শ্রেয়া আছে।
‘ তো পেয়েছেন শ্রেয়াকে?
‘ না।
‘ শ্রেয়ার বদলে আমাকে দিয়ে চলবে? চাইলে আমার সাথে ঘুমাতে পারেন। আমার বেড কিন্তু পুরাই খালি।

রিদের কথায় মায়া উত্তর করলো না। শুধু লজ্জা সিঁটিয়ে নত মস্তিষ্কের হয়ে দাঁড়াল। গায়ের ওড়নাটা হাতে পেঁচিয়ে লজ্জায় হাসফাস করলো। রিদ মায়ার লজ্জা দেখে যা বুঝার বুঝে নিয়ে নিজের দু’হাত দেয়ালে ঠেকিয়ে মধ্যেস্হে মায়াকে রেখে মায়ার মুখোমুখি ঝুঁকে পরে বলল….

‘ ম্যাডাম কি জেনে বুঝে আমার কাছে আসেন? নাকি পাগলামো করতে করতে চলে আসেন? বুঝিয়েন কিন্তু ম্যাডাম! আমি ছেড়ে দেওয়ার মানুষ না।

[এই গ্রুপে গল্প সম্পর্কিত আপডেট দেওয়া হয়। আড্ডা হয়। চাইলে জয়েন হয়ে থাকতে পারেন। বা গল্প নিয়ে কোনো সমস্যা হলে মডারেটস আপুদের বললে সমাধান করে দিবে।
ধন্যবাদ সবাইকে। ]

গল্প সম্পর্কিত আলোচনা সমালোচনার গ্রুপ https://www.facebook.com/groups/565066277893177/?ref=shaমায়ার~গল্পবিলাস
.

#চলিত….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here