গোধুলির_শেষ_বিকেলে_তুমি_আমি #পর্ব৩ #Raiha_Zubair_Ripti

0
269

#গোধুলির_শেষ_বিকেলে_তুমি_আমি
#পর্ব৩
#Raiha_Zubair_Ripti

সকালে কোনো রকম ব্রেকফাস্ট করেই নয়টার মধ্যে বাসা থেকে বের হয় রুয়াত। বাসা থেকে বের হয়ে সোজা বাসে উঠে। গন্তব্য তার ভার্সিটি। চারিদিকে গরমের তীব্র উষ্ণতা। এই তীব্র গরমে মানবজীবনের অবস্থা খুব সূচনীয়। পাক্কা ত্রিশ মিটি বাসে থেকে ভার্সিটির সামনে আসতেই রুয়াত গাড়ি থেকে নেমে পড়ে। ব্যাগ থেকে ছাতা বের করে সেটা ফুটিয়ে হাঁটা ধরলো। পাঁচ মিনিট হেঁটে গেলেই সামনে ভার্সিটি। এই পাঁচ মিনিট রাস্তা হেঁটে যেতেই রুয়াতের গলা শুঁকিয়ে আসে। ব্যাগ থেকে ওয়াটার বোতল বের করে গলা টাকে ভিজিয়ে নেয়। বাসা থেকে বের হবার আগে সামিরা শিকদার বলে দিয়েছে মেয়েকে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে। কারন আজ শাফায়াত ও তার মা আসবে বিয়ের ডেট ফিক্সড করতে। রুয়াত বাধ্য মেয়ের মতো বলে দিয়েছে তাড়াতাড়ি ফিরবে।
ভার্সিটি এসেই রুয়াত নিজের ক্লাসে চলে যায়। আজ থার্ড পিরিয়ডে শাফায়াত এর ক্লাস আছে রুয়াত দের।

শাফায়াত নিজের ডুপার্টমেন্টের অফিস কক্ষে বসে আছে। সবেই একটা ক্লাস নিয়ে এসেছে। এই সেকেন্ড পিরিয়ডে তার কোনো ক্লাস নেই। সেজন্য কক্ষে বসে রেস্ট নিচ্ছে। শাফায়াত বাসা থেকে বের হবার আগে তার মা কে বলে এসেছে সে ভার্সিটি থেকে সোজা রুয়াত দের বাসায় যাবে তারা যেনো তার জন্য অপেক্ষা না করে।

থার্ড ক্লাসের বেল আাজতেই শাফায়াত বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ২১৬ নম্বর শ্রেনী কক্ষের দিকে হাঁটা ধরে।
রুয়াত আজ বসেছে একেবারে লাস্ট বেঞ্চে। যাতে শাফায়াত এর নজরে না পরে সেজন্য। শাফায়াত ক্লাসে ঢুকেই সর্ব প্রথম রুয়াত কে খুঁজতে থাকে। ফাস্ট বেঞ্চ থেকে খোঁজা শুরু করে। আর লাস্ট বেঞ্চে গিয়ে চোখ থেমে যায়। রুয়াত লাস্ট বেঞ্চের একেবারে শেষ প্রান্তে বসেছে। বারবার হাত দিয়ে মুখ ঢাকার বৃথা চেষ্টা করছে। শাফায়াত ঠোঁট কামড়ে ধরলো। তারপর হোয়াইট বোর্ডের সামনে গিয়ে মার্কার দিয়ে অঙ্ক তুলতে শুরু করলো। শাফায়াত আজ লেনদেন চেপ্টারের সমীকরণের উপর প্রভাব দেখানোর অঙ্ক করছে। অঙ্ক টার জন্য ছক বোর্ডে একে পেছন ফিরে। সামনের টেবিলের উপর বইয়ের দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ পন্য ক্রয়ের জন্য ফরমায়েশ পাওয়া গেলো। এটা কি এই ছকে আসবে? মিস রুয়াত আপনি বলুন।

রুয়াত হকচকিয়ে গেলো। আশেপাশে তাকিয়ে শাফায়াত এর দিকে তাকালো। শাফায়াত রুয়াত কে এখনও দাঁড়াতে না দেখে গম্ভীর কন্ঠে বলল-
-“ মিস রুয়াত এদিকে ওদিকে না তাকিয়ে দাঁড়িয়ে বলুন।

রুয়াত দাঁড়ালো। কলমের মাথা দিয়ে বেঞ্চে দাগাতে দাগাতে বলে-
-“ এটা তো স্যার কোনো লেনদেন ই না। তাহলে এখানে আসবে কেনো।
-“ লেনদেন না কেনো?
-“ কারন স্যার আমরা লেনদেন তাকেই বলতে পারি যখন সেটাকে টাকায় পরিমাপ করা যায়। এখানে ফরমায়েশ পেয়েছে কিন্তু টাকা পাওয়া যায় নি। সেজন্য এটা লেনদেন নয়।
-“ সিট ডাউন।

রুয়াত হাফ ছেড়ে বসলো। শাফায়াত বোর্ডে অঙ্ক করালো। অর্ধেক করিয়েই আবার পেছন ফিরে স্টুডেন্টদের উদ্দেশ্যে বলে-
-“ এতোটুকু সবাই বুঝেছেন?
সবাই মাথা ঝাকালো। শাফায়াত বাকি অর্ধেক টা খাতায় করতে বললো সবাইকে। রুয়াত ব্যাগ থেকে খাতা বের করে পুরো অঙ্ক টা করে নিলো। শাফয়ারা মাঝখান দিয়ে এপাশ ওপাশ করে হেঁটে হেঁটে দেখছে। রুয়াত দাঁড়িয়ে খাতা টা বাড়িয়ে দিয়ে বলে-
-“ স্যার অঙ্ক টা।
শাফায়াত রুয়াতের খাতায় থাকা অঙ্ক টায় চোখ বুলালো। ঠিক ই আছে। তবে হাতে নিয়ে দেখলো না। হেঁটে নিজের জায়গায় চলে গেলো। রুয়াত হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে শাফায়াত এর দিকে তাকিয়ে রইলো। আরো কয়েকজন স্টুডেন্ট শাফায়াত কে অঙ্ক টা দেখানোর জন্য খাতা বাড়িয়ে দিলো।শাফায়াত তিন থেকে চার জনের খাতা দেখলো। তারপর পেছন ফিরে হোয়াইট বোর্ড ডাস্টার দিয়ে পরিষ্কার করতে নিবে এমন সময় ছাত্রলীগের কয়েকটা ছেলে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বলে-
-“ আসতে পারি স্যার?
শাফায়াত ঘাড় বেঁকিয়ে তাকালো।
-“ কি চাই?
ছাত্রলীগের মধ্যে থাকা নেহাল নামের ছেলেটা শার্টের কলার পেছন ঠেলে বলে-
-“ স্যার মিছিলে নামতে হবে তাই ছেলেগুলো কে চাই। আপনি ছেলেগুলো কে ছেড়ে দিন।
শাফায়াত হাত ঘড়িটায় সময় দেখলো। এখনও দশ মিনিট বাকি আছে।
-“ টেন মিনিটস পর ছেড়ে দিচ্ছি। এখন আসতে পারো।
-“ স্যার লাগবে এখনই টেন মিনিটস পর ওদের দিয়ে কি করবো? বাইস প্রিন্সিপালের হুকুম আছে ওদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য সো কুইকলি ছেড়ে দিন। আর অন্যান্য ক্লাসের টিচার রা ছেড়ে দিয়েছে স্টুডেন্ট আপনি কেনো ছাড়ছেন না।

শাফায়াত এগিয়ে আসলো। ছেলেগুলোর দিকে তাকিয়ে গম্ভীর মুখে বলল-
-“ আমি কি বলেছি কথাটা কানে যায় নি তোমার? আমার ক্লাস শেষ হবে। আমি ক্লাস থেকে বের হবো তারপর নিয়ে যাবে। আর অন্যান্য টিচারের সাথে মোটেও আমায় কম্পেয়ার করবে না। তারা ছেড়ে দিয়েছে বাট আমি ছাড়বো না। এখন এসো।

ছেলেগুলো চলে গেলো। দলনেতা রোহানের কাছে গিয়ে বলল শাফায়াত নামের টিচার টা ছেলেদের ছাড়ছে না। রোহান ভ্রু কুঁচকালো। প্রায় এই শিক্ষকের নাম শুনেছে সে। কিন্তু সামনা-সামনি এখনও দেখে নি। ক্লাসই তো বছরে করে দু একটা। না দেখাটাই স্বাভাবিক।
রোহান মাঠ থেকে ক্লাসের দিকে গেলো। যেখানে শাফায়াত আছে।
-“ আসসালামু আলাইকুম স্যার। শুনলাম আপনি ছেলেদের ছাড়তে রাজি হচ্ছেন না।
শাফায়াত সেই ছাত্রদের সাথে অচেনা এক ছেলেকে দেখে বলে-
-“ ক্লাসের টাইম শেষ হোক চলে যাবে।
-“ছেড়ে দিন ওদের। ওরা ক্লাস না করলেও ওরা এক্সামে পাস। তাই খুব একটা ক্ষতি হবে না দশ পাঁচ মিনিট আগে ছাড়লে।
নেহাল নামের ছেলেটা বলে উঠল-
-“ এই তোরা হা করে বসে আছস ক্যান? উঠ তাড়াতাড়ি আয়।

চকিতে ফিরে তাকালো শাফায়াত। তারপর ক্লাসের ছাত্রদের দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ আমার অনুমতি ব্যাতিত একটা ছেলে জাস্ট রুম থেকে বের হয়ে দেখো ট্রাস্ট মি আজকের পর থেকে আমার ক্লাস তাদের জন্য নিষিদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে। আর এই ছেলে নাম কি তোমার?
রোহান অতি বিরক্তের সহিতে বলল-
-“ রোহান। ভাইস প্রিন্সিপাল এর ভাগ্নে।
-“ নাম জানতে চেয়েছি তুমি কার কি লাগো সেটা না। কোন বর্ষের স্টুডেন্ট?
-“ তৃতীয় বর্ষের।
-“ কোন সেকশন?
-“ খ সেকশনের। হুদাই এতো কেচাল করছেন আপনি। ছেড়ে দিন ওদের চলে যাই।

ক্লাসের বেল বেজে উঠলো। শাফায়াত কিছু বলতে চেয়েও আর কিছু বললো না।
-“ বেল বেজে গেছে এবার অন্তত নিতে দিন।
শাফায়াত হু বলে চলে আসলো। রোহান বিরক্ত নিয়ে শাফায়াতের যাওয়া দেখলো। রুয়াত পেছন থেকে সব দেখলো। বিরক্ত নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল-
-“ দেখেন মিছিল করবেন ভালো কথা। আমাদের বেহুদা ভার্সিটি তে আঁটকে রাখবেন না। আপনাদের এই মিছিলের চক্করে আমাদের শুধু শুধু ভার্সিটি তে থাকতে হয়। দারোয়ান কে বলে দিবেন যারা থাকতে চায় না তাদের যেনো যেতে দেয়।

রোহান চকিতে ঘুরলো রুয়াতের কন্ঠ শুনে। ফর্সা চেহারার অধিকারী, গোলগাল চেহারা,গোলাপি ঠোঁট অসম্ভব এক সুন্দরী। ভ্রু কুঁচকে জিগ্যেস করলো –
-“ নাম কি তোমার?
রুয়াত ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বলে-
-“ নাম দিয়ে কাজ কি? যেটা বলছি সেটা যেনো মনে থাকে।
-“ আদেশ করছো রোহান কে, নাকি হুকুৃম?
-“ যা মনে করেন সেটা।
-“ এই রোহান কে কেউ আদেশ হুকুম করে না। উল্টো সে সবাই কে আদেশ হুকুম করে।
-“ জানতে চেয়েছি আমি?

নেহাল তাড়া দিলো। রোহান ক্লাস থেকে বের হবার আগে রুয়াত কে আরেক নজর দেখে নিয়ে বের হলো।

রুয়াতের আর দুটো ক্লাস বাকি আছে। ক্লাস দুটো শেষ করে মাঠে এসে দাঁড়ায়। মাঠে সব ছাত্রলীগের ছেলে পেলে। নেহাল ছেলেগুলো কে বুঝিয়ে দিচ্ছে কি করতে হবে পৌরসভায় গিয়ে। রোহান পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে চেয়ারে। ভার্সিটির সামনে ও পেছনের গেটে দুই দারোয়ান বসে আছে৷ কোনো স্টুডেন্ট বের হতে পারবে না। এদিকে ২ টা বেজে আসলো বলে। তিনটার আগে বাসায় পৌঁছাতে হবে রুয়াতের। রুয়াত এগিয়ে গেলো সামনের গেটে থাকা দারোয়ান এর দিকে।
-“ মামা আমাকে যেতে দিন না। আমার বাসায় আজ মেহমান আসবে৷ তাড়াতাড়ি যেতে বলছে।
দারোয়ান মানা করে দিলে। সে যেতে দিবে না। অফিস থেকে বলে দিয়েছে কাউকে যেতে দিতে না। বিশেষ করে রোহান নামের ছেলেটা বলে দিয়েছে বিশেষ হুশিয়ারী দিয়ে।
রুয়াত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রাগে ফুঁসতে লাগলো। ছাতার এক ন্যাশনাল ভার্সিটি তে ভর্তি হয়েছে। একটু কিছু হলেই সামনের পেছনের সব গেট আঁটকে দেয়।

শাফায়াত হাত ঘড়িটায় সময় দেখতে দেখতে গেটের দিকে এগিয়ে আসছিলো। শারমিন বেগম রুয়াত দের বাসায় পৌঁছে গেছে। শাফায়াত কে বলেছে সে যেনো ফেরার পথে রুয়াত কে নিয়ে আসে। শাফায়াত রুয়াত কে ঠাই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলল-
-“ দাঁড়িয়ে আছেন যে? বাসায় যাবেন না? আম্মু আপনাকে নিয়ে যেতে বলেছে চলুন।।

রুয়াত বাসায় ফিরতে পাবে ভাবেই খুশিতে আত্মহারা হলো তা চোখ মুখ দেখেই বুঝা গেলো।
-“ হ্যাঁ চলুন।

শাফায়াত গেটের কাছে যেতেই দারোয়ান গেট খুলে দিলো। রুয়াত বের হবে এমন সময় গেট আঁটকে দিলো।
-“ এই মামা গেট আটকান কেনো। আমি যাব খুলুন।
শাফায়াত পেছন ফিরলো। গেটে কড়া নাড়লো। দারোয়ান গেট খুললো।
-“ উনাকে আসতে দিন।
দারোয়ান মেকি হেসে বলল –
-“ স্টুডেন্ট দের যাইতে দিতে মানা করছে স্যার। উনারে আমি ক্যামনে যাইতে দেই? উনার দেহা দেহি তো সক্কলেই যাইতে চাইবো।
-“ শুধু শুধু কেনো ওদের আঁটকে রাখেন এভাবে। উনাকে আসতে দিন। উনার বাসায় আজ অনুষ্ঠান আছে। আপনাদের এই মিছিল টিছিলের জন্য নিশ্চয়ই সে তার বাসার প্রোগ্রাম মিস দিবে না।

দারোয়ান রুয়াত কে যেতে দিলো। রুয়াত গেট থেকে বের হয়ে প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস নেয়।
-“ ধন্যবাদ স্যার।
শাফায়াত রিকশা ডাক দিলো। রিকশা আসতেই রুয়াত কে ইশারা করলে উঠে বসতে। রুয়াত উঠে বসলো। শাফায়াত নিজেও এবার রুয়াতের পাশে বসলো। রুয়াত চেপে গেলো সাইডে। শাফায়াত দৃষ্টি আঁকাবাকা উঁচু নিচু রাস্তার দিকে রেখে বলে-
-“ উঁচু নিচু রাস্তা৷ বেশি সরে বসলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
রুয়াত হেঁসে বলে-
-“ না না পড়বো না আ..

কথাটা শেষ করতে না করতেই রিকশার ঝাঁকুনি তে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে যেতে নিলে শাফায়াত ধরে ফেলে। রুয়াত লজ্জা পেলো।
-“ এখুনি তো পড়ে যেতে।

রুয়াত জড়োসড়ো হয়ে বসলো। লোকটা এক সময় তুমি আবার আরেক সময় আপনি করে বলে। মাথার স্ক্রু ঢিলে নাকি।

এদিকে রোহানের কানে খবর পৌঁছে গেছে রুয়াত নামের মেয়েটা চলে গেছে বাসায়। রুয়াতের ক্লাসের ছেলেগুলোর থেকে রুয়াতের নাম টা জেনেছে রোহান। যখন শুনলো ঐ শাফায়াত নামের টিচার রুয়াত কে নিয়ে গেছে তখন রাগে কিড়মিড় করে উঠলো। কিসের বা’লের মিছিল ইচ্ছে করলো মিছিলে আগুন ধরিয়ে দিতে। রুয়াত কে কেনো ঐ টিচার নিয়ে যাবে। দু চারটা বকা দিলো রোহান শাফায়াত কে মনে মনে।

রুয়াত আর শাফায়াত দুজনে একসাথে শিকদার বাড়িতে আসে। ড্রয়িং রুমে বসে ছিলো শামিমা বেগম আর সানজিদা। শাফায়াত গিয়ে বসলো মায়ের পাশে।
-“ সাদমান আসে নি?
শারমিন বেগম জবাব দিলো-
-“ না। কই যেনো গেছে উড়নচণ্ডী বাদর টা।

রজনী রুমে বসে অপেক্ষা করছিলো রুয়াতের জন্য। রুয়াত কে রুমে আসতে দেখে হাতে থাকা সেলোয়ার-কামিজ টা রুয়াতের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে একেবারে গোসল সেরে জামা টা পড়তে। রুয়াত বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। শরীর তার ভীষণ ক্লান্ত। রজনী রুয়াত কে টেনে উঠালো। ঠেলে ওয়াশরুমে ঢুকালো। মিনিট বিশেক পর রুয়াত বের হয়। রজনী রুয়াতের চুল গুলো হেয়ার ডায়ার দিয়ে শুঁকিয়ে মুখে হাল্কা পাউডার লাগিয়ে দেয়। তারপর মায়ের ফোনে ফোন দিয়ে বলে রুয়াত কে নিয়ে যেতে। রুয়াত বোনের দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ তুমি যাবে না আমার সাথে?
-“ না।
-“ আশ্চর্য যাবে না কেনো?
-“ কেনো যাবো না এটা খুব ভালো করেই জানিস। জোর করবি না একদম। আমি চাই না আজকের মতো আনন্দের একটা দিনে অশান্তি হোক।

রুয়াত কিছু বলতো। কিন্তু সামিরা শিকদার চলে আসায় আর কিছু বললো না। সামিরা শিকদার মেয়ে কে নিয়ে চলে গেলো। শারমিন বেগম আর শাফায়াত এর সাথে কথা বলছে কবির শিকদার। রুয়াত কে শারমিন বেগম এর সামনে বসানো হয়। শারমিন শিকদার ব্যাগ থেকে আংটি বের করে শাফায়াত এর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে পড়িয়ে দিতে রুয়াতের হাতে। শাফায়াত আংটি টা নিয়ে হাত বাড়ায় রুয়াতের হাত টা হাতে নেওয়ার জন্য। রুয়াত বাড়িয়ে দেয়। শাফায়াত রুয়াতের হাত ধরে অনামিকা আঙুলে আংটি টা পড়িয়ে দেয়। কেমন একটা অদ্ভুত শিহরণ বেয়ে গেলো মেরুদণ্ড বেয়ে। শাফায়াত হাত টা ছাড়তেই রুয়াত ত্বরিত গতিতে হাত টা সরিয়ে নিয়ে আসে।

কবির শিকদার আর শারমিন বেগম আলোচনা করে এক সপ্তাহ পরই বিয়ের ডেট ফিক্সড করলো। আজ বৃহস্পতিবার আগামী শুক্রবার এর পরের শুক্রবার বিয়ে। খুব ঘরোয়া ভাবেই বিয়ে টা হবে। রজনী দরজার আড়াল থেকে বোনের বিয়ের ডেট ফিক্সড হওয়া কথা শুনে খুশি হলো। তার নিজের জীবনে সুখ রা ধরা না দিক। কিন্তু বোনের জীবনে যেনে পৃথিবীর সমস্ত সুখরা এসে ধরা দেয়।

#চলবে?
গল্পটি সম্পর্কে রিভিউ, আলোচনা, সমালোচনা করুন আমাদের গ্রুপে। গ্রুপ লিংক নিচে দেওয়া হলোঃ
https://facebook.com/groups/holde.khamer.valobasa/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here