স্নিগ্ধ_প্রিয়া #সাদিয়া_শওকত_বাবলি #পর্ব_৫৬ ( শেষ পর্ব )

0
592

#স্নিগ্ধ_প্রিয়া
#সাদিয়া_শওকত_বাবলি
#পর্ব_৫৬ ( শেষ পর্ব )

( অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ )

সময় বহমান। সে বয়ে চলে বাঁধাহীন নদীর বাঁধাহীন স্রোতের ন্যায়। নিজের সাথে পরিবর্তন ঘটায় আমাদের আশেপাশের পরিবেশ, সম্পর্ক এবং মানুষগুলোকে। এই যে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের জীবন থেকে কিছু মানুষের বিদায় ঘটে আবার কিছু মানুষের গৌরবের সাথে আগমন ঘটে নতুন সম্পর্ক নিয়ে। দেখতে দেখতে যেন এরই মধ্যে কেটে গেছে গোটা চারটা বছর। এই এত সময়ের মধ্যে যেন বদলে গেছে সবকিছু। তৃষাম বিয়ে করে নিয়েছে ইতমধ্যে তাও ভালোবাসে। তবে সবচেয়ে সাংঘাতিক বিষয় হলো তার বিয়ে করা ভালোবাসার নারীটি হলো সেই পূর্বাশার বিয়েতে তাকে নাকানিচোবানি খাইয়ে শ’ত্রু’র ভূমিকায় থাকা মেয়েটি প্রিয়ন্তি। বাংলাদেশে থাকতে সেবার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে যে ভুক্তভোগী হওয়ার চাপা কষ্ট নিয়ে চীনে পাড়ি দিয়েছিল, সেই কষ্ট সে ভুলতে পারেনি কোনো ক্রমেই। ভেবেছিল দেশে ফিরেই মেয়েটার উপরে একটা বড়সড় প্রতিশোধ নিবে। কিন্তু কে জানতো হৃদয়ে সেই প্রতিশোধের আকাঙ্ক্ষাই দেশে ফেরার আগেই ভালোবাসার রূপ নিয়ে। দেশে ফিরে মেয়েটার উপর ঠিক কিভাবে কিভাবে প্রতিশোধ নিবে নিজ মনে প্রতিনিয়ত তা চিন্তা করতে করতেই একটা সময় ছেলেটা দেখলো সে প্রিয়ন্তিকে ছাড়া আর কাউকে ভাবতে পারছে না। নিজের হৃদয়ের অনুভূতিটা অনুভব করতেই আর বেশি দেরী করেনি তৃষাম। তার আশেপাশে তো শত্রুর অভাব নেই। এমনি ফাটা কপাল তার, পরে দেখা যাবে সে চীনে বসে প্রিয়ন্তি প্রিয়ন্তি করে হেদিয়ে মরছে ওদিকে দেশে তাকে অন্য পুরুষ তুলে নিয়ে গেছে। তাই পরীক্ষা শেষ করে ছোট খাটো একটা চাকরি জুটিয়েই দেশে ফিরে নিজ পরিবার দ্বারা প্রিয়ন্তির পরিবারকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। ছেলে ভালো, চাকরি করছে তাই তারাও আর না করেনি। অতিদ্রুত বিয়েটা দিয়ে দিয়েছে তাদের।

চ্যাং এখনও বিয়ে করেনি। পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটা প্রতিষ্ঠানে ভালো বেতনে কর্মরত রয়েছে সে। জাফর চৌধুরীও এখন আগের থেকে অনেকটা সুস্থ। সে এবং মিসেস চৌধুরী এখন বসবাস করছে চীনে। যদিও দেশ ছেড়ে এখানে আসার কোনো ইচ্ছে ছিল না তাদের কিন্তু কি আর করার পূর্বাশাকেও তো আর এই সময়ে একা ছাড়া যায় না। মেয়েটা প্রেগন্যান্ট, আটমাস পেরিয়ে প্রায় নয় মাসে পড়তে চললো তার প্রেগন্যান্সির সময়। পেটটা বেশ উঁচু হয়ে উঠেছে মেয়েটার, আগের থেকে মোটাও হয়েছে অনেকটা। কেমন গোলুমলু হয়ে গেছে মেয়েটা। চেহারার রংটাও কালো থেকে যেন এখন শ্যামবর্ণায় উপনিত হয়েছে। মেয়েটা হাসলে গোলুমলু গালের কারনে চোখ দুটো যেন বুঝে আসে ইদানীং। জায়ানের তখন ইচ্ছে করে শুধু পূর্বাশার পানে চেয়ে থাকতে, মন ভরে নিজের স্ত্রীর মাতৃত্বকালীন এই রূপ অবলোকন করতে। সে যাই হোক, যতটা সুন্দরই হোক কেন মাতৃকালীন এই সময়টা কিছুটা সমস্যারও সৃষ্টি করেছে। হাঁটতে চলতেই মেয়েটার দায় হয়ে পড়েছে এখন, জায়ানকেও কাজের জন্য বাইরে যেতে হয় প্রায়ই। হয়তো অল্প সময়ের জন্য যাওয়া হয় কিন্তু সেই সময় টুকুও তো পূর্বাশার খেয়াল রাখার জন্য চাই কাউকে। সব ছেড়েছুড়ে দেশে চলে যাবে যে তাও এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। চীনে বেশ কয়েকটা রেস্টুরেন্ট রয়েছে তাদের, তাও সেই মিসেস শীওর বাবার আমলের। বললেই কি আর সব ছেড়েছুড়ে দেশে চলে যাওয়া যায় নাকি। আবার পূর্বাশার দেখভালের জন্য যে কোনো কাজের লোক রাখবে, তাও কাউকে ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না জায়ান। আজকালক বিশ্বাস করতে আছে কে তার উপর আরও ভিনদেশী। যদি কেউ লোভে পড়ে ক্ষতি করে দেয় পূর্বাশা আর তার সন্তানের, তাই তো মিসেস শীও এবং জাফর চৌধুরী চলে এসেছে এদেশে।

****

সন্ধ্যারাত, চারদিকে কোলাহলময়। পূর্বাশা দাঁড়িয়ে আছে বারান্দার গ্রীল ধরে। দেখছে বাইরের কৃত্রিম আলোয় সজ্জিত ব্যস্ত শহরটাকে। আগে অবশ্য এই বারান্দায় কোনো গ্রীল দেওয়া ছিল না কিন্তু কিছুদিন আগেই লোক ডেকে গ্রীল লাগিয়েছে জায়ান। তার ভয় যদি পূর্বাশা কোনো ক্রমে উল্টে পড়ে যায় এখান থেকে। পূর্বাশা ভেবে পায় না, এই লোকটার মাথায় এই ধরনের উদ্ভট চিন্তা ভাবনা আসে কোথা থেকে? পূর্বাশা এই বারান্দা থেকে উল্টে পড়ে যাবে? সে কি এখনও ছোট বাচ্চা নাকি? এখন নিজে বাচ্চার মা হতে চলেছে আর জায়ান কিনা তাকে বাচ্চাদের মতো ট্রিট করছে? পূর্বাশার ভাবনার মধ্যেই তাকে পিছন থেকে দুটো শক্তপোক্ত হাত এসে জড়িয়ে ধরলো পূর্বাশার উঁচু পেটটা। মেয়েটা না তাকিয়েই বুঝলো কে এসেছে। পূর্বাশার ওষ্ঠে হাসি ফুটে উঠলো। হেসেই সে বলল – এসেছেন আপনি?

জায়ান মুখ গুঁজলো পূর্বাশার কাঁধে। আলতোভাবে উন্মুক্ত কাঁধে একটা চুমু খেয়ে বলল – হুম।

পূর্বাশা পিছু ঘুরলো না। স্বামীর স্নেহমাখা স্পর্শ নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো চুপচাপ। কিঞ্চিৎ সময় অতিবাহিত হলো দু’জনের আলিঙ্গনেই। অতঃপর জায়ান ছাড়লো পূর্বাশাকে, মেয়ের বাহু ধরে আলতোভাবে কক্ষের ভিতরে অগ্রসর হলো সে। মেয়েটাকে বিছানার উপর বসিয়ে তার সম্মুখে ছোট খাটো একটা বাক্স রাখলো। পূর্বাশা ভ্রু কুঁচকে তাকালো বাক্সটার পানে অতঃপর প্রশ্ন করলো – কি এটার মধ্যে?

জায়ান খুললো বাক্সটা। তার ভিতর থেকে বেরিয়ে এলো কিছু বাচ্চাদের ছোট ছোট পোশাক এবং জুতো। পূর্বাশা অবাক হলো যেন। ইতমধ্যে জায়ান বাচ্চাদের জামা কাপড়, খেলনা দিয়ে ভরে ফেলেছে আবার আজ জামা কাপড় এনেছে। দিন দিন লোকটার পাগলামী যেন বেড়েই চলেছে। এই তো সেদিন দুটো দোলনা এনে বসিয়ে দিয়েছে কক্ষের একপাশে। একটা ছোট একটা বড়। ছোট দোলনাটা না হয় বাচ্চার জন্য এনেছে কিন্তু বড়টা কার? জায়ানকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বেশ আনন্দের সহীত উত্তর দিল – একটা আমার সন্তানের আরেকটা আমার সন্তানের মায়ের। জায়ান বাচ্চাদের জামা কাপড়গুলো উল্টে পাল্টে দেখলো অতঃপর পূর্বাশার পানে তাকিয়ে হাসিমুখে বলল – সুন্দর না?

পূর্বাশা হাসলো জায়ানের খুশিতে। জামাগুলোতে আলতোভাবে হাত বুলিয়ে বলল – ভীষন সুন্দর।

_____________________________________

সময় অতিবাহিত হলো কিছুটা। দেখতে দেখতে উপস্থিত হলো দীর্ঘ প্রতিক্ষিত সেই সময়। আজ পূর্বাশার ডেলিভেরির ডেট। যদিও পূর্বাশাকে নিয়ে আরও দুই দিন আগে হাসপাতালে এসেছে জায়ান। মেয়েটাকে নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে চায়নি সে। বাসায় বসে ব্যথা উঠলে মেয়েটা যন্ত্রনায় কাতরাবে বা হাসপাতালে আসতেও কিছুটা সময় ব্যয় করতে হবে যদি ততক্ষণে পূর্বাশার ক্ষতি হয় কোনো। তাই আগেভাগে এসে হাসপাতালের সিট দখল করে রেখেছে জায়ান। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ঘোর আপত্তি ছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত জায়ানের জেদ আর হাত পা ধরায় পূর্বাশাকে হাসপাতালেই রেখে দিয়েছে। পূর্বাশার যেন এবার লজ্জায় চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। বাড়িতে তো এর অতি সাবধানতার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এখন হাসপাতালে এসেও? হাসপাতালের মানুষজন কি ভাবছে? না পারছে সে কিছু বলতে আর না পারছে সহ্য করতে। একে কিছু বলেও কাজ হয় না তো কোনো। সে ঠিক যা ইচ্ছে তাই করবে, তাকে হাজার বলেও অন্য কিছু করানো যায় না। এই নয় মাসে তো কম কিছু করেনি জায়ান আর তাকে কম বারও বারন করেনি কিন্তু একটা কথাও শোনেনি ছেলেটা।

****

সময় অনুযায়ী পূর্বাশাকে নেওয়া হয়েছে অপারেশন রুমে। জায়ান ব্যস্ত ভঙ্গীতে পায়চারী করছে সে রুমের সম্মুখেই। জাফর চৌধুরী আর মিসেস শীও দাঁড়িয়ে আছে পাশেই। ছেলেকে বারংবার শান্ত হতে বলছে তারা কিন্তু কে শোনে কার কথা। তার ছেলের তো এমনিই অতিরিক্ত চিন্তা করার ধাত রয়েছে, বিশেষ করে পূর্বাশার ক্ষেত্রে। এখন পর্যন্ত যতগুলো টেস্ট পূর্বাশার করানো হয়েছে সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সব রিপোর্টগুলোই ভালো এসেছে। ডাক্তারাও আশ্বাস দিয়েছেন সব কিছু ঠিক থাকলে পূর্বাশার বাচ্চা প্রসবে সমস্যা হবে না কোনো। তবুও যেন জায়ান নিজের ভিতরের অস্থিরতা নিঃশেষ করতে পারছে না। কোথাও না কোথাও একটা চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। জায়ানের চিন্তার মধ্যেই অপারেশন রুম থেকে সাদা তোয়ালেতে পেঁচিয়ে ছোট্ট এক প্রাণকে নিয়ে বেরিয়ে এলেন একজন নার্স। জায়ানের সম্মুখে দাঁড়িয়ে বললেন – অভিনন্দন জায়ান! আপনি কন্যা সন্তানের জনক হয়েছেন।

– আর আমার স্ত্রী?

– তিনিও একদম সুস্থ আছেন। একটু পরই বেডে শিফট করা হবে তাকে।

নার্সটি কোলে থাকা নবজাতককে বাড়িয়ে দিল জায়ানের পানে। জায়ান নিজের কম্পিত হাত বাড়িয়ে কোলে নিল নিজের সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া অংশকে। প্রথম পিতা হওয়ার অনুভূতি তার। বক্ষস্থল যেন দুরু দুরু কাঁপছে। প্রশান্তির হাওয়া বইছে হৃদয়ের চারিধারে। এই মেয়েটি তার সন্তান, তার অংশ। যে তাকে প্রথম পিতা হওয়ার স্বাদ দিবে। তার হাত ধরে হাঁটবে, বাবা বলে ডাকবে তাকে। জায়ানের চোখের কোনে অশ্রুকনার আবির্ভাব ঘটলো। তাকালো সে মেয়ের পানে। মনে হচ্ছে যেন পূর্বাশার মুখটা কেটে লাগানো হয়েছে এই মেয়ের মুখের উপরে তবে গায়ের রং টা পূর্বাশার মতো হয়নি একদম, গায়ের রংটা সে জায়ানের মতো ধবধবে ফর্সা পেয়েছে। জায়ান একটু ঝুঁকে চুমু খেল মেয়ের কপালে। ওষ্ঠদ্বয় প্রসারিত করে বলল – আমার মেয়ে, আমার অংশ।

মিসেস শীও এবং জাফর চৌধুরীও এগিয়ে এলেন ছেলে এবং নাতনির পানে। দুজন দাদা দাদী হওয়ার খুশিতে আজ আত্মহারা যেন। নাতনিকে নিয়ে আনন্দে দিশেহারা হয়ে উঠেছেন যেন। একজন মানুষের বৃদ্ধ বয়সের খেলার সাথী, সময় কাটানোর সাথীই তো এ নাতি নাতনি যার সুখ তারা আজ পেয়েছেন।

****

কিছুটা সময় অতিবাহিত হলো। পূর্বাশাকে শিফট করা হয়েছে কেবিনে। জায়ানও আর দেরী করলো না মেয়েকে কোলে নিয়ে ঢুকলো পূর্বাশার কেবিনে। মেয়েটা এই টুকু সময়েই কেমন দূর্বল হয়ে পড়েছে, ওষ্ঠদ্বয় যেন ফ্যাকাশে আকার ধারন করেছে। জায়ানের কষ্ট হলো পূর্বাশার এই রূপ অবলোকন করে। একজন নারী একজন পুরুষকে পিতা হওয়ার স্বাদ দিতে ঠিক কতটা ত্যাগ স্বীকার করে, নিজের জীবনের বাজী রেখে তাকে পিতা হওয়ার স্বাদ প্রদান করে। তবুও কিছু পুরুষ স্ত্রীর প্রেগন্যান্সির সময়ে স্ত্রীর পাশে না থেকে নিজেদের চাহিদার জন্য বাহিরে শরীর খোঁজে কিংবা অন্যত্র সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। জায়ান মেয়েকে কোলে নিয়ে বসলো পূর্বাশার পাশে। আলতোভাবে চুমু খেল পূর্বাশার ফ্যাকাশে ওষ্ঠে অতঃপর নিজেদের মেয়েকে দেখিয়ে হাসিমুখে বলল – আমাদের মেয়ে, আমাদের অংশ।

পূর্বাশা ঠোঁট এলিয়ে হাসলো। একটু ঝুঁকে মেয়ের কপালে চুমু খেয়ে বলল – তোকে নিয়ে ভীষণ ভয়ে ছিলাম মা। তবে না তুই অন্তত আমার মতো এই সমাজের তিরস্কার, লাঞ্ছনা, বঞ্চনা কিংবা বৈষম্যের স্বীকার হবি না মা। তুই যে এই ভদ্র সভ্য ফর্সা সমাজে ফর্সা হয়ে জন্ম নিয়েছিস। তোর আমার মতো গুমরে মরতে হবে না, নিজেকে গুটিয়ে নিতে হবে না। তুই এই সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচবি, আমার মতো সমাজের চাপে নিজেকে ঘৃনা করে ঘরের কোনে লুকিয়ে পড়বি না মা।

( সমাপ্ত )

[ দীর্ঘ সময়ের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে শেষ হলো #স্নিগ্ধ_প্রিয়া উপন্যাসটি। এই উপন্যাসটি আমার হৃদয়ের খুব কাছের ছিল। নিজের অনুভূতি মিশিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি উপন্যাসের প্রতিটি লাইন যদিও আমি জানি না ঠিক কতটুকু ভালো লিখতে পেরেছি। তবে আপনাদের সকলের কাছে মতামত আশা করছি, অবশ্যই কমেন্টে সবাই জানাবেন পুরো উপন্যাসটি কেমন লেগেছে এবং সবাই এই উপন্যাসের রিভিউ দিবেন। #স্নিগ্ধ_প্রিয়া উপন্যাসের বেশি বেশি রিভিউ এবং শেয়ার দিয়ে দয়া করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিবেন ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here