অর্ধ_নক্ষত্র ।৩৮। #লেখনীতে_Aiza_Islam_Hayati

0
119

#অর্ধ_নক্ষত্র ।৩৮।
#লেখনীতে_Aiza_Islam_Hayati

মেহরা ঘুমঘুম চোখে চাইলো আরশমান এর দিকে।পর্দা ভেদ করে ভোরের শীতল বাতাস মৃদু বেগে ঘরে প্রবেশ করছে।সেই বাতাসে দুলছে আরশমান এর ঝাঁকড়া চুলগুলো।আরশমান মেহরাকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে আবেশে ঘুমোচ্ছে।মেহরা আরশমান এর বাঁধন থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয়,কিয়ৎক্ষণ তাকিয়ে থেকে তার হাতটি বাড়িয়ে দেয় আরশমান এর চুলের ভাঁজে।
এখন বোধ হচ্ছে আরশমানকে নিয়েই তার সকল ভাবনা হওয়া উচিত।এই মানুষটিকে ঘিরে তার ভাবনার জগৎ হলেই তো মেহরা তার পুরো না হলেও অর্ধ জীবন গুছিয়ে ফেলতে সক্ষম হবে।মেহরা আনমনেই মুচকি হেঁসে ফেলে।সে বিড়বিড় করে,”পুরোই ইদুরের বাচ্চার মত দেখতে।কিন্তু আস্ত একটা শয়তান ইচ্ছে করে এই চুল গুলো ছিঁড়ে দেই।বিয়ে হতে না হতেই এমন করে জড়িয়ে ধরে ঘুমায় কে?”

আরশমান আরও দৃঢ় ভাবে মেহরাকে জড়িয়ে ধরে ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলে,”কী ব্যাপার মেহরা?বিয়ে হয়েছে তেমন করে ছুঁয়েও কিন্তু দেখিনি আমি,শুধু বউকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছি।তাই এইসব বলা অফ দিন।আর আমার চুলে হাত দিলেন যে?”

মেহরা ভড়কে গেলো,চোখ দুটো বড় বড় করে ফেললো,ইশ!কী সাংঘাতিক লোকটি বুঝলো কী করে।
আরশমান পুনরায় সেই কণ্ঠের রেশ টেনে বলে,”কী হলো বলুন।”

মেহরা এবার নিজেকে ছাড়াতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ল।আরশমান এবার চোখ খুলে চাইলো,মেহরাকে ছেড়ে দিয়ে উঠে বসলো আড়মোড়া ভেঙে বলল,”বড্ডো জ্বালান আপনি।বিলাইর বাচ্চা একটা।”

মেহরা উঠে বসে ভ্রু কুঁচকে বলে,”হাহ কী বিলাইর বাচ্চা?বিলাইর বাচ্চা কাকে বলছেন আপনি?”

আরশমান মেহরার দিকে ফিরে চাইলো মেহরার গাল টেনে দিয়ে বলল,”এইযে,ওলে লে আমার বিলাইর বাচ্চা বউটা কেনো তুমি জানো না কাকে বলছি।”

মেহরা আরশমান এর হাত নিজের গাল থেকে সরিয়ে বলে,”আপনিও কম না একটা ইদুরের বাচ্চার মত দেখতে।”

আরশমান মেহরার দুই দিকে দুই হাতে ভর দিয়ে ঝুঁকে যায় বলে,”আমি ইদুরের মত দেখতে?”

মেহরা পিছিয়ে যায়,বিছানা ছেড়ে পাশের চেয়ারে ঝুলতে থাকা তাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে দৌড় লাগায়। আরশমান হাত পা ছড়িয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে বলে,”আহ বউ আমার শুধু পালাই পালাই করে।এমন করলে আরেকটু গাঢ় ভাবে কবে ছুঁয়ে দেখবো তাকে?আমার বংশ কী আর আগানো হবে না?আরশমান দিয়েই কী খান বংশের সমাপ্তি হবে!”,বলে যেনো ভাবনার অতল গহ্বরে ডুবে গেলো আরশমান।

..
মেহরা,আরশমান খান বাড়ির জন্য বেরিয়ে পড়লো।
মেহরার পরনে ইন্সপেক্টরের ইউনিফর্ম।মেহরা থানার সম্মুখেই নেমে যাবে ডিউটি শেষ করে তবে বাড়ি ফিরবে। আরশমান গোলগোল চোখ করে মেহরার দিকে চেয়ে আছে।মেহরা আড় চোখে চেয়ে বলে,”সমস্যা কী? এইভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?”

“তাহলে আপনি কী চান পর নারীর দিকে চাইবো?”

মেহরা তড়িৎ গতিতে চাইলো আরশমান এর দিকে বলল,”আপনার তো দেখছি চরিত্রে সমস্যা। পর নারীর দিকে কেনো চাইবেন?”

“আমার চরিত্র ফুলের মত পবিত্র।তবে বউ আমার তার দিকে চাইলে কেমন করে।তাই তো জিজ্ঞেস করলাম।”

মেহরা তার সামনে চলে আসা চুল গুলো কানের পিছে ঠেলে দিয়ে বলে,”পর নারীর দিকে চাইবেন না।”

“কেনো চাইলে সমস্যা কি?”

মেহরা বিরক্ত হয় তিক্ত কণ্ঠে বলে,”চাইলে চোখ তুলে রেখে দিবো।”

আরশমান নিঃশব্দে হাঁসলো,তার মনে তো ফুল ফুটেছে।ইশ!বউ তাহার একটু পোটেছে।আরশমান গলা খাকারি দিয়ে বলে,”আর ইউ জেলাস ইন্সপেক্টর সাহেবা?”

মেহরা পাশ ফিরে চাইলো আরশমান এর দিকে ভাব নিয়ে বলল,”হাহ!জেলাস আবার আমি।আমি তো বললাম এজন্যই যে আপনার বউ আছে আপনার।সে যেমনি হোক না কেনো,তাই বলে আপনি কিনা অন্য মেয়ের দিকে তাকাবেন এইসব কী মোটেও ভালো কাজ?

আরশমান হাঁসলো এক হাতে মেহরার কোমড় পেচিয়ে ধরে মোলায়েম কণ্ঠে বলে,”আমার বউ।”

মেহরা স্থির হয়ে যায় আরশমান এর স্পর্শে।

..
ফাইজ আজ খুব খুশি অনেক দিন পর বন্ধুমহলের সঙ্গে ঘুড়তে যাওয়া হবে।আরশমান ফোন করে তাদের বান্দরবান ঘুড়তে যাওয়ার কথা জানিয়েছে।প্রশান্ত তার সকল সিডিউল সামলে নিজের মতামত জানাবে বলেছে।প্রশান্ত বললেই তারিখ ঠিক করা হবে।

ফাইজ শার্টের হাতা ফোল্ড করায় মনোযোগ দিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসছে।ফাইজ এর মা ফারাহ ও তার বাবা আতিফ নিজেদের মধ্যে এক আলোচনায় মগ্ন ছিল,ফাইজ এর নেমে আসা দেখে সেই পানে চায় তারা হাস্যজ্বল মুখে একসঙ্গে ডাকে,”ফাইজ”

এহেন আকষ্মিক ডাকে ফাইজ মাথা তুলে চায় তাদের দিকে,তার ঠোঁটের কোণের ফুটে ওঠে হাঁসি।হাঁসির কারণ তার বাবা।আতিফ নিজের কাজেই বেশির ভাগ বাইরে থাকেন,থাকেন খুবই ব্যস্ত।

ফাইজ পাশে এসে বসে বাবার কোমল কণ্ঠে বলে,”জি বাবা বলো।”

আতিফ নিজের স্ত্রীর পানে চেয়ে গলা খাঁকারি দিয়ে পুনরায় চায় ফাইজ এর পানে,কথা শুরু করে,”আসলে আমরা তোমার বিয়ে নিয়ে ভাবছিলাম।বয়স তো কম হলো না তোমার।এই অব্দি কত মেয়ে দেখেছ,কাউকেই তো পছন্দ করো নি।এইবার আমাদের পছন্দ করা মেয়ের সাথে একবার যদি।”

ফাইজ তার মায়ের দিকে চায় বলে,”কে মা?তুমি আবার নতুন কোন মেয়েকে পছন্দ করলে?”

ফারাহ অমায়িক হাঁসলো বলল,”মেহরার বোন জাহরা।তুই তো দেখলো সেইদিন তোর সামনেই ওর সাথে এই নিয়ে কত কথা বললাম।”

“মা সবেই তো আরশমান,মেহরা ভাবি প্রশান্ত জুনায়না ওদের বিয়ে হলো আবার আমার টা এখনই কেনো?”

“হলে সমস্যা কী?আমরা ওর পরিবারের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছি।”,আতিফ কথাটি বলা মাত্র ফাইজ বলে,”তোমরা একটু বেশি তাড়া দিচ্ছ না?”

ফারাহ দাড়িয়ে বলেন,”এইবার আর তোমার কোনো বাহানা শুনছি না।আমি তো পারলে আজকেই তোমার বিয়ে দি দিবো।”

ফাইজ দাড়িয়ে তার বাবার দিকে চেয়ে বলে,”বাবা মাকে বোঝাও।বেশি তাড়া ভালো না।”,বলে সদর দরজার দিকে হাঁটা ধরলো ফাইজ।ফাইজ আঁখি জোড়া বন্ধ করে বারকয়েক শ্বাস নিলো,সবেই তো মনের মাঝে জাহরাকে নিয়ে শত অনুভূতির জাগরণ হলো।অনুভূতি গুলো গাঢ় হতে শুরু করেছে।সে তো চায় জাহরাকে আরও বুঝতে।

.
হাসপাতাল এসেই ধূসরের কেবিনে চলে আসে ফাইজ।
ফাইজ তাকিয়ে রইলো শুভ্র রঙ্গা বিছানায় শুয়ে থাকা ধূসর এর পানে।সে ক্যান্সার রোগে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে দেখেছে শতাধিক রোগীকে।আবার তার বলে দেয়া সময়সীমার থেকেও অধিক বছর বেঁচে থেকেছে অনেকেই।কিন্তু ধূসর এর ব্যাপারটি খুবই বিরল আশা করলেও তা সেইদিনের ঘটনায় চুরমার হয়ে গেলো।এখন শুধু মাত্রই আল্লাহ তায়ালা কোনো মীরাক্কেল করুক ধূসর কে আরও কয়েক বছর বাঁচার হায়াত দান করুক তাই ফাইজ এর আশা।

জাহরা তার হাতে থাকা স্টেথোস্কোপ এর দিকে চেয়ে অধিক ভাবনায় ডুবে গিয়ে ধূসরের কেবিনের দিকেই অগ্রসর হচ্ছিলো,কেবিনের ভিতর প্রবেশ করার সময় সে খেয়াল করে না ফাইজি তখনই কেবিনের দরজার সম্মুখে দাঁড়িয়ে ধাক্কা ফাইজ এর সঙ্গে ধাক্কা লেগে যায় জাহরার।জাহরা ত্রস্ত হয় চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে তিক্ত কণ্ঠে ফাইজ এর দিকে চেয়ে বলে ওঠে,”সমস্যা কি খাম্বার মত দাড়িয়ে আছেন কেনো?”

ফাইজ ভ্রু কুঁচকে ফেলে জাহরার মুখ চেপে ধরে বলে,”আসতে কথা বলো।”

জাহরা হাত দিয়ে ফাইজ এর হাত সরানোর চেষ্টা করতে থাকে,মনে মনে আওড়াতে থাকে,”এই ফাজিল
আজ প্রথম দিন থেকে এই অব্দি সব প্রতিশোধ তুলবে নাকি?আমার মুখে চেপে ধরে মেরে ফেলবে নাকি আমাকে!”

“মনে মনে আমাকে গালি দিচ্ছ নিশ্চই?”

জাহরা ফাইজ এর কথন শুনে করুন চোখে ইশারা করে ।ফাইজ ছেড়ে দেয় ,জাহরা বড় বড় নিশ্বাস নিতে নিতে বলে,”শালা হা’রা’মী,ব’জ্জা’ত,ফা’জি’ল আমাকে মে’রে’ই ফেলছিল।”

ফাইজ ভরাট কণ্ঠে বলে,”আবার জোরে কথা বলছ?ধীরে কথা বলো।”

জাহরা আড় চোখে চায় ফাইজ এর দিকে,নিজের ঘোমটা টেনে ঠিক করে নেয়।দৃষ্টি সরিয়ে নিজের ঘড়ির দিকে চেয়ে বলে,”আপনার তো রোগী দেখার সময় এখন।এইখানে দাড়িয়ে আছেন কেনো?”

ফাইজ একরাশ দীর্ঘশ্বাস নিলো।ধূসর এর কেবিনের দিকে চেয়ে একবার চেয়ে দেখলো জাহরাকে অতঃপর হাঁটা ধরলো নিজের কেবিনের দিকে।জাহরা চেয়ে দেখলো ফাইজ এর প্রস্থান,কিছুটা ভেবে পিছন ডাকলো ফাইজকে বলল,”এইযে শুনুন একটা কথা ছিল।”

ফাইজ জাহরার এহেন ডাকে থমকে দাঁড়িয়ে গেলো,আজ মনের গহীন কোণে এই ডাকের অনুভূতি এমন কেনো লাগছে। কর্ণকুহরে জাহরার এহেন ডাকটি বারবার ঝংকার তুলতে লাগলো,বোধ হলো বুকের মধ্যখানে সাগরের বিশাল ঢেউ গুলো আছড়ে পড়ছে।ফাইজ ফিরে চাইলো জাহরার দিকে,জাহরা বলল,”আজ লাঞ্চ আমার সঙ্গে করবেন।মা আপনার জন্য খাবার পাঠিয়েছে।”

ফাইজ এর ঠোঁটের কোণে ক্ষীণ হাঁসি ফুটে উঠলো, আর দাড়িয়ে থাকলো না চলে গেলো সে।জাহরা অবাক হলো খুব!যেই ছেলে খাবারের কথা শুনলেই বাচ্চামো করে সে আজ উত্তরে ক্ষীণ হাঁসি ফিরিয়ে দিলো।

..
পার্টি অফিসে তুলুম ঝামেলা আরম্ভ করেছে রোহান ও তার বাবা,তাদের দলের লোকজন।আরশমান বুকে হাত গুজে দাড়িয়ে দেখছে সেই ঝামেলার দৃশ।বাড়ি থেকে তাকে তাড়া দিয়ে নিয়ে এসেছে আকাশ আরশমানকে।আকাশ আরশমানের পাশে এসে দাড়িয়ে বলে,”ভাই আপনি এত শান্ত কী করে?”

আরশমান গম্ভীর কণ্ঠের রেশ টানলো বলল,”আজ ওদের ঝামেলার সমাপ্তি হবে আকাশ।আমি গর্জে উঠলে খেলাটা অন্য দিকে ঘুরে যাবে তাই শান্ত থাকতে দাও আমায়।পুলিশ আসছে তুমি আমাদের লোককে শান্ত হতে বলো আকাশ।”

আকাশ চেয়ে রইলো আরশমান এর দিকে।আজ আবারও রোহনের বাবা মেহরাকে নিয়ে খারাপ কথার বুলি আওড়াচ্ছিল।

পুলিশের গাড়ি এসেছে,শব্দের ঝংকার ভেসে এলো কানে।সকলে থেমে গেলো শব্দ শোনা মাত্রই।এক এক করে প্রবেশ করলো পুলিশ।পুলিশের সঙ্গে রয়েছে একজন ম্যাজিস্ট্রেট।পুলিশদের মাঝে রয়েছে জুনায়না,মেহরা।এত মানুষের মাঝেও রোহান কেটে পড়লো পিছনের দরজা দিয়ে।তা শান্ত চোখে চেয়ে দেখলো আরশমান।

পুলিশদের মাঝে কয়েকজন এগিয়ে এলো আরশমান এর দিকে জিজ্ঞেস করলো,”আপনি ঠিক আছেন?”

আরশমান মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল।মেহরা রোহানের বাবার থেকে চোখ সরিয়ে দেখলো আরশমানকে।শান্ত মুখশ্রীর মাঝেও অত্যাধিক গম্ভীর্যতা ফুটে আছে।

ম্যাজিস্ট্রেট এগিয়ে দিলো কয়েকটি কাগজ রোহানের বাবার দিকে।রোহানের বাবার দুইটি কারখানা সিল করা হয়েছে।এই একটি দিন সহ কয়েক প্রহরে যেনো সকল গোপন কাজের খোঁজ করে ফেলেছে ম্যাজিস্ট্রেট।একাধিক বহুতল ভবনের ফ্লাট ভাড়া করে তারা মেয়ে পাঁ’চা’রে’র পূর্বে টাকার বিনিময়ে মেয়েগুলোকে হিং’স্র মানবের হাতে তুলে দিতো কয়েক রাতের জন্য।অতঃপর সময় মত পা’চা’র করে দেয়া হতো তাদের।আনাচে কানাচে থাকা ড্রা’গ স ও অস্রের করবার খুঁজে বের করে ফেলেছে।সকল গোপনে থাকা কর্মকাণ্ড খোলসা হয়ে গেলো।এত দ্রুতই কাজ গুলো করা হয়েছে যে রোহান ও তার বাবা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারল না।তাদের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলো এসপি,এড এসপি,এএসপি।তারা তো এই কয়েক প্রহরে পাগলের মত ছুটাছুটি করেছে একেকজয়গায়।বারংবার হুমকি হয়েছে আরশমানকে।

কোনো কথা বলল না রোহানের বাবা,সে তো কটমট চোখে চেয়ে আছে আরশমান এর দিকে।ম্যাজিস্ট্রেট চোখের ইশারায় বলল রোহানের বাবাকে গ্রেফতার করতে।জুনায়না এগিয়ে আসলো হাতকড়া পরিয়ে দিল রোহানের বাবাকে।লোকটি তার কটমট চাহনি নিক্ষেপ করল জুনায়নার দিকে।জুনায়না দায়সারা ভাব নিয়ে বলে,”এমন করে চেয়ে লাভ নেই।”

গ্রেফতার করা হলো রোহানের বাবা সহ উপস্থিত তার দলের লোকদের।রোহান পালিয়েছে কথাটি সকলের কর্ণকুহরে পৌঁছে যেতেই ওসি এগিয়ে এলো ম্যাজিস্ট্রেটকে আশ্বস্ত করে বলল,”আমরা রোহানকে খুঁজে বের করবো।”

আরশমান নিশ্চুপ দর্শকের ন্যায় সকল কিছু দেখলো বেরিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো মেহরা তা দেখে এগিয়ে এলো আরশমান দিকে।আরশমান এর মুখশ্রীর গম্ভীর্যতা কেটে গেলো মুখশ্রী হয়ে উঠলো হাস্যজ্বল।মেহরা ক্ষীণ কণ্ঠে বলল,”আপনি ঠিক আছেন?”

আরশমান মৃদু ঝুঁকে গেলো মেহরার দিকে বলল,”অবশ্যই ঠিক আছি ইন্সপেক্টর সাহেবা।আমি বাইরেই গাড়িতে আছি।আপনাকে হয়তো এখন রোহানকে খোঁজার জন্য নামিয়ে দেয়া হবে।আমি কিন্তু আপনার সঙ্গেই আছি।আমার গাড়ি আপনাদের থেকে খানিক দূরেই থাকবে।”,বলে বেরিয়ে গেলো আরশমান।

..
পুলিশের অর্ধেক ফোর্স নামিয়েছে রোহানকে খোঁজার জন্য।এসপি ,এড এসপি,এএসপি কে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার উদ্দ্যেগ নেয়া হচ্ছে।এডিশনাল ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ এখন উপর থেকে সকল কিছুর দেখাশোনা করছেন।

পুলিশ ভ্যান এগিয়ে যাচ্ছে তাদের সন্দেহ ভাজন জায়গা গুলোতে।পুলিশ ভ্যান থেকে কয়েক হাত দূরে তাদের অনুসরণ করে আসছে আরশমান।আরশমান নিজের গাড়ি ড্রাইভ করছে,শার্টের উপরের দিকে কয়েকটি বোতাম খুলে রেখেছে।এক হাতে ড্রাইভ করছে তো ওপর হাতে ফোন কানের সঙ্গে চেপে ধরে কথা বলছে আকাশ এর সঙ্গে।

ঐপাশ থেকে আকাশ যখন বলল,”ভাই দেখা মেলেছে তার।”

আরশমান হাঁসলো বলল,”কারও হাতে পড়তে দিও না তাকে।সে যে এখন আরশমান এর জালে ধরা পড়েছে।”

“ভাই আপনি এখনই বললে ওকে ধরতে পারি আমরা।”

“সবুর করো আকাশ, ও যতদূর যেতে পারে যেতে দাও।শুধু চোখে চোখে রাখো ওকে।আমার হিং’স্র প্রাণী গুলোর খাবার রোহান,ওর বাবাকে তো এর চেয়ে বড় উপহার আমি দিতে পারি না আকাশ।”

আকাশ হাঁসলো বলল,”ভাই ভাবির তো প্রটেকশন দরকার।তার জন্য কী গার্ড রাখা দরকার নয়কি?” আরশমান বলল,”আমি আছি তো তার জন্য।এইখানে মেহরা জুনায়নার খেয়াল রাখবো আমি।তোমরা ঐখান টা দেখলেই হবে।”,বলে ফোন রাখলো আরশমান।শার্টের আরেকটি বোতাম আনব্লক করলো ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠলো তার এক প্রশান্তির হাঁসি।

.
নিজেদের সন্দেহ ভাজন এলাকায় খোঁজ করেও পেলো না রোহানকে পুলিশ।মেহরা, জুনায়না এক পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে কথায় ব্যাস্ত দূর থেকে গাড়িতে বসে তা দেখছে আরশমান।জুনায়না মেহরাকে বলে,”চিন্তা করিস না রোহানকে আমরা খুঁজে না পেলেও একজন ঠিকই খুঁজে পাবে অতি সহজে। বলতে গেলে খুঁজে পেয়েও গিয়েছে এতক্ষণে।”

মেহরা জিজ্ঞাসু কণ্ঠে বলে,”সে কী এমপি সাহেব?”

জুনায়না হাঁসলো মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল।তাদের পাশে এসে আসাদ দাড়ালো বলল,”আপনারা বাড়ি চলে যান।রোহান এর খোঁজ আবার কাল থেকে শুরু করবো।”

#চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here