#সুখের_ঠিকানা
#শারমিন_হোসেন
#পর্ব৪২ (রোমান্টিক পর্ব।নিজ দায়িত্বে পড়বেন।চাইলে স্কিপ করতে পারেন।)
গোল্ডেন কালারের বিয়ের ভারী শাড়িটা অনেক সময় ধরে লিয়াকে পড়ানো হয়। স্টাইলিশ হেয়ার,চোখে মাশকারা-আইলানার, গাঢ় কাজল, ঠোঁটে লাল খয়েরী লিপিস্টিক।দুইগালে মেকাপের গোলাপী হালকা প্রলেপ।গায়ে স্বর্ণের ভারী ভারী গহনা।বিয়ের ব্রাইডাল সাজে লিয়াকে অপ্সরা লাগছে। তাসনিম লিয়ার গালে আলতোকরে হাত ছুঁইয়ে মিষ্টি হেসে বলল,
“মাশাআল্লাহ।আমার বোনটাকে একদম পরীর মতো লাগছে।”
লিয়া মৃদু হাসল। ঠোঁট মেলে বলল,”আপু তুমিও খুব সুন্দর।আর তোমার মনটা সব থেকে বেশি সুন্দর।”
তাসনিম বিনিময় স্মিত হাসল।হাতে থাকা ফোনটা ওপেন করতে করতে বলল,”এই সুন্দর মূহূর্তটা ক্যামেরায় বন্দি করি।চল সেলফি তুলি।”
লিয়া ছোট করে বলল,”শিওর।”
দুইবোন ক্লোজ হয়ে দাঁড়াল।মুখে মিষ্টি হাসি নিয়ে ছবি তুলতে থাকল। ওদিকে কেউ একজন কোনো একটা কাজে তাসনিমকে ডাকল। তাসনিম সেদিকে গেল।এমন সময় রুপন্তী লিয়ার পাশে এসে দাঁড়াল।লিয়ার কনুইয়ের কাছে ধরে ঠোঁটের কোণে দুষ্টু হাসি ঝুলিয়ে বলল,”ব্যালকনিতে চল।”
লিয়া অবাক হয়ে তাকাল। কপাল কুঁচকে বলল,
“ব্যালকনিতে এখন! কিন্তু কেনো!”
রুপন্তী উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করল না।লিয়ার হাত ধরে এক প্রকার টেনে ব্যালকনিতে আনলো।দোতলার ব্যালকনি থেকে গেইটটা স্পষ্ট দেখা যায়। রুপন্তী লিয়ার থুতনিটা একহাতে উঁচু করে ধরে ডান দিকে ঘুরিয়ে সুর করে গাইল,”চোখ তুলে দেখ না কে এসেছে।নতুন করে আবার বিয়ের সানাই বেজেছে।”
এতটুকু বলে রুপন্তী শব্দ করে হাসতে থাকল।লিয়ার নজর গেলো গেট বরাবর।সাদা শেরওয়ানি আর পাগড়ি মাথায় বর বেশে জারিফকে দেখতে পায়।বরকে স্বর্ণের চেইন দিয়ে গাড়ি থেকে নামানো হয়।জারিফ গাড়ি থেকে নেমে ধীর পায়ে হেঁটে বিভিন্ন রঙের টিপটপ লাইটিং এ সাজানো গেটের কাছে আসছে। অনেকের ভিড়ে লিয়া দূর থেকে জারিফকে স্পষ্ট দেখল।লিয়া দুইহাতে লোহার রেলিং চেপে ধরল। অজানা অনুভূতিতে শিহরিত হলো হৃদয়। রোমাঞ্চকর অনুভূতি হতে থাকে মনেতে।লিয়া তড়িৎ উল্টোদিক ঘুরল। রুপন্তী দুষ্টু হেসে কপাল কুঁচকে বলল,
“দোস্ত এবার আমাকে বড় করে একটা থ্যাংকস দে। বুদ্ধি করে তোর বরকে আগে ভাগে দেখিয়ে দিলাম, এইজন্যে।”
লিয়া মেকি রা’গ দেখিয়ে ভেতরে যেতে যেতে বলল,
“কিসের থ্যাংকস হ্যা।এই সময় বাইরের কেউ আমাকে বউ সাজে এইভাবে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে উঁকিঝুঁকি করতে দেখে নেয়,তাহলে আমার প্রেস্টিজ পুরাই শেষ।সো সরি সেইজন্য থ্যাংকস দিতে পারলাম না, দোস্ত।”
“শাক দিয়ে মাছ ঢাকছো না।মনে খুশিতে প্রজাপতি উড়ছে অথচ বাইরে কঠোরতা দেখাচ্ছো।”
লিয়া স্মিত হাসল।রুপন্তীকে হাগ করল। মিষ্টি হেসে বলল,”থ্যাংকস আ লট।মাই ডিয়ার বেস্টু।”
.
বরপক্ষের থেকে মোটা অংকের টাকা উসুল করতে গেটে তুলি,অরিন, রুপন্তীসহ লিয়ার কয়েকজন কাজিন উপস্থিত হয়েছে।তাদের এক দফা এক দাবী চল্লিশ হাজার টাকা গেটে সালামি দিতে হবে।ওদিকে বরপক্ষও কম নয়।জারিফের ফ্রেন্ডরা আর নীল তো আছেই। বারগেনিং চলছে সেই।নীল কিছু বলছিলো।এমন সময় অরিন নীলকে উদ্দেশ্য করে ঝাঁঝালো গলায় বলল,
“এই যে মিস্টার।এইযে আপনি। মনে হচ্ছে কাঁচা বাজারে আসছেন।আলু,পটল সবজির মতো দরকষাকষি করছেন।বেশি বারগেনিং করে অযথা টাইম ওয়েস্ট না করে টাকাটা দিয়ে দিন।আর সম্মানের সহিত ভেতরে আসুন।”
নীল একহাতে চুলগুলো ব্যাক ব্রাশ করল।বলল,”আরে ম্যাম আপনারা তো দিন দুপুরে ডা’কা’তি শুরু করে দিয়েছেন দেখছি।এতো টাকা গেটে ধরে কেউ।যান আপনার কথাও থাকল আমার কথাও থাকল।আমি আরো দশ হাজার বাড়ালাম।আর আপনি বিশ হাজার কমালেন।তাহলে কত দিতে হবে?”
একটু অভিনয় করে আঙ্গুল গুণে নীল ফের বলল,”বিশ হাজার। একদম নগদ বিশ হাজার গেইটের সালামি পাচ্ছেন।”
অরিনসহ বাকি মেয়েরা কপাল কুঁচকে বিস্মিত চাহনিতে চাইল।অরিন বিড়বিড় করে বলল,”ব্যাটা কনজুস একটা।কি’প’টে তো আছেই।সাথে ধূ’র্ত একটা। ও দশ হাজার বাড়াল।আর আমাদের থেকে বিশ হাজার কমিয়ে বলছে,দুই পক্ষের কথাই রইল।তাই ঠিক হলো নাকি?আমাকে এতটা গা’ধী মনে হয়।ওর চালাকি বুঝবো না।”এইভেবে অরিনের চোয়াল শক্ত হয়ে আসলো। অরিন দুইহাত কোমড়ে চেপে দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলল,
“আপনার সস্তা চালাকি আপনার কাছে রাখুন।যান এবার আমি বলছি,আপনার কথাও থাকবে।আবার আমাদের কথাও।সো আপনি আর দশ হাজার বাড়িয়ে দিন আমরাও দশ হাজার কমিয়ে দিছি।তাহলে ত্রিশ হাজার টাকা ভালোই ভালোই দিয়ে দিন।”
নীল কিছু বলবে,এমন সময় জারিফ ইশারা করল।ইশারায় ওদের দাবিটা মেনে নিতে বলল।অতঃপর নীল দাঁতে দাঁত চেপে অরিনের হাতে ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে দিলো।অরিন বিনিময় ব্যাকা হাসল। অতঃপর জারিফের দিকে কাঁচির ট্রে-টা হাসিমুখে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,”স্যার ফিতাটা কে’টে ভেতরে আসুন।”
.
প্রথমে খাওয়া দাওয়া পর্ব শেষ হয়।তারপর কাজী সাহেব রেজিঃ খাতায় মনোযোগ সহকারে কিছু লিখছেন। অতঃপর বিয়ে পড়াতে আসেন।বর কনের জন্য আলাদা স্পেশ করা হয়েছে। পাশাপাশি তবে লাল রঙের কারুকার্য করা পাতলা পর্দা দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া। পর্দা ভেদ করে আবছা আবছা দেখা যাচ্ছিল।জারিফ পর্দার ভেতর দিয়ে তার ব্যক্তিগত রমণীকে দেখছিলো।কাজী সাহেব সহ সাক্ষীরা মেয়ের কাছে প্রথমে আসেন।কাজী সাহেব সহ গুরুজনদের আসার আগেই লিয়ার ছোটো চাচিমা লিয়ার মাথার ঘুমটাটা বড় করে টেনে দেয়।লিয়ার একপাশে চাচিমা আর মামী অপর পাশে তাসনিম ।লিয়ার বান্ধবী দুজনসহ অনেক মেয়েরাই আছে। উৎসুকভাবে বিয়ে পড়ানো দেখবে বলে।
কাজী সাহেব সুন্দর করে বলতে থাকেন***********আয়মান জারিফ নগদ***লক্ষ টাকা দেন মোহর ধার্য করিয়া শাদী করিতে আসিয়াছেন।আপনি তাহাকে স্বামী বলিয়া গ্রহণ করিয়া কবুল বলুন মা।লিয়া নিশ্চুপ থাকে। সামান্য তিন অক্ষরের একটি শব্দ তবে বিশালত্ব ব্যাপক।যদিও তাদের বিয়ে আগেই হয়েছে।তবে সেদিনের সিচুয়েশন আর আজকের সিচুয়েশন এক নয়।তাই অনুভূতিটাও সম্পূর্ণ আলাদা।লিয়া সময় নিচ্ছে।কাজী সাহেব কোমল গলায় ফের বললেন,”বলুন মা।”
লিয়ার ভীষণ কান্না পাচ্ছে।লিয়া ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে।লিয়ার চাচিমা লিয়াকে আগলে নিলো।আদূরে গলায় বলল,”লিয়া সোনা আম্মু। তাড়াতাড়ি বলে দাও।সবাই অপেক্ষা করছে তো।”
তাসনিম লিয়ার মাথায় আলতোকরে হাত রাখল। কণ্ঠে আদূর জড়িয়ে নিয়ে বলল,”লিয়া সোনা বোন আমার। তাড়াতাড়ি বলে দে।”
লিয়ার বান্ধবীরাও বলল।অরিন বলল,”এই লিয়া বলে দে না। ফট করে কবুল বলে দে।”
অরিনের কথাশুনে নীল তৎক্ষণাৎ বলে উঠল,”ভাবীকে বলতে দিন।যাইহোক পাশ থেকে আপনারা কেউ আবার বলে দিয়েন না।”
এতটুকু বলে নীল থামল।নীলের বাবা কটমট চোখে ছেলের দিকে চাইল।নীলের মুখটা চুপসে যায়।নীল বুঝল এখানে বড়রা আছে।ফা’জ’লা’মো করে কিছু বলা ঠিক হবে না।কিছু বললে মেপে মেপে বলতে হবে।নীল অরিনের দিকে দু’কদম এগিয়ে গেল। ফিসফিসিয়ে বলল,”মিস আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনি কবুল পড়তে খুব উৎসুক। কাজী আছেই।আপনি বললে আমি রাজী আছি। আপনার কবুল পড়ার শখ পূরণ করতে পারি।তা বলব নাকি কাজী সাহেব কে?”
অরিন মোটামোটা চোখে চাইতেই নীল থামল।অরিনের চাহনি দেখে মনে হচ্ছে চোখ দিয়ে ভষ্ম করে দিবে এমন।নীল ফাঁকা ঢোক গিলল।ঝাকরা চুলের মধ্যে হাত বুলাতে বুলাতে দু’কদম পিছিয়ে গেলো। দুই হাত জিন্সের পকেটে গুঁজে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে থাকল।
কাজী সাহেব ফের বললেন,”মা বলুন। আলহামদুলিল্লাহ কবুল বলুন।”
ওপাশে একজন অধীর আগ্রহে আছে লিয়ার মুখ থেকে শব্দটা শোনার জন্য।কানটা সজাগ রেখেছে জারিফ। অধীর আগ্রহে চোখ বন্ধ করল জারিফ।লিয়া মৃদুস্বরে বলল,”আলহামদুলিল্লাহ কবুল।”
কাজী সাহেব সহ অনেকে উচ্চস্বরে ‘ আলহামদুলিল্লাহ’ বলল।এভাবে তিনবার বলা হলো। অতঃপর জারিফের পাশে গিয়ে কাজী সাহেব অনেক কিছুই বললেন।তারপর কবুল বলতে বললেন।জারিফ সময় না নিয়ে দ্রুত ‘কবুল’ বলল। প্রথমে ধর্মীয়ভাবে পরে আইনিওভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়। রেজিঃ পেপারে সই করার সময় লিয়ার হাতটা মৃদু কাঁপছিলো।তবুও লিয়া সুন্দর করে সই করল।পাশে জারিফের সই লিয়ার দৃষ্টির অগোচর হয় না।দুই পরিবারের সবাইকে সাক্ষী রেখে, দু’জনের স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতিতে আরো একবার বিয়ে হলো জারিফ-লিয়ার।সবাই মোনাজাত তুলে নব দম্পতির জন্য দোয়া প্রার্থনা করল। তাদের ভবিষ্যৎ জীবন যেনো ঝঞ্ঝাট মুক্ত হয়। প্রশান্তিতে,সুখে-শান্তিতে সর্বদা ভরে থাকুক তাদের সংসার লাইফ।
বিয়ে পড়ানো শেষে মাঝের পর্দা সরিয়ে ফেলা হয়।বর বউকে একসাথে বসানো হয়। মিষ্টি বিতরণ করা হয়। তাসনিম মিষ্টির প্যাকেট রুপন্তীর হাতে দিলো।লিয়াদেরকে দেওয়ার জন্য। রুপন্তী জারিফ লিয়ার সামনে মিষ্টির প্যাকেট বাড়িয়ে নিতে বলল।জারিফ একটা মিষ্টি হাতে তুলল।লিয়ার দিকে বাড়িয়ে দিলো।লিয়া নির্দ্বিধায় হা করল।খানিকটা মুখে নিলো।লিয়ার আধ খাওয়া মিষ্টিটুকু জারিফ খেতে থাকল।
.
বিদায় মানেই বেদনাদায়ক।বিয়ে বাড়ির আনন্দঘন পরিবেশ বিদায় বেলা এসে বেদনায় ছেয়ে যায়।মূহূর্তেই চারিপাশ ভারী হয়ে যায়। একমাত্র মেয়েকে বিদায় দিতে গিয়ে রাজিয়া সুলতানা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।লিয়াও শব্দ করে কান্না করতে থাকে।লিয়ার বাবা ছলছল নয়নে মেয়েকে জামাইয়ের হাতে তুলে দেন।সাথে কিছু উপদেশ মূলক কথা বলেন।জারিফ মাথা নুইয়ে সবটা শ্রবণ করে। জারিফ ভদ্রভাবে নম্রস্বরে আশ্বাস দেয়।লিয়াকে আগলে রাখবে।
গাড়ি চলছে মিনিট পাঁচেক হবে এরকম।লিয়া এখনো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে।লিয়া আর জারিফের মাঝে নাতাশা বসে আছে। সামনের সিটে জারা আর নীল ড্রাইভিং সিটে।জারিফদের ব্যক্তিগত টয়োটা গাড়িটা আজ ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে।বাকি সবাই ভাড়া করা গাড়িতে।বাকি গাড়িগুলো আগে। জারিফদের গাড়ি পেছনে।নাতাশা ঘাড় ঘুরিয়ে লিয়ার দিকে চাইল।কপাল কুঁচকে বলল,
“মামী।তুমি কান্না করছো কেনো?আমার মামা বলে গুড গার্লরা কখনো কান্না করে না।আমি জানি তুমি গুড গার্ল ।তুমি খুব খুউউউব ভালো।তাহলে কান্না করছো কেনো?মামা এও বলেছে কান্না করলে সবাই পঁচা বলে।তুমি একদম কান্না করো না।আমি আছি,মামা আছে।এবার তুমি থামো, প্লিজ।না থামলে তোমাকে সবাই পঁচা মেয়ে বলবে কিন্তু।”
নাতাশা কখনো কান্না করলে জারিফ এরকম বুঝ দিতো। বাচ্চা মেয়েটা এখন সেসব বলে লিয়াকে বুঝ দিচ্ছে।নাতাশার কথা শুনে লিয়ার কান্না থেমে যায়।লিয়া নাতাশার দিকে তাকিয়ে নাক টেনে নিয়ে স্মিত হাসল।নাতাশা হাসিখুশি প্রাণোচ্ছল মুখয়বে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলল,”ইয়েএএএ মামী হেসেছে।কি মজা!”
জারিফ ঠোঁট গোল করে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলল। মৃদুস্বরে বলল,”উফ্! এতক্ষণে ম্যাডামের কান্না থামল।আমি ভেবেছিলাম কান্না করতে করতে বন্যা না বইয়ে দেয়।গাড়ি ব্যাক করতে না হয়।”
লিয়া বুঝল জারিফ টিটকারী করে বলছে।লিয়ার রা’গ হলো।ছেলে মানুষ বিদায়ের কি বুঝে হ্যা।এরকমটা বলা সহজ।যার বিদায় সেই কেবল বোঝে,হ্যা।বাবা-মা, ভাইবোন,পরিবারের আপন সকল মানুষকে ছেড়ে নতুন পরিবেশে যাওয়া।সবার সাথে মানিয়ে। অটোমেটিকলি বাঁধ ভাঙ্গা কান্নারা চলে আসে, হুঁ।এসব মনেমনে ভেবে লিয়া গাল ফুলিয়ে রাখল।জারিফ আন্দাজ করতে পারলো,লিয়া রা’গ করেছে।জারিফ নাতাশাকে কোলের উপর তুলল।লিয়ার দিকে চেপে বসল। একহাতে লিয়ার থুতনি ধরে নিজের দিকে মুখটা ঘুরিয়ে নিলো।হাত দিয়ে লিয়ার চোখের কোণে জমে থাকা পানিটুকু মুছে ফেলল।ফেসটা অসহায় করে মৃদুস্বরে বলল,
“সরি।মজা করে বলেছিলাম। রা’গ করে থেকো না।তুমি রা’গ করলে,আমার দিন দুনিয়া অন্ধকার হয়ে আসে।”
জারিফ লিয়ার হাতের উপর একহাত রাখলো।লিয়ার আঙ্গুলের ভাঁজে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিল।লিয়া অপর হাতটা জারিফের হাতের উপর রেখে মৃদু হাসল।
.
নতুন বউকে দুইদিক হতে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে ওয়েলকাম জানিয়ে ভেতরে আনা হয়। জাহানারা বেগম ছেলে ছেলের বউকে নিজে হাতে মিষ্টিমুখ করান। ড্রয়িংরুমের সোফায় পাশাপাশি লিয়া জারিফ বসে। বাচ্চা পার্টিরা বলছে কিছু রিচুয়াল শেষে রুমে যেতে পারবে এর আগে নয়।জারিফের কয়েকজন কাজিন আর কাজিনের বউয়েরা চারিপাশে দাঁড়িয়ে।জারিফের খালাতো ভাইয়ের বউ একটা আয়না জারিফের সামনে ধরে বলল,
“কাকে দেখতে পাচ্ছো?”
জারিফ একবার আয়নার দিকে চাইল তো ফের পাশে বসা লিয়ার দিকে। অতঃপর মুচকি হেসে বলল,
“আমার প্রাণপ্রিয়া ,আমার অর্ধাঙ্গিনীকে।”
সবাই হৈ-হৈ করে উঠে বলল,”বাহ্!”
অতঃপর লিয়াকেও একই প্রশ্ন করা হলো।লিয়া স্মিত হেসে নির্বিকার ভঙ্গিতে বলল,”আমার প্রাণপ্রিয় কৃষিবিদ আয়মান জারিফকে।”
সবার মাঝে এভাবে বলতে লিয়ার লজ্জা লাগছিলো।তবুও লিয়া উপরে নির্লিপ্ত আবরণ রেখে বলল।সবাই হাসল আর টিপ্পনি কাটতে লাগল।
.
রুমটা তাজা ফুলের সুবাসে সুবাসিত। চারিদিকে ফুলের ম-ম গন্ধ বিরাজ করছে।বিছানায় সাদা বেডশিট, জানালায় সাদা আভিজাত্যপূর্ণ পর্দা,রুমটা সবুজের ডিস্টেম্বার করা। রজনীগন্ধা,লাল গোলাপ দিয়ে রুমটা ডেকোরেশন করা হয়েছে। ফ্লোরে সবুজ কার্পেট। মনে হচ্ছে অকৃত্রিম সবুজ ঘাস।রুমটা পরিপাটি করা।দেওয়ালের মাঝে মাঝে তাজা ফুল দিয়ে ডেকোরেট করা।লিয়া বিছানার মাঝে বসে আছে।পরনে লাল রঙের সফট সুতি শাড়ি। চুলগুলো খোলা।ফ্যানের বাতাসে চুলগুলো উড়াউড়ি করছে।একটু আগে শাওয়ার নিয়েছে।শাড়ির সাথে আটকানো পিন,চুলের ক্লিপগুলো জারা আর জারিফের খালাতো ভাবী দু’জনে মিলে ছাড়িয়ে দেয়।শাওয়ার নেওয়ার পর শাড়িটা ভাবী পড়িয়ে দেয় লিয়াকে।লিয়াকে বিশ্রাম নিতে বলে উনি দরজাটা চাপিয়ে দিয়ে চলে যান।রুমে নাতাশা আগে থেকেই ছিলো।লিয়ার পাশে বসে সে এটাসেটা গল্প করছে।এমন সময় বাইরে হৈ-চৈ শুরু হলো।লিয়া বিষয়টা বুঝতে পারল।জারিফকে এমনি এমনি আজ রুমে ঢুকতে দেবে না।রুম সাজানোর সালামি দিতে হবে।জারিফ কোনো বারগেনিং না করে ছোট বোনদেরকে সালামি দিয়ে দেয়।
রুমে প্রবেশ করতেই জারিফের নজর প্রথমে যায় বিছানায় বসে থাকা লিয়া আর নাতাশার দিকে।লিয়া হাসিমুখে নাতাশার সাথে গল্প করছে।জারিফের ভীষণ ভালো লাগল।লিয়া চোখ তুলে চাইল জারিফের সাথে চোখাচোখি হয়।লিয়া চোখটা সরিয়ে নেয়।জারিফ কয়েক পা এগিয়ে গেলো। ওয়ালসেট আয়নার সামনে দাঁড়াল। শেরওয়ানির বোতাম খুলতে থাকল।বোতাম খুলতেই জারিফের নজর গেলো গলায় থাকা স্বর্নের চেনের দিকে।জারিফ চেইনটা খুলল।বিছানার দিকে এগিয়ে গেলো।লিয়ার দিকে চেইনটা বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
“এটা তোমার কাছে রাখো।”
লিয়া জারিফের হাতের দিকে নজর দিয়ে চেইনটা দেখে ভ্রু কুঁচকালো।অবাক হয়ে বলল,”এটা আমাকে কেনো দিচ্ছেন!এটা তো আপনার শ্বশুরবাড়ি থেকে আপনাকে গিফট করেছে। এটা আপনার।সো আপনার কাছেই রাখুন।”
“ছেলেদের গোল্ড ব্যবহার করাতে নিষেধ আছে। ছেলেদের গোল্ড ইউস করতে হয় না।আর এসব অলংকার মেয়েদের জন্য।”
লিয়া আর কিছু বলল না।বিনিময় মৃদু হাসল।জারিফ নিজে লিয়ার গলায় চেইনটা পড়িয়ে দিলো।জারিফ নাতাশাকে উদ্দেশ্য করে বলল,”নাতাশা সোনা খাবার খেয়েছো?”
নাতাশা মাথা উপর নিচ করে বলল,”হ্যা খেয়েছি।নানুমনি ব্যস্ত ছিলো চারু খালামনি খাইয়ে দিয়েছে।”
জারিফ নাতাশার গাল একহাতে টিপে দিয়ে টাওয়েল আর টাউজার, টিশার্ট নিয়ে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকল।জারিফ একেবারে শাওয়ার নিয়ে বের হয়।কালো টাউজার সবুজ টিশার্ট ফর্সা গায়ে দারুণ মানিয়েছে।লিয়া নাতাশার সাথে কথা বলার মাঝে চোরাচোখে জারিফের দিকে একপলক চাইল।জারিফ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলগুলো পরিপাটি করছে।
এমন সময় জারার গলার আওয়াজ আসলো।দরজার দাড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে জারা হাঁক ছেড়ে ডেকে বলল,”নাতাশা বেবি আসো এবার।ঘুমাবে তো।”
নাতাশা কিছু বলার আগেই জারিফ বলল,”জারা।ভেতরে আয়।”
জারা ভেতরে আসলো।নাতাশাকে ফের যাওয়ার কথা বলতেই নাতাশা বলে উঠলো,”ও খালামনি।আমি তো মামীর কাছে থাকবো।তুমি যাও তো।মামী বলেছে আমি আজকে মামীর সাথে ঘুমাবো।”
কথাটা কর্ণপাত হওয়ার সাথে সাথেই জারিফ ড্যাবড্যাব চোখে লিয়ার দিকে চাইল।লিয়ার মাথায় সব সময় দুষ্ট বুদ্ধি ঘুরঘুর করে নিশ্চয়। নাতাশা বলল,লিয়া বলেছে। উফ্!লিয়া কি ইচ্ছে করে আরো ওয়েট করানোর জন্য এরকম বলেছে নাকি! জারিফের এভাবে ড্যাবড্যাব করে তাকানো দেখে লিয়া শুকনো ঢোক গিলে নেয়।লিয়া গল্প করার সময় আদর করতে করতে হুট করেই বলে ফেলেছিলো। কিন্তু নাতাশা যে মনেই রাখবে।এরকম বলবে লিয়া ভাবতে পারেনি।
জারা আদূরে গলায় বলল,”মামী এখনো খায়নি।মামী খাবে।মামীর শুতে এখনো দেরি আছে।তুমি ছোট মানুষ এতো রাত জাগলে শরীর খা’রাপ করবে তো।আর তোমাকে ছাড়া আমার ঘুম হয় না।তাই বলছি ফাস্ট চলো আমার সাথে।”
নাতাশা লক্ষী মেয়ের মতো উঠে দাঁড়াল।লিয়ার গালে চুমু খেয়ে বলল,”গুড নাইট মামী।”
“গুড নাইট সোনা।”
নাতাশা জারার হাত ধরে যাবে এমন সময় জারিফ ওয়ারড্রবের উপর থেকে চকলেটস নিয়ে দিলো।কালকে আরো চকলেটস এনে দিবে এও বলল।
.
রাতে পরিবারের সবার সাথে বসে লিয়া হালকা কিছু খাবার খায়। অনেকক্ষণ হলো লিয়া একাই রুমে আছে।খাবার খাওয়ার পর জারিফের সাথে আর দেখা হয়নি। এখানে কিছুক্ষণ জারা আর ভাবী দু’জনে ছিলো।জারা যাওয়ার পরে ভাবী আরো কিছুক্ষণ থেকে গল্প করে পরে চলে যায়।লিয়া বসে বসে শাড়ির আঁচল আঙ্গুলে পেচাচ্ছে।এমন সময় দরজা লক করার শব্দ হলো।ঘাড় ফিরিয়ে জারিফকে দেখতে পেলো।জারিফ বন্ধুদের সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে ফিরল।জারিফ এগিয়ে আসতে আসতে বলল,
“একা একা বোর হচ্ছিলে?”
“উঁহুম।”
জারিফ আর কিছু না বলে রুমের লাইট নিভিয়ে দিলো। মুহুর্তেই সারারুম অন্ধকারে ছেয়ে যায়।লিয়ার গা ছমছম করতে লাগল।লিয়ার গলা শুকিয়ে আসতে থাকল।লিয়া ভড়াকালো বেড ছেড়ে নেমে দাঁড়াল। কাঁপাকাপা স্বরে বলল,”জারিফ।জারিফ। প্লিজ আলো জ্বালান।আমার ভ’য় করছে।”
এমন সময় নিজের কোমড়ে শক্ত পোক্ত হাতের অস্তিত্ব আবিষ্কার করল।ঘাড়ে গরম নিঃশ্বাস পড়ল। লিয়ার বুকের ভেতর তোলপাড় শুরু হয়েছে। দ্রিমদ্রিম শব্দ খেলে যাচ্ছে বুকের ভেতর।চেনা পারফিউমের সুগন্ধ নাকে বারি খেলো। পাশের মানবের গা থেকে চেনা মিষ্টি গন্ধ আসল।লিয়ার ভ’য় কিছুটা কাটল।তবে লজ্জায় আড়ষ্ট হলো লিয়া।জারিফ লিয়াকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো। লিয়াকে ছেড়ে হঠাৎ গ্যাস লাইট জ্বেলে একটা ক্যান্ডেল জ্বালিয়ে নিলো।লিয়া জারিফের মাঝামাঝি জারিফের হাতে ক্যান্ডেল মৃদু আলো ছড়াচ্ছে।সেই মৃদু আলোয় লিয়াকে মায়াময় দেখাচ্ছে।জারিফ শীতল চাহনিতে চেয়ে বলল,
“আমি আছি তো। আমি থাকতে ভ’য় পাওয়ার কিচ্ছু নেই।”
লিয়া নিশ্চুপ ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইলো।জারিফ হাতের ক্যান্ডেল দিয়ে একএক করে রুমের জায়গায় জায়গায় রাখা ক্যান্ডেলগুলো জ্বালিয়ে দিলো।বড়বড় নজরকাড়া ক্যান্ডেলগুলো আলো ছড়াতে থাকল।লিয়া চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখতে থাকল।জারিফ লিয়ার সামনা-সামনি দাঁড়াল। হঠাৎ জারিফ হাটু ভেঙ্গে লিয়ার সামনে বসল।একহাতে লিয়ার পা স্পর্শ করতেই লিয়া হৈ-হৈ করে উঠল,
“সেকি কি করছেন কি!আপনি কেনো সালাম করতে যাচ্ছেন।ভাবী তো বললো আমাকে বরকে সালাম করতে হয়।রুমে আসলে সালাম করি যেনো।এতো কিছুর মাঝে ভাবীর বলা কথাটা বেমালুম ভুলে বসেছিলাম দেখছি।”
এই বলে লিয়া জারিফের দিকে তাকাতেই শুকনো ঢোক গিলল।জারিফ একটু রা’গি দৃষ্টিতে চেয়ে আছে।লিয়া জারিফের এহেন চাহনি দেখে ঠিক বুঝল লিয়া নিশ্চয় ভুলভাল কিছু বলেছে।জারিফ দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“এই লিয়া তোমার এতো ছটফটানি স্বভাব কেনো বলোতো।একটু রয়েসয়ে কিছু ভাবতে পারো না।আর যা ভাবো ফটাফট তাই বলেও ফেলো।”
লিয়া ঠোঁট উল্টে বলল,”সরিহ।”
লিয়ার বোকাবোকা চাহনি দেখে জারিফ হেসে ফেলল।জারিফ লিয়ার পা টা হাঁটুর উপর তুলল।পকেট থেকে কিছু বের করল।একটা সুন্দর পায়েল লিয়ার পায়ে পড়িয়ে দিলো।লিয়া মুগ্ধ নয়নে চেয়ে চেয়ে দেখল।লিয়ার ভীষণ ভালো লাগল।জারিফ উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল,”এটা তোমার বাসর রাতের গিফট।”
লিয়া স্মিত হেসে বলল,”থ্যাংকস।”
জারিফ লিয়ার চোখে চোখ রাখল। দু’জনের মধ্যকার দূরত্ব ঘুচিয়ে জারিফ লিয়াকে নিজের কাছে টেনে নিলো।লিয়ার কোমড় জড়িয়ে ধরল।লিয়ার সর্বাঙ্গে শীতল স্রোত বয়ে যেতে থাকল।ক্যান্ডেলের দীপ্ত আলোয় রুমের পরিবেশটা চমৎকার রোমাঞ্চকর হয়েছে।সাথে জারিফের মনটাও। ক্যান্ডেলের মৃদু আলোয় লিয়াকে ল্যাসটার্ড লাগছে।রুমের মৃদুমন্দ আলো, নিস্তব্ধ রজনী,সামনে ব্যক্তিগত নারী সবকিছুই জারিফকে উস্কে দিচ্ছে।জারিফের নিঃশ্বাস ঘন হতে থাকে।জারিফ লিয়ার কপালের সাথে কপাল ঠেকালো মা’তাল করা কণ্ঠে বলল,
“যে পা’গ’লা’মো আমার উপর ভর করেছে।এটা শুধু তোমার জন্য।এটা হয় তোমার হরিণী মায়াবী নজরের দো’ষে।যেখানে আমি তাকালেই সমুদ্রের অতল গহ্বরে তলিয়ে যাই।নিজেকে হারিয়ে ফেলি আমি।মা’তাল করা নে’শায় ডুবে যাই। মনটা যেনো আজ ভালোবাসার বি’ষে বি’ষা’ক্ত।তোমাকে খুব করে প্রয়োজন।”
লিয়ার কপালে প্রগাঢ় চুম্বন আকলো।লিয়ার হৃদস্পন্দন কয়েকগুণ বেড়ে যায়।বুকের ভেতর ডিবডিব শব্দ হতে থাকে।জারিফ ফের শীতল শান্ত গলায় বলল,”তুমি আমার স্বপ্ন।তুমি আমার মনের প্রশান্তি।তুমি আমার সুখের ঠিকানা।দেখে নিও প্রাণপ্রিয়া।দেখে নিও তুমি।সুখের চাদরে, ভালোবাসার আদরে আদরে ভরিয়ে মুড়িয়ে রাখব তোমাকে।লিয়া আই লাভ ইউ ভেরি মাচ্।আই রিয়েলি লাভ ইউ।”
জারিফের মুখ থেকে ভালোবাসার কথা শুনে লিয়ার দুচোখ ছলছল করে উঠল। আনন্দে লিয়ার কান্না পাচ্ছে।লিয়া ঠোঁট কামড়ে ধরে কান্না আটকানোর চেষ্টা করল।জারিফ লিয়ার ফর্সা গালে একহাত রাখল।আদূরে গলায় বলল,”লিয়া।এই লিয়া কিছু তো বলো।”
লিয়ার গলা দিয়ে যেনো কথা বের হতে চাইছে না।লিয়া কাঁপাকাপা স্বরে বলল,”শান্তি হারিয়ে গিয়েছিলো।কিছু তো হয়েছিলো।সে তো অনেক আগেই।আপনাকে দেখার পর থেকেই।তবে এখন আমি নিজেকে পরিপূর্ণ মনেকরি।আমার ভাগ্যকে সুপ্রসন্ন মনেকরি।আমি আপনাকে পেয়ে নিজেকে ধন্য মনেকরি।আই লাভ ইউ টু।”
লিয়া লজ্জায় জারিফের বুকে মুখ লুকালো।জারিফ শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। কিছু সময় এভাবে নীরবে কাটল।জারিফ লিয়ার মুখটা তুলল।লিয়ার পাতলা ওষ্ঠ তিরতির করে কাপছিলো।জারিফ লিয়ার ঠোঁটে ঠোঁট রাখল। দু’জনে আবেশে চোখ বন্ধ করে নিলো। দীর্ঘসময় পর ছাড়া পেয়ে লিয়া ঘনঘন শ্বাস টেনে নিলো।জারিফ লিয়ার গলায় ঠোঁট ছোয়ালো। কানের পাশে মুখটা নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
“মে আই?”
লিয়া লজ্জায় মূর্ছা যাওয়ার ন্যায় হলো।জারিফকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।জারিফ লিয়াকে কোলে তুলে নিলো। বিছানায় শুয়ে দিতে দিতে বলল,
“ইউ আর মাই নিউ ফ্লারিস্ট রোজ।”
চাঁদের রুপালি আ’গু’ন ভরা রাতে।রাতের গভীরতা যত বাড়তে লাগল ।তেমনি চাঁদের রুপালি আলোও মিইয়ে যেতে থাকল।এমন সুন্দর এক জোছনা রাতে স্বামী নামক ভালোবাসার মানুষটার স্পর্শ সানন্দে গ্রহণ করে লিয়া।
চলবে,,,