#গোধুলির_শেষ_বিকেলে_তুমি_আমি
#পর্ব১৬
#Raiha_Zubair_Ripti
দুপুরের শেষ প্রহরে কুয়াকাটা স্বপ্নরাজ্য পার্ক এন্ড রিসোর্টে এসো পৌঁছালো রুয়াত রা। রিসোর্ট টা অসম্ভব সুন্দর।। শাফায়াত গাড়ি থেকে নেমে রিসোর্টে ঢুকে যায়। যাওয়ার আগে বলে রুয়াতকে তার পেছন পেছন আসতে। আগে থেকেই বুকিং করে রাখায় ঝামেলা বিহীন শাফায়াত একটা রুমের চাবি নিয়ে চলে গেলো। এদিকে রুয়াত গাড়ি থেকে নামতেই সুইটি রুয়াতের হাত ধরে নেহালের কথামতো। নেহাল বাসে থাকাকালীন সুইটি কে বলেছে সে যেই রুমে থাকবে সেই রুমে যেনো রুয়াত কে নেয়। সুইটি পাল্টা জিজ্ঞেস করেছিলো -“ কেনো? প্রতিত্তোরে নেহাল বলেছিলো পরে বলবে।
রুয়াত আকস্মিক সুইটি কে নিজের হাত চেপে ধরতে দেখে বিস্ময় নিয়ে বলে-
-“ কিছু বলবে?
সুইটি উপর নিচ মাথা ঝাকায়।
-“ আমার সাথে রুম শেয়ার করবে রুয়াত? আসলে অন্য কারো সাথে তো আমার তেমন কোনো বন্ডিং নেই। সেজন্য বলছি শেয়ার করবে?
রুয়াত ঠোঁট কামড়ে ধরলো। শাফায়াত এর সাথে একই রুমে থাকলে নিশ্চয়ই অনেক কথা উঠবে। যেহেতু কেউ জানে না তারা স্বামী স্ত্রী। তারচেয়ে বরং সুইটির সাথেই রুম শেয়ার করা অধিক ভালো হবে মনে করলো রুয়াত। মুচকি হেঁসে বলল-
-“ শিওর।
সুইটি রুয়াত কে নিয়ে রুমে চলে গেলো।
এদিকে শাফায়াত রুমে এসে শার্টের উপরের দুটো বুতাম খুলে বিছানায় হাত পা মিলে শুয়ে পড়ে। এসির পাওয়ার টা বাড়িয়ে দেয়। চোখ বন্ধ করে কিছু মুহূর্ত চলে যেতেই রুয়াত কে এখনও আসতে না দেখে শোয়া থেকে উঠে বসলো। রুমের দরজা খুলে একটু মাথা বের করে করিডোর টা দেখে নিলো। রুয়াতের ছায়াকেও দেখা যাচ্ছে না। শাফায়াত দরজা বন্ধ করলো। পকেট থেকে ফোন বের করে রুয়াতের নম্বরে কল লাগালো। রুয়াত রুমে এসেই ওয়াশরুমে যায় ফ্রেশ হতে। ফোনটা বিছানায়। সুইটি রুয়াতের ফোন টা বাজতে দেখে রুয়াত কে ডেকে বলে-
-“ রুয়াত তোমার ফোন বাজছে।
রুয়াত ওয়াশরুমের দরজা খুলে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে-
-“ ফোন টা ধরিয়ে দাও তো সুইটি।
সুইটি ফোনটা ধরিয়ে দেয় রুয়াতের হাতে। রুয়াত দরজা বন্ধ করে দেয়। ফোনটা রিসিভ করে কানে নিতেই ওপাশ থেকে শাফায়াত গম্ভীর কন্ঠে বলে-
-“ কি ব্যাপার এখনও রুমে আসছো না কেনো?
-“ আমি সুইটির সাথে আছি। এখন ওয়াশরুমে।
-“ আমি যে বললাম আমার সাথে আসতে।
-“ ভেবে দেখুন আপনি আমি এক সাথে থাকলে কথা উঠবে। সিনক্রিয়েট হবে। কেউ তো জানে না আমরা স্বামী স্ত্রী।
-“ কেউ আস্ক করলে জানিয়ে দিব।
-“ থাকি না এই রুমে। ঝামেলা করার কি দরকার।
-“ আমার জামাকাপড় সব তোমার ল্যাগেজে। আমি ফ্রেশ হবো কি করে।
-“ একটু অপেক্ষা করুন আমি নিয়ে আসছি।
শাফায়াত বিরক্ত হয়ে ফোন কেটে দেয়। রুয়াত তাড়াতাড়ি করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়। রুয়াতের বের হওয়ার পর সুইটি ঢুকে ফ্রেশ হতে। সেই সুযোগে শপিং ব্যাগে করে শাফায়াত এর জামাকাপড় গুলো ভরে বের হয়। তারপর শাফায়াত এর নম্বরে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করে কয় নম্বর রুমে সে। শাফায়াত বলে ১০৭ নম্বর রুমে সে। রুয়াত দের রুম নম্বর ১০৪। দুই রুম পরেই শাফায়াত এর রুম। রুয়াতে আশেপাশে তাকিয়ে শাফায়াত এর রুমের সামনে গিয়ে দরজায় কড়া নাড়তেই শাফায়াত দরজা খুলে দেয়। রুয়াত হাত বাড়িয়ে ব্যাগ টা ধরিয়ে দিলে শাফায়াত রুয়াতের হাত টেনে ভেতরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।
রুয়াত ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। ভ্রু কুঁচকে বলে-
-“ আশ্চর্য দরজা বন্ধ করলেন কেনো?
শাফায়াত গম্ভীর মুখে বলে-
-“ কি দরকার ছিলো তোমার অন্য কারো সাথে রুম শেয়ার করার?
-“ কারন টা তো বললাম।
-“ ভয় পাও লোকের কথায়?
-“ একটু-আধটু তো ভয় পাই। কয়েকটা দিনই তো। থাকি না আলাদা।
-“ তারমানে বউ আমার চোখের সামনে থাকবে তাকে আমি ছুঁতে পারবো না,ধরতে পারবো না। তাইতো? অচেনার মতো বিহেভ করতে হবে।
-“ আমাদের সম্পর্ক টা কি আদৌও সেই পর্যায়ে গেছে? কাছে থাকি আর দূরে থাকি তাতে কি।
শাফায়াত টি-শার্ট আর টাওজার নিয়ে শক্ত মুখে বলল-
-“ আসতে পারো এখন। আলাদা থাকছো ভালো কথা,আমি যখন ডাক দিব সাথে সাথে তখন যেনো আমার কাছে আসা চাই।
শাফায়াত ওয়াশরুমে চলে যেতেই রুয়াত বেরিয়ে আসে।
সুইটি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে রুয়াত কে রুমে ঢুকতে দেখে মাথা মুছতে মুছতে বলে-
-“ কোথায় গিয়েছিলে রুয়াত?
-“ একটু বাহিরে।
-“ খাওনি নিশ্চয়ই?
-“ হুম।
-“ চলো খেয়ে আসি। পেটে ইদুর গুলো ছুটাছুটি করছে।
সুইটি রুয়াত কে নিয়ে খাবার খেতে আসলো।
সুইটি রুয়াতের পরের রুম ১০৫ এ উঠেছে নেহাল রোহান। প্ল্যানিং করেই। সুইটি রুম থেকে বের হবার আগে নেহাল কে বলে সে খেতে যাচ্ছে। নেহাল যেনো আসে। নেহাল মেসেজ টা দেখে রোহান কে নিয়ে বের হয় রুম থেকে।
প্রায় স্টুডেন্ট চলে এসেছে দুপুরে খাবার টা এই অবেলায় খেতে। টিচার্স দের টেবিল আলাদা। সুইটি রুয়াত যেই টেবিলে বসেছে খেতে সেই টেবিলেই মুখোমুখি বসেছে নেহাল রোহান। শাফায়াত ওয়াশরুম থেকে বের হবার পর ভেবেছিলো রুয়াত থাকবে রুমে। দ্যান একসাথে আসবে খেতে। কিন্তু এখন খেতে এসে দেখছে রুয়াত অলরেডি বসে পড়েছে। শাফায়াত আঁড়চোখে একবার তাকিয়ে নাইমুর এর পাশে বসে। নাইমুর রুয়াতের দিকে একবার তাকিয়ে বলে-
-“ আলাদা যে?
-“ ম্যাডামের ইচ্ছে সেজন্য।
-“ ভালোই হয়েছে। এই সময়ে না জানানোই ভালো। বিষয় টা অন্য দিকে চলে যাবে।
শাফায়াত নাইমুরের কথায় কান না দিয়ে খাওয়ায় মনোযোগ দিলো। রুয়াত শাফায়াত কে আসতে দেখে স্বস্তি পেলো। খাবার সামনে নিয়ে বসেছিলো। অপেক্ষা করছিলো শাফায়াত এর আসার। শাফায়াত কে খেতে দেখে রুয়াত ও খাবার মুখে নিলো।
রোহান খাবার খাচ্ছে আর আঁড়চোখে রুয়াত কে দেখে চলছে। রুয়াত মাথা নিচু করে খাবার খাচ্ছে। খাওয়া শেষ হতেই রুয়াত হাত ধুয়ে উঠে চলে যায়। সুইটি ডেকে উঠে। রুয়াত পিছু ফিরে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি নিয়ে।
-“ রেডি হয়ে আসো সমুদ্র সৈকতে গিয়ে সূর্যাস্ত দেখবো।
রুয়াত রুমে এসে একটু সেজে নেয়। শাফায়াত গার্ডেনে দাঁড়িয়ে ছিলো। রুয়াত কে আসতে দেখে মুখ আগের তুলনায় আরো গম্ভীর হয়। এরজন্যই সে স্টুডেন্ট বিয়ে করতে চায় নি। রুয়াত আশেপাশে তাকিয়ে কাউকে ধারে কাছে না দেখে শাফায়াত এর দিকে এগিয়ে এসে বলে-
-“ আপনি যাবেন না সৈকতে?
-“ হুমম যাবো।
-“ চলুন যাই।
-“ তোমার ফ্রেন্ড কোথায়?
-“ আপনার সাথে যেতে এসেছি। ফ্রেন্ড কে কেনো টানছেন।
শাফায়াত হাঁটা ধরলো। পেছন পেছন রুয়াত ও। রিসোর্ট থেকে একটু দূরে আসতেই রুয়াত শাফায়াতের হাত চেপে ধরলো। শাফায়াত ঘাড় বেঁকিয়ে তাকালো হাতের দিকে। রুয়াত হাল্কা হেঁসে দাঁত বের করে বলল-
-“ কেউ নেই।
শাফায়াত চেপে ধরলো নরম হাত খানা। তারপর হাঁটা ধরলো গন্তব্যে। রুয়াত সুইটি কে মেসেজ পাঠিয়ে দিলো যেনো তারজন্য অপেক্ষা না করে।
রোহান রুয়াতের জন্য অপেক্ষায় ছিলো। নেহাল জানালো রুয়াত চলে গেছে। রোহান হতাশার শ্বাস ফেললো। কোনোভাবেই রুয়াতের কাছে পৌঁছাতে পারছে না সে।
বিকেল গড়াতেই পর্যটকদের চোখ পশ্চিম আকাশে। একটু একটু করে সাগরের বুকে যতোই হেলে পড়ছে সূর্য, ততোই রাঙা হয়ে উঠে আকাশ ও তার চারপাশ। নীরবে সৈকতে আছড়ে পড়ছে সাগরের ঢেউ। সেই ঢেউয়ে নেমে পা ভিজে দর্শনার্থীরা দেখছেন সূর্যাস্ত। সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে বাড়তে থাকে ভিড়।
ক্ষণিকের মধ্যে আরও হেলে পড়লো সূর্য, নিমিষেই একেবারে সাগরের বুক ছুঁই ছুঁই লাল সূর্য। সূর্যের লাল আভা ছড়িয়ে গেল সাগর জলে। ততোক্ষণে লাল সূর্য সাগরে নিজেকে সপে দিল পুরোপুরি। গোধূলি লগ্ন শেষে সূর্য ডোবার পরও আকাশে লাল আভা দৃশ্যমান। যা দেখে টানা ছুটিতে ভ্রমণে আসা পর্যটকরা অবাক হচ্ছেন।
অপার সৌন্দয়ের লীলাভুমি সাগর সৈকত কুয়াকাটা প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সূর্যোদয় ও সূর্য়াস্তের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করা যায়। শাফায়াত রুয়াত কে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই সৈকতে। রুয়াত মুগ্ধ চোখে এই দৃশ্য টুকু দেখে বলল-
– “পড়ন্ত বিকেলে সূর্যাস্ত দেখে মনটা ভরে গেলো। সূর্য ডুবার সঙ্গে সঙ্গে মনে হয়, সব গ্লানি ও ক্লান্তি যেন সূর্যের সঙ্গে ডুবে যাচ্ছে।”
শাফায়াত দৃষ্টি নিবন্ধ করলো রুয়াতের দিকে। দু চোখ জুড়ে তার মুগ্ধতা খেলা করছে। একাকী ঘুরতে আসলে মেয়েটা কে এই মুহূর্তে এক হাতে জড়িয়ে ধরে সূর্যাস্ত টা দেখতে পারতো। কিন্তু টিচার হওয়ায় এক সম্মানবোধ তাকে এই কাজ টা করতে দিচ্ছে না। শাফায়াত পেছন ফিরে ভার্সিটির স্টুডেন্ট দের এক এক করে আসতে দেখে রুয়াতের থেকে কিছুটা দূরে সরে গেলো। রুয়াত সেটা দেখে পেছনে তাকিয়ে বুঝলো কেনো সরে গেলো। তপ্ত শ্বাস ফেললো রুয়াত। সুইটি এসে রুয়াতের পাশে দাঁড়ায়।
-“ একা একা দাঁড়িয়ে কেনো? আমার সাথে আসলে কি হতো?
রুয়াত চোখ বন্ধ করে বলল-
-“ অনেক কিছু মিস হয়ে যেত। যা আমি চাইনি।
-“ কি?
-“ কিছু না।
রুয়াত পাশে তাকালো। সমুদ্র সৈকতের পাশেই দেড় শতাধিক একর জমিতে অবস্থিত নারিকেল বাগান যা “নারিকেল কুঞ্জ” নামেই পরিচিত।
-“ চলো নারিকেল বাগানে যাওয়া যাক।
রুয়াত আর সুইটি নারিকেল কুঞ্জে চলে গেলো। সন্ধ্যা নেমে এসেছে। সৈকতের পাড়ে থাকা ছোটবড় স্টলে কৃত্রিম আলো জ্বালানো হয়েছে। পরিবেশ টা এখন রোমাঞ্চকর হয়ে উঠেছে। নারিকেল কুঞ্জে বসে রইলো সুইটি রুয়াত। এখান থেকে সমুদ্র সৈকতের পাড় টা দেখা যাচ্ছে। কেউ বসে আছে, কেউ ছবি তুলছে,কেউ প্রিয় মানুষের হাত ধরে হেঁটে চলছে।
আজ রুয়াত আর শাফায়াত একা থাকলে রুয়াত রাতের অর্ধেক প্রহর টা এই তীরেই কাটিয়ে দিতো। বিষয় টা মারাত্মক হতো। হঠাৎ সামনে দুটো অবয়ব কে এসে দাঁড়াতে দেখে রুয়াত মাথা তুলে তাকায়। নেহাল আর রোহান এসেছে। ইতিমধ্যে রুয়াত জেনে গেছে নেহাল আর সুইটির সম্পর্কের কথা। তাদের দেখে রুয়াত উঠে চলে যেতে চাইলে নেহাল বলে উঠে-
-“ রুয়াত যেও না কথা দরকারি কথা আছে তোমার সাথে।
রুয়াত দাঁড়ালো।
-“ জ্বি বলুন কি কথা।
রোহান জিহ্বা দিয়ে শুষ্ক ঠোঁট ভিজিয়ে নিলো।
-“ সাইডে আসতে পারবে?
-“ কেনো? যা বলার এখানেই বলেন।
-“ ওকে। মনোযোগ দিয়ে শুনবে আমি যা বলবো এখন।
রোহান হাঁটু গেড়ে বসলো। পকেট থেকে রিং বের করলো। রিং টা কুয়াকাটা আসর আগেই কিনেছিলো। রুয়াত কে প্রপোজ করবে বলে।
-“আমি কোনো লুতুরপুতুর প্রেমের প্রস্তাব দিচ্ছি না রুয়াত। ডিরেক্ট বলবো উইল ইউ ম্যারি মি রুয়াত?
পিলে চমকে উঠলো রুয়াত। নাইমুর এসেছিল এদিকটা ঘুরে দেখতে। রুয়াত দের পেছনেই ছিলো নাইমুর। রোহানের মুখে এমন প্রস্তাব শুনে হতবিহ্বল নাইমুর। নাইমুর পেছন থেকে সরে এক সাইডে গেলো রুয়াতের উত্তর টা শোনার জন্য।
রুয়াত কে চুপ থাকতে দেখে রোহান ফের বলে উঠে-
-“ অ্যান্সার দাও রুয়াত।
রুয়াত হাত বাড়লো। রোহানের মুখে হাসি ফুটলো। রুয়াত বা হাতে তাকে আংটি টা দেখিয়ে বলল-
-“ কিছু দেখতে পাচ্ছেন হাতে?
রোহান তাকালো হাতের দিকে৷ অনামিকা আঙুলে জ্বলজ্বল করছে পাথরের আংটি।
-“ এটা কিসের আংটি জানেন? আমি ম্যারিড। আমার স্বামী আছে।
রোহান বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।
-“ মজা করছো তাই না?
-“ আপনি আমার বেয়াই লাগেন?যে মজা করবো। সিরিয়াসলি বলছি অ্যা’ম ম্যারিড। আমি চাই না দ্বিতীয় বার আপনি আবার আমায় এসব বলেন ভদ্র ভাবে বুঝিয়ে গেলাম। আসছি।
রোহান সুইটির দিকে তাকালো।
-“ ও সত্যি ম্যারিড?
-“ তা তো জানি না।
-“ মিথ্যা বললো নাকি?
-“ শিওর নই। আংটি তো আজকাল সবাই পড়ে। বিয়ে হলে তো নাকে নাকফুল হাতে চুড়ি থাকার কথা।
-“ সেটাও তো কথা। আচ্ছা ও কি আমাকে যাচাই করে দেখতে চাচ্ছে? যে আমি ওকে কতটা ভালোবাসি? হয়তো পরীক্ষা করছে ওর বিয়ের কথা শুনে আমার রিয়াকশন কি হয়।
নেহাল এতক্ষণ চুপ থেকে এবার বলল-
-“ আই থিংক রুয়াত মিথ্যা বলছে না রোহান। বললাম না সেদিন আমি এক ছেলের সাথে রুয়াত কে দেখেছি। হয়তো ছেলেটাই ওর স্বামী বা সামথিং।
রোহান ঠোঁট কামড়ে ধরলো। কোনটা সত্যি কোনটা মিথ্যা বুঝতে পারছে না রোহান। তাই রিসোর্টে চলে গেলো।
শাফায়াত রুয়াত কে বিরক্তি নিয়ে হেঁটে আসতে দেখে বলল-
-“ হোয়াট হ্যাপেন্ড রুয়াত?
-“ নাথিং। চলুন ফিরে যাওয়া যাক।
শাফায়াত রুয়াত কে নিয়ে চলে গেলো।
রিসোর্টে নিজের রুমের বেলকনিতে চুল খামছে দাঁড়িয়ে আছে রোহান। রিসোর্টে ফিরেই বেলকনি তে বসে ফেসবুক স্ক্রোল করতে গিয়ে রুয়াতের আইডি আসে। আজ অনেকদিন পর ফেসবুকে ঢুকেছিলো। পরপর দুটো পিক দেখে মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেয়। সেলফির পিক টা নেহালের দিকে তাক করে বলে-
-“ এই ছেলেকেই দেখেছিলি রুয়াতের সাথে?
নেহাল তাকালো ছবির দিকে।
-“ হ্যাঁ এই ছেলেটাই নিতে এসেছিলো রুয়াত কে।
-“ তারমানে এই ছেলেটাই রুয়াতের স্বামী?
-“ তাইতো মনে হচ্ছে।
-“ বিয়েটা কবে হলো তাহলে?
-“ জানি না।
-” আই থিংক ভুল হচ্ছে আমাদের। ও হয়তো আনম্যারিড।
-“ হ বা’লের প্যাঁচাল পারো তুমি। রুয়াত আনম্যারিড হইলে ম্যারিড বলবো ক্যান তোরে?
-“ আমাকে পরীক্ষা করতে।
-“ স্বপ্নেই দেখো এই বা’লছাল। রুয়াতের তো খেয়ে দেয়ে কাজ নেই তোরে পরীক্ষা করবে। মেনে নে ও ম্যারিড।
রোহানের কেমন অস্থির লাগছে। এমন শীতল বাতাসেও শরীর বেয়ে ঘাম ছুটছে।
-” আমার বিশ্বাস হচ্ছে না নেহাল।
-“ মুড়ি খাও বসে বসে তাহলে। আমি চললাম টাটা।
( এক আপু বলেছিল গত পর্বে যে নেহাল, আর নেহালের বাবা শহরে থাকলে মেয়ে কেনো গ্রামে থাকে। সেটা নাকি জগাখিচুরি। তো প্রথমত বলি আমি কোথাও উল্লেখ করি নি নীতি গ্রামে থাকে। ভালো করে পড়ে দেখবেন বলেছি হোস্টেল থেকে সে তার বাবার বাড়ি এসেছে। না পড়ে হুটহাট কথা কেনো বলেন? পড়ালেখার জন্য কি অন্য শহরে গিয়ে পড়তে পারবে না?)
#চলবে?
গল্পটি সম্পর্কে রিভিউ, আলোচনা, সমালোচনা করুন আমাদের গ্রুপে। গ্রুপ লিংক নিচে দেওয়া হলোঃ
https://facebook.com/groups/holde.khamer.valobasa/