ভালোবাসা_তারপর #পর্ব:১১ #তামান্না_শাহরিন_শশী

0
186

#ভালোবাসা_তারপর
#পর্ব:১১
#তামান্না_শাহরিন_শশী

কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উন্মুক্ত।

অনুমতি ব্যাতিত কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

ঠান্ডা হাতে ছোঁয়া পেয়ে রোদসী একটু কেঁপে ওঠে উচ্ছ্বাস তা দেখে হেসে আরো গভীর হয়ে রোদসীর ঘাড়ে মুখ ডোবায়। নিরবতা শেষে উচ্ছ্বাস ঘোর লাগা কন্ঠে বলে,

“জানো আজকে তোমাকে কত সুন্দর লাগছে? মনে হচ্ছে চোখ ফেরাতে পারছি না। চোখ সরালেই তুমি উধাও হয়ে যাবে।”

রোদসীর ভিতর এই কথা শুনে নড়বড়ে হতে লাগলো। আয়নায় নিজের চোখের দিকে তাকায় রোদসী তারপর নিজের কাছে প্রশ্ন করে। আসলেই পালানো টা কি উচিত হবে? উচ্ছ্বাস এবার ঘাড় থেকে মুখ উঠিয়ে আয়নায় তাকালো রোদসীর দিকে তবে রোদসীর এমন আনমনা ভাব উচ্ছ্বাসের ভালো লাগলো না। তাই রোদসীকে ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে রোদসীর মুখ ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলো। কিছুক্ষন চুপ থেকে জিজ্ঞেস করলো,

“তুমি কি কোনো কারনে ডিস্টার্ব?”

রোদসী কোনো জাবাব না দিয়ে উচ্ছ্বাসকে অবাক করে দিয়ে উচ্ছ্বাসকে জড়িয়ে ধরে। এতো অবাক উচ্ছ্বাস আগে কখনো হয় নি। রোদসী সাধারণত এমন কাছে কখনোই আসে না। হাতে গোনা দুই কি একবার এসেছে। তাহলে রোদসীর কি মন খারাপ? এদিকে রোদসীর মনে চলছে দ্বিধাদ্বন্দ্বের পাহাড়। সে ঠিক কি সিদ্ধান্ত নিবে সে এখনো ঠিক করতে পারে নি। মস্তিষ্ক বলে চলে যা, মন বলে থেকে যা। ও তোকে অনেক ভালোবাসে। রোদসী কি করবে বুঝতে না পেরে কান্না করে দেয়। ওর হঠাৎ এমন কান্না করায় উচ্ছ্বাস হকচকিয়ে উঠে রোদসীর মুখ ধরে নিজের সামনে এনে জিজ্ঞেস করে,

“কি হয়েছে তোমার? কেউ কিছু বলেছে? আমি কি কোনো ভুল করেছি? কি হয়েছে আমাকে বলো?”

রোদসী কোনো জবাব না দিয়ে আবারও উচ্ছ্বাস কে জড়িয়ে ধরে। যেমন উচ্ছ্বাসের শরীরের মধ্যে এই নরম শরীরটা মিশে যেতে চাচ্ছে। এতো উচ্ছ্বাসের ভালোও লাগলেও আবার চিন্তিত হয়। উচ্ছ্বাস ওভাবে জড়িয়ে ধরে চুপ থেকে রোদসীর মাথায় হাত বুলাতে থাকে। কিছুক্ষন পর কান্না কমে আসলে উচ্ছ্বাস রোদসীকে ডাক দেয়,

“রোদসী।”

সাধারণ উচ্ছ্বাস রোদসীকে এমন করে ডাকে না তবে হঠাৎ এমন ডাকায় আবারো রোদসীর ভয় হয়। উচ্ছ্বাস সব বুঝে যায় নি তো? তবুও নিজেকে সামলে “হু” বলে।

উচ্ছ্বাস কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে,

“আমার একটা ছোটো রোদসী চাই।”

রোদসী ভরকায় উচ্ছ্বাস হঠাৎ চাওয়া এমন আবদারে। রোদসী কিছু বলার আগেই উচ্ছ্বাস রোদসীকে কোলে তুলে নেয়।

———

আজকে আবিদ উচ্ছ্বাসদের বাসায় এসেছে কিছু কাজে। রাত হয়ে যাওয়ার তাকে আর ফিরতে দেয়া হয় নি। রাতে বারান্দায় আবিদ বৃষ্টিকে পিছনদিক থেকে জড়িয়ে দাড়িয়ে ছিলো। হঠাৎ বৃষ্টি আবিদকে ডেকে ওঠে,

“আবিদ?”

“বলো।”

“আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে কি যেন একটা খারাপ ঘটবে।”

“সেটা কেনো মনে হচ্ছে?”

“জানিনা। তবে মন কেমন জানি করছে।”

“তেমন কিছু না। তুমি এখনো আমরা প্রেম করছি টাইপ ফিল পাচ্ছো তাই ভয় পাচ্ছো।”

এটা বলেই আবিদ হেসে উঠলো। তবে বৃষ্টি মনে স্বস্তি পেলো না। তার মন বলছে কিছু একটা খারাপ হবে। কি সেই খারাপ? কি বিপদ আসতে চলেছে?

——–

মাঝরাতে রোদসী উঠে রেডি হয়। বেডর পাশে চোখ যেতেই দেখে গ্লাসটা এখনো ওভাবেই রয়েছে। রোদসী ওই পানি দিতে ভুলে গেছে। সে ব্যাগ নামালো অবশ্য ব্যাগ আগেই প্যাক করা ছিলো। সে রুম থেকে বের হবার আগে পুরো রুমটায় একবার চোখ বোলায়। ফিরে এসে উচ্ছ্বাসের কপালে একটা চুমু খেয়ে আবারো চুপিচুপি ঘর থেকে বের হয় যায়। রুম থেকে বের হয়ে দেখে সব লাইট অফ করা। তা দেখে রোদসী স্বস্তি পায়। সে দ্রুত সিড়ি দিয়ে নিচে নামে। ড্রইংরুমে মিসেস বিপাশা বেগম ঝিম মেরে বসে আছে। তাকে দেখে রোদসী তার সামনে যেয়ে দাঁড়ায়। বিপাশা বেগম রোদসীর অপেক্ষাই করছিলো। তাই ওকে দেখে চোখ তুলে তাকায়। তারপর দাঁড়িয়ে আশে পাশে তাকিয়ে দেখে বলে,

“এতো দেড়ি করলে কেনো? কখন থেকে বসে আছি। শোনো,”

এই বলেই তার নজরে যায় রোদসীর চুলের দিকে যার থেকে এখনল টুপটুপ করে পানি পড়ছে।

“বুঝেছি দেড়ি কারণ কি। সে যাইহোক শোনো, এই কাগজে ঠিকানা লিখা আছে এটা আমার দূর সম্পর্কের ভাইয়ের বাড়ি। আমি বলে দিয়েছি তুমি যাবে। আর এই খামে কিছু টাকা আছে কাজে লাগবে তোমার রেখে দেও।

এই বলেই সে কাগজ আর খাম বাড়িয়ে দিলো। তারপর আশেপাশে সতর্ক দৃষ্টিতে দেখে বলে,

“উচ্ছ্বাস টের পাইনি তো? আর একটা কথা সিম টা ভেঙে ফেলো। নতুন সিম নিও। এখান তারাতারি বেড়িয়ে পড়ো একটু পড়ই ভোরের আলো ফুটবে।”

রোদসী একটু লজ্জাবোধ করলো তবুও নিজেকে সামলে “হু” বলে বের হয়। তারপর দরজার কাছে যেয়ে বলে,

“আপনার দরজা লাগাতে হবে না। আমাকে বাড়িতে না পেয়ে, আবার দরজা লাগানো দেখলে সবাই সন্দেহ করবে যে বাসারই কেউ-ই আমাকে পালাতে সাহায্য করছে। আমি এইসব ঝামেলা চাই না।”

বিপাশা বেগম কাষ্ঠ হাসলো তারপর বললো,

“ঠিক বলেছো। আমার এ ব্যপারটা একদম মাথা থেকে চলেই গেছিলো। ভাগ্যিস তুমি মনে করিয়ে দিলে না হলে কি একটা ভয়ংকর কান্ড হতো। যাক ভালোয় ভালোয় যাও তো।”

রোদসী কিছু না বলে বের হয়ে যায়। আর বিপাশা বেগম দরজায় দাড়িয়ে শয়তানি হাসি দেয়, আর মনে মনে বলে,

“এইবার শুধু যেভাবে প্লান করেছি সেভাবেই চাল দেবো। খালি রানীকে পুরোপুরি হাতে পেয়ে নেই। আহা! এই ভাগ্য নিজে হেটে আমাকে ধরা দিলো বুশ্বাসই হচ্ছে না।”

এসব বলেই হেসে আশেপাশে সতর্ক দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করে নিজের রুমের দিকে রাওনা হলো। রোদসী রাস্তায় এসে নামতেই ফজরের আযান শুরু হয়। এখান থেকে স্টেশন পর্যন্ত যেতে হবে রোদসীর তাই সে যতদ্রুত সম্ভব শাড়ি ধরে লাগেজ নিয়ে এগুচ্ছে। বুকের মধ্যে ঢিপঢিপ করছে যদি ধরা পরে যায়?

——–

হঠাৎ বিছানার পাশে হাত পড়তেই উচ্ছ্বাস হাত বুলায়। হাতি রেখে দেখে পাশে কেউ নেই। মস্তিষ্ক সচল হতে কেয়েক সেকেন্ড সময় লাগে। আসল ঘটনা বুঝতে পেরেই উচ্ছ্বাস উঠে বসে আশে পাশে তাকায়। রুমের দরজা হাট করে খোলা। আর বারান্দায় তাকিয়ে দেখে সবে ভোরের আলো ফুটেছে। উচ্ছ্বাস হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থাকে তারপর দ্রুত উঠে শার্টের বোতাম লাগাতে লাগাতে রুম থেকে বের হয়ে দেখে সব রুম এখনো অন্ধকার। সে দ্রুত নিচে নেমে দেখে বাড়ির সদর দরজাও খোলা। ঘটনা কি ঘটেছে তা বুঝতে সময় লাগলো না উচ্ছ্বাসের। মনে হলো মাথায় ধপ করে আগুন ধরে গেলো। সে রুমে যেয়ে সর্বপ্রথম রোদসীর নাম্বারে কল দেয়। নাম্বার অফ বলে। এতে আরো রাগ বাড়তে থাকে। তবুও রাগটা নিয়ন্ত্রণ করে রেদোয়ানকে কল দিয়ে। ভোর বেলায় উচ্ছ্বাসের কল পেয়ে হরবরিয়ে উঠে বসে রেদোয়ান। উচ্ছ্বাস শুধু বলে যদি রোদসী তাদের বাসায় যায় তাহলে যেন উচ্ছ্বাস কে ইনফর্ম করে। রেদোয়ানের এই ব্যাপার কিছুই মাথায় ঢোকে না তবুও সে আচ্ছা বলে কল রেখে ভাবনায় পড়ে যায় রোদসী গেলো কোথায়? তাও এতে সকালে!!

——–

উচ্ছ্বাস বাসার সবাইকে ডাকাডাকি করলে সবাই জানায় কেউ এ ব্যপারে কিছু জানেনা। মিসেস বিপাশা এককোনায় চুপটি করে দাড়িয়ে আছে। সে ভাবেনি এতো তারাতারি উচ্ছ্বাসের ঘুম ভাঙবে। ছেলেটাও হয়েছে বাপের মতো বাপ সারাদিন ঊর্মিলা ঊর্মিলা করতো। এখন ছেলেটা রোদসী রোদসী করে। বিপাশা বেগমের চিন্তা হচ্ছে যদি রোদসী বেশি দূর যেতে না পারে। আর উচ্ছ্বাস ওকে ধরে ফেলে। মেজাজ খারাপ হচ্ছে বিপাশা বেগমের তবুও সে কিছুই জানেনা ভাব নিয়ে এক পাশে দাঁড়িয়ে রইলো। আবিদ সামনে এসে বললো,

“স্যার, না ভাইয়া। আমাদের উচিত ভাবীকে খোজঁ করার এখনই খোঁজ করলে হয়তো পেতেও পারি। এমনও হতে পারে ভাবী বেশি দূর এখনো যেতে পারেনি।”

উচ্ছ্বাস আবিদের মুখের দিকে তাকায়। উচ্ছ্বাস চোখ লাল হয়ে আছে তা দেখে আবিদ চুপ হয়ে যায়। এদিক মিসেস বিপাশা বেগম বিরক্ত হয়। আবিদকে কে বলছে উচ্ছ্বাস কে এসব বলার যত্তসব। এসব ভেবেই নাক-মুখ কুচকে।

——-

রোদসী মাত্র স্টেশনে এসে নামলো। রাস্তায় অনেক জ্যাম ছিলো যার জন্য এতো দেড়ি হলো। স্টেশনে যেয়ে জানতে পারলো পরবর্তী বাস আবার ১২ টায়। এটা শুনে রোদসী মনে মনে ভয় পেলো যদি উচ্ছ্বাস এসে যায়। এতো রিস্ক নিয়ে এতো দূর এসে এখন যদি ধরা পড়ে তাহলে কি হবে তা ভেবেই হাত পা ঠান্ডা হয়ে এলো। এতোক্ষণে নিশ্চিয়ই রোদসী পালিয়েছে সবাই যেনে গেছে। রোদসী শান্ত করার জন্য চোখ বন্ধ করে একটা লম্বা নিঃশ্বাস টানলো তারপর আশে পাশে তাকিয়ে একটা দোকানে গেলো সেখান থেকে একটা ঠান্ডা পানির বোতল আর কিছু খাবার নিলো। সাথে একটা সিম কিনলো। সিম একটিভেট করে মিসেস বিপাশা বেগম কে মেসেজ করে দিলো। তারপর স্টেশনের বেঞ্চিতে যেয়ে বসলো। আশেপাশে তাকালো রোদসী, এভাবে একা কখনো কোথাও যাওয়া হয় নি তাই ভয়ভয় করছে। সাথে উচ্ছ্বাসের ভয় তো আছেই। রোদসী একটু ভাবলো রুহিকে কল দিবে পরে আবার ভাবলো যদি উচ্ছ্বাস যেনে যায় এটা ভেবে আবারও চুপ করে বসে গাড়ির অপেক্ষা করতে থাকলো।

——

রুহির নাম্বারে একটা আননোন নাম্বার থেকে দুটো কল এসেছে। এতো চিন্তার মাঝে আননোন কল রিসিভ করার আগ্রহ পেলো না। তৃতীয়বার কল আসতেই কি মনে করে কলটা সে রিসিভ করলো।

“আসসালামু আলাইকুম। কে বলছেন?”

…….

“আরে কে? কথা বলছেন না কেনো?”

……

“ভাই আপনার আজাইরা সময় থাকতে পারে। তবে আমার নেই। এক চিন্তায় বাঁচি না। এখন কল দিয়ে চুপ করে বসে আছে। কল রাখেন তে আর কল দিবেন না।”

এই বলেই কল কাটতে নিবে তখনই ওপাশ থেকে একটা মেয়ের রিনরিনে কথার আওয়াজ ভেসে আসলো,

“রুহি!”

“আপু।”

রুহি ভীষণ আবাক হয়। তারপরও কথা বলে,

“আপু কই তুই? তোকে বাসার সবাই খুঁজছে। তোকে না পেয়ে উচ্ছ্বাস ভাইয়ের অবস্থা পাগল প্রায়। কই তুই?”

“থাম, বলছি। আমি পালাচ্ছি। আমি এখন সায়েদাবাদ ১২ টায় বাস।”

রুহি ঘড়ির দিকে তাকালো এখনো ১ঘন্টা বাকি। তারপর জিজ্ঞেস করলো,

“তোর সাথে কে? আর কই যাবি।”

“আমি একাই সাথে কেউ নেই। চট্টগ্রাম যাচ্ছি।”

“মানে? ওখানে কেনো? আর কার কাছে যাচ্ছিস? আর পালাচ্ছিস-ই বা কেন?”

“জানিনা কোথায় যাচ্ছি তবে পালাচ্ছি। রুহি মাহাদী মানষিক ভাবে অসুস্থ। দিনদিন তার সন্দেহ বেড়েই চলেছে। আমি আর নিতে পারছি না। তাই পালাচ্ছি। যাইহোক রাখ। কবে দেখা হয় জানিনা। সাবধানে থাকবি। সবার খেয়াল রাখবি।”

আর ভাইয়ার?

রোদসী চুপ হয়ে গেলো। রুহি হাসলো। ওপর ওপাশ থেকে রোদসী কলটা কেটে দিলো।

রুহি এবার পাশে থাকায়। তার আশে পাশে সবাই বসে ছিলো। সবার মুখে অবাক হবার ছাপ স্পট। উচ্ছ্বাস একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে কাউকে কল দিলো।

—–

হাই আমি শব্দ। এই সিট টা আমার ছেড়ে দিলে ভালো হতো।

রোদসী মুখ তুলে তাকায়। উচ্ছ্বাসের বয়সী একটা ছেলে। মুখ হাসিহাসি করে রোদসীর দিকে তাকিয়ে আছে। রোদসী হঠাৎ ছেলেটাকে এভাবে কথা বলতে দেখে চমকে উঠলো তারপর নিজেকে ধাতস্থ করে সরে জানালার পাশের সিটে যেয়ে বসলো।

শব্দ বসে রোদসীর দিকে তাকিয়ে আবার হাসে। তারপর বলে,

“কোথায় যাবেন?”

“জানি না।”

“জানেন না? গুড তবল এটা তো চট্টগ্রামের বাস।”

“হু”

শব্দ আর কথা না বলে সামনে তাকালো। তারপর পকেট থেকে ফোন বের করে কিছু একটা টাইপ করে কাউকে পাঠালো মনে হলো। ফোন রেখে আবারো রোদসীর দিকে তাকিয়ে বললো,

“একা যাচ্ছেন?”

“হু”

“একা একটা মেয়ে এতদূর যাচ্ছেন? আবার কৌথায় যাচ্ছেন তাও জানেন না। ইন্টারেস্টিং।”

এবার রোদসী বিরক্তমুখ করে শব্দের দিকে চাইলো। তারপর বললো,

“তাতে আপনার কি? আপনার এতো সমস্যা কি?”

“সমস্যা নেই। তবে আপনাকে দেখে আমার ছোটো বোনের কথা মনে পড়লো।”

এটা বলেই শব্দ চুপ হয়ে গেলো। রোদসী শব্দের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলো। কেনো জানি মনে হলো ওই মুখে একটা বেদনার ছাপ। রোদসীর মাথায় আর একটা চিন্তা জেঁকে বসলো। যেখানে যাচ্ছে সেখানে যেতে পারবে তো? যদি উনারা খারাপ লোক হয়। যদি খারাপ কিছু হয় রোদসীর তাহলে নিজেকে মাফ করতে পারবে তো? এসব ভাবতে ভাবেতে চোখ বুঝলো রোদসী। তারপর???

—–

রোদসীর যখন চোখ খুললো তখন নতুন একজায়গায় নিজেকে আবিষ্কার করলো। বুকটা ধক করে উঠলো। বাসার সবার কথা মনে পড়লো। সবশেষে! সবশেষে উচ্ছ্বাসের কথা মনে পড়লো। তাহলে সে কোথায়? কে এনেছে তাকে এখানে? ওই বাসে পাশের ছিটে বসা ওই ছেলেটা কি যেনে নাম বললো? শাদ্ধ? না শব্দ? কি জানি নাম? হ্যাঁ শব্দ। ওই ছেলেটা তাকে এখানে এনেছে? তাই বুঝি ওভাবে অপরিচিত মেয়ের সাথে সেধে কথা বলছিলো। কি চাই ওর? কেনো আনলো তাকে? আচ্ছা তাকে কি বিক্রি করে দিবে? নাকি পাচার করে দিবে? রোদসী আর ভাবতে পারলো না। সে স্বশব্দে কান্না করে দিলো।

চলবে……

ভুলত্রুটি ক্ষমা মার্জনীয়। আজকে ব্যস্ত ছিলাম সাথে যথেষ্ট বড় পর্ব দিয়েছি। তাই অবশ্যই মন্তব্য জানাবেন। ধন্যবাদ 🤍

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here