#পূর্ন__তিথি
লেখনীতে:নুসরাত সুলতানা সেঁজুতি
(২১)
রান্নাঘর থেকে এক গ্লাস গরম দুধ নিয়ে বসার ঘরে ঢুকলেন সুচিত্রা।মেয়ে তখন টেবিলে বসে মোটা বইয়ের পাতা ওল্টাতে ব্যাস্ত৷ সুচিত্রা গ্লাসটা টেবিলের ওপর রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ালেন।পড়নে সুতির থ্রি-পিস তার।ওড়নার আঁচলে কপালের সুক্ষ্ণ ঘাম মুছে বসলেন মেয়ের পাশে।খানিকক্ষণ চেয়ে দেখলেন মেয়েকে। তিথি বড্ড স্বাভাবিক ভাবে পড়ছে!কে বলবে এই মেয়ে আদিত্যর বিয়ে হওয়ায় কতটা কেঁদেছিলো! কতটা আহাজারি করছিলো হাসপাতালে, বাচ্চাটার অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু তে! সুচিত্রা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। এত সহজে নিজেকে সামলে নেয়ার ক্ষমতা হয়ত তার মেয়েরই আছে। নাহলে সেওতো, সংসার ভাঙার বেদনায় বছর খানেক চোখ ফুলিয়ে রেখেছিলো।আচ্ছা, প্রত্যেকটা মেয়েরই কি এমন হওয়া উচিত নয়? সুচিত্রা নিজেই ভাবলেন । পরমুহুর্তে প্রশ্ন ছুড়লেন,
‘ সোনু! তুই কি ব্যাস্ত?
তিথি বইয়ের দিকে চেয়ে থেকেই উত্তর দেয়,
‘ না। কিছু বলবে?
সুচিত্রা ঠোঁট কাঁমড়ে কিছুক্ষন ভাবলেন।এই সময় কথাগুলো বলা কি যুক্তিযুক্ত হবে? নাকি পরে বলবে? মা-কে নিশ্চুপ দেখে তিথি নিজেই বলল
‘ কি বলবে বলোনা!
সুচিত্রা মিনমিনে স্বরে বললেন,
‘ তন্ময়ের মা আজ আমায় তোদের বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন!
তিথির হাত থেমে গেলো।স্থির হলো কিছু সময়। চোখ তুলে তাকালো মায়ের দিকে। তবে কি এই জন্যেই তুষার বলেছিলো ওই কথা ? তিথি চোখে মুখে প্রচন্ড জিজ্ঞাসা নিয়ে বলল ,
‘ তুমি কি বললে?
সুচিত্রা ব্যাস্ত কন্ঠে বললেন,
‘ আমি আবার কি বলব? তোর মতামত না নিয়ে কিছু বলা ঠিক হবেনা ভেবে কিছু বলিনি।
তিথি হাফ ছেড়ে বলল,
‘ ভালো করেছো। আন্টি কি বললেন?
এ পর্যায়ে সুচিত্রা শুভ্র হেসে বললেন,
‘ সময় দিয়েছেন ভাবতে।বলেছেন কোনো জবরদস্তি নেই।মহিলা ভীষণ ভালো।
তিথি মায়ের হাসিমুখটা দেখলো৷ পরমুহূর্তে ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে বলল
‘ তোমার কি মনে হয় মা? আমার কি মতামত হওয়া উচিত?
সুচিত্রা অবাক হয়ে বললেন,
‘ আমি কি জানি? তোর জীবন তুই ভালো বুঝবি।
তিথি স্মিত হেসে বলল,
‘ একবার তো নিজের জীবন এর ভালো করতে গেলাম।উল্টে কি হলো? সে জীবনে আগুন লেগে ঝলসে গেলো সুখ। তোমার কি ধারনা, আবার নতুন করে জীবনটাকে জ্বালানো প্রয়োজন?
সুচিত্রা কিছুক্ষন চুপ থেকে বললেন,
‘ যদি একজন সুবিবেচক হিসেবে আমার মতামত চাস,তবে বলব তন্ময়কে বিয়ে না করতে।কারন সে তোর জীবনের অপ্রিয় সত্য গুলো জানে।আজ আবেগে ভেসে তোকে বিয়ে করলেও দুদিন বাদে যখন স্বামী স্ত্রীর কলহ তৈরি হবে তখন এই খোঁটা সে দেবেই। কেন দেবেনা? সেওতো মানুষ! সেতো স্বর্গের দূত নয়! অন্যের সন্তান গর্ভে নেয়া,তার সাথে শারিরীক সম্পর্কে যাওয়া সব কিছু , সব কিছু তার জানা। একদিন না একদিন কথা তো উঠবেই। তন্ময় তো আর জানেনা, আদিত্য মিথ্যে বিয়ে দিয়ে তোকে বোঁকা বানিয়েছে। আসলে কি জানিস সোনু, না জেনে বিষ পান যতটা সহজ,জেনশুনে বিষ পান ততটাই অসাধ্যের। তাছাড়া নির্মলা দেবী,উনিও হয়ত কিছুই জানেন না এ ব্যাপারে। কেউ সব সত্য জানার পর এমন মেয়ে ঘরে তুলতে চাইবেনা। আর যদি না জেনেও তোকে নিতে চায় তুই সারাজীবন মনে মনে ছোট হয়ে থাকবি । আমি চাইনা আমার মেয়ে কারো কাছে এমন নিঁচু হয়ে থাকুক।
এটুকু বলে সুচিত্রা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।তিথি তখন মন দিয়ে কথা শুনছে।সুচিত্রা আবার বললেন,
আর যদি একজন মায়ের মতামত শুনতে চাস, তবে বলব,
আমি চাই তোর জীবন টা স্বাভাবিক হোক।আদিত্য থেকে বেরিয়ে নিজের পরিচিতি হোক। সঠিক কেউ, যে তোকে ঠকাবেনা, দুঃখ দেবেনা তার হাত ধরে বাকিটা জীবন পার কর। এদিক থেকে তন্ময় খুব ভালো ছেলে।তোর সব থেকে খারাপ সময়ে সাথে ছিলো,এখনও আছে। হ্যা বলবনা সে নিঃস্বার্থ ভাবে সাহায্য করছে, এখানে স্বার্থ একটা অবশ্যই আছে,অার সেটা হলো ও তোকে ভালোবাসে।তবে যে কোনো মা-ই চাইবে ওমন সুশীল,ভদ্র ছেলের সাথে মেয়ের জীবন জড়াক।ওমন ভালো মনের মানুষ শ্বাশুড়ি হোক,যাতে মায়ের অভাব বোধ না হয় কখনও। একটা ভরা সংসার পাক তার মেয়ে।
তিথি একটু হাসলো।প্রতুত্ত্যর করলোনা।সুচিত্রা তিথির হাত ধরে বললেন,
‘ সত্যি করে বল তো,আদিত্য কে কখনও ভুলতে পারবি?
তিথি সহজ কন্ঠে বলল,
‘ ভুলতে চাইনা মা,অন্তত ঘৃনা করার জন্যে হলেও ভুলতে চাইনা।
‘ ভালোবাসার মানুষ কে ঘৃনা করা এতই সহজ?
এত বছরেও পারিনি তোর বাবাকে ঘৃনা করতে।
তিথি মৃদূ হেসে বলল,
‘ বাবা আর আদিত্য এক নয়।বাবা তোমায় ঠকায়নি, তোমার গর্ভের সন্তানকে এবোরশন করতে বলে বিয়ে করেনি অন্য কাউকে। তোমাকে ভুল বুঝে দূরে সরে থাকলেও আজও তোমার অপেক্ষায় নতুন কাউকে জায়গা দেয়নি জীবনে।
সুচিত্রার মুখটা হঠাৎই কেমন ফ্যাকাশে হয়ে এলো। আস্তে করে উদাস কন্ঠে বলল,
‘ কি করব রে সোনু? ভাঙা সংসার জোড়া লাগানোর চেষ্টা করতে নেই। ভাঙনের দাগ কখনও মোছেনা যে!
পরমুহূর্তে উদ্বেগ নিয়ে বলল,
‘ আদিত্য তোর সাথে যা করলো তন্ময় ও যদি একি কাজ করে? আমার ভয় লাগে রে! বিয়ে হলেই সমস্যার সমাধান হয়না।উল্টে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
তিথি শান্ত ভাবে বলল,
‘ মা! আদিত্য আমায় ঠকিয়েছে।প্রতারিত করেছে আমায়। আমার বিশ্বাস নিয়ে খেলেছে। তন্ময়ের সাথে ওর তুলনা দিওনা। তন্ময় ভীষণ ভালো ছেলে।ভালো না বাসি তাই বলে ওকে খারাপ বলব কেন?
সুচিত্রা ভাবতে বসলেন। বিষয় টা চোখে পরলে তিথি সরল হেসে বলল,
‘ এসব নিয়ে ভেবোনা।বিয়ে, সংসার ছাড়াও মেয়েরা বাঁচে। আগে পরীক্ষা হোক, এগুলো নিয়ে পরে কথা বলব। দোকানে গেলেনা আজ?
সুচিত্রা হাতের আঙুল কঁচলে বললেন,
‘ আজ ভালো লাগছেনা। ভাবলাম তোকে একটু সময় দেই!নে দুধ টা খেয়ে নে ঠান্ডা হলে ভালো লাগবেনা।
তিথি শুভ্র হেসে মায়ের কোলে শুয়ে পরলো। বই মুখের সামনে উঁচিয়ে ধরে বলল,
‘ একটু পরে খাবো। তুমি মাথায় হাত বুলিয়ে দাও।
সুচিত্রা লম্বা শ্বাস টেনে মেয়ের চুলে আঙুল ছোঁয়ান।নাক কুঁচকে বলেন,
‘ চুলের কি অবস্থা।তেল দিসনা নাকি? এই বয়সে আমার মাথায় যা চুল আছে তোর তো তার অর্ধেক ও থাকবেনা।
তিথি কিছু বললনা। বই পড়ায় মন দিলো। কিন্তু ঘটনা ঘটলো তখন যখন ঘরের সামনে থেকে ফুল স্পিডে বাইক ছুটে যাওয়ার শব্দ এলো কানে। মা মেয়ের দুজনেই এ নিয়ে ভ্রুক্ষেপহীন । রাস্তা থেকে তো কত বাইক, সাইকেল যায়। সেই ভাবনাতেই জানা হয়না,কখনও এতে তাদের অতি পরিচিত কেউও থাকতে পারে!
____
বাতাসের বেগে বাইক চালাচ্ছে আদিত্য। রগেরগে রাগ উত্তপ্ত জলের মত ফুটছে। ছুটছে দমফাঁটা কষ্টরা। সকালে তিথিদের বাসায় আসতে নিয়েও আসেনি। যত্র মনে পড়ে যায় আজকে শুক্রবার।সুচিত্রার স্কুল নেই এদিন। আদিত্য তাই চেয়েও আসেনি। ওইদিন সুচিত্রা তাকে অনেক ছোট বড় কথা শুনিয়েছিলেন। সেজন্যে আর তার মুখোমুখি হতে চায়নি আদিত্য। আবার চেয়েওছিলো তিথির সাথে একান্তে কথা বলতে।তবে সন্ধ্যের পর দোকান সামলাতে যান সুচিত্রা। সেই অপেক্ষার প্রহর গুনতে ব্যাস্ত ছিলো আদিত্য। ভাগ্যিশ তখন না এসে এলো এখন।নাহলে তিথির মুখ থেকে অপ্রিয় কথাগুলো যে অজানা থেকে যেত।
” তিথি এতটাই ঘৃনা করে তাকে? এতটা অপরাধি ভাবে? সে এখন এতই নিকৃষ্ট যে তন্ময়ের সাথে তুলনার কথাও মাথায় আনতে চায়না তিথি! এই ছিলো তার এত পাগলামি, এত ভালোবাসার প্রতিদান? দরজার বাইরে থেকে কথাগুলো শুনেই তার কান পুঁড়ে যাচ্ছিলো,সেখানে তিথি ছিলো কতটা নিরুদ্বেগ!
তিথির মাও চাইছেন তন্ময়ের সাথে বিয়ে হোক! অথচ এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তিথিতো একবারও আপত্তি জানালোনা,সরাসরি বললনা,
‘ না,আমি আদিত্য ছাড়া আর কারোর নই। আদিত্য আমার স্বামী।
বলবে কি করে? সে যেমন তিথিকে স্ত্রী বলে মেনেছে হয়ত তিথি মানেনা। যে বিয়েতে মন্ত্রপাঠ নেই,পুরোহিত নেই,নেই সম্প্রদায়ন, কোন পাগল সেই বিয়েকে ভালোবেসে মানতে যাবে? তার মত উন্মাদ ছাড়া কেউ নয়। যেখানে মনের মানুষ মনের শান্তি পিষে ফেলল,সেখানে ঘরের মানুষের সাথে অশান্তি ত করে কি লাভ? কোনও লাভ নেই।
____
রাত আটটা কি ন’টা হবে।সমিরন ঘরে নেই। শকুন্তলা ঠাকুর ঘরে। পুতুল রাতের রান্নায় ব্যাস্ত।আদিত্য সদর দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকে দরজাটা লাথি মেরে আটকালো আবার। শব্দটা শকুন্তলা শোনেননি হয়তো।তবে শরীর কেঁপে উঠলো পুতুলের। রান্নাঘর থেকে মাথা ঝুঁকিয়ে দেখলো আদিত্য নিজের ঘরের দিকে হেটে যাচ্ছে। পুতুল ভ্রু কোঁচকালো। এই লোক কখন বাইরে যায় কখন ফেরে কেউ জানেনা! আদিত্যর মেঘের মত কালো মুখ স্পষ্ট চোখে বিঁধলো তার। তরকারি হয়ে এসেছে।পুতুল চুলা বন্ধ করে দিয়ে,পা টিপে টিপে আদিত্যর রুমের সামনে এসে দাঁড়ালো। আস্তে করে পর্দা সরিয়ে দরজা আঁকড়ে উঁকি দিলো রুমের ভেতর। আদিত্য কাঁদছে, হাটুর ওপর দুহাত ঠেস দিয়ে মুখ লাগিয়ে কাঁদছে। মাঝে মাঝে হালকা শব্দ আসছে কানে। পুতুলের বিচক্ষন মস্তিষ্ক বুঝে ফেলল তাৎক্ষণিক। আদিত্য আঙুল দিয়ে চোখ মুছছে।স্বামীর জলমাখা মুখ টা একটুও ভালো লাগলোনা পুতুলের। লোকটার সুন্দর চেহারায় অশ্রু গুলো মানাচ্ছেনা। কিন্তু হঠাৎ কাঁদছে কেন? কি হলো? জানতে হবে। ভয় কে জয় করে বুকে থুথু ছিঁটিয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকলো পুতুল। ঢোক গিলে কাঁপা কাঁপা হাত বাড়িয়ে আদিত্যর কাঁধে রাখলো। স্পর্শ পেয়ে মুখ তুলল আদিত্য। হঠাৎ মনে হলো সামনে দাঁড়িয়ে আছে তিথি। তিথির স্নিগ্ধ মুখটা ভাসছে চোখে। পুতুল মলিন কন্ঠে শুধালো,
‘ কি হয়েছে আপনার? কাঁদছেন কেন? তখনকার ব্যাবহারে রাগ করেছেন? ভুল হয়েছে, আর বলবনা।
আদিত্যর হুশ ফিরলো। না, এটা তিথি নয়। সঙ্গে সঙ্গে মুখটা অন্যদিকে ফিরিয়ে নিলো সে।আদিত্য প্রতিক্রিয়া দেখায়নি, পুতুল মৃদূ সাহস পেয়ে বসলো ওর পাশে। আদিত্যর ডান বাহুটা হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে নম্র কন্ঠে বলল,
‘ আমি আসলে অনেক গরিব ঘরের মেয়ে। জানেনইতো,ভালো কাঁপড় ভালো খাবার সব আপনাদের বাসায় এসেই পাওয়া, আমাদের মাটির ঘর। ইটের ঘর চোখে দেখিনি।তারওপরে আপনাকে প্রথম দেখেই ভালো লেগেছিলো তাই আর কারো কথায় কান দেইনি।তাছাড়া ভেবেছলাম তিথি মিথ্যে বলছে, হয়তো আমার আপনার বিয়ে ভাঙতে ভাঙচি দিচ্ছে। এরকম তো অনেক হয়।বিশ্বাস করুন যদি বুঝতাম ওসব সত্যি আমি আপনাকে কখনোই বিয়ে করতাম না।
আদিত্যর কি হলো জানা নেই।হুট করে ফিরেই পুতুলকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো৷ শব্দ করে কেঁদে ফেলল তারপর ।পুতুল তখন সুযোগ সন্ধানি।আদিত্যর পিঠে মৃদূ হাত বোলাচ্ছে সে। আদিত্যর গায়ের কঁড়া সুবাস গাঢ় ভাবে দখল করেছে নাসরন্ধ্র। সেই সুবাসে হারিয়েছে তার দিক- বিদিক।আরো শক্ত করে আদিত্যর শার্টটা খামছে ধরলো পুতুল। প্রত্যাশিত অনুভূতিরা তখন দোলা দিয়েছে মনে।এতদিনের প্রতিক্ষার সম্ভাব্য অবসান হবে কি আজ?
____
পরের দিন ভোরের আলো ফোঁটার আগেই ঘুম ভাঙলো আদিত্যর। উঠে আবিষ্কার করলো সেই একি দৃশ্য। পাশে অনাবৃত পুতুল আর নিরাবরন সে। কিন্তু আজ আর ভাবান্তর হলোনা।কাল রাতে যা ঘটেছে সব তার ইচ্ছে মোতাবেক, তার মর্জিতে। গম্ভীর মুখমণ্ডল নিয়ে বিছানা ছেড়ে নেমে ওয়াশরুমে ঢুকে পরলো আদিত্য। শরীরে পানির ঝাপ্টা লাগতেই গায়ের বিভিন্ন জায়গায় জ্বলে উঠলো। জানান দিলো পুতুলের নখের আঁচড়ের অস্তিত্ব । আদিত্য চোখ বন্ধ করতেই মনে পরলো সেই রঙিন সকালের কথা, সেই ভোর, তিথিকে সঙ্গে নিয়ে স্নান সাড়ার দৃশ্য। এখনও কেন এমন হচ্ছে? তিথিকে ভুলতে গিয়েও ভুল করেও মনে পড়ছে।তিথিতো তাকে চাইছেনা। একটুও না। তিথি এখন তন্ময়ে মজেছে।তাইতো অতবার অবজ্ঞা করলো তাকে।চড় ও মারলো। আদিত্যর চোখের কোটর ভরে এলো আবার। স্নানের জলের সাথে নির্নিমেষ মিলিয়ে গেলো অশ্রু গুলো।
আধ ঘন্টা স্নান শেষে বেরিয়ে আসে আদিত্য।পুতুল তখনও ঘুম কাঁদা। আদিত্য গায়ে শার্ট জড়াতে জড়াতে খেয়াল করলো বিছানার চাদরে ফোঁটা ফোঁটা রক্তের চিহ্ন। এগিয়ে গিয়ে ঝাঁকি মারলো পুতুলকে।
‘ এই ওঠ!
ঘুমের মধ্যে এমন ধাক্কায় লাফিয়ে উঠলো পুতুল।হকচকিয়ে বলল,
‘ কি, কি হয়েছে? আজ কিন্তু আপনি নিজেই…
আদিত্য মাঝরাস্তায় থামিয়ে দিয়ে বলল,
‘ চাদর ধুয়ে দিয়ে নতুন চাদর বিছাবি। আর কাল রাতে বিছানায় শুয়েছিস ওটাই প্রথম, ওটাই শেষ। যা স্নান সেড়ে নিজের ঘরে যা।
পুতুলের ভয়ার্ত মুখটা এবার কাঠ হয়ে এলো। কাল রাতে আদিত্যর স্পর্শে একটুও ভালোবাসা ছিলোনা। উল্টে এত রাগ জেদ প্রকাশ পেয়েছে যা সেদিন মারধরেও পায়নি। তবুও একটা মেকি আলো উঁকি দিয়েছিলো, ” এই বুঝি আদিত্য তার হলো।কিন্তু এখনও সেই আগের মত ব্যাবহার! এ লোক কি আর ঠিক হবেনা?
‘ হা করে কি দেখছিস? নাম..
আদিত্যর কথায় ধ্যান ভাঙলো পুতুলের। গায়ে চাঁদর জড়িয়ে উঠে পরলো। ততক্ষনে আদিত্য ঘর ছেঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে।পুতুল সেদিকে চেয়ে থাকলো নিষ্প্রান, উদাস চোখে।
চলবে,
এটা গল্প হলেও আংশিক বাস্তব আগেও বলেছি।তাই সব সিনেম্যাটিক হবেনা।আদিত্য কোনো মহাপুরুষ নয় যে নিজেকে এতদিনে নায়িকার জন্যে নিয়ন্ত্রনে রাখবে। যারা আদিত্য পুতুলের মিল চাইছিলেন না তাদের জন্যে বলছি, ওরা স্বামী স্ত্রী, এখানে অবৈধ কিছু নেই নিশ্চয়ই 😊 হ্যা হয়তো তিথিকে ঠকিয়েছে দুজনেই।কিন্তু কথায় আছে ” ন্যাচার অফ রিভেঞ্জ! অপেক্ষা করুন তেমন কিছু হলেও হতে পারে।
রিচেক করিনি।