সূচনা_পর্ব #ভলোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ #Writer_Sumaiya_Afrin_Oishi

0
622

“আ -আ মেরী জান!
ধইরা ধইরা গোস্ত খাননননন
গোস্ত দেখতে টুকটুক,। মুখ করে চুকচুক।
হেই ঘ্যাংগর ঘ্যাংগর চ্যাংটা!”

“সকাল সকাল গান গাইতে গাইতে রেডি হচ্ছে ঐশী। পিছন থেকে চুল টেনে ধরলো তার বড় বোন চৈতী।”

আহহহহ! আপু কি করো? ব্যাথা পাইতো চুল ছাড়ো। বলেই চিৎকার দিলো ঐশী ।

“চৈতী রাগী চোখে তাকালো ঐশীর দিকে। বিরক্তি মুখে নিয়ে বলে উঠলো, এই সকাল সকালে ষাঁ*ড়ের মতো গলা নিয়া গান গেয়ে দিলিতো আমার ঘুমটা নষ্ট করে।বলেই আরো জোরে চুল টান দিলো।”

“ঐশী বুঝলো তার বোন রেগে আছে। তাই কোনমতে চুলটা হাত থেকে ছাড়িয়ে নিলো। এখন ঝগড়া করার একদম মুড নেই তার। তাই চৈতীর দিকে চেয়ে হালকা গাল টান দিয়ে বলে উঠলো”,

“আলেলেে আমার আপু রাগ করো না।আমি গান চর্চা করছিলাম হে হে, বলে হাসি দিলো।”

-চৈতী আর কিছু বললো না, তার ঘুমটা ভেঙ্গে দিলো তার আদুরী ছোট বোন। আজ শুক্রবার ভাবছিলো দেরী করে উঠবে তা আর হলো না।আর কিছু না বলে ওয়াশরুমে গেলো ফ্রেশ হতে।

“এইদিকে ঐশী বোনের যাওয়ার দিকে চেয়ে আবার ও গুনগুন করতে করতে রেডি হচ্ছে। কারণ, আজকে তার বেস্টু মিতুর বোনের গায়েহলুদ। আগামী কাল বিয়ে। তাকে তো যেতেই হবে না হয় মিতু আচ্ছা মতো বকবে, এক মাসে ও আর কথা বলবে না।

“চৈতী ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসলো।ঐশী কে বললো, কিরে সকাল সকাল সং সেজেগুজে কই যাচ্ছিস?”

“আমি মোটেও সং সাজনি।”
আমি তো নেচারাল সুন্দরী, মুখ বাকিয়ে বললো ঐশী।

“সকাল বেলা দুই মেয়ের চেঁচানো শুনে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে আসলো সানজিদা শেখ।

” কিরে দুই বোন সকালে কি শুরু করলি? বলে উঠলো সানজিদা শেখ।

“ঐশী তার আম্মুকে দেখে হিজাব হাতে নিয়ে ন্যাকা কান্না করে বলে উঠলো,

“আম্মু! আমি আপু কে বললাম আমাকে হিজাব পরিয়ে দেও।আর তোমার মেয়ে আমাকে থা’প্পড় দিয়ে বলে একা একা পড়ে নে। ডাহা মিথ্যা কথা।

” বোনের কথা শুনে বোকা বনে গেলো চৈতী। সানজিদা শেখ রাগী চোখে তাকালো মেয়েদের দিকে। এ আর নতুন কি তার দুই মেয়ে তো সাপ আর বেঁজি । তেজী কন্ঠে বলে উঠলো,

“আমি নাস্তা দিচ্ছি খেয়ে আমাকে উদ্ধার কর। পাঁচ মিনিটের মধ্যে খেতে আয়। বলে চলে গেলো ডাইনিং রুমে।বাধ্য মেয়ের মতো মাথা নাড়ালো দুই মেয়ে।

“নাস্তা করে বেরিয়ে আসলো ঐশী। মা – বোনকে বিদায় জানিয়ে। মিতুর বাড়ি কাছেই বিশ মিনিটের রাস্তা।এই সময়টায় শহরের রাস্তায় কোনো গাড়ি খালি পাওয়া যায় না। গাড়ি না দেখে হাঁটা শুরু করে দিলো। কত মানুষ রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে নিজ নিজ গন্তর্বে।

“ইশ কত দেরী হয়ে গেছে। খাইছে আমাকে মিতু টিতু, আজকে তো আমার কপালে শনি, রবি সব দুঃখ আছে। তারাতাড়ি হাঁট গাঁ’ধি! নিজেই নিজেকে বকতে বকতে হাঁটা শুরু করে দিলো।

“গেটের সামনে এসেই জোরে জোরে হাঁপাতে লাগলো ঐশী। পিছন থেকে অপরিচিত কন্ঠ শুনে, না তাকিয়ে ই বলে উঠলো।

“কেরে জ্বালাইসনা না বা*ল। দূরে যা বহুত জায়গা আছে ঐ দিকে গিয়ে ম*র।
বুঝিনা বাবা এই আজাইরা মানুষ সকাল সকাল কই দিয়ে আসে। এক নিঃশ্বাসে বললো।

“এইদিকে রাফিন জরুরী একটা কল এসেছে। ফোনে কথা বলতে বলতে ঐশীর পাশদিয়ে হেঁটে সামনের দিকে চাচ্ছে। ঐশীর বকবকানি তে কথা শুনতে না পেয়ে বিরক্ত হয়ে পাশে তাকালো রাফিন।
ফোনে থাকা লোকটাকে বললো,পরে ফোন দেই আমি একটু বিজি আছি। বলে কল কেটে দিলো।

“নিজের পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে মাথা তুলে তাকাতেই অপরিচিত একটা মুখ দেখতে পেয়ে ঘাবড়ে গেলো ঐশী ।

“মনে মনে বলে শা*লা কপাল! সকাল সকাল একটা খাম্বা! এখানে কি আর কোনো জায়গা নেই শা* লা খাটাশ। কে এইটা? গরুর মতো চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে কেন! মনে হয় চোখ দিয়ে গিলে ফেলবে। শোন ব্যাটা খাটাশ তোর রনচন্ডির মুড আমি ভয় পাই না হুহু। আমার দিকে তাকিয়ে আছিস না তোর চোখে পোকা কামড়ে দিক, চোখের মধ্যে হিসু করে দিবে পোকা হু। আমি বদদোয়া দিলাম দেখিস আমার কথা আল্লাহ ঠিক শুনবে। আমিন!

“মনে মনেই বললো মুখে বললো না আর! সামনে থাকা লোকটির দিলো এক ধমক।”

“এই স্টুপিট নাকি।মনে মনে কি ভাবো? হু আর ইউ!

“রাফিনের দিকে তাকিয়ে হাত কাচুমাচু করে মুখে বোকা হাসি টেনে ঐশী বললো,

– আসসালামু আলাইকুম! আরে ভাইয়া ভালো আছেন?হিহি, বলে দ্রুত চলে গেলো। মিতুতুু বনু বাঁচা বলে চিৎকার দিয়ে দিলো এক ভোঁ দৌড়।”

-এদিকে রাফিন ঐশীর যাওয়ার দিকে চেয়ে রইলো। তার খুব রাগ হচ্ছে এই মেয়ে তাকে কিছু বলার সুযোগ ই দিলো না।
ম্যাড নাকি! দাঁড়াও মেয়ে তোমাকে তো আমি দেখে নিবো। বলে রাফিন ও পিছনে পিছনে হাঁটা দিলো।

“ঐশী হাঁপাতে হাঁপাতে মিতুর মা কে জড়িয়ে ধরলো, মিতু মনে করে।

“দোস্ত ঐ লোক’টা কে রে? ব্যাটা হনুমান! আর কিছু বলতে নিবে এরই মধ্যে মিতুর আম্মু বললো,

আরে ঐশী আমি তোর আন্টি। আমি মিতু না। তোর কি হলো? এখন আসার সময় হলো।এতো হাঁপাচ্ছিস কেন?”

“ঐশী তাকে ছেড়ে দিয়ে বললো, ওহ আন্টি! আমি মিতু মনে করছিলাম বিশ্বাস করো। এই যে চেয়ার টা ছুঁয়ে বললাম, মিথ্যা বললে এইটা ভেঙ্গে পড়বে দেখো।বলে মৃদু হাসি দিলো।”

-আচ্ছা বাবা বুঝলাম তুই সত্যি বলছিস। যা মিতু ওর রুমে আছে। ওর কাছে যা আমার একটু এই দিকে কাজ আছে। বলে চলে গেলো মিতুর মা জামিলা বেগম।

“ঐশী ও পা বাড়ালো মিতুর কাছে যেতে। হঠাৎ রাফিন এসে সামনে দাঁড়ালো। বুকে হাত বেঁ’ধে বলে উঠলো,

“আরে এই যে ম্যাডাম! কি জানি বলছিলেন আমাকে।”

“কই আমি আবার আপনাকে কি বললাম। আমি তো আপনাকে এই প্রথম দেখলাম। তো আপনি কে নিশ্চয়ই ছেলে পক্ষ, এত সকাল সকাল এসে মেয়েদের সাথে ঝগড়া শুরু করে দিলেন। মেয়ে দেখলেই কথা বলতে ইচ্ছে হয় বুঝি? আর শোনেন আপনারা ছেলেরা তো মেয়ে দেখলেই লাইন মা*রবেন। বাট এই ঐশী কাউকে পাওা দেয়না।রাস্তা মাপো ভাই। ঐ দিকে যা,,,

“বাকিটা আর বলতে পারলো না। তার মধ্যেই রাফিন বললো,

“স্টপ ননসেন্স! এত কথা বলো কেন? ফাজিল মহিলা কোথাকার। এই মহিলাদের কাজই একটা বুঝে কম চিল্লায় বেশী! আর হ্যাঁ আমি তোমাকে পটাতে আসি নাই। আমার তো খেয়ে ধেয়ে কাজ নাই তোমার মতো ভয়ংকর মহিলা কে পটাতে আসবো হুম। বাঁকা হেসে বললো রাফিন।”

“এইদিকে ঐশী রেগে গিয়ে বললো, আরে কি বললেন আমি মহিলা? কোন দিক থেকে আমাকে মহিলা মনে হয় হিম। আমি মহিলা হলে আপনি বুইড়া বেটা। বুইড়া খাটাশ, খরগোশ বুড়ো! আমি নাকি মহিলা আমি কলেজে পড়ি বুঝলে বুড়ো। তাও আমাকে আমার থেকে ছোট ছেলেরা বিয়ের প্রস্তাব দেয় হু। সবাই আমাকে পিচ্চি ডাকে। আর উনি আসছে মহিলা ডাকতে। হু! বলে মুখ বাঁকালো ঐশী!

“বাবাহ্ পিচ্চি নাকি আপনি?”

” এত কথা বলো কেনো তুমি হিম? মুখে এগুলো কি দিছো আটা ময়দা। এই জন্য ই তো ময়দার এত দাম।ঠোঁটে কি রঙিন কাগজের রং দিয়া আসছো ছিঃ! ছিঃ! ঠোঁটে কি মানুষ ওসব দেয় নাকি! নাক ছিটকিয়ে বললো রাফিন।”

“এদিকে তো ঐশী রাগে আকাশ ছুঁই ছুঁই। তাকে অপমান করলো আবার তার লিপস্টিক কে নিয়ে কথা। এটা তো মানা যাবে না, রাগি কন্ঠে বললো,

“এই শুনুন? আমি মোটেও আটা ময়দা দেইনা হুম। আমি এমনি নেচারাল সুন্দরী ওকে। আর আমার লিপস্টিক কে আপনি কি বললেন রং? শুনুন, এই সব লিপস্টিক ব্রান্ডের বুঝছেন। আমি এই যে ঠোঁটে দিলাম যেটা। এটার দাম কত জানেন? ২৬০ টাকা আমি ৩০ মিনিট দামাদামি করে কিনছি বলে ২৫০ টাকা কিনছি। আর আসছে কোথাকার খাটাশ, খবিশ নো নো বুড়া!
আমার লিপস্টিক কে কথা শুনাতে। বলে মুখ বাঁকালো ঐশী।”

“রাফিন ঐশী কথা শুনে হো হো করে হেসে উঠে। কোনো মতে হাসি থামিয়ে বললো,কি ভয়ংকর লিপস্টিক। একদম পেত্নি সুন্দরী তুমি! বলে আবার হাসলো।”

“আর কিছু বলবে এরই মধ্যে রাফিন কে ডাক দিলো তার বন্ধু আরাফ।”

“হেই পেত্নি ভয়ংকর সুন্দরী ! আসছি আমি বলে চলে গেলো রাফিন।”

“এদিকে রাফিনের যাওয়ার দিকে মুখ বাঁকিয়ে রাগে গজগজ করতে করতে মিতুর রুমে চলে গেল ঐশী।
রুমে পা রাখতে গিয়েই দেখতে,,,,,,,,,,,,,,,

#সূচনা_পর্ব

#ভলোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ

#Writer_Sumaiya_Afrin_Oishi

চলবে…..

(আসসালামু আলাইকুম! আমি এই প্রথম গল্প লিখলাম জানিনা আপনাদের কেমন লাগবে। বানান ভুল হলে একটু বুঝে নিবেন। আমার ভুল হতে পারে আমি বাংলা টাইপ করতে পারি না ভালো। আর যে কোনো ভুল হলে আমাকে ধরিয়ে দিবেন।
সবাই শেষ অবধি পাশে থাকবেন 🙂
পড়ে চুপিচুপি চলে যাবেন না। অবশ্যই লাইক কমেন্ট করবেন 🙂
ধন্যবাদ!)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here