ভালোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ #Writer_Sumaiya_Afrin_Oishi #পার্টঃ২৪+২৫

0
201

#ভালোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ

#Writer_Sumaiya_Afrin_Oishi

#পার্টঃ২৪+২৫

-সকাল দশটা হঠাৎ করে গ্যাঞ্জাম পার্টির সকল সদস্য হাজির। মূলত এদেরকে ঐশী ই আসতে বলছে। মিতুর সাথে রাফিন ও এসেছে।
যেহেতু দুই পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই পরিচিত। তাই এদের মধ্যে যাওয়া আসা হয়, পারিবারিক সম্পর্কটা সুন্দর।

-সবাই এসেই হৈচৈ শুরু করে দিয়েছে ইতোমধ্যে । এখন মনে হচ্ছে বিয়ে বিয়ে আমেজ।

-রিয়া রাফিন কে না দেখে ঐশী কে প্রশ্ন করলো,

দোস্ত মা’লটা কই রে? দেখছি না যে? এখানেই তো ছিলো।

বিস্মিত চরম সীমানায় পৌঁছে গেলো রাফিন। ফাঁকা বিষম খেলো! চোখ বড় বড় করে পিছন থেকে রাফিন বলে উঠলো,

হোয়াট! মা’ল!
হোয়াট ডু ইউ মিন বাই মাল!

এই মূহুর্তে রাফিন কে দেখে ফাঁকা ঢোক গিললো রিয়া। বাকি বন্ধুরা ও বিস্মিত হয়ে যায়! আমতা আমতা করছে রিয়া। এরি মধ্যে রবিন পরিস্থিতি সামলাতে এসে বললো,

আরে ভাইয়া ও বলছে মালাটা কই?

ঐশী বাদে বাকি, বন্ধু মহল সবাই সমস্বরে বললো,

হ্যা!হ্যাঁ! মালা-টাই ।

“মালাটা মানে”? কিসের মালা! মালা কোথায় এখানে?

– আআসলে নতুন জিজু আসছে তো তাকে মালা পড়াবো বলে ঐশী কে জিজ্ঞেস করলো মালাটা কই রাখছে। তাই না ঐশী মনি?
চটজলদি জোড়পূর্বক হেসে বললো জান্নাত।
এর কথায় সবাই হ্যা সূচক জবাব দিলো।

“ঐশী ও মাথা ঝাঁকালো”।যার অর্থ হ্যা।

রিয়া এমন বেফাঁসে কথা বলে ঝিম মেরে বসে গেছিলো। এখন যেন নিজের প্রাণ ফিরে পেলো।

রাফিনের মাথা ঝিমঝিম করছে। অদ্ভুত দৃষ্টি বুলালো প্রত্যেকের দিকে। কি ইনসেন্স ফেস করে দাঁড়িয়ে আছে এক একজন। দেখলে মনে হবে এদের মতো ভদ্র দুনিয়াতে আর একটা ও নেই।

– “কি সাংঘাতিক মানুষ এরা! কি ভাবে আমাকে বোকা বানালো। এক একজন ডেঞ্জারাস ডেবিল। আর এদের গ্যাঞ্জাম ও সাংঘাতিক।
কেমন করে কথা ঘুরিয়ে ফেললো, ভাবা যায় এগুলো “।

” ঐশী বারবার আড় চোখে তাকাচ্ছে রাফিনের দিকে।

-রাফিন আর এদের মধ্যে না থেকে দ্রুত ভিতরে চলে গেলো। সবার সাথে কুশল বিনিময় করে ফোন স্ক্রল করতে লাগলো।

-সাইফ বসে বসে আশপাশ করছে, বাবার হাত ঘড়িতে টাইম দেখছে। তার যেন তর সইছেই না।

– এরি মধ্যে সাইফের “মা” এসেছেন। তার সাথে আছে তার বড় ভাই, ভাইয়ের ছেলে দু’জন সিয়াম, সায়েম। সাথে সিয়ামের বউ “আফিয়া” আসছে, সম্পর্কে সাইফের বড় ভাবি হন তিনি।

খুব ছোটো বেলায় সাইফের বাবা মা’রা যান, দুইটা ছেলে রেখে। দুই ছেলেকে আঁকড়ে রেখে বেঁচে আছেন সাইফের মা আফসানা পারভীন।
তারপর থেকেই মামার বাড়িতে মানুষ হয়েছে। অবশ্যই বাসা আলাদা ছিলো।

– চৈতী দরজার পাশে দাঁড়িয়ে বারবার উঁকি ঝুঁকি দিয়ে বুঝার চেষ্টা করছে বসার ঘরে কারা আসছে। সবার সামনে আসতে কিছুটা ইতস্তত বোধ করছে।

– এরিমধ্যে সাইফ বলে উঠলো,
চৈতী তুমি ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন? যাও এটা শাড়ী পড়ে এসো।” মা”তো এখনো তোমাকে দেখেনি জলদি যাও।

– চৈতী চমকে উঠলো, সবার চোখ গিয়ে পড়লো দরজার দিকে, লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে চৈতীর। এভাবে কেউ বলে? চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে নিলো। আফিয়া মুচকি হেঁসে উঠে দাঁড়ালো।

ফুপি আমি যাই। চৈতীকে শাড়ী পড়িয়ে নিয়ে আসি।
সাইফের “মা” কে উদ্দেশ্য করে বললো।

-এভাবেই থাক বাচ্চা মেয়ে এত ভারী সাজসজ্জা সামলাতে পারবে না।

-চৈতী মা ওখানে দাঁড়িয়ে আছো যে? এসো এখানে এসে আমার কাছে বসো। তোমাকে শাড়ি পড়তে হবেনা। তুমি যেভাবে আছো এভাবেই চলবে আমার। তুমি যেমন বরং তেমনই সুন্দর! আলাদা করে কৃত্রিম সাজসজ্জার দরকার নেই। খুব মিষ্টি করে বললো তিনি।

-চৈতী কেমন লজ্জা লজ্জা পাচ্ছে। ধীরপায়ে এসে বসলো সবার সামনে।

– মাশাআল্লাহ! ভারী মিষ্টি-মেয়েতো। আমার ছেলের পছন্দ আছে, বলে কপালে চুমু খেলো আফসানা পারভীন।

– সাইফ ভাব নিয়ে বললো, দেখতে হবে না ছেলেটা কার। তোমার ছেলে বলে কথা আম্মু।

সবাই হেঁসে দিলো সাইফের কথা শুনে।

– ঐশী সহ বাকি সবাই চুপচাপ বড়দের কথা শুনছে। বেখেয়ালিতে ঐশীর ওড়নাটা সামান্য সরে গিয়েছে।

-একজোড়া লোভনীয় দৃষ্টি বারবার তাকাচ্ছে ঐশীর দিকে। চোখে মুখে রাজ্যের ক্ষুদা, কি হিংস্র দৃষ্টি।

– রাফিনের শরীর রাগে জ্বলে উঠলো। এই মেয়েটা এত বেখেয়ালি কেন? হিংস্র জানো’য়ারের যে ভরপুর এই শহরটা তা কি বুঝে না! ভালো মানুষের আড়ালে লুকিয়ে আছে হিংস্র রুপ। এরা সুযোগ পেলেই লুফে নেয়

-সবার সামনে সিনক্রিয়েট করতে চায় না, তাই চুপ আছে রাফিন। অন্য কোথাও হলে চোখ দু’টো তুলে নিতো। এই ছেলেটাকে মোটেও সুবিধার মনে হয়না রাফিনের কাছে। যখন থেকে এসেছে তখন থেকেই ঐশী কে ফলো করছে। বিষয়টি মোটেও ভালো লাগছে না রাফিনের, কোনো মতে দাঁতে-দাঁতে চেপে হজম করছে।

-ঐশীর হুস ফিরতেই নিজেকে সামলে নিলো।

-ঐশী আমাকে একটু ঠান্ডা পানি এনে দিবে প্লিজ? দাঁতেদাঁত চিবিয়ে বললো রাফিন।

ঐশী মাথা নাড়িয়ে ভিতরে চলে গেলো। রাফিন একটা টেক্সট করে বলে দিলো।

-“নিজেকে সামলে নিতে শিখো ঐশী। কিছু মানুষ রুপি জানো’য়ারদের থেকে নিজেকে হেফাজতে রেখো! নিজেকে আগলে রেখো, যত্ন নিতে শিখো। হিজাব পড়ে তার পড়ে বাহিরে এসো”।

– অতঃপর বড়রা কথা বলে সিদ্ধান্ত নিলেন আজকে এনগেজমেন্ট হবে শুধু। আফসানা পারভীন একটা বক্স বের করলো, ভিতরে খুব সুন্দর একটি আংটি রাখা।

বউ মা আংটিটা তুমি পরিয়ে দেও। বড় ভাবি হিসেবে দায়িত্বেটা পালন করো।
আফিয়া কে উদ্দেশ্য করে বললো উনি।

-দেখি হাতটা দেও তো চৈতী। বললো আফিয়া,

-চৈতী মাথা নিচু করে বসে আছে। আজ যেন সমস্ত লজ্জা জড়তা এসে ভীড় করছে তার মধ্যে, ভীষণ লজ্জা করছে। চৈতী আস্তে করে হাতটা বাড়িয়ে দিলো।

-ভাবীর এমন কথায় নড়েচড়ে বসলো সাইফ, উসখুস করছে কিছু বলার জন্য। কিন্তু কেউ তাকে বুঝছেন না, কি একটা দুঃখ!
অতঃপর মুখ খুলতেই হলো। কি আর করার বড়রা যদি না বুঝে মনের কথা। তখন তো একটু আধটু নির্লজ্জ হতেই হয়।

-এই এই ভাবী!খবরদার আংটি পড়াবে না। এক মিনিট! এক মিনিট!
বিয়ে করবে কে?

সাইফের এমন কথায় সবাই চমকে উঠলো। আফিয়া বোকার মতো হেঁসে বললো,
কেন তুমি?

ইয়েস! বিয়ে করবো আমি। বউ হবে আমার। আংটি আমি পড়াবো।
ভাবি কেন আংটি পড়াবে?
এটা আমি মানবো না। এটা আমার পারমানেন্ট বউ। সো, এই অধিকার একমাত্র আমার।

– সাইফ এগিয়ে এসে আফিয়ার হাত থেকে ঝড়ের বেগে আংটি নিয়ে চৈতীর হাতে পড়িয়ে দিলো। উপস্থিতি সকলে “থ” হয়ে গেলো। চৈতীর নিচু মাথা আরো
নিচু করে ফেললো। এমন বেহায়ার বর আর কারো না হোক। আমিন!

-ফের আবার বললো সাইফ, এখন কথা হলো। আমি আমার পারমানেন্ট বউয়ের সাথে পার্সোনাল কথা বলতে চাই। নিয়ে গেলাম? টা! টা! বায়! বায়!

বলেই চৈতীর হাত ধরে টেনে চৈতীর রুমের দিকে নিয়ে গেলো। গ্যাঞ্জাম পার্টির সবাই মিটমিট করে হাসছে। রাফিনের মুখটা হা হয়ে গেলো। এতো তার থেকেও এক কাঠি এগিয়ে আছে। বাকি সবাই স্তব্ধ হয়ে গেলেন। আফসানা পারভীন নড়েচড়ে বসলো। চোখ দুটো গোল গোল হয়ে গেলো। লজ্জায় মাথা কা’টা যাচ্ছে তার। এত নির্লজ্জ ছেলে তার। যে ছেলেকে বিয়ের কথা বললেই রেগে যেত, সেই ছেলে এমন বিয়ে পাগল কবে হলো। ভেবে পাচ্ছেন না তিনি।
তবে এই ছিলো তোর মনে সাইফ!

– পরিস্থিতি সামলাতে সিয়াম হালকা কেশে গলা পরিষ্কার করে বললো,

-এ যুগের ছেলে-মেয়েরা একটু ইউনিকই হয়। আমরা বরং বিয়ের ডেট ফিক্সড করে ফেলি।
– আবার সবাই খোশগল্পে মজে উঠে।

-অতঃপর বিয়ের ডেট ফিক্সড হলো আরো দু’মাস পড়ে। যেহেতু ঐশীর ফাইনাল এক্সাম এবং তিহানের ও ছুটি হবে না এখন। দুমাস পড়ে লম্বা একটা ছুটি পাবে। তাই তিহানই জানিয়েছে দু’মাস পরে এসে বোনকে বড় অনুষ্ঠান করে তুলে দিবে।
কেউ আর অমত করেনি। এই সিদ্ধান্তই মেনে নিলো।
অবশেষে, দুটি ভালোবাসার মানুষ সারাজীবনের জন্য এক হতে চললো।

আসল লেখিকা- সুমাইয়া আফরিন ঐশী।

– উপস্থিত ইয়াং জেনারেশন ছবি তুলবে বলে আবদার করলো।

-গ্যাঞ্জাম পার্টির হুস হলো এতখনে ঐশী এখানে নেই।
ঐশী এতক্ষণ রুমে ছিলো। বন্ধু মহলের চাপে পড়ে আসতেই হলো। এরা না হয় প্রশ্ন করে মাথা খারাপ করে দিবে।

ঐশী আসতেই আফিয়া প্রশ্ন করলো,
এই যে আমাদের কুট্টি বিয়াইন! আপনি কই ছিলেন এতক্ষণ?

-এইতো একটু ভিতরে ছিলাম। একটু দরকারী কাজ ছিলো।

-ঐশীর মনে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। রাফিন ভাইয়ের হঠাৎ এমন মেসেজ দিবার কারণ কি? উনি কাকে মিন করে বললো কথাগুলো বুঝতে পারলো না। তবে এইটা বুঝেছে তার অজান্তে কিছু একটা হয়েছে। তাই ভয়ে আর বের হননি রুম থেকে। তবে বন্ধু জাতির কাছে হেরে গিয়ে বেরিয়ে আসতেই হলো।
আসার আগে সুন্দর করে হিজাব পড়ে শালীন ভাবেই আসছে।

-এখানেই এসে চোখে পড়লো সায়েম বারবার পা থেকে মাথা অবধি দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে। ঐশীর কেমন যেন অসত্বী ফিল হচ্ছে, দাঁড়িয়ে কাচুমাচু করছে। এবার ক্লিয়ার ভাবে বুঝতে পারলো রাফিনের কথার মানে।

-আফিয়া ঐশীর হাত ধরে নিয়ে দাঁড় করিয়ে দিয়ে বললো,

-এখানে আসছি সবাই মিলে ছবি তুলবো না। এটা কি হয় বলো? এখানে দাঁড়াতো দূরে দূরে থাকো কেন তুমি?

-মুখের উপরে তো আর না করা যায় না। তাই ইচ্ছা না থাকা সত্যেও দাঁড়ালো ঐশী। হুট করে সায়েম এসে ঐশীর গা-ঘেঁষে দাঁড়ালো। ঐশী বিরক্তি হয়ে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ালো। সবাই একসাথে দাঁড়ানোর ফলে পাশে জায়গা নেই।
সায়েম ও ফের এগিয়ে ঐশীর কোমড়ে বাজে ভাবে হাত দিয়ে চেপে ধরলো। ঐশীর শরীর যেন ঘিনঘিন করছে। চোয়াল শক্ত করে ফিসফিস করে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
দূরত্ব বজায় রাখুন। আপনার ভাগ্য ভালো যে এখনো গায়ে হাত উঠেনি, বিকজ আপনি আমার আপুর শশুর বাড়ির লোক বলে। আমি কোনো ঝামেলা চাচ্ছি না বলে চুপ আছি। নিজের সীমা অতিক্রম করবেন না, না হয় কিন্তু ভালো হবে না এর ফল।

-আহ বিয়াইন! উত্তেজিত হচ্ছো কেন? কামনা জেগেছে বুঝি!
রিলাক্স!
ইউ আর সো হট!

-হঠাৎ করে হাতে মোচড় দিলো কেউ। ব্যথায় কুঁকড়ে উঠলো সায়েম। রাফিন হাত ধরে টেনে সরিয়ে আনলো।

এই তোমরা কই যাচ্ছো? বললো আফিয়া।

এইতো এই ভাইয়ের সাথে একটু পার্সনাল কথা আছে। বিয়াই মানুষতো একটু মনের কথা শেয়ার করাই যায় তার সাথে। জোরপূর্বক হাসি দিয়ে বললো রাফিন।
আরে চলো একটু সাইডে গিয়ে বলি। বলেই হাত ধরে টেনে নিয়ে আসলো।

-রাফিনের চোখ দু’টো মুহূর্তেই লাল বর্ণ ধারণ করলো। ঐশী ভয়ে চুপসে আছে। কি হয় কে যানে? আবার রাফিন ভাই তাকে ভুল বুঝবে না তো? ভাবতেই কলিজা মোচড় দিয়ে উঠলো ঐশীর।

-আরে হচ্ছেটা কি? এভাবে ধরে নিয়ে আসলে কেন? হাত ছাড়ো ব্যথা লাগছে আমার।

– তোর সাহস কি করে হয়? ঐশী কে টাচ করার। মেয়ে দেখলেই ছুঁতে ইচ্ছে করে?

-এই হাত দিয়ে ছুঁয়েছিস? তোর হাত আমি ভেঙে দিবো। বলেই হাত ধরে জোরে মোচড় দিলো।

আহ্ ভাই রেগে যাচ্ছিস কেন?
দু’জন মিলে মিশে খাই! বলতে দেরী কিন্তু মুখ ঘু’ষি পড়তে দেরী হলো না। রাগে যেন শরীর কাঁপছে রাফিনের। দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো,

– তোর কপাল ভালো এখনো তুই দাঁড়িয়ে আছিস। লোকজনের মধ্যে সিনক্রিয়েট করতে চাইনি। না-হয় তোকে পুঁ’তে রেখে দিতাম। তোদের মতো কিছু কু’ওার জন্য মেয়েরা নিজের বাসায় স্বাধীনতা ভাবে চলতে পারে না।

” যে ফুলের দিকে আমি তাকাইনি লজ্জা পাবে বলে”! তুই সেই ফুলকে স্পর্শ করার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছিস বলেই তেড়ে আসলো রাফিন।
রাফিনের শক্তির সাথে পেরে উঠলো না সায়েম।
আঘাত পেয়ে মৃদু চিৎকার করলো সায়েম। সাইফকে এদিকে আসতে দেখে ছেড়ে দিলো রাফিন। যথা সম্ভব নিজের রাগকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করলো।
-সায়েম পৈচাশিক হাসি দিয়ে আস্তে করে বললো,
যাই বলিস মা’লটা কিন্তু জোস। তোর আগে তোর প্রাণভোমরা কে আগে আমিই টাচ করলাম। হাহা!
– রাফিন রক্তিম চোখে তাকালো। পারছেনা ওর কলিজাটা বের করতে। আবার তেড়ে আসতেই সাইফ এসে পড়লো।

আরে রাফিন যে? তোমরা এখানে কি করছো?

এইতো ভাইয়া আমরা দুই বিয়াই মিলে কোলাকুলি করছিলাম আরকি। বলে সায়েম কে জড়িয়ে ধরলো রাফিন। কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো,

“বাঁচতে চাইলে মুখ সামলে কথা বলিস। ঐশীর থেকে দূরে থাকিস। এটাই শেষ সুযোগ তোর জন্য, মাইন্ড ইট!

শা’লা আজকের কাজটা ঠিক করিসনি। তোকে তো আমি পড়ে দেখে নিবোই। এর শোধ তো তোকে দিতেই হবে। বলে গটগট করে চলে গেলো সায়েম।

-সাইফের বিচক্ষণ চোখের আড়াল হলো না কিছু। এদের মধ্যে তো একটা গড়মিল হয়েছেই। না হয় রাফিন এত রেগে যাবার মতো ছেলে না। পাশাপাশি এলাকা হবার জন্য আগে থেকেই চিনতো রাফিন কে।

– রিলাক্স রাফিন! রাগটা কন্ট্রোল করো ভাই। পড়ে কথা হবে তোমার সাথে। এখন এখানে সবাই আছে কোনো ঝামেলা চাচ্ছি না আপাতত। রাফিনের ঘাড়ে হাত রেখে বললো সাইফ।

অতঃপর রুম থেকে বেরিয়ে এসে, চটজলদি তাড়া দেখিয়ে সবাই কে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য রওয়ানা দিলো। মূলত এখানে বড় কোনো ঝামেলা চাচ্ছে না বলেই সায়েম কে নিয়ে গেলো।

-রাফিনের রাগ যেন কমছেই না৷ ঘনঘন নিঃশ্বাস নিয়ে নিজের রাগ কে নিয়ন্ত্রণ করার আপ্রান চেষ্টা করছে।

-নিজের উপরেই রাগ হচ্ছে খুব। জরুরি একটা কল আসার কারণে একটু বাহিরে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করছিলো। এখানে মানুষ জনের কথা- বার্তা চলছে দেখে।

-এই সুযোগেই কত বড় একটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেললো। ভাগ্য ভালো দ্রুতই এসেছিলো বলে বিষয়টা চোখ এড়ালো না রাফিনের। এতক্ষণ তো চোখে চোখেই রাখছিলো।
ভাগ্য ভালো বড় কোনো অঘটন ঘটেনি।

-মিনিট পাঁচেক পড়েই রুম থেকে বেরিয়ে আসলো রাফিন। ঐশী রুমের বাইরেই ছিলো বলতে গেলে রাফিনের জন্যই অপেক্ষা করছিলো। রাফিন আড় চোখে তাকিয়ে দেখলো।
চোখ দু’টো ভীষণ লাল হয়ে আছে, দেখেই বুঝা যাচ্ছে কান্না করছে।

-তা দেখেই রাফিনের বুকটা চিনচিন করে উঠলো।

রাফিন কে বেরিয়ে আসতে দেখে উসখুস করছে কিছু বলার জন্য। কিন্তু ভয়ে বলতে পারছে না।

-এভাবে কান্না করে নিজের চোখের মূল্যবান পানি কোনো নরপশুর জন্য বিসর্জন দিতে নেই মেয়ে।

-তুমি নারী!
“জন্মগত নন্দনী! প্রিয়তে মহিনী!প্রয়োজনে বাঘিনী”!

” মাঝে মাঝে বাঘিনী হতে হবে তোমাকে”। হাত তো সাথে ছিলো? ঠাটিয়ে কয়েক ঘা লাগিয়ে দিতে?

“ঐশী ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। প্রিয়জনের একটু কথায় বোধ হয় মেয়েরা আহ্লাদী হয়ে যায়।

” আমি কোনো সিনক্রিয়েট চাইনি রাফিন ভাই। তাই চুপ করে ছিলাম। আমি চাইনি এতদিন পড়ে আপুর ভালোবাসাটা পূর্ণতা পেতে চলছে, সেটা আমার জন্য কোনো বাঁধা হয়ে ভেঙে যাক”। আপনি আমাকে ভুল বুঝবেন না প্লিজ! ঐশী নাক টানতে টানতে বললো।

রাফিন চোখের পানিটা আলতো করে মুছে দিলো। স্নিগ্ধ কন্ঠে বললো,
” আমার ভালোবাসা এতটা ঠুনকো নয় মায়াবিনী! যে যার-তার জন্য তোমাকে ভুল বুঝবো। প্রশ্নই আসে না, আর তুমি একদম কাঁদবে না। একটা কথা মনে রেখো-
নিজের আত্মসম্মানটা সবার ঊর্ধ্বে। যদি কখনো আমার স্পর্শ ও কোনো ভাবে বাজে মনে হয়, খারাপ লাগে আমাকেও চড় দিতে ভুলবে না।

“নিজেকে আগলে রাখতে, নিজেকে হেফাজত রাখার দায়িত্ব একান্তই তোমার”। প্রয়োজনে কাউকে খু’ন করতে ও পিছ পা হবে না। যারা তোমাকে সম্মান দিতে জানে না, তারা নিশ্চয়ই ভালো মানুষ নন। এদের খু’ন করলে দেশ থেকে একটা মানুষ রুপি জানো”য়ার বিলুপ্ত হবে। ফের কেউ হাত বাড়ানোর সাহস পাবে না। কিছু ভাবার আগে একশত বার এই ইতিহাস মনে পড়বেই”।

[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ! ]

একটা পেজে দেখেছি আমার নাম কে’টে দিয়ে উনার পেজে পোস্ট করছে? যে খানে আমি প্রত্যেকটা পর্বে লিখে দিয়েছি কার্টেসী ছাড়া কপি করা যাবে না। তারপর কিছু মানুষ এমন করে কেন ভাই? নেক্সট এমন করলে ছেড়ে কথা বলবো না হু।

অনেকককককক বড় করে দিয়েছি বাচ্চারা রেসপন্স করিও। গঠন মূলক কমেন্ট আশা করছি। ভুল ক্রটি হলে তাও জানাবে কেমন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here