#ভলোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ
#পার্টঃ৯
#writer_sumaiya_afrin_oishi
মেয়েরা একটু রাগি হয়, জেদি হয়, অভিমানী ও হয়, কেননা এরা বাঁকা হাড় দিয়ে তৈরী! এরা তো একটু বাঁকাই হবে? মেয়েদের আবেগ বেশি, ভালোবাসা ও বেশি! মেয়েরা যতটা অভিমানী হয় তার চেয়ে বেশি ভালোবাসতে জানে!
মেয়েরা সব সেক্রিফাইস করলে ও, তারা প্রিয় মানুষটাকে নিজের মনে করে! এরা প্রিয় মানুষটার ভাগ অন্য কাউকে দিবে না।
মেয়েরা তো একান্ত চায়, তার প্রিয় মানুষটা তার থাকুক।
কারণ প্রিয় মানুষটাকে তারা ব্যক্তিগত সম্পদ মনে করে। এরা এইটার ভাগ দিতে নারাজ!
তাইতো ঐশীর কষ্ট হচ্ছে, বুকের ভিতরে তোল -পাড় শুরু হচ্ছে। মেয়েরা তো জেলাসি প্রিয় মানুষের ক্ষেএে।
ঐশী জানে তার রাফিন ভাই কাউকে ভালোবাসে। তবুও অবাধ্য মন ঘুরে ফিরে তাকেই ভালোবাসে! মন চাচ্ছে এই মানুষ টা আমার থাকুক।
একান্তই আমার হোক!
ভালোবাসা কখন কি ভাবে আসে জানা নেই কারো। হুটহাট এসেই ভালোবাসা জন্ম হয়। মেয়েদের একটু কেয়ার, একটু সময় দিলেই হয়, তাহলে ই এরা নিজের সবটা দিয়ে ভালোবাসতে জানে একটা পুরুষ কে।
তাদের চাহিদা অল্প, কিন্তু এদের ও অসম্ভব রকমের ভালবাসতে হয়। ভালোবাসার ক্ষেএ কৃপণতা নিতে পারে না মেয়ে জাতি।
একটু হে’র ফের হলেই অভিমানের পাহাড় জন্ম তাদের মনে।
রাফিন ভাই অন্য কাউকে ভালোবাসে, ভাবতেই বুক ফেটে কান্না আসে। এই একতরফা ভালোবাসা যে কষ্টের। এই দহন- যে হৃদয়টা দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে দিয়ে যায়। যা কাউ বলা ও যায় না, আর না সহ্য হয়! কি নিদারুণ যন্ত্রণা!
কিন্তু অভিমানী কন্যা এটা জানে না, তার রাফিন ভাই তাকে কত টা ভালোবাসে! আর তার ভালোবাসার মানুষ টা ও যে সে।
যেদিন জানবে, হয়তো সেদিন ই নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করবে। সব থেকে সুখী মানুষ হবে।
সেই দিন যে খুব শীগ্রই আসছে।
ভালোবাসার পূর্ণতার সময়!
এক আকাশ সমান অভিযোগ, অভিমান নিয়ে সেদিন চলে আসছে বাড়িতে ঐশী। এই অভিমান কি তার রাফিন ভাই ভেঙে দিতে পারবে? অভিমানী কন্যা যে অভিমান করে বসে আছে।
‘সেদিন কিছু না বলে চলে যাচ্ছিো ঐশী। রাফিনের থেকে মুখ ঘুরিয়ে, অন্য পাশে হাঁটা শুরু করলো। এরি মধ্যে রাফিন পিছন থেকে হাত ধরলো। কন্ঠে একরাশ মুগ্ধতা এনে মহনীয় সুরে জিজ্ঞেস করলো’ –
কি হয়েছে তোমার? চঞ্চল চড়ুই পাখি কে মলিন মুখে মানায় কি বলো?
গোমড়া মুখশ্রী একদম বেমানান তোমার সাথে।
তোমার চঞ্চলতা ই তোমার সাথে যায়।
‘আমি কেমন থাকবো না থাকবো আপনার না জানলে ও চলবে?
আপনি আপনার কাজ করুন গিয়ে। ঐ মেয়ের কথা ভাবুন। আমি কে আপনার যে আমাকে এইসব বলেন? একরাশ অভিমান নিয়ে বললো ঐশী।
কথাটা বলেই নিজের হাতটা ছাড়িয়ে হনহন করে চলে গেলো নিজ গন্তব্যে।
ঐশীর কথা বোধগম্য হতে একটু সময় লাগলো রাফিনের। বুঝে উঠার আগেই চলে গেলো ঐশী।
সে দিকে হাব*লার মতো তাকিয়ে রইলো কিছু সময়।
তবে মনে মনে হাসলো।
তার মানে তার মায়াবিনী ও তাকে ভালোবাসে?
তার জন্য জেলাসি!
এর থেকে আনন্দে কি হতে পারে রাফিনে’র কাছে? যখন একটা মানুষ একজন কে পাগ*লের মতো ভালোবাসে।
তার প্রতিটা রন্ধে রন্ধে, নিজের অস্থিত্বের সাথে মিশে যায়, তখন তো তাকে ছাড়া বাঁচা ই মুশকিল।
সব থেকে আনন্দ হয় তখন, যখন শুনতে পায় অপর ব্যক্তি ও তাকে ভালোবাসে! তার জন্য জেলাসি ফিল করে । এই সময়টাতে নিজেকে ধন্য মনে হয়।
এসব ভাবতে ভাবতে নিজেও চলে গেলো নিজ ভবনে।
🌸অন্ধকার আচ্ছন্ন রাত! গোলগাল চাঁদ আকাশে, ক্ষীন আলোক রশ্মি ছড়িয়ে দিয়েছে ধরনীর বুকে।
রাফিন জানালার গ্রিল ধরে, তাকিয়ে আছে উাদাস মনে, সেই থালার মতো চাঁদের দিকে ।
জীবনে অনেক সময় আসে নিজেকে সব থেকে অসহায় মনে হয়। এই ছোট্ট জীবনে অনেক সমস্যা অতিক্রম করতে হয় আমাদের। তার পরেও বেঁচে থাকতে হয়। জীবন যুদ্ধে সংগ্রাম করতে করতেই টিকে থাকতে হয়। কত ডিপ্রেশনে ভুগতে হয়!
কত স্বপ্ন পূরন করতে দিনের পর দিন অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়।
প্রিয় মানুষদের থেকে দূরে থাকতে হয়।
আজকে আবার সবাই কে ছেড়ে পাড়ি জমাতে হবে নিজ স্বপ্ন পূরনের উদ্দেশ্য ।
চৌধুরী বাড়িতে আজ নিস্তব্ধতার আঁধার ছেয়ে গেছে। সবাই মন খারাপ করে বসে আছে। কেননা আজ বাড়ির একমাত্র ছেলে চলে যাবে। মন খারাপ থাকারই কথা। । এতদিন বাড়িটা ভরা ভরা লাগতো।
আজ আবার খালি হয়ে যাচ্ছে।
রাত আটটা। রাফিন চলে যাচ্ছে ঢাকার উদ্দেশ্যে। কেননা তার মেডিকেল কলেজের ডিপার্টমেন্ট অফ গাইনকোলেজি র ৩য় বর্ষের ফাইনাল পরিক্ষা, আর কিছু দিনের মধ্যে ই হবে।
🌸এভাবে কেটে গেলো আরও একটা মাস। এর মধ্যে রাফিনের সাথে তেমন কথা হয়নি ঐশীর সাথে। পরিক্ষার সময় কারো সাথেই যোগাযোগ রাখেনা তেমন রাফিন। বোকা ঐশী তো জানেনা তার রাফিন ভাই তার সব খবর রাখে নিয়ম করে। তাতে সে যত ব্যস্ত থাকুক না কেন।
এদিকে HSC পরীক্ষার সময় ও ঘনিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে টেস্ট পরিক্ষা শেষ হয়ে গেছে। ফ্রেন্ড সার্কেলের সবার মন খারাপ। আর মাএ কিছু দিন একসাথে আছে সবাই। তারপরে কে কেথায় কোন ভার্সিটিতে চান্স পায় কে যানে। কার কেমন রেজাল্ট হয় জানা নেই কারো।
তবুও সবাই আবার ও এক সাথে থাকারর প্লান আছে।
গ্যাঞ্জাম পার্টির সকল সদস্য বসে আছে মাঠের মধ্যে।
সবাই চুপচাপ আজ যেন কথা বলা নিষেধ তাদের। যেন কথা বলাই পাপ।
‘আলিফ মিতুর পাশ ঘেঁষে বসে হঠাৎ করেই বলে উঠলো –
দোস্ত একটা চুমু দে!
নিস্তব্ধতা পরিবেশের মধ্যে কথাটা যেন ব’র্জ’পা’তের মতো লাগলো সবার। সবাই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে আলিফের দিকে।
সবার দৃষ্টি যেন ওর উপর থেকে নড়ছেই না।
মিনিট খানিক পড়েই
ঠাসসসসসসসস করে একটা শব্দ হলো।
হ্যাঁ থাপ্প*ড়টা মিতুই দিয়েছে আলিফ কে।
সবাই যেন ঘোরের মধ্যে আছে কি হচ্ছে বুঝতে পারছে না কেউ।
আলিফ গালে হাত দিয়েই মিতুর দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো মিতুর মুখশ্রীর পানে। মিতু অগ্নি দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো।
পরিস্থিতি সামলাতে আলিফ হো হো করে উঠলো।
-ওর এমন অদ্ভুত হাসতে দেখে সবাই যেন আর একটা শক’ট খেলো।
আলিফ হাসতে হাসতে লুটপাটে যাচ্ছে। অদ্ভুত থা*প্পড় খেয়েও যে মানুষ হাসে ওকে না দেখে বুঝতোই না সবাই।
-রবিন উঠে গিয়ে আলিফের পিঠে একটা চড় দিয়ে বললো
-তোর ঐ বিচ্ছিরী হাসি থামাবি, এত ডং এর মানেটা কি?
‘আলিফের হাসি থামছে’ই না।
-ওয়া’ক! জানতাম তুই ব্রাজিলের সাপোর্টার, কিন্তু এত বড় ফ্যান তা জানতাম না। দাঁত গুলো ও হলুদ! ভাব তুই কত বড় ফ্যান।
-আলিফ হাসি থামিয়ে উল্টো একটা চড় দিলো রবিন এর পিঠে।
তার পরে বলে উঠলো শোন আমার দাঁত একদম চকচকে।
বলতে পারিস ডায়মন্ডের দাঁত, ।
আমার হাসি মোটেও বিচ্ছিরি না হুহ এটা ক্লোজ-আপের হাসি।
-সিরিয়াস সিচুয়েশনে ফান করা, এটা একমাত্র ফ্রেন্ড সার্কের ধারাই সম্ভব। এটা তাদের ফ্রেন্ডগত অধিকার!
মিতু চিৎকার দিয়ে উঠলো-
-থামবি তোরা?
আমি কিন্তু মোটেও ফান মুডে নেই!
এসব কি আলিফ?
আরে ইয়ার কুল কুল মানে ঠান্ডা হ। রেগে যাচ্ছিস ক্যান?
আলিফ আমতা আমতা করে বললো।
রাগবো না তো তোকে চুমু দিব নাকি? রাগী গলায় বললো।
-ওহ হো তোদের মেয়েদের মনে যে এত জিলাপির প্যাঁচ তোরে না দেখলে বুঝতাম ই না!
আরে ইয়ার আমি তোকে চুইংগাম মুখে দিতে বলছি! বুঝিস না ডিজিটাল বাংলাদেশ র্শট করে বললাম।
-শর্ট করলে কি দাঁড়ায়, তাইলে শোন।
” চু” ফর চুইংগাম, “মু” ফর মুখে দেয়! সিম্পল একটা লজিক এটা ও বুঝিস না?
– ইনিয়েবিনিয়ে বললো আলিফ।
-আর তুই যে আমাকে চুমু দিবার কথা ভাবিস আগে জানতাম না! চোখ টিপ দিয়ে।
আলিফের এমন উদ্ভুত যুক্তি শুনে মিতু সহ সবাই ফ্যাল -ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো।
-এই ছেলেটা মিতুকে অনেক ভালোবাসে! কখনো বলেনি , যদি বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে যায়, যদি মিতু ফিরিয়ে দেয় সেই ভয়ে।
থাকনা কিছু ভালোবাসা অপ্রকাশ্য, সব ভালোবাসা যে নিজের করে পেতে হবে এমন তো কথা নেই! ভালোবাসার মানুষের সুখটা’ই আসল।
সে সুখি হলেই হলো, হোক নিজের কাছে বা অন্য কারো সঙ্গে! তবুও সে সুখে থাকুক এইটা ই তো চাও!
আমি না হয় দূর থেকেই ভালোবেসে যাব? একাকি খুব গোপনে!
-পরিস্থিতি সামলাতে আলিফ বললো-
আরে ভাই এমন করে তাকিয়ে আছিস ক্যান? আমি মনে হয় চিরিয়া খানা থেকে আসছি?
আলিফ ইনসেন্স ফেস করে।
দাঁড়া তোর র্শট ভাবে কথা ছাড়াচ্ছি বলে দৌড় লাগালো সবাই আলিফের পিছনে।
এভাবে ছুট লাগালো কয়েক বার।
সবাই যখন হাঁপিয়ে পড়লো থামলো সবাই।
আলিফ হাঁপাতে হাঁপাতে বললো- আরে পারবো না ভাই। মাফ কর!
সবাই একসাথে বলে উঠলো – মাফ করতে পারি , আমাদের আজকে ট্রিট দিবি তুই।
-আজব থা*প্পড় খাইলাম, দৌড়ানি, এখন ট্রিট ও আমি দিব?
এই ছিলো কপালে?
আচ্ছা দিবো চল?
-কেউ যদি একজন এইটুকু তেই হ্যাপি! আজ না সব সময় আমি ই ট্রিট দিব তোদের।
এখন চল।
সারাদিন এভাবেই কাটলো সবার। আবার সবাই কে বিদায় দিয়ে, চলে গেলো নিজ নিজ গন্তব্যে।
#চলবে……..
(আসসালামু আলাইকুম পাঠক মহল! কয়েক জন মানুষ বললো, আমি নাকি গল্প কপি করি অন্যের টা। ৩/৪ ঘন্টা সময় নিয়ে লিখে যদি শুনতে হয় কপি করি। তখন অনেক খারাপ লাগে খুব। অনেক কমন ডায়লগ আছে যা সবার জানা, সেগুলো হয়তো একটু আধটু মিল হতে পারে। তাই বলে কপি করা বলাটা ঠিকানা।
এতে লেখিকার লেখার মুডটাই নষ্ট হয়ে যায়।
আমি অসুস্থ অনেকটা, আমার জন্য দোয়া করবেন সবাই প্লিজ! আল্লাহ যেন আমাকে সব সময়ের জন্য সুস্থ রাখে! )