ভালোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ #writer_sumaiya_afrin_oishi #পার্টঃ৩৭(শেষ অংশ)

0
193

#ভালোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ

#writer_sumaiya_afrin_oishi

#পার্টঃ৩৭(শেষ অংশ)

রাত বারোটা বধু রুপে বাসর ঘরে বসে আছে চৈতী। সেই কখন থেকে বসে বসে অপেক্ষা করছে সাইফের জন্য কিন্তু তার আসার নাম নেই। হঠাৎ দরজা খোলার শব্দ পেয়ে দরজায় কাঙ্খিত ব্যক্তি কে দেখে বুকে ধুকপুকানি দ্বিগুণ বেড়ে গেলো চৈতী’র। ভীষণ লজ্জা করছে তার, মাথার ঘোমটাটা টেনে নিচু হয়ে কাচুমাচু করে বসে রইলো।”

“হঠাৎ চৈতীর মাথায় আসলো, ফুলসজ্জা রাতে স্বামী ভিতরে প্রবেশ করলেই নাকি, স্বামীকে পা ছুঁয়ে সালাম করতে হয়। এটাই নাকি নিয়ম, মুরব্বিদের কাছে শুনেছে সে। কিন্তু তার তো এই লোকটার দিকে তাকাতেই লজ্জা করছে এখন। ইশশ কি লজ্জা! এমনটা তো আগে কখনো হয়নি উনাকে দেখলে। আজকে কেনো আমার এতো লজ্জা করছে? নিজের অনুভূতি দেখে নিজের উপরে বিরক্ত বোধ করছে চৈতী। তবুও নিজেকে সামলে নিতে চাইলো।

সাইফ রুমের দরজা লক করে ধীরপায়ে চৈতীর কাছে এগিয়ে আসতেই চৈতী চেঁচিয়ে বলে উঠলো,

“খবরদার আর এক পা এগোবেন না।দাঁড়ান! দাঁড়ান! ওই খানেই দাঁড়ান।”

“সাইফের পা থেমে গেলো। ফুলসজ্জা রাতে বউয়ের এমন আচরণ দেখে ভড়কে যায় সাইফ। বিস্মিত হয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো চৈতীর দিকে। কপালে কিঞ্চিৎ ভাঁজ পড়ল তার, তবে কী বউ তাকে “রিনা খানে”র মতো বাসর ঘর থেকে বের করে দিবে। ভাবতেই বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো তার।”

“হায়রে কপাল! জীবনে প্রথম বাসর ঘরে কত শত স্বপ্ন ছিলো আমার। বউ আমাকে দেখে লজ্জা পেয়ে লাল-নীল হয়ে মাথা নিচু হয়ে থাকবে। আমি গিয়ে তার ঘোমটাটা সরিয়ে দিয়ে বললো, মাশাআল্লাহ! বউ লজ্জা পেয়ে লজ্জা মিশ্রিতো একটা হাসি দিবে। আমি অপলকভাবে তাকিয়ে সেই হাসি দেখবো।
সব স্বপ্ন তবে কী স্বপ্ন’ই থেকে যাবে দেখছি! এসব ভাবছে আর মনে মনে আপসোস করতে লাগলো সাইফ।”

” চৈতী হুড়মুড় করে বিছানা থেকে নেমে পড়লো। নিজেকে একটু ঠিকঠাক করে লম্বা ঘোমটা টেনে নিয়ে ধীরপায়ে সাইফের কাছে এগালো। সাইফ বুকে হাত বেঁধে ভ্রু কুঁচকে চৈতীর কাজ-কর্ম দেখতে লাগলো।”

“সাইফের ভাবনায় এক বালতি জল ঢেলে , চৈতী মাথা নিচু করে যেই না পা ছুঁতে যাবে অমনি সাইফ চৈতীকে ধরে ফেললো। এবার বুঝতে পারলো তার বউ তাকে বের করে দিবে না। তার ভাবনা ভুল প্রমানিতো করে বউ সাবানা’র চরিত্র ধারণ করেছে। না তার বউ রিনা খান নয়, তার মানে তার স্বপ্ন পূরণের এখনো চান্স আছে। অতঃপর মনে হলো যেন মাথা থেকে বড় একটা পাহাড় সরে গেলো। দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস নিয়ে স্বস্তির শ্বাস ছাড়লো সাইফ।

সাইফ চৈতী’কে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়ে, ক্ষীণ কন্ঠে বললো,

“তোমার স্হান আমার পায়ে নয় বউ। তোমার জায়গা আমার বুকে।”
আর এসব আধিক্ষ্যাত কে শিখিয়েছে তোমাকে হু? জানো না আল্লাহ্ ছাড়া, কারো পায়ের নিচে মাথা নিচু করতে নেই। ফের এসব আর যেন না দেখি কখনো।”

“আমি কি নিজের ইচ্ছায় করতে চাইছি নাকি। শুনেছি এটা নাকি নিয়ম, তাই নিয়ম পালন করতে চাইছি।” বললো চৈতী।”

“দূরো পাগলী এসব সব কুসংস্কার নিয়ম। কোথাও কি এসব লেখা আছে। তবে পা ছুঁয়ে নয় বরং মুখে সালাম করাই যথেষ্ট। কারণ যে কোনো সময়, যে কাউকে সালাম দেওয়া সুন্নত।”

চৈতী মাথা নিচু করে বললো, ওহ আচ্ছা স্যরি! আমি জানতাম এটাই নিয়ম, আর হবে না এমন।

“আসসালামু আলাইকুম!”

সাইফ মুচকি হেসে জবাব দিলো,

“ওয়ালাইকুম আসসালাম বউজান!
এখনো এসব পড়ে বসে আছো কেন? যাও ফ্রেশ হয়ে নেও তাড়াতাড়ি। আর হ্যাঁ ওজু করে এসো। নামাজ পড়ে আমরা আমাদের নতুন জীবন’টা শুরু করবো বউ।”

চৈতী আর কথা বাড়ালো না। নিজের কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। সাইফ বসে বসে অপেক্ষা করতে লাগলো, কিন্তু তার বউয়ের বের হবার নাম নেই । আনুমানিক আধাঘন্টা পড়ে লাল রঙের একটা শাড়ী পড়ে বের হলো চৈতী। সাইফের দৃষ্টি যেন আঁটকে গেলো চৈতী’র মাঝে। খুব স্নিগ্ধ লাগছে আজ চৈতীকে। সাইফ কে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে নার্ভাস ফিল করছে চৈতী। সাইফ দ্রুত দৃষ্টি সরিয়ে নিলো, সারাদিন মেয়েটার উপরে অনেক ধকল গিয়েছে আগে রেস্ট প্রয়োজন। চৈতীক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সাইফ উঠে গিয়ে চৈতী’র হাত ধরে বিছানার উপরে বসিয়ে দিয়ে কিছু একটা খুঁজতে লাগলো।

বিছনার অপর প্রান্ত থেকে একটা প্যাকেট হাতে নিয়ে আসলো। চৈতী তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে তার সদ্য বিবাহিত হাসবেন্ডের কাজকর্ম।

” সাইফ চৈতীর পাশে এসে বসলো। হাতের প্যাকেটি খুলতেই এক প্যাকেট বিরিয়ানি দেখতে পেলো চৈতী। সাইফ প্যাকেট খুলে নিজের হাত দিয়ে খাবার চৈতী’র মুখের সামনে ধরে বললো,

“খেয়ে নেও একটু বউ। আমি জানি তুমি ক্ষুধার্ত। সারাদিন অনেক ধকল সহ্য করতে হয়েছে। নিশ্চই কিছু খাওনি। তাই তোমার ফেভারিট কাচ্চি বিরিয়ানির নিয়ে আসছি। বলেই চৈতী’র মুখে খাবার তুলে দিলো।

“বাসর রাতে স্বামীর এমন আচরণে মুগ্ধ হলো চৈতী। তাকে নিয়ে লোকটা কতটা ভাবে। সত্যি’ই তো সারাদিন তেমন কিছু’ই খায়নি চৈতী। পেটে খুব ক্ষুধা ও ছিলো। যাদের মুখে কিছু বলতে হয়না এমনিই সব কিছু বুঝে যায় তারাই বোধ হয় প্রিয়মানুষ।

“ভালোবাসি” শব্দ’টা বারবার মুখে বলতে হয় না। ভালোবাসা মৌখিক কোনো ভাইবা না, যেটা মুখে বললেই তুমি ঊওীর্ন হয়ে যাবে। ভালোবাসা হলো কাজ ও কর্মে ফুটিয়ে তোলার বিষয়। পুরুষটা তোমাকে ভালোবাসে তোমাকে মুখে শুনালে প্রমাণিত হবে না, কারণ মৌখিক গল্পে আমরা অনেক কথা’ই বলতে পারি। ভালোবাসা হলো অনুভব করা। তোমার বিপদে আপদে,তোমার প্রতিটা ভালো লাগায়, মন্দ লাগায় নীরব অংশীদারীত্ব যে পুরুষ নিজ থেকে পালন করে সে তোমাকে ভালোবাসে। তোমার মুখের সামান্য হাসির জন্য যে পুরুষ তাকে উৎসর্গ করতে পারে সে তোমাকে ভীষণ ভালোবাসে।তার কাজ কর্মের মাধ্যমেই বুঝা যায় অপর মানুষটা তার কতটা প্রিয়।
সাইফের এমন কাজে তার প্রতি হৃদয় থেকে আরো দশগুণ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বেড়ে গেলো চৈতী’র। ফুলসজ্জা রাতে ৯০% মেয়েরা ক্ষুধার্ত থাকে। ক’জন পুরুষ এতো গভীর ভাবে চিন্তা করে। নিশ্চয়ই সে ভীষণ ভাগ্যবতী! স্বস্তির নিঃশ্বাসে চোখ দু’টো ভারী হয়ে গেলো। চোখের কার্নিশ বেয়ে দু’ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো। সাইফ ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলো,

“আরে কি হয়েছে তোমার? কাঁদছো কেন পাখি? বাড়ির কথা মনে পড়ছে? নাকি শরীর খারাপ লাগছে? প্লিজ কেঁদো না!খাবার সময় কাঁদতে হয় না।”

চৈতী চোখের জলটুকু মুছে মৃদু হেসে বললো,

“কিছু হয়নি আমি একদম ঠিক আছি।”

“চৈতী নিজেও সাইফ কে খাইয়ে দিলো। এভাবে শুরু হলো তাদের ভালোবাসা ময় নতুন জীবন।
দুজন দুজনাতে মিশে গিয়ে হারিয়ে গেলো ভালোবাসা’র অতল গহীনে। পরিপূর্ণ পেলো আরো একটি ভালোবাসা’র। এই রাতটি সাক্ষী হয়ে রইলো তাদের মধুচন্দ্রিমা’য়।”
_________________________

“এদিকে রাত দুই টায় বাস থামলো ঢাকার বাস স্টানে। ঐশী শান্তি’তে বিভোর ঘুমে মগ্ন। রাফিন ঐশী’কে পাঁচ মিনিট ধরে ডাকছে কিন্তু এর কোনো হেলদোল নেই। বাধ্য হয়ে মৃদু ধাক্কা দিয়ে বললো,

“এ্যাই ঐশী? উঠো সোনা আমরা পৌঁছে গেছিতো , আর কতো ঘুমাবে নাকি বাসে থাকার প্লান করছো?

ঐশী চোখ কচলাতে কচলাতে চোখ মুখ কুঁচকে বললো,

“কি হয়েছে এভাবে ধাক্কা দিলেন কেনো?”

রাফিন মৃদু হেসে বললো,

“তোমাকে তো কখন থেকে ডাকছি । চলে এসেছি তো আমরা।”

ঐশী তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে দেখলো বাস প্রায় ফাঁকা। ব্যস্ত হয়ে বললো,

“সবাই তো চলে গিয়েছে আপনি আগে ডাকবেন না। দেখি, উঠুন উঠুন। ”

রাফিন অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো ঐশী’র দিকে। এই মেয়েকে কখন থেকে ডাকলো কিন্তু তার উঠার নাম নেই। এখন তাকেই ব্যস্ততা দেখাচ্ছে। হায়রে মেয়ে মানুষ! কী অদ্ভুত!

রাফিন আর কিছু বললো না। দুজন বাস থেকে নেমে পড়লো। মোবাইল হাতে নিয়ে আরাফ কে কল দিবে ভাবছে। আর দৃষ্টি রোডের দিকে খালি গাড়ি খুঁজছে। কিন্তু হতাশ হলো, না আরাফ কল রিসিভ করছে, আর না গাড়ি দেখছে। আশেপাশে ভালো ভাবে দৃষ্টি বুলাতেই চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। এই শীতের রাতে আরাফ বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আরাফ কে হাতের ইশারায় ডাকলো। বিস্মিত কন্ঠে বললো,

“এত রাতে তুই কেনো শুধু শুধু কষ্ট করে আসতে গেলি। আমরা একটা রিক্সা নিয়েও যেতে পারতাম।”

আরাফ মেকি হেসে বললো,

“রিক্সাওয়ালা তোর তো মামা লাগে ভাই। এই ঠান্ডায় এত রাতে ঘুম বাদ দিয়ে তোর জন্য বসে থাকবে। আমি জানতাম গাড়ি’র সমস্যা হবে তাই নিজেই চলে আসলাম। এখন তাড়াতাড়ি দু’জন উঠে পড়। বেশ ঠান্ডা লাগছে। ”

কেউ আর কথা না বলে বাইকে উঠে বসলো। নিরবতা ভেঙে রাফিন প্রশ্ন করলো,

“আচ্ছা আমরা যাচ্ছি কোথায় আরাফ?”

“আবাসিক হোস্টেলে রুম বুক করেছি দু’দিনে জন্য। দু’দিনে মধ্যে একটা বাসা পাবোই তোদের জন্য। তুই কোনো চিন্তা করিস না দোস্ত। ভরসা দিয়ে বললো আরাফ।”

“বিশ মিনিটের মধ্যেই চলে আসছে তারা। আরাফের কাছে রুমের চাবি ছিলো। তিনজন মিলে রুমের মধ্যে প্রবেশ করলো। আরাফের বাসায় যেতে হবে তাই আর বসলো৷ ঐশী কে উদ্দেশ্য করে বললো,

“আমাকে এখন যেতে হবে বোন। যে কোনো সমস্যা আমাকে জানাবে কিন্তু। মনে করো আমি তোমার বড় ভাই। একদম রাফিনের ভরসায় থেকো না। এই শা’লা মোচড়াবে কিন্তু ভাঙবে না। একদম ভয় পাবে না ওকে। তোমার যে কোনো সমস্যা র্নিদ্বিধায় বলবে আমাকে।”

ঐশী সৌজন্যো মূলক মুখে একটি হাসি দিয়ে বললো,

“আচ্ছা ঠিক আছে ভাইয়া। আপনি আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করলেন এই মধ্যে রাতে।”

“আরে এসব ব্যাপার না। আমি খাবার রেখেছি প্যাক করে, ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিও দুজন।”

রাফিন মুগ্ধ হচ্ছে বন্ধু”র কাজকর্ম দেখে, কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে বললো,

“ধন্যবাদ দোস্ত এতো এতো দিক ম্যানেজ করার জন্য। তোর কাছে আমি ঋণী হয়ে গেলাম। তোর উপকার কখনো,,,,

আর বলতে পারলো না রাফিন। আরাফ ধমক দিয়ে থামিয়ে দিয়ে বললো,

“রাখ তোর এস সস্তা ধন্যবাদ। আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করেছি। আমার বন্ধু বিপদে পরছে আমি হাত ঘুটিয়ে বসে থাকবো। তাইলে আমি কেমন বন্ধু ভাই, যদি তোর বিপদে সঙ্গী না হতে পারি। তাই এসবের জন্য কোনো ফর্মালিটির দরকার নেই। তোর কোনো চিন্তা করতে হবে না আমি সবসময় তোর পাশে আছি।”

“রাফিন ভীষণ খুশী হলো বন্ধু’র এমন অধিকার বোধ দেখে।কে বলছে বন্ধু’রা শুধু সুখের সময় পাশে থাকে। কিছু কিছু বন্ধু তার সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে বন্ধু বিপদে’র ডাল হয়ে পাশে থাকে।”

“ঐশী কে ফ্রেশ হতে বলে আরাফ কে একটু এগিয়ে দিবার জন্য বাহিরে আসলো রাফিন। অমনি আরাফ রাফিনের কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বললো,

“দোস্ত আজ কিন্তু তোর বাসর রাত। নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা! আমি কিন্তু এক বছরের মধ্যে চাচ্চু হতে চাই।”

রাফিন চোখ গরম করে তাকালো আরাফের দিকে। আর আর না দাঁড়িয়ে দৌড়ে বাইকে উঠো গেলো। রাফিন সে দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে রুমে আসলো। দুজন মিলে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিলো। ঐশী’র ভীষণ আনইজি ফিল হচ্ছে। এই প্রথম কোনো পুরুষের সাথে বেট শেয়ার করতে হবে। যদিও পুরুষ’টি তার স্বামী তবুও কেমন জানি লজ্জা লাগছে তার। ঐশী’কে এমন নার্ভাস দেখে রাফিন হাসলো। দুষ্ট হেসে বললো,

“কি হলো বউ? এভাবে বসে বসে আমাকে দেখবে নাকি ঘুমবে?”

“মোটেও আমি আপনাকে দেখছি না।”

” আচ্ছা বাদ দেও। কথা বলো না চুপচাপ সুয়ে পড়ো। ঘুমাতে হবে এখন আমার প্রচুর টায়ার্ড লাগছে। আনইজি ফিল করতে হবে না, একটু মানিয়ে নেও সোনা।”

কেউ আর কথা বললো না। দুজনার শরীর আর চলছে না, চোখে ঘুম টইটম্বুর। দুজনার মাঝে বেশ দুরত্ব নিয়ে সুয়ে পড়লো। কিছু সময়ের মধ্যে’ই ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেলো দু’জন।

“রাত তিনটা পর্যন্ত আড্ডা দিচ্ছে বন্ধু মহলের সবাই মিলে। কারো কিছু ভালো লাগছে না ঐশী কে মিস করছে খুব। তাই সবাই মিলে গল্প করছে এতো রাত করে। মিতু, রিয়া, জান্নাত ঐশীর রুমে ঘুমাবে। তিনজন রুমে এসে দাঁড়াতে’ই রিয়ার চোখ পড়লো নিজের পার্সের দিকে। ততক্ষণাৎ মনে পরলো সুজনের দেওয়া চিরকুটে’র কথা। তড়িঘড়ি করে চিরকুটটি হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করলো,

~প্রিয় রিয়ু জানু!

“পএের শুরুতেই জানাই স্যাভলনের জীবাণুমুক্ত ভালোবাসা। আশাকরি মিল্লাত ঘামাচি পাউডার মেখে ভালোই আছো। আমি তোমাকে সেন্টারফ্রুটের মতো পছন্দ করি।তোমাকে ছাড়া আমার জীবন পঁচা সাবানের মতো মূল্যহীন।আর কিছু লিখে তোমার ফেয়ার এন্ড লাভলী ক্রীম মাখার মতো মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চাই না। আমি কখনো প্রেম পএ লিখিনি, তাই যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে তাহলে সার্ফ এক্সোল দিয়ে মুছে ফেলো। আর যদি হাসি আসে তাহলে, ক্লোজ আপ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করে নিও। আমার পএ পড়ে যদি তোমার মাথা গরম হয়ে যায়, তাহলে তিব্বত কদুর তেল দিয়ে মাথা ঠান্ডা করে নিও।”

~ ইতি তোমার
“মজবুত ভালোবাসার মানুষ সুজন ”

“চিঠি খানা পড়ে রিয়া স্তব্ধ হয়ে রইলো কিছু সময়। এর পরে হোহো করে হেসে দিলো। এর হাসি দেখে রিয়া,জান্নাত অদ্ভুত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকিয়ে রইলো। রিয়ার হাসি থামছেইনা হেসে হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে সে। রীতিমতো মিতু,জান্নাত কে দু’চারটা কি’ল ঘু’সি দিয়ে হাসি ফিল করছে। মিতু রিয়ার হাত থেকে কাগজটি নিয়ে জোরে জোরে পড়ে রীতিমতো তিনজন মিলে হাসলো। তাদের সারাদিনে মন খারাপ ভালো হয়ে গেলো। জান্নাত কোনো মতে একটু হাসি থামিয়ে দিয়ে বললো,

“এমন আকর্ষণীয় প্রেম পএ আমি জীবনে ও পড়িনি ভাই, আর না শুনছি। এতো আমাদের রিয়ার থেকেও এক কাঠি উপরে।”

চলবে………….

[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ! ]

লেট হয়ে গিয়েছে অনেক, তার জন্য দুঃখিত! সন্ধ্যা থেকে লিখে তার পরে পোস্ট করলাম। সবাই বেশি বেশি রেসপন্স করো প্লিজ! যারা এখনো পেজটি ফলো করোনি সবাই টুকিস করে ফলো করে দেওওওওওওও!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here