#ভালোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ
#writer_sumaiya_afrin_oishi
#পার্টঃ৩২+৩৩ (বোনাস পর্ব)
“জ্যোৎস্নায় আবৃত কুয়াশাচ্ছন্ন হিমশীতল মিষ্টি একটি রাতের শেষ প্রহরে রাফিন বাস থেকে নেমে নিজের শহরে পা রাখলো। বাহিরে প্রচন্ড কুয়াশা তার উপরে হালকা বাতাসে শীতের তীব্রতাকে কয়েক গুন বাড়িয়ে দিয়েছে। এমতো অবস্থায় বাহিরে বের হওয়া দুষ্কর।” রাফিন গায়ে চাদরটা ভালো ভাবে পেঁ’চি’য়ে নিলো। প্যান্টের পকেট থেকে মোবাইল’টা বের করে হাতে নিলো। মোবাইল ফোনটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মূলত ইচ্ছাকৃত ভাবেই বন্ধ করে রেখেছে। ফোনটা অন করতেই ঐশীর অনেক গুলো কল মেসেজ চোখে পড়ে। মুহূর্তেই রাফিনের অধর কোণে স্নিগ্ধ হাসি ফুটলো। হাসিটা দীর্ঘস্থায়ী হলো না, ডাটা অন করতেই ঐশী’র পাঠানো ছবি গুলো দেখে মুখটা মলিন হয়ে গেলো।রাফিন যেদিন ইউনিভার্সিটিতে গিয়েছিলো সাইফের সাথে দেখা করতে, তখনকার ছবি এগুলো। মলি এমন একটা কাজ করবে ভাবতেই পারেনি রাফিন।”
“বুকের ভিতরে অজানা ভয়ের স্রোত বয়ে গেলো। তার মায়াবিনী তাকে ভুল বুঝলো নাতো। আজকের এই দিনে এমন একটা কান্ড ঘটবে কখনো কল্পনাও করেনি রাফিন। তার মায়াবিনী কে সারপ্রাইজ দিবার বদলে নিজেই সারপ্রাইজ হয়ে গেলো। মূহুর্তেই চেহারায় রাগের ছাপ স্পষ্ট হয়ে গেলো। এই মুহূর্তেই মন চাচ্ছে সব ত’ছন’ছ করে ফেলতে। ফোন ঘেঁটে দেখলো মলির কোনো নাম্বার নেই। এই মুহূর্তে রাফিনের ইচ্ছে করছে ঢাকা যেতে।এই মেয়েটা কে তার খু’ন করতে ইচ্ছে করছে তবেই শান্তি লাগতো।
” ঐশী’র কথা মাথায় আসতেই নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে লাগলো রাফিন। তার মায়াবিনী কেমন আছে?নিশ্চয়ই ভীষণ কষ্ট পেয়েছে। এই মুহূর্তে তাকে দেখা করতেই হবে তার মায়াবিনী’র সাথে।”
“ঐশী’কে কয়েক বার ফোন দিয়েছে বাট নো রেসপন্স। দুশ্চিন্তায় নিজেকে পা’গ’ল পা’গ’ল লাগছে তার। তাই বাধ্য হয়ে চৈতী কে কল দিলো। কিন্তু চৈতী ও রিসিভ করলো না, এতরাতে কল দিতে ইতস্তত বোধ করলো রাফিন। তবুও আরো একবার কল দিলো।
” ফোনের ভাইব্রেশনে’র শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো চৈতী’র। ঘুম ঘুম চোখে ফোনের দিকে তাকালো। রাফিনের এত রাতে কল পেয়ে ঘাবড়ে যায় চৈতী। চিন্তিতো হয়ে দ্রুত কল রিসিভ করলো। বিচলিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো ,
“হ্যালো রাফিন! কি হয়েছে ভাই তুমি ঠিক আছো?
“আমি ঠিক আছি চৈতী। আমি ভীষণ দুঃখিত এত রাতে কল দিবার জন্য। ঐশী ফোন রিসিভ করছে না কেন? ঐশী ঠিক আছে চৈতী?
” হ্যাঁ ও তো ঠিক আছে। বোধহয় ফোন সাইলেন্ট তাই শুনতে পায়নি। ও তো ঘুমাচ্ছে তুমি চিন্তা করো না।”
“তুমি একটু ঐশী কে তুলে দেও প্লিজ! আমি একটু দেখা করতে চাই।”
চৈতী বিস্মিত কন্ঠে বললো’ এখন দেখা করবে কি ভাবে ? তুমি কোথায় এখন?
” আমি বাড়িতে আসছি।একটু আগেই বাস থেকে নেমেছি। আমি তোমাদের বাসার সামনে দাঁড়ানো। প্লিজ চৈতী যাও না বোন! ঐশী কে একটু ডেকে দেও।”
” রাফিনের অসহায় কন্ঠ স্বর উপেক্ষা করতে পারলো না চৈতী। বাধ্য হয়ে ঐশী’র রুমে গেলো। ঐশী বেঘোর ঘুমে বিভোর। চৈতী’র ডাকে ঘুম ভা’ঙ’লো তার।”
“কি হয়েছে আপু? এত সকালে ডাকলে কেন? বিরক্ত হয়ে বললো ঐশী।”
“রাফিনের সাথে কথা বলতো? দেখ কি বলে। ছেলেটা এই শীতের মধ্যে বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে।
“রাফিনের কথা মাথায় আসতে’ই মনটা বিষাদে ভরে গেলো ঐশীর। চিন্তিতো হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“রাফিন ভাই কোথায় আপু? উনি ঠিক আছে।” এরি মধ্যে ফোনের ইস্কিনে “রাফিন ভাই” নামটা জ্বলজ্বল করছে৷ হ্যাঁ রাফিন কল দিয়েছে। ঐশী দ্রুত কল রিসিভ করলো৷ চৈতী নিঃশব্দে রুমে থেকে বেরিয়ে গেলো নিজের রুমে। রাফিন অসহায়ত্ব কন্ঠে বললো,
“মায়াবিনী একটু বাহিরে আসবে প্লিজ! আমি তোমার জন্য বাহিরে অপেক্ষা করছি বউ পাখি ।” বলেই কল কে’টে দিলো।
“আর যাই হোক ভালোবাসার মানুষের কন্ঠ স্বর কখনো উপেক্ষা করা যায় না। আপনি সত্যিকারে ভালোবাসলে তার কন্ঠস্বর শুনলে পিছনে তাকাবেন’ই। ঐশী আর কিছু ভাবলো না তড়িঘড়ি করে নিঃশব্দে বাসা থেকে বেরিয়ে আসলো। জ্যোস্নার আলোয় রাফিনের মুখশ্রীতে জুড়ে পরেছে। ঐশী দৌঁড়ে গিয়ে রাফিন কে জাপ্টে ধরলো। তারপরে শব্দ করে কেঁদে উঠলো। রাফিন কিছু বললো না, নিজে ও তার মায়াবিনী কে আগলে নিলো বাহুডোরে। এখন মনে হচ্ছে তার দেহের প্রা’ণ’টা ফিরে আসছে।”
“মিনিট দু’য়েক পরে’ই কান্না মিশ্রিত কন্ঠে ঐশী জিজ্ঞেস করলো,
আপনি ঠিক আছেন রাফিন ভাই? কি হয়েছিলো আপনার? আপনি সারাদিনে একবারো আমাকে ফোন দেননি কেনো? ফোন বন্ধ ছিলো কেনো? জানেন আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।”
“রাফিন ঐশী’র মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো, আমি ঠিক আছি মায়াবিনী। তুমি প্লিজ এভাবে কান্না করো না। তোমার চোখের নোনা জল আমার বুকে র’ক্ত’স্রোত বইয়ে দেয়। এই চোখের জল সহ্য করার ক্ষমতা আমার মোটেও নেই। তুবুও তুমি কাঁদো কেন মায়াবিনী? আহত কন্ঠে বললো রাফিন।”
-কিছু সময়ের মধ্যে ঐশীর কান্না থেমে গেলো।রাফিন ঐশী’র থুতনি হাত দিয়ে উপরে তুলে হাত দিয়ে চোখের জল মুছে দিলো।
” চাঁদের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠলো ঐশীর মুখময়। ফোলা ফোলা চোখ, এলোমেলো সিল্ক চুল গুলো কপালে পড়ে আছে অগোছলো , নাকে সাদা পাথরের একটা নাক ফুল চিকচিক করছে । চাঁদের আলোতে উজ্জ্বল ফর্সা মেয়ে’টাকে সবথেকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় লাগছে রাফিনের কাছে। তার ভিতরটা ও এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে যেন। স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করে মুগ্ধ হয়ে দেখছে তার মায়াবিনী’র এই ঝলমল রুপ।অধর জুড়ে ক্ষীণ হাসি। চাঁদের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আবার ঐশীর মুখের দিকে তাকালো। রাফিনের কাছে মনে হচ্ছে চাঁদের থেকেও সুন্দর তার মায়াবিনী। আবারও চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললো,
“চাঁদ তোর থেকে আমার বুকে থাকা চাঁদটা ভীষণ সুন্দর! খবরদার তুই আমার চাঁদকে হিংসা করিসনা।”
বলেই গভীর ভাবে তার মায়াবিনী’ র কপালে অধর ছুঁয়ে দিলো। ঐশী হুস আসতেই ছিটকে দূরে চলে গেলো। অভিমানী কন্ঠ বললো,
“একদম আমাকে স্পর্শ করবে না। যান ঐ মেয়ের কাছে যে আপনাকে জড়িয়ে ধরে ছিলো।
বলেই অন্যদিকে মুখ গুড়িয়ে নিলো। রাফিন আহত দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। পরক্ষনেই ঐশী’র কাছে গিয়ে পিছন থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। অপরাধী’র মতো নিচুু স্বরে বললো,
” ছিঃ! এসব কি বলো বউ পাখি! আমার এত সুন্দর বউ রেখে আমি কেন অন্য মেয়েদের কাছে যাবো। বউ রেখে অন্য কোনো মেয়ের নাম নিলেও ভীষণ পা’প হবে আমার। তুমি আমাকে বিশ্বাস করো না মায়াবিনী?”
“হুম অনেক বিশ্বাস করি আপনাকে। বলতে পারেন নিজের থেকেও বেশী ভরসা করি আপনাকে। আমার মনে অনেক প্রশ্ন। সব কিছু খুলে বলুন। সারাদিন কি হয়েছিলো? কে বা ঐ মেয়ে?জানেন ঐ মেয়ে আমাকে কত গুলো কথা শুনিয়েছে। আমি নাকি চ’রি’ত্র’হী’ন। শরীর দিয়ে আপনাকে ভ,,,,,,,,
ঐশী আর বলতে পারলো না। রাফিনের রাগে মাথা ফে’টে যাচ্ছে। চিৎকার দিয়ে বললো ঐশী স্টপ ইট! ঐশী চুপ করে রইলো। রাফিন নিজেকে শান্ত করে অপরাধী’র মতো কন্ঠ করে বললো,
“আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি বউপাখি। আমি সত্যি ভীষণ ব্যস্ত ছিলাম সারাদিন তাই তোমার ফোন দেখিনি। কলেজ থেকে ছুটি নিয়েই গাড়িতে উঠলাম। তাই ভাবলাম আজকে তোমাকে সারপ্রাইজ দিবো। তাই সারাদিন ইচ্ছে করেই যোগাযোগ করিনি। আর ফোনে অল্প চার্জ ছিলো তাই ফোন অফ করে রেখেছি।
“তোমাকে দেখতে চাওয়ার অসুখটা যে বুকের মধ্যে ক্রমাগতে বেড়েই চলছে মায়াবিনী। খাঁ খাঁ হয়ে পু’ড়ে যাচ্ছে ভেতর বাহির। পুরো একটা শহর বিষন্নতায় ডুব মেরেছে। অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে কত বসন্ত বিকেল। ফুরিয়ে যাচ্ছে কালবৈশাখী হাওয়া। তুমি হীন চারপাশ ফাঁকা, শূন্য। আমার কি জানি কি হারিয়ে গেছে, কি যেন কি নাই। লাগামহীন দুঃখ গুলোকে ভীষণ ভালোবেসে খুচরো পয়সার মতো বুক পকেটে রাখতে আমার কি কস্ট হয় না বলো? তাইতো ছুটি নিয়ে’ই এই রাতে চলে আসছি মায়াবিনীর শহরে। কিন্তু তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে নিজেই এতবড় সারপ্রাইজ পাবো বুঝিনি। এসেই তোমার চোখের জল দেখতে হবে ভাবিনি। তারপর মলির করা ঘটনা গুলো খুলে বললো রাফিন।
“আপনি আগে বলেন’নি কেন এসব? ঐ মেয়ের সাহস কি করে হয় আপনাকে স্পর্শ করার, ভালোবাসি বলার। জানেন আমি ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। তার উপরে আপনি ফোন রিসিভ করেননি, বন্ধ করে রেখেছেন।
“প্রসজ্ঞ যেখানে আপনি, সেখানে আপনি সম্পূর্ণ আমার!” অভিমানী কন্ঠে বললো ঐশী।
“আমি ভীষণ ভীষণ স্যরি মায়াবিনী! আমাকে প্লিজ ভুল বুঝো না। আমি চাইনি তুমি এসব ভেবে শুধু শুধু কষ্ট পাও। যেখানে তুমি কষ্ট পাবে বলে অন্য মেয়েদের দিকে চোখ তুলে তাকাইনা। সেখানে মলি নামক হাজার’টা মেয়ে আমার কাছে শূন্য। আমি তো তোমাতেই পরিপূর্ণ মায়াবিনী! সেখানে মলির কথা প্রশ্নই আসে না।
-মলি এমন একটা কাজ করবে আমি কল্পনা ও করিনি কখনো। তোমাকে বাজে কথা বলার মতো দুঃসাহস দেখিয়ে খুব বড় ভুল করেছে। আমাকে শুধু ঢাকা যেতে দেও, ওর তো একটা ব্যবস্থা করতেই হবে। ক্রোধিত কন্ঠে বললো রাফিন।
“এই শুনুন আপনি একদম ঐ মেয়ের কাছে যাবেন না। তার সাথে কথা তো দূরের কথা, আপনি তার থেকে হাজার মাইল দূরত্ব বজায় রেখে চলবেন। ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললো ঐশী।”
“বাহ্ আমার বউতো দেখছি ভীষণ হিংসু’টে। বাঁকা হেসে বললো রাফিন। মূলত ঐশী কে রাগানো জন্য’ই। কিন্তু রাফিন কে অবাক করে দিয়ে ঐশী বললো’
হ্যাঁ! আমি বরাবরই খুব বেশী হিংসুটে। আপনার বুক পকেটে ফুল থাকলে সেটাও হবো আমি। আমি বরাবরই খুব খুব হিংসুটে! আপনার বুক পকেটে পছন্দের ফুল থাকলে আমি সেটাকে অনেক ঈর্ষা করি! কেননা, আপনার বুকটা শুধু আমার জন্য। আর অন্য নারী হলেতো আমার হৃদয় পুড়িয়ে দিবে বুঝতে পেরেছেন? আমার ভালোবাসা, আমার প্রিয়তম শ্যামসুন্দর পুরুষ! আমার হৃদয়ের রাজা আপনি। ভীষণ ভীষণ ভালোবাসি আপনাকে।”
“আমিও ভীষণ ভীষণ ভালোবাসি আমার মায়াবিনী কে! বলেই নিজের বুকের সাথে মিলিয়ে নিলো তার মায়াবিনী কে।দুজনই চুপআছে, দুজন দুজনকে অনুভব করতে লাগলো। কিছুসময় পরে রাফিন মোহনীয় স্বরে ডাকলে,
“মায়াবিনী!”
“হুম”
“তোমার মনে সন্দেহ নেই তো? আমাকে বিশ্বাস করতো পুরোপুরি। আমায় কখনো সন্দেহ রেখে বা দায়িত্বের দায়ে ভালোবেসো না। আমি তোমার হৃদয়ের একান্ত শুদ্ধ পবিত্র ভালোবাসা চাই। কখনো এমন স্বার্থপরের মতো দায়িত্বের দায়ে ভালোবেসো না প্লিজ। তোমার অবহেলা নিবার মতো ক্ষমতা আমার শূন্যের কোঠায়। আমি আবার ও স্যরি বলছি সব কিছুর জন্য। ঐশী একটু চুপ করে বললো,
“বড্ড স্বার্থপর আমি,জানেন তো?
এই যেমন ধরুন;আপনি আমাকে ভালোবাসলে,আমিও আপনাকে ভালোবাসবো,এমনকি মন থেকেই ভালোবাসবো আর তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আপনি শত ব্যস্ততার পরেও আমাকে সময় দিবেন,আমিও ব্যস্ততাকে অগ্রাহ্য করে আপনাকে সময় দিবো। অল্প একটু সম্মান দিবেন,তো আমি আপনাকে পুরোটাই সম্মান দিবো।আমাকে গুরুত্ব দিবেন,আপনাকেও গুরুত্ব দিবো। আমিও ঠিক বাচ্চাদের মতো!
আমাকে একটু আদর দিলে,আপনার পিছু ছাড়বো না।
তবে…..
আমার সাথে শুভাকাঙ্ক্ষীর মুখোশ পরে প্রতার*ণা করলে,আপনার কোনো ক্ষতি কিংবা প্রতিশোধ নিবো না ঠিকই কিন্তু আপনাকে টুস করে জীবন থেকে মুছে ফেলবো!আজন্মের এড়িয়ে চলা কাকে বলে,দেখিয়ে দিবো আপনাকে।
কোনো ভাবে যদি বুঝতে পারি,আমার সাথে আলগা পিরিত দেখাচ্ছেন,তবে আপনার মুখটাও আমি কোনোদিন দেখবো না!যদি কোনোভাবে বুঝতে পারি,আপনার জীবনে আমার বিন্দুমাত্র গুরুত্ব নেই–তবে আপনার দ্বারে কাছেও আমি কোনোদিন যাবো না! আমি আসলে কারো কাছে ঋণী থাকাটা পছন্দ করি না।আপনি যতুটুকু দিবেন,ততটুকুই আমি ফেরত দিবো।সম্ভব হলে তার দ্বিগুণও আমি ফেরত দিতে পারি।
এই যেমন ধরুন;
আপনি আমাকে যতটুকু ভালোবাসবেন,আপনার থেকে এক চুল পরিমাণ বেশি হলেও আমি আপনাকে ভালোবাসবো। আপনি অবহেলা দিবেন?হাহাহাহা! আসলে আপনাকে দ্বিগুণ অবহেলা করার ক্ষমতা আমি রাখি! আমার সাথে Just For Enjoy Or Time Pass করতে আসলে,আপনি নিশ্চিত বোকা বনে যাবেন!
আর এ যুগে এটুকু স্বার্থপর না হলে কি চলে?বলুন….
সব প্রতিশোধ নিজ হাতে নিতে হয় না,কিছু প্রতিশোধ পাল্টা অবহেলা কিংবা একটু স্বার্থপর হয়েও নেয়া যায়।”
” রাফিন কিয়াৎক্ষণ ঐশী’র মুখশ্রীর পানে তাকিয়ে রইলো। এই মেয়েটা খুব বড় হয়ে গিয়েছে। কি সুন্দর গুছিয়ে কথা বলছে। রাফিন বেশ খুশি হয়েছে। অধর কোণে মিষ্টি হাসি নিয়ে বললো,
বিশ্বাস রাখতে পারো মায়াবিনী। আমি তোমার বিশ্বাসের অমর্যাদা কখনো করবো না। তবে তুমি কিন্তু তোমার কথা রাখোনি?
ঐশী ভাবুক হয়ে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো,
“কি?”
“কেউ বলেছে সে নাকি ঋণী থাকা পছন্দ করে না। তো আমি যে তাকে চুমু দিলাম তা ফেরত দিয়ে দিবে কখন সে?”
“রাফিনের এমন কথায় লজ্জা পেলো ঐশী। আমতা আমতা করে বললো, প্রায় সকাল হয়ে গিয়েছে আপনি চলে যান এখন। আমি বাসায় গেলাম। বলেই দ্রুত পায়ে ভিতরে চলে গেলো। রাফিন হাসলো, মুখটায় ঈষৎ সমবেদনা টেনে বললো,
“এটা কি হলো বউ? তুমি কথা রাখলে না। আমার চুমু ফেরত না দিলে আমি কিন্তু এখানে দাঁড়িয়ে থাকবো বলে দিলাম। নাহয় শ্বশুড়ের কাছে বিচার দিবো কিন্তু বলে দিলাম।”
ঐশী থেমে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো, কিসের বিচার দিবেন শুনি?
“বলবো আপনার মেয়ে আমার চুমু খেয়ে আমাকে আর ফেরত দিতে চাচ্ছে না।” চোখ টিপ দিয়ে বললো রাফিন।”
ঐশী রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠলো, অ’স’ভ্য লোক একটা! বলেই ভিতরে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো। মনে মনে হাসলো খুব। রাফিন আর দেরি না করে বাসার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো।
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
[ কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ! ]
আসসালামু আলাইকুম বাচ্চারা! গল্প কেমন হয়েছে জানাবে কিন্তু। আজকে দুই পর্ব একসাথে দিলাম, এজন্য তোমাদের রেসপন্স আশা করছি। সবাই গঠন মূলক মন্তব্য করবে।যে কোনো ভুল-ক্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। মার্জিত ভাবে ভুলগুলো ধরিয়ে দিবার দায়িত্ব আপনাদের দিলাম।