#মন_পাথরে_হঠাৎ_ঝড়
#পর্ব_১৯
Tahrim Muntahana
সকাল গড়িয়ে দুপুর হওয়ার উপক্রম। সবাই হৃদানদের বাড়িতেই আছে। ড্রয়িং রুমে বসে আছে সবাই। কেউ কথা বলছে না। নিরাবতা পালন করছে। কিন্তু চার কুপোতকুপোতি নিজেদের মধ্যে চোখে চোখে কথা বলেই যাচ্ছে। চার জুটির মতিগতি লক্ষ্য করছে স্বয়ং পান্চু। তার মনে বহুত দুঃখ। মুখটা হুতুম পেঁচার মতো করে রেখে একবার এদিক তাকাচ্ছে তো আরেকবার ওদিক তাকাচ্ছে। বেশী চোখ যাচ্ছে তার বসের দিকে। একবার ঠোঁট চোখা করছে তো আরেকবার চোখ মারছে। আদর ও তো কম যায় না। সেও পাল্টা জবাবে কখনো চোখ মারছে অনবরত আবার কখনো তার বসের থেকে দ্বিগুন হারে ঠোঁট চোখা করছে। এসব দেখে টাক্কুর হাত তার টাক মাথায় এমনিই চলে যাচ্ছে। আফসোস ও তার তিনগুন হয়ে যাচ্ছে। আর ওই মেয়েটার দেখা পাইনি সে। এরপর একবার দেখা পাইলে সোজা কাজি অফিস চলে যাবে। আর কোনো ছাড় নেই।
পান্চুর এমন প্রেম প্রেম পরিবেশ ভালো লাগছে না। সে সিঙ্গেল থেকে দুঃখ পাবে আর তার বস মজা নিবে তা তো হয়না। দাড়া তোদের প্রেমে হাত ঢুকাচ্ছি। মনে মনে প্ল্যান করে সামনে এগোনোর আগেই থেমে গেলো। ভয় লাগছে। তার বস মানুষটা ভালা না। যদি ধুম করে কিল বসিয়ে দেয় টাক মাথায়!
নাহ পান্চু না। তোর যেতেই হবে। এটা তোর মতো ঝুলে থাকা সিঙ্গেলদের সংগ্রাম। মনে মনে বলে আস্তে করে এগিয়ে গেলো পান্চু। হৃদানের থেকে দুরুত্ব বজায় রেখে ভদ্রতার সহিত বলে উঠলো,
বস আর্জেন্ট দরকার ছিলো। আজকে মিটিং আছে সেই বিষয়ে।
হৃদান বিরক্ত হলো। শান্তিতে প্রেম ও করতে পারবে না নাকি। এই বিজনেস চুলোই যাক। কিন্তু ডিলটা খুব ইমপরটেন্ট ছিলো। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজকে নিতে হবে। তাই অগত্যা উঠে হাটা ধরলো নিজের রুমে। পান্চু নিজেকে বাহুবা দিয়ে হৃদানের পিছু নিবে পাশ ফিরে দেখতে পেলো পিয়াস-রোহানি দুজনে বেশ গল্প করছে। হাসতে হাসতে একজনের উপর আরেকজন ঢুলে পড়ছে। তোদের হাসাহাসি করাচ্ছি দাড়া। ভেবেই পিয়াসের একদম কাছে গিয়ে বলে উঠলো,
বস ডাকছে স্যার চলুন।
পিয়াসের রাগ হলো। হাটুর উপরে রাখা ছোট বালিশ টা খামচে ধরলো। মনে হচ্ছে হৃদান কে চিবিয়ে খেতে পারলে শান্তি লাগতো। শালা নিজে প্রেম করবে অথচ তার প্রেমে বাঁধা দিবে। পান্চু তাড়া দিতেই অগত্যা তাকে উঠতে হলো। রোহানির মুখটাও মলিন হয়ে গেলো। আহা সময়টা কত ভালো যাচ্চিলো। এই জিজুটা যে কি করেনা। সবসময় কাজ আর কাজ। বিয়ের দিন শোধ তুলবে সে। ভেবেই মনে মনে হেসে মাথা ঝাঁকালো। যেন এখনি সে হৃদানের উপর শোধ নিয়ে নিয়েছে। পান্চু খুশি মনে উপরে চলে গেলো। আহা এখন কর প্রেম। কিছু সিড়ি ভেঙে নিচের দিকে তাকাতেই দেখলো আতইয়াব তারিমের হাত ধরে বসে আছে। মুখে হাসি টেনে আস্তে আস্তে কিসব বলছে আর তারিম লাল নীল হলুদ সবুজ বেগুনি হয়ে যাচ্ছে। তার পাশেই সোফায় ফালাহ-সুবাহ কিছুক্ষণ কথা বলছে তো কিছুক্ষণ এটা ওটা নিয়ে খুনসুটি ময় ঝগড়া করছে। টাকলা মাথাটাই হাত বুলালো পান্চু। নাহ এদের কেও ছাড় দেওয়া যাচ্ছে না। শাস্তি এদের কেউ পেতে হবে। ঝটপট নিচে নেমে এসে তারিমের সামনে মাথা নিচু করে দাড়ালো। আতইয়াব তখনো তারিমের হাত ধরে আছে। পান্চুর মনে হচ্ছে দিলটা ফেটে যাবে। মনে মনে আতইয়াব কে নির্লজ্জ বলেও ক্ষান্ত হলো না। তারিম কে উদ্দেশ্য করে বলল,
তারুআপু বস কফি দিতে বলল।
তারিম জোর করে আতইয়াবের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলো। বসা থেকে উঠে বলে উঠলো,
আচ্ছা তুমি যাও পান্চুভাইয়া আমি বানিয়ে দিচ্ছি। সবার জন্য চা ও করতে হবে।
এই বলে হাটা ধরলো তারিম। আতইয়াব মুখটা পাংসুটে করে হিমেলের সাথে কথা বলতে লাগলো। হিমেল এতক্ষণ ফোন টিপছিলো। অন্যকিছু দেখার সময় নেই তার। পান্চু এবার সুবাহ’র দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
সুবু আপু তারুআপু কে সাহায্য করো একটু। একা একা কাজ করছে!
চমকে উঠলো ফালাহ-সুবাহ। এতক্ষণ নিজেদের প্রেমালাপে ব্যস্ত ছিলো। হুট করে দাড়িয়ে গেলো সুবাহ। লজ্জা পেয়েছে একটু। রান্না ঘরের দিকে ছুটলো। ফালাহ নিজের অবস্থান থেকে উঠে আতইয়াবের পাশে বসে আলাপ করতে লাগলো। পান্চু একগাল হাসলো। আহ এখন শান্তি লাগছে। আদর লক্ষ্য করছিলো পান্চুকে। পান্চু আদরের দিকে তাকিয়ে টাক মাথায় হাত দিয়ে ভ্রু নাচালো। আদর খিলখিল করে হেসে দিলো। সে সবটাই বুঝতে পেরেছ। তার এত হাসি পাচ্ছে যে বলার বাহিরে।
উপরে পান্চুর জন্য অপেক্ষা করছে হৃদান পিয়াস। সেই কাজের কথা বললো অথচ তার ই আসার নাম নেই। পান্চু আসতেই হৃদান ভাবলো একটা ঝারি দিবে পরে ভাবলো থাক আজ ঝারি দিয়ে কাজ নেই। বিশেষ একটা দিন আজ। পান্চু এসে আগের দিনের কাজ গুলোই বারবার রিপিট করছে দেখে হৃদান ভ্রু কুচকালো। পান্চু ভয় পেলো। আস্তে আস্তে সরে এসে দরজার কাছে দাড়িয়ে বলে উঠলো,
আপনাদের প্রেম দেখে আমার মতো ঝুলে থাকা সিঙ্গেলদের বুঝি কষ্ট হয়না। আজকে আর পাবেন না আমাকে!
লে দৌড়। হৃদান এবার বুঝতে পারলো পান্চুর কাজ কি। রাগ হলো না বরং প্রচন্ড হাসি পেলো তার। লাইক সিরিয়াসলি পান্চুর ও প্রেম করার শখ জেগেছে। দুজনে হাসলো। হেসে নিচে চলে গেলো। এসে দেখলো পান্চু নেই। বাড়ির বাইরে চলে গেছে ভয়ে। আরেকদফা হাসাহাসি করে নিলো সবাই।
আড্ডার মাঝেই উপস্থিত হলো রিয়া। এসেই হিমেল কে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে দিলো। মানুষটাকে কতদিন ধরে দেখে না। হিমেল আগলে নিলো নিজের প্রেয়সীকে। বাবা তার পেছনে লোক লাগিয়ে দিয়েছিলো তাই তো চাইলেও রিয়ার কাছে যেতে পারতো না সে। সবাই ভাবলো ওদের একটু সময় দেওয়া দরকার। কিন্তু হিমেল বাঁধা দিলো। তার হাতে সময় খুব কম। হিয়ান খান জানতে পারলে সমস্যা হয়ে যাবে। আদর নিজেই রিয়ার কাছে আসলো। রিয়া প্রথমে দেখেই চিনতে পারেনি। পরে খেয়াল করতেই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। আদর মাথা নেড়ে সায় দিতেই রিয়া আদরের হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নিলো। আদর মুচকি হাসলো। রিয়া বিচলিত হয়ে বলে উঠলো,
আমার ডায়েরী! ডায়েরীটা যত্নে রেখেছো তো।
আদর মাথা নাড়ালো। রিয়াকে নিয়ে সোফায় বসলো। হৃদান তারিমের দিকে ইশারা করে বলল,
তোমার ফুফাতো ভাই-বোন। হৃদান চৌধুরী ও হৃদযা চৌধুরী।
রিয়া অবাক হয়ে তাকালো ওদের দিকে। ওর যেন বিশ্বাস ই হচ্ছে না। তারিম এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে রিয়ার পাশে বসলো। আদর আবার বলল,
তোমার রিদিমা ফুফুর ছেলে মেয়ে এই দুজন। আর তোমার ডায়েরী ঠিক আছে। এমন কি তোমার বাবাও বেঁচে আছে।
রিয়া আকস্মিক দাড়িয়ে গেলো। তার মাথা ঘুরছে। কি বলছে এসব। তার বাবা বেঁচে আছে। তারিম আবার বসিয়ে দিলো রিয়াকে। সবটা জানালো। রিয়া থম মেরে বসে রইলো কিছুক্ষণ। কান্নারা যেন উপচে পড়তে চাইছে। হিমেল মাথা নিচু করে বসে আছে। কেন জানি নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে তার। রিয়া বলে উঠলো,
আমাকে আমার বাড়িতে যেতে হবে হিমু। ওখানেই আছে এসবের পেছনের কারণ। কেন এতগুলো মানুষ কে হত্যা, বাবা কে আটক সব রহস্য ওই বাড়িতেই। আমি ডায়েরীর মধ্যের এক পাতা ছিড়ে ফেলেছিলাম। সেখানেই বাবা স্পষ্ট করে লিখে গেছে সব প্রমাণ, কারণ তার ঘরের সিক্রেট রুমে আছে। যেতে হবে আমাকে। হিমু নিয়ে চলো আমাকে।
রিয়া হিমেলের দিকে আকুতি ভরা নয়নে তাকিয়ে আছে। হিমেল উঠে দাড়ালো। হৃদান সামনে এসে বলল,
শুধু তোমরা না আমরাও যাবো। আমাদের ও সব রহস্য জানতে হবে। কেন আমার বাবাকে খুন করা হলো জানতে হবে!
আর কথা বাড়ালো না কেউ। দুটো গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। এখান থেকে অনেকটা পথ যেতে হবে। গাড়িতে কেউ কারো সাথে কথা বললো না। সবারই মনের মধ্যে উৎকণ্ঠা কাজ করছে। আজকেই কি রহস্য সব খোলাসা হবে নাকি আবার রহস্যের সন্ধান পাবে। যেতে যেতে প্রায় সন্ধ্যা লেগে গেছে। চারদিকে কেবল অন্ধকার হতে শুরু করেছে। ভালোই হলো। রাতের আঁধারে কেউ টের পাবে না। হৃদান সাথে গার্ড নিয়ে এসেছে। পুরো এরিয়াটা ঘেরাও করা। কোনো রিস্ক সে নিতে চায়না। চৌধুরী বাড়িটা এখনো মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে। গেটের সামনে দুজন প্রহরী। সরকার কর্তৃক তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। আহনাফ চৌধুরী একজন সৎ কমিশনার ছিলেন এইটুকু সার্ভিস তার পাওয়া উচিত। দুজন গার্ড এতো মানুষ দেখে এগিয়ে আসলো। ভেতর থেকে বেরিয়ে আসলো একজন বৃদ্ধ লোক। হৃদান ততক্ষণে গার্ড দ্বারা প্রহরী দুজনকে সরিয়ে দিয়েছে। বৃদ্ধ লোকটাকে দেখে দৌড়ে এগিয়ে গেলো রিয়া। চোখ থেকে টপটপ পানি পড়ছে। লোকটি বয়সের ভাড়ে খানিকটা নুইয়ে গেছে। পাওয়ারের চশমা টা হাত দিয়ে ঠিক করে রিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো। মুখটা কেমন চেনাচেনা লাগছে। মনে করতে পারছে না। বয়স হয়েছে; চোখে ছাউনি পড়েছে ; ওতসব কি মনে থাকে। রিয়া আবেগে উৎফুল্ল হয়ে বলে উঠলো,
মিও দাদু!
চমকে উঠলো বৃদ্ধটি। কে ডাকছে এই নামে? অনেকদিন পর এই ডাকটা শুনলো সে। কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে তার। অনেকদিন হলো মুখে হাসি নেই তার। লাঠিতে ভর করে বিচলিত কন্ঠে বলে উঠলো,
কে ডাকলা, এই নামে কে ডাকলা এহন?
মিও দাদু আমি রিয়া। চিনতে পারছো আমাকে। আমি তোমার সেই ছোট বিড়াল ছানাটা!
লাঠির ভরটা ছেড়ে দিলেন বৃদ্ধটি। রিয়া খপ করে ধরে নিলো তাকে। সবাই অবাক হয়ে দেখছে। বৃদ্ধটি তাড়াতাড়ি ভেতরে চলে গেলো। রিয়াও ছুটলো তার পেছনে। মানুষটা বড্ড শকড পেয়েছে এই বয়সে। হৃদান রাও গেলো। সবকিছু শুনতে হবে।
রিয়া সরাসরি নিজের ঘরে ঢুকে পড়লো। এই বাড়ির প্রত্যেকটা কোণা তার চেনা। এই বাড়িই তার জগত ছিলো যে। বৃদ্ধটি একটা ছবি ফ্রেম আগলে রেখে নিচে বসে আছে। ঘরটা একদম ঝকঝক করছে। মনে হচ্ছে না এখানে কেউ থাকেনা। এতবড় বিছানা থাকা সত্ত্বেও বৃদ্ধটি নিচে বিছানা করে ঘুমাই। রিয়া বৃদ্ধটির পাশে বসে পড়লো। বৃদ্ধটির চোখে পানি। হয়তো পুরোনো কথা মনে পড়েছে। রিয়া শুনতে পেলো বৃদ্ধটি আধো আধো ভাঙা গলায় বলে চলছে,
আমার ছোড বিলাই ছানা একদিন আসবো। আসবো দেইখাই তো বাঁইচা আছি এহনো। না হইলে কবেই মইরা যাইতাম।
রিয়া আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না। বৃদ্ধকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। একটা মানুষ কতটা ভালোবাসলে এতটা বছর অপেক্ষা করতে পারে। বৃদ্ধটির হাত থেকে ছবিটা শক্ত তোশকটিতে পড়ে গেলো। আশ্চর্য হয়ে বুঝতে লাগলো ব্যাপারটা। হিমেল গিয়ে রিয়াকে সামাল দিলো। বৃদ্ধটি এত মানুষ দেখে আবার নিজেকে কঠোর করে নিলো। রিয়া বলল,
মিও দাদু আমিই তোমার ছোট বিড়াল ছানা। মনে আছে কত খেলতাম তোমার সাথে। আমার সবটা সময় তো কেটেছেই তোমার সাথে। আমাকে বাবা-মার মতো আগলে রেখেছিলে।
বৃদ্ধটি আলতো করে রিয়ার মুখটা ছুয়ে দিলো। দাঁত ছাড়া মুখটাতে হাসি ফুটে উঠলো। চোখের কোণে পানি এখনো চিকচিক করছে। এই বৃদ্ধটি আগে আহনাফ চৌধুরীর বাড়িতে কাজ করতো। মূলত গ্রাম থেকে রিয়ার দেখাশুনার জন্যই তাকে এনেছিলো আহনাফ চৌধুরী। এরপর থেকেই তিনি সবটা সময় ব্যয় করতো রিয়ার দেখাভালের পেছনে। খাওয়া থেকে ঘুমানো গোসল করানো সবটা সে খেয়াল রাখতো। রিয়ার জগতে মা-বাবা ও এই বৃদ্ধটাই ছিলো। ভালোবেসে মিও দাদু বলতো; আর বৃদ্ধটি বিলাই ছানা বলতো।
পরিবেশ এখন শান্ত। বৃদ্ধটি চোখ মুখ বিষণ্ন করে বলতে লাগলো,
হেইদিন সাহেব আমারে জোর কইরা অন্য জায়গাই না পাঠাইলে ওমন হইতো না। আমার বিলাই ছানাকে হারাইতে হইতো না। সাহেব রেও না। এত বছর অপেক্ষা করছি বিলাই ছানার জন্যে। বাড়িডায় একডা মানুষ ও ঢুকতে দেই নাই।
কাঁদতে শুরু করলেন। একটা রাত কতকিছু কেড়ে নিয়েছে। রিয়া ওরা বুঝালো। বৃদ্ধটি ওদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে গেলো। কতবছর পর বৃদ্ধটির মুখে হাসি ফুটেছে। ওরা না করলো না। বাবার রুমে ঢুকে পড়লো রিয়া। দেয়াল গুলো ভালো করে চেক করে আলমারি টা সরাতে বললো হৃদান দের। তাই করলো। আলমারি সরাতেই রিয়া হাত দিয়ে দেয়ালে তিন-চারটা টোকা দিলো সাথে সাথে নিশব্দে দরজা টা খুলে গেলো। ভেতরে ঢুকে পড়লো সবাই। ঘরটিতে অস্ত্রের অভাব নেই। জং ধরে গেছে। রিয়া সোজা টেবিলের দিকে ছুটলো। ময়লার আস্তরণ পড়ে আছে। ডয়ারটা খুলতেই চোখে পড়লো কয়েকটা পেনড্রাইভ। হাতে তুলে নিলো। কয়েকটা দলিল। সম্পত্তির দলিল। স্পষ্ট লিখা আছে তার সব সম্পত্তির অর্ধেক তার মেয়ে আর অর্ধেক তার বোন রিদিমা চৌধুরী। যা পাবে তার ছেলে মেয়ে। রিয়া হৃদানের হাতে দলিলটা দিলো। হৃদান দেখলো না রেখে দিলো। তার এসবে ইন্টারেস্ট নেই। তার কি কম আছে!
সারাঘর খুঁজলো। আর কিছু পেলো না। বের হয়ে আসলো ঘর থেকে। রাত দশটাই সবাই খেতে বসলো। নিজ হাতে রিয়াকে বেড়ে দিচ্ছে বৃদ্ধটি। রিয়া মায়াভরা চোখে দেখছে সবটা। খাওয়া দাওয়া শেষে চলে আসার প্রস্তুতি নিতেই বৃদ্ধটি মন খারাপ করলো। রিয়া বলল,
আমি একা যাচ্ছি না। তুমি যাবে আমার সাথে। একসাথে থাকবো। চিন্তা নেই তোমার সাহেব ও ফিরে আসবে। আবার প্রাণ ফিরে পাবে চৌধুরী বাড়ি।
বৃদ্ধটি ফোকলা দাঁতে হাসলো। তার মহা আনন্দ হচ্ছে। বেরিয়ে পড়লো সবাই। বাড়ি ফিরে পেনড্রাইভে কি আছে দেখতে হবে। কাল থেকেই তাদের আহনাফ চৌধুরীকে খুঁজার মিশন শুরু হবে।
আদ ও কি সে বেঁচে আছে?
চলবে…?
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনাদের মতামত আশা করছি। নেক্সট নেক্সট না করে গল্প সম্পর্কে কিছুটা বলুন! শুকরিয়া!)