#ভালোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ
#writer_sumaiya_afrin_oishi
#পার্টঃ৪২
রাফিন ক্রোধিতো কন্ঠে বলে উঠলো,
“মলি তুই এখানে কেনো এসেছিস?”
“মলির মুখ দেখেই মনে হচ্ছে বহু সাধনা করা জিনিস’টা সে পেয়েছে। চোখে মুখে খুশী’র রেখা, মলি কোনো কথা না বলে হুট করে রাফিন কে জড়িয়ে ধরলো। রাফিন দু’পা পিছিয়ে গেলো বাট শেষ রক্ষা হলো না। মলি ছলছল চোখে তাকিয়ে বললো,
-“তুই আমার থেকে পালিয়ে পালিয়ে থাকিস কেনো রাফিন? কেনো বুঝিস না আমি তোকে খুব ভালোবাসি রে। জানিস কতদিন খুঁজে খুঁজে তোর ঠিকানা বের করেছি।”
“মলির এমন আচরণে চোখ মুখ শক্ত করে ফেললো ঐশী। বুঝতে পেরেছে এটাই সেই মলি। রাফিনের এত কাছে মলি’কে সহ্য করতে পারলো না। রাফিন কিছু বলার আগে’ই ঐশী মলির চুলের মুঠি ধরে এক ধাক্কা’য় ছাড়িয়ে দিলো রাফিনে’র থেকে। মলি এতোক্ষণ খেয়াল’ই করেনি ঐশী কে। ধাক্কা খেয়ে টাল সামলাতে না পেরে ছিটকে দূরে সরে গেলো মলি। উচ্চ স্বরে ঐশী কে বললো,
“এই মেয়ে তোমর এতবড় সাহস হলো কী করে আমাকে ধা’ক্কা দেওয়ার। কে তুমি?”
রাগে ফুঁসছে ঐশী, ক্রোধিতো দৃষ্টিতে এক পলক রাফিনের দিকে চেয়ে, ঝাঁঝালো কন্ঠে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
“এই অস”ভ্য মেয়ে! আপনার এত বড় সাহস কি করে হয়, আমার সামনে আমার স্বামী’কে জড়িয়ে ধরার। আমার বাসায় এসে আমাকে বলছেন আমি কে?
“মলি এবার বুঝতে পারলো এটা ঐশী। ঐশী’র সাথে শুধু একবার কথা হয়েছিলো তাও ফোনে, কখনো দেখেনি কেউ কাউকে। সত্যি রাফিন বিয়ে করেছ? ঐশীর মুখে “আমার স্বামী” শব্দ দুইটা শুনে যেন, মলির বুকটা ভারী হয়ে আসলো, মনে হচ্ছে বিশাল আকাশ’টা তার মাথার উপরে ভেঙে পড়লো, বুকের ভিতরে চিনচিন ব্যথা অনুভব হচ্ছে। মলির চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়লো, ক্ষীণ কন্ঠে রাফিনের দিকে তাকিয়ে বললো,
“স-স্যতি তুই বি-বিয়ে করছিস রাফিন? বল সব কিছু মিথ্যা! ঐ মেয়ে মিথ্যে বলছে।”
রাফিন গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
“কেনো তোর সন্দেহ আছে? ঐশী আমার বিয়ে করা বউ। আমার সামনে বসে আমার বউয়ের সাথে উচ্চ স্বরে কথা বলবি না। তোকে বলছি না হুটহাট আমার সামনে তুই আসবি না। এ-সব আমার একদম পছন্দ না। তোকে বাসার ঠিকানা কে দিয়েছে?”
মলি এবার রাফিনের একটু কাছে এসে বললো,
“কেনো আমি তোর কাছে আসবো? একশো বার আসবো, হাজার বার আসবো। আমি তোকে ভালোবাসি! তোর উপরে আমার যথেষ্ট অধিকার আছে।”
রাফিনের এবার সহ্য সীমা অতিক্রম করে ফেললো, মলিকে কষিয়ে একটা থা’প্প’ড় দিয়ে রাগী কন্ঠে বললো,
” এই থা’প্প’ড়টা তোকে অনেক আগে দেওয়া উচিত ছিলো। অনেক সহ্য করেছি তোর এসব বে’হা’য়া”প’না, কিন্তু আর না। তোকে আগেই বলেছি আমি অন্য একজন কে ভালোবাসি। আমি কী কখনো বলছি, আমি তোকে ভালোবাসি? অযথা কেনো এতো ঝামেলা করছিস?”
মলি ছলছল চোখে, করুন কন্ঠে বললো,
“কিন্তু আমি তোকে ভালোবাসি রাফিন ! অসীম এ ভালোবাসা কেনো বুঝলি না তুই? প্লিজ ফিরে আয় না! আমি তোকে অন্য কারো পাশে সহ্য করতে পারি না। ভিতরটা পু’ড়ে যাচ্ছে আমার!”
ঐশী এতক্ষণ নিরব দর্শক থাকলে ও আর সহ্য হলো না। বাঙালি মেয়ে আর যাই হোক স্বামী”র ভাগ অন্য কাউকে মোটেও দিবে না। এ বিষয় তারা খুব সিরিয়াস! ঐশী বা”ঘি”নী’র ন্যায় মলির ঘাড় ধরে দরজার বাহিরে বের করে দিলো। ক্রোধিতো কন্ঠে বললো,
“একটা মেয়ে কতোটা নির্লজ্জ হলে, অন্যের স্বামী’র গায়ের উপরে পড়ে। আমার সামনে আমার স্বামী কে চাইবে, আর আমি সহ্য করবো, এতোটা উদার আমি নই। ফের যদি আপনাকে উনার আশেপাশে দেখছি, তাহলে আপনাকে খু’ন করতে ও আমি দু’বার ভাববো না। এসব অধিকার দেখাতে ইচ্ছে হলে, আমার বাসা থেকে বেরিয়ে অন্য কোথাও গিয়ে দেখান। বলেই মুখের উপরে দরজা বন্ধ করে দিলো।”
এক তরফা ভালোবাসা খুব ভয়াবহ! মলির কলিজা ছিঁ’ড়ে যাচ্ছে এই অসহ্য যন্ত্রণা’য়। দরজার সামনে বসে মুখ বুঝে কান্না করছে। হঠাৎ চোখের পানি মুছে চেঁচিয়ে বললো,
“আমি তোকে পাইনি, আমাকে মরণ যন্ত্রণা দিয়ে তুই সুখে থাকবি। আমিও তোকে অন্য কারো সাথে শান্তিতে থাকতে দিবো না রাফিন। সেই দিন এই মেয়েকে গাড়ি চা’পা দিলে এই দিন আর দেখতে হতো না। কেনো যে এতোদিন চুপ ছিলাম, রিয়াজ কে বারণ করা ঠিক হয়নি একদম।”
“আমি কিছু করতে পারলাম না, আমার সব স্বপ্ন গুলো মাঝ পথে ভেঙে গেলো। কি এমন হতো আমায় একটু ভালোবাসলে রাফিন! আমার দ’ম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এই কষ্টে। তুই তো বড্ড সুখে’ই আছিস,শুধু আমার সুখটা কাইরা নিলি। ইয়া আল্লাহ! যদি তাকে আমার জন্য নাই সৃষ্টি করেছো, তা হলে কেনো তার প্রতি আকৃষ্ট করলে! কেন করলে! কেনো? আমি এই কষ্ট সহ্য করতে পারি না আল্লাহ! শুধু তার একটু ভালোবাসা পাবার জন্য বারবার অপমান, অপদস্ত হতে হয়েছে, নিজের আত্ম-সম্মান বিসর্জন দিয়ে বারবার তার কাছে ফিরে এসেছি। তবুও সে আমার হলো না!” কথা গুলো বলতে বলতে চোখ দু’টো ঝাপসা হয়ে গেলো মলি’র। চোখ মুছতে মুছতে চলে গেলো মলি, এলোপাতাড়ি হাঁটছে মনে হচ্ছে এই বুঝি পড়ে যাবে।
“জানালা থেকে এমন করুন দৃশ্য দেখছিলো ঐশী। তার চোখ দু’টো ভিজে গেলো। মলি’র জন্য তার ও খুব কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু চাইলে ও যে প্রিয় মানুষটাকে কে ছেড়ে দেওয়া যায় না, তার ভাগ অন্য কাউকে দেওয়া যায় না। সে ও তো রাফিন কে ভীষণ ভালোবাসে। সেদিনের এ’ক্সি’ডে’ন্ট মলির ষ’ড়’য’ন্ত্র ছিলো, ঐশী এবার এটা ও ক্লিয়ার বুঝতে পারলো। দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস ছাড়লো ঐশী, কাউকে বলবে না এসব, নতুন কোনো ঝামেলা চাচ্ছে না আর।
.
.
রাফিনের আজ অফিসে যাওয়া হলো না। সেই ঘন্টা খানিক থেকে রাফিন ঐশী’র পিছনে পিছনে ঘুরছে, কিন্তু ঐশী একটা কথা ও বলেনি। রাফিন মুখ গোমড়া করে বিছানায় সুয়ে পড়লো, মনে মনে মলি কে হাজার’টা গালি দিলো।
কিছু সময় পরে ঐশী এসে রাফিনের পাশে বসে বসলো। ক্ষীণ স্বরে ডাকলো,
“এই যে শুনছেন?”
রাফিন তড়িঘড়ি করে উঠে বসলো, অবশেষে বউ মুখ খুললো। গোল হয়ে বসে গালে হাত দিয়ে বললো,
“হ্যাঁ বলো? তোমার একটা না হাজার’টা কথা শুনতে চাই বউ। এতক্ষণ চুপ করে ছিলে মনে হচ্ছিলো, আমার বুকের চারপাশটা শূন্য শূন্য লাগছিলো!
“আচ্ছা তার জন্য আমি দুঃখিত! চলুন আপনার খালা’র বাসায় যাই।”
রাফিন অবাক হয়ে বললো,
“কেনো? খালার বাসায় গিয়ে তুমি কি করবে? আমাদের সাথে তাদের আসা যাওয়া নেই।”
ঐশী কোনো বনিতা ছাড়াই বললো,
“আপনি না মানলেও এটা সত্যি, মেয়ে’টা আপনাকে সত্যি’ই ভীষণ ভালোবাসে। আজ এমন একটা সিচুয়েশনে’র মুখোমুখি হয়েছে, মেয়ে’টা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। এমতো অবস্থায় ভুল কোনো ডিসিশন নিতেই পারে।
এই সময় কাছের মানুষের সাপোর্ট, তাদের দুই’টা কথা নতুন করে আশার বাণী খুঁজে পায়। আর একমাত্র পরিবারের সাপোর্ট ‘ই একটা মানুষকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করে। তাই খুব জরুরী আপনার খালার সাথে এই বিষয়ে সরাসরি কথা বলা। ভালোবাসা’টা হোক না একতরফা, তবে সবাই”ই মনে প্রাণে চায় মানুষ’টা আমার হোক, সারাজীবন আমার থাকুক।”
রাফিন নিজেই চেয়েছিলো, তার খালার সাথে এসব নিয়ে সরাসরি কথা বলবে ঐশী’র অগোচরে। ঐশী’র এমন কথায় রাফিন মুগ্ধ হয়েছে, মেয়ে’টা অনেক কিছু অভিজ্ঞদের মতো বুঝতে শিখেছে। রাফিন আর দ্বিম’ত করেনি ততক্ষণাৎ বেরিয়ে পড়লো দু’জন।
কলিং বেলে’র আয়োজন শুনে, মলি এসেছে ভেবে তড়িঘড়ি করে দরজা খুলে দিলো সায়েমা ইতি। দরজা খুলে ভীষণ অবাক হলো সায়েমা ইতি। কতগুলো বছর পরে এই মুখটা দেখলো। তার চোখ দু’টো ভরে উঠলো, বিস্মিত কন্ঠে বললো,
-“রাফিন তুই? আয় বাবা ভিতরে আয়।”
ঐশী’কে সাথে দেখে ফের আবার জিজ্ঞেস করলো,
“মেয়েটা কে রাফিন?”
“বিয়ে করেছি আন্টি। তোমাদের বউ”মা!”
“ঐশী সায়েমা ইতি কে সালাম দিলো। উনি জবাব দিয়ে ঐশী’র গাল ছুঁয়ে বললো,
“বাহ্! ভারী মিষ্টি মেয়ে’তো তুমি।”
“বিনিময়ে ঐশী ক্ষীণ হাসলো।সায়েমা ইতি ব্যস্ত হয়ে বললো,
“দাঁড়িয়ে আছিস কেনো বাবা বস? কতদিন পরে তোকে দেখলাম। আপা কেমন আছে রে? কতদিন কথা বলি না। চোখ দিয়ে কয়েক ফোঁটা নোনা জল গড়িয়ে পড়লো তার। আজ স্বামী’র কু’ক’র্মে’র জন্য একমাত্র বোনের সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন তার।”
রাফিন গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
“মা ভালো আছে আন্টি। তোমার এতো ব্যস্ত হবার প্রয়োজন নেই। আমরা বসতে আসি নাই এখানে। মলি কোথায়?”
উনি চিন্তিতো ভঙ্গিতে বললেন,
“সকালে তো কলেজে যাবে বলে বের হয়েছিল। কেনো বলতো? দাঁড়া আমি ফোন দিয়ে দেখছি।”
রাফিন তাকে থামিয়ে দিয়ে, সংক্ষিপ্ত ভাবে সব কিছু খুলে বললো সায়েমা ইতি কে। মেয়ে’র এমন বেহায়াপনা’র আচরণের কথা শুনে উনি ভীষণ লজ্জিতো। একমাএ মেয়েটা মানুষ করতে পারলো না, দিন দিন বিপথে যাচ্ছে। উনি বারবার ঐশী’র কাছে মেয়ে’র আচরণের জন্য ক্ষমা চাচ্ছে। রাফিন আর এক মিনিট ব্যয় না করে ঐশী’কে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। আজ সারাদিন দু’জন ঘুরবে বলে আর বাসায় গেলো না।”
.
.
দুপুর গড়িয়ে বিকেলের আভা দেখা দিলো গোধুলী’র বুকে। বিষন্ন মন নিয়ে মাএ বাসায় ফিরলো মলি, এরি মধ্যে ঠাসস করে একটা শব্দ হলো। হ্যাঁ সায়েমা ইতি দিয়েছে থা’প্প’ড়, মায়ের এমন আচরণে বিস্মিত হয়ে গেলো মলি। হয়তো এই প্রথম একমাএ মেয়ের গায়ে হাত তুললেন তিনি। উনি এবার কর্কশ কন্ঠে বললো,
“এই জন্য তোকে কলেজে পাঠিয়েছে মলি। তোরা বাপ-মেয়ে কেনো লাগলি আমার বোনের পিছনে। একবার তোর বা’প তাদের খেয়ে পড়ে, তাদের সাথেই বিশ্বা’স’ঘা’ত’ক করেছে। শুধু তোর মুখের দিকে তাকিয়ে সেদিন চুপচাপ থেকে, তোর বাবার সাথে সংসার করছি, কারো সাথে যোগাযোগ করছি না। আবার সেই তুই এখন ছেলে’টার পিছনে লাগছিস। এবার আর আমি মুখ বুঝে সহ্য করবো না….
উনি আর বলতে পারলো না। এরি মধ্যে মলি ঝাপিয়ে পড়লো মায়ের বুকে, এতক্ষণ এই নিদারুণ যন্ত্রণা সহ্য করছিলো। মায়ে’র বুকে মাথা রেখে চোখের পানি বিসর্জন দিচ্ছে। এই বুকে যেন কান্না করতে ও শান্তি পাচ্ছে মলি। উপরে কাঠিন্য ভাব দেখালে ও সন্তানের এমন কান্না সহ্য করতে পারলো না সায়েমা ইতি। উনি যেন শান্ত হয়ে গেলো, কোমল হাত দিয়ে মলি’র মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,
“কাঁদছিস কেনো মা! এতো বিষন্ন লাগছে কেনো তোকে?”
মলি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে বললো,
“আম্মু একজন’কে ভালো-বাসছিলাম!
কথা বলো না আম্মু, আমার বুকে ভিতরটা হাহাকার করছে। অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে বুকে, আমাকে তোমার বুকে মাথা রেখে একটু শান্তিতে কাঁদতে দেও আম্মু। এই বুকে একটু শান্তি লাগছে।”
“মেয়ের এমন করুণ,অসহায়াত্ব কথা শুনে সায়েমা ইতি’র চোখ দু’টো ভিজে গেলো। উনি আর কথা বললো না, মেয়ে’কে জড়িয়ে ধরে, মেয়ের মাথায় পরম মমতায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। তার মেয়েটা এতটা দিন ভিতরে ভিতরে এতটা যন্ত্রণা সহ্য করেছে, মা হয়ে টের’ই পেলো না। কিন্তু উনার ও যে কিছু করার নেই। রাফিন যে অন্য কাউকে ভালোবাসে, সে বর্তমানে অন্য একটা মেয়ের হাসবেন্ড। উনি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লো।
মিনিট দশেক পড়ে মলির কান্না’র গতি কমে আসলো।সায়েমা ইতি নরম কন্ঠে বললো,
” মা’রে জানি তোর খুব কষ্ট হচ্ছে, একপাক্ষিক ভালোবাসা যে খুব কষ্টে’র। ভালোবাসলে তাকে পেতে হবে এমনটা ও কথা নেই, সে যদি অন্য কাউকে নিয়ে সুখি থাকে আমাদের উচিত তার থেকে দূরে সরে আসা,কারণ তার ভালো থাকাটা’ই আসল। দুজন যদি দু’জন কে মোনাজাতে চায় সেই ভালোবাসা পূর্ণতা পায়। তুমি শুধু একা চাইলে পাবে না, তাকে ও চাইতে হবে, ভালোবাসতে হবে। আত্মা সম্মান বিসর্জন দিয়ে, কারো পায়ের নিচে মাথা রেখে, বারবার বেহায়া হয়ে কাউকে ভালোবাসা যায় না। যে তোমাকে ভালোবাসবে তার কাছে তোমার আত্মা-সম্মানবোধ বিসর্জন দিতে হবে না। তোমার এক ফোঁটা চোখে জল গড়িয়ে পড়ার আগে সে তা মুছে দিবে।”
“কুরআনে কি বলেছে জানিস “মা”?
“অবশ্যই তুমি পাবে” যা তোমার থেকে চলে গেছে, তার থেকে উওম!”
~ (সুরা আনফাল ঃ৭০)
হয়তো এখন সাময়িক সময়ের জন্য তুমি কষ্ট পাবে। এখন তোমার আল্লাহর উপর ধৈর্য ধারণ করতে হবে। তিনি যেমন একজনার প্রতি “মায়া” দিবে, তেমনি মায়া কাটাতে ও সাহায্য করবে। তোমার জন্য যা কল্যণ নয়, তা থেকে সৃষ্টিকর্তা তোমাকে দূরে সরিয়ে দিবে। এজন্য তোমার উচিত শুকরিয়া আদায় করা। তুমি আমাদের একমাত্র মেয়ে “মা”, তোমাকে এভাবে ভেঙে পড়লে চলবে না। তোমাকে নিয়েই আমাদের ভবিষ্যৎ, আশা করি তুমি আর কখনো এমন পা’গ’লা’মি করবে না মা। তাকে তার মতো থাকতে দেও, কারণ সে ও তোমার’ই মতো একটা মেয়ের স্বামী।”
“মলি এতক্ষণ গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো মায়ের প্রত্যেক’টা কথা। এমন করে তো তাকে কখনো কেউ বুঝিয়ে বলেনি, আর না সে ভাবছে এগুলো। হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে কত বড় অন্য’য় করেছে সে ঐশী’র সাথে, আফসোস হচ্ছে এখন। এজন্য’ই বোধ হয় মা সবার সেরা। মলির নিদারুণ যন্ত্রণা অনেকটা কমে গিয়েছে মায়ের কোমল হাতে’র স্পর্শে।মলি “মা” কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মলিন কন্ঠে বললো,
“আম্মু কথা দিলাম তোমাকে, আজ থেকে আমি আর এমন করবো না। রাফিন নামে কাউকে আমি চিনি না। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দেও আম্মু।”
“সায়েমা ইতি হাসলো। মেয়ে কে জোর করে একটু ভাত খাইয়ে দিয়ে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। কিছু সময়ে মধ্যে মলি ঘুমিয়ে পড়লো। একটা পরিবার পারে একটা মানুষ কে বিপথ থেকে সঠিক পথে আনতে। পরিবারের সাপোর্ট ভালোবাসা পেলে সারা বিশ্ব কে জয় করা সম্ভব।”
চলবে…….
[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ! ]