#ভালোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ
#writer_sumaiya_afrin_oishi
#পার্টঃ৪৫
রুম জুড়ে পিনপতন নীরবতা,সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে নিশ্চুপতায় মগ্ন হলো। ঘড়ির কাঁটায় টিক-টিক শব্দ জানান দিচ্ছে সময় অতিবাহিত হবার গল্প। রহমান আলী কিছুক্ষণ আগেই এসেছে, সাথে ঐশীর বাবা-মা ও আলিফ৷,রবিন এসেছে। জান্নাতের করুণ মুখশ্রী দেখে কাছে আসার সাহস হলো না রহমান আলী’র, উনি দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। জান্নাত স্তব্ধ হয়ে রইলো,তার মাথা’টা যেন কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে, চোখ দিয়ে বারংবার অশ্রু গুলো গড়িয়ে পড়ছে, আদিত্যের করা অপমান গুলো কুঁড়ে কুঁড়ে হৃদয়টা র’ক্তা’ক্ত করে দিচ্ছে তার ভিতরটা। নিরবতা ভেঙে রাফিন জান্নাতে’র মাথায় স্নেহতুর হাত দিয়ে নরম সুরে বললো,
“এভাবে ভেঙে পড়লে চলবে না বোন! তোমাকে যথেষ্ট স্ট্রং হতে হবে,মনের মধ্যে বড় ধরনের একটা দেয়াল তৈরী করো, যাতে সবাই এখানে জায়গা না পায়। কেননা যে কাউকে জায়গা দিলে আঘাত পাওয়া সম্ভবনা থাকে। এই যে ভুল মানুষকে মনে জায়গা দিয়ে কাঁদছো, আমি কাঁদতে না করছি না, কাঁদো মন ফ্রেশ হবে। তবে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করো এইটা তোমার জীবনের যেন শেষ কান্না হয়। পুরুষ হয়েও বলছি, নারীর গল্পে’র কারণ হতেও যোগ্য”তা লাগে। যে পুরুষ একটা মায়াবী নারী পেয়েও তার যত্ন নিতে পারে না, তাকে ছেড়ে আসতে হয়।যে পুরুষ এক সমুদ্র ভালোবাসা পেয়েও সেটার মর্যাদা না করে অপমান করে,তাকে ছেড়ে আসতে হয়। ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যতা থাকার পরে ও যে তোমার হাত আঁকড়ে ধরেনি,তাকে উচিত ছিলো তোমার নিজ দায়িত্বে ছেড়ে আসা, আর তুমি বোকার মতো তার জন্য’ই কাঁদছো,কষ্ট পাচ্ছো! সব পুরুষ যোগ্যতা রাখে না নারীর ভালোবাসা পাবার।”
জান্নাত ভাঙা ভাঙা কন্ঠে ক্ষীণ কন্ঠ বললো,
“আমার সাথেই কেনো হতে হলো এমন’টা রাফিন ভাই? নিয়তির কাছে আমি বাজে ভাবে ঠকে গিয়েছে! আমি ঠকে গিয়েছে ভালোবাসা’র কাছে!”
“উঁহু মোটেও ঠকোনি তুমি জান্নাত। জীবনে প্রতিটা পদক্ষেপে একটা ভুল হওয়া খুব প্রয়োজন, যাতে সেই ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন। একবার বিশ্বাস না ভাঙ্গলে, কে বিশ্বাসী আর কে বিশ্বাস’ঘা’ত’ক তা সহজে বুঝা যায় না। আসলে কী জানো, মানুষ যতটুকু দেখায় ততটুকু ভালোবাসে না। আবার যতটুকু বাসে, ততটুকু দেখায় না!তুমি আজ হাসলে, সবাই তোমার সাথে হাসবে।জীবন যু’দ্ধে একটি বার হোঁচট খেয়ে পড়েই দেখো, হাত ধরে টেনে তোলার কাউকে খুঁজে পাবে না, ব্যথা পেয়ে একা একা কাঁদবে, তবে তোমার কথায় কাঁদার জন্য কোনো মানুষ খুঁজে পাবে না। বেশিসংখ্যক মানুষ’ই পাশে কাউকে পায়না,পাওয়ার সংখ্যা খুব’ই সীমিত । এই সময় যদি তুমি কাউ’কে পাশে পাও তবে সেই তোমার আপন লোক, এরা খুব কাছের লোক, এদের সারাজীবন আগলে রাখা উচিত। জীবনে একজন সঠিক, বিশ্বাসযোগ্য মানুষ পাওয়ার আগে, আমাদের কিছু ভুল মানুষের সাথে পরিচয় ঘটে। আর সেই ভুল মানুষ গুলোই আমাদের সঠিক মানুষ চিনতে শেখায়।সঠিক পথের দিশা দেয়। ব্যাস ঘুরে দাঁড়াও আর সৃষ্টিকর্তা কে বলো ধন্যবাদ!
জান্নতের কান্না হালকা হয়ে গিয়েছে, সে মনোযোগ দিয়ে রাফিনে’র বলা প্রত্যেকটা বাক্য শুনছে। আনমনে প্রশ্ন করলো,
“যে সমাজে গায়ের সাদা-কালো রঙ দেখে সৌন্দর্যের সমীকরণ কষে। সেই সমাজে আমার মতো কালো মেয়েরা শুধু গল্প উপন্যাসে কারো প্রিয় হয়, বাস্তবে কী আদৌও সম্ভব? সমাজের কাছে কালো মেয়েরা নিছক হাসির পাএ!সবার কাছে রিজেক্ট হয়, এদের পাশে কেউ থাকে না, থাকলেও প্রয়োজনে তাগিদে, প্রয়োজন শেষ হলে ছুড়ে ফেলে দেয়। কেননা মানব জাতি সবাই তো সৌন্দর্যের পুঁজরি!”
জান্নাতকে থামিয়ে দিয়ে ঐশী আহ্লাদী কন্ঠে বললো,
“তুই মোটেও কালো নয় জান্নাত! তুই যে কতটা মায়াবী তুই নিজেও জানিস না। মুলার মতো সাদা হলেই সুন্দরী হয় নাকি? তুই ঐ ফা’ল’তু লোক বললো আর নিজেকে কালো দাবি করিস। সাদা -কালো রঙ ভালোবাসা’র কাছে কিছুই নয়। যে তোকে মন থেকে ভালোবাসবে, তার চোখে তুই হবি শ্রেষ্ঠ রূপবতী। বিশ্বাস কর জানু সোনা! তুইও একদিন কারো না কারো প্রচন্ড প্রিয় একটা মানুষ হবি, তোর সাথে কথা না বলতে পারলে, তার অস্হির লাগা শুরু হবে।অফলাইনে থাকলে তার ভীষণ চিন্তা হবে। তোর সাথে কথা না বলতে পারলে তার মন ভালো হয়ে যাবে। হ্যাঁ! এও প্রিয় হবি! অপেক্ষা কর দিন তোর ও আসবে খুব জলদি’ই আসবে। জাস্ট অপেক্ষা কর দিন তোর ও আসবে,তোর ও প্রিয় মানুষ হবে। আশেপাশেই আছে, শুধু একটু খুঁজে নিস। আর ছেড়ে যাওয়া লোকগুলো দেখবে আর আফসোস করবে।”
কথাগুলো বলে অপরিচিত লোকটির দিকে তাকালো ঐশী, কিন্তু লোকটা’র সেই দিকে কোনো হুস নেই। সে অপলক দৃষ্টি’তে সামনে থাকা শ্যামকন্যা”কে দেখতে ব্যস্ত। এতটা মায়াবী কন্যাকে মানুষ কী করে ছুঁ’ড়ে ফেলতে পারে ভাবছে সে। তা দেখে ঐশী মুচকি হাসলো। জান্নাতের দৃষ্টি নত,আশেপাশে কে, কারা আছে তার দৃষ্টি গোচর হয়নি এখনো। কিয়াৎক্ষণ চুপ থেকে তাচ্ছিল্য হেসে বলে উঠলো,
“জানিস ঐশী আমার নিজেকে নিজে’র খুব ঘৃণা লাগে। আমি এতোটা বাজে…… শেষ করতে পারলো না মুখে’র বাক্যগুলো। এরিমধ্য অচেনা, গম্ভীর একটা কন্ঠস্বর ভেসে আসলো,
“মিস জান্নাতুল তাজরিয়া” যখন কেউ আপনার সঙ্গ পছন্দ করবে না তখন নিজেকে সময় দিন। যখন কেউ আপনাকে মিস করবে না,তখন নিজেকে ভালোবাসুন। যখন কেউ আপনাকে নিয়ে সন্তুষ্ঠ নয়, তখন আপনি নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ঠ হতে শিখুন। কারণ আপনাকে কেউই মোটিভেট করতে পারবে না, আপনি যদি নিজেকে মোটিভেট করতে না পারেন। সেল্ফ লাভ হলো সেল্ফ রেসপেক্টের চেয়ে বড়। নিজেকে ভালোবাসুন দেখবেন সেল্ফ রেসপেক্টও চলে আসবে। নিজে নিজেকেই এতো সস্তা ভাবলে, মানুষের রেসপেক্ট আশা করাও নেহাৎ হাস্যকর!” অনেক হয়েছে আপনার পাগ’লা’মি এবার একদম সাইলেন্ট থাকুন। ঐশী’কে উদ্দেশ্য করে আবার বললো,
” ঐশী এই পা’গ’ল কে কিছু খাইয়ে বিশ্রাম করার ব্যবস্হা করো। এর মাথা’য় ভুত চাপছে, গোবর মাথায় কিছু ঢুকবে না এখন।”
জান্নাত যেমনটি বিস্মিত এই অচেনা লোকটিকে এখানে ও দেখে, তেমনি এর শেষে’র কথা গুলো শুনে ক্রোধিত্ব। বাকি সবাই মিটমিট হাসছে, জান্নাত কটমট করে পুরো রুমটা দৃষ্টি বুলালো, রবিন, আলিফ কে দেখেও অবাক হলো, বড়রা এখানে নেই তাই তাদের এখনো দেখেনি সে। অবাক হওয়া পাওা না দিয়ে বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে ক্রোধিত কন্ঠে বললো,
“আলিফ,রবিন,ঐশী এই লোকটাকে তোরা কিছু বলবি। বল কিছু আমার কিন্তু ভীষণ রাগ হচ্ছে, আর তোরা মিটমিট হাসছিস?”
রবিন বাঁকা হেসে বললো,
“ভুল কিছু বললেনি তো! ঠিকই তো বলছে।”
“কি বললি তুই আমার মাথায় গোবর! এটা ঠিক বলছে না, দাঁড়া তুই।”
বলেই বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো, রবিন এক ছুটে বাহিরে চলে গেলো। রবিন কে না পেয়ে অপরিচিত লোকটা’র দিকে ক্রোধিত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো,
“আপনি এখানে ও? কে আপনি হ্যাঁ। কাল থেকে দেখছি আমাকে ফলো করছেন? আবার আমার ফ্রেন্ডে’র বাসায় ও হাজির, অদ্ভুত তো!”
জান্নাতের কথা’য় লোকটা”র মাঝে কোনো প্রতিক্রায়া দেখা গেলো না। সে মুচকি হেসে বললো,
“এতোদিন দূর থেকে ফলো করছি। এখন থেকে কাছ থেকে ফলো করবো। আপনি যেখানে আমিও সেখানে।”
জান্নাতের লোকটির কথা বোধগম্য হলো না।সে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে রইলো, ঐশী এসে বললো,
“এভাবে কথা বলছিস কেনো তার সাথে। উনিই তো তোকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসলো।”
জান্নাত কিছু বললো না আর। ঐশী ধরে ওয়াশরুমে নিয়ে গেলো ফ্রেশ হবার জন্য। সানজিদা শেখ রান্না করেছে এসে, গরম গরম কিছু ভাত জোর করে খাইয়ে দিলো ঐশী। এখন কিছু’টা ভালো লাগছে জান্নাতের। বন্ধু/ বান্ধবী হোক বা প্রিয় মানুষ হোক, বিশ্বাসের জায়গা’টা নড়বড়ে হয়ে গেলে তাদের প্রতি আর সম্মান বাঁচে না, ঘৃণা কাজ করে। আদিত্যের বলা সবকিছু যেন বারবার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে মস্তিষ্কে। নিজেকে স্বাভাবিক করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে সে, যতোটা না ভালোবাসতো তার ঠিক তিনগুণ পরিমাণ ঘৃণা হচ্ছে এটা ভেবে, কি ভাবে এই অমানুষের মোহে ডুব দিলো সে, ভাবতেই নিজের প্রতি রাগ হচ্ছে জান্নতে’র। পরিবারের সাথে করা অন্যয়ের জন্য অপরাধবোধ জাগলো। কী করে পারলো বাবা-মায়ের আঠারো বছরের ভালোবাসা ভুলে দুই বছরের ভালোবাসা’র টানে তাদের অবাধ্য হতে! তাও আবার একটা জঘন্য, নাটক বাজের মোহে পরে। বাবা ঠিক বলেছিলো এই লোক আমার যোগ্য নয়। কি করে এখন তাদের সামনে দাঁড়াবো? ভাবতেই চোখ গুলো আবার ভিজে গেলো জান্নাতে’র। এরি মধ্যে রহমান আলী রুমে’র ভিতরে প্রবেশ করলো, এই সময় এখানে “বাবা” নামক মানুষটাকে মোটেও আশা করেনি জান্নাত। বিস্ময় ভরা ছলছল চক্ষু নিয়ে বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে, দৃষ্টি নত করে ফেললো। অপরাধবোধ গ্রাস করছে তাকে, বাবার দিকে তাকানোর সাহসটুকু পাচ্ছে না। রহমান আলী মেয়ে’র কাছে এসে বসলো,মুচকি হেসে স্নেহতুক কণ্ঠে বললো,
“এখন কেমন লাগছে মা? শরীর বেশি খারাপ লাগছে?”
এত বড় ঘটনার পরে ও বাবার আবেগময়ি বাক্য শুনে নিজেকে ধরে রাখতো পারলো না। বাবার বুকে ঝাপটে মাথা রেখে নিঃশব্দে কাঁদছে।কান্নার বেগ কনতে’ই অসহায় কন্ঠে বললো,
“আমাকে ক্ষমা করে দেও আব্বু! আমি আবেগে ডুবেছিলাম! তোমাদের ভুল বুঝে বাসা থেকে পালিয়েছি। কিন্তু দিনশেষে আমি ঠকে গিয়েছে আব্বু, তুমিই ঠিক ছিলে। আমাকে শেষ বারের মতো ক্ষমা করো আব্বু! আমি আর কখনো তোমাদের অবাধ্য হবো না,তোমরা যা বলবে তাই শুনবো।”
রহমান আলী ক্ষীণ হাসলো, স্নেহময়ী হাত দিয়ে মেয়ে’র মাথায় হাত বুলালো।মৃদু স্বরে বললো,
“কে বললো তুই পালিয়েছি মা? পালিয়ে যাওয়া তো তখন হয়,যখন সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া যায়।”
জান্নাত অস্পষ্ট স্বরে বললো,
“মানে!”
রহমান আলী ফের আবার মৃদু হেসে বললো,
“তুই কী ভেবেছিস? তুই বাসা থেকে চলে আসছিস কেউ দেখেনি। সবার চোখ ফাঁকি দিলেও তোর বাবা ঠিক দেখেছে। কিন্তু আটকাইনি কারণ, তোর ভুল’টা ভাঙা উচিত ছিলো। আমরা যদি তোর উপরে জোর খাটাতাম হের ঘটনা বিপরীত হতো। সারাজীবন তোর চোখে অপরাধী হয়ে যেতাম। কেননা, তোর জায়গায় বসে তুই সঠিক ছিলি একদম, এটাই ভাবতি, তাই চলে যেতে দিয়েছি। এখন তো বুঝলি কে আপন কে পর।”
জান্নাত কিছু বললো না,দৃষ্টি নত করে রাখলো।রহমান আলী অপরিচিত লোকটার উদ্দেশ্য বললো,
“তোমার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ প্রকাশ করছি সিয়াম! আমার মেয়ে”কে হেফাজতে রাখার জন্য।”
“এভাবে বলছেন কেনো আঙ্কেল? এটা আমার দায়িত্ব ছিলো।”
জান্নাত কৌতূহল হয়ে প্রশ্ন করলো,
“উনাকে তুমি চিনো কি ভাবে আব্বু? কে উনি?”
“উনি’ই তোর জন্য সঠিক মানুষ মা! ও হচ্ছে সিয়াম আহমেদ, ওর কথাই তোকে বলেছিলাম। এই মানুষটা সারাক্ষণ তোকে দূর থেকে ফলো করেছে,যাতে কোনো বিপদ আপদ না হয়।”
“আমাকে একটু সময় দেও আব্বু। আমার একটু সময় লাগবে নিজেকে ঠিক করতে। ইতস্তত হয়ে নিচু স্বরে বললো জান্নাত।”
রহমান আলী কিছু বলার আগেই সিয়াম বললো,
“আপনাকে কেউ জোর করছে না জান্নাত।আপনার যতখুশি সময় নিন।”
কেউ আর কথা বললো না কোনো, রহমান আলী মেয়েকে সুইয়ে দিয়ে, পরম মমতায় মাথায় স্নেহে’র হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। এজন্যই “বাবা” নামক মানুষটাকে মেয়েরা একটু বেশী’ই ভালোবাসে।কারণ পৃথিবীর বাবা’ই একমাত্র পুরুষ,যে পুরুষ’টা তাকে কষ্ট দেয় না।বাবাই একমাত্র পুরুষ! যে পুরুষ সারাজীবন আগলে রেখে ভালোবেসে।শত অন্যায়ের পরে, সারা দুনিয়া মুখ ফিরিয়ে নিলেও বাবারা স্নেহ করে বুকে আগলে নেয়।তাকে ফিল করায় সে যেমনই ষ্ট্যাটাসের হোক না কেন সে তার “রাজকন্যা”! তার প্রথম হীরো তাকে এতটা’ই ভালোবাসা দেয়, পরবর্তী জীবনে আর কোনো পুরুষের স্নেহ কিংবা মমতার প্রয়োজন পড়ে না।”
.
.
পরদিন সকালে শফিকুল শেখ নিজ হাতে বাজার করবে বলে বেরিয়েছে। রাফিন বারংবার না করেছে,কিন্তু জবাবে সে বলেছিলেন,
“আমার মেয়ে-মেয়ের জামাইকে এক বেলা খাওয়ানো অধিকারটুকু আমার নেই বাবা? তুমি তো যেতে পারছো না আমার বাড়ি, তাই এখানে বাজার করে দিচ্ছি। মনে করো আমার বাড়িতে’ই খাবে। দয়া করে নিষেধ করো না।”
রাফিন আর না করলো না। শফিকুল সাহেব চলে গেলেন সাথে রহমান আলীও। আজকের দিনটা সবাই থেকে আগামী কাল চলে যাবে। বহুদিন পরে বন্ধুদের দর্শন মিললো, ঐশী সহ বাকি সবাই হৈচৈ করে আনন্দ উদযাপন করছে তারা। ভিডিও কলে সাথে রয়েছে মিতু ও রিয়া। জান্নাত কে আজ খুব স্বভাবিক লাগছে,বুকের ক্ষতটা পীড়া দিলেও বাহিরে প্রকাশ করছে না।
.
.
শফিকুল সাহেব দু’হাতে ব্যাগ ভরে বাজার করলেন। মেয়ে’র জামাই একটু খারাপ পজিশনে আছে, তাই সব কিছু বেশী বেশী করে কিনেছেন। যা দিয়ে দুয়েক মাস চলে যাবে। খাওয়াবে এটা শুধু ছিলো বাহানা। আত্মাসম্মান ‘বোধ সম্পূর্ণ রাফিন কারো দয়া নিবে না,সেটা খুব ভালো করে জানেন তিনি। তাই এই পন্থা অবলম্বন করলেন, বাবা’রা বুঝি এমনই হয়! তাদের রাজকন্যাদের দূর থেকেও বিভিন্ন টেকনিক খাটিয়ে একটু ভালো রাখার চেষ্টা করে।
চলবে………….
[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ! ]
সবাই একটু রেসপন্স করো দয়া করে! রেসপন্স না পেলে লিখতে ইচ্ছে করে না।যারা এখনো পেজটি ফলো করোনি টুকুস টাকুস ফলো দিয়ে দেও!