হৃদয়_জুড়ে_শুধু_আপনি[২] #পর্ব_৭ #জান্নাত_সুলতানা

0
56

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_আপনি[২]
#পর্ব_৭
#জান্নাত_সুলতানা

-“আ’ম সরি মিশান ভাই।
সব আমার জন্য হয়েছে। আমি কি করে এটা করতে পারলাম?
ওই দিন রাতে যদি বড় কোনো অঘটন ঘ,,,,

আর কিছু বলতে পারে না সায়রা। মিশান ওকে এক ঝটকায় ড্রেসিং টেবিলের উপর বসিয়ে দিয়ে দু হাত দ্বারা সায়রা কোমর জড়িয়ে ধরে নিজের পুরুষালী শক্ত ঠোঁট দিয়ে মেয়েটার পাতলা ঠোঁট জোড়া চেপে ধরে।
সায়রা মিশানের কাঁধে এক হাত রাখে। অন্য হাত মাথার পেছনে রাখে চুলের বাজে।
মিশান উদোম শরীরের থাকার ধরুনে সায়রা নখ গেঁথে গেলো মিশানের কাঁধের কিছু টা নিচে।
অন্য হাত দ্বারা মিশানের মাথার ছোট ছোট চুল গুলো খামচে ধরে।
মিশানের ভ্রু কুঁচকে আসে।
তবে পাত্তা দেয় না। নিজের মতো করে ভালোবাসার পরশ দিতে থাকে মেয়ে টার ঠোঁটে। আরও কিছু টা নিকটে আনে বউ কে।
মিনিট দুই এক হয়ে এলো হয়তো। সায়রা শ্বাস নিতে পারছে না।
চোখ বড় বড় করে।মিশানের কাঁধ, চুল হতে নিজের হাত দুটি সরিয়ে নেয়। অতঃপর নিজের হাত, পা ছুঁড়া ছুঁড়ি করতে লাগলো।
মিশান ছেড়ে দিলো।
সায়রা দূরত্বগতিতে শ্বাস নিতে লাগলো । আরও একটু থাকলে হয়তো ওর শ্বাস বন্ধ হয়ে যেতো।
এদিকে মিশান নিজের বাম হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুল দ্বারা নিজের ঠোঁট মুছে সায়রার দিকে তাকায়।
মেয়ে টা এখন চোখ বন্ধ করে হাঁপিয়ে যাচ্ছে।
মিশান অসহায় ফেস করে বউ কে দেখছে । মিশান ভাবে শুধু দু মিনিট চুমুতেই এই অবস্থা বউয়ের। না জানি বাসর করলে কি অবস্থা হয়।

-“আপনার কি বৃদ্ধি নেয় মিশান ভাই?
কিভাবে ঠো,,,

ছিঃ ছিঃ কি বলতে যাচ্ছিল ও? ভেবে লজ্জায় সায়রার ছোট মুখ খানা রং পরিবর্তন হলো।
মিশান দুষ্ট হাসে। নিজের তর্জনী আঙ্গুল দিয়ে সায়রার কপালের সাইডে দিয়ে স্লাইড করতে করতে বলে

-“হুম, তুই তো ছোট বেলা থেকেই আমার ভালোবাসা চাইতি।
কিন্তু আমার ভালোবাসা রুপে ভয়ংকর অত্যাচার সহ্য করার মতো ক্ষমতা না তোর আগে ছিল আর না এখন হয়েছে।
তবে আমার কিছু করার নেই।
আমি যেমনি করি তোকে সেটা সহ্য করতে হবে, সুইটহার্ট।

-“আমি ফ্রেশ হবো।”

একটা ঢোক গিলে মিনমিন করে বলে সায়রা।
মিশান মুখ হতে হাত নামিয়ে নেয়।
সায়রা যেনো হাঁপ ছেড়ে বাঁচে। ঝট করে ড্রেসিং টেবিলের উপর হতে নেমে গিয়ে মিশানের থেকে দু হাত দূরে দাঁড়ায়।
এই অসভ্য লোক কি সব বলছে। আর বেশিখন এখানে থাকলে ওর হার্ট অ্যাটাক হবে নিশ্চিত। এই বেয়াদব মার্কা হার্ট টাও আজ বেশি লাফা লাফি করছে।

-“তোর কাপড় আছে এ বাসায়?”

-“না।আমি অনেক দিন পরেই এসছি এ বাসায়।”

-“আচ্ছা তুই ফ্রেশ হয়ে আয়।
আমি দেখছি কি করা যায়।”

বলেই মিশান থ্রি কোয়ার্টার একটা পেন্ট আর টি-শার্ট নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো।
সায়রাও ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
মিনিট দশ এক পরে মিশান রুমে এলো।সায়রা তখন ওয়াশ রুমে পানি পড়ার শব্দ হচ্ছে। হয়তো সাওয়ার নিচ্ছে।
মিশান শাড়ী টা বিছানায় রাখে।
শাড়ীর সাথে প্রয়োজনীয় সব নিয়ে ওয়াশরুমের দরজায় নক করে।

-“এগুলো পেয়েছি মা-র রুমে। তোর হয়তো এতে হয়ে যাবে।
আর আমি ড্রেস অনলাইনে অর্ডার করে রেখেছি।
সন্ধ্যা হবে আসতে আসতে।
ততক্ষণে তুই এগুলো কষ্ট করে পড়ে নে।”

সায়রা দরজা টা অল্প ফাঁক করে মাথা টা বের করে বলে

-“আচ্ছা।”

বলেই মিশানের হাত থেকে কাপড় গুলো নিতে গিয়ে ওর হাত মিশানের হাত স্পর্শ করলো।
মিশান ওর হাতের দিকে তাকিয়ে একটা ফাঁকা ঢুক গিলে।
সায়রার হাতে কালো লম্বা লম্বা লোম গুলোতে বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে।
মিশান দৃষ্টি অন্য দিকে ঘুরায়। নয়তো যে অনর্থ হতে বেশি দেড়ি হবে না।
সায়রাও কাপড় নিয়ে দরজা ফের লাগায়।
কিন্তু শাড়ীর সব প্রয়োজনীয় জিনিসের মেয়েলী গো’পন ব’স্তুর দেখে মেয়ে টার চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম হলো।
ও ভাবছে মিশান ভাইয়ের সামনে কি করে দাঁড়াবে।
কি লজ্জার ব্যাপার।
কিন্তু ও তো আর জানে না মিশান কাপড়ের বাজই খুলে দেখে নি।
তাই এটাও মিশানের নজরে পড়ে নি।

সায়রা সব পড়ে তার পর গায়ে একটা তোয়ালে জড়িয়ে দরজা টা হালকা ফাঁক করে মাথা টা বাহির করে ঘরের ভিতর চোখ বুলাতেই দেখা মিলে মিশান এর। সোফায় বসে ফোনে কিছু করছে।
সায়রা একটা ঢুক গিলে।
এখন কি করবে কি করে এমন অবস্থায় মিশান ভাইয়ের সামনে দিয়ে রুমে গিয়ে কাপড় পড়বে?

-“বেরিয়ে আয়।”

সায়রার ভাবনার মাঝেই মিশান ফোনে চোখ রেখেই কথা টা বলে উঠে।
সায়রা একটা ঢুক গিলে আমতা আমতা করে বলে

-“আপনি বাহিরে যান।”

-“থাপ্পড়ে তোর সব দাঁত ফেলে দেবো, ইডিয়েট।
বেরিয়ে আয়।”

মিশানের ধমকে সায়রা চট করে বেরিয়ে এসে মাথা নিচু করে দাঁড়ায় মিশানের সামনে।
মিশান মাথা উঠিয়ে এক পলক সায়রা কে দেখে আবারও চোখ ঘুরায় অন্য দিকে।
তার পর উঠে গিয়ে শাড়ী টা বিছানা হতে হাতে নেয়।
অতঃপর এক বার সায়রার দিকে তো এক বার হাতে থাকা শাড়ী টার দিকে।
ও তো তখন তাড়াহুড়ো তাড়নায় শাড়ী টা ভালো করে দেখে অব্দি নি।
মিশানের চোখ বেরিয়ে আসার জোগাড়।
এই মেয়ে কে দেখলেই ওর সব এলোমেলো লাগে। আর এখন যদি এই শাড়ী পড়ে ওর সামনে ঘুর ঘুর করে না জানি কি অঘটন ঘটিয়ে ফেলে।
কিন্তু এটা ছাড়া তো আর শাড়ীও নেই।

-“আপনি আমার কাছে দেন।
আমি পড়ে নেবো।”

-“তুই পড়তে পারবি না।
আমি পড়িয়ে দিচ্ছি। ”

মিশানের কথায় সায়রা চোখ রসগোল্লারনেয় বড় বড় করে তাকায়।
তবে মিশান সে সব পাত্তা দেয় না। খুব স্বাভাবিক ভাবে এগিয়ে এসে সায়রা গায়ে জড়ানো তোয়ালেতে হাত রাখে।
সায়রা এক মূহুর্ত দেড়ি করে না চোখ খিঁচে বন্ধ করে নেয়।
মিশান মুচকি হাসে অতঃপর সায়রার পেছনে থাকা সুইচ বোর্ড চেপে লাইট অফ করে দেয়।
আর অমনি সারা ঘরে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পরে।
শুধু বারান্দা দিয়ে আসা অল্প অল্প আলোয়ে দু টি ছায়া মূর্তির অবয়ব হলো।

-“চোখ খোল। ”

মিশান মৃদু কন্ঠে বলে।

-“না। আপনি আগে বাহিরে যান। ”

আমতা আমতা করে বলে সায়রা।

-“খোলতে বলেছি, ইডিয়েট।”

ব্যস কাজ হয়ে গেলো মিশানের চাপা ধমকে।
চট করে চোখ খোলে সায়রা। তবে সামনে শুধু একটা ছায়া মূর্তি দেখতে পেলো।আর পুরো রুম জুড়ে বিরাজমান অন্ধকারে।
সায়রা অবাক হলো।
সে টা সামনে দাড়ানো মিশান তা অন্ধকারের মাঝেও ঠাহর করতে সক্ষম হলো।
ঠোঁট এলিয়ে হাসে শব্দহীন হাসি যা সামনে দাঁড়ানো রমণী তা টের পেলো না।
কিন্তু কোমরে শক্ত হাতের শীতল স্পর্শ পেলো।মিশান এক ঝটকায় সায়রা কে নিজের নিকট আনে।
অতঃপর শরীর হতে তোয়ালে টা নিচে ফেলে দিয়ে শাড়ীর আঁচল গুঁজে কোমরে।
সায়রা শক্ত করে মিশানের পেটের কাছে ধরে রাখা স্থানে খামচে ধরে।
মিশান চোখ বন্ধ করে জুড়ে জুড়ে নিশ্বাস ছাড়ে দু বার।যা সায়রার চোখ মুখে উপচে পড়লো।
সায়রা কি বুঝলো কে জানে।
হাত সরিয়ে নিলো মিশান শরীর থেকে। মিশানও যেনো হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো।নিজে কে কন্টোল করে শাড়ী টা ধীরে ধীরে পড়াতে সক্ষম হলো। তার পর
সুইচ টিপে লাইট অন করতেই দেখা মিলে শাড়ী পরিহিত এক যুবতি মেয়ের যার রুপ শাড়ী পড়ার ফলে যেনো আরো কয়েক গুণ বেরে গিয়েছে।
মিশান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে তার প্রেয়সীর দিকে তবে সায়রা তাকিয়ে মেঝের দিকে।
কিন্তু এতো সুন্দর মূহুর্তে বাড়ির কলিং বেল টা সশব্দে বেজে উঠলো।
তবে মিশান বোধহয় শুনতে পেয়েও পেলো না।
সায়রার ডাকে সম্মতি ফিরে পেলো

-“হ্যাঁ। আমি দেখছি।
খবরদার সায়রা রুম থেকে এক পা নাড়াচাড়া করবি না।”

কথা শেষ করেই মিশান চলে গেলো নিচে দরজা খোলতে।
সায়রাও পা টিপে টিপে অন্য রুমে চলে এলো।
মূলত ওরা এখন মিশানের রুমে ছিল আর এটা হচ্ছে সায়রার বাবা মার রুম।
এই বাড়ি টাও বিশাল বড় সবার যার যার নিজস্ব রুম আছে।
বাড়ির সব সদস্যরা মাঝে মাঝে এখানে বেড়াতে আসে।
আর দু এক দিন থাকে তার পর আবার ফিরে যায়।
তবে এখানের সব প্রয়োজনীয় জিনিস এখানেই রেখে যায়।
কিন্তু সায়রা মিশান বিদেশ চলে যাওয়ার পর আর আসা হয় নি যদিও সবাই এসছে তবে ও আসে নি।
সায়রা নিজের মা-বাবার রুমে এসে এখানে থাকা কিছু সাজার সরঞ্জাম দিয়ে হালকা করে সেজে নেয়।
তার পর আবারও মিশানের রুমের উদ্দেশ্য অগ্রসর হয়।
মিশান কিছু পেকেট নিয়ে রুমে এসে দেখলো সায়রা রুমে নেই।
হাতে থাকা পেকেট গুলো সোফায় রেখে বাহিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই নজর এলো সায়রা রুমে ঢুকছে।
মিশানের হার্ট বিট কয়েক টা মিস হয়ে গেলো বোধহয়।

-“আয় খেয়ে নে।”

নিজে কে সামলে নিয়ে বলে মিশান।
সায়রা পা টিপে টিপে এগিয়ে এলো। এখন হয়তো সন্ধ্যা সাত টার বেশি সময় বাজে। আর ও খাবার খেয়েছে এগারো টার দিকে ভার্সিটিতে।
তার পর টিউশন করিয়ে বাসায় ফিরার পরতো মিশান গিয়ে ধরে নিয়ে এসছে।
পেটে ক্ষুধা থাকায় আর কথা বাড়ায় না। চুপচাপ খেয়ে নিলো।
মিশান নিজেও খেয়ে নেয়।দুজনে একই প্লেটে।
সায়রা অবশ্য লজ্জা পাচ্ছিল তবে মিশানের কোনো হেলেদুলে ছিল না।
খাবার শেষ মিশান সব নিচে গিয়ে রেখে আসে।
অতঃপর ফিরে এসে বউ কোলে নিয়ে হাঁটা ধরে ছাঁদের উদ্দেশ্য।

#চলবে….

[ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন প্লিজ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here