#আমায়_রেখো_প্রিয়_শহরে
#লেখনীতে_নূরজাহান_আক্তার_আলো
#পর্ব_বিশ
–
–
–
‘কোনো এক বৃষ্টিরদিনে চুপিচুপি তোমার রুমে উপস্থিত হবো৷ নীলচে আলোর ড্রিম লাইটে তোমাকে দেখামাত্রই জাপটে নেবো বক্ষমাঝে।আর তুমি ছটফটিয়ে উঠবে। নিজেকে ছাড়ার ব্যর্থ চেষ্টা করবে। আমি ছাড়ব না। বাঁধা মানব না। শুনব না কোনো কথা।বরং আরো শক্ত করে জড়িয়ে নেবে আমার বুক পাঁজরে। আদরে আদরে ভরিয়ে দেবো তোমার গাল। ঠোঁট। মৃসন কাঁধ। কথা বলব ঠোঁটে ঠোঁটে। চোখে চোখ রেখে। আঙুলে আঙুলে গুঁজে। শোনো হে প্রিয়শী, বাক্য বিনিময় হবে না। কারণ, বারণ ঠাঁই পাবে না। হবে শুধু আদরের খেলা। বাইরে তুমুল বৃষ্টি।মেঘের গর্জন। সঙ্গে উন্মাদ আমি। আর এই আমিটাকে সামলাতে ব্যর্থ তুমি।’
নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি বাঙালির আগ্রহ বরাবরই বেশি। যেখানেই বারণ সেখানেই খুঁজবে এরা কারণ, এটা বাঙালিদের চিরাচরিত বাজে স্বভাব।
এর ব্যক্তিক্রম নয় কুহুও। বয়স অল্প। মাথাভর্তি আবেগ। বয়স অনুযায়ী পছন্দসই কথাগুলো। সেদিন ফেসবুক লগইন করা মাত্রই সে দেখেছিল এমন একটা পোস্ট। কথাগুলো মন দিয়ে পড়েওছিল। কার পোস্ট, কে করেছে, দেখে নি। তবে লেখাগুলো বার বার পড়েছিল। ভেবেছিল। উক্ত পোস্টের কথাগুলো অর্থ বুঝে লজ্জায় লাল হচ্ছিল। ভবিষ্যত কল্পপুরুষ নিয়ে এমন পোস্ট দেওয়ার বাসনা জেগেছিল। মাথাতে গেঁথেছিল এমন
ঘটনা। মনে জেগেছিল মামুলি ভাবনা। ফলস্বরূপ ভাবনার ফল সেদিনের রাতের অযাচিত ঘটনা। যার ভাষা নেই। ভিত্তি নেই। শুধুই ভাবনা। ভাবনা হলেও এতটাই জোরালো যে ভুলতে পারে না এসব যাতনা। রিদওয়ানের অস্তিস্ত নেই এখানে। তার দোষ নেই। উপস্থিতি নেই। তবুও বেপরোয়া এ মন রিদওয়ানের দিকেই আঙুল তুলেছে। কারণ তার মন বিদ্রোহী সুরে বলে রিদওয়ান তাকে পছন্দ করে। ভালোবাসে। তার ভালোবাসা পেতে রিদওয়ান উন্মাদ।
মানুষ যা ভাবে তাই মনে মস্তিষ্কে গেঁথে যায়। তার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল।
আপন মন। আপন শরীর।রোগের কারণে মানুষ ভুলে যায় নিজ শরীরের কথা। কুহুর গলার তিলের ক্ষেত্রেও তাই। এতদিন পরে সে এখন ভাবতে
শুরু করেছে তার গলায় চমৎকার একটা তিল আছে। ভীষণ সুন্দর সেই তিলটা। রিদওয়ানের ভীষণ পছন্দ। এটাও ভাবনা। আর তার গলার তিল নিয়ে করা ভাবনা এসেছিল কলেজ থেকে ফেরার পথে এক বাবড়ি চুল ওয়ালা বড় ভাইয়ার প্রেমালাপ শুনে। রাস্তাঘাটে দেখা যায় না? যারা পথ ঘাট ভুলে রাস্তা রাস্তা ফোনে কথা বলেই যায়। বলেই যায়। আগে পিছে কে আছে, না আছে, দেখে না। তেমনই মানুষ ছিল বাবড়ি চুলওয়ালা ভাইটিও। সে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতেই রগরগে গলায় প্রেমিকাকে বলছিল,
-‘জানো, তোমার গলার কুচকুচে কালো তিলটা আমাকে না পাগল করে দেয়। যখন দেখি আমার মাথা কাজ করে না। পাগল পাগল লাগে। আমি ভুলে যায় পাপ পূর্ণ্যের কথা। মন উস্কে বলে তিলটাকে আঁচড়ে, কামড়ে, আমাকে জ্বালানোর সাধ মিটিয়ে দিতে। কিন্তু পারি না। সম্ভব হয় না। কি যে বিধস্ত লাগে তখন।’
পুরো কথা শুনে কুহু থমকে দাঁড়িয়ে যায়। ঘৃণায় গা গুলিয়ে আসে। কেউ এভাবে কথা বলে? তিল আবার বিশেষ কিছু নাকি? তিলে কি থাকে যে লোকটার নিজেকে বিধস্ত লাগে? পাগল পাগল লাগে? সে মনে মনে কত কথা বলে। প্রশ্ন করে নিজেকে। তার হঠাৎ মনে হয় তার নিজের গলাতে এমন তিল থাকলে কেমন হতো? তার প্রেমিকও কি এভাবে বলত। তখন
তিলের কথাটাও তার মনে জেগে ওঠে। কত কি ভাবে। আর এখানে দাঁড় করায় মেয়েলি আরেকটা সমস্যা। যেমন, মেয়েরা সুন্দর জিনিস দেখলে নিজের জন্যও সেটা পাওয়ার আফসোস তৈরি করে ফেলে। কারো চুল, সুন্দর নখ, গায়ের রং, ডাগল ডাগল চোখ, দেখলেই মনে বাসনা জাগে, ‘ইস! আমারও যদি এত হতো।’ আমারও যদি হতো এই ব্যাপারটা কুহুর
মধ্যেও বিদ্যামান। ফলস্বরূপ সে এখন ভাবে তার গলায়ও তিল আছে।
আর এই দুটো কাহিনি ই ভিন্ন। ভিন্ন চরিত্র দ্বারা প্রভাবিত। অথচ মনের ভাবনাগুলো এসে একসঙ্গে জুড়ে বসে আছে। মর্জিমতো তৈরি করেছে এক অভাবনীয় ঘটনার
_______
আতিকুর রহমান বসে আছে সহধর্মিণী নিলুফা ইয়াসমিনের মুখোমুখি। হাতে কফির মগ। দু’জনেই ব্যাক ইয়ার্ডে। এখানে দাঁড়িয়ে সব দেখা যায়।
ভীষণ সুন্দর এই এরিয়া টুকু। সামনেই নেইবার হুডের রাস্তা। রাস্তার দুই পাশে মাঝারি আকারের সারি সারি ম্যাপেল গাছ। ম্যাপেল গাছেল লাল পাতা অন্যরকম সৌন্দর্যের অধিকারী। যাকে বলে নজরকাড়া সৌন্দর্য।
উনাদের ইয়ার্ডের কাছাকাছিই গাছের মগডালে দুটো পাখি বসে আছে। মাঝামাঝি আকৃতির। নাম ল্যাপউইংস। মাথা ঝুঁটি। ডাকছে আপনস্বরে।
এখন ঘড়িতে সময় বিকাল পাঁচটা। সূর্য অস্ত যাচ্ছে। দলগুচ্ছভাবে পাখি ফিরছে আপন আলয়ে। ম্যাপেল গাছের পাতার মতো রং ধারণ করেছে লালিমাযুক্ত গোধূলি আকাশ। গাছের গোড়ায় জমা হয়েছে ঝরা পাতা।
সেই শুকনো পাতায় মড়মড় শব্দ তুলে একদল কাঠবিড়ালী দিকশূন্য ছুঁটছে কুকুরের তাড়া খেয়ে। আজ উইকেন্ড। সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এই দিনটাকে আনন্দমুখর করতে রিমি এবং তার ফ্রেন্ডরা বারবিকিউ করার আয়োজন করছে। করছে হাসাহাসি। ছুটাছুটি। সব ঠিকঠাক করে যখন বারবিকিউ করতে যাবে তখনই দেখা দিলো ইলেকট্রনিক বারবিকিউ গ্রিল মেশিনে সমস্যা। হচ্ছে না। রিমির ফ্রেন্ডরা নিজেরা ঠিক করার চেষ্টা করল পারল না। অগত্যা রিমি তার আম্মুকে ডেকে নিয়ে গেল। নিলুফা ইয়াসমিন চেক করে কোনো সমাধানই করতে পারলেন না। সবারই মুড অফ হয়ে গেল। তখন রিদওয়ানের গাড়ি পার্কিং লটে এসে দাঁড়িয়েছে। সে গাড়ি থেকে নামতেই রিমি ছুটে এলো। হাত ধরে টেনে বাগানের দিকে নিয়ে যেতে যেতে তার সমস্যার কথা বলল। রিদওয়ান রিমির ফ্রেন্ডদের দেখে মুচকি হেসে হাই হ্যালো করল। তারপর নিজেও দেখল মেশিন ঠিক হবে না। তবে বাচ্চাদের মজা নষ্ট করতে ইচ্ছে করল না তার। তাই জর্জ আর ম্যাশানকে ডেকে কাঠ কয়লা দিয়ে বারবিকিউ করার ব্যবস্থা করে দিলো। জর্জ আর ম্যাশান বারবিকিউ করে দেবে। নয়তো এরা অঘটন ঘটিয়ে ফেলবে। যা বিচ্ছু একেকটা। তবে এদেরমধ্যে সবচেয়ে ডেঞ্জারাস
বিচ্ছুর নাম লারা। মেয়ে হলেও প্রচুর ডেঞ্জারাস সে। বাবার গালফ্রেন্ডের গায়ে আগুন লাগানোর ট্রাইও করেছিল মেয়েটি। কিন্তু শেষ অবধি পারে নি। তারপর থেকে সে আর তার মা বাবার সঙ্গেই থাকে না। বাবার মুখও দেখে না। রাস্তায় কখনো দেখা হলে এমন ভাব করে যেন চেনেই না। মুখ্য কথা,লারা সর্ব সম্মুখে তাকে এই অবধি সতেরোবার প্রোপোজ করেছে।
আর সে সতেরোবারই নাকচ করেছে। এই নিয়ে কত হাসাহাসিও যে হয়। তবুও একজন প্রোপোজ করে ক্লান্ত হয় না আরেকজন নাকচ করতেও সময় ব্যয় করে না। লারা এই মুহূর্তে একবোল চিংড়ি নিয়ে বসে আছে। তার কাজ চিংড়ির সাসলিক বানানো। সে আবার এই একটা কাজই খুব ভালো মতো করতে পারে। এছাড়া এখন হবে চিকেন আর কোরাল মাছ বারবিকিউ। জর্জ আর ম্যাশান কাজে লেগে পড়েছে। সমস্যার সমাধান করে রিদওয়ান গাড়ি থেকে ফাইলটা হাতে নিয়ে রুমে গেল। ক্লান্ত শরীর নিয়ে উপুর হয়ে শুয়ে পড়ল। কিচ্ছু ভালো লাগছে না। আপন মানুষজন, চেনা রুম, চেনা সবকিছু, তবুও শূন্য শূন্য অনুভব হচ্ছে। চোখের সামনে ভাসছে রুপকের মুখটা। হাসির আড়ালে সে বুঝেছে বন্ধুর কষ্ট। কিন্তু কি করবে সে? এসে অবধি খোঁজও নেওয়া হয় নি। রুপক রেগে খোঁজ করে নি সেও জানে। ওই বাসায় থাকা ওতার পক্ষে আর সম্ভব ছিল না। কারণ
একবার..দুইবার..তিনবারের বেলায় সবাই এসব বিশ্বাস করবে। ভাববে বন্ধুর বাসায় থেকে সুযোগ নিচ্ছে। যেটা মেনে নেওয়া তার পক্ষে সম্ভবই না। তাছাড়া প্রথম কয়েক সপ্তাহ কুহুকে ঠিকঠাক লাগলেও পরে অদ্ভুত আচরণ করতো সে। এই যেমন এক কথা বললে আরেকটা উত্তর দিতো।
ভ্রুঁ কুঁচকে তাকিয়ে থেকে কিসব বিরবির করতো। অকারণে রেগে যেত। হাসত। সেদিন ইসমত আরা বেগম উনার ভাইকে দেখতে যাওয়ার সময় তাকে বলেছিল কুহুকে দেখে রাখতে। সেই সম্মতি জানিয়ে গিয়েছিল উনাকে এগিয়ে দিতে। ফেরার সময় সমস্যা বাঁধে স্বপন নামের বখাটের সঙ্গে। সে যেমন স্বপনকে আচ্ছামতো দিয়েছে স্বপনের চ্যালারাও তার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। সেই ব্যথায় জ্বর এসে গিয়েছিল। চুপ করে শুয়ে
ছিল নিজের রুমে। তারপর কুহুর ডাক ‘রিদ ভাইয়া! ভাইয়া! আপনি কি রুমে আছেন?’
পরপর কয়েকবার ডাকার পরও সাড়াশব্দ দিলো না। সত্যি বলতে ইচ্ছে ছিল না দরজা খোলার। তারপর ভাবল কোনো দরকার হবে বোধহয়।
তাই লাইট জ্বালিয়ে দরজা খুলল। কুহু পেছন ফিরে তাকে দেখে আঁতকে উঠল জিজ্ঞাসা করল, মাথার কি হয়েছে আপনার? ব্যান্ডেজ কেন?’
কন্ঠে যেন আতঙ্ক ঝরে পড়ছিল। সে তবুও জবাব দেয় নি আবারও গিয়ে শুয়ে পড়েছে। হতভম্ব কুহু প্রশ্ন করতে থাকল। একে তো মাথাব্যথা। তার উপর এসেছে আবার জ্বর। সে চোখ খুলে রাখতে পারছিল না। এমনিতে চোখ বন্ধ হয়ে আসছিল। হঠাৎ কপালে কারো স্পর্শ অনুভব করল। না চাইতেও চোখ খুলে দেখে কুহু কপালে হাত রেখেছে। কিসব বলছে। তার বকবকানি শুনেও চুপ করে ছিল। জবাব দিতে ইচ্ছে করছিল না। মুখ্য কথা তার অস্বস্তি হচ্ছিল। তখন কুহু উঠে রুমাল আর পানি এনে বলল,
-‘টি শার্ট খুলুন। শরীর মুছে দিলে জ্বর নেমে যাবে।’
-‘লাগবে না। এমনিতেই কমে যাবে।’
-‘এত কথা বলতে ভালো লাগছে না আমার। যা বলছি করুন।’
-‘রুমে যাও। কিছু খেয়ে রেস্ট নাও।’
-‘কি খাবো? রান্নায় তো হয় নি। আপনি কলেজে যান নি কেন? এই অবস্থা কিভাবে হলো?’
-‘চলো আমি কিছু বানিয়ে দিচ্ছি।’
একথা বলে রিদওয়ান উঠতে গেলে কুহু তাকে থামিয়ে দিলো। তারপর
জানাল ভাত বসিয়েছে। ভাত হয়ে গেলে ডিম ভেজে খেয়ে নিতে পারবে। একথা শুনে উঠল না। বরং স্বস্তিই পেয়েছিল। তাকে নিশ্চুপ দেখে তখন
কুহু তার টি- শার্ট ধরে টানতে লাগল। সে বিরক্ত হয়ে তার হাত সরিয়ে বলল,
-‘কুহু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে এবার। বাসায় কেউ নেই। তুমি রুমে যাও। আমি ঠিক আছি। ‘
-‘ঠিক থাকলে এতক্ষণ নেন নি কেন? নিজের প্রতি এত অবহেলা কেন শুনি?’
-‘যত্ন নেওয়া মানুষ নেই তাই অবহেলা করি। এবার যাও।’
-‘যাও, যাও, করছেন কেন? আমি আপনার রুমে থাকতে আসি নি। যা করতে চাচ্ছি করতে দেন, করে চলে যাচ্ছি।’
-‘না।’
-‘কেন লজ্জা লাগে? রুপক ভাইয়াও বাসায় খালি গায়ে ঘুরে। আর আমি আপনাকে খালি গায়ে দেখলে হা করে তাকিয়ে থাকব তা নয়। এতটাও শেইমলেস না আমি।’
-‘আপনি গুড গার্ল আমি জানি। যান গিয়ে খেয়ে নিন।’
-‘আচ্ছা আমি ভাত নিয়ে আসছি। খেয়ে অন্তত মেডিসিন নিন।’
-‘না।’
-‘শুধু জেদ করছেন কেন?’
রিদওয়ান জবাব দিলো না। চোখের উপর হাত রেখে অনড় হয়ে শুয়ে থাকল। কুহু শক্তি খাঁটিয়ে কোনোভাবেই কিছু করতে পারল না দেখে উঠে চলে গেল। আর সে উঠে দরজা আঁটকে শুয়ে পড়ল। কুহু এতবার ডাকলেও দরজা খুলে নি। জবাবও দেয় নি। এরপর আর কিছু জানে না সে। যখন ঘুমে চোখ জুড়িয়ে আসছিল রুপকের কল আসে তখন কথা হয়েছিল। ব্যস এইটুকই। এরপর জ্বর কমলে রান্না করে। কুহুর একবার উঁকি মেরে হনহন করে রুমে চলে যায়। এরপর আর দেখা যায় নি ওকে। তারপর রান্না সেরে ফ্রেশ হয়ে যখন খেতে বসে তখন দেখা হয় আবার।
দু’জনেই নিঃশব্দে খেয়ে যে যার রুমে চলে যায়। অথচ মেয়েটা সকালে বলে, সে নাকি তাকে জড়িয়ে ধরেছে। লিপকিস করেছে, ছিঃ! এই রাগে সে বাসা থেকে বেরিয়ে এসেছে। রুপকের সঙ্গেও কোনো কথা বলে নি।
যোগাযোগ করে নি। আর এসবের মধ্যে সে একটা ‘কিন্তু’ খুঁজে পাচ্ছে।
বারবার কিছু প্রশ্নে এসে আঁকটে যাচ্ছে। গুলিয়ে যাচ্ছে সবকিছু। এসব প্রশ্নের উত্তর জানা দরকার। কেন কুহু এসব বলল? কেন রুপকের কাছে তাকে ছোটো করতে চাচ্ছে? কেন তাদের বন্ধুত্বটা নষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছে? এই কেন এর উত্তর একমাত্র রুপকই দিতে পারবে। সে উঠে আধশোয়া হয়ে বসল। হাত বাড়িয়ে লেপটপ বিছানায় এনে অন করতেই খেয়াল করল কিছুক্ষণ আগে দুটো ইমেল এসেছে। আর দুটোই রুপকের ইমেইল থেকে। সে ইমেল চেক করে যা দেখল তাতে ক্ষণিকের জন্য কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলল। শুধু বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইল লেপটপের স্কিণে। সেখানে শো করছে কুহুর মেডিকেল রিপোর্ট + ফাইল। সে ভালো করে দেখল একটা রিপোর্টে সিজোফ্রেনিয়ার রোগ উল্লেখ করা হয়েছে।
আর আরেকটা ফাইলে শো করছে ইরোটোম্যানিয়ার রোগের নাম। আর ইরোটোম্যানিয়া রোগের নাম দেখে সে যেন আকাশ থেকে পড়ল। বুঝতে পারল আসল সমস্যা। এসব ফাইলের সঙ্গে ছোট্ট একটা বার্তাও এসেছে,
-‘অসুস্থ বোনকে তো আর ফেলে দিতে পারি না। সে আমার ছোট বোন। আমার বোন আমার কলিজা। যে যা বলেছে তার জন্য আমি হাতজোড় করে মাফ চাচ্ছি। মিথ্যা বলছি না। প্রমাণস্বরুপ ফাইল দেখালাম। সময় করে দেখিস। আর হ্যাঁ যদি সম্ভব হয় মাফ করে দিস। ভালো থাকিস।’
To be continue…………..
গল্পটি সম্পর্কে রিভিউ, আলোচনা, সমালোচনা করুন আমাদের গ্রুপে। গ্রুপ লিংক নিচে দেওয়া হলোঃ
https://facebook.com/groups/holde.khamer.valobasa/