সঙ্গিন_প্রনয়াসক্তি🍁🍁 #পর্বঃ৪১_বর্ধিতাংশ #লেখনীতে_suraiya_rafa

0
338

#সঙ্গিন_প্রনয়াসক্তি🍁🍁
#পর্বঃ৪১_বর্ধিতাংশ
#লেখনীতে_suraiya_rafa
[ক,পি করা নিষিদ্ধ 🚫]
[কঠোরভাবে প্রাপ্তমনস্ক ও মুক্তমননদের জন্য]

—– অরু তুই?

অরু এগিয়ে এসে সহসা হেসে বলে,
—– আপা দের বিয়ের শপিং এ এসেছি, তুই কি….

বাকি কথা বাড়ানোর আগেই ওর সাথে চোখাচোখি হলো তিথির ।

তিথি অরুকে দেখে সংকোচ কিংবা অ’পরাধ বোধ করা তো দূরে থাক, উল্টে একটা গা জ্বালানো হাসি দিয়ে বললো,
—— তাহলে শেষ মেশ ফিরেই এলি আমেরিকা থেকে? তোকে আগেই বলেছিলাম নিখিল ভাইয়ের পেছনে পরে থাকা বন্ধ কর, তোকে দু’পয়সার ও পাত্তা দেবে না নিখিল ভাইয়ের মতো মানুষ ।শুধু শুধু এতো গুলা দিন ধরে মিথ্যে আশা নিয়ে বেঁচে আছিস। হাউ শেইম।

নীলিমা তৎক্ষনাৎ তিথিকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে বললো,
—– থামবি তুই তিথি? অরুর মনটা এমনিতেই ভালো যাচ্ছে না।

অরু এবার মুখ খুললো, তিথির দিকে তাকিয়ে শক্ত গলায় বললো,
—– তোকে কে বলেছে আমি মিথ্যে আশায় বেঁচে আছি? আমাকে দেখে কোন দিক দিয়ে তোর অসুখী মনে হচ্ছে?

তিথি তাচ্ছিল্য করে হেসে বললো,
—- দেখতেই তো পাচ্ছি, শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিস, আমি কিছু বুঝিনা ভেবেছিস?

ওদের ত’র্কের ফাঁকে বাম হাত ঢুকিয়ে, অরুর দিকে ঘুরে আশ্চর্য হয়ে সায়র শুধালো,
—- জেকের মতো আস্ত একটা প্যারা জীবনে উপস্থিত থাকতে, তুমি আবার কার জন্যে শুকিয়ে গেলে এলোকেশী?

সবার উদ্ভট কথা শুনে আ’হাম্মকের মতো ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে আছে অরু, প্রস্তুতি নিচ্ছে নতুন উদ্যমে তিথিকে কিছু বলার।

ঠিক সেই সময়ে, সবার আকর্ষন কেড়ে নিয়ে বয়জেষ্ঠ একজন ওদের মাঝে চলে এসে তিথির কাঁধে নিঃসংকোচে হাত রেখে বললো,
—– হ্যালো এভরি ওয়ান। কি অবস্থা সবার?

লোকটা স্মার্ট, বেশভূষা দেখেই বোঝা বেশ যাচ্ছে বেশ ধনাঢ্যশালী ব্যক্তি হবে হয়তো। তবে বয়সে ওদের চেয়ে চোখবুঁজে কয়েকগুণ বড় তো হবেই।

সায়র লোকটাকে দেখে জোর পূর্বক হেসে বললো,
—-কে আপনি দাদু?

তিথি তৎক্ষনাৎ লোকটার বেড়ে ওঠা ভূড়িতে আবেশিত হাত ছুয়িয়ে একগাল হেসে বললো,
—– মিট মাই বিলোভট হাসবেন্ড, খন্দকার মোশতাক আহমেদ।

তিথির কথায় ওরা সবাই মুখ টিপে হাসি সংবরণ করলো। সায়র তো কুলিয়ে উঠতে না পেরে মিনিমিনিয়ে বলেই ফেললো,
—– এই দাদু আবার হাসবেন্ড হয় কি ভাবে? দেখে তো মনে হচ্ছে সারাদিন হাঁচি কাশিতেই দিন শেষ হয়ে যায় ওনার, তাহলে বউ সামলায় কখন?

সায়র নীলিমার পাশেই বসা ছিলো বিধায়, নীলিমা ওর উরুতে চিমটি কেটে সহসা থামিয়ে দিয়ে বললো,
—– চুপ করুন, অন্যের অনুভূতিকে সম্মান করতে শিখুন।

নীলিমার শেষ কথাটা সায়রের হৃদয়ে গিয়ে লাগলো, আসলে মেয়েটাকে যতটা রা’গী আর বেয়ারা মনে হয়, ততটাও নয়। মনটা ভালো আছে।

অরু এখনো তিথি আর তার দাদু ওরফে হাসবেন্ডের গদোগদো প্রেম দেখে সার্কাস দেখার মতোই হা করে তাকিয়ে আছে, মনে মনে ভাবছে,
—- ইশ এই দাদুটাও কি রোমান্টিক, অথচ আমার বর কে দেখো,সারাদিন মেজাজ আর মেজাজ। এমন করে একটু লোকের সামনে গদোগদো ভালোবাসা দেখালে কি হয়?

তিথি তার বিলোভট হাসবেন্ডের থেকে চোখ সরিয়ে, অরুকে উদ্দেশ্য করে বললো,
—- এখনো সময় আছে, এরকম একজন দেখে বিয়ে করে নে, পুরো লাইফ আরামছে পায়ের উপর পা তুলে কেটে যাবে।আ…

তিথির কথা মাঝপথেই আটকে গেলো যখন চমৎকার এক পুরুষালী কন্ঠে পেছন থেকে খুব অধিকার নিয়ে অরুকে ডেকে উঠলো কেউ,
—— মিসেস অরোরা জায়ান!

ক্রীতিক হঠাৎ করে পুরো নাম ধরে ডেকে ওঠায়,অরু হকচকিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে বললো,
—– এইতো আমি।

চলতি ক্লাইমেক্সে আরও খানিকটা আকর্ষন ঢেলে দিতে, সবার মাঝে এসে দাড়ালো ক্রীতিক।সুদর্শন ক্রীতিককে দেখে অকস্মাৎ চিকচিক করে উঠলো তিথির দু’চোখ, ও তব্দা খেয়ে কিছুটা লাজুক হেসে শুধালো,
—- আপনি কে ভাইয়া?

ক্রীতিক বাহুর মাঝে অরুকে নিয়ে বললো,
—– হার বিলোভট হাসবেন্ড, জায়ান ক্রীতিক চৌধুরী।

অরুর স্বামী কথাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে চুপসে এইটুকুনি হয়ে গেলো তিথির মুখ, ও পুনরায় অবিশ্বাসের সুরে বললো,
—- ক্রীতিক কুঞ্জের মালিক জায়ান ক্রীতিক চৌধুরী?

তিথির সম্মোধনে ক্রীতিক অরুর দিকে তাকিয়ে সহসা হাসলো, যার অর্থ হ্যা।

এই মূহুর্তে তিথির থমথমে মুখ খানা দেখে মনে হচ্ছে, কেউ কয়েকশ অ’পমানের চ’পেটা’ঘাতে লাল করে দিয়েছে ওর মুখ।

নীলিমা হতবাক হয়ে অরুকে একটু দূরে নিয়ে গিয়ে বললো,
—- জায়ান ক্রীতিক চৌধুরী না তোর সৎ ভাই?

অরু হ্যা সূচক মাথা নাড়ালো।

—- তাহলে হাসবেন্ড কি করে হলো?

অরু নির্বিকার ভঙ্গিতে বললো,
—- বিয়ে করেছে তাই হাসবেন্ড হয়েছে।

নীলিমা হাসফাস করতে করতে বললো,
—- আমি না কিছু মিলাতে পারছি না অরু,তুইতো সেদিনও নিখিল ভাইয়ের জন্য কা’ন্নাকাটি করলি, তাকে ছাড়া নাকি তুই আর কাউকে তোর জীবনে ভাবতে পারিস না, তাহলে হঠাৎ?

অরু ঠোঁট উল্টে ভ্রু কুঁচকে বললো,
—– তোকে কে বললো, আমি নিখিল ভাইয়ের জন্য কেঁদেছি? আমি তো ওনার জন্য কাঁদছিলাম। অরু চোখ দিয়ে ইশারা করে দেখালো ক্রীতিক কে।

নীলিমা হতবিহ্বল কন্ঠে বললো,
—- কিহ! তুই ওনার জন্য কাঁদছিলি?

অরু ঠোঁট ফুলিয়ে হ্যা সূচক মাথা নাড়ালে নীলিমা পুনরায় বলে,
—- উনি কেন তোকে হঠাৎ বিয়ে করতে গেলো ?আর তুইই বা কি করে, না মানে আসলে কি বলতো সবকিছু আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে, আচ্ছা অরু, উনি কি আসলেই তোকে নিজ ইচ্ছেতে বিয়ে করেছে? মানে উনিকি তোর, সত্যিকারের, আপন স্বামী?

অরু না সূচক মাথা নাড়িয়ে ক্রীতিকের দিকে অভিমানী চোখে তাকিয়ে বললো,
—- নিজ ইচ্ছেতে নয় বরং জো’র করে বিয়ে করেছে! নি’র্দয় পা’ষান লোক একটা।

অরুর কথা শুনে নীলিমা হা হয়ে গেলো, হতবিহ্বল কন্ঠে শুধালো ,
—– কি বলিস! ওনার মতো মানুষ তোর মতো পুচকে মেয়েকে জো’র করে বিয়ে করে নিলো? আমি সত্যিই এখন কনফিউজড অরু, কি এমন আছে তোর মাঝে?

অরু ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো,
—- জানিনা, ওনাকে গিয়ে জিজ্ঞেস কর।

—– আচ্ছা তুই ওনাকে ভালোবাসিস?

নীলিমার কথায় অরু তাকায় ক্রীতিকের দিকে, যে এই মূহুর্তে সায়র আর অর্ণবের সাথে কফিতে মন দিয়েছে, অরু এভাবে তাকিয়ে আছে দেখে হুট করেই চোখাচোখি হয়ে গেলো দুজনার, অরু তৎক্ষনাৎ চোখ নামিয়ে মুচঁকি হেসে হ্যা সূচক মাথা নাড়ালো।

নীলিমা কৌতুহল বশত শুধালো,
—- আর উনি?

অরু জবাব দেয়,
—– উনি কখনো মুখে ভালোবাসি বলেন না, তবে ওনার মহাসমুদ্রের মতো গভীর ভালোবাসা স্পষ্ট উপলব্ধি করি আমি, যে ভালোবাসার অতলে যাওয়ার সাধ্যি আমার নেই। আছে শুধু এক সমুদ্র ভালোবাসায় নিরন্তর সাঁতার কেটে বেড়ানোর অদম্য ইচ্ছে।

আমি বুঝতে পারি উনি আমার জন্য ঠিক কতটা উ’ন্মাদ।ওনার পা’গলের মতো ভালোবাসা, এতগুলো বছরের অপেক্ষা, সবার আড়ালে দিনের পর দিন আমাকে ছায়ার মতো আগলে রাখা, আমার কষ্টে নিজেকে ভে’ঙেচুরে ফেলার মতো য’ন্ত্রনাদ্বায়ক কাজগুলো, আমাকে ওনার প্রেমে পরতে বাধ্য করেছে নীলিমা। আর যখন সত্যি সত্যি প্রেমে পড়ে গেলাম, তখন আমিও বুঝলাম সত্যিকারের প্রেমে পড়লে ঠিক কতোটা পু’ড়’তে হয়, কতটা য’ন্ত্রনা সহ্য করতে হয়।

আমি সবটা সহ্য করেছি, ওই জন্যই হয়তো এখন এই মূহুর্তে উনি আমার কাছেই রয়েছেন । এখনের এই জায়ান ক্রীতিক আর একান্ত গোপনীয় আমার জায়ান ক্রীতিকের মাঝে রাতদিন ফারাক । ওনার না বলা গোপন ভালোবাসায় এতোটাই আবিষ্ট আমি,যে আর কারোর হাজার বার উচ্চারিত ভালোবাসায়ও এখন আর পোষাবে না আমার নীলিমা। সত্যিই পোষাবে না।

এক নাগাড়ে কথা গুলো শেষ করে, আবারও ক্রীতিকের পানে দৃষ্টি নিক্ষেপন করে অরু। যে এই মূহুর্তে গভীর মনোযোগে ফোন স্ক্রল করছে, আবার মাঝে মাঝেই অরুর দিকে তাকিয়ে দক্ষ অভিভাবকের ন্যায় পর্যবেক্ষন, করছে অরুর গতিবিধি।
***********************************************
— আরে! কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? সবাইতো অন্যদিকে যাচ্ছে।

শপিং শেষ করে,বাড়ি যাওয়ার পথে মাঝরাস্তায় হঠাৎ বাইকের টার্ন অন্যদিকে ঘোরানোর সঙ্গে সঙ্গে একপ্রকার চেঁচিয়ে উঠলো অরু। ওর কথার পাছে ক্রীতিক গম্ভীর গলায় বললো,
—- সো হোয়াট?

—- সো হোয়াট মানে? এতো রাত হয়ে গিয়েছে বাড়ি যাবোনা?

—- আমিতো এখানেই, তাহলে বাড়ি যাওয়ার এতো তাড়া কিসের তোর?
কে আছে বাড়িতে?

অরু মুখ কালো করে বললো,
—- সবাই আমাদের রেখে চলে যাচ্ছে তাই আর কি…

ক্রীতিক অরুকে থামিয়ে দিয়ে স্পিডোমিটারের গতিবেগ বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
—- সবার কথা বাদ, ফোকাস অন মি, আমি যদি না ফেরার দেশে নিয়ে যাই, তবে তুই সেখানেই যাবি, ইভেন উইথ আউট এনি ফা’কিং কোশ্চেন। এখন ধরে বস।

অরু বললো,
—- ধরলাম তো।

ক্রীতিক তীর্যক কন্ঠে বললো,
—- আরও শক্ত করে ধর আমার হচ্ছে না, তোকে ফিল করতে পারছি না।

ক্রীতিকের কথায় অরু লজ্জায় ঠোঁট কামড়ে ধরে, পরক্ষণেই মাথাটা এলিয়ে দেয় ক্রীতিকের কাঁধের উপর।
ক্রীতিক রাইড করতে করতেই মৃদু হেসে বললো,
—- নাও পার্ফেক্ট বেইবি।

ওদিকে রাস্তা ছেড়ে বে-রাস্তায় মোড় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে বসেই চেঁচিয়ে উঠলো সায়র,
—– আরে ওদিকে কই যাচ্ছিস তোরা? রাস্তা তো এদিকে।

ক্রীতিক জবাব দেয়না, সায়রের দিকে তাকিয়ে একটু ভাব নিয়ে হেলমেটের গ্লাসটা টান মে’রে নামিয়ে দিয়ে ওদের থেকে দিগুণ গতিতে বাইক নিয়ে হারিয়ে যায় রাস্তার অদূরে।

অরু যখন বাইক থেকে নামলো তখন দেখতে পেলো এটা এয়ারপোর্ট গেইট। ক্রীতিক অরুর হাত ধরে নিয়ে গিয়ে ওকে একটা সেফ যায়গায় দাড় করিয়ে দিয়ে বললো,
—– বেইবি, ওয়েট কর আমি আসছি।

অরু তৎক্ষনাৎ দু-হাতে ক্রীতিকের বলিষ্ঠ হাতটা টেনে ধরে কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বললো,
—- এয়ারপোর্টের মধ্যে কোথায় যাচ্ছেন আপনি? আমায় রেখে কোথায় চলে যাবেন সত্যি করে বলুন?

ক্রীতিক মৃদু হেসে অরুর দিকে সামান্য ঝুঁকে হাস্কিটোনে বললো,
—- তোকে ছেড়ে কোথায় যাবো আমি?

—- এই যে যাচ্ছেন।

ক্রীতিক অরুকে আস্বস্ত করে বললো,
—- দু মিনিটে ফিরে আসছি।ওকে?

অরু হ্যা সূচক মাথা নাড়ালে, ওর হাতে হেলমেটটা ধরিয়ে দিয়ে ভেতরে চলে যায় ক্রীতিক।

তারপর যখন ফিরে আসে তখন ক্রীতিককে দেখে উৎকন্ঠায় বড়বড় হয়ে যায় অরুর দু’চোখ, আপনা আপনি ফাঁকা হয়ে যায় ওষ্ঠাধর।

চোখ দুটোতে বারবার পলক ছেড়েও নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারছে না অরু। তাই ক্রীতিকের হাতের দিকে তাকিয়ে অস্ফুটেই অরু বলে ওঠে ,
—- ডোরা?

ক্রীতিক ডোরার বাস্কেটটা অরুর হাতে তুলে দিলো। অরু সহসাই বাস্কেট খুলে ডোরাকে কোলে নিয়ে বললো,
—— আপনি সত্যিই ডোরাকে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছেন?

ক্রীতিক পুনরায় হেলমেট পরতে পরতে বলে,
—– ডোরা এডপ্টেড ছিল না, তাই ফর্মালিটিস পালন করতে করতে দেরি হয়ে গেলো, নয়তো আমার সাথেই নিয়ে আসতাম।

অরু ডোরার গলায় আদুরে আঙুল বোলাতে বোলাতে বললো,
—- কার নামে এডপ্ট করলেন?

ক্রীতিক অরুকে হেলমেট পরিয়ে দিয়ে বললো,
—– দুজনার, মহামান্য পিতা মি. জায়ান ক্রীতিক চৌধুরী, আর মহোদয়া মাতা মিসেস অরোরা জায়ান।

ক্রীতিকের কথায় ফিক করে হেসে দিয়ে ডোরাকে নিয়েই বাইকে উঠে বসলো অরু।

*
কিছুদূর গিয়ে একটা ফাঁকা রাস্তায় ব্রেক কষলো ক্রীতিক। ঘড়ির কাটা তখন বারোটার ঘর ছুঁই ছুঁই, চারিদিক নিস্তব্ধ আর শুনশান, পুরো পুরি নিরবতার মাঝে কর্ণকূহরে এসে বাড়ি খাচ্ছে ঝিঁঝি পোকার অক্লান্ত আওয়াজ।

এমন একটা যায়গায়, এতো রাতে বাইক থামানোর দরুন, উদ্বিগ্ন হয়ে প্রশ্ন ছুড়লো অরু, বললো,
—– কিছু হয়েছে?

ক্রীতিক বাইক স্ট্যান্ড করিয়ে বললো,
—- কিছু হয়নি নাম এক্ষুনি।

অরু নেমে দাঁড়ালো, পুনরায় তৎপর হয়ে শুধালো,
—-কি হয়েছে, রাগ করেছেন?

ক্রীতিক জবাব না দিয়ে নিজে বাইকে হেলান দিয়ে অরুকে টান মে’রে নিজের কাছে নিয়ে এলো।

ক্রীতিকের কর্মকান্ডে অরু বিস্ময়ে হতবাক, ও আশ্চর্য বনে গিয়ে বললো্,
—– কি করছেন?

ক্রীতিক একটানে অরুর চুলের গার্টারটা খুলে, ওর চুল গুলো বাঁধন হারা করে দেয়, অতঃপর হিসহিসিয়ে বলে,
—- দেনা পাওনা শোধ করছি, যেটা এয়ারপোর্ট বসেই করতাম। তোর ডোরাকে এনে দিয়েছি, এবার আমি যা চাইবো, সেটা তুই আমাকে দিবি।

অরু ক্রীতিকের বাঁধনের মধ্যে থেকেই কাইকুই করে বলে ওঠে ,
—- ছাড়ুন এটা মাঝরাস্তা।

—— চুপচাপ আমার কাজ করতে দে, নয়তো সারারাতেও ছাড়া পাবিনা।

অরু গলা খাদে নামিয়ে বললো,
—- কি করবেন আপনি?

ক্রীতিক অরুকে আরও কিছুটা নিজের দিকে টেনে নিয়ে এসে বললো,
—- আগে আমাকে তুমি করে বল তারপর করছি।

অরু চোখ মুখ কুঁচকে বললো,
—-পারবো না।

—– জাস্ট সে, তুমি।

ক্রীতিকের কড়া আদেশ, তারউপর মাঝরাস্তায় এভাবে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে দাড়িয়ে আছে, অগত্যাই উপয়ান্তর না পেয়ে অরু বলে ওঠে ,
—- তুমি।

ক্রীতিক পুনরায় বলে,
— আবার বল।

অরু কা্ঁপা স্বরে বললো,
—- তুমি।

ক্রীতিক অরুর গলায় নাক ঘষতে ঘষতে বললো,
—- বারবার বল হার্টবিট, তোর মুখে তুমি ডাক শুনলে পা’গল হয়ে যাই আমি। যখন আমি খুব রে’গে যাবো, তখন তুই এই ট্রিকস টা প্রয়োগ করতে পারিস। আমি শান্ত হয়ে যাবো, প্রমিস।

ক্রীতিকের ভালোবাসায় কাতর অরু, পা দুটো ভে’ঙে আসছে, কোনোমতে ক্রীতিকের উপর নিজের শরীরের ভার ছেড়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ও।

কিন্তু ক্রীতিকের বোধ হয় সেটাও সহ্য হলোনা, ও তৎক্ষনাৎ ঘুরে গিয়ে অরুকে তুলে বাইকের সিটে বসিয়ে দিয়ে,তরিৎ বেগে নিজের অধর ডুবিয়ে দিলো অরুর নরম তুলতুলে ওষ্ঠাধরের ফাঁকে।

ক্রীতিকের হঠাৎ পদক্ষেপে কেঁপে উঠল অরু, চুপসানো শরীরটাকে একটু সস্থি দিতে শক্ত হাতে খা’মচে ধরলো পুরুষালী চওড়া বুকে লেপ্টে থাকা টি -শার্ট খানা।

রাত বাড়ছে, সেই সাথে চু’ম্বনের গভীরতা ও। তীব্র আ’লিঙ্গনের সাথে তাল মিলিয়ে ক্রমশ দলিত মথিত হচ্ছে অষ্টাদশীর ফিনফিনে কোমল ওষ্ঠাধর। আবেশিত নয়নে নয়ন এঁটে রাখা, মাতাল করা এই নির্ভীক, বেপ’রোয়া পুরুষই কেবল জানে এই গভীরতার শেষ কোথায়।
চলবে…..

,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here