মনশহরে_তোমার_নিমন্ত্রণ #১২তম_পর্ব

0
124

#মনশহরে_তোমার_নিমন্ত্রণ
#১২তম_পর্ব

“আমি এখনো তোমায় ভালোবাসি ঐন্দ্রিলা”

নির্মল স্বীকারোক্তি সৌরভের। নিষ্কলঙ্ক গাঢ় চাহনী ঐন্দ্রিলাতে নিবদ্ধ। ঐন্দ্রিলা হতবাক তাকিয়ে রইলো। ম্লান, জীর্ণ অনুভূতিগুলো হু হু করে উঠলো মুহূর্তেই। এমনও কি হয়? হয় হয়তো। হৃদয়ের মাঝে মৃতপ্রায় সেই প্রণয় আকুল আবেদন জানালো তাকে বাঁচাতে হবে। কিন্তু সেই বেহায়া মনের নিকট পরাজিত হলো না ঐন্দ্রিলা। নিজেকে করলো শক্ত। কঠিন হলো স্বর,
“ওহ”

তার ছোট “ওহ” যেন আহত করলো সৌরভ। ব্যাথিত হলো নয়ন। কন্ঠে তীব্র অনুনয়,
“আমাকে কি একটা সুযোগ দেওয়া যায় না? সেই ফেলে আসা সময়ের উত্তরটা কি এখন পেতে পারি না?”

ঐন্দ্রিলা হাসলো। হাসিতে কিঞ্চিত তাচ্ছিল্য মেশানো। তাচ্ছিল্য সে সৌরভকে করছে না। করছে নিজ ভাগ্যকে। যে ভাগ্য তার প্রথম প্রণয় ফুলকে শুকিয়ে ফেলেছে অবিশ্বাসের প্রহারে। মলিন স্বরে বললো,
“আমি অনেক বড় একখানা উত্তর লিখেছিলাম সৌরভ, সেই উত্তরে আমি হয়তো একশতে এক দশ পেতাম। কিন্তু আমার পরীক্ষার খাতা তুমি কেড়ে নিলে। আমার উত্তরটা মনেই রয়ে গেলো। এখন তো সময় পেরিয়ে গেছে”

সৌরভ অস্থির হয়ে তার হাতটা ধরলো। বিনম্র স্বরে বললো,
“ভুল করেছি। তোমাকে দোষ দেওয়াটা আমার পাপ ছিলো। হীনমন্যতা আমাকে ঘিরে ধরেছিলো। তুমি জানো না আমার উপর কি কালবৈশাখী পেরিয়েছে। আমি ইনসিকিওর একজন মানব, তারপর সবার ঐ দৃষ্টি আমাকে আরোও হীনমন্যতায় ঠেলে দিত। আমি ভেবেছিলাম তুমিও সবার মত আমাকে নিয়ে আমার অগোচরে মজা নিচ্ছো। কারণ তোমাকে ভালোবাসার কথা আমি কাউকে বলে নি। হুট করেই যখন সবার মাঝে এটা নিয়ে কথা ছড়ালো আমি সহ্য করতে পারলাম না”
“আমি তো কাউকে বলিনি”
“জানি, যদিও দেরিতে জেনেছি। আমাদের কথাটা অভ্রের মাধ্যমে ছড়িয়েছে আমি জানি। তুমি কাউকে বলো নি, আমি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে কাজ করি, তোমাকে ভালোবাসি; এই সব অভ্র ছড়িয়েছে। আসলে আমি নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতাম। সবাই জেনে যাওয়ায় ওই সময়ে এতোটা বিক্ষিপ্ত ছিলাম যে আমি ভুল ঠিক কিছুই ভাবতেও পারি নি জানো। মন মস্তিষ্ক চিৎকার করলেও আমি না শোনার ভান করেছি। বিদ্রুপ, তাচ্ছিল্যের মাঝে তোমার স্বরটা মিলিয়ে গেছিলো। আমি জানি আমি অন্যায় করেছি। তোমাকে অবিশ্বাস করার অন্যায়। তবুও নির্লজ্জের মত তোমাকে ভালোবাসার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছি”

কাতর স্বরে সৌরভ কথাগুলো বললো। তারপর ছেয়ে গেলো পিনপতন নীরবতা। ঐন্দ্রিলা খুব ধীর স্বরে বললো,
“ভালোবাসার তীব্রতা বিশ্বাসের কাছে ঠুংকো। তোমার ভালোবাসায় যদি বিশ্বাস না থাকে, তবে আমি বলবো সেটা ওই ভাতের ফ্যানের মতো পানসে”

সৌরভ চুপ করে থাকলো, অনেক সাহস সঞ্চয় করে বললো,
“আমি তোমার প্রতীক্ষা পাঁচ বছর ধরেই করেছি”
“যোগাযোগ করলে না যে”
“নিজেকে তোমার যোগ্য করতে চেয়েছি। আজ আমার পিছুটান নেই। শুধু তোমাকে পেলেই আমার জীবনের ষোল আনা পূর্ণ”

ঐন্দ্রিলার মনে হলো হৃদয় কাঁপছে। কি অসহ্য সেই কম্পন। সে একটি ঘোরের মাঝে ডুবে যাচ্ছে। এখন ই পালাতে হবে। এখনই। ঐন্দ্রিলা তার বসে থাকতে পারলো না। এক রকম পালিয়ে বেরিয়ে এলো। সৌরভ সেখানেই বসে রইলো। নির্জীব আঁখি। দেখলো ঐন্দ্রিলার চলে যাওয়া।

*****

ঐন্দ্রিলার পরণে উজ্জ্বল হলুদ বর্ণের শাড়ি। একেবারে মৌমাছির রঙ্গের হলুদ শাড়ি। অভ্রের পছন্দ। সকালে পাঠিয়েছে। পড়তে ইচ্ছে ছিলো না। কিন্তু অবাধ্য হবার সুযোগ নেই কারণ আজ তার হলুদ। ঘর ভর্তি মেহমান। বড় ফুফু চলে এসেছে। শাহানা বেগম একজন গোঁড়া মনভাবের মহিলা। তার সামনে সেলিম সাহেব এবং সাবেরা কথা বলার সুযোগ পান না। ফলে ঐন্দ্রিলাকে এই হবু স্বামীর দেওয়া শাড়ি পড়তে হলো। ঘরের চেহারা আজ ভিন্ন। একেবারে বিয়ে বাড়ি, বিয়ে বাড়ি মনে হচ্ছে। সালাম সাহেব একটা প্রফেশনাল ওয়েডিং প্লানার বুক করেছেন। সে একেবারে হলুদের থিমে স্টেজ সাজিয়েছে। বউ বরের হলুদ একত্রে হবে। যদিও শাহানার ব্যাপারটি ভালো লাগে নি। কিন্তু এটা আউওয়াল সাহেবের প্রস্তাব বলে সে কথা বাড়ায় নি। সন্ধ্যা হতেই গমগমে হয়ে গেলো পরিবেশ। পিউ স্বহস্তে সাজাচ্ছে বান্ধবীকে। বান্ধবীর গোমড়া মুখ দেখে হাতে চাপ দিলো। ঐন্দ্রিলা মুখ তুলে চাইলো। পিউ হাতটা ধরে বললো,
“এরাম মইরে আছোস কেন?”
“আমার সত্যি সত্যি মইরে যাইতে ইচ্ছা করতেছে। আমার ভালো লাগতেছে না পিউ”
“কেন? সেদিনও জিজ্ঞেস করলাম। বললি না। এখন বল”

ঐন্দ্রিলা আশেপাশে তাকালো। তার ঘরে আত্মীয়ের মেলা। পিউ চট করে বললো,
“এই তোমরা বাহিরে যাও। ঐন্দ্রিলার শাড়িতে সমস্যা হইছে”

বলেই সবাইকে বের করে দিলো। সবাই বেরিয়ে যেতেই বললো,
“এবার বল কি হইছে?’
“সৌরভের সাথে দেখা হইছে”

সৌরভের নাম শুনতেই পিলে চমকালো পিউ এর। অবাক স্বরে শুধালো,
“এতো বছর পর, এই মরা কই দিয়ে উঠলো”
“জানি না, তবে বলছে আমাকে ভালোবাসে। আমি জানি না আমার নাম্বার কই থেকে পাইছে। শুধু ম্যাসেজ করছে। আমি দেখা করতে গেছিলাম। সে বলে আমাকে ভালোবাসে এখনো। আমার ভালো লাগতেছে না। অভ্রকে দেখলেই গা গুলাচ্ছে। সব কিছু ভেঙ্গে ফেলতে ইচ্ছে করতেছে। মাকে বললে সে শুনছে না। বাবাকে বলে লাভ নেই। ভাইটা একটা গাধা। আমি কই যাব”

বলতে বলতে কেঁদে দিলো ঐন্দ্রিলা। মেয়েটি সহজে কাঁদে না। কিন্তু আজ কেমন অসহায় ঠেকলো যেনো তাকে। পিউ জড়িয়ে ধরলো বান্ধবীকে। বুদ্ধির সাগরের কাছে আজ বুদ্ধি নেই। কোনো বুদ্ধি আসছে না। এমনি সময় মাথা ঝাকালেই বুদ্ধি বের হয়। আজ নিজেকে অপারগ লাগলো। মিনিট দশেকের মধ্যে দরজা ধাক্কালো হ্যাপি। সাথে সাথে অশ্রুগুলো গোপন করে নিলো ঐন্দ্রিলা। পিউ তাকে আশ্বাস দিয়ে বললো,
“যা ভাববি, দ্রুত ভাব। যা করবি আমি আছি। ছোট দেহ, কিন্তু অনেক সাহস। অন্তত ওই অভ্রকে ল্যাং ফেলে দিতে পারবো। ভয় পাবি না”

বান্ধবীটা এমন ই ঐন্দ্রিলার। এজন্য এই মেয়েটিকে এতো বেশি ভালো লাগে। ঐন্দ্রিলা আবার জড়িয়ে ধরলো পিউকে। বন্ধু যদি দুঃসময়ে ঢাল না হলো তবে কিসের বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব হতে হবে নির্মল। বন্ধু ঠিক হোক বা ভুল সগর্বে তার পাশে দাঁড়াতে হবে, পরিশেষে যদি খাদেও পড়ি অন্তত একসাথেই না হয় পড়লাম।

******

অভ্রের পরণে কটকটে হলুদ পাঞ্জাবী। দু চক্ষের বিষ এই রঙ্গ যা জীবনে গায়ে তুলবে না ভেবেছিলো আধাপাগল মেয়েটার জন্য তুলতে হলো। দাঁড়ি ট্রিম করেছে। ভালো করে মুখ ধুয়েছে। এখন মানুষের বাচ্চা মনে হচ্ছে। অবশ্য এগুলো বিল্লালের জন্যই। বিল্লাল সকালে নাপিতের কাছে নিয়ে গেছে তাকে একরকম বগলদাবা করে। যতই হোক বিয়ে তো আর একশবার করবে না। অবশ্য অভ্রের ভরসা কি? করতে পারে। কিন্তু বিল্লাল চায় প্রথমটা স্মরণীয় হোক। অভ্রকে দেখে সবার চোখে বেশ মুগ্ধটা এটে আছে সেটা বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু যার উপলক্ষে এতকিছু সেই মানুষটা একটি বারও ফিরে তাকালো না। কি নিষ্ঠুর! বিল্লাল হতাশ হলো। পাশাপাশি দুটি মানুষ অথচ কি শীতল যুদ্ধ। তার মনে হলো সে সেই পাঁচ বছর আগের সময়ে ফিরে গেছে। যেখানে কেউ কারোর মুখদর্শন করতো না। এর চাইতে একে অপরের সাথে ঝগড়া করে পৃথিবীতে সুনামী ডেকে আনলেও বোধ হয় মন্দ ছিলো না।

হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে আনুষ্ঠানিক ভাবে। পিউ শুধু লুকিয়ে লুকিয়ে অন্তরে বিশাল জায়গা করা বোকারামটিকে খুঁজছে। কিন্তু তার দেখা মিললো না। অনেক খোঁজার পর অবশেষে তাকে দেখলো। কোথায়? যে ফুচকা ওয়ালার কাছে ফুচকা খাচ্ছে। পিউ নীলাদ্রির দিকে তাকিয়ে হা। পরণে একটা নীল পাঞ্জাবী। বড় বড় সেই চুল কেটে ফেলেছে। মুখের যাযাবরের মতো এলোমেলো দাঁড়িগুলো ট্রিম করে ছোট করা। বৃক্ষমানবকে সাউথ ইন্ডিয়ান নায়কের মত ঠেকলো। সে খুব মনোযোগে ফুচকা খাচ্ছে। আর ফুচকা ওয়ালার ভুল ধরছে। আর তার দিকে কঠিন চোখে লোল ফেলিয়ে তাকিয়ে আছে কিছু মেয়ে। যেনো সুন্দর ছেলে দেখলেই ফিরে তাকাতে হবে। এতো সাজের বাহার কেনো? কিসের ঠেকা? পিউ গটগট করে হেটে গেলো। রাগ গিলে শুধালো,
“নীলাদ্রি ভাই কি করছেন?”
“আমার বাপের আয়োজনের তীব্র নিন্দা। সমালোচনা”

অকপটে উত্তর দিলো মানুষটি। পিউ সন্তুষ্ট হলো না। আবার শুধালো,
“সে বুঝলাম, কিন্তু এত সেজেছেন কেন। কেউ দেখলে তো চিন্তায় পড়ে যাবে বিয়ে কার। ওদিকে বর বউ কার্টুন সেজে বসে আছে আর আপনি কি না আল্লু আর্জুন সেজেছেন?”
“আলু? আমি আলু সাজবো কেনো?”
“আলু না, আল্লু আর্জুন”
“সে কে?”
“উফ, সেটা জরুরি নয়। আগে বলুন সেজেছেন কেনো?”

নীলাদ্রি তার শেষ ফুচকা মুখে পুরলো। প্লেট ফুচকা ওয়ালাকে দিয়ে বললো,
“তোমার ফুচকায় লবন নেই, আলুতে সামান্য গন্ধ। মশলা ভালো না। আমি তোমাকে দশে সাড়ে পাঁচ দিলাম”

ফুচকা ওয়ালা বিরক্তির দৃষ্টিতে তাকালো নীলাদ্রির দিকে। আয়োজকের ছেলে না হলে দুটো কথা শুনিয়ে দিত। পিউ অস্থির হইয়ে বললো,
“উফ, আপনি আমার প্রশ্নের উত্তর দিন। ওকে নম্বর পরে দিয়েন”

এবার নীলাদ্রি তাকালো পিউ এর দিকে। মিষ্টি করে হেসে বললো,
“বোনের বিয়েতে ভাইদের একটু সাজতে হয়। নয়তো ভালো ইম্প্রেশন জমে না। ধরো আগামীকাল বরপক্ষ আমার বোনকে লাথি মেরে ফেরত দিয়ে গেলো। আমি ঝগড়া করতে গেলে তো দাম দিবে না। আমি তাই সাজসজ্জায় আমার দাম বাড়াচ্ছি। সবখানে ডিগ্রি নিয়ে ঘোরা যায় না। সবখানে চিৎকার করে তো বলতে পারবো না, আমি গোল্ড মেডেলিস্ট ডাবল মাস্টার্স”

পিউ বিরক্ত হলো। এই বোকারাম কখনো তার অন্তরের জ্বালা বুঝে নি। আজকেও বুঝবে না। তাই অহেতুক চেষ্টা করাই বৃথা। কিন্তু পাশের মেয়েগুলোর লোলুপ দৃষ্টি তাকে পোড়ালো। যা বোকারামের উপর ঝাড়লো পিউ। ইচ্ছাকৃতভাবে তার গায়ে ফুচকার টক ঢেলে দিলো। নিলাদ্রি ব্যাথিত স্বরে বললো,
“কি করছো? আমার যে আর কোনো পাঞ্জাবী নেই”
“না থাকলে নেংটো ঘুরুন”

বলেই হনহন করে হেটে চলে গেলো পিউ। নীলাদ্রি মাথা চুলকালো। অবাক স্বরে বলল,
“মেয়েটা রেগে গেলো কেনো?”

*********

কৃষ্ণ আকাশে আজ পূর্ণিমা। নিটল পূর্ণিমার আলো চুয়ে পড়ছে জানালা দিয়ে। ঐন্দ্রিলা ক্লান্ত চোখে দেখছে সেটা। ফোনটা বাজছে অক্লান্ত স্বরে। অভিমানের জোয়ারটা আজ দূর্বল। ফলে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফোনটা ধরলো সে,
“কেনো ফোন দিচ্ছো?”
“তুমি সত্যি অভ্রকে বিয়ে করবে?”

ব্যস্ত প্রশ্ন সৌরভের। উত্তরহীন ঐন্দ্রিলা। সৌরভ কাতর স্বরে বললো,
“আমার ভালোবাসা কখনো জিতবে না ঐন্দ্রিলা?”
“আমার কি করার আছে সৌরভ? পাঁচ বছর পর হুট করে এসে আমাকে এলোমেলো করে দিয়ে আমার কাছে কৈফিয়ত চাওয়ার অধিকার নেই তোমার”

সৌরভ এবার থেমে গেলো। ক্লান্ত স্বরে শুধালো,
“আমাকে কি কখনো ভালোবেসেছিলে ঐন্দ্রিলা? যদি বল না। তাহলে আর বিরক্ত করবো না”

থমকে গেলো সময়। বুকের মধ্যে জাগলো বিশ্রী কালবৈশাখী। এ কালবৈশাখীর দাপটে চুরমার হলো অভিমান। ভালোবাসা অবিনশ্বর সেই বিশ্বাস আবার জাগলো। না অনুভূতিরা মরে না। তারা জেগে থাকে। ঐন্দ্রিলা চুপ করে রইলো। সৌরভ আবার বললো,
“মৌনতা সম্মতির লক্ষন। আমি জানি আগামীকাল তোমার বিয়ে। তবুও আমি লেকের ধারে তোমার অপেক্ষা করবো। সেই লেক যেখানে তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা ব্যক্ত করেছিলাম নির্লজ্জের মত। যদি আমাকে ভালোবাসো তাহলে তুমি বিয়ে ছেড়ে আমার কাছে আসবে। আমি অপেক্ষা করবো। ভোর অবধি অপেক্ষা করবো”

কি চমৎকার প্রেমের আবাহনী বার্তা। এই প্রেম কি করে প্রত্যাখ্যান করবে ঐন্দ্রিলা। সৌরভ ফোন কেটে দিলো। ডুকরে কেঁদে উঠলো ঐন্দ্রিলা। হৃদয়ের সেই ঝড় তীব্র বর্ষণ করলো। মনশহর ডুবে গেলো সেই বর্ষায়।

********

আলোকসজ্জায় রঞ্জিত ঐন্দ্রিলাদের বাড়ি। বরযাত্রী নিয়ে বেশ ধুমধাম করে আসলো অভ্র। পরণে ম্যাজেন্টা রঙ্গের শেরওয়ানি। পায়ে লাল জুতো। আউওয়াল সাহেব নিজের বড়নাতীর বিয়ে উপলক্ষে দুপুরে পঞ্চাশ জন মিসকিন খাইয়েছেন। আজ তার আনন্দের দিন। ইদ্রিস সাহেব বাজিতে হেরে যাওয়ায় মুখ ভোঁতা করে আছে। সবচেয়ে আনন্দিত কানন। ঐন্দ্রিলা তার ঘরে বউ হবে। তার উড়ণচন্ডী ছেলেটা এবার যদি একটু ভদ্র হয়। এর মাঝেই বিস্ফোরকের মতো বিনা আওয়াজে খানখান করে দিলো আনন্দের সন্ধ্যার রেশ একটা চিঠি। ঐন্দ্রিলার চিঠি, যাতে লেখা,
“প্রিয় মা জননী,
তোমার জেদে নিজের জীবন বিসর্জন দিতে পারিবো না। আমি পালাইলাম আমার প্রেমিকের সহিত। যদি মমতা জীবিত থাকে তবেই আমাকে খুঁজিও

ইতি
তোমার আমড়া কাঠের ঢেকি কন্যা,
ঐন্দ্রিলা”…………

চলবে

মুশফিকা রহমান মৈথি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here