মনশহরে_তোমার_নিমন্ত্রণ #৪র্থ_পর্ব

0
128

#মনশহরে_তোমার_নিমন্ত্রণ
#৪র্থ_পর্ব

“এতো বুদ্ধি হয়ে কি হবে বাবা? মা মানুষ চিনে না। সব নাহয় আমি মেনেই নিলাম, কিন্তু অভ্র তো চরিত্রহীন। মিনিটে মিনিটে গার্লফ্রেন্ড বদলায়। সেটার কি হবে?”

কথাটা পরমাণবিক বো’মার মত কাজ করলো যেন। স্তব্ধ হয়ে গেলো পৃথিবী। হাসি থেমে গেলো দম্পতির। তাদের মুখের বরণ হলো রক্তশূন্য। সাবেরা অবাক স্বরে শুধালেন,
“কি? অভ্রের ক্যারেক্টার খারাপ?”
“শুধু খারাপ? বিশাল খারাপ। বলতে পারো একেবারে নষ্ট, পঁচা, নর্দমার গন্ধযুক্ত”
“তুমি জানলে কি করে?”

ঐন্দ্রিলা বিজ্ঞের মত উত্তর দিলো,
“বারে, একই স্কুল, কলেজে এক ক্লাসে পড়েছি মা। আমি জানবো না? আমি ওর নাড়িনক্ষত্র জানি। এই তো দু মাস আগেও বারান্দায় বসে প্রেমিকার সাথে কথা বলছিলো। ইশ! কি মুখের ভাষা বাবা। শুনে আমার কান গরম হয়ে গেলো। বিয়ে করিস নি, কিচ্ছু না, একটা মেয়ের সাথে নোংরা নোংরা প্রেমের কথা কেউ বলে?”

সাবেরা বেগমের মুখ শক্ত হয়ে গেলো। মহিলা সব কিছুকে এড়িয়ে গেলেও চরিত্রহীনতা পছন্দ করেন না। পুরুষ হোক বা নারী এক সত্ত্বায় বদ্ধ থাকবে। তারা কি গরু নাকি মহিষ যে ঘাটে ঘাটে জল খাবে? এদিকে সালাম সাহেব রেগে গেলেন মাত্রাতিরিক্ত। একমাত্র আদুরে মেয়ের হবু জামাই নারীবাজ হবে এটা কি মানা যায়? গজগজ করে বললো,
“ছেলে তাহলে একটা লুজ ক্যারেকটার।“
“এবার বুঝলাম কানন কেনো আমার আমড়া কাঠের ঢেকি নিতে চায়। ওরটা তো ছেড়া নোট। ঐন্দ্রিলার বাবা, তুমি ইদ্রিশ ভাইকে ফোন দাও। আজকে এর শেষ দেখবো”

এরমাঝেও হালকা করে ঝাপসার উপর ঐন্দ্রিলাকে অপমান করে দিলেন সাবেরা। কিন্তু এই অপমানে ঐন্দ্রিলা মনোক্ষুন্ন নয়৷ বরং মুক্ষম ঔষধ পড়ায় মন প্রসন্ন। এবার বিয়ে হবে না। অনেকদিন পর শান্তির ঘুম ঘুমাবে ঐন্দ্রিলা। উফফ! এই পাজি অভ্র তার জীবন থেকে বিতারিত হবে এর চেয়ে আনন্দদায়ক আর কি হতে পারে। পিয়ালের ব্রেকাপের দুঃখ এখন ম্লান হয়ে গেছে। ঐন্দ্রিলা গদগদ মনে নিজ ঘরে গেলো।

ঐন্দ্রিলা দক্ষিণের জানালাটা খুলে দিলো। এই জানালাটা সে খুলে না। কারণ জানালাটা খুললেই একটা অসহ্য মুখশ্রী তাকে দেখতে হয়। তার জানালার ঠিক সামনের ঘরটি অভ্রের। এলোমেলো, নোংরা একটি ঘর। যেখানে একমাত্র তার বিচরণ। এই ঘরের পর্দা কখনো দেওয়া থাকে না। জানালা সর্বদা থাকে খোলা। জানালার লাগোয়া খাটে অবহেলায় পড়ে থাকে একটা গিটার। আজও গিটার পড়ে আছে। কিন্তু এই গিটারে এখন আর সুর তুলে না কেউ। হয়তো তুলে ঐন্দ্রিলা শুনে না। ঐন্দ্রিলা বুক ভরে নিঃশ্বাস নিলো। ওপাশের ঘরের মানুষটি নেই। থাকলে অবশ্য ঐন্দ্রিলা এতো শান্তিতে দাঁড়িয়ে চুল এলিয়ে দিতে পারতো না। ছেলেটি তার জামাহীন, উদাম, অর্ধনগ্ন শরীর প্রদর্শন করতে করতে বলতো,
“তোর লজ্জা লাগে না ঐন্দ্রি, এভাবে নির্বস্ত্র একটি পুরুষের ইজ্জত হরন করতে?”

ঐন্দ্রিলা তখন চরম রাগে শব্দ করে জানালার পাল্লা আটকে দেয়। আজ এমন কিছু হবে না। কারণ ঐ বাড়িতে এখন মহা পারমাণবিক বো’মা নিক্ষেপ করা হয়েছে। অভ্রের সব কুবুদ্ধি এক অস্ত্রেই দমণ।

****

অভ্রের বাড়ির সকালটা হলো থমথম, পিনপতন নীরবতার সাথে। অভ্র একটি ইস্ত্রী করা শার্ট পড়লো। কপালের সামনের চুলগুলোকে কায়দা করে আচড়ালো। আয়নার সামনে নিজেকে দেখলো। না ভদ্র ভদ্র লাগছে। এবার শ্বশুরবাড়ি যাওয়াই যায়। কানন ডাইনিং টেবিলে বসা। সেখান থেকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে অভ্রের ঘরের দিকে তাকিয়ে আছে। তার মুখখানা গোমড়া। তিনি আজ খাবেন না বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এদিকে ইদ্রিস সাহেব আয়েশ করে চা খাচ্ছেন। তার দিকে তাকিয়ে কানন চিন্তিত কন্ঠে শুধালেন,
“আমার চিন্তায় হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। সালাম ভাই কেনো ডাকলো বলতো?”

ইদ্রিস সাহেব উত্তর দিলেন না। তিনি চা খাচ্ছেন। তাকে দেখে মনে হচ্ছে এই চা পৃথিবীর শেষ সুস্বাদু চা। এর পর পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই এদিক ওদিক মনোযোগ না দিয়ে একনিষ্টভাবে চা খাচ্ছেন তিনি। যা দেখে রাগে গজগজ করে উঠলেন। চিরচিরে কন্ঠে বললেন,
“তোমার গলা দিয়ে খাবার নামছে কি করে? আমার ছেলের বিয়ে ভাঙ্গছে আর তুমি মজ মেরে চা খাচ্ছো, এই তোমার দায়িত্ববোধ?”

ইদ্রিস সাহেব এবার চায়ের কাপটা নামালেন। নিতান্ত দায়সারাভাবে বললেন,
“তোমার ছেলের কীর্তি ফাস হলে আমার করার কি আছে। লায় দিয়ে দিয়ে তো মাথায় তুমি উঠিয়েছো। কত বলেছি শাসন কর, আমাদের সময় মায়েরা চেলাকাঠ দিয়ে পে’টা’তো। তুমি তা করো নি। এখন তোমার ছেলে মানুষকে পে’টায়। ফার্মের মুরগীর মত শরীর বানিয়েছে সেটার জোর প্রদর্শন করে। এতোই যখন জোর, যাক না অলিম্পিকে। অন্তত দেশের নাম তো করবে”

ইদ্রিস সাহেব এবং অভ্রের ছত্রিশের আঁখড়া। কারণ অভ্র উচ্ছন্নে গেছে। তার সম্পূর্ণ দায়ভার কাননের। কানন মুখ বাঁকালো। এই লোকের সাথে কথা বলা মানেই নিজের দোষের ফর্দ কাটা। অভ্র তখন ঘর থেকে বের হলো। পারফিউমের গন্ধ নাকে আসছে। কানন শক্ত গলায় বললেন,
“বিয়ে যদি ভাঙ্গে আমি তোকে ত্যাজ্যপুত্র করবো অভ্র”
“এখন ই করে দাও। কারণ বিয়ে ভেঙ্গে গেছে”

ইদ্রিশ সাহেবের টিপ্পনি কাটলেন। অভ্র প্যান্টের দুপকেটে হাত গুজে সপ্রংশস কন্ঠে বললো,
“তুমি এতো ভেবো না বাবা, টাকটা তো দিন দিন বড় হচ্ছে। যা একটু দু গাছি চুল আছে তাও ঝড়ে যাবে”
“বাজি লাগবি?”
“লাগালাম বাজি”
“হারলে তুই আমার ঘর ছেড়ে দিবি”

ইদ্রিস সাহেব গদগদ স্বরে বললেন। অভ্র ফিঁচেল হেসে বললো,
“আর জিতলে?”
“জিতলে আবার কি, থাকবি বাপের হোটেলে। যেমন আছিস”

ইদ্রিস সাহেবের স্বর শুকিয়ে গেলো। এই অভ্রের ভরসা নেই। জিতেও যেতে পারে। অভ্র বাবার সামনের চেয়ারে বসতে বসতে বললো,
“সেটা হবে না বাবা। বাজি ইজ বাজি। আমি যদি জিতি…… থাক, এটা তোলা থাক। আগে শ্বশুরকে ম্যানেজ করে আসি। এরপর দেখছি তোমার ব্যাপার”

ইদ্রিস সাহেব বেশ বিপদে পড়লেন। অভ্রের ভরসা নেই। নিজের সন্তানকে তো ভালো করে চিনেন। নিশ্চয়ই মনে মনে একটা ভয়ংকর মতলব করে রেখেছে।

**************

ঐন্দ্রিলাদের বাড়ি দোতালা। ঐন্দ্রিলারা থাকে দোতালায়। আর নিচ তালায় একজন ভাড়াটে থাকেন। অভ্র মেইন গেট খুলে প্রবেশ করলো বাড়িতে। সালাম সাহেব গতরাতে ইদ্রিস সাহেবকে ফোন করেছেন। তখন ভাগ্যবশত অভ্র বাসায় ছিলো। তাই ইদ্রিস সাহেবের সাথে কথা না বলে সরাসরি তার সাথেই কথা হয়েছে। সালাম সাহেবের স্পষ্ট কথা,
“চরিত্রহীনের সাথে মেয়ে বিয়ে দিবো না”

তাই আজ অভ্র এসেছে নিজের চরিত্রবান হবার প্রমাণ দিতে। এই বিয়েটা তার জন্য একান্ত জরুরি। বিয়েটা ভেঙ্গে গেলে খুব ঝামেলায় পড়বে সে। এখন তো বাবার সাথেও বাজি লাগিয়েছে। বিয়ে ভেঙ্গে গেলে মা ত্যাজ্যপুত্র করবে ওদিকে বাবা বাজিতে হারার দরুন ঘর থেকে লা’থি মে’রে বের করবে। তাই আজ কোনো ভুল হওয়া যাবে না। দোয়াদুরুদ পরে বুকে ফু দিলো সে। কিন্তু কলাপসিবল গেট অবধি যেতে পারলো না। তার আগেই আকাশ থেকে একধরণের পঁচা, নোংরা পানি মাথার উপর পড়লো। অভ্র মুখ তুলে উপরে চাইতেই দেখলো ঐন্দ্রিলা দাঁড়িয়ে আছে। ক্ষমাবিহীনস্বরে বললো,
“আয় হায়, তোর উপর সারের পানিটা পড়ে গেলো? একদম দেখতে পারি না। আমি তো নিচে গাছ গুলোতে ফেলেছিলাম”

সাবেরা ছাদের গাছগাছালির জন্য একটি বিশেষ সার বানান। গোবর, পঁচা আবর্জনাকে পানিতে মিশিয়ে পঁচিয়ে পঁচিয়ে এই বিশেষ পদার্থ বানান। যার গন্ধ দু কিলো দূর থেকেও পাওয়া যায়। ঐন্দ্রিলা যখন শুনেছিলো সকালে অভ্র আসবে সে তক্কে তক্কে ছিলো অভ্রকে অভ্যর্থনা করার জন্য। তার জীবনে ঝড় তোলার সামান্য শাস্তি। অভ্রের পেট আওড়ে আসলো। দাঁত মুখ কিড়মিড়িয়ে তাকিয়ে রইলো সে ঐন্দ্রিলার দিকে। ঐন্দ্রিলা তার ভসকানো মুখখানা দেখে বললো,
“সারের ব্যাবসায়ীর উপর সারের পানি। কি কম্বোনেশন?”

সালাম সাহেব এসে অভ্রের অবস্থা দেখে বলল,
“তোমার উপর ঠাডা পরলো কি করে?”
“আঙ্কেল আপনার মেয়েকে বিয়ে করছি। এমন ঠাডা তো দিনে এক দুবার পড়বেই”

প্লাস্টিকের হাসি ঝুলিয়ে কথাটা বললো। সাবেরা আসার আগেই ঐন্দ্রিলা দৌড়ে নিজের ঘরে চলে গেলো।

*******

বসার ঘরে বসে আছে অভ্র। দ্বিতীয়বারের জন্য গোসল করতে হয়েছে তাকে। পরণে সালাম সাহেবের একটি শার্ট, যা তার পরণে ব্লাউসের মত লাগছে আর লুঙ্গি। নীলাদ্রি অর্থাৎ ঐন্দ্রিলার বড় ভাইয়ের জামাটা দেওয়াই যেত কিন্তু সেই ঘর নীলাদ্রি তালা মেরে গেছে। তাই একটা শার্টের জন্য সেটা ভাঙ্গা ঠিক নয়। সালাম সাহেব নিজের দোকানের ছেলেটাকে পাঠিয়েছে অবশ্য। সে অভ্রের বাসা থেকে জামা নিয়ে আসছে। গোসল করলেও সারের পানির পঁচা গন্ধ এখনো যায় নি। সালাম সাহেব পাশে এয়ার ফ্রেশনার নিয়ে বসে আছেন। একটুপর পর তা স্প্রে করছেন। সাবেরা বসে আছে অভ্রের মুখোমুখি। তার গন্ধে খুব একটা খারাপ লাগছে না বলে সেই প্রশ্ন শুরু করলো,
“অভ্র, তোমাকে আমরা কেন ডেকেছি জানো তো”
“জি না। আংকেল বলেছিলেন এই বিয়ে হবে না। আমি তাই সামনাসামনি কথা বলতে চাই। কোনো মিসআন্ডারস্টেন্ডিং হয়েছে নিশ্চয়ই”
“না, কোনো মিসআন্ডারস্টেন্ডিং হয় নি। আমরা জানতে পেরেছি তোমার চরিত্র ভালো নয়। তোমার অনেক গার্লফ্রেন্ড ছিলো। দেখো বাবা, আমি মেয়ের মা। আমি চাইবো আমার মেয়ের যার সাথে বিয়ে হোক সে তাকে মাথায় করে রাখুক। কিন্তু তোমার এই কথাটা শোনার পর থেকেই আমি চিন্তিত। পাশাপাশি থাকি, মনোমালিন্য না হোক। তাই বিয়েটা ভেঙ্গে যাওয়াই শ্রেয়”

অভ্র আড়চোখে তাকালো পেছনে দাঁড়িয়ে মিটিমিটি হাসতে থাকা ঐন্দ্রিলার দিকে। এই সব প্যাঁচ কে লাগিয়েছে বুঝতে বাকি রইলো। না। অভ্র এবার অতিভদ্র স্বরে বললো,
“আমি জানি না এসব কে বলেছে তবে আমি এই পাড়ার ছেলে। হ্যা আমি মারপিট করি, উগ্র মেজাজী তবে আমি নারীবাজ নই আন্টি। আপনি খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। আমার জীবনে একটি গার্লফ্রেন্ড ছিলো তাও স্কুলজীবনে। তারপর আমি কখনোই প্রেম করি নি”

অভ্রের কথাটা শুনতেই ঐন্দ্রিলার মুখ শক্ত হয়ে গেল। অভ্র তার দিকে না তাকিয়েই বললো,
“আমি ঐন্দ্রিলাকে সত্যি বিয়ে করতে চাই। আমি কথা দিচ্ছি, আমি ঐন্দ্রিলাকে কখনো কোনো কষ্ট দিবো না। ওর যাতে কষ্ট না হয়, সেজন্য মাটিতে পা রাখতে দিবো না। মাথায় করে রাখবো”
“তাহলে কি আমার মেয়ে হাতে ভর করে হাটবে?”

সালাম সাহেবের প্রশ্নে অভ্র তার হাসি বর্ধিত করে বললো,
“আমি কোলে নিয়ে হাটবো আংকেল, চিন্তা করবেন না।“
“থাক। ও পা দিয়েই হাটুক”

সালাম সাহেবকে কনুইয়ের গুতো দিয়ে থামালেন সাবেরা। শক্ত গলায় বলল,
“ঐন্দ্রিলা কিন্তু তোমাকে বারান্দায় কোনো মেয়ের সাথে কথা বলতে শুনেছে। একই সাথে বড় হয়েছো তোমরা। ও তো মিথ্যে বলবে না”

অভ্র ঐন্দ্রিলার দিকে তাকিয়ে হাসলো। একদম গা জ্বালানো শয়তানি হাসি। তারপর পরমুহূর্তেই বেচারা ভাব করে বললো,
“ঐন্দ্রি মিথ্যে বলেছে আন্টি। ও আসলে আমাকে পছন্দ করে না। তাই আমার নামে বাজে কথা বলছে। আমার যদি হাজারটা প্রেমিকা থাকতো আমি কেনো আপনার ঢেড়শের মত মেয়েকে বিয়ে করতে চাইতাম। যে কি না ইচ্ছেকৃতভাবে আমাকে গোবরের পানিতে গোসল করালো। আমি এমন আংকেলের জামা পড়ে থাকতাম? ও আসলে আমাকে পছন্দই করে না”
“তোমাকে কেউ মাথার কসম তো দেয় নি, আমার ঢেড়সকে কেন বিয়ে করতে চাইছো?”

কঠিন কন্ঠে শুধালো সাবেরা। অভ্র খুব শান্ত স্বরে বললো,
“আমি ওকে ভালোবাসি আন্টি”…………………

চলবে

মুশফিকা রহমান মৈথি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here