#মনশহরে_তোমার_নিমন্ত্রণ
#৫ম_পর্ব
“আমি ওকে ভালোবাসি আন্টি”
অভ্রের দৃষ্টি ঐন্দ্রিলার দিকে স্থির। গাঢ় চাহনী। ঠোঁটে খুব হালকা হাসি। এই স্বীকারোক্তি সকলের কাছে সরল, ভনীতাহীন মনে হলেও, ঐন্দ্রিলার মনে হলো কেউ তার কানে গরম শিশা ঢেলে দিয়েছে। মস্তিষ্ক মুহূর্তের মাঝেই কাজ করা বন্ধ করে দিলো যেন। হৃদয়ে অব্যক্ত জ্বলন অনুভূত হলো তার। চোখমুখ শক্ত করে তাকিয়ে আছে সে অভ্রের দিকে। অভ্রের প্রশংসা করতেই হবে। ভালো অভিনেতা বটে। এতো চমৎকার মিথ্যে কথা কেউ কি করে বলতে পারে! বাস্তবিক ভাবে মিথ্যা বলতে গেছে কোথাও না কোথাও অন্তঃস্থল কাঁপে। কিন্তু অভ্রের মাঝে এই কম্পন নেই। অকপটে বলছে সে ঐন্দ্রিলাকে ভালোবাসে। কিন্তু ঐন্দ্রিলা তো জানে এসব সব নাটক। সাবেরা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অভ্রের দিকে। সালাম সাহেব বললেন,
“তুমি সত্যি আমার মেয়েকে ভালোবাসো?”
“অহেতুক মিথ্যে কেনো বলবো আঙ্কেল, কি লাভ আমার?”
সালাম সাহেব বেশ চিন্তায় পড়লেন। অভ্রের লাভ খুঁজে পেলেন না। আর্থিক লোভ বা সৌন্দর্য্যের মোহ কোনো কিছুই আর যাই হোক ঐন্দ্রিলাকে বিয়ে করার জন্য পাগলপ্রায় করে তুলে না। তার মেয়ে আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের মত। সালাম সাহেব অভ্রদের থেকে ধনী এমনটাও নয়। ফলে তিনি গভীর চিন্তায় পড়লেন। সাবেরা খুব শান্ত। আর মাঝে খুব একটা পরিবর্তন লক্ষ করা গেলো না। বরং শান্ত কন্ঠে বললেন,
“আমি কিন্তু কন্যাদায় থেকে মুক্ত হবার জন্য তোমার সাথে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছি না। আমার মেয়ের রাগ অনেক”
“জানি”
অভ্রের মুখে হাসি। সে ঐন্দ্রিলার দিকে চেয়ে আছে। ঐন্দ্রিলার শক্ত মুখখানা খুব আনন্দ দিচ্ছে তাকে। সাবেরা নির্লিপ্ত স্বরে বললো,
“আমার মেয়ে রাগ হলে জিনিসপত্র ভাঙ্গে। আমি ওর জন্য একটা “ভাঙ্গন তহবিল” রেখেছি। সেখানে প্রতিমাসে পাঁচশত টাকা ভাঙ্গন ত্রাণ জমা করি”
“জানি”
“আমার মেয়ে তোমাকে যেহেতু ভালোবাসে না, সুতরাং আজকের মতো ঠাডা বিয়ের পর তোমার উপর দিনে দু/তিন বার নিয়মিত পড়বে এবং তুমি এসে আমাকে বিচার দিলেও লাভ হবে না। আমি নিজে আমার মেয়েকে গোবর, নোংরা আবর্জনা সাপ্লাই দিব। সে যদি রাগের মাথায় তোমার মাথা ফা’টি’য়ে দেয় আমি কিন্তু তার পক্ষ নিবো। তোমার মা-বাবা তাকে জেলে দিলে আমি তাকে বেইল করিয়ে আনবো।”
“এটাও জানি”
অভ্রের উত্তরে সাবেরা এবার একটু নড়ে চড়ে উঠলেন। বিমূঢ় স্বরে শুধালো,
“সব জানো তাও ওকে বিয়ে করতে চাচ্ছো?”
“জি, কারণ মানুষের ভালোবাসা অন্ধ হয় আমারটা তারছেড়া পা’গল”
অভ্রের উত্তরটা যেন মনে ধরলো সালাম সাহেবের। হো হো করে হেসে উঠলেন তিনি। জীর্ণশীর্ণ রোগা মানুষটির শরীর কাঁপছে। সাবেরার মুখেও হাসি। বেশ প্রসন্নস্বরে বললো,
“আজ যা বলেছো, বিয়ের পর সেটা যেনো না বদলায় অভ্র”
“বদলাবে না আন্টি”
ঐন্দ্রিলা এখনো দাঁড়িয়ে আছে। তার মুখখানা রাগে লাল হয়ে গেছে। অভ্রের মুখে বিজয়ী হাসি। ততক্ষণে তার কাপড় চলে এসেছে। কাপড় পালটে বললো,
“আন্টি, এক কাপ চা হবে? আসলে দুবার গোসল করার অভ্যেস নেই। ঠান্ডার বাতিক আছে”
“আমি করে আনছি”
“যদি ঐন্দ্রিলা করে দিত”
কথাটা শোনামাত্র ঐন্দ্রিলার সৎবিৎ ফিরলো। সাবেরা সাথে সাথেই হেসে বলল,
“কেনো নয়। ঐন্দ্রিলা যাও তো অভ্রের জন্য এককাপ চা করে আনো”
“ঐন্দ্রি, লাল চা করিস। একটু আঁদা দিস”
ঐন্দ্রিলার ইচ্ছে করলো এক্ষণি এই নাটকবাজের সব নাটক বের করে দিতে। কিন্তু সেটা করলে অতীতের চাঁপা ক্ষত আবার জীবিত হবে। ঐন্দ্রিলা তাই দাঁতে দাঁত কামড়ে চলে গেলো। রাগ হচ্ছে প্রচুর। সেই সাথে তীক্ষ্ণ যন্ত্রণা তাকে নাস্তানাবুদ করছে। “আমি ওকে ভালোবাসি” কথাটা মস্তিষ্কে পেন্ডুলামের মত দুলছে। ছেড়া নোটের জন্য এখন চা বানাতে হবে। ঐন্দ্রিলা ঠিক করলো অভ্রকে বিশ্রী শাস্তি দিবে। যেনো আর কখনো ভালোবাসি বলার সাহস না হয়।
*******
ঐন্দ্রিলা পনেরো মিনিট পর এককাপ লাল চা নিয়ে হাজির হলো। চায়ের রঙ্গ ঠিক থাকলেও গন্ধ অতিরিক্ত ঝাঝালো। অভ্র চোখ কুঁচকে তাকালো তার দিকে। ঐন্দ্রিলা স্মিত স্বরে বলল,
“খা, ঠান্ডা হয়ে যাবে তো”
আন্দাজ করতে বাকি রইলো না মেয়েটি নিশ্চিত এই চায়ে কোনো কেরামতি করেছে। অভ্র সাবেরা এবং সালাম সাহেবের দিকে চাইলো। তাদের হাসি হাসি মুখখানা দেখে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পেলো না। এই চা তাকে খেতেই হবে। কারণ নিজের পায়ে কুড়াল সে নিজেই মেরেছে। কিন্তু সেও গভীর জলের মাছ। মিষ্টি হেসে নির্লজ্জ কন্ঠে বললো,
“মা বলে স্বামী স্ত্রীর এক কাপে চা খেলে ভালোবাসা বাড়ে। বাবাকেও দেখেছি মায়ের এঁটো কাপে চা খেতে। ঐন্দ্রি তুই বরং এক চুমুক চা খা। চায়ের মিস্টিটাও অধিক হয়ে যাবে। আমাদের মাঝে প্রেমও বাড়বে”
কি নাটকবাজ ছেলে। সাবেরা কিঞ্চিত লজ্জা পেলো। সালাম সাহেব খুক খুক করে শুকনো কাশতে লাগলেন। ঐন্দ্রিলা কটমটিয়ে তাকালো, এই ছেলে আবার নাটক শুরু করেছে। ঐন্দ্রিলার অস্ত্র তার উপরই প্রয়োগ করার ধান্দা। ঐন্দ্রিলা কিড়মিড়িয়ে বললো,
“আমাদের কি বিয়ে হয়েছে? এতো ন্যাকামি করতে পারবো না”
“বারে আমাদের বিয়ে তো এই কদিন পড়ে। এখন ই তুই আমার সাথে এমন করছিস ঐন্দ্রি? আমি তো চাই আমাদের সম্পর্কটা ভালো হোক। আমার দাদা-দাদীও এক চায়ের কাপে চা খেতে প্রেম বাড়াতে। দাদী মরে যাওয়ায় দাদা এখন চা খাওয়াই ছেড়ে দিয়েছে। আমি তোর গোবর পানি মাথায় নিতে পারলাম, দ্বিতীয়বার গোসল করতে পারলাম। আর তুই এতোটুকু পারবি না। নাকি তুই চায়েও কিছু মিলিয়েছিস?”
অভ্রের শেষ কথায় ভ্রু নাচালো। ঐন্দ্রিলা পড়লো মহাবিপাকে, সাবেরাও সন্দিহান চোখে তাকালো তার দিকে। চোখ মুখ শক্ত করে বললো,
“আমি এক চুমুক খেলে তুই পুরোটা খাবি?”
“খাব”
“বেশ”
ঐন্দ্রিলা কথা না বাড়িয়ে এক চুমুক চা খেলো। সাথে সাথে জিহ্বা, ঠোঁট জ্বলে উঠলো। ইচ্ছে মতো শুকনো মরিচ গুড়ো দিয়েছিলো চায়ে যেনো অভ্রের ভালোবাসার নাটক বাপ বাপ করে পালায়। কিন্তু সেই চা ই ঐন্দ্রিলাকে খেতে হচ্ছে। তবে সেও দমে যাবার পাত্রী নয়। অভ্রের ভালোবাসার ভুত সে আজ নামিয়েই ছাড়বে। চা খেয়ে অভ্রের সামনে কাপটা এগিয়ে বলল,
“নাও হবু পতিদেব। এক ফোঁটাও যেনো কাপে না থাকে। নয়তো আমাদের প্রেমটাও অর্ধেক রাস্তায় আটকে যাবে”
ঐন্দ্রিলার চোখ লাল হয়ে গেছে। ঝালে কান জ্বলছে। কিন্তু মা-বাবার সম্মুখে ঘুণাক্ষরেও সেটা টের পেতে দিলো না সে। এদিকে অভ্র এক নিঃশ্বাসে চাটা খেয়ে নিলো। চা টা শেষ করার পর চমৎকার একটি হাসি মুখে অঙ্কিত করে বললো,
“খুব ভালো হয়েছে, তুই তো বাংলাদেশের সেরা চা সেফ”
ঐন্দ্রিলা কোনো কথা বলতে পারলো না। ঝালে নাকি বিস্ময়ে তার বাকশক্তি হারিয়ে গেছে সে জানে না। অভ্রের চায়ের কাপটা নিয়ে গটগট করে ভেতরে চলে গেলো। বুকটা জ্বলছে ঝালে। জিহ্বা অসাড় হয়ে গেছে। কান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ঘামছে ঐন্দ্রিলা। এক চুমুকে এই হাল অভ্র তো এক কাপ এক চুমুকে খেয়ে শেষ করলো ও কি মানুষ?
অভ্র আরোও কিছুক্ষণ কথা বললো সালাম সাহেবের সাথে। তারপর বিনয়ের সাথে বিদায় নিলো। কলাপসিবল গেট থেকে বের হতেই ঐন্দ্রিলা খপ করে ওর হাতটা ধরলো। টেনে নিয়ে গেলো বাড়ির পেছনের বাগানে। অভ্র তখনও নির্বিকার, শান্ত। আশপাশটা দেখেই হাত ছেড়ে দিলো সে। শক্ত গলায় বললো,
“চা টা খেলি কেনো?”
“কেনো? চায়ে কি বিষ মিশিয়ে রেখেছিলে?”
“ভনিতা করবি না অভ্র? কি প্রমাণ করতে চাইছিস তুই? ঝাল চা খেয়ে নিজেকে হিরো প্রমাণ করতে চাইছিস?”
“চায়ে তুই ঝাল মিশিয়েছিস? কি সাংঘাতিক মেয়েরে তুই? আমার ভালোবাসার এই প্রতিদান?”
বেশ ঢং করে অবুঝ সেজে কথাটা বললো সে। ফলে। ঐন্দ্রির রাগ বাড়লো,
“একদম নাটক করবি না অভ্র। আমি মা-বাবা নই যে তোর নাটকে গলে যাব”
“আমার ভালোবাসা তোর কাছে নাটক মনে হয়?”
প্রশ্নটা করেই ফিচেল হাসলো অভ্র। যেনো ঐন্দ্রিলার অস্থিরতা তাকে বিনোদন দিচ্ছে। ঐন্দ্রিলা অসহায় স্বরে বলল,
“কেনো করছিস এসব? কি চাস তুই?”
এবার একটু ঝুকে এলো অভ্র। ঐন্দ্রিলার চোখে চোখ রেখে গাঢ় স্বরে বলল,
“তোকে”
ঐন্দ্রিলা স্তব্ধ তাকিয়ে রইল। মস্তিষ্ক কাজ করছে না। অভ্রের ঠোঁটে এখনো নির্লজ্জ হাসি।
*******
পিউ এর খাটের উপর মুখে হাত দিয়ে বসে আছে ঐন্দ্রিলা। পিউ তার ছোটবেলার বান্ধবী। বাসা দু গলি পর। যখন মনে অশান্তি হয় তখনই পিউ এর কাছে ছুটে আসে ঐন্দ্রিলা। পিউ এর মাথায় বুদ্ধি গিজগিজ করে। হাটতে হাটতেই দু-তিনটা বুদ্ধি মাটিতে পড়ে যায়। ফলে পিউ তার ভরসার জায়গা। আজও বুদ্ধি ধার করতেই এখানেই আসা। তার মাথা কাজ করছে না। সামনের শুক্রবার বিয়ে। মা মহা আনন্দে বিয়ের শপিং শুরু করেছে। প্রতিদিন এই দোকান ঐ দোকান ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এদিকে বিয়েটা কোনোভাবেই ভেস্তে দেবার উপার পাচ্ছে না সে। পিউ পায়ের উপর পা তুলে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের “দেবদাস” পড়ছে। তার মনের পুলকতা দেখে বিরক্ত ঐন্দ্রিলা। ফলে তাকে ধাক্কা দিয়ে বললো,
“আধা ঘন্টা ধরে বসে আছি আমি, একটা বুদ্ধি তো দিতেই পারিস”
“যা হবার তাতো হবেই বান্ধবী, তুমি আমি কি আটকাতে পারবো। যে ছেলে তোমার গোবর অস্ত্র, মরিচ অস্ত্রে পরাস্থ হয় না। তাকে তুমি কি করিয়া পরাস্থ করিবে সখা?”
নির্লিপ্ত স্বরে কাব্যিক ভঙ্গিতে কথাটা বললো পিউ। ফলে ঐন্দ্রিলা চটে গেলো,
“তোমার সখাগিরি বের করে দিবো? আমার জীবন আগুন জ্বলছে আর তুমি সাহিত্যচর্চা করছো”
এবার বইটা বন্ধ করে দিলো সে। উঠে বসলো। মুখে হাত দিয়ে বলল,
“বলি কি বিয়েটা করে নে। হতেই তো পারে, আমার গুন্ডা অভ্র তোকে সত্যি সত্যি ভালোবাসে”
ঐন্দ্রিলা মুখখানা ম্লান হয়ে গেলো। বিদ্রুপ হাসি হেসে বলল,
“ঐ পাষন্ড কাউকে ভালোবাসতে পারে নাকি?”
“আচ্ছা, নীলাদ্রি ভাই কোথায়? সে আসলেও তো কাজে দেয়”
নীলাদ্রির কথা শুনতেই ঐন্দ্রিলা মুখ বাকিয়ে বললো,
“আমার ভাই ঘোষণা করে দিয়েছে, সে বিয়ের দিন সকালে আসবে। যেহেতু বিয়ের পাকাপাকির সময় তার মত নেওয়া হয় নি, সেও বিয়ে নিয়ে মাথা ঘামাবে না। মেহমানের মত আসবে আর মেহমানের মত চলে যাবে”
“তাই বললো”
“হ্যা, পা’গ’ল একটা। সারাক্ষণ বনেবাদরে ঘুরতে ঘুরতে মাথার স্ক্রু হারিয়ে ফেলেছে”
“এভাবে বলিস না, উনি কি সাদে বনে বাদরে ঘুরে? সে ট্রাভেলিং করে, পৃথিবীর অজানা রহস্য উদ্ঘাটন করে”
“ওরে পিরিত!”
পিউ কিঞ্চিত লজ্জা পেলো। রক্তিম চিবুক গলায় ঠেকিয়ে বলল,
“আমি সত্য বললাম, এখানে পিরিতের কি রে? সে তো আমার তোর মতন নয়, ডিসকোভারি চ্যানেল গুলোর সাথে কাজ করে, ডকুমেন্টেরি বানায়। কি নাম ডাক”
“নামডাক না ছাই, শুধু টাকা উড়ানোর ধান্দা। বাদ দে ওর কথা, আমাকে তুই বুদ্ধি দে”
পিউ থুতনিতে হাত ঠেকিয়ে বললো,
“আচ্ছা, একটা বুদ্ধি আছে। জানি না কাজ করবে কিনা, তবে ব্যাটার ঢং বেরিয়ে যাবে”
পিউ এর কথায় মুখ চকচক করে উঠলো ঐন্দ্রিলার। অভ্রকে নাস্তানাবুদ করার কোনো সুযোগ হাতছাড়া করবে না সে।
*******
সকাল সকাল হবু শ্বশুরবাড়ি উপস্থিত হলো ঐন্দ্রিলা। হাতে হটপট। অভ্রের জন্য বিশেষ নাস্তা বানিয়ে এনেছে সে। কিন্ত এসে জানতে পারলো অভ্র অসুস্থ। ভীম জ্বর, সেই সাথে পেট খারাপ………………
চলবে
[টানা পাঁচ দিন এক নাগারে গল্প দিয়েছে। এবার যেন কেউ কমেন্টে বলবেন না লেখিকা প্রতিদিন গল্প দেয় না]
মুশফিকা রহমান মৈথি