#আঁধারে_প্রণয়কাব্য
#পর্ব____১৪
#নিশাত_জাহান_নিশি
“যাবেন না প্লিজ। আমার খুব একা লাগছে। ভীষণ মন খারাপ লাগছে।”
সানাম থমকালো। মুহূর্ত কয়েক ভাবল। চাইলেও কি এই করুনাভরা আকুতি উপেক্ষা করা যায়? সম্পর্ক যতই খারাপ হোক না কেন বিপদে পড়া কোনো শত্রুর অসহায়ত্বকেও অগ্রাহ্য করতে নেই। অথচ ফায়েয তো তার পরম বন্ধু। চরম বিপদের দিনে তার পাশে দাড়ানো এক সহযোদ্ধা। যাকে সে নির্বিঘ্নে ভরসা করে যেকোনো কঠিন পরিস্থিতিও পাড়ি দিতে পারবে। কোনোদিকে কালক্ষেপণ না করে সানাম পেছন ফিরে তাকালো। উচ্ছন্ন ভাব ফায়েযের। নির্জীব ও নেতানো মুখমন্ডল। দু-চোখ ভরা ক্লেশ। শুকনো ঠোঁট। এ যেন বিস্তর বিষাদের ছাপ তার মুখশ্রীতে অতি সুনিপুণভাবে লেপ্টানো। কদম বাড়ালো সানাম। ফায়েযের সান্নিধ্যে এলো। শূণ্য দৃষ্টিতে ফায়েযকে দেখল। ফের দৃষ্টি নামিয়ে অবিশ্বাস্য ও অপ্রত্যাশিতভাবেই ফায়েযের হাতে থাকা সিগারেটটিকে ছুঁড়ে ফেলে দিলো! ফায়েয ভড়কালো। অদ্ভুত দৃষ্টি ফেলল সানামের দিকে। ভ্রু উঁচিয়ে সানাম বলল,
“সিগারেট না আমি কোনটা?”
“নিজেকে অপশন ভাবছেন?”
“সিগারেটে এলার্জি আমার। তাই অপশন দিলাম।”
“তাহলে আপনি!”
“শুধু এই মুহূর্তের জন্যই কিন্তু! মন খারাপ তাই সঙ্গ দিব।”
“এটা কিন্তু চিটিং হয়ে গেল।”
“ক্ষতি কি? চিটিং থেকে যদি ভালো কিছু হয় তবে চিটিংই ভালো!”
সানাম ক্ষীণ হাসল। ফায়েযের পাশাপাশি ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাড়ালো। বুকে হাত গুজে আকাশে উজ্জ্বলভাবে জ্বলতে থাকা স্নিগ্ধ চাঁদের পানে তাকালো। মন জুড়িয়ে এলো। ভেতর থেকে একটি স্বস্তির শ্বাস বের হয়ে এলো। আনমনে বলল,
“আমার যখন খুব মন খারাপ হয় আমি আকাশের দিকে তাকাই। আর যদি জোছনা রাত হয় তবে মায়াবী চাঁদের দিকে তাকাই, চাঁদের আশেপাশে ঘুরতে থাকা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তাঁরাদের দিকে তাকাই, আর যদি অমবস্যার রাত হয় তবে চোখ বুজে অন্ধকারকে অনুভব করি। আমার প্রিয় মানুষরা তখন অন্ধকার ভেদ করে আমার দু’চোখে ধরা দেয়! আর এটা সত্যি। আমি সত্যিই তাদের উপস্থিতি উপলব্ধি করতে পারি। নিমিষেই আমার মন ভালো হয়ে যায়। তখন আর কারো সঙ্গের প্রয়োজন হয়না। ভেতর থেকে এক অদ্ভুত শান্তি অনুভূত হয়। আপনিও ট্রাই করে দেখতে পারেন।”
ফায়েযের নির্লিপ্ত দৃষ্টি এখনও সানামের দিকে সীমাবদ্ধ। সানামের ঘোর যেন কাটছেই না তার। ক্ষণিকের জন্য হলেও সানাম তার! একান্তই তার। বিশ্বাসই হচ্ছেনা সানাম এই মুহূর্তের জন্য তার হতে রাজি হয়েছে! নিরবচ্ছিন্ন গলায় ফায়েয বলল,
“যদি বলি আমার আকাশ, আমার জোছনা রাত, আমার চাঁদ-তাঁরা, অমবস্যা সব আপনি! আমার দুনিয়া বলতে আমি আপনাকেই বুঝি। আপনাকে দেখলেই আমার মন ভালো হয়ে যায়। আপনার সঙ্গ আমার আমৃত্যু প্রয়োজন। আপনার সঙ্গ ছাড়া আমার এক মুহূর্তও যেন মৃত্যুর সমতুল্য। বিশ্বাস করবেন আপনি?”
সানাম কপাল কুঁচকালো। বিরক্তির রেখা মুখমন্ডলে ফুটিয়ে তুলল। ফায়েযের দিকে বিব্রতকর দৃষ্টি ফেলতেই ফায়েয বলল,
“উঁহু। কোনো বিরক্তি নয়। অপশন হিসেবে আমি এই মুহূর্তের জন্য আপনাকেই বেছে নিয়েছি তাই আমি এখন যাই বলব আপনাকে সব শুনতে হবে!”
সানাম নিজের জালে নিজেই ফেঁসে গেল! চোখ নামিয়ে নিলো সে। মুখ ভার হয়ে এলো তার। গম্ভীর গলায় বলল,
“আমি আপনার মন ভালো করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি আপনিই আমার মন খারাপ করে দিচ্ছেন। ইট’স নট ফেয়ার।”
“চোখ নামিয়ে নিলেন কেন? আমি দেখতে এতটাও জঘন্য নই যে আমাকে দেখলে চোখ নামিয়ে নিতে হবে।”
সানাম পুনরায় উত্তেজিত ফায়েযের দিকে নিষ্ক্রিয় দৃষ্টি ফেলল। বিরক্তির স্বরে শুধাল,
“আপনি দেখতে জঘন্য আমি কখন বললাম?”
“তাহলে চোখে চোখ রেখে কথা বলুন।”
সানাম অপারগ গলায় বলল,
“এইতো বলছি।”
সরু ও মগ্ন দৃষ্টিতে ফায়েযের। বেখেয়ালি গলায় শুধাল,
“একটা সত্যি কথা বলবেন?”
“কি বলুন?”
“আপনি সেদিন আমার ছবিটি দেখেননি?”
“উঁহু!”
“সত্যিই দেখেননি?”
“সত্যিই দেখিনি। হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন?”
“তখন ভেবেছিলাম আমাকে দেখে হয়ত আপনার পছন্দ হয়নি। ভুল আমার মধ্যেই ছিল। তাই সেদিন আপনি বিয়ে ছেড়ে পালিয়েছিলেন। বাই দ্য ওয়ে, এবার চোখটা নামিয়ে ফেলুন!”
ফায়েয নিজেই চোখ নামিয়ে নিলো। উল্টো পাশ ফিরে মাথা চুলকালো। বিড়বিড় করে বলল,
“এই সর্বনাশীনি ও মায়াবীনী চোখের মেয়ের দিকে বেশিক্ষণ তাকাতে গেলে আমারই আবার প্রেম হয়ে যাবে! এক মেয়েতে আর কতবার মরব?”
গলা ঝেড়ে ফায়েয হতভম্ব সানামকে বলল,
“আমার দিকে বেশিক্ষণ তাকালে আপনার প্রেম হয়ে যাবে তাই চোখ নামিয়ে নিতে বললাম!”
সানাম ফিক করে হেসে দিলো! ফায়েযের দিকে হেয়ালি দৃষ্টিতে তাকালো। হেসে হেসেই বলল,
“আমার আর প্রেমে পড়া হবেনা মিস্টার ফায়েয ফারনাজ চৌধুরী। সব প্রেম ঐ একজনকেই লুটিয়ে দিয়েছিলাম!”
বুকে যেন তীর বিঁধল ফায়েযের। কথার আঘাতে ভেতরটা ঝাঁজরা হয়ে গেল। ক্ষুব্ধ ফায়েয প্যান্টের পকেট থেকে সিগারেট বের করে পুনরায় সিগারেট জ্বালালো! সানাম অবাক দৃষ্টিতে ফায়েযের দিকে তাকাতেই ফায়েয সিগারেটে ফুঁক দিয়ে রুক্ষ গলায় সানামকে বলল,
“আপনার প্রয়োজন শেষ। এবার যেতে পারেন!”
সানাম মৌন রইল। বার কয়েক ফায়েযের দিকে নিশ্চল দৃষ্টি নিক্ষেপ করে একপ্রকার হাপিত্যেশ করেই সে ছাদ থেকে প্রস্থান নিলো! উল্টোদিক ফিরে গেল ফায়েয। গরম ভাপ বের হতে লাগল তার শরীর থেকে। তাৎক্ষণিক গাঁ থেকে সে শার্টটি খুলে ছাদের কার্ণিশে রাখল। নাক মুখ থেকে ধোঁয়া উড়িয়ে বলল,
“ভালোবাসা নিখুঁতভাবে প্রকাশ করেও দেখছি, তার থেকে প্রতিশোধ নিয়েও দেখেছি, তার জন্য আবার এগ্রেসিভ হয়েও দেখেছি। এবার শুধু কলিজা ভুনা করে তাকে খাওয়ানোর পালা! এতে যদি সে বুঝে আমার মনের জ্বালা।”
_____________________
সকাল দশটা নাগাদ ফায়েযের রুমের দরজায় কড়া নাড়ল কেউ। মনোযোগে বিচুত্যি ঘটল তার। মাথায় টং করে একটি শব্দ হলো। হাতে থাকা চিঠিটির থেকে চোখ সরিয়ে ফায়েয বিরক্তিকর দৃষ্টিতে দরজার দিকে তাকালো। মালিহা চৌধুরী ভাঙা গলা নিয়ে হাঁকডাক ছেড়ে বললেন,
“কি রে ফায়েয? ঘুম ভাঙল তোর? নাশতা করবি আয়।”
ফায়েয মৃদু স্বরে বলল,
“আসছি মা।”
দীর্ঘশ্বাস ফেলে মালিহা চৌধুরী প্রস্থান নিলেন। ফায়েয পুনরায় চিঠিটিতে চোখ বুলালো। গতকাল চিঠিটির উল্টো পাশে চোখ বুলানো হয়নি তার। তাই একটি জিনিস মিস করে গিয়েছিল সে। আজ সে ঘুম ভেঙে ওঠতেই চিঠিটির কথা মনে পরল। তাই হন্ন হয়ে চিঠিটি খুঁজে চিঠিটিতে চোখ বুলালো। চিঠিটির উল্টো পিঠে লিখা—-
“ফায়েয? তোর কাছে আমার একটি শেষ অনুরোধ রইল। আশা করছি রাখবি তুই। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড মায়াকে নিশ্চয়ই চিনিস তুই? পাগলীটা আমাকে সেই কলেজ লাইফ থেকেই ভীষণ ভালোবাসত, পছন্দ করত। আমি বুঝেও চুপ ছিলাম। কারণ, আমি তখন রাইয়ের প্রেমে মগ্ন! রাইকে ছাড়া অন্য কাউকে কখনও ভাবতেই পারিনি। যদি পারিস তো মায়ার সাথে একদিন দেখা করিস। এরচেয়ে ভালো হবে যদি তুই মায়াকে একটু বুঝাস। আমি জানি আমার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর মায়া খুব ভেঙে পরবে। তুই তাকে সামলে নিস। যদি সম্ভব হয় তো একটা ভালো ছেলে দেখে তাকে বিয়ে দিয়ে দিস। আর যাই হোক নিঃসঙ্গ জীবন কাটানো যায়না। বয়সে যদি তুই মায়ার বড়ো হতিস তবে আমিই তোকে বলতাম তাকে বিয়ে করতে! মায়ার মতো লক্ষ্মীমন্ত মেয়ে হয়না। বিষয়টা মাথায় রাখিস।”
চিঠিটি ভাঁজ করে বালিশের তলায় রেখে দিলো ফায়েয। উবুড় হয়ে বিছানায় শুয়ে পরল। কপাল ঘঁষে সে কিছুক্ষণ শান্ত হয়ে শুয়ে রইল। পুনরায় দরজায় টোকা পড়ল। ফায়েয চোয়াল উঁচিয়ে বলল,
“মা আসছি তো।”
“আমি সানাম বলছিলাম।”
শোয়া থেকে ওঠল ফায়েয। গাঁয়ে একটি টি-শার্ট জড়িয়ে রুমের দরজা খুলে দিলো। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে দাড়িয়ে সানাম। কপাল কুঁচকালো ফায়েয। প্রশ্ন ছুড়ল,
“আপনি কেন? মা কোথায়?”
“আন্টি বলল আপনাকে চা টা দিয়ে আসতে।”
“আন্টি বলল বলে ধেই ধেই করে নেচে একটা বেগানা ছেলের জন্য চা নিয়ে চলে এলেন? এখন যদি আন্টি বলে আমার ছেলেকে বিয়ে করো তখন আমাকে বিয়ে করবেন?”
সানাম নাক ফুলিয়ে বলল,
“মোটেও নয়!”
“তাহলে ভাগেন!”
সানামের মুখের ওপর ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দিলো ফায়েয! বেকুব বনে গেল সানাম। রাগে রি রি করে বলল,
“এত রুড কেন এই ছেলে? মন তো চায় কলারটা টেনে ধরে তুলো ধুনো করি একে!”
______________________
সপ্তাহখানেকের মধ্যেই নওশাদ, এরশাদ শিকদার ও অনামিকাকে কোর্টে তোলা হবে। ফায়েয ও সানাম থানায় এসেছিল সেই সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে। নওশাদ ও এরশাদ শিকদারের সাথে দেখা না হলেও অনামিকার সাথে দেখা হলো ফায়েয ও সানামের। তাকে আলাদা সেলে রাখা হয়েছে। ফায়েযের কাছ থেকে ধোঁকা হয়ে সে জেরবার হয়ে গেল প্রায়। ফায়েযকে সেলের ঐ প্রান্তে এক ঝলক দেখামাত্রই অনামিকা ক্ষেপে গেল! ব্যগ্র হাসিতে মজা নেওয়া ফায়েযের দিকে তেড়ে এসে সে বলল,
“তুমি কাজটা ঠিক করোনি ফায়েয। তুমি আমার দূর্বলতার সুযোগ নিয়েছ!”
“তুমিও তো জীবনে কম ছেলেদের দূর্বলতার সুযোগ নাওনি অনামিকা! এবার না হয় আমি এসে তোমাকে হারিয়ে দিলাম।”
ফায়েযের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে অনামিকা এবার সানামের দিকে রুদ্রাক্ষী দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“তুই ফায়েযকে উস্কিয়েছিস তাইনা? আমাকে ব্যাবহার করে তুই ফায়েয অবধি পৌঁছে গিয়েছিলিস তাইতো? তোকে আমি কখনও ক্ষমা করবনা।”
সানামও কাঠখোট্টা গলায় অনামিকার কথার প্রত্যত্তুরে বলল,
“আমি ফায়েযকে উস্কাইনি। না আমি কখনও তোর মাধ্যমে ফায়েয অবধি পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। ফায়েয তোর আগে থেকেই আমার ছিল! উল্টো ফায়েয আমার মাধ্যমে তুই অবধি পৌঁছেছিল!”
ফায়েয মৌন ও নিমগ্ন দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল রাগান্বিত সানামের দিকে। মেয়েটি শূণ্য মাথায় কেমন নির্দ্বিধায় তাকে তার বলে স্বীকার করছে! অথচ এর খবরও নেই হয়ত মেয়েটির। সানাম ফোঁস করে শ্বাস ফেলে ফায়েযের দিকে তাকিয়ে বলল,
“কি বলুন? চুপ করে দাড়িয়ে আছেন কেন?”
“আপনিই বলুন না। শুনতে তো ভালোই লাগছে!”
সানামের টনক নড়ল। রাগের চোটে কি থেকে কি বলে ফেলছিল এতক্ষণে স্মরণে এলো তার। সানাম জিভ কাটল। আমতা আমতা করে মাথা নুইয়ে নিলো। ফায়েয বেশ ভাবপূর্ণ গলায় অনামিকাকে বলল,
“কি শুনলে তো? আমি মিস সানামের ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব এটা আমি তোমাকে কনফার্ম করে গেলাম!”
সানাম আকস্মিত দৃষ্টিতে ফায়েযের দিকে তাকাতেই ফায়েয চোখ টিপে দিলো! সানাম ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে ফায়েযের দিকে তাকাতেই ফায়েয সানামের হাত ধরে সোজা থানা থেকে বের হয়ে গেল। থানার বাইরে রাখা ফায়েযের গাড়িতে তারা ওঠে গেল। সানাম এখনও ঘোর থেকে বের হতে পারলনা। চুপচাপ রইল সে। ফায়েয গাড়ি স্টার্ট করে লুকিং গ্লাসের মাধ্যমে ভাবুক সানামের দিকে তাকালো। সানামকে আরও একটু তাতিয়ে দেয়ার চেষ্টা করল। নাক ঘঁষে মিচকে হেসে বলল,
“আরে এতো ভাববার কি আছে? আমাদের বাসর আপনার পছন্দের বেলিফুল দিয়েই সাজানো হবে। সো চিল!”
সানাম ভড়কে ওঠে ফায়েযের দিকে তাকালো। চোখ রাঙিয়ে বলল,
“হোয়াট?”
“আরে এতো অবাক হওয়ার কি আছে? আমি আপনার আর আমার বাসরের কথা বলছিনা। আপনার পছন্দের বেলিফুল দিয়ে আমি আমাদের বাসর সাজাব। আমাদের বলতে আই মিন আমি আর আমার সিনিয়র আপুর কথা বলছি!”
“সিনিয়র আপু?”
“হ্যাঁ মায়া আপু! আপনি তো আমাকে পাত্তাই দিচ্ছেননা। তাই এখন সিনিয়র আপুই আমার শেষ ভরসা!”
#চলবে_____?