আঁধারে_প্রণয়কাব্য #পর্ব____৭ #নিশাত_জাহান_নিশি

0
110

#আঁধারে_প্রণয়কাব্য
#পর্ব____৭
#নিশাত_জাহান_নিশি

“আই থিংক সেদিন স্পর্শের অ্যাক্সিডেন্টটা কাকতালীয়ভাবে হয়নি অ্যাক্সিডেন্টটা করানো হয়েছিল! আর স্পর্শের বাড়ির দলিলে তাকে জোর করে সাইন করানো হয়েছিল!”

মুহূর্তেই সানাম ঝাঁকি দিয়ে ওঠল। তার শরীরের সমস্ত লোমদ্বয় কাঁটা দিয়ে ওঠল। সবকিছু তার অবিশ্বাস্য মনে হলেও কোথাও না কোথাও তা যৌক্তিক মনে হলো। এক কথায় শরীরটা হিরহির করে ওঠল তার। আকস্মিক শ্বাসরুদ্ধকর অনুভূতি টের পেল। কিয়ৎক্ষণ একরৈখিক দৃষ্টিতে নিশ্চুপ ফায়েযের দিকে তাকিয়ে রইল সে। অতঃপর টেনেটুনে দীর্ঘ একটি শ্বাস ফেলে সানাম নিজেকে সামলে বিপর্যস্ত গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,

“আপনি মিন করতে চাইছেন চাচা ও নওশাদ ভাই মিলে স্পর্শের অ্যাক্সিডেন্টটা করিয়েছে? মানে এটি একটি সাজানো খু*ন ছিল?”

ফায়েয ভাবশূণ্য ভঙিতে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসল। বুকের ওপর দু’হাত গুজল। ঈষৎ শুকনো হেসে হেয়ালী স্বরে বলল,

“বাহ্, টিউবলাইট এত দ্রুত জ্বলে ওঠবে ভাবতে পারিনি। যাই হোক, আমিতো ভেবেছিলাম এই সাধারণ বিষয়টাও বুঝতে আপনার বেশ বেগ পেতে হবে!”

সানামের গলা শুকিয়ে এলো। ভেতরটা ফেঁটে কান্না বের হতে লাগল। এই নির্মম সত্য সে আগে কেন খতিয়ে দেখলনা তা নিয়ে বড্ড আফসোস হতে লাগল। ফায়েয সোজা হয়ে বসল। তড়িঘড়ি করে গ্লাসে পানি ঢেলে সানামের দিকে এগিয়ে দিলো। বুঝতে পারল সানাম তীব্র মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে। এই অবস্থায় তাকে শান্ত করার প্রয়োজন ও যতটুকু সম্ভব তার পাশে থাকা প্রয়োজন। গলা ঝেড়ে ফায়েয উদ্বিগ্ন গলায় বলল,

“পানিটা খেয়ে নিন।”

সানাম হাত বাড়িয়ে পানির গ্লাসটা নিয়ে ঢকঢক করে পানিটুকু খেলো। গ্লাসটি টেবিলের ওপর রেখে সানাম নিজের ওপর ক্ষোভ ঝেরে ফায়েযকে বলল,

“আপনি ঠিক-ই বলেন আমি সত্যিই টিউবলাইট! এতদিন আমি ভাবতাম স্পর্শকে আমি পৃথিবীর সকল প্রেমিকার চেয়ে বেশি ভালোবাসি। পৃথিবীর কোনো প্রেমিকারা হয়ত তার প্রেমিককে এতটা ভালোবাসে না আমি যতটা বাসি। এখন তো মনে হচ্ছে এ-সব ভুল। আমি যদি সত্যিই স্পর্শকে ভালোবাসতাম তবে নিশ্চয়ই সব খতিয়ে দেখতাম। আমার মন অন্যকিছুতে টানত। তার অ্যা’ক্সি’ডেন্ট নাকি খু’ন হলো তার আংশিক হলেও আভাস পেতাম!”

স্পর্শকে নিয়ে সানামের আবেগঘন কথা শুনলেই ফায়েযের মাথা আকস্মিক গরম হয়ে যায়! রক্ত টগবগ করতে থাকে তার। কিন্তু সানামের দুঃখ ভোলাতে এসে কিংবা সানামকে সহযোগিতা করতে এসে সে তার রাগকে নিয়ন্ত্রণাধীন করতে চাইলনা। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সানামের দিকে একটুখানি এগিয়ে এলো ফায়েয। রাগ ভুলে বেশ তৎপর গলায় সানামকে বুঝিয়ে বলল,

“এসব আবেগী কথাবার্তা ছাড়ুন সানাম। ভালোবাসা এক জিনিস আর নিজের বুদ্ধিমত্তা কিংবা উপস্থিত বুদ্ধি এসব অন্য জিনিস। এসব মানুষের চারিত্রিক গুণ। সহজ সরল মানুষ আপনি। মাথায় ঘিলু মোটেও নেই আপনার! তাই আপনি বিষয়টি তেমন খতিয়ে দেখেননি। যে যা বলেছে চোখ বুজে তা-ই বিশ্বাস করে নিয়েছেন। এখানে ভালোবাসার কোনো দোষ নেই। মূলত, ভালোবাসাদের কোনো দোষ থাকেনা। ভালোবাসা অবুঝ হয়, নিষ্পাপ হয়, কোমল হয়। দোষ আমাদের মানুষের মধ্যেই থাকে। ভালোবাসাকে আমরা সঠিক মূল্যায়ণ করতে পারিনা। আপনি যদি সত্যিই স্পর্শকে ভালো না বাসতেন তবে পাঁচ পাঁচটা বছর তাকে মনে রেখে নিঃসঙ্গ জীবন কাটিয়ে দিতেননা। তাকে ভালোবেসে পরিবার ছাড়তে পারতেন না। এতদিনে মুভ অন করে নিতেন! কিংবা আমার মত কোনো অধমকে একবার হলেও সুযোগ দিতেন!”

শেষোক্ত কথাগুলো বলার সময় ফায়েযের আবেগ নিয়ন্ত্রাধীন হয়ে ওঠল। সানাম ঝরো ঝরো কেঁদে ফায়েযের দিকে নিশ্চল দৃষ্টি ফেলল। নিথর গলায় বলল,

“এখন আমার কি করা উচিত? কিভাবে এরশাদ শিকদার ও নওশাদকে আইনের আওতায় আনা
যাবে? আমাকে একটা পথ দেখাবেন প্লিজ?”

সানামের চোখে ফায়েয প্রবল নির্ভরতা দেখতে পেল। ভালোবাসা না পাক অন্তত ভরসার যোগ্য তো হতে পারল সে! এতেই যেন ফায়েযের চরম শান্তি অনুভব হচ্ছে। ভেতরের প্রতিশোধপরায়ণতা দমতে থাকল। আগ্রহী গলায় বলল,

“কোনো প্রমাণ ব্যতীত হুট করেই তো তাদের কোনো আইনের আওতায় আনা যাবেনা তাইনা? যদিও তার জন্য আমার টোপ রেডি করা আছে।”

“কি টোপ?”

“এরশাদ শিকদারের মেয়ে অনামিকা। যাকে আপনি নিজের বেস্টফ্রেন্ড হিসেবে দাবি করেন সেই অভদ্র মহিলাই হলো আমার টোপ!”

“বিস্তারিত বুঝিয়ে বলবেন প্লিজ?”

“অনামিকা যেহেতু এরশাদ শিকদারের মেয়ে সে নিশ্চয়ই তার বাবার কুকীর্তি সম্পর্কে অবগত। তাই তাকে পটিয়েই তার থেকে আসল সত্যিটা আমাকে বা আমাদের বের করতে হবে। এরপর আমরা এরশাদ ও নওশাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারব। একটা স্ট্রং এভিডেন্স তৈরি হবে। কেইসটা যেহেতু পাঁচবছর আগের তাই স্ট্রং এভিডেন্স ছাড়া কেইস লড়া সম্ভব নয়।”

বিষয়টা এতক্ষণে পরিষ্কার হলো সানামের। ইতোমধ্যে খাবারও চলে এলো। খাবারের দুটি প্লেটার অর্ডার করেছিল ফায়েয। যেহেতু দুজনের পেটেই ক্ষুদা তাই রাইস জাতীয় প্লেটার অর্ডার করেছিল সে। ফ্রাইড রাইস মুখে তুলে ফায়েয ভাবুক ও নির্জীব সানামের দিকে তাকিয়ে বলল,

“খেয়ে নিন। এমনিতেই বুদ্ধি কম আপনার তারউপর খাবার না খেলে দেখা যাবে বেহুশ হয়ে পরে আপনার বাকি মাথার ঘিলুটুকুও মাটিতে পরে গেছে।”

সানাম অপমানিত বোধ করল। আনমনে খাবার মুখে দিলো। ফায়েযের দৃষ্টি এবার সানামের কুর্তীর হাতার দিকে গেল! হাসি চেপে রাখল ফায়েয। কপাল কুঁচকে গুমোট গলায় সানামের দিকে প্রশ্ন ছুড়ল,

“আপনি কি নেশা টেশা করেন নাকি?”
“কিহ্? এসব কোন ধরনের কথাবার্তা?”
“আমি যতটুকু জানি নেশাখোরদের নিজেদের প্রতি কোনো যত্ন থাকেনা কিংবা মনোযোগ থাকেনা। আপনিও কি তাই?”
“কি বলতে চান খুলে বলুন?”
“নিজের দিকে লক্ষ্য করেছেন?”
“উল্টো কুর্তী পরেছি আমি জানি! একটু আগেই টের পেয়েছি। তো এতে কিভাবে প্রমাণ হয় যে আমি নেশা করি?”

ফায়েয তৎপর হয়ে ওঠল। বেশ চিন্তাশীল গলায় বলল,

“নিজের যত্ন নিন। ছেলেদের দেবদাস হলে মানায় তবে মেয়েদের নয়। মেয়েরা থাকবে নিজের প্রতি যত্নশীল, সাজগোজের প্রতি আগ্রহী, নিজেকে ফিটফাট রাখতে কতটুকু কি করা প্রয়োজন সব বিষয়ে সোচ্চার থাকবে। আর আপনি কিনা কিসব বিরহ টিরহ লাগিয়ে রেখেছেন। আপনি যখন নিজেকে ভালো রাখতে শিখে যাবেন না? তখন দেখবেন আপনার মানসিক চিন্তা, আঘাত অর্ধেক দূর হয়ে গেছে। ইচ্ছে করবে একটু বাঁচার মতো করে বাঁচি। এর মাঝে থাকুক না কিছু অপূর্ণতা। মৃত্যু অনিবার্য, মরতেই হবে। মরা মানুষকে নিয়ে বেশিদিন শোক উৎযাপন করলেও আল্লাহ্ নারাজ হন। এতে আল্লাহ্’র ইচ্ছের প্রতি অস্তুষ্টি প্রকাশ পায়। মৃত মানুষকে না পেয়ে এতটা আফসোস করছেন আর আমি যে আমার জীবিত মানুষটাকে চোখের সামনে দেখেও নিজের ভালোবাসা, দুঃখ, কষ্টকে জাহির না করে বরং দমিয়ে রেখেছি এতে আপনার আফসোস হয়না? কি নির্মম পৃথিবী। না পেয়ে মানুষ কাঁদে, আর পেলে নির্বিঘ্নে হারিয়ে দেয়!”

সানাম চুপচাপ রইল। নিচের দিকে তাকিয়ে ধীর গতিতে খাবার খেতে লাগল। ফায়েযের কথাগুলো তার কানে বাজছিল। মস্তিষ্কে নাড়া দিয়ে ওঠল। যদিও এসব শিক্ষনীয় দিক মনে হলো তার! খাবার শেষে দুজন রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে গেল। সানামকে তার হল অবধি পৌঁছে দিতে গেল ফায়েয। সানাম তার হলের গেইটে প্রবেশের পূর্বে ফায়েযকে ডেকে বলল,

“মিস্টার ফায়েয শুনছেন?”

ফায়েয অবাক হলো। আগ্রহী হয়ে পেছন ফিরে তাকালো। সানাম উৎসুক গলায় বলল,

“আপনি পারবেন তো এরশাদ শিকদার ও নওশাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় করতে? কাজটা কি নিজের মত করে করবেন?”

“আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই কেইসটা কোর্টে ওঠবে কথা দিলাম। আপনি আমাকে নিজের মনে করতে না-ই পারেন। তবে আমি করি! জরুরি নয় যে, আপনিও আমাকে নিজের মনে করবেন। এটা সম্পূর্ণই আপনার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। একটা বিষয় কি জানেন? আপনার সাথে মেশার পূর্বে আমি ভাবতাম আপনার থেকে এভাবে ঐভাবে প্রতিশোধ নিব। কিন্তু আপনার সাথে মেশার পর মনে হলো এই নির্বোধ মেয়েটা তো নিজের ভালোই বুঝেনা, এই কোমলমতী মেয়েটার থেকে আমি কি প্রতিশোধ নিব? তাকে তো নিষ্পাপ ও অবুঝ বাচ্চাদের মত হ্যান্ডেল করতে হবে! রুক্ষতার কি বুঝে সে?”

ফায়েয গাড়িতে ওঠে গেল। গাড়িটা এতক্ষণে ছেড়েও দিলো। শো শো বেগে গাড়িটি সানামের দু-চোখের সীমানা পেরিয়ে গেল। সানাম নিশ্চল হয়ে গেল। এক পা দু’পা করে হলে প্রবেশ করল। তার রুমের দিকে অগ্রসর হতে গিয়ে সে শ্রেতার রুমের দরজায় টোকা মারল। কোনো সাড়াশব্দ পেল না। রুমে প্রবেশ করে সানাম শ্রেতার নাম্বারে কল করল। নাম্বারটি সুইট অফ এলো। সানাম এবার ঘাবড়ে গেল। বিড়বিড় করে বলল,

“কোথায় গেল শ্রেতা? অফিসেও দেখলাম না তাকে। ফোনটাও তুলছেনা। ওয়াহিদের সাথে কোনো ট্রিপে চলে গেল না তো?”

___________________________

নওশাদ ও এরশাদ শিকদার ড্রয়িংরুম জুড়ে পায়চারি করছে। দুজনই অস্থিরতায় ঘামছে। কি করবে না করবে ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছিলনা তারা। অনামিকা ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে রইল। বাপ ও ছেলের অস্থিরতা দেখে তার আত্না ঝেকে ঝেকে কাঁপছে। শুকনো ঢোঁক গিলে অনামিকা বিড়বিড় করে বলল,

“ফায়েযের সাথে যে আমার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে তা কিছুতেই বাবা ও ভাইয়াকে বলা যাবেনা! বললেই তারা ফায়েযের সাথে আমাকে মিশতে দিবেনা। কিন্তু আমিতো কোনোকিছুর বিনিময়েই ফায়েযকে হারাতে পারবনা! কিছুতেই না। ভাগ্যিস সেদিন এয়ারপোর্টে বাবা ফায়েযের সাথে আমাকে দেখেনি! দেখলে এতক্ষণে আমার ভালোবাসার দ্য ইন্ড হয়ে যেত।”

সবার দৃষ্টিকে উপেক্ষা করে অনামিকা ধীর পায়ে হেঁটে তার রুমে চলে গেল! ফায়েযের সাথে একটু কথা বলার জন্য সে মরিয়া হয়ে ওঠল। অন্যদিকে নওশাদ মেজাজ চওড়া করে তার বাবাকে বলল,

“কি দরকার ছিল বাবা এত তাড়াহুড়ো করার? দলিলটা আমরা কিছুদিন পরেও ভেবেচিন্তে নিজেদের আন্ডারে নিয়ে আসতে পারতাম। তোমার তাড়াহুড়োর কারণেই আমাদের ফাঁসতে হলো। এখন যদি কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বের হয়ে আসে তখন কি করবে?”

“এত ভাবিস না তো। মাথামোটা সানাম আমাদের একটা চুলও ছিঁড়তে পারবেনা! অযথা টেনশন করে প্রেশার হাই করিসনা।”

“সানামকে নিয়ে চিন্তা নেই। চিন্তা হলো ফায়েযকে নিয়ে। সে যদি সানামের কানে কোনো বিষ ঢুকিয়ে দেয়?”

“এসব কিছু করার আগেই তুই ফায়েযের বোনকে নিয়ে পালা! তখন কেইস অন্যদিকে ঘুরে যাবে। অন্তত বোনের কারণে হলেও ফায়েয চুপ হয়ে যাবে!”

এরশাদ শিকদারের কুবুদ্ধি নওশাদের বেশ মনে ধরল! সে ছক কষতে লাগল কিভাবে রাইকে ফুসলিয়ে ফাসলিয়ে নিজের আয়ত্তে আনা যায়। রাই-ই হবে এই বিপদের সময়ে তার তুরুপের তাস।”

_____________________

“রাইয়ের সাথে ঝামেলা কি নিয়ে তোর?”

মালিহা চৌধুরীর এই প্রশ্নে ফায়েয ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠল। রাত তখন গভীর। ল্যাপটপ বন্ধ করে ফায়েয মাত্র ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এই বিষয় নিয়ে ফায়েযও চাইছিল তার মায়ের সাথে কথা বলতে। কিন্তু সানামের বিষয়টা ঘাটতে গিয়ে তার বোনের বিষয়টা মাথা থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। ফায়েয বিছানা ছেড়ে ওঠে দাড়ালো। উগ্র গলায় তার মাকে বলল,

“তোমার মেয়ে যা করছে তা কিন্তু ভালো করছেনা মা। সময় আছে এখনও। তাকে বুঝাও।”

“কি করেছে আমার মেয়ে?”

“বিয়ে হয়ে গেছে বলে মেয়ের দিকে কোনো খেয়াল নেই তোমার তাইনা? সে কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে কথা বলছে, কার সাথে মিশছে এসব দিকে খেয়াল রাখার প্রয়োজন বোধ করোনা তুমি?”

“তার হাসবেন্ড থাকতে আমি কেন এসব দিকে খেয়াল রাখব?”

“তার হাসবেন্ড কিন্তু দেশে থাকেনা মা। সেক্ষেত্রে আমাদেরই উচিত তার প্রতি নজর রাখা।”

“হয়েছেটা কি বলবি তো?”

ফায়েয সব খুলে বলল তার মাকে। মালিহা চৌধুরী বিষয়টা আমলে নিলেন না! মেয়ের প্রতি তার শতভাগ বিশ্বাস আছে এই ভেবে তিনি ফায়েযের কথাকে তুচ্ছজ্ঞান করলেন। বড়ো বোনের প্রতি ফায়েযের অতিরিক্ত শাসন ভেবে প্রসঙ্গ পাল্টে তিনি বললেন,

“কাল সকাল দশটার ফ্লাইটে কিন্তু সাদিদ দেশে ফিরছে জানিস তো?”

ফায়েয বুঝে গেল তার মা তার দুঃশ্চিন্তাকে উপেক্ষা করছে। গুরুত্বহীনতা পছন্দ নয় তার। সেটা হোক ঘরে কিংবা বাহিরে! ঘাড়ের রগ টান টান হয়ে ওঠল ফায়েযের। তার মাকে ঝাড়ি দিয়ে সে বলল,

“বের হয়ে যাও এখান থেকে। আর একমুহূর্তও এখানে নয়!”

ছেলের রাগ সম্পর্কে মালিহা চৌধুরী অবগত। বিগত দুইবছর যাবত ফায়েযের রাগটা যেন অধিক বেড়ে গেছে। রাগে গিজগিজ করে তিনি রুম থেকে প্রস্থান নিয়ে বললেন,

“ঐ কা’লনাগিনী মেয়েটা আমার ছেলের মাথাটা খেয়েছে! তাকে যদি পেতাম কষে দুইটা থাপ্পর দিতাম!”

#চলবে____?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here