#হৃদয়হরণী
#পর্ব:৪৯
#তানিশা সুলতানা
ছোঁয়ার মেজাজ তুরঙ্গে। শয়তান বেডা এতো অত্যাচার কেনো করছে? এই যে কনকনে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোছল করিয়েছে।
যাক সেখানে দুঃখ নেই। এমনিতেও কাল গোছল করে নি। আজকে করতেই হতো। একটুখানি উপকারই করেছে। কিন্তু দুঃখটা এখানেই। এখনো কম্বল চাপা দিয়ে ঘুমতে দিচ্ছে না। বসিয়ে রেখেছে। এবং বলেছে কিছুখন অপেক্ষা করতে। এটা কি শাস্তি নয়? সারা রাত জ্বালাতন করে কি মানুষটার মন ভরে নি?
নেহাত ছোঁয়া পণ করেছে কথা বলবে না। নাহলে এতখনে ইচ্ছা মতো কিছু কথা শুনিয়ে দিতো।
সাদি গায়ে শার্ট চাপিয়ে চুলগুলো ঠিকঠাক করে ছোঁয়ার দিকে তাকায়। ছোঁয়া তাকিয়েই ছিলো বিধায় চোখাচোখি হয়ে যায়। এবং ছোঁয়া ভেংচি কেটে চোখ ফিরিয়ে নেয়। সাদি হাসে। বউয়ের রাগ বুঝতে পারছে খুব।
“ঘুমিও না। জাস্ট পাঁচ মিনিট আমি আসছি।
বলেই সাদি দরজার দিকে এগিয়ে যায়। দরজা খুলে দিতেই হুরমুরিয়ে একেক পর একে ফ্লোরে গড়াগড়ি খেয়ে পড়ে যায়। প্রথমে সামির পড়েছে তারওপর আশিক তারপর ইরা। শিপন আর রিমি পড়তে পড়তে নিজেদের সামলে নেয়।
ভাজ পড়ে সাদির কপালে।
সামির চিৎকার করে ওঠে। বেচারা ব্যাথাও পেয়েছে বেশ।
” শা*লা বউ পাইয়া হুশজ্ঞান হারাইছে। কোমরটা আমার ভেঙেই গেছে। এখন বিয়া করমু কেমনে? বউরে ভালোবাসমু কেমনে? বউয়ের সাথে রোমাঞ্চ করমু কেমনে?
সব থেকে বড় কথা এই ভাঙা কোমর ওয়ালা সাইম্যার সাথে মেয়ে দিবে কে?
কোমর ধরে আহাজারি করতে করতে বলতে থাকে। বাকিরা উঠে পড়েছে।
ইরাও বেশ চটে গেছে সামিরের ওপর। একটা লাথি মারে সামিরকে।
“শালা সকাল সকাল ঘুম থেকে ডেকে তুললি সিক্রেট দেখাবি বলে। আর এখন।
ছোঁয়া নিরব দর্শকের মতো দেখে যাচ্ছে।
সাদি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে
” দুই মিনিটের মধ্যে সব কয়টা বের হবি এখান থেকে।
সামির এক লাফে দাঁড়িয়ে যায়। মুহুর্তেই তার ব্যাথা গায়েব।
“বিড়াল মেরেছিস মামা? কেমন মজা রে? শান্তি লাগে?
তখনই ছোঁয়া বলে ওঠে
” বিড়াল মারে নি কিন্তু আমাকে আধমরা করেছে। এই সকালে ঠান্ডা পানিতে চুবিয়েছে জানো? আর রাতে তো
ছোঁয়া বাকিটা শেষ করার আগেই সাদি ধমকে ওঠে
“চুপচাপ বসে থাকো। একটা কথা বললে মাথায় তুলে আছাড় মারবো ইডিয়েট।
ছোঁয়া গাল ফুলিয়ে ফেলে। এতো অত্যাচার করে এখন ধমক দেওয়া হচ্ছে?
রিমি বলে ওঠে
“ছোঁয়া পরে বলিও আমায়। কেমন?
সামির ঘোর আপত্তি এতে
” তোরে একা কেন কইবো? আমরা কি রাজাকার? ভুলে যাস না আমি সাদি চাচার জানের দোস্ত। তার বাসরের কাহিনি শোনার পুরোপুরি অধিকার আছে আমার।
ছোঁয়া মামনি তুই আমারে ক
সামির ছোঁয়ার দিকে এগোতে নেয়। সাদি সামিরের কলার টেনে ধরে
“দুই মিনিটের মধ্যে রুম থেকে বের হলে ঐশির সাথে ডেট করার ব্যবস্থা করে দিবে।
ব্যাসস সামির ঠান্ডা। পকেট থেকে ঔষধের প্যাকেট বের করে সাদির হাতে দেয়।
” তোদের কি লজ্জা শরম নেই? বাবার বয়সী বন্ধু বিয়ে করে বাসর করেছে। তোরা দল বেঁধে এসে ডিস্টার্ব করছিস? আমি তো লজ্জায় পুরো লাল হয়ে যাচ্ছি। বের হ সবাই। এক মাসের মধ্যে ওদের ডিস্টার্ব করবি না। প্রাইভেসি দিবি। শিক্ষা দিক্ষা কিচ্ছু নেই তোদের।
গেট আউট হ।
সাদি মুচকি হাসে। বিরবির করে বলে “ড্রামাবাজ একটা”
সামির সবাইকে টেনে বের করে রুম থেকে তারপর নিজেও বের হয়ে যায়। সাদি পূনরায় দরজা বন্ধ করে দেয়। এবং এগিয়ে আসে ছোঁয়ার দিকে। গ্লাসে পানি ঢেলে ছোঁয়ার পাশে বসে।
“ঔষধ খেয়ে নাও
ছোঁয়া জবাব দেয় না। মুখ ঘুরিয়ে বসে থাকে।
” ঔষধ কি খাবে না কি আবার শুরু করবো?
ছোঁয়া ছোঁ মেরে সাদির হাত থেকে ঔষধের পাতা নিয়ে নেয়।
“কিসের ঔষধ?
” ব্যাথার।
“দুটো এখানে।
” দুটোই ব্যাথার।
“পিল তো নেই?
“এতো কথা কেনো?
ছোঁয়া ভেংচি কেটে বলে
” আমি ওইসব খাবো না।
“কিন্তু কেনো?
” বললাম না আমার বেবি দরকার।
সাদি কপাল চাপকায়। কোন পূর্ণের ফলে এমন বউ পেয়েছিলো?
“দেখো ছোঁয়া। তুমি এখনো ছোট। আরও কিছুদিন সময় লাগবে আমাদের।
“কে বলেছে আমি ছোট? আঠারো আমার। দাদির বাচ্চা হয়েছিলো চোদ্দ বছরে। সেই হিসেবে আমার বেবি হওয়ার বয়স পেরিয়ে গিয়েছে।
সাদি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
ব্যাথার ঔষধ ছোঁয়ার হাত থেকে নিয়ে।
” এটা পিল ছিলো।
“ওটা ফেলে দিন। আমি খাবো না। এটা খাবো।
সাদি মাথা নারায়। ছোঁয়া পিলটা খেয়ে নেয়। স্বস্তি নিঃশ্বাস ফেলে সাদি। তানিশা সুলতানা
ছোঁয়ার থেকে গ্লাস নিয়ে টেবিলে রেখে লাইট অফ করে দেয়। এবং ছোঁয়ার পাশে এসে বসে।
” চলো এবার ঘুমিয়ে পড়ি।
ছোঁয়া সাদির দিকে পেছন ফিরে শুয়ে পড়ে।
সাদি পেছন থেকে জাপ্টে জড়িয়ে ধরে ছোঁয়াকে। গলায় মুখ গুঁজে।
“এতো রাগ করতে নেই বউ। তোমারই তো বর তাই না?
চলবে
আমার ফেসবুক আইডির লিংক
https://www.facebook.com/tasfiyatanisha.tanha.3?mibextid=ZbWKwL
আমার গ্রুপের লিংক
https://www.facebook.com/groups/802201387001875/?ref=share_group_link