হৃদয়হরণী #পর্ব:৫৯ #তানিশা সুলতানা

0
369

#হৃদয়হরণী
#পর্ব:৫৯
#তানিশা সুলতানা

সামিরের সাথে ঐশীর বিয়ে দিতে রাজী হয়েছেন আতোয়ার হোসেন। সামিরকে তার কোনো কালেই পছন্দ ছিলো না। তবে সাদিকে পছন্দ। গম্ভীর রাগী প্রাপ্তমনষ্ক সাদিকে তার প্রচুর ভালো লাগে। ইচ্ছে ছিলো তার মেয়ের জন্য প্রস্তার দেওয়ার। কিন্তু তার আগেই খবর পেয়েছে সাদির বিয়ের। তাই আর তার আশাটা পূরণ হলো না।
গোল বৈঠক বসেছিলো সাদি, সামির,এবং আতোয়ার। আতোয়ার যখনই বলেছে

“ঠিক আছে। আমার মেয়ে ভালো থাকলেই হলো।

সামির একটা চিল্লানি দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। এক লাফে আতোয়ারের পাশে এসে বসে এবং জাপ্টে জড়িয়ে ধরে গালে চুমু খেয়ে নেয়। আতোয়ার চোখ বড়বড় করে ফেলে

” শশুড় মশাই লাভইউ। ২০২৪ সালেই আপনাকে নানা বানিয়ে ফেলবো। আপনার মেয়ে কখনোই খালি পেটে রাখবো না। প্রতি বছর একটা করে বাচ্চা গিফট করবো। কথা দিলাম।

আতোয়ার শুকনো ঢোক গিলে সামিরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। কটমট চোখে তাকায় সামিরের দিকে।

“অসভ্য একটা

বলেই তিনি চলে যায়। সামির গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে থাকে।
” আশ্চর্য অসভ্য কেনো কইলো? আমি তো সত্যি কথাই কইলাম।

সাদি ঠোঁট টিপে হাসে।
“সত্যি কথার ভাত নাই জানিস না।

সামির দীর্ঘ শ্বাস ফেলে
” হাহহ তাই তো সত্যি কই না।

“আর বলিসও না। তুই সত্যি বললে দুনিয়ায় মিথ্যা শব্দটাই উঠে যাবে।

সামির মুখ বাঁকায়।
” বাজে বকিস না। ঐশীকে আনার ব্যবস্থা কর। বিয়ে ঠিক হলো একটা চুমু খাবো না?

“শালা তোর কপালে বউ নাই।

” অভিশাপ দিবি না সাদি চাচা। একটাই জীবন। এক জীবনে বিয়ে ছাড়া চাওয়ার আর কিছুই নাই। জীবনের এক মাত্র লক্ষ হওয়া উচিত বিয়ে করা আর বাচ্চা দেওয়া।
আমি সরকার হলে স্লোগান দিতাম
“বিয়ে বিয়ে বিয়ে চাই
বিয়ে ছাড়া উপায় নাই
বিয়ে করবো থাকবো পাশে
বাচ্চা দিবো মাসে মাসে

সাদি হাত তালি দেয়।
” বাহহ বাহহ বাহহ
কপাল করে বউ আর বন্ধু পেয়েছিলাম।

সাদি নিজের শার্টের কলার ঠিক করে একটু ভাব নিয়ে বলে
“গর্বে তুই গর্ববতী হচ্ছিস? স্বীকার করো।

সাদি নিজের পায়ের জুতো খুলে
“গর্ববতী তোকে বানাবো এখন।
সামির এক লাফে সোফার অন্য পাশে চলে যায়।
” শালা দূরে যা। আমার ভার্জিনিটির দিকে হাত বাড়াবি না তুই।

_____

বমি করতে করতে অস্থির ছোঁয়া। গলা দিয়ে রক্ত আসার উপক্রম। পেট ব্যাথা করছে সাথে মাথা ব্যাথা। কিছুই খেতে পারছে না। পেটে খুধা। অসয্য লাগছে ছোঁয়ার৷ কান্না করে ফেলে সে। সাবিনা বেগম চিন্তিত ভঙিতে ছোঁয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। সিমি এক বাটি ঝাল ঝাল সুপ বানিয়ে এনেছে। যাতে একটু খেতে পারে।
ছোঁয়া তাকিয়ে ওয়াক করে ওঠে।
সিমির রাগ হয়।

“ঢং করিস না ছোঁয়া। এভাবে চলে না কি? একটু খেতেই হবে।

ছোঁয়ার চোখের কোণে পানি জমেছে। চোখ বন্ধ করতেই দুই গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে পানি।
” বাচ্চা দুনিয়াতে আনতে এতোটা কষ্ট হয়? আমি আর কখনোই আম্মুর সাথে বাজে বিহেভিয়ার করবো না। আর আমার কুদ্দুসকেও কখনো বকবো না।

সিমিও সুপের বাটি রেখে ছোঁয়াকে তুলে বসায়।
“একটু শক্ত হ। এখনো অনেক দিন বাকি। এখনই তোর মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। পরে কি হবে?

ছোঁয়া মাথা নিচু করে ফেলে।
“আমি শক্তই তো আপু।
একাই খেতে পারবো দাও।

সুপের বাটি নিয়ে ছোঁয়া একাই খেতে থাকে। বেশ কষ্ট হচ্ছে খেতে। গা গুলিয়ে উঠছে আবার। তবুও কষ্ট করে খাচ্ছে।
অনেকটা খাওয়ার পরে ছোঁয়া অস্থির হয়ে ওঠে। এবার আর পেটে ঢুকছে না। পেট থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে।
তখনই সাদি একটা তেঁতুলের আচার ধরে ছোঁয়ার মুখের সামনে। ছোঁয়া তাকায় সাদির মুখ পানে। সাদি খেতে ইশারা করে।
ছোঁয়া খেয়ে নেয়। আঁচার খেয়ে বমির ভাব চলে যায় ছোঁয়ার।
সাদিকে দেখে সাবিনা বেগম নিঃশব্দে চলে যায়। সিমিও সুপের বাটি নিয়ে বেরিয়ে যায় ওদের প্রাইভেসি দিয়ে।

ওরা বেরিয়ে যেতেই ছোঁয়া গাল ফুলিয়ে বলে ওঠে
” বউ নতুন নতুন প্রেগন্যান্ট হলে গিফট দিতে হয় জানেন না? আনরোমান্টিক একটা।
সাদি ফ্লোরে হাঁটু মুরে বসে পড়ে। পকেট থেকে একটা ছোট্ট বক্স বের করে ছোঁয়ার সামনে মেলে ধরে। ভেতরে চিকচিক করছে ডায়মন্ডের রিং।
ছোঁয়ার চোখ দুটো বড়বড় হয়ে যায়।

“এটা কি?

সাদি আংটিটা তুলে ছোঁয়ার আঙুলে পড়িয়ে দিতে দিতে জবাব দেয়
“আমার অমূল্য রতনের জন্য সামান্য ডায়মন্ডের রিং।

ছোঁয়া হেসে ফেলে। সাদির গলা জড়িয়ে ধরে বলে।
আই লাভ ইউ জামাই
একটা চুমু দিন।

সাদি ছোঁয়ার কপালে চুমু খেয়ে জবাব দেয়
” লাভ ইউ টু বউ

চলবে

আমার ফেসবুক আইডির লিংক

https://www.facebook.com/tasfiyatanisha.tanha.3?mibextid=ZbWKwL

আমার গ্রুপের লিংক

https://www.facebook.com/groups/802201387001875/?ref=share_group_link

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here