এক ম্লান রক্তসন্ধ্যার গান
লেখনীতে : নাফিসা তাবাসসুম খান
২৭.
হসপিটালের সিঙ্গেল বেড ছেড়ে এতদিন পর হাত পা মেলে শোয়ার মতো বিশাল বিছানা পেয়ে নিশার ঘুম গভীর হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু গতকাল সারারাত সে ছটফট করে কাটিয়েছে। এক তিল পরিমাণ ঘুম তার দু চোখের পাতায় নামে নি। যতবার চোখ বুজে ঘুমানোর চেষ্টা করেছে ততবার আম্মুর কথা মনে পড়েছে তার। এ এক অদ্ভুৎ লীলাখেলা! এতদিন যখন নাঈমার কাছে ছিলো তখন জুলফিকার তথা নিজের আব্বুকে খুব মিস করতো নিশা। আব্বুর কথা ভাবলেই মায়া লাগতো তার। আর এখন আব্বুর কাছে এসে আম্মুর জন্য মন পুড়ছে তার। এই কম্পলিকেটেড অনুভূতির দহন থেকে নিশা কিছুটা নিস্তার পেতো যদি তার আম্মু আব্বুর সাথে একসঙ্গে থাকার সুযোগ মেলতো। কিন্তু সেই সুযোগ এই ইহজনমে পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বারান্দায় একটা চেয়ারে বসে মিঠে রোদ গায়ে মেখে এসব আকাশ কুসুম ভাবতে ব্যস্ত ছিলো নিশা। হঠাৎ হাতের ফোনে নোটিফিকেশনের টুংটাং আওয়াজ হতেই সে দ্রুত গতিতে ফোনের স্ক্রিনের পানে চায়। অত:পর সিম কোম্পানির ইন্টারনেট অফারের অপ্রয়োজনীয় ম্যাসেজটা দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে। সকাল থেকে বার কয়েক রুহীর নাম্বার ডায়াল করেছে নিশা। মেয়েটার নাম্বার আনরিচেবল বলছে। রুহীর আম্মু আব্বুর নাম্বারেও বার কয়েক কল করেছে। কিন্তু উনারাও ফোন রিসিভ করছেন না।
মেয়েটাকে ঘিরে তার চিন্তার শেষ নেই। খুব কাছের একজন ক্লাসমেটের কাছে সে ওই ভয়ংকর দিনের কিছুটা বিবরণ শুনেছে। সেই বিবরণে এ-ও উল্লেখ্য ছিলো যে রুহী নাকি কোন এক আতঙ্কবাদীর সঙ্গে পূর্ব পরিচিত ছিলো। খুব সম্ভবত তাদের মধ্যে কোনো প্রেম ঘটিত সম্পর্কও ছিলো। নিশা প্রথমে এটা বিশ্বাস করতে চায় নি। কিন্তু সেই ক্লাসমেট জানায় তারা স্বচক্ষে দেখেছে। রুহীর ওই আতঙ্কবাদীর সঙ্গে জড়িত থাকাকে ঘিরে ক্লাসের সকলেরই তার প্রতি তিক্ত অনুভূতি কাজ করছে। কেবল এক অজানা কারণে কেউ মুখ ফুটে সেই বিষয়ে আর কিছু বলছে না।
রুহী বর্তমানে কি অবস্থায় আছে তা আল্লাহই কেবল ভালো জানেন। কিন্তু নিশা জানে তার বেস্ট ফ্রেন্ড ভালো নেই। ওর জীবন যে খুব দূর্বিষহ কাটছে তা সে খুব আন্দাজ করতে পারছে।
রুহীর কথা মনে পড়তেই নিশা ফেসবুকে লগইন করে। অত:পর রুহীর আইডি সার্চ করে প্রবেশ করে রুহীর হাস্যজ্বল ছবি গুলো দেখতে দেখতে ভাবে এই একই হাসি কি আর কখনো দেখতে পাবে সে? নিশার উদাস মনে আরো কালো মেঘের আনাগোনা শুরু হয়। সে রুহীর আইডি থেকে বের হতেই নিউজফিডে পিপল মে ইউ নো তে হঠাৎ একটা আইডি দেখে থমকে যায়। তামজিদ সাইফ। নিশা আইডিটায় প্রবেশ করে সর্বপ্রথম অদ্ভুত লোকটার প্রোফাইল পিকচার বড়ো বড়ো চোখ মেলে দেখে। জংলী প্রিন্টের টি শার্ট পরিহিত লোকটা, জংলী এক জায়গায় গলায় কালো সবুজের মাঝামাঝি রঙের একটি জংলী সাপ পেচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মুখে তার ফকফকা বত্রিশ দাঁতের হাসি ঝুলে আছে। নিশার অবচেতন মন বলে উঠে,
“ লোকটা পাগল। মরার ভয় নেই একদম। “
আগ্রহ বশত এবার নিশা সাইফের আইডি স্টক করা শুরু করে। কিন্তু হতাশাজনক ভাবে সাইফের আইডিতে তেমন কোনো তথ্যই দেওয়া নেই তার ব্যাপারে। কেবল গোটা কুঁড়ি ছবি রয়েছে। প্রতিটি ছবিই বনে জঙ্গলে তোলা এবং প্রতিটি ছবিতেই তার সঙ্গী হলো কোনো পশু প্রাণী। গরু – ছাগল হতে শুরু করে জঙ্গলের বন মোরগ পর্যন্ত কাউকে রেহাই দেয় নি এই উন্মাদ লোক।
নিশা যখন স্টকিংয়ে ব্যস্ত ঠিক সেই মুহুর্তে বারান্দায় দরজায় এসে উপস্থিত হয় নার্স কলি। তিনি গলা ঝাড়ি দিয়ে প্রশ্ন করেন,
“ রুমে যাবে এখন নিশা? অনেকক্ষণ ধরে বসে আছো। “
আচমকা কারো আগমনে নিশা চমকায়। হাতের ফোনটা এলোমেলো ভঙ্গিতে কোলে রেখে দেয়। মাথা নেড়ে সম্মতি পোষণ করে বলে,
“ হ্যাঁ। বসে থেকে কোমড় ধরে আসছিলো। “
মহিলা নার্সটি হাসিমুখে এগিয়ে এসে বলে,
“ ফিজিওথেরাপি চলছে যে তাই মাসল গুলোতে এরকম পেইন ফিল করছো। ধীরে ধীরে আবার আগের মতো ঠিক হয়ে যাবে। “
নিশা হেসে ফোনটা হাতে নিয়ে নার্স কলির সাহায্যে রুমে চলে যায়। ভীতু মেয়েটা জানলোও না, কখন তার অজান্তে এলোমেলো হাতের চাপ লেগে ওই পাগল লোকটার কাছে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট চলে গিয়েছে।
__________
গতকাল সন্ধ্যায় হেডকোয়ার্টারে গুরুত্বপূর্ণ সেনা সদস্যদের মধ্যে এক দীর্ঘ আলাপ চলেছে। আলাপের মুখ্য বিষয় ছিলো সদ্য ঘটে যাওয়া টেরোরিস্ট অ্যাটাক এবং সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনের এর সঙ্গে জড়িত হওয়ার তথ্যটা সম্পর্কে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার মুজতবার সিনিয়র কর্নেল জুবায়ের শিকদার ফিলিস্তিনের ব্যাপারে জেনেই চাইছিলো এই ব্যাপারটা মিডিয়ায় ডিসক্লোস করে ফিলিস্তিনের উপর সব দায় চাপিয়ে দিতে। কিন্তু তাতে বাঁধ সাধে মিটিংয়ে উপস্থিত সকল সেনা সদস্যরা। জুবায়ের শিকদার তখন তেঁতে উঠে বলেন,
“ জনগণ আমাদের উপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে। এটাই কি চাইছো তোমরা? “
মিটিং টেবিলে উপস্থিত মেজর শাহরিয়ার দূর্জয় তখন থমথমে গলায় শুধায়,
“ কোনো ধরনের কনফারমেশন ব্যতীত যুদ্ধবিধ্বস্ত একটা দেশের উপর এতো বড় দায় চাপিয়ে দেওয়া কি আমাদের নীতি বিপক্ষীয় নয়? “
দূর্জয়ের কণ্ঠস্বর শুনে সকলেরই শিরদাঁড়া বেয়ে হিমশীতল হাওয়া বয়ে যায়। মেজর দূর্জয় বরাবরই ব্ল্যাক কফির মতো তেঁতো গোছের মানুষ। সেই তেঁতো কফিতে আরো দু চামচ কফি পাউডার মিক্স করলে তা খেতে যতটা বিদঘুটে হবে, দূর্জয়ের কণ্ঠও ঠিক ততটাই ভয়ংকর শোনাচ্ছিলো। সবাই কিছুটা ভয় পেলেও কর্নেল জুবায়ের শিকদার দমে না। তিনি বলে উঠে,
“ আর কোন কনফারমেশন চাচ্ছো তুমি? সত্যটা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার। এই টেরোরিস্ট গুলো সব ওদের নেওটা। “
দূর্জয়ের দমিয়ে রাখা রাগ ক্ষোভ এবার শীতল গলায় প্রকাশ পায়।
“ সত্যটা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার স্যার। ওরাও নিজেদের ভূখণ্ডের জন্য লড়াই করছে স্যার, ঠিক যেমনটা আমাদের দেশের মানুষ করেছিলো। “
মিটিংয়ে উপস্থিত কর্নেল আশরাফুল মামুন এবার জুবায়ের শিকদার এবং দূর্জয়ের এই নীরব দ্বন্দ্বে বাগড়া দিয়ে বলে উঠেন,
“ কর্নেল জুবায়ের শিকদার পরিস্থিতি লজিক দিয়ে ভেবে দেখুন। এই ঘটনার সঙ্গে যে দেশের নাম উঠে এসেছে তাদের পক্ষে কখনোই সম্ভব নয় এরকম একটা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হওয়া। তবুও তারা জড়িত কিনা এই সন্দেহ কারো মনে থেকে থাকলে সেই সন্দেহ মেটানোর জন্য আমাদের সলিড প্রুফের প্রয়োজন। “
আশরাফুল মামুনের কথা শুনে জুবায়ের শিকদারের মুখ কালো হয়ে আসে। জুলফিকার মুজতবা সেই সুযোগে আশরাফুল মামুনকে উদ্দেশ্য করে বলে,
“ স্যার একটা উপায় আছে সত্যটা জানার। “
কর্নেল আশরাফুল কি জানতে চাইলেই জুলফিকার বলেন,
“ আমরা সবাই জানি বাংলাদেশের তরফ থেকে ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহেই আমাদের সামরিক বাহিনীর তত্তাবধানে সেই ত্রাণ ফিলিস্তিনে গিয়ে পৌঁছাবে। এই সুযোগে যদি আমরা আমাদের কিছু দক্ষ সেনাকে সেখানে পাঠাই তাহলে এর একটা বিহিত করা সম্ভব। আমাদের সৈন্যরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি তদন্ত করে জানতে পারবে যে কে কিংবা কারা সেই ওয়েবসাইটে এসব আপডেট পরিচালনা করছে। “
জুবায়ের ব্যতীত সকলেই জুলফিকারের প্রস্তাবে একমত পোষণ করে। কর্নেল আশরাফুল মামুন জানায় তিনি উপরের পদের লোকদের সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা করবেন। অনুমতি মিললেই উনারা এই প্রস্তাবে আমল করবেন। দূর্জয় এ শুনে মনে মনে খানিকটা স্বস্তি অনুভব করেছিলো। যাক! এই উপায়ে অন্তত সত্যটা তো সবার সামনে আসবে। তাই ঢের।
__________
মানিক নামক শমসের মজুমদারের নেওটা মালিকের কথা অনুযায়ী বাণীকে খুঁজে বের করার মিশনে নেমেছে। এই মিশনের শুরুতেই সে শমসেরের দেওয়া ক্ষমতা খাটিয়ে প্রথমে হসপিটালের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে যায়। কিন্তু তখনই সে জানতে পারে উল্লেখ্য সময়ের সিসিটিভি ফুটেজটা এক্সিডেন্টলি ডিলিট হয়ে গিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজের রেকর্ডিংটা এক্সিডেন্টলি ডিলিট হয়েছে নাকি ইচ্ছাকৃত ভাবে করা হয়েছে তা বুঝতে অসুবিধা হয় না মানিকের। সে সঙ্গে সঙ্গে এই খবর পৌঁছে দেয় শমসের মজুমদারের নিকট।
শমসের মজুমদারের মতো ধূর্ত লোক উপলব্ধি করে হিরণের ওই রুগ্ন স্ত্রী কারো সাহায্য নিয়ে পালিয়েছে। কিন্তু কার সাহায্য নিয়েছে? পর মুহুর্তেই শমসেরের মনে পড়ে একই সময়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার মুজতবার মেয়েও একই হসপিটালে এডমিট ছিলো। এরকম একটা কাজ ঘটানো জুলফিকার মুজতবার জন্য কোনো অসম্ভব বিষয় নয়। তবে কি ওই অসভ্য মেয়েটা জুলফিকার মুজতবার হেফাজতে আছে? ভাবনাটা মাথায় উঁকি দিতেই শমসেরের মুখে বিতৃষ্ণা ছড়িয়ে পড়ে। হিরণের স্ত্রী তাদের কাজ সমন্ধে কতদূর জানে তা শমসেরের জানা নেই। কিন্তু ওই অসভ্য মেয়ে যদি তাদের কাজ সম্পর্কে এক বিন্দু পরিমাণ সত্যিও ওই লেফটেন্যান্ট কর্নেলকে জানায় তবে ভীষণ বিপদ হবে।
কথাগুলো ভাবতে ভাবতে শমসের মানিককে ফোন করে বলে উঠে,
“ জুলফিকার মুজতবার উপর নজর রাখো। ওই মা* খুব সম্ভবত ওই লেফটেন্যান্ট কর্নেলের খোপের ভেতর গিয়ে লুকিয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব হিরণের মা*কে আমার চাই। “
বসের আদেশ পেতেই মানিক আর বিলম্ব করে না। সে দ্রুত জুলফিকারের উপর নজর রাখা শুরু করে। সকাল পেরিয়ে রাত হয়, কিন্তু সন্দেহভাজন কিছু তার চোখে পড়ে না। অবশ্য আর্মি কোয়ার্টারের ভেতর কিংবা তার আশপাশেও উঁকিঝুঁকি মারার সাহস করে না মানিক। সেকারণে আর্মি কোয়ার্টারের মধ্যে বাণী আছে কিনা তা বুঝতে বেশ হিমশিম খাচ্ছে মানিক। মনের হিমশিম দূর করতে সে শমসেরকে ফোন করে প্রশ্ন করে,
“ স্যার, আর্মি কোয়ার্টারের ভেতর বাণী ম্যাডামের থাকার কোনো সম্ভাবনা রয়েছে কি? “
শমসের সেকেন্ড পাঁচেক ভাবেন। তার মস্তিষ্ক জবাব দেয়,
“ না। কোনো সম্ভাবনা নেই। “
মুখে তিনি জবাব দেয়,
“ জুলফিকার নিজের ঘরে ওই মেয়েকে তোলার মতো বোকামি হয়তো করবে না। তুমি ভালো করে নজর রাখো। আমার মনে হয় অন্য কোনো সুরক্ষিত আস্তানায় হয়তো এই মেয়ে ঘাটি পেতেছে। “
__________
রাতের খাবার সেড়ে ঘুমানোর আগে স্টাফ মেসের কমন রুমে সাত সৈন্য এক হয়েছে। সকলেই তখন রাফির জন্য আনন্দ প্রকাশে ব্যস্ত। তাদের লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার মুজতবাকে ফিরিয়ে দেননি অন্যার পিতা। জুলফিকার প্রচুর বিচক্ষণতার সঙ্গে ভদ্রলোকের বরফের ন্যায় মনকে গলাতে সক্ষম হয়েছেন। রাফির ব্যাপারে পজেটিভ মতবাদ দ্বারা তিনি ভদ্রলোককে বেশ ইম্প্রেস করেছেন। ফলস্বরূপ সামনের শুক্রবার রাফি এবং অন্যার বাগদান। বিয়েটা অবশ্য কেবল রাফির প্রমোশনের পরেই সম্ভব। কিন্তু ততদিনের জন্য অন্যা অফিশিয়ালি রাফির বাগদত্তা হিসেবে পরিচিত থাকবে। আর তাদের মনে বিচ্ছেদের ভয় কাজ করবে না। রাফির পরিবার অবশ্য আগে থেকেই অন্যার ব্যাপারে জানতো। উনারাও আর বাগদান নিয়ে কোনো আপত্তি করেন নি।
সবাই যখন আনন্দঘন মুহুর্তে মশগুল সাইফ তখন ক্লান্ত দেহটা একটা সোফায় মেলে বসে। ফোনটা হাতে নিয়ে নেট অন করতেই একের পর এক নোটিফিকেশন এসে ভীড় জমায়। এতো এতো নোটিফিকেশনের ভীড়ে সাইফের দৃষ্টি স্থির হয় অনাকাঙ্ক্ষিত এক নোটিফিকেশনের পানে। ‘ইয়াসমিন মুজতবা সেন্ট ইউ এ ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট।’
সাইফ বুঝে পায় না এই ভীতু বাচ্চা মেয়ে তাকে রিকুয়েষ্ট পাঠিয়েছে কোন উদ্দেশ্যে? ইনবক্সে এসে সাইফকে ভাইয়া ভাইয়া ডেকে মুখে ফ্যানা তুলতে? সাইফ ভাবনায় মশগুল হয়েই রিকুয়েষ্টটা এক্সেপ্ট করে। হাজার হোক, তার লেফটেন্যান্ট কর্নেলের একমাত্র ভীতু মেয়ে। অযথা মেয়েটাকে ঝুলিয়ে রাখার মানে হয়না। যদিও সাইফ জগতের সকল মেয়েকেই বউ জাত হিসেবে গণ্য করে, কিন্তু এই মেয়ের জন্য নাহয় নিয়ম বদলাবে। স্যারের আদরের মেয়েকে নাহয় পাতানো বোনের আসনে বসাবে স্ব সম্মানে।
__________
রাত তখন সবে ন’টা বাজে। নিশা খাওয়া দাওয়া সেড়ে বিছানায় শুয়ে ল্যাপটপে একটা মুভি দেখছিলো। হঠাৎ ফোনের নোটিফিকেশনের টুং শব্দে সে ঘাড় ঘুরিয়ে ফোনটা হাতে নেয়। অপ্রত্যাশিত নোটিফিকেশন পেয়ে তার চক্ষু চড়াক গাছ। তামজিদ সাঈফ এক্সেপ্টেড ইউর রিকুয়েষ্ট। এই অনর্থক নোটিফিকেশনের মানে কি? নিশা তো এই লোককে রিকুয়েষ্ট পাঠায় নি। তবে? তার আইডি হ্যাক হলো নাকি?
কথাটা ভাবতে ভাবতেই নিশা সাইফের ইনবক্সে এক শব্দে প্রথম ম্যাসেজটা সেন্ড করে,
“ ভাইয়া? “
ম্যাসেজটা সিন হয় সাথে সাথেই। অত:পর এক মিনিটের মাথায় রিপ্লাই আসে,
“ বলুন বোন। “
চলবে…
[ কপি করা কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ]