রোদরঞ্জন #পর্ব_২২ #আসরিফা_মেহনাজ_চিত্রা

0
363

#রোদরঞ্জন
#পর্ব_২২
#আসরিফা_মেহনাজ_চিত্রা

[প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য]

[অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ। কার্টেসি সহ কোনো পেজেও কপি করা যাবে না।]
.
.

জ্ঞান ফিরে ইনানের।‌ মাথা প্রচণ্ড ভারী হয়ে আছে। দু হাতে মাথা চেপে ধরে উঠার চেষ্টা করে, ব্যর্থ হয়। শরীর গরম হয়ে আছে। মাথার ভেতরটা ফাঁকা, ঠাণ্ডা। চাদর গায়ে আরো টেনে দিতেই অনুভব করে সিল্ক চাদরটা মসৃণভাবে তার গায়ে পিছলে যাচ্ছে। আধবোজা চোখ ঝট করে বড় বড় হয়ে যায়। নিজের ভাবনা সঠিক কিনা তা প্রমাণ করতে চাদর উল্টিয়ে নিজ চোখে দেখে আসলেই সে নগ্ন। এক সুতোও তার শরীরে নেই।

জেহফিল তখন রুমে প্রবেশ খাবারের ট্রে হাতে।

‘গুড মর্নিং প্রিন্সেস।’ আদুরে গলা জেহফিলের।

জেহফিলকে দেখা মাত্রই ইনানের মনে পড়ে যায় ভোরের কথা। আতঙ্ক ঘিরে ধরে তাকে। উষ্ণ শরীর মুহুর্তেই হিম হয়ে যায়। চাদরের নিচেই ঠকঠক করে কাঁপতে থাকে।‌ জেহফিলের চুল ভেজা, কপালে খুব সুন্দরভাবে একই শেপে পড়ে আছে। তার ঠোঁটে মৃদু হাসি। হাসিটা মিথ্যে। ইনান জানে।

বেড সাইড টেবিলে আওয়াজ করে ট্রেটা রাখে সে। সেই আওয়াজে কেঁপে উঠে ইনান, জেহফিল লক্ষ্য করেছে ইনানের কাঁপুনি। হাসি চওড়া করে ইনানের মাথার কাছে বসল। ইনানের কাঁধ আর কোমর উঠে বসালো। ইনান চাদর শক্ত করে নিজের সাথে চেপে ধরল। জেহফিলের হাত এত ঠাণ্ডা যেন মরা মানুষের হাত! ইনান এক হাতে জেহফিলের বরফ শীতল হাত সরিয়ে দেয়। জেহফিলের হাসি থেমে যায়। চেহারায় ভর করে গম্ভীরতা। সেই গাম্ভীর্যও প্রতিস্থাপিত হয় ফের মৃদু হাসিতে ইনানের ভয়াতুর মুখ দেখে। ইনানের নরম গাল টেনে চিমটি কাটে,

‘ইউ আর সো কিউট।’

ইনান ফ্যালফ্যাল চোখে চেয়ে থাকে। অন্য সময় হলে সে লজ্জা পেত, হাসত, জেহফিলের বুকে গড়িয়ে পড়ত। কিন্তু এখন সময়টা ভিন্ন। ভিন্ন‌ তার সামনের মানুষটা।

‘আমার ছোঁয়া ভালো লাগে না?’

খুব স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল জেহফিল। কিন্তু ইনান ঠিকই ধরতে পারল জেহফিলের কথার আড়ালে থাকা অদৃশ্য আক্রোশ। শুষ্ক ঠোঁট ভিজিয়ে নিজেকে নরমাল রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করল ইনান। জেহফিলের সাথে খোলাখুলি কথা বলতে হবে। তার আগে জেহফিলের মুড ভালো রাখতে হবে। ইনান চাদর ভালো করে জড়িয়ে বলল,

‘আপনার হাত অনেক ঠাণ্ডা, শীত লাগছিল অনেক‌।’

জেহফিল ইনানের চোখে চোখ রেখে প্রায় অনেকক্ষণ চেয়ে ছিল। তারপর খাবার নিয়ে ইনানকে খাইয়ে দিতে লাগল,

‘ভোরে জ্বর এসেছিল, আই থিংক এখন কমে গেছে।’

এরপর নিরবতা। খাওয়ানোর পুরোটা সময় জেহফিল একটা কথাও বলল না। কেমন ভাবলেশহীন মুখে ইনানকে খাইয়ে দিলো। বাতাসে অস্বস্তি টের পেয়ে ইনানও চুপচাপ খেতে লাগল।

খাইয়ে দিয়ে জেহফিল রুমের বাইরে চলে গেল। এই ফাঁকে জামা কাপড় পরে নিলো ইনান। শরীরে জ্বর ভাবটা নেই এখন আর, শুধু মাথাটা ব্যথা করছে।

টেবিলের উপরই তার মোবাইল দেখতে পায়‌। জেহফিল তাহলে তাকে মোবাইল দিয়ে দিয়েছে! ফোন‌ হাতে নিলো বাবার সাথে কথা বলার জন্য। সাথে সাথেই জেহফিলের আগমন। ভ্রু বিকৃত করে শাসনের সুরে বলল,

‘জামা পরেছ কেন?’

ইনান হতভম্ব।‌ এ কেমন কথা? সে জামা পরবে না তো কি সারাদিন চাদর জড়িয়ে থাকবে?

‘জবাব দাও!’ জেহফিলের গলার আওয়াজ বাড়ল।

ইনান বুঝল না আসলে কী বলা উচিত! জেহফিলের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে জামা পরে অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছে ইনান।

‘স্ট্রিপ!’ জেহফিলের কড়া আদেশ।

ইনান চমকিত হয়। এমন না যে সে তার স্বামীর সামনে উন্মুক্ত হতে লজ্জা পাচ্ছে, তার শরীরে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে জেহফিল স্পর্শ করেনি। কিন্তু ইনান চিন্তিত জেহফিলের মনে কী চলছে তা নিয়ে।

‘বাটারফ্লাই!! তোমাকে এক কথা কেন দ্বিতীয়বার বলা লাগে?’ জেহফিল রক্তিম চোখে তাকায়। রক্ত টগবগ করে ফুটছে তার শরীরের প্রতিটা অঙ্গে।

ইনান দুর্বলচিত্তে জেহফিলের দিকে তাকায়। এমনিতেই মাথা ঘুরছে তার উপর জেহফিলের চেঁচামেচি!

‘প্লিজ স্টপ!’ ইনান ফ্যাকাশে কণ্ঠে বলল।

‘তুমি খুলবে না তাই তো?’ জেহফিলের অস্বাভাবিক শান্ত গলা।

ইনান দুইপাশে মাথা নাড়ায়। তার আসলেই শরীর ভালো লাগছে না। জেহফিল কি তার উপর অধিকার খাটানোর জন্য এমন করছে?

‘জেহফিল, প্লিজ, আজকে না।’

ইনানের কথার মনে বুঝতে জেহফিলের সময় লাগল না। দ্রুত পায়ে ইনানের কাছে আসে।

‘ওয়েট, তুমি ‘আজকে না’ দিয়ে কী বুঝালে? তুমি ভেবেছ আমি তোমাকে আদর করব?’

ইনানের কান গরম হয়ে যায় জেহফিলের লাগামহীন কথায়। সেই সাথে বিভ্রান্তি নিয়ে জেহফিলের দিকে তাকায়। কাছে না আসলে তাকে জামা কাপড় খুলতে বলেছে কেন?

জেহফিল কঠিন দৃষ্টিতে তাকায় ইনানের দিকে। যেন ইনানের এই নিচু ভাবনা সে মেনে নিতে পারছে না। তখন নজর যায় ইনানের হাতে। ফোন দেখে বলে,

‘কাকে কল করছিলে?’

‘বাবাকে।’ সরল স্বীকারোক্তি ইনানের।

এক টানে মোবাইল নিয়ে যায় জেহফিল। ইনান আশাহত গলায় বলল,

‘আপনি বলেছিলেন মোবাইল দিয়ে দিবেন আমাকে।’

‘দিবো, তার আগে আমি যা বলেছি তা করো। স্ট্রিপ, রাইট নাও!’ থেমে থেমে বলল জেহফিল।

‘আপনি…’ এটুকু বলতে গিয়েই কণ্ঠ জড়িয়ে এলো‌ ইনানের।

জেহফিলের চোখ থেকে চোখ সরিয়ে নিলো। লেডিস শার্টের বোতামে হাত দিতেই জেহফিল থামায়। ইনানকে কোলে তুলে নেয় আচমকা। তারপর নিয়ে যায় তার আর্ট রুমে।‌ চেয়ারের উপর বসিয়ে দিয়ে ইনানকে শুরু করতে বলল।

জামা কাপড় খুলে ফেলল। আলোকিত রুমে এভাবে উন্মুক্ত হওয়ায় ইনান লজ্জায় চোখ বন্ধ করে ফেলল। ভেবেছিল জেহফিলের সামনে লজ্জা পাবে না, অথচ তার দ্বিগুণ লজ্জা পেয়ে উষ্ণ ধোয়া কান থেকে বেরোতে লাগল। যেখানে জেহফিল পোশাকে আচ্ছাদিত সেখানে তার সামনে এভাবে নগ্ন হয়ে বসাটা সবচেয়ে লজ্জাজনক ইনানের কাছে। সে জড়সড়ো হয়ে বসে রইল চেয়ারের উপর।

‘সো ড্যাম পারফেক্ট বেবিগার্ল।’ জেহফিলের আবেশিত কণ্ঠ শুনে ইনান চোখ খুলে।

দেখে জেহফিল ক্যানভাস সামনে নিয়ে তার চারহাত দূরত্বে বসে আছে। জেহফিল এখন ছবি আঁকবে তার? ভাবনা মাথায় আসতেই হাত আড়াআড়ি ভাবে বুকের কাছে নিয়ে গেল।

‘হাত সরাও।’ জেহফিল রং প্যালেটে নিয়ে বলল, ‘দ্বিতীয়বার এক কথা বলব না।’

ইনান কাঁপতে কাঁপতে হাত সরিয়ে ফেলে। জেহফিল উঠে গিয়ে সবগুলো পর্দা টেনে দেয়। ঘোর অন্ধকার রুম। ইনানের কাছে এসে তিনটে মোম জ্বালিয়ে সোজা করে ইনানের পাশের টেবিলে রাখে। ইনানের চুল গুলো গলার কাছে সুন্দরভাবে ভাঁজ করে রাখল। হলদেটে আলোয় ইনানের ধনুকের মতো বাঁকানো নিখুঁত নিখাদ দেহের দিকে মোহাবিষ্টের ন্যায় চেয়ে থাকে সে। তার বাটারফ্লাই যেন সদ্য প্রস্ফুটিত হওয়া স্নিগ্ধ গোলাপ, না না গোলাপের চেয়েও স্নিগ্ধ!

ঝুঁকে এসে ইনানের কপালে চুমু খায়। ইনানের হাত দুটো নিয়ে নিজের শার্টের বোতামের উপর রাখে। ইশারা করে ইনানকে। ইনান মাথা নিচু করে জেহফিলের শার্টের বোতাম খুলতে নিলে জেহফিল তর্জনী দিয়ে ইনানের চিবুক ধরে উপরে তুলে। ডিপ ভয়েসে আদেশ দেয় ইনানকে,

‘আইজ অন মি বেবিগার্ল।’

জেহফিলের চোখে চোখ রেখে ইনান একটা একটা করে বোতাম খুলতে লাগে, তার হাত তিরতির করে কাঁপছে। জেহফিলের প্রতি ভালোবাসার যেই অনুভূতি এতদিন জেহফিলের আচরণের কারণে সুপ্তাবস্থায় ছিল, সেই অনুভূতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আবার। জেহফিলের চোখে হারিয়ে যেতে মন চাইছে, ঐ নির্দয়, তমসাচ্ছন্ন, আবেগহীন ধূসর চোখে..

বোতাম খোলা শেষে জেহফিল শার্ট ছুঁড়ে ফেলে দেয়। ইনানের কানের লতিতে কামড় দিয়ে ফিসফিস করে বলে,

‘আ’ম অলসো হাফ নেকেড। এবার আর লজ্জা পাবে না।’

ইনান ঘোর লাগা জেহফিলের সৌষ্ঠব দেহ উপর থেকে নিচ অবধি খুঁটে খুঁটে দেখে। জেহফিলের শ্যামবরণ শরীর, এ যেন নিখুঁত আর্ট। তার আঁকা আর্টের মতোই যেন জেহফিল নিজের দেহটাকেও আর্টে রূপান্তর করেছে, এত চমৎকার!‌ মোমের আলোয় জেহফিলের পেটানো শরীর মাদকের মতো টানছে। তার হাত আপনাআপনি চলে যায় জেহফিলের বুকে। জেহফিল ইনানের দৃষ্টি পরখ করে এগিয়ে এসে ইনানের বক্ষ ভাঁজে গভীর চুমু দিয়ে সরে আসে, বসে পড়ে ক্যানভাসের সামনে।

শুরু করে তার প্রিয়তমাকে রঙ তুলির আঁচড়ে জীবন্ত করার কাজ। আঁকার নিমিত্তে জেহফিল যতবার ইনানের সুগঠিত উরোজে দৃষ্টিপাত করে ততবার ঝাঁকুনি দিয়ে উঠে ইনানের তনু দেহ। রাঙা হয় তার গাল। চোখে আকাঙ্ক্ষা। ঠোঁটে ফুটে অদৃশ্য লাজুক হাসি, যেটা জেহফিল ছাড়া আর কেউই দেখে না, স্বয়ং ইনানও না।

ইনানের চোখের ভাষা দেখে জেহফিল বাঁকা হাসে। তার সেনোরিটা ঠিক তার স্কাল্পচার বানানোর মাটির মতো, সে যেমনটা চাইবে, যেই ছাঁচে ফেলবে, ঠিক সেই রূপ ধারণ করবে ইনান…করতে বাধ্য…

.
.
চলবে…

[আজকে শুধুমাত্র ওদের মুহুর্ত রাখতে চেয়েছি, যার কারণে ছোট হয়েছে। মন্তব্য করবেন।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here