#রোদরঞ্জন
#পর্ব_৩
#আসরিফা_মেহনাজ_চিত্রা
.
.
এই বিকেলের ঝকঝকে আকাশে হুট করে বৃষ্টি নামাটা একদমই ভালো লাগেনি ইনানের। কেননা আজ সে সাদা সালোয়ার কামিজ পরেছে। সাইকেলটাও সাথে আনেনি। এখন নিজ মনেই গালাগালি করছে সে। কলেজ থেকে বের হয়েছে আরো আধঘন্টা আগে। বন্ধুবান্ধব একটাও সাথে নেই আজ। ম’রণ দশা! বিপদ যখন আসে, সব একসাথেই আসে। ইনান একটা আধখোলা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে। ভেতরে গাদাগাদি অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজন বৃষ্টির কবল হতে নিজেকে বাঁচাবার চেষ্টায় রত। ইনান সবার সামনে দাঁড়িয়ে। তার সালোয়ারের নিচের অনেকটা ভিজে গিয়ে তার পা’কে দৃশ্যমান করে তুলছে। আর কিছুক্ষণ থাকলে কাক ভেজা হতে বেশি সময় লাগবে না। ইনানের এত অস্বস্তি লাগছে বলার বাইরে। ব্যাগ দিয়ে নিজের বুক হতে পেট শক্ত করে চেপে ধরে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করছে সে। দোকানে দাঁড়ানো অধিকাংশ ছেলে বুড়োর নজর তার দিকে। যেন তারা মেইন ড্রামা দেখার অপেক্ষায় আছে।
ঝড়ো বৃষ্টিতে একটা রিকশাও দেখা যাচ্ছে,গাড়ি তো দূরের কথা। এদিকে ইনান কাউকেই কল দিয়ে পাচ্ছে না। বাবাকেও না। বুক ফেটে কান্না আসতে লাগল ইনানের। আজকে কার মুখ দেখে ঘুম থেকে উঠেছে সে! এত বাজে দিন তার জীবনে এই প্রথম।
ঠিক সেই মুহূর্তে তার সামনে দিয়ে চেনা একজনকে যেতে দেখল। বা হাতের আঙুলে চাবির রিং ঘুরাতে ঘুরাতে ছাতা মাথায় সাদা শার্ট পরনের এক সুপুরুষ পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিল।
ইনান অবচেতন, বিভ্রান্ত মনে জোরে ডেকে উঠল তাকে, ‘জেহফিল!!’
জেহফিলের পা থমকে গেল এক মুহুর্তের জন্য। বোঝার চেষ্টা করল ঠিক শুনেছে কিনা! আবারও সে শুনতে পেল মিহি গলার সুরেলা মেয়েলী ডাক, মিষ্টি সুরে তার নাম ধরে ডাকছে… ‘জেহফিল!’
জেহফিল পেছন ফিরে তাকায়। স্বর্গ থেকে নেমে আসা এক সাদা পরী এক ঝাঁক কুৎসিত কোলাহলে আবদ্ধ। সেই মুহূর্তে এই সাদা পরীটাকে বন্দী থেকে মুক্ত করতে হৃদয়ের অন্তঃকরণ হতে এক অদম্য শক্তি তার ভেতরটাকে তাড়া দিতে লাগল।
ইনান জেহফিলকে হাত নেড়ে ইশারা করল তার কাছে আসতে, ‘প্লিজ শুনে যান একটু। এখানে আসুন!’
জেহফিল ইনানের কাছে আসতেই ফট করে জেহফিলের ছাতার নিচে ঢুকে গেল ইনান। ইনানের গা থেকে আসা মিষ্টি সুবাসে আবিষ্ট হয়ে গেল জেহফিল। ভেতরের মুগ্ধতা বাহিরে যাতে প্রকাশিত না হয় সে চেষ্টায় ঢোক গিলে অন্যদিকে তাকাল সে।
‘আপনার সাথে তো গাড়ি আছে তাই না? আপনি প্লিজ আমাকে একটু লিফ্ট দিতে পারবেন? প্লিজ!’ ইনান বিনীত সুরে অনুরোধ করল।
জেহফিল এক হাত পকেটে নিয়ে মুষ্টিবদ্ধ করল। শীতল আবহাওয়াতেও তার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। শুষ্ক ঢোক গিলে সে এগিয়ে যেতে লাগল অদূরে পার্ক করা গাড়ির দিকে।
ইনান যারপরনাই অবাক হলো। জেহফিল কি তার আর্জিতে রেগেছে নাকি সম্মত হয়েছে বোঝা গেল না। নিজের কাছেই কেমন যেন নিজেকে ছ্যাচড়া লাগল। সে যেচেপড়ে সাহায্য চাইতে এসেছে এতে কি তার মান কমে গেছে!! কিন্তু সে তো নিরুপায়। একান্ত বাধ্য হয়েই জেহফিলের কাছে সাহায্য চাইতে এসেছে সে।
গাড়ির দরজা খোলার আওয়াজে চমকে গেল ইনান। জেহফিল দরজা খুলে অপেক্ষা করছে তার জন্য। ইনান খেয়াল করল জেহফিল তার দিকে একটাবারের জন্যও তাকাচ্ছে না। তার মুখে কি কিছু লেগে আছে? নাকি… ইনান দ্রুত নিজের জামার দিকে তাকাল! নাহ! জামা ভিজেনি, শুধু পায়ের দিকটা আগের মতোই ভেজা। ইনান গাড়িতে ঢুকতেই জেহফিল অপর পাশ দিয়ে গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়ল।
গাড়ি চলছে আপন গতিতে। বৃষ্টির রিমঝিম শব্দ কাঁচ ভেদ করে ভেতরে আসতে পারছে না। গাড়ির ভেতরেও পিনপতন নীরবতা। জেহফিল ভুলেও ইনানের দিকে তাকাচ্ছে না। ইনান বুঝতে পারছে না সে কীভাবে কী করবে! ধন্যবাদ জানাবে? কিছু একটা বলে তো কথোপকথন চালানো উচিত। এভাবে সঙের মতো বসে থাকতে আনইজি লাগছে।
জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিজেকে ধাতস্থ করে ইনান আরম্ভ করল, ‘আপনাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য সরি। আসলে উপায় না পেয়েই হেল্প চাইতে হয়েছিল। আপনার কি কোনো সমস্যা হচ্ছে?’
জেহফিল নিরুত্তর। আশ্চর্য মানুষ! ইনানের মেজাজ গরম হয়ে গেল। এই ধরনের পরিস্থিতিতে এরকম আচরণ করার মানে কী?
ইনান ঠোঁট কামড়ে রাগ, অপমানকে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করল। তখন লুকিং গ্লাসে চোখ গেলে দেখল পেছনের সিটে কয়েকটা বই রাখা। ইনান পেছনে ফিরে চোখ ছোট করে বোঝার চেষ্টা করল বইগুলো কিসের। এগুলো মাস্টার্সের! ইনানের ভ্রু কুঞ্চিত হয়ে গেল চকিতে। কৌতুহলকে দমাতে না পেরে জিজ্ঞেস করেই ফেলল,
‘মাস্টার্সের বই কেন আপনার কাছে? এখনো অনার্স ফাইনালই দেননি, মাস্টার্সের বই দিয়ে কী করবেন?’
ইনান জেহফিলের পারমিশন ছাড়াই বইগুলো হাতে নিলো। স্টিয়ারিংয়ে রাখা জেহফিলের হাত শক্ত হয়ে গেল। তার পারমিশন ছাড়া কেউ কিছু ধরাটা একদম ভালো চোখে দেখে না সে।
ইনান উল্টে পাল্টে বই দেখতে দেখতে কয়েকটা পেজে এসে থমকে গেল। বইয়ের অধিকাংশ পেজে পেন্সিল দিয়ে একেক টাইপের স্কেচ করা।
‘বইটা তো নিউ এডিশন। এর মধ্যে এতোকিছু এঁকেছেন কেন?’
প্রথমবারের মতো একটা বাক্য জেহফিলের মুখ থেকে বেরুলো, তাও কাঠ গলায়, ‘আমার বই, আমার ইচ্ছা।’
‘তাই বলে…ওয়েট! আপনার বই মানে? আপনি তো আমার ব্যাচমেট।’ ইনান বিস্মিত নেত্রে চেয়ে বলল।
‘নোপ।’
‘তাহলে যে ঐদিন আপনাকে আমার ক্লাসে দেখলাম!’
‘আমার ইচ্ছে হয়েছিল তাই যেকোনো একটা ক্লাসে ঢুকে গিয়েছিলাম, এনিথিং এলস?’ জেহফিল কঠিন গলায় বলল।
‘আজব ইচ্ছা।’ বিড়বিড় করে বলল ইনান। কিন্তু মুখে বলল, ‘ওহ আচ্ছা।’
ইনান ভাবনায় পড়ে গেল। সেইদিন জেহফিলের চেহারা দেখে সে সিরিয়াসলিই ব্যাচমেট ভেবেছিল। কিন্তু এখন কাছ থেকে দেখায় তার ভুল ভাঙলো। ছেলেটির শরীর আসলেই একজন বলিষ্ঠ পুরুষের। দেখলে কেমন টিচার টিচার লাগে। আর পাশে দাঁড়ানোতেও বুঝল, লোকটি যে কত লম্বা! খাম্বা একটা!
চারপাশ আঁধারে ঢেকে আছে। বৃষ্টির তীব্রতা বেড়েই চলেছে। বোঝার উপায় নেই এখন যে বিকেল, মনে হয় রাত নেমে গেছে অচিরেই। ইনান এতক্ষণে খেয়াল করল, রাস্তাটা তার সম্পূর্ণ অচেনা। রাস্তার দুধারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে অচেনা অজানা আকাশ ছোঁয়া গাছ। কিছুটা হতভম্ব হলো ইনান। এই রাস্তা তো তার চেনা নয়। এখানে আগে এসেছিল বলেও মনে হয় না।
তড়িৎ পাশ ফিরে জেহফিলের দিকে তাকালো, ‘এটা কোথায় যাচ্ছি আমরা?’
সাথে সাথেই জবার দিলো না জেহফিল। ভ্রু কুঁচকে চুপ করে থাকল কিছুক্ষণ, তারপর ধীরস্বরে বলল, ‘বাড়ি।’
‘কার বাড়ি? এটা তো আমার বাড়ির রাস্তা নয়!’ ভয় খেলে গেল ইনানের চোখে। কুচিন্তারা এসে ভিড় জমাতে লাগল তার ভাবনায়।
‘আমার বাড়ি।’ সহজ জবাব জেহফিলের।
‘হোয়াট দ্য হেল ইজ দিস? আমি কি আপনার বাড়িতে যাওয়ার জন্য লিফট চেয়েছি? আমি আমার বাড়িতে যাব।’ চেঁচিয়ে উঠলো ইনান। আতঙ্কে তার সারামুখ নীল হয়ে গেছে।
‘ইউ ডিডন্ট টেল মি ইওর এড্রেস।’
ইনান মাথায় হাত দিয়ে হতাশার দীর্ঘশ্বাস ফেলল, রাগে তার গলার স্বর কাঁপতে লাগল, ‘ভাই!! লিসেন। আমি নাহয় ভুলেই গিয়েছিলাম বলতে, তাই বলে আপনি একটাবার জিজ্ঞেস করবেন না আমি কোথায় যাব?’
‘দ্যাটস নট মাই প্রবলেম।’ জেহফিল স্বাভাবিক গলায় বলল।
ইনানের কান্না চলে এল রাগে। তার সত্যিই তখন খেয়ালে ছিল না ঠিকানাটা বলার। তাই বলে কি জেহফিলের দায়িত্ব ছিল না নিজ দায়িত্বে জিজ্ঞেস করা? উল্টো বলে কিনা এটা তার সমস্যা না?
বড় বড় কয়েকটা শ্বাস ফেলে নিজেকে শান্ত করে বলল, ‘গাড়ি ঘুরান। বাসায় দিয়ে আসুন। এড্রেস বলছি।’
‘আ’ম নট ইওর ড্রাইভার যে তুমি যা বলবে তাই শুনব।’ জেহফিলের কন্ঠ শীতল।
ইনান মেজাজ হারানোর পথে। পাশাপাশি তার ভয়ও লাগছে, এভাবে একটা মেয়েকে তার বাড়িতে না দিয়ে এসে নিজের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পেছনে মতলবটা কী? নাকি বাড়ির কথা বলে অন্য কোনো পরিত্যক্ত জায়গায় নিয়ে যাবে? ইনানের হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেল। ঘামাতে লাগল দরদরিয়ে। কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, ‘আপনি আমাকে যেখান থেকে এনেছেন সেখানেই দিয়ে আসুন! বাড়িতে দিয়ে আসা লাগবে না।’
জেহফিল যেন শুনলোই না তার কথা এমনভাবে গাড়ি চালাতে লাগল।
নিজের মেজাজ হারিয়ে আচমকা চেঁচিয়ে উঠলো ইনান, ‘কী হলো শুনতে পাননি? আমাকে দিয়ে আসুন কলেজে! রাইট নাও!’
‘আই কান্ট।’
ইনান এবার চিবিয়ে চিবিয়ে বলল ‘ইউ আর সাচ আ ডি*হেড।’
আচমকা গাড়ির ব্রেক কষল জেহফিল। ইনানের পাশের দরজা খুলে দিল পলকেই। তারপর গম্ভীর গলায় বলল, ‘গেট আউট।’
বৃষ্টির তোড়ে ইনানের জামা কাপড় ভিজে যাওয়া শুরু করল। সাদা কাপড় ভেদ করে শরীর ভেসে উঠার আগেই গাড়ির দরজা বন্ধ করে দিল ইনান।
‘মানে কী? আমি কেন নামব? আপনি নিয়ে এসেছেন , আপনিই দিয়ে যাবেন।’ ইনান তীক্ষ্ণ কণ্ঠে বলল।
জেহফিল একপলক তাকালো ইনানের চোখের দিকে। ইনান বুঝতে পারল না জেহফিলের চোখের ভাষা। জেহফিল প্রলম্বিত শ্বাস ছেড়ে ড্রাইভিং শুরু করল,
‘আর দুইমিনিট লাগবে আমার বাড়ি যেতে। আই হ্যাভ সামথিং ইম্পর্টেন্ট দেয়ার। ওটা নিয়েই আবার সিটিতে ব্যাক করব। যদি তোমার আমাকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় তাহলে তুমি বেরিয়ে যেতে পার গাড়ি থেকে। এখানে একটা গাছের নিচে দাঁড়াও, ব্যাক করার সময় নিয়ে যাবো। অ্যান্ড ইয়েস, মাইন্ড ইওর ল্যাংগুয়েজ।’
‘মশকরা করেন আমার সাথে? এইখানে কোন কচুর নিচে দাঁড়াব আমি?’
ইনান কাঁচের জানালায় হাত ঠেকিয়ে হাতের তালুতে মাথা রাখল। নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে, ব্যাগ থেকে একটা কলম বের করে আরেক হাতে লুকিয়ে রাখল। কিছু করতে আসলেই ঘ্যাচাং করে দিবে।
সন্ধ্যাও নেমে গেছে। এর মাঝেই চলে আসল জেহফিলের বাড়ি। রাস্তার সাথেই দোতলা বাড়ি। প্রথম দেখায় বাড়িটাকে দেখলে মনে হয় পরিত্যক্ত ভুতুড়ে বাড়ি। মনে হয় না এখানে কোনো মানুষ থাকে। জঙ্গলের ভেতরে কিছু বাড়ি থাকে না? তেমন। ইনান হাতে রাখা কলম আরো শক্ত করে চেপে ধরল। জেহফিল গেটের কাছে থামিয়ে ইনানের দিকে তাকাল।
‘যদি তুমি চাও উপরে আসতে পারো।’
‘কু’ত্তায় কামড়াইছে তো আমারে।’ দাঁত কিড়মিড় করে বলল।
‘ফাইন। থাকো তাহলে।’
জেহফিল বেরিয়ে গেল গাড়ি থেকে। গেইট খুলেই কি মনে করে ইনানের কাছে আসলো আবার।
ধীর গলায় বলল, ‘ভয় পাবে না তো?’
প্রচন্ড বিরক্তির সাথে ইনান বলল, ‘আপনি প্লিজ তাড়াতাড়ি কাজ সেরে আসবেন?’
জেহফিল আর কোনো কথা না বলে গেট খুলে সোজা দোতলায় চলে গেল। ইনান দোয়া দরুদ পড়তে পড়তে চারপাশের হাবভাব বোঝার চেষ্টা করল। মোবাইলের ব্যাটারি লো, কাউকে যে মেসেজ দিবে সেই চার্জটুকুও নেই। গাড়ির হেডলাইটের আলোয় শুধু সামনের রাস্তাটাই দেখা যাচ্ছে। মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকানোর আলোয় দেখতে পেল, দোতলা বাড়ির পাশেই একটা ছোট্ট পুকুর। এর আশেপাশে কোনো বাড়ির চিহ্নও দেখা গেল না। চারিদিকে অন্ধকার আর ঘন জঙ্গল। রাস্তাটা দেখে মনে হচ্ছে যেন সোজা জঙ্গলে ঢুকে পড়েছে। ইনানের হাড়হিম হয়ে গেল অজানা ভয়ে। শ্বাস দ্রুত ওঠানামা করতে লাগল। বারবার মনে হলো গাড়ির পেছনের সিটে কেউ আছে। আবার মনে হলো জানালার পাশে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ে আতঙ্কে ইনান হুট করেই গাড়ির দরজা খুলে দৌড়ে বাসার মধ্যে ঢুকে গেল। নিচ তলায় সম্পূর্ণ অন্ধকার। দেখে মনে হচ্ছে পরিত্যক্ত গোডাউন ছিল আগে। টিমটিমে হলদে আলোর বাতি জ্বলছে মাথার উপর। দোতলা থেকে ছিটকে আসা আলোয় সিঁড়ি কিছুটা আলোকিত। ইনান দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়াল। গোডাউনের বড় দরজাটা খোলা। তা দেখে আরো ভয় লাগছে ইনানের। তবে গাড়ি থেকে কিছুটা কম। বুকে হাত দিয়ে দোয়া দরুদ পড়তে পড়তে হঠাৎ টের পেল তার পেছনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ের শীতল স্রোত বয়ে গেল শিড়দাঁড়া বেয়ে। শুকনো ঢোক গিলল। হাত পা অবশ হতে লাগল ধীরে ধীরে। পেছনে ফেরার মতো সাহস তার অবশিষ্ট নেই। তাও, বহুকষ্টে, সাহস সঞ্চয় করে পেছন ফিরে তাকাতেই পিলে চমকালো তার। জেহফিল খুব কাছে এসে দাঁড়িয়ে। হলদে আলোয় জেহফিলের ধূসর চোখ আর ঘাড় কাত করে রাখা কঠোর চোয়াল কেমন ভয়ানক লাগছিল ইনানের কাছে। যেমনটা হয় হরর মুভিতে ভূত দেখলে। ইনান টের পেল তার চারপাশ কেমন তমসাচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে। ঝাপসা হয়ে যেতে লাগল জেহফিলের ভয়ংকর মুখশ্রী। ঝাপসা চোখে দেখল দুটো হাত তাকে শক্ত করে বাহুডোরে আবদ্ধ করেছে…দম বন্ধ হয়ে যেতে লাগল ইনানের। অন্ধকার অতলে হারিয়ে যেতে লাগল সে…ধীরে ধীরে..
.
.
চলবে…
[একটু সুন্দর করে মন্তব্য করে বলুন না কেমন বুঝলেন?]
গ্রুপ লিংক – https://facebook.com/groups/1031660127365464/