#কাজললতা
পর্ব: ৯
লেখিকা: ইভা আক্তার
🍁🍁🍁🍁
বাড়ি ভর্তি তোরজোর চলছে। সবাই নওশিন আপুর বিয়েতে দাদু বাড়ি যাওয়ার জন্য প্যাকিং করছে।পরিকল্পনা অনুযায়ী বড় চাচ্চুর গাড়িতে করে আমরা কাজিনরা মিলে যাবো। আর ছোটো চাচ্চুর গাড়িতে করে যাবে বড়রা। আর বাকি বড়রা যাবে আমাদের গাড়িতে করে। দাদু বাড়ি যাওয়ার পথে যেহেতু আমাদের বাসা সামনে পড়ে তাই সবাই আগে আমাদের বাসায় আসবে তারপর একসাথে রওনা দিবো। ইতিমধ্যে সকলে আমাদের বাসার সামনে এসে পড়েছে। সবাই নিচে চলে গেলেও আমারই নিচে যেতে প্রচুর দেড়ি হয়েছিলো। নিচে নেমে গাড়ির সামনে আসতেই ইফতি ভাই রাগী চেহারা নিয়ে বললো,,
– কই ছিলি এতোক্ষণ। গত এক ঘন্টা ধরে তোর জন্য আমাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে (ডাহা মিথ্যা কথা) আর ঠোঁটে এটা কি দিয়েছিস? দেখে মনে হচ্ছে কোনো রক্ত চোষা ডায়নি যে কিনা কিছুক্ষণ আগেই কারো ঘাড়ে কামড় দিয়ে রক্ত চুষে খেয়েছে (ইফতি ভাই)
ইফতি ভাইয়ার কথায় সবাই উচ্চস্বরে হাসলেও আমার চোখ মুখ দিয়ে ধোয়া বেড়চ্ছিলো ।
– আচ্ছা হয়েছে। এবার সব গাড়িতে উঠে বস। ( ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ার কথায় সকলে গাড়িতে উঠে বসতে লাগলো। বড়দের গাড়ি অনেক আগেই চলে গেছে। নওশিন আপু বসেছে বড়দের সাথে অন্য এক গাড়িতে। সামনের সিটে নাহিল ভাইয়া ড্রাইভ করছে। ইফতি ভাইয়া ড্রাইভ করতে চাইলেও নাহিল ভাইয়ার জোড়াজুড়িতে আর করতে পারে নি। পিছনের সিটের ডান পাশের জানালার দিকে ইলমা বসেছে। ইলমার বাম পাশে বসেছে তানিয়া। আমি গিয়ে তানিয়ার পাশে বসে তানিয়াকে কোলে নিলাম। যখনই দেখলাম ইফতি ভাইয়া আমার পাশে এসে বসার জন্য গাড়িতে উঠতে লাগলো, তখনি আমি তানিয়াকে কোল থেকে নামিয়ে ইলমার পাশে বসিয়ে নিজে গিয়ে ডান দিকে জানালার পাশে বসলাম। আমার এরূপ কাজে ইফতি ভাইয়া হতভম্ব হয়ে গেলো।
-এই ইভা তোর সমস্যা কি হ্যা? তানিয়াকে কোলে নে নাহলে আমার কোলে দে। (ইফতি ভাইয়া)
-ইফতি ভাইয়া সামনের সিটে জায়গা আছে ওখানে গিয়ে বসো। আমি জানালার পাশে একাই বসবো ( আমি)
– আমার ইচ্ছা আমি কোথায় বসবো সেটা তোকে বলে দিতে হবে নাকি? আর তুই বসবি জানালার পাশে? একবার মনে আছে জানালার পাশে বসতে গিয়ে তোর ব্যাগ চুরি হয়ে গিয়েছিল? নাকি ভুলে গেছিস।
ইফতি ভাইয়ার কথায় মেজাজ গরম হয়ে গেলো।
সেই ৩ বছর আগের কাহিনী ইফতি ভাইয়া এখনো কিভবাে মনে রাখলো?
– ইফতি ভাইয়া তানিয়া বলেছে ও কোলে বসবে না৷ তাই ওকে কোল থেকে নামিয়ে সিটে বসালাম। তাছাড়া তানিয়াও তো এখন বড় হয়েছে তাই না তানিয়া? (আমি)
আমার প্রশ্নে তানিয়া বলল উঠলো,
-না! আমি কোলে বসবো। (তানিয়া)
তানিয়ার দিকে রাগী চোখে তাকাতেই ইফতি ভাই বললো,
– আর কোনো মিথ্যা কথা বলা বাকি আছে কি তোর? আর তুই তানিয়ার কথা বলছিস? তোকে যে ক্লাস 5 পর্যন্ত কোলে করে নিয়ে ঘুরেছি সেটা কি ভুলে গেছিস? তাড়াতাড়ি সর নাহলে গাড়ি থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেব। (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ার কথায় কোনো ঠিকঠিকানা নেই। সত্যিই যদি গাড়ি থেকে ধাক্কা মেরে দেয় তাহলে আর আমার নওশিন আপুর বিয়ে খেতে হবে না। তাই আস্তে করে তানিয়াকে কোলে নিয়ে চেপে বসলাম। চেপে বসতেই ইফতি ভাইয়া উঠে আমার পাশে বসলো।
– তানিয়াকে আমার কোলে দে (ইফতি ভাইয়া)
-না থাক ও আমার কোলেই ঠিক আছে (আমি)
-আচ্ছা তাহলে তুই আমার কোলে আয় (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ের কথা শুনে তার দিকে অবাক চোখে তাকাতেই একটা শয়তানি হাসি দিলো।
সকলে হাজার কথা নিয়ে হাসাহাসি করছে আর আড্ডা দিচ্ছে। আর এদিক দিয়ে তাদের কথায় যেনো আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। এক তো এই বাদরগুলোর হো হো করে হাসাহাসি, আরেক তো আমার পাশে বসা রাক্ষস ইফতি ভাই। এই দুই জ্বালায় আমি অতিষ্ট হয়ে যাচ্ছি। চোখে প্রচন্ড ঘুম এসে ভর করেছে। ভয় হচ্ছে ঘুমিয়ে গেলে যদি ইফতি ভাইয়ার কাঁধে মাথা পড়ে যায়, নির্ঘাত তখন আমার মাথা কেটে ফেলবে। সকলের চোখে ঘুম আসতেই তাদের আড্ডা আর হাসাহাসি বন্ধ হয়ে গেলো। চারিদিক নিস্তব্ধ হতেই নিজের ঘুমকে আর বাঁধা দিতে পারলাম না। একসময় ইফতি ভাইয়ার কাঁধে ঢোলে পড়লাম। কিছুক্ষণ ঘুমানোর পর চোখ মেলে দেখি ইফতি ভাইয়ার বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছি। ইফতি ভাইয়া এক হাত মোবাইলের স্কিনে স্ক্রল করছে আর এক হাত দিয়ে আমাকে ধরে আছে।তড়িঘড়ি করে ইফতি ভাইয়ার বুক থেকে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে বসলাম। ঘুমের কারণে সামনের দিকের কিছুই ঠিকঠাক মতো দেখতে পাচ্ছি না। হাত দিয়ে চোখ ভালো করে মুছে সামনে তাকিয়ে দেখলাম নাহিল ভাইয়া গাড়ি চালাচ্ছে। তানিয়া ইলমার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়েছে। আর ইলমা জানালায় মাথা ঠেকিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। হঠাৎ করে ইফতি ভাইয়া আমার মাথাটা ধরে তার বুকে ঠেকালো।
– ঘুমাও। আমি আছি পাশে (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ার এমন কাজে আর তুমি করে কথা বলায় অবাক হলেও ঘুমের কারণে কিছু বলতে পারছিলাম না। ঘুমের কারণে কিছুক্ষণ পর ইফতি ভাইয়ার বুকে এভাবেই থেকে ঘুমিয়ে পড়লাম।ঘুমের ভেতর স্বপ্নে দেখলাম আমি ইফতির ভাইয়ার বুকে সেভাবেই শুয়ে আছি যেভাবে বাস্তবে শুয়ে ছিলাম। ইফতি ভাইয়া পরম যত্নে আমার হিজাবের উপর দিয়ে মাথায় হাত বুলাচ্ছে।
-উঠে গেছো? (ইফতি ভাইয়া)
-হু(আমি)
– মন খারাপ? (ইফতি ভাইয়া)
– লাল লিপস্টিক দিলে কি সত্যি আমাকে ডায়নির মতো লাগে? (আমি)
আমার প্রশ্নে ইফতি ভাইয়া কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,
-মোটেও না। উল্টো তোমার ঠোঁটের ওই গাঢ লাল রঙের লিপস্টিক আমাকে নেশা ধরিয়ে দেয় (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ার কথায় প্রচন্ড লজ্জা পেয়ে গেলাম। কিছু না বলে আবারও ইফতি ভাইয়ার বুকে ঘুমিয়ে গেলাম।
আমি হলাম ঘুমপ্রিয় ব্যক্তি। ঘুমে থাকলে বাইরে কি হয় না হয় তার কোনো খেয়াল আমার থাকে না। কোনটা স্বপ্ন না কোনটা বাস্তব সেটাও জানি না। ঘুম থেকে উঠে আমার সেই একই অবস্তা হলো। ইফতি ভাইয়ার চিৎকার আর চেচামেচির কারণে আমার সুন্দর ঘুমটা হারাম হয়ে গেলো। ভোরের ঠান্ডা বাতাসে কিছুটা শীত লাগছিলো। তবে মানিয়ে নেওয়ার মতো শীত। সূর্যের কিঞ্চিৎ আলোয় চারদিক কিছুটা হলেও আলোকিত হয়েছে।
– এখনো ঘুম ভাঙে নি তোর? সারারাত তুই তো আরামে ঘুমিয়েছিলি। আর আমার অবস্তা দেখ। তোর জন্য একটু শান্তিমতো ঘুমাতেও পারলাম না (ইফতি ভাইয়া)
চোখ মুছতে মুছতে গাড়ির বাইরে তাকিয়ে দেখলাম সামনে ইফতি ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে ৩ টা ব্যাগ নিয়ে।
– কি হয়েছে এতো চেচাচ্ছো কেনো? (আমি)
– ওরে আমার মেডাম সাহেবা। এখন বুঝি আপনাকে কোলে করে বাড়ির ভেতর নিয়ে যেতে হবে? তাড়াতাড়ি উঠ। আর এই ব্যাগগুলো ধর। তোর জন্য এখন পর্যন্ত আমি দাদুভাই আর দাদুমনির সাথে দেখাও করতে পারলাম না। (ইফতি ভাইয়া)
– কে বলেছে তোমাকে আমার জন্য অপেক্ষা করতে? চলে গেলে না কেনো? অদ্ভুত (আমি)
ইফতি ভাইয়া কিছুটা ঝুঁকে আমার কাছে এসে বলল,
– ভয় লাগে। যদি শশুরের মেয়েকে কেউ চুরি করে নিয়ে যায় (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ার কথায় আমার চোখ বেরিয়ে আসার মতো অবস্থা হলো। কিছুক্ষণ পর ইফতি ভাইয়া সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ধমক দিয়ে বললো,,
– বের হ গাড়ি থেকে। তোর জন্য অপেক্ষা করতে আমার বয়েই গেছে।সকাল সকাল ঝগড়া করার মুড নেই নাহলে দেখিয়ে দিতাম বাবা ইফতি আমি কি জিনিস। চুপচাপ গাড়ি থেকে ঢোলতে ঢোলতে নেমে গেলাম। নিজেকে মাতাল মাতাল মনে হচ্ছে কেমন জানি। একটা ব্যাগ হাতে নিয়ে হাটতেই পড়ে যেতে নিলাম তখন সাথে সাথে ইফতি ভাইয়া দৌড়ে এসে আমায় ধরলো। রাগী চোখে ধমক দিয়ে বললো,
– যে মেয়ে একটা সামন্য ব্যাগ সামলাতে পারে না সে কিভবে তার বদমেজাজি জামাইকে সামলাবে কে জানে? দে ব্যাগ দে। আমি চাই না তোর জন্য আমার নতুন ব্যাগ নোংরা হয়ে যাক (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ার প্যাচ গোচের কথা মাথায় না নিয়ে ভাবতে লাগলাম কালকের রাতে দেখা স্বপ্নের কথা। ওইটা স্বপ্ন স্বপ্নই হবে। কখনোই বাস্তব না।ইফতি ভাইয়াকে ভেংচি কেটে বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই দাদুমনি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো,,
-আরে দেখে যাও তোমরা আমাদের নাতনী ইভা দিদিমনি এসেছে (দাদুমনি)
দাদুমনির চিৎকারে বাড়িতে থাকা সবাই আমার দিকে তাকালো। বাড়ি ভর্তি প্রচুর মানুষ। থাকবেই না কেনো? ৪ বছর পর ফের এই বাড়িতে আসা। দাদুভাই এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলতে লাগলো,
– বাহ! আমার দিদিমনি মাশাল্লাহ কত সুন্দর হয়ে গেছে। বলি কি, আমাদের ইভা আর ইলমাকে পাহারা দেবার জন্য যে লোক খুঁজতে হবে (দাদুভাই)
দাদুভাইয়ের কথায় সবাই অট্ট হাসিতে ফেটে গেলো।
– হুম বুঝলাম। আর এদিকে যে তোমাদের বড় নাতিকে দিয়ে তারা এতো খাটালো সেটার কি হবে?
ইফতি ভাইয়ার কথায় সবার দৃষ্টি সামনে গেলো।ইফতি ভাইয়াকে দেখে আমাকে ছেড়ে দাদু আর দাদুমনি তাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো,,
– আরে এটা আমাদের ডাক্তার সাহেব ইফতি? আমাদের হীরের টুকরোকে দিয়ে কে কাজ করিয়েছে শুনি? ( দাদু ভাই)
– কে আবার? তোমাদের নাতনি ইভা। দেখো না নিজে ড্যাং ড্যাং করে চলে এসে আমার হাতে ৩ টা ব্যাগ ধরিয়ে দিলো। (ইফতি ভাইয়া)
কিহ?এতো বড় অপবাদ। এই ছেলে এতো মিথ্যা কিভাবে বলে?
-হাহাহা তো এই ব্যাপার? আচ্ছা ইভাকে পড়ে বকে দিবো আমরা। এখন আয় দাদুভাই ভিতরে আয়। (দাদুভাই)
দাদুভাই আর দাদুমনি ইফতি ভাইয়াকে ভিতরে নিয়ে আসলো। ইফতি ভাইয়ার দিকে রাগী চোখে তাকাতেই একটা চোখ টিপ মেরে দিলো। ইফতি ভাইয়ার কর্মে আমার চোখ কপালে উঠে গেলো। এক এক করে সবার সাথে আমরা কুশল বিনিময় করে নিলাম। নওশিন আপুর বিয়ের জন্য বড় আপুর একমাত্র চাচি আর চাচাতো ভাই এসেছে লন্ডন থেকে। তাদের সাথেও আমরা পরিচয় হয়ে নিলাম। কিন্তু নওশিন আপুর চাচাতো ভাই ইমন একটু গায়ে পড়া স্বভাবের। আসার পর থেকেই কেমন ড্যাবড্যাব করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো। চেনা নেই জানা নেই হুট করেই আমাকে বলেছিলো আমি নাকি দেখতে অপূর্ব।খাতিলতা বজায় রাখতে জোড় পূর্বক একটা মুচকি হাসি দিয়ে রুমে চলে আসলাম। আমি আর ইলমা একসাথে একটা রুমে থাকবো। ইফতি ভাইয়া আর নাহিল ভাইয়া আরেকটা রুমে। রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে দাদুভাইয়ের ডাকে আমি আর ইলমা নিচে গেলাম নাস্তা করতে। দাদুভাইয়ের এই বাড়িটা ২ তলা। দাদুভাইয়ের বড়ই সখের একটা বাড়ি। নিচে গিয়ে দেখলাম সকলে খাবার টেবিলে বসেছে খেতে। ইলমা গিয়ে বসলো তানিয়ার সাথে। আমাদের তানিয়া যেমন চঞ্চল তেমনি দুষ্টু। দাদুবাড়ি আসার পর থেকে কোনো জায়গায় স্থির বসে নেই। খুব কষ্টে ইফতি ভাইয়া আদর করে ডেকে কোলে তুলে নিয়ে এসে পাশে বসিয়েছে। ইফতি ভাইয়া যদি কাউকে সবচেয়ে বেশি আদর এবং ভালোবাসে তাহলে সে হলো তানিয়া। ইফতি ভাইয়ার এক অংশ জুড়ে রয়েছে তানিয়া। খাবার টেবিল লোকজনে পুড়াই ভরপুর। একমাত্র ইফতি ভাইয়া আর ইমন ভাইয়ের পাশের সিটটা খালি ছিলো। ওই রাক্ষস ইফতি ভাইয়ার পাশে কে বসবে? এর থেকে ইমন ভাইয়ের পাশে বসাও ভালো। সিড়ি দিয়ে নিচে নামতেই ইমন ভাই বললো,
– এসো ইভা বসো। (ইমন ভাই)
ইমন ভাইয়ার পাশে বসতে যাওয়ার আগেই ইফতি ভাই গম্ভীর সুরে বললো,
– ইভা এদিকে এসে বস। আসলে ইভা আবার মাছের কাটা বাছতে পারে না। ওকে কাটা বেছে না দিলে কখন জানি দেখা যাবে কাটা গিলে ভ্যা ভ্যা করে কাঁদা শুরু করে দিয়েছে। (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ার কথায় কান গরম হয়ে গেলো। কিভবে এতো বড় মিথ্যা অপবাদ দিলো এই ইফতি ভাইয়া। এমন করে বলছে যেনো তার পাশে বসলে আমায় কাটা বেছে খাইয়ে দিবে ঢং। দাঁত কিড়মিড় করতে করতে ইফতি ভাইয়ার পাশের চেয়ারে গিয়ে বসলাম।
– হ্যা গো কুসুম (আমার দাদুমনির নাম) এই হচ্ছে আমাদের ইফতি। যেমন সে পড়ালেখায় বুদ্ধিমান তেমনি সুদর্শন। লাখে একটা ছেলে আমাদের ইফতি। (দাদুভাই)
– হ্যা তা তো বটেই। আমাদের ইফতি কে দেখেশুনে রাখা লাগবে। মেয়েরা যে চুরি করে নিবে নাহলে (দাদুমনি)
দাদুমনির কথায় সবাই হাসিতে ফেটে পড়লো। বুঝি না ইফতি ভাইয়াকে নিয়ে এতো গুনগান কিসের?যত্তসব। নাহিল ভাইয়ার কোনো হিংসে লাগে না কেনো আল্লাহ জানে। অথচ আমার হিংসে তে গা পুড়ে যাচ্ছে। অনেক ক্ষণ ধরে চেষ্টা করছি মাছের মাথা থেকে কাটা বাছতে। কিন্তু পাড়ছিই না। মাছের এতো অংশ থাকতে মাথাটাই কেনো যে আমায় দিলো ধুর। শেষে না পেরে মাছের মাথাটা প্লেটের এক সাইডে রেখে মাংস দিয়ে খাওয়া শুরু করলাম। ইফতি ভাইয়ার নজরে আসতেই ইফতি ভাইয়া আমার প্লেট থেকে মাছের মাথাটা নিয়ে নিলো। যাক বাবা এটা নিয়ে আর বিরক্ত হওয়া লাগবে না। খাওয়া মনোযোগ দিচ্ছিলাম হঠাৎই ইফতি ভাইয়া মাছের কাটা বেছে আমার প্লেটে দিতে লাগলো। আমি ইফতি ভাইয়ার দিকে তাকাতেই আমার কানের কাছে এসো বললো,
– তোর পাশে বসা লোকের কিন্তু মনের কথা বুঝার মতো শক্তি নেই মাথায় রাখিস । (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়া একের পর এক মাছ বেছে দিতে লাগলো। আমিও খেতে লাগলাম। ইফতি ভাইয়ার মাছ বাছা শেষে আমার প্লেটের আশেপাশে লেগে থাকা মাছের কাটা বেছে নিয়ে ফেলে দিলো।আর এইসব কাহিনীই দেখছিলো মোঃ আমির চৌধুরী অর্থাৎ ইফতিদের দাদু আর কুসুম বেগম অর্থাৎ ইফতিদের দাদুমনি। দুজনেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলেন।
🍁🍁🍁🍁🍁
দুপুরে গোসলের জন্য একে একে সবাই বাথরুমে ঢোকার জন্য দাড়িয়ে ছিলো। ছেলেরা সব পুকুরে নেমে গোসল করছিলো। আর মেয়েদের জন্য বাথরুম ছিলো। সকালের নাস্তা করে রেস্ট নিতে রুমে গিয়েছিলাম। ক্লান্ত শরীর বিছানায় হেলিয়ে দিতেই ঘুমিয়ে গেলাম। একারণেই এখন সবার শেষে গোসলে যেতে হচ্ছে। কিন্তু ভাগ্য আমার এতোই খারাপ যে বাথরুমের ছিটকিনি লাগাতে গিয়ে ছিটকিনিটাই ভেঙে গেলো। ছিটকিনি ভেঙে যেতেই বুক ফেটে কান্না আসছিলো।
-দাদুভাইইইইই। দেখো তোমার ছিটকিনি ভেঙে গেছে (আমি)
আমার চিৎকারে ইলমা, ইফতি ভাইয়া,নাহিল ভাইয়া, নওশিন আপু আর ছোটো চাচ্চু সকলেই বাথরুমের সামনে উপস্থিত হলো।
– এই ইভা কি বললি তুই?বাবার ছিটকিনি ভেঙে গেছে মানে?(ছোটো চাচ্চু)
ছোটো চাচ্চুর কথায় আমি টাষ্কি খেয়ে গেলাম।
– আরে ছোটো চাচ্চু মুখ থেকে বেরিয়ে গেছিলো। আমি বলতে চাইছি বাথরুমের ছিটকিনি ভেঙে গেছে। (আমি)
– ওহ তো তুই সেটা বলবি না। কিভাবে ভেঙেছে? (নাহিল ভাইয়া)
আমি কিছু বলার আগেই ইফতি ভাইয়া বললো,
– আসলে নাহিল জানিস কি? আমাদের ইভা গত ১০ বছর ধরে জিম করে। এজন্য হয়তো বাথরুমের ছিটকিনিটা ধরতেই ভেঙে গেছে তাই না ইভা (ইফতি ভাইয়া)
এই তো শুরু হলো ইফতি ভাইয়ের গা জালানো কথা।
– আচ্ছা ইভা থাক আজ আর তোর গোসল করা লাগবে না। (নওশিন আপু)
– হ্যা তাই বরং কর।তোর গা থেকে তো লাক্স সাবান ব্যবহার না করেই ১০০ টি ফুলের সুগন্ধি আসে তাই গোসল না করলেও সমস্যা নেই। যা যা গিয়ে ঘুমা আরো (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ার কথায় সারা শরীর রাগে রি রি করে উঠলো। এতো গুলো মানুষের সামনে এভাবে একটা মেয়েকে কিভাবে অপমান করতে পারে।
– না আপু। আমি গোসল করবো (আমি)
– কিন্তু দাদুভাই বাথরুমের ছিটকিনি টা তো ভেঙে গেছে। আর এই ভর দুপুরে তো কোনো মেকানিকও পাবো না। (দাদুভাই)
– আচ্ছা থামো তোমরা। ইভা যা বাথরুমের ভেতর ঢুক। আর তোর চুলের কাটাটা দে তো আমায় (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়াকে চুলের লম্বা কাটাটা দিতেই ইফতি ভাইয়া বাথরুমের ভেতর ঢুকে গেট লাগিয়ে দিলো। ইফতি ভাইয়ার কান্ড দেখে আমি চরম অবাক হয়ে গেলাম। শালা বাথরুমে ঢুকবে ঢুক না। আমার কাটাটা নিয়ে কেনো ঢুকলি। কিছুক্ষণ পর ইফতি ভাইয়া বাথরুম থেকে বের হয়ে বললো,
– শোন। আমি ছিটকিনিটা খুলে ফেলেছি। এখন দরজার ছিটকিনির বদলে তুই এই কাটাটা ঢুকাবি। আর সমস্যা হলে বলবি আমি বাইরেই দাঁড়িয়ে আছি বুঝেছিস? দাদুভাই তোমরা যাও। আমি এখানেই দাঁড়িয়ে আছি (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ার কথা শুনে ভেতরে ভেতরে নিজেকে একশো একটা গালি দিলাম। ইসস এতোক্ষণ ধরে আমার জন্যই তো কত কিছু করলো। আর আমিই কিনা এতো গালি দিলাম। এসব ভাবতে ভাবতেই বাথরুমের ভেতরে ঢুকে ইফতি ভাইয়া যেভাবে বললো সেভাবে কাজ করলাম। গোসল শেষে বাইরে আসতেই দেখলাম ইফতি ভাইয়া বাথরুমের দরজার সামনে পেছনে ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে। দরজার খোলার আওয়াজে পেছনে তাকাতেই আমাকে বললো,
– শেষ গোসল? (ইফতি ভাইয়া)
-হু। তুমি খেতে যাও নি?বাথরুমের দরজা তো ঠিকমতোই আটকিয়েছি (আমি)
– হাদারাম। ছিটকিনি আটকিয়েছিস। কিন্তু ছিটকিনির জায়গায় যে ফুটো রয়েছে সেটা কি দেখেছিস? (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ার কথায় যেনো আমি আকাশ থেকে পড়লাম। পেছনে তাকিয়ে দেখলাম সত্যিই ছিটকিনিটা ভাঙার ফলে ওই সাইডের একটা ফুটো রয়ে গেছে।আমি ইফতি ভাইয়ার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকালাম। ইফতি ভাইয়া একটা মুচকি হাসি দিতেই আমি দৌড়ে রুমে চলে গেলাম। হায় আল্লাহ আমার সাথেই কেনো এমনটা হলো। জীবনে কল্পনাও করি নি এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। আর ইফতি ভাইয়াও বা এমন কিভাবে হতে পারলো। এখন আমি ইফতি ভাইয়াকে কিভাবে মুখ দেখাবো। আচ্ছা! আমি আবার ইফতি ভাইয়াকে ভুল বুঝলাম না তো। আমার জানামতে তো ও এমন না। কিছুতেই মাথা থেকে এসব বের করতে পারলাম না। দুপুরে দাদুমনি আমাকে খাবার টেবিলে ডাকতে এসেছিলো। কিন্তু আমি মানা করলাম। বাহানা দিলাম শরীরটা খারাপ লাগছে খাওয়ার মুড নেই। কিম্তু আসল কাহিনি ছিলো টেবিলে খেতে বসলে ইফতি ভাইয়াও সেখানে থাকবে। আর আমি চাই না আজকের ঘটনার পর ইফতি ভাইয়ার আর মুখোমুখি হতে। আমার শরীর খারাপের কথা শুনে অনেকেই আমাকে দেখতে আসলো যে জ্বর হলে নাকি আবার। কিন্তু জ্বর দেখতে না পেয়ে রুমের মধ্যেই খাবার দিয়ে গেলো। ইফতি ভাইয়া বাদে সকলেই রুমে এসে আমায় দেখে গিয়েছিলো।
🍁🍁🍁🍁
রাতের বেলাও রুমেই খাবার দিয়ে গিয়েছিল বড় কাকি। সাথে অনেক প্রশ্নও করেছিলো কিছু হয়েছে নাকি বা কেউ কিছু বলেছে নাকি। কিন্তু বড় কাকিকে কিছু বললাম না। রাতে আমি, ইলমা আর তানিয়া একসাথে ঘুমাতে এসেছি। তানিয়ার সাথে রাতে কোথাও থাকলেই ও আমার সাথে ঘুমাতো। তাই আজকেও ঘুমিয়েছে। সকলে ক্লান্ত ছিল বলে ১০ টার মধ্যেই খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু দুপুরে ঘুমানোর কারণে আমার চোখে এখন বিন্দু মাত্র পরিমাণে ঘুম নেই। এদিক ওদিক পাশ ফিরেও যখন ঘুম আসলো না তখন খাট থেকে উঠে নেমে গেলাম। ইলমা আর তানিয়া তো মরার মতো ঘুমিয়ে আছে। মনে মনে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ছাদের দিকে হাঁটা ধরলাম। ছাদের ভিতরে যেতেই টের পেলাম আগে থেকেই কেউ একজন ছাদে দাঁড়িয়ে আছে। কারো গুনগুন গানের আওয়াজ পেতেই আমার বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠলো। প্রেত-আত্মা নাকি? ভয় পেলেও কৌতুহল বশত দেখতে গেলাম কে আছে ছাদে। একটু ভেতরে যেতেই দেখলাম ইফতি ভাইয়া রেলিংএর সামনে দাঁড়িয়ে গান গাইছে। ইফতি ভাইয়াকে দেখে সস্তির নিশ্বাস ফেললাম। কিন্তু দুপুরের কথা মনে হতেই লজ্জায় চলে যেতে লাগলাম তখনই পেছন থেকে ইফতি ভাইয়া ডাক দিলো,,
– দাঁড়া ইভা (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ার ডাকে আমার বুক কেঁপে উঠলো। না দাঁড়িয়ে যদি চলে যাই তাহলে ছাদ থেকে ফেলে দিবে। আর যদি দাঁড়াই তাহলে লজ্জায় পড়তে হবে। কি যে করি আল্লাহ পথ দেখাও।
– এদিকে আয় ইভা (ইফতি ভাইয়া)
সব লজ্জাকে ধামাচাপা দিয়ে ইফতি ভাইয়ার কাছে মাথা নিচু করে গেলাম।
– আজকে ডাইনিং টেবিলে খেতে আসলি না কেনো? রুমে একা একা কেনো খেয়েছিস? (ইফতি ভাইয়া)
এই রে ইফতি ভাইয়ার কথায় এখন কি জবাব দেই? এমন ঢং করছে যেনো কিছুই জানে না। যত্তসব।
– আসলে ইফতি ভাই শরীরটা একটু খারাপ লাগছিলো তাই রুমে বসেই খেয়েছিলাম (আমি)
ইফতি ভাইয়া আমার দিকে কিছুক্ষণ চুপ করে তাকিয়ে রইলো। আর আমি সেই আগের মতোই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম। কিছুক্ষণ পর ইফতি ভাই গিয়ে আবারো রেলিংয়ে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে গেলো।
– এদিকে আয় (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ার ডাকে তার সামনে গেলাম।
– আমাকে তুই এতো অবিশ্বাস কেনো করিস বল তো? এই চিনলি আমায়? তোর কি মনে হয় আমি সত্যিই এমন ছেলে? (ইফতি ভাইয়া)
শান্তশিষ্ট ভাবে কথাগুলো ইফতি ভাই বললো। আমি ইফতি ভাইয়ের কথা বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করলাম,,
– মানে? কিসের কথা বলছো?(আমি)
– আমাকে কি অবুঝ ভাবিস? আমি জানি যে তুই কেনো লজ্জা পেয়েছিস। তুই ভেবেছিস যে আমি হয়তো দরজার ছিটকিনির ফাঁক দিয়ে সব দেখেছি। এতোটাই নির্লজ্জ আর খারাপ মানুষ ভাবিস আমায়? (ইফতি ভাইয়া)
কথাগুলো ইফতি ভাইয়া বলছিলো আকাশের দিকে তাকিয়ে। ইফতি ভাইয়ার কথায় তার দিকে মাথা উঁচু করে এক নজরে তাকিয়ে রইলাম। সত্যিই কিভাবে ইফতি ভাইয়াকে এমনটা ভাবতে পারলাম? কিভাবে?এই চিনলাম আমি তাকে? যে কিনা আজ পর্যন্ত কোনো মেয়েদেরকে অসম্মান করে না, মেয়েদের দিকে তাকায়ও না, তাকে নিয়ে এসব কিভাবে ভাবলাম? নিজেকে এতোটা নিচ আর অপরাধী আগে কখনো লাগে নি। আমি ইফতি ভাইয়ার দিকে ছলছল নয়নে তাকিয়ে আছি। ইফতি ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে এসে তার দুই হাত দিয়ে আমার মুখ আগলে ধরে বললো,
– আমি এমন কোনো কাজই করি নি ইভা। বিশ্বাস করতে পারিস (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়ার এমন অসহায় চোখ দেখে নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না। হু হু করে কেঁদে উঠলাম। আজ পর্যন্ত কখনো ইফতি ভাইয়ার সামনে নিজেকে দূর্বল প্রমাণ করি নি আর কাদিঁও নি। কিন্তু আজ আর নিজের চোখকে বাঁধা দিতে পারলাম না। আমার অবাধ্য চোখ থেকে অশ্রু ঝড়তে লাগলো।ইফতি ভাইয়া পরম যত্নে আমার চোখের পানি মুছে দিলো।
– কাঁদিস না প্লিজ।তোর জায়গায় অন্য মেয়ে থাকলেও ভুল বুঝতো সেটা আমিও জানি। আমি জানি মেয়েদের কাছে সবচেয়ে দামি জিনিস হলো তার সত্যিত্ব। সত্যিত্ব জিনিসটা হারিয়ে গেলে তো মেয়েরা একেবারেই নিঃস্ব। আর আমি একজন ছেলে হয়ে কিভাবে তোর সত্যিত্ব নিয়ে মজা করবো বল?
– আমাকে ক্ষমা করে দিও ইফতি ভাইয়া। আমি নিজেকে অনেক বুঝিয়েছি যে ইফতি ভাইয়া এমন ছেলে না। সে কখনোই এমন করতে পারে না। কিন্তু নিজের সন্দেহটা দূর করতে পারি নি। আমি আজ অনেক অনুতপ্ত (আমি)
ইফতি ভাইয়া আমার চোখ থেকে পড়া অশ্রুগুলে আবারও মুছে দিতে দিতে বললো,
– হয়েছে। এখন কান্না থামা । কান্না থামা বলছি (ইফতি ভাই)
ইফতি ভাইয়ার কথায় আমার কান্না থেমে গেলো।
-আমার উপর কি এখনো রাগ করে আছো? প্লিজ মাফ করে দেও আমায়(আমি)
-উহু। না আর রাগ করে নেই। কখনো ছিলামও না। তোমার উপর রাগ করে থাকলে আমার বুকের ভেতরটা যে ছটফট করতে শুরু করে ইভা। তাহলে কিভাবে এই আমিই তোমার উপর রাগ করে থাকতে পারি? (ইফতি ভাই)
আমি অবাক হয়ে ইফতি ভাইয়ার দিকে চেয়ে রয়েছি আর ভাইয়াও আমার দিকে এক পলকে চেয়ে রয়েছে। কিছুক্ষণ পর ইতস্ততবোধ হতেই আমার মুখমন্ডল থেকে ইফতি ভাইয়ের হাত সরিয়ে দিয়ে বললাম,,
-আচ্ছা ইফতি ভাইয়া আমি এখন যাই অনেক রাত হয়ে গেছে (আমি)
কথাটা বলেই হাঁটা শুরু করলাম। ছাদ থেকে বের হতে যাবো এমন সময় ইফতি ভাই গান ধরলো,,,
“তুমি আকাশের বুকে,
বিশালতার উপমা।
তুমি আমার চোখেতে,
সরলতার প্রতিমা। ”
পিছনে ঘুরে ইফতি ভাইয়ার দিকে তাকাতেই তার চোখে দেখতে পেলাম একরাশ মুগ্ধতা। আমার দিকে এক নজরে তাকিয়ে হঠাৎ করেই আমাকে তার মুচকি হাসি উপহার দিলো যেটা আমাকে শুভ রাত্রি জানাচ্ছিল।
চলবে,,,,,,,,,💖
[আজ ২ দিন পর #কাজললতা গল্পের ৯ পর্ব আপলোড দিয়েছি। তার জন্য অনেক অনেক দুঃখিত। পড়ালেখার চাপের জন্য নিয়মিত পর্ব আপলোড দিতে পারছি না। আমি চেষ্টা করবো যেনো নিয়মিত গল্পের প্রতিটা পর্ব আপলোড দিতে পারি ]