তুমি_ছুঁয়ে_দিলে_এ_মন পর্ব ১০ #জান্নাতুল_মাওয়া_লিজা

0
64

#তুমি_ছুঁয়ে_দিলে_এ_মন

পর্ব ১০

#জান্নাতুল_মাওয়া_লিজা

শহরের কোলাহল থেকে একটু দূরেই বয়ে গেছে ছোটো এক নদী। নাম পূরবী। এখানে ত্রিশা আসেনি কোনোদিন। ত্রিনা প্রায়ই রবির সাথে এই নদীর তীরে ডেইটে আসে। নদীর উত্তর দিকে কিছু রেস্টুরেস্ট আছে, যেখান থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য খুব ভালো পরিলক্ষিত হয়। সেই সুযোগে রেস্টুরেন্ট ব্যবিসায়ীরা খুব ভালো একটা ব্যবসা করে নেয়। রেস্টুরেন্টগুলোতে প্রেমিক প্রেমিকা একান্তভাবে বসে গল্প করার জন্য কেবিন বানিয়ে নেয়। রবি আর ত্রিনা কখনো ওসব রেস্টুরেন্টে বসে আবার কখনো নদীর বালুর উপরই পত্রিকা বিছিয়ে বসে থাকে। খোলামেলা, বৃক্ষরাজী ও নদীর স্রোতের কারনে এদিকটার তাপমাত্রাও সহনীয় ও অত্যানুকূল। নদীর দক্ষিন দিকের এক কিলোমিটার পর্যন্ত কোনো জনবসতি নেই৷ বিস্তির্ণ চর জুড়ে জন্মেছে শুধু সাদা কাশফুল। তার মাঝে মাঝে সারি সারি গাছ। এখানকার বেলে মাটিতে জন্মা জারুল ফুলের বাহার যেমন অন্তর প্রনোদিত করে তেমনি কাঁচা পাকা টক কুল একাই জন্মে, একাই ঝরে পড়ছে। দূর দূরান্তের বসতিতে বাস করা শিশুরা আর কয়টা খায়? সব অনুর্বর বালু মৃত্তিকা খেয়ে উর্বর হওয়ার চেষ্ঠা করে মাত্র। এমনি এক কুল বৃক্ষের নিচে এসে ত্রিশা বসে আছে একা। ঘড়িতে সময় পাঁচটা পাঁচ। মনে সামান্য সংকোচ। আহনাফ ওকে নদীর তীরের কুল গাছের নিচে অপেক্ষা করতে বলেছে ঠিক পাঁচটায়। তবে এখনো সে আসেনি। নদী তীরে এই একটাই বড় কুল গাছ, এটার বিস্তৃত শিকড়ে আসন গেড়ে বসাও যায়। বাকি সব মাঝারি থেকে ছোটো। ওদের গোড়ালির শিকড় এতটা পোক্ত নয়।
ত্রিশার কলেজের ক্লাশ শেষ হয়েছিলো চারটায় আর বান্ধবীদের সাথে কিছুক্ষণ কথাবার্তা আর এসাইনমেন্টের বিষয়ে প্ল্যানিং করে এখানে হেঁটে আসতে গিয়ে সে বেশ ঘেমে গিয়েছে। মাথার স্কার্ফটা খুলে চুলগুলো ছেড়ে দিলো সে। নদীস্রোতে সৃষ্টি হওয়া বাতাসের ঝাপটায় ওর লম্বা কোঁকড়ানো চুলগুলো উড়তে লাগলো।

সময় গড়াচ্ছে।
ত্রিশা বসে বসে দাঁত দিয়ে হাতের নখ কাটতে লাগলো। অপেক্ষা! আর ভাবতে লাগলো, এই গোটা জেলা শহরের সবচেয়ে ভালো শিক্ষকের কাছে আমি পড়তে যাচ্ছি। যার কাছে এক ঘন্টার জন্য পাঁচ, দশ, পনেরো বা বিশ হাজারেও পড়াতে রাজী অনেকে। কিন্তু সে কাউকেই পড়ায় না, না ব্যাচে আর না সিঙ্গেলে। সে এরকমই একজন, যাকে দেখলে নবী ইউনুসের মতো কলেজের মেয়েদেরও আঙ্গুল কেটে যাবে, সে কিনা আমাকে পড়াতে চাচ্ছে। ত্রিশা ভেতরে ভেতরে ভীষণই উত্তেজনা অনুভব করলো। আর শোকর গোজার করলো উপরালার নিকটে। মানুষ হাজার চেয়েও যা পায় না, সে তা না চাইতেই পেয়ে গিয়েছে। এই স্যারের কাছে পড়লে এ প্লাস নিশ্চিত। তার স্বপ্ন বুয়েটে পড়ার, যেজন্য ম্যাথে অনেক ভালো একটা দক্ষতা থাকা জরুরি। মনে মনে এতদিন অনেক দোয়া করেছে, যেনো কোনো একটা ব্যবস্থা তিনি করে দেন, যাতে সে ম্যাথে ভালো দখল আনতে পারে।

আর তার মা ও এক বাক্যে রাজী হয়ে গেলো। তার কারন কনকচাপা জহিরকে এই বলেছে যে, ” ত্রিশা ঐ আমেরিকান ছেলেকে বিয়ের জন্য রাজী হয়েছে” একথা শুনে জহির যার পর নাই খুশি হয়েছে। কারন ঐ জায়গায় বিয়ে হলে তার একটা বিজনেস ডিলও কনফার্ম। ছেলের বাবা এদেশ হতে নিটওয়ার প্রোডাক্ট ওদেশে ইমপোর্ট করে। আর এর সবচেয়ে বড় প্রোডাকশন ও ডিলার হলো জহির শেখ। তাই এ বিয়ে শুধু দুটো ছেলে মেয়ের মধ্যে বিয়ে নয় বরং মিলিয়ন ডলারের কারবারি বাট্টা। আর ত্রিশা এ বিয়েতে রাজী হয়েছে শুনে জহির খুশিতে প্রাইভেট এর বিষয়ে হ্যাঁ করে দিয়েছে। শুধু প্রাইভেট নয়, ত্রিশা আর কি পড়তে চায়, সেটাও পড়তে দিবে। প্রয়োজনে আইএলটিএস এর কোচিং ও করাবে! যদিও কনকচাপা নিজেই জানে তার মনের মধ্যে ত্রিশাকে নিয়ে কি পরিকল্পনা! আর কেনোই সে ত্রিশা না মত দেওয়া স্বত্তেও এরুপ বলে দিয়েছে।

ওদিকে ত্রিশা এসব ভাবতে ভাবতেই আহনাফ চলে এলো। কলেজের ক্লাশের সময় পরিহিত ফর্মাল সাদা শার্টের পরিবর্তে একটা ধূসর রংয়ের কটন টি-শার্ট ও ট্রাউজার পড়ে এসেছে। ত্রিশার পড়নে সেই সাদা নীল কলেজ ড্রেসই।

কাছে আসতেই আহনাফের সেই পারফিউমের গন্ধটা আবার নাকে এলো। ঝকঝকে দিনের আলোয় ত্রিশা এই প্রথম এত ভালোভাবে লক্ষ্য করলো। স্যারের মতো হ্যান্ডসাম যুবক অত্র এলাকায় আর দ্বীতিয়টি নেই! এ জন্যই মেয়েরা তার জন্য এত দিওয়ানা। ত্রিশা বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।

আহনাফ একটু ধমকের সুরেই বললো,

” তুমি এখানে? আর আমি খুঁজে খুঁজে অস্থির!

ত্রিশা ঢোক গিলে বললো,
” স্যার, আপনি আমাকে এখানে বসতে বলেননি?”

আহনাফ বললো,

” কেনো তুমি এদিকে আসোনি জীবনে? ঐ যে বড় বটগাছটা দেখা যাচ্ছে না? ঐটার নামই কুল গাছ। কুল মানে ঠান্ডা। ঐ গাছের নিচটা এসির মতো ঠান্ডা বলে ঐটার নাম কুল গাছ। ”

ত্রিশা হাসবে নাকি কাঁদবে দ্বীধায় পড়ে গেলো। বটগাছের নাম হয় কুলগাছ! হায় রে! আর সে কিনা বসেছে কুলবড়ই গাছের নিচে!

ত্রিশা আর আহনাফ হেঁটে গিয়ে সেই কথিত কুল গাছ তথা বটগাছের নিচে বসলো। দুজন পাশাপাশি, মাঝখানে সামান্য দূরত্ব ব্যবধান।

গাছের নিচটা গোল করে বাঁধাই করা। আহনাফ বলতে লাগলো,

” ভ্যাপসা গুরমেও ঠান্ডা না এখানে? ”

ত্রিশা মাথা নাড়লো।

” এইজন্যই এই গাছের নাম কুলগাছ, আর আমি এখানে আধঘন্টা ধরে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি,

বড় একটা শ্বাস নিয়ে আহনাফ বললো,

” তো, তোমার ঐ বিউটি পার্লার বহনকারী বান্ধবীসকল কই? ”

ত্রিশার বান্ধবীদের বিউটি পার্লার বহনকারী বলায় ত্রিশার খুব হাসি পেলো। স্যার কেনো বলেছে সেটাও ও বুঝতে পেরেছে। কারন এমন কোনো দিন নাই যে ওরা সাজগোজ ছাড়া কলেজে আসে!

ত্রিশা হাসি চাপিয়ে বললো,

” স্যার ওরা আফসার স্যারের কাছে ম্যাথ পড়তে গেছে। আর তারপর তপন স্যারের কাছে ফিজিক্স আর প্রবির স্যারের কাছে কেমিস্ট্রি পড়ে”

“আর তুমি?”

ত্রিশা মন ভার করে বললো,

” আমি কোনো প্রাইভেট পড়ি না স্যার”

” এস এস সি র রেজাল্ট কি তোমার?

” এ প্লাস স্যার, গোল্ডেন”

” তখনো কি প্রাইভেট পড়োনি?

” না স্যার”

” এত কথায় কথায় স্যার স্যার করবে না প্লিজ”

” তো কি বলবো? ”

” স্যার ছাড়াই কথা বলবে”

” আচ্ছা স্যার”

” আবার?”

” নো স্যার”

” এগেইন? ”

আহনাফ হেসে দিলো, সাথে ত্রিশাও।

” চলো ম্যাথ করি, না চলো আজ শুধু গল্প করি”

” গ..গ..গল্প? কি গল্প? আমি গল্প পারি না”

” তোমাকে বলতে হবে না, আমি বলছি, তুমি শুধু প্রশ্নের উত্তর দিও। ”

ত্রিশা ভয়ে ভয়ে বললো,

” আচ্ছা”

আহনাফ হাতে একটা কলম নাড়তে নাড়তে বলা শুরু করলো।
” এত ভয় পাচ্ছো কেনো? প্রেম টেম করো? ”

ত্রিশা ঢোক গিলে বললো,

” প..প্ প্রেম? না স্যার!”

” ভয় পাচ্ছো কেনো? প্রেম না করা কোনো ভয়ের বিষয় নয়, বরং গর্বের বিষয়, এখন তো প্রায় সবাই প্রেম করে, তাই জিজ্ঞেস করলাম, তোমাকে বিব্রত করে থাকলে দু:খিত! আচ্ছা, তোমার বাবা মা পরিবার সম্পর্কে বলো”

” আমার বাবা নেই স্যার, আমার বয়স যখন পাঁচ তখন বাবা মা’রা যায়”
ত্রিশার চোখ ছলছল করে উঠলো।

” আ’ম স্যরি ত্রিশা, তো জহির সাহেব?”

” উনি আমার সৎ বাবা, মা আবার বিয়ে করেন…”

” থাক! আমি বুঝতে পেরেছি, অনেক সময় সত্য গুলো বেশ তেতো হয়, সুখ-দু:খ মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ, তবে আমার মতে যে জীবনে স্ট্রাগল নেই, সে জীবন কোনো জীবন ই নয়, সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মার চেয়ে সোনার চামচ অর্জন করে নেওয়া বেশি সম্মানের”

ত্রিশা এসব শুনে পালটা জিজ্ঞেস করলো,
” আপনার সম্পর্কে শুনি?”

আহনাফ বলা শুরু করলো,

” আমার বাবা মা দুজনেই টিচার। আমি দুই গর্বিত শিক্ষকের সন্তান। ছোটো একটা বোন আছে সংসারে, এইতো! আর আমি ঢাবিতে পড়েছিলাম, জানো নিশ্চয়! ওখানে ফার্স্ট সেমিস্টারে আমি হলের গনরুমে থাকতাম, হলে রাজনীতি দেখলাম, শিখলাম, তারপর নিজের মতো করে একটা দল শুরু করলাম, রাজনৈতিক দল! মার খেলাম কয়েকবার, জেলেও থেকেছি একবার তিন রাত। পড়াশোনা গোল্লায় গেলো, মা অনেক কান্নাকাটি করে আমাকে বুঝালো, উপর মহল থেকেও চাপ এলো, আমি যেনো রাজনীতি ছেড়ে দেই, তারপর ছেড়ে দিলাম, বিসিএস ক্যাডার হলাম, আর এখন তোমাদের টিচার বনে গেছি, এই হলো আমার জীবন ইতিহাসের সারাংশ, তোমারট সারাদিন কিভাবে কাটে শুনি?”

ত্রিশা বলা শুরু করলো,

” কি বলবো স্যার, আমার জীবন আপনার মতো এত ঘটনাবহুল না, এই তো সকালে উঠি, পড়তে বসি, খেয়ে দেয়ে কলেজে আসি, ক্লাশ করি, তারপর আবার বাসায় গিয়ে পড়তে বসি রাত হয়, ঘুমিয়ে পড়ি আবার সকাল হয়, এভাবেই চলতে থাকে”

” তার মানে তোমার জীবনের কোনো চ্যালেঞ্জ নেই, গোল নেই, ডেসটিনি নেই, ড্রিম নেই? ”

” আছে স্যার, আমার খুব ইচ্ছা আমি বুয়েটে পড়বো, একজন ইঞ্জিনিয়ার হবো”

“বেশ! অনেক বড় ড্রিম তোমার, জীবন যে পরিস্থিতিতেই থাকুক না কেনো, তুমি হাল ছেড়ো না, জানো? আমার ছোটো থেকেই ড্রিম ছিলো আমি একজন বড় রাজনীতিবিদ হবো। কিন্তু কি থেকে কি হলো? হয়ে গেলাম টিচার! ”

বলেই হো হো করে হেসে দিলো আহনাফ।

” তোমাকে দেখে মনে হয়, তুমি মানুষটা অনেষ্ট, তবে নিজের ড্রিমের প্রতি অনেষ্ট থেকো, হারিয়ে যেও না, ড্রিম থেকে সরে এসো না, তোমাকে দেখে আমার মনে হয়েছিলো, তোমাকে আমি সহজেই অপারেট করতে পারবো, তোমার মধ্যে আমি পসেবিলিটি দেখেছি, পটেনশিয়াল দেখেছি, তাই স্ব-ইচ্ছায় তোমাকে পড়াতে চেয়েছি”

ত্রিশা হাসিমুখে বললো,

” আচ্ছা স্যার, আমি আপনাকে আশাহত করবো না।”

” শোনো ত্রিশা, নিজের গোলে যথাযথ ভাবে পৌঁছাতে হলে পূর্ব পরিকল্পনা থাকাটা বহু জরুরী, চলো আমরা আজ বসে বসে আগামী এক মাসের একটা রুটিন করে ফেলি”

ত্রিশা উত্তর দিলো,
” আচ্ছা স্যার”

দুজনে তাদের রুটিন করতে লেগে গেলো।

যাওয়ার সময় আহনাফ ত্রিশাকে বললো,

” আচ্ছা, ত্রিশা তুমি জানো, তোমার কোঁকড়া চুলগুলো ভীষণ সুন্দর!”

এভাবে স্যারের মুখে নিজের প্রশংসা শুনবে তা ত্রিশা ভাবতেও পারেনি।

লজ্জায় লাল হয়ে গেলো সে!

.
.
আহনাফের সাথে পাঠ পরিকল্পনা করে বাসায় ফিরতেই মাগরিবের আযান দিয়ে দিলো।
যে ত্রিশা দুইদিন আগেও বাসার সবার দ্বারাই অপমানিত হতো এখন ত্রিশা বাসায় আসতেই সবাই ওর তোয়াজ করা শুরু করে।

বিশেষ করে ববিতা। ত্রিশা বুঝতে পারলো না যে, ব্যাপারটা কি? কনকচাপার সাথেও ত্রিশা তেমন কথাবার্তা বলে না সচরাচর। তবে আজ বাড়ি ফিরতেই ত্রিশাকে তলব করলো,

” ত্রিশা আসছো তাইলে বাসায়? তোমার পান্না আন্টির পার্লারে যাও তো তোমার ইন্দু ফুপির সাথে, জলদি রেডি হয়ে আসো তো দাদু”

” আমি পার্লারে কি করবো? ”

” তুমি পার্লারে গিয়ে যা খুশি করে আসো, যা তোমার মন চায়”

ববিতা এত নরম স্বরে কথা বলছে দেখে ত্রিশা অবাক হলো। ত্রিশা কাপড় চেইঞ্জ করে আসতেই দেখে ইন্দুও রেডি হয়ে এসে গেছে। তারপর দুজনে মিলেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো পার্লারে। পান্না ইন্দুকে আর ত্রিশাকে দেখেই মুখ কেলিয়ে হাসতে হাসতে ওদের সামনে এলো।

” ত্রিশামনি, তোমার চুলগুলো তো কার্লি, স্ট্রেইট করে, ভালো একটা কাট দিয়ে দিই সোনা?”

ত্রিশা সরাসরি মানা করে দিলো।

পান্না মুখটা একটু মলিন করে আবার হাসি টেনে এনে বললো,

” আচ্ছা, না করো স্ট্রেইট, যা করতে মন চায় তাই ই করো, ফেসিয়াল, পেডিকিউর মেনিকিউর, স্পা, জানো ত্রিশা, আমি ভাবতেও পারিনি যে, তোমাকে আমার বোনের আর দুলাভাইয়ের এত পছন্দ হবে,

ত্রিশা হেসে বললো, ” আচ্ছা পেডিকিউর, মেনিকিউর করেন”

ত্রিশাকে পেডিকিউর, মেনিকিউরে বসিয়ে দিয়ে ইন্দু আর পান্না বসেছে গল্প করতে।

ইন্দু বলতে লাগলো,

” আমাদের ত্রিশার ভাগ্যটা কতো ভালো নারে! মিলিওনিয়ার ছেলে ওরে পছন্দ করে নিয়েছে? ”

পান্না বরাবরের মতোই দাঁতগুলো কেলিয়ে বললো,

” হ্যাঁ রে! ওদের ফ্যামিলি এতটাই আধুনিক যে, দিনে দশবার ওরা পার্টিই করে, খুবই আমোদপ্রিয় রে! আর ওরা খুবই ফ্রি মাইন্ডের রে! ”

ত্রিশা সাহস করে বলে ফেললো,

” কিন্তু পান্না আন্টি আমি আপনার বোনের ছেলেকে বিয়ে করবো না”

ইন্দু ভাবলো ত্রিশা হয়তোবা এমনিতেই এসব বলছে।

তাই ত্রিশাকে থামিয়ে এক নাগাড়ে বলতে লাগলো,

” ওরা এমনই ফ্যামিলি রে ত্রিশা, তুই ইচ্ছে করলে সপ্তাহে দুইদিন অন্য কারো সাথেও রাত কাটাতে পারবি, আর ইচ্ছে করলে বয়ফ্রেন্ডও রাখতে পারবি, ওদের কাছে বিয়েটা যাস্ট একটা ফর্মালিটি, এটাতে কোনোও ধরাবাঁধা নেই, ইশ! আমি কেনো যে তোর মতো সুন্দরী হলাম না, তাহলে এরকম এমেরিকান ফ্রি মিক্সিং একটা ফ্যামিলিতে আমিও স্যাটেল হতে পারতাম!”

ত্রিশা বুঝতে পারলো, এর মতো অসভ্যকে আর কিছু বলে লাভ নেই, যা বলার মা’কে বলতে হবে।

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here