প্রেমসুধা #সাইয়্যারা_খান #পর্বঃ১৭

0
65

#প্রেমসুধা
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ১৭

পৌষ’র দাঁত বের করা হাসি চক্ষুগোচর হলো তৌসিফের। ওর দেহ মন চিৎকার করে বলছে, “পাপ করেছিস তৌসিফ, নিজের পায়ে কুড়াল মেরেছিস তুই”।
কাজটা অবশ্য তা ই হলো। পৌষ’র এরেগেরে হেলেদুলে চলন ই বুঝ দিচ্ছে সে তৌসিফের খুব গভীর তথ্য বের করতে সক্ষম হয়েছে। তৌসিফ বিছানা ছেড়ে উঠতে উঠতে বললো,

— এসব বলে না হানি। পাপ লেগে যাবে।

— লাগুক।

তৌসিফ বিছানা ছেড়ে উঠতে উঠতে বললো,

— তোমাকে পাপ তো দূর একটা ফুলের পাপড়ির ছোঁয়া ও লাগতে দিব না আমি।

— এবার কথা শুনুন আমার।

তৌসিফ দাঁড়ালো আয়নার সামনে। সামনে সাজিয়ে রাখা এক গুচ্ছ জিনিস পত্র। তৌসিফ ওর রেগুলার মসচুরাইজারটা মুখে লাগাতে নিলেই পৌষ দুই লাফে ওর সামনে দাঁড়িয়ে হেয়ালি গলায় বললো,

— আপনি জানেন আমি যে সাবান দিয়ে মুখ ধুঁই এতেই বহু কষ্ট হয় আমার। আর আপনি ব্যাটা মানুষ এত কি ভংচং লাগাতে হয় মুখে?

তৌসিফ হাতে হ্যান্ড ক্রিম লাগাতে লাগাতে বললো,

— এই যে এত সুন্দর দেখো আমাকে তার গোপন রহস্য হলো রেগুলার জিম আর নিজের যত্ন করা৷ নাহলে আমার বয়সী মানুষদের দেখেই তুমি দৌড়ে পালাতে।

পৌষ পায়ের আঙুলে ভর দিয়ে নিজেকে উঁচু করে তুললো যথেষ্ট খাটো কি না তৌসিফ থেকে। তৌসিফের নাক বরাবর আঙুল তুলে শাসিয়ে বলতে লাগলো,

— আমাকে কি ভেবেছেন আপনি? আপনার রুপ জৌলুশ দেখে এখানে থাকি আমি। বুইড়া দামড়া একটা। ধাঁচ দেখে মনে হয় কঁচি খোকা। তলে তলে যে টেম্পু চালান তা জানা আছে আমার।

তৌসিফ ওর আঙুলটাকে নিজের আঙুল দিয়ে পেঁচিয়ে নিলো। পৌষ’র মুখের সামনে নিজের মুখ এনে ফিসফিস করে বললো,

— আমার জন্য এখনো ভাইদের কাছে বিয়ের প্রস্তাব আসে।

ঝটাক করে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো পৌষ। ঠ্যাসকা মে-রে বললো,

— করুন না বিয়ে। দুটো তো করেছেন ই আর দুটো করে ফেলুন। চার রীতি পূরণ হোক। আমার বহু দিনের সখ সতীনের সংসার করব। তাদের আন্ডা বাচ্চা পালব।

তৌসিফ বেয়াক্কেল বনে গেলো। এই মেয়ে কথা মাটিতে পড়তে তো দিবেই না উল্টো মাটি সহ তৌসিফের মুখে ছুঁড়ে মা’রে। তৌসিফ একটু মিনমিন করেই বললো,

— সত্যি তুমি এমন ভাবো?

— ওমা! বলে কি ব্যাটা? চুলাচুলি, লাত্থি, উস্টা এসব আমার বহু পুরাতন শখ। বুকের ভেতর গেঁথে রেখেছি সব। আপনি বিয়ে করে আনুন। বটি নিজ দায়িত্বে ধার দিয়ে রাখব আমি।

এই মেয়ে যে কু’পাকু’পি করতে একটু ও পিছুপা হবে না তা জানা আছে তৌসিফের। কোন বংশের র’ক্ত ওর শিরা দিয়ে যায় দেখতে হবে না।
তৌসিফ ওকে নিজের কাছে ডাকলো কাউচে। পৌষ বাধ্য মতো গেলো অবশ্য। একটু দূরত্ব রেখে পাশে বসলোও। তৌসিফ গাঢ় দৃষ্টি ফেলে বললো,

— সোহা’র বিয়ে ঠিক হয়ে আছে।

হকচকালো পৌষ। ওর চোখ দুটো ভাবখানা এমন যেন চমলোক্কো কোন সংবাদ মাত্র সে শুনলো। নিজেদের মাঝে থাক দূরত্ব ঘুচিয়ে একটু ভাব জমানোর চেষ্টা করে বলে উঠলো,

— ফিরোজ ভাইয়ের সাথে?

খুক খুক কাশির শব্দ শুনা গেলো। ফিরোজ হলো তৌসিফের ড্রাইভার। ওর দুটো বাচ্চা আছে। সোহা’কে নাকি ওর সাথে বিয়ে দিবে? তৌসিফ অবাক হয়েই প্রশ্ন করলো,

— দুই বাচ্চার বাপ ও। ড্রাইভার।

— তাতে কি? আপনার দাদা চারটা বিয়ে করলো। বোন ও কারো ঘরের দ্বিতীয় জন হোক। সমস্যা তো দেখি না৷ বংশীয় রিতী ধরে রাখতে হবে না যেমন আপনি সবে দুটো করে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

— শখে করি নি।

— বলা তো যায় না।

— তুমি এত কথা প্যাঁচাতে পারো।

— তো কোন নাল কাটা সাপ , মুখ পুড়া বান্দরের সাথে বিয়ে দিবেন সৎ বোনকে?

— ছেলেটা শিক্ষিত, মার্জিত। ভার্সিটিতে লেকচার আপাতত।

পৌষ গোল গোল চোখ করে তাকালো। মুখে বললো,

— চুহ চুহ। বেচারার জন্য আমার চোখ ভিজে উঠেছে। না জানি কোন ভদ্র ঘরে ভাদ্র মাসের উত্তাপ নিয়ে যায় আপনার বোন।

তৌসিফ উঠে বিছানায় যেতে যেতে পৌষ’র ও হাত ধরে টেনে নিলো। সোজা বালিশে ওকে ঠেলে দিতেই পৌষ চেঁচামেচি করে বলতে লাগলো,

— আমার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মা’রতে চান আপনি।

— কিসব বলো তুমি।

— ব্যাটা খাড়া শয়তান।

তৌসিফ নিজের কপলে দুই আঙুল ঘঁষে বিরক্ত স্বরে বললো,

— কিসব ভাষা তোমার হানি? হোয়াট ইজ খাড়া শয়তান? শয়তান আবার খাড়া বা বসা হয়?

— হয়তো। যেমন আপনি।

তৌসিফ বালিশে মাথা দিয়ে শুয়ে লাইটটা অফ করে দিলো। বাথরুমের লাইট পাল্টে এনার্জি লাইট লাগিয়েছে পৌষ। রুমেরটার দিকে ও তার শয়তানী নজর আছে। না জানি কখন এটাও খুলে সাদা লাইট লাগিয়ে দেয়। কোন ভরসা নেই।
.
সবে হয়তো এক ঘন্টা গেলো। তৌসিফের চোখ বুজে আসছিলো। কুচুরমুচুর শব্দ কানে আসতেই ঘুম আলগা হলো। যথেষ্ট হালকা ঘুম হয় ওর। পাশে হাত রাখতেই যা বুঝার বুঝলো। পৌষ নেই। নিশ্চিত ক্ষুধা লেগেছে। ঠিক মিললো ওর ধারণা। তৌসিফের পায়ের দিকে খালি জায়গায় বসে কিছু খাচ্ছে ও। তৌসিফ উঠে বসলো। পৌষ অবশ্য পাত্তা দিলো না। তৌসিফ চোখ ডলে লাইট অন করতেই চোখ বুজে ফেললো পৌষ। তীব্র আলো চোখ সহ্য করতে পারলো না হুট করে। তৌসিফ ঘুমু গলায় বললো,

— চিপস খেয়ো না এত হানি।

— কেন টাকায় টান পরবে আপনার?

তৌসিফ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে উঠে বাইরে যেতেই পৌষ ও পিছনে গেলো। ফ্রীজ খুলে ঠান্ডা রান্না করা পাসতা ওভেনে দিলো তৌসিফ। গরম হতেই চামচ সহ পৌষ’র সামনে দিয়ে বললো,

— এখন থেকে রোজ রাতে কিছু থাকবে রান্না করা। আমি বলে রেখেছি বুয়া’কে। বুয়াদের ডেকে দিবে নাহয় আমাকে ডাকলেই গরম করে দিব।

— বুয়া বুয়া করেন কেন হ্যাঁ? বুয়া কি শব্দ? খালা বা আপা ডাকবেন।

— বুয়া মানে বোন ই।

— শুনতে কটু লাগে।

— অনেক বছরের অভ্যাস। সময় লাগবে।

পৌষ মুখে পাসতা পুরেছে ইতিমধ্যে চার পাঁচ চামচ। তৌসিফ ওর পাশের চেয়ারে বসে চিপসের প্যাকেটে হাত দিয়ে দুটো চিপস মুখে দিলো। পৌষ দেখলো তবে কিছু বললো না।

___________________

আকাশে আজ ভরপুর ঘন কালো মেঘ। রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরে যাচ্ছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাতাস। রোমাঞ্চিত মুহুর্তটা প্রেমিক জুগলদের জন্য একদম উত্তম সময়। মৃদু মৃদু বাতাস যতটুকু পারছে ঘরের ফাঁকফোকর দিয়ে শুরশুর করে ঢুকছে। হেমন্তের বুকের ভিতরে একদম ঢুকে ঘুমাচ্ছে শ্রেয়া। যতটুকু ওম পাওয়া যায় তার সবটুকু ই সে শুষে নিচ্ছে তবুও যেন ঠান্ডা কমছে না৷ হেমন্তের দেয়া উত্তাপে ও কুলাচ্ছে না তার। নাক, মুখ সহ নিজে যতটা পারলো ঢুকলো। হেমন্ত ও পরম সোহাগে ওকে জড়িয়ে রাখলো নিজের সাথে। শ্রেয়া’র ঠান্ডা কমলো না। ঘুমের মাঝেই টের পেলো হেমন্ত। টেনে চোখ খুলতেই বুঝলো কিছুটা। ধীরে সুস্থে শ্রেয়া’কে রেখে উঠে আলমারি থেকে কাঁথা এনে ওকে ঢেকে দিলো। নিজেও পাশে শুয়ে জড়িয়ে ধরতেই শ্রেয়া’র ঘুম কিছুটা আলগা হলো।
হেমন্ত ওর মাথায় হাত রাখলো। চুলের ভাজে আঙুল চালাতে চালাতে বললো,

— ঘুমাও শ্রেয়ু। সকাল হয় নি।

— বৃষ্টি হচ্ছে?

— হু।

একটু এগিয়ে কপালে চুমু খেলো হেমন্ত। কাঁথার নীচ দিয়ে ই নিজের পুরুষ্টু হাতটা রাখলো শ্রেয়ার পেটে। ঘুম জড়ানো গলায় শ্রেয়া বললো,

— ও কিন্তু জেগে আছে।

— কে বললো?

— আমি বুঝি।

— ওর মা কেন ঘুমাচ্ছে না?

— দাড়ান জিজ্ঞেস করে দেখি।

হেমন্ত ওর গলায় মুখ লাগিয়ে বললো,

— দুষ্ট হচ্ছো দিন দিন।

— উমম।

এরপর ও প্রায় দুই ঘন্টা পর ওরা উঠলো। হঠাৎ ই দরজায় ছোট ছোট হাতের থাপ্পড় শুনা গেলো তাও একসাথে চারটা। হেমন্ত জানালা খুলতে খুলতে বললো,

— কি?

— বাই দরতা থুলো না।

ইনি,মিনি একসাথে বললো। শ্রেয়া মুখ মুছতে মুছতে দরজা খুলতেই ইনি,মিনি ঢুকলো। ওদের হাতের মুঠোয় চিতই পিঠা। শ্রেয়া ইনি’র গাল টেনে দিয়ে বললো,

— কি খায় ভাবীর জান?

ইনি,মিনি ঠোঁট দুটো গোল করে বললো,

— অনেত দাল।

হেমন্ত এসে দেখলো চিতই আর সাদা দেখা যাচ্ছে না। দুটো যে শুকনো মরিচ লাল দেখে ওটার ভর্তা ই নিয়ে এসেছে তা বুঝলো ও। ওদের হাত থেকে পিঠা নিয়ে নিজের মুখে দিয়ে বললো,

— চিতই কে বানাচ্ছে?

— মা আর চাচি বানায় হেমু ভাই। নিচে ডাকে।

পিহা রুমে ঢুকতে ঢুকতে বললো। শ্রেয়া ওরনা মাথায় দিয়ে নিচে। ইনি,মিনি উঠলো হেমন্তের দুই কাঁধে।

গতরাতে যেহেতু বাচ্চারা কেউ বাসায় খায় নি তাই গরুর ভুনা বেঁচে গিয়েছিলো। সেটা আর ভর্তা দিয়ে আজ নাস্তা। চিতই খেতে খেতে আজ পাঁচটা খেয়েছে শ্রেয়া। হেমন্ত এবার একটু রাগ করলো। শ্রেয়ার মুখের সামনে গোশত ধরে বললো,

— আর একটু ও ভর্তা না। শরীরে র’ক্ত কম। গোশত খাও।

— এটা খাই শুধু ভর্তা দিয়ে।

হাতে থাকা অর্ধেক চিতই দেখালো শ্রেয়া। মানলো না হেমন্ত। চৈত্র আর জৈষ্ঠ্য আজ চুপচাপ। দুই জন নিজেরা খাচ্ছে মাঝেমধ্যে ইনি,মিনি’র মুখে দিচ্ছে। বাবা’র সাথে কথা বলে না তারা। তাই এতটা সন্নাটা।
হেমন্ত এক পলক দেখেও কিছু বললো না। তার পরিকল্পনা ভিন্ন।

_________________

তৌসিফের ঘুম ভাঙলো মাত্র। ঠান্ডায় জমে যাচ্ছে সে। আঠারো তে এসি চলেছে সারারত সেই সাথে বাইরের আবহাওয়া। জানালার কাঁচসহ ভিজে উঠেছে। পাশে তাকাতেই দেখলো কাঁথা পেঁচিয়ে মুড়া দিয়ে এক কোণায় গুটিয়ে আছে পৌষ। যেকোন সময় খাট থেকে ও পরে গিয়ে গোল দিতে পারে। কাঁথা এমন ভাবে প্যঁচ দিয়েছে যে তৌসিফ যে নিবে তার জোঁ নেই। তৌসিফ ওকে ধরে সামনে আনবে তার আগেই কাঁথা নিয়ে এক মোচড় দিয়ে ধারাম করে নিচে পরলো। ধারাম করে এক শব্দ হতেই তৌসিফ ডেকে উঠলো,

— পৌষরাত!

কিসের বলতে কি পানতা ভাবে ঘি। পৌষ উঠেই খেঁকিয়ে উঠলো। তৌসিফ নাকি ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলেছে। হতভম্ব তৌসিফ তবুও বউ’কে খাটে তুললো। কোমড় চেপে ধরে শুয়ে আছে পৌষরাত। তৌসিফ এই মুহুর্তে বলতেও পারলো না কমড় টিপে দেয়ার কথা। রেগে গেলে তৌসিফের গলা ই না টিপে দেয় সে। বিশ্বাস নেই এই মেয়ের।

পৌষ বালিশে মুখ গুজে উল্টো হয়ে শুয়ে থাকাতে তৌসিফ ভাবলো ঘুমিয়েছে। যেই না কোমড়ে হাত রাখলো ওমনিই যেন কারেন্টের শক খেলো পৌষ। তবে ব্যথা থাকার কারণে কিছু বললো না। তৌসিফ হালকা হাতে টিপে দিচ্ছিলো কিন্তু এক মিনিট যেতেই আর টিকতে পারলো না পৌষ। দিন শেষে সে এখন উঠতি যৌবনা এক নারী। বিশ বছর বয়সী পৌষ চাইলেও সামাল দিতে পারে না নিজেকে। সম্মুখের প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষটার কাছে বাজে ভাবে হেরে যায়।
পৌষ সরে গিয়ে মিনমিন করে বললো,

— লাগবে না।

— কেন?

— না বলেছি না। বেশি মন চাইলে রাস্তায় নামুন। দেখুন কোন মহিলা আছাড় খেয়ে কোমড় ভাঙলো। তাদের কোমড় টিপে দিয়ে আসুন।

তৌসিফ বিছানা ছেড়ে উঠলো। যেতে যেতে বললো,

— না জানি কোন পাপ করেছিলাম। কপালে জুটেছে একটা।

পৌষ হরিণের কানে শুনলো যেন। শুয়ে শুয়েই জোরে বললো,

— এএএই মামাতো ভাই। আমি জুটি নি। আপনি ধরে বেঁধে জুটিয়েছেন।

তৌসিফ ধারাম করে দরজা লাগিয়ে দিলো। চোখের সামনে সাদা আলোয় ঝলমলিয়ে উঠলো বিলাসবহুল ওয়াশরুমটা।
.
ভাঙা কোমড় নিয়ে খিচুড়ি বসিয়েছে পৌষ সাথে হাঁসের গোশত। টানা বৃষ্টি পরছে গতরাত থেকে। সকালে মন চাইলেও পরটা দিয়ে চা খেয়েই ক্ষ্যান্ত ছিলো ও। দুপুরে খিচুড়ি চাই ই চাই। তৌসিফ আজ বের হয়ে ও ফেরত এসেছে। রাস্তায় পানি উঠেছে। গাড়ি চলাচল সম্ভব না।
এই আবহাওয়াতে মিটিং সম্ভব নয়। তার শিপ আটকা পরেছে চট্টগ্রাম বন্দরে। বারবার ফোনে ধমকা ধমকি করে যাচ্ছে। পৌষ তো চমকালো তখন যখন দেখলো রাগে তৌসিফ তালুকদার লাল হয়ে উঠেছিলো। লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যবসা বলে কথা। পৌষ অবশ্য আজ নিয়ে তৌসিফকে রাগতে দেখলো দুই দিন। তাই ওই ড্রয়িং রুমে আর পা রাখে নি ও।
খিচুড়ি প্রায় শেষের দিকে। বুয়ার দিকে তাকিয়ে পৌষ বললো,

— আচ্ছা উনি খিচুড়ি খায় তো?

— জানি না তো ছোট ভাবী। সচরাচর রান্না হয় না।

তৌসিফের বর্তমান রাগ দেখে আজ আর জোর করে ওকে খিচুড়ি খাওয়াতে সাহস পেলো না পৌষ। তাই বুয়াকে বললো,

— তবুও ভাত রেঁধে রাখুন খালা। যদি পা’গলা কুত্তার মতো ক্ষেপে যায় তখন তো মুশকিল।

— পৌষরাত!!

তৌসিফের কণ্ঠ। বুকটা হঠাৎ ই ধুপধুপ ধুকপুক করতে লাগলো ওর। তাহলে কি শুনে নিলো তৌসিফ। আচমকাই কেন যেন ভয় হতে লাগলো ওর। না যাওয়াতে এবার উচ্চস্বরে ডাক পরলো। পরি তো ম’রি করে দৌড়ে গিয়ে পৌছালো পৌষ। তৌসিফ ল্যাপটপ থেকে নজর সরিয়ে বললো,

— খিচুড়ি রান্না করছো?

— হু।

— তোমার না শরীর অসুস্থ? আর করতে হবে না৷ রুমে যাও।

— একটু বাকি আছে।

— যেতে বলেছি।

হঠাৎ ধমক খেয়ে চুপসে ফাটা বেলুনের মতো মুখ হলো পৌষ’র। তৌসিফ দেখেও কিছু বললো না। এই মেয়ে একটা বাদর। লাই পেলেই গাছে উঠে বসে থাকে।

#চলবে…..

গল্পটি সম্পর্কে রিভিউ, আলোচনা, সমালোচনা করুন আমাদের গ্রুপে। গ্রুপ লিংক নিচে দেওয়া হলোঃ
https://facebook.com/groups/holde.khamer.valobasa/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here