প্রহর_শেষে_তুমি_আমার #পর্ব ১৩ ও ১৪ #মেঘকন্যা

0
53

#প্রহর_শেষে_তুমি_আমার
#পর্ব ১৩ ও ১৪
#মেঘকন্যা

-“আজ কাল দেখি মুখে ভালোই বুলি ফুটেছে।”

মিরা অবাক হয়ে।মাত্র রুমে এলো।আজ মিরা ও তারমিন এক সাথে শাড়ি পড়েছিল।কি করবে?আজ দুদিন যাবৎ বাসায় বসে আছে।বাসায় শুধু শুধু বসে থাকতেও তো ভালো লাগে না।তাই সুন্দর করে শাড়ি পরে ছাদে উঠে বেশ কিছু ছবি তুলেছে। আজ আকাশ টাও সুন্দর।তাই দুজনে ঠিক করলো একটু বাইরে বের হবে।কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে গেছে বিধায় বেশ দূর গেল না তারা।নিচে নেমে সায়মা বেগমকে বলে দুজনেই বাসা থেকে দশমিনিট দূরে ফুচকার দোকানে গেল। ফুচকার দোকানে তো সেই ভিড়।কিন্তু ফুচকা খেতে এসে ভিড় দেখে চলে গেলে তো হবে না।তাই এক ঘন্টা অপেক্ষা করার পর দুজনেই ফুচকা খেল। দুজনের ঠোঁটে বিজয়ের হাসি। দুজনেই বাড়ির দিকে হাটা ধরলো।পথেই দেখা হলো পাশের বাসার সৌমিকের সাথে। সৌমিক তারমিনকে ডাক দেয়। সৌমিক এটা সেটা জিজ্ঞাস করে। মিরা ভদ্রতার সহিত সৌমিকের সাথে কথা বলে।তারপর দুজনেই বাসায় চলে আসে। বসার ঘরে বসতেই সায়মা বেগম বলেন,,তাদের নাকি তাশফীক দেখেছে। তাশফীক নাকি তাদের ফেরার কিছুক্ষন আগেই এসেছে। বেশ রেগেও ছিল নাকি।

মিরা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে কথা গুলো ভেবে তাশফীকের দিকে তাকায়। তাশফীক ফোনে মুখ গুজে মিরাকে উদ্যেশ্য করে এই উক্তি করেছে।মিরা ড্রেসিং টেবিলের সামনে যেয়ে হাতের চুড়ি গুলো খুলতে শুরু করে।পেছন থেকে আবার শুনতে পায়,,

-“কথা দেখি ভালোই বলতে পারো।”

মিরা পেছন দিকে ঘুরে তাশফীকের দিকে তাকিয়ে বলে,,

-“কি বলতে চাচ্ছেন?”

-“বুঝতে পারছো না?না মানে এই যে ,, আজ কাল যার তার সাথে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছো।তাই আর কি বললাম।”

মিরা ভ্রু কুচকে বলল,,
-“আপনার মতো নাকি সারাদিন মুখে কুলুপ এটে থাকবো ?”

-“আমি মুখে কুপুল এটে থাকি?”

-“তা নয়তো কি?এই যে আপনার সামনে আপনার জলজ্যান্ত বউ দাড়িয়ে আছে তার সাথে একটু ভালো করে কথা বলেছেন? কোথায় বিয়ে হয়েছে, বউয়ের সাথে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলবেন ,, তা না করে ,,কি করেন?
চুপ চাপ কুমড়ো পটাশের মতো,,,,,,,

মিরা নিজের মুখ হাত দিয়ে চেপে ধরলো।উফ কি বলতে কি বলে ফেলেছে সে?মা বার বার বলতো বুঝে শুনে কথা বলতে কিন্তু না মিরা তো কারো কথা শুনবে না।মিরা মুখ কাঁদো কাঁদো করে ফেললো।

তাশফীক বেডের থেকে উঠে দাড়ালো।বেড সাইড টেবিলে ফোন টা সুন্দর করে রাখলো।চোখ পিট করে মিরার দিকে এগিয়ে গেলো।মিরা একটু ভড়কে গেল। কিন্তু নিজের জায়গা থেকে এক বিন্দুও নড়লো না। তাশফীক মিরা দিকে তাকিয়ে বাকা হাসি দিয়ে এগোতে থাকলো।যতই তাশফিক এগিয়ে আসছে ততই গলা শুকিয়ে যাচ্ছে মিরার। উফ কেনো যে সে তার মুখ টা বন্ধ রাখতে পারে না?

মিরা বার কয়েক ঢোক গিলে বলল,,

-“আপনি না ফোন দেখছিলেন? ফোন দেখা শেষ?”

-“নাহ শেষ হয় নি।”

-“তাহলে ফোন দেখুন।এগিয়ে আসছেন কেনো?”

-“নাহ বউ বলল আমি মুখে কুলুপ এটে থাকি, বউ এর সাথে ঠিক মতো মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতে পারি না,তাই তার সাথে একটু কথা বলতে চাচ্ছি।”

-“কথা বলতে হলে এগিয়ে কেনো আসতে হবে?”

-“বুঝ না এই কথা সেই কথা না।”

মিরা চোখ পিট পিট করে বলল,,
-“তাহলে কোন কথা?”

-“শুনতে চাও?”

মিরার একদম কাছে চলে এলো তাশফীক।দুজনের মাঝে দুরত্ব নেই বললেই চলে। তাশফীকের উষ্ণ নিঃশ্বাস মিরার মুখে পড়ছে।এতো কাছাকাছি থাকায় তাশফীকের গায়ের থেকে একটা সুন্দর স্মেল আসছে।এই স্মেল টা ভীষণ ভালো লাগে মিরার। তাশফীক মিরার কোমড় জড়িয়ে ধরলো।মিরার দিকে ঝুঁকে স্লো ভয়েসে বলল,,

-“কি হলো?শুনতে চাও না?”

মিরা এবার ও কিছু বলল না।চোখ দুটো বন্ধ করে নিলো।মুখ দিয়ে হুঁ হা কিছুই করলো না।এবার তাশফীক মিরার দিকে আরো একটু ঘনিষ্ঠ হলো।মিরার কানে কাছে ঠোঁট নিলো। তাশফীকের নিঃশ্বাসে এবার যেনো মিরার যায় যায় অবস্থা।হাত পা অসার হয়ে কাছে।বুকের ভেতর ড্রিম ড্রিম করছে। তাশফীক মিরার কানের লতির কাছে ঠোঁট নিয়ে ফিস ফিস করে বলে,,

-“হোয়ায় আর ইউ কোয়াইট? টক টু উইথ মি! আর ইউ আফরেইড অফ মি?”

মিরা কিছুই বলতে পারলো না। ঠোঁট দিয়ে কথা যেনো বের হচ্ছে না। তাও নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,,

-“দেখুন আমাকে,,,

তাশফীক মিরার গলায় চু”মু খেয়ে বলল,,

-“তোমাকেই তো দেখছি।তুমি কি চাও আরো গভীর ভাবে দেখি?”

মিরার নার্ভাস নেস নিয়ে আমতা আমতা করে বলল,,

-“হুম,,না ,না মানে।”

তাশফীক মিরার মুখে ফু দিল। মিরার অবস্থা বুঝতে পেরে মেকি হেসে বলল,,
-“কি হুম না করছো? আই নো ওয়াট আর ইউ ট্রায়িং টু সে।”

মিরা নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলল,,

-“মামনি হয়তো ডাকছে”

-“কোথায়? আমি তো শুনতে পেলাম না! পালাতে চাচ্ছ? তুমি তো বলল আমি কথা বলি না,,তো এখন যখন কথা বলছি তবে কেনো রেসপন্স করছো না?”

আরে আমি কি এতো কাছে এসে গায়ের সাথে গা ঘেঁষে কথা বলতে বলেছি নাকি?”মনে মনে বলল মিরা।মুখে বলার সাহস হলো না।মিন মিন করে বলল,,

-“আমি আপনার সাথে পড়ে কথা বলি?”

-“উহু,,আমি এখন তোমার সাথে কথা বলবো?”

-“কি কথা বলবো বলুন?”

-“যা স্বামী স্ত্রী বলে।”

-“মানে ?”

-“মানে স্বামী স্ত্রী যেসব বিষয় নিয়ে কথা বলে আমরাও বলবো। আফটার অল উই আর হাসব্যান্ড ওয়াইফ। ইউ নো ওয়াট আই মিন মিরা?”

এবার যেনো মিরার অবস্থা আরো খারাপ হলো। তাশফীকের দিকে তাকিয়ে দেখলো লোকটা বাকা হাসছে। উফ আবার যেনো ঘায়েল হলো মিরা।এতো সুন্দর হয় কি করে হাসে।তবে এবার এই হাসি দেখে মিরার লজ্জাও লাগলো।

মিরা তড়িঘড়ি করে তাশফীকের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে সক্ষম হলো।পাশ কাটিয়ে চলে গেল আলমারির কাছে কাপড় নিতে।কিন্তু মুহূর্তেই শাড়ি পায়ে বেজে ধুপ করে পড়ে গেল। মিরার এই অবস্থা দেখে ভীষণ হাসি পেল তাশফীকের। হো হো করে হেসে উঠলো।

অন্যসময় হলে তো মিরা এই হাসি তে ক্র্যাশ নামক বাশ খেত কিন্তু না এখন তার রাগ লাগছে।ভীষণ রাগ লাগছে।লোকটা খারাপ।ভীষণ খারাপ। কোথায় বউ ব্যথা পেয়েছে একটু আগলে নিবে।না তা না করে হেসেই যাচ্ছে।
________

রাতে খাবার শেষ করে সব কিছু গুছিয়ে রুমে এলো মিরা।ভালো লাগছে না । হাতটা চুড়ি ভেঙে কেটে গেছে।ভীষণ জ্বলছে।একটু শান্তি লাগছে না।মিরা মায়ের নাম্বার এ কাল দিলো।মায়ের কন্ঠ শুনলে নির্ঘাত শান্তি লাগবে।

-“কি করছো মা?রাতে খেয়েছো?”

-“হুম মা।তুই খেয়েছিস?”

-“হুম।”

-“তুই ভালো আছিস তো মা?”

-“হুম মা বেশ ভালো আছি।আর মামনির বাসায় খারাপ থাকি করে?”

-“তবে তোর আওয়াজ এমন শোনাচ্ছে কেনো?”

-“এমনি মা।”

আরে বেশ কিছু সময় মায়ের সাথে কথা বলল মিরা তাশফীক নেই বাইরে গিয়েছে।মিরা লাইট অফ করে ঘুমিয়ে গেলো।না জানি আবার কোথায় গিয়েছে।

তাশফীক ফিরেছে কিছুক্ষন আগে। বারান্দায় বসে মিরার দিকে তাকিয়ে আছে ।বান্দায় দরজার কাছে থেকে বরাবর বেড দেখা যায়।তাই সেই বেডে শুয়ে থাকা মিরার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে তাশফীক। ছোট থেকেই বেশ চঞ্চল মিরা।একদম ঝড়ের গতিতে চলে।

মিরা ছোট থেকে চঞ্চল হলেও এমন কাজ করবে তা বিশ্বাস যোগ্য না।যদিও সেদিন মিরার উপর খুব রাগ হয়েছিল তার।আসলে পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে তাশফীকের মাথা কাজ করছিল না।আর তাশফীক বা কি করতো?সব কিছু তো মিরার দিকে ছিল।তবে সে এই দুই দিন খুব ভেবেছে।কিন্তু কোনো ভাবেই এই সূত্র মেলাতে পারে নি।আবার পিয়াসের বলা কথাও ভেবেছে।খুব গভীর ভাবে ভেবেছে।সব কিছু ভেবে এক সিদ্ধান্ত ও নিয়েছে সে।

তাশফীক বারান্দা থেকে রুমে চলে এলো। ওয়াশরুম থেকে মুখে একটু পানির ঝাপটা দিল।বের হয়ে বেড সাইড টেবিলের উপর রাখা ল্যাম্প অফ করতে নিলেই চোখে পড়লো মিরার হাতের কেটে যাওয়া অংশ।

তাশফী হাতে স্যাভলন,তুলো ও অয়েনমেন্ট নিয়ে মিরার দিকে এগোলো।মিরার হাতে অয়েনমেন্ট লাগিয়ে দিল।বেশ কিছুক্ষণ মিরার দিকে তাকিয়ে রইলো।হঠাৎ মিরা তার ডান হাত জড়িয়ে ধরলো। তাশফীক মিরার দিকে ঝুঁকে গেল। তাশফীকের কি হলো কে জানে? তাশফীক মিরার কপালে চু”মু খেল।বাম হাত মিরার গালে রেখে বলল,,

-“মিরা আমি এই দুই দিন খুব ভেবেছি।সব কিছু ভেবে আমার মন একটাই কথা বলছে। জানো কি বলছে?বলছে আমার বউ এমন কাজ করতে পারে না।
মিরা মোটেও এমন নয়।তোমাকে কথা দিচ্ছি মিরা,,
তোমায় তোমার সম্মান ফিরিয়ে দিবো।যে বা যারা এই কাজ করেছে তাদের সামনে নিয়ে আসবো।সব কিছু আমি প্রমাণ করবো। যারা এর পিছনে আছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করবো।এই তাশফীক তোমায় কথা দিচ্ছে মিরা।”

পর্ব ১৪

রাত বারোটা। তারমিন ঘুমে বুদ হয়ে আছে। স্বাভাবিক দেখা যায় যে সবাই লেট করে ঘুমায় কিন্তু তারমিন উলটো।খাওয়া শেষ করে ঘুমে বেভর হয়ে যায়।ফোন ক্রিং ক্রিং শব্দে ঘুম ভেংগে যায় তারমিনের ।ভ্রু কুচকে ফেলে।এই রাতের বেলা কে কল করছে? কোন পাগল এই রাতের বেলা কল করলো।

তারমিন উঠে বসলো।নাহ পরিচিত কেউ কল করে নি।তবে কে? তারমিন ভাবলো কল রিসিভ করবে কি না।কিন্তু না ফোন যেনো বেজেই চলছে।বন্ধ হওয়ার নাম নেই।এবার নে পেরে কল রিসিভ করলো তারমিন।ওপাশ থেকে শুনতে পেলো

-“কি করছেন?”
………..

তারমিন ব্রু কুচকে একবার ফোনের দিকে তাকালো।কে সে? ডাইরেক্ট পরিচয় না দিয়ে কি করছেন এ চলে গেল।ওপাশ থেকে আবার শুনতে পেল,,

-“কথা বলছেন না কেনো?”

……………

তার মিন এবার ও কিছু বলল না।আবার শুনতে পেল,,

-“কথা বলছেন না কেনো?”

-“কে বলছেন আপনি?”

-“কথক।আর আপনি শ্রোতা,,তাই না?

-“মানে?”

-“আমি কথা বলছি তাই আমি কথক।আর আপনি তো কথা বলছেন না শুধু শুনছেন তাই আপনি শ্রোতা ।”

-“কি সব বলছেন?কে আপনি সেটা বলুন।রাতের বেলা মশকরা করছেন!”

-“মশকরা কি যার তার সাথে করা যায়?আপনার সাথে কি আমার মশকরা করার সম্পর্ক?”

-” কি চাই বলুন? রাতের বেলা কেনো ডিস্টার্ব করছেন?”

-“আচ্ছা তাহলে দিনের বেলা ডিস্টার্ব করবো,, চলবে?”

-“আপনি কিন্তু বেশি বলছেন।কে আপনি?কি চাই আপনার?আমরা কি পূর্ব পরিচিত?”

-“এতো প্রশ্ন এক সাথে। অপরিচিত একজন কে এক সাথে এতো প্রশ্ন করছেন মিস তারমিন!”

-“আপনি আমার নাম জানেন কি করে?আজব ব্যাপার তো!”

-“আচ্ছা শুনুন না।”

-“দেখুন আমি কোনো অপরিচিত ব্যক্তির সাথে কথা বলতে চাই না।”

-“তাহলে এতক্ষণ কি বললেন? গরুর ঘাস কাটলেন?”

-“উফ।কে আপনি?”

-‘শুনুন এতো প্রশ্ন করবেন না।আমি যেই হই না কেনো,, শীগ্রই আপনার কাছের কেউ হবো।”

-“বলেই খট করে কল কেটে দিলো ওপাশের লোক। তারমিন ভাবনায় পড়ে গেল।কে এই লোক।তাকে কিভাবে চিনে?
“””””

বুকের উপর ভারি কিছু অনুভূত হলো তাশফীকের।পিট পিট করে চোখ খুলে নিল।চোখ খুলে নিজের বুকের উপর ঘুমন্ত মিরাকে দেখতে পেল। তাশফীক মিরার মাথা অতি যত্নে বালিশে দিয়ে দিল। দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো মিরার উপর । চুল গুলো মুখের উপর পড়ে আছে।নাকের ডগায় ও গালের দুপাশে তেল চিক চিক করছে।বেশ অনেক ক্ষণ তাকিয়ে রইলো তাশফীক।কেমন যেনো অনুভূতি হলো।এই অনুভূতি যে মিরাকে দেখলে বা মিরার কাছে থাকলে বার বার হয়।

তাশফী চোখ সরিয়ে বেড থেকে নামতে নিলেই ঠাস করে পেছন থেকে হাত ধরে ফেলে মিরা। তাশফীক পিছন ঘুরে তাকালো। মিরা ঘুম ঘুম কণ্ঠে বির বির করে বলল,,

-“মা একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দিবে?”

সুন্দর আবদার। তাশফীক কি এই আবদার পূরণ করবে? আবদার পূরণ করা উচিত? অবশ্যই উচিত কারণ মিরা তার বউ।তার কাছে মিরা আবদার করতে পারে।কিন্তু মিরা যে তাকে মা ভেবে আবদার করলো। তাশফীক ঠোঁটে হাসি ফুটিয়ে মিরার মাথার কাছে হাত বাড়ালো ।ঠিক তখন কর্কশ আওয়াজে এলার্ম বেজে উঠলো।মিরার কানের কাছে ফোন ছিল বলে ঘুম ভেঙে গেলো মিরার।চোখ পিট পিট করে তাকালো।নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো সে তাশফীকের হাত ধরে আছে।মিরা ঠাস করে তাশফীকের হাত ছেড়ে দিল। আমতা আমতা কবে বলল,,

-“আমি বুঝি নি।ঘুমের ঘোরে আসলে,,,

তাশফীক কিছু বলল না। আকষ্মিক মিরার দিকে এগিয়ে মিরার গালে গভীর ভাবে চু”মু খেল।মিরা যেনো সকাল সকাল অবাক হলো।বার কয়েক চোখের পলক ফেললো। তাশফীক কিছু না বলে উঠে চলে গেল।।মিরা তাশফীকের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হেসে উঠলো।লজ্জা পেল বুঝি।নিজের হাত গালে নিয়ে তাশফীকের চু”মু দেয়া জায়গায় ছোঁয়ালো। খুশিতে নেচে উঠলো মন।দ্রুত রুম গুছিয়ে নিল। তাশফীক ওয়াশরুম থেকে বের হলো।মিরা দাঁত কেলিয়ে ওয়াশরুম চলে গেলো।
____

মিরার মা ফোন দিয়েছিল। তাশফীকদের পুরো ফ্যামিলি দাওয়াত দিয়েছে।যেহুতু বিয়ের পরের দিন যেতে হয় কিন্তু তাশফীকের কাজের জন্য যেতে পারে নি।তাই আজকে সবাইকে দাওয়াত দিয়েছেন।তবে সায়মা বেগম ও তানজিম শেখ যাবেন না। তারমিনের ও ফ্রেন্ড এর বাসায় দাওয়াত তাই সেও যেতে পারবে না।তাই শুধু মিরা ও তাশফীক যাবে।

বিকেল চারটা। মিরা ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে রেডি হচ্ছে। পরনে কালো রঙের থ্রিপিস।সাথে আজ গলায় ,কানে,হাতে স্বর্ণের অলঙ্কার পড়ে নিল।সায়মা বেগম বার বার বলে দিয়েছেন যেনো পরিপূর্ণ বউ রুপে সে বাসায় যায়।মিরা চোখে মোটা করে কাজল এঁকে দিল। ঠোঁটে একদম নুড একটা কালার লিপস্টিক দিল।

তাশফীক শাওয়ার নিয়ে বের হলো মাত্র।অফিস থেকে আজ তাড়াতাড়ি ফিরেছে কারণ ওই যে শশুর বাড়ি যেতে হবে। তাশফীক চুল মুছতে মুছতে ড্রেসিং টেবিলের দিকে এগিয়ে গেলো।আয়নায় মিরাকে পর্যবেক্ষণ করলো।কিছু একটা আছে এই মেয়ের মধ্যে তা না হলে কেনো তাকে বার বার টানে।সে যতবার মিরার দিকে তাকায় ঠিক ততবার কিছু একটা অনুভব করে।

মিরা ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে দূরে সরে বেডের দিকে এগিয়ে এলো। তাশফীকের জন্য বরাদ্দ কালো রঙের পাঞ্জাবি এগিয়ে দিয়ে বলল,,

-“এই পাঞ্জাবি টা আপনার জন্য বের করেছি।পড়বেন এটা?”

-“তুমি চাইছো আমি এটা পড়ি?”

-“এটা কখন বললাম?বলেছি আপনি এটা পড়বেন কি না?”

-“যদি বলি না?”

-“তো?কিছুই হবে না।”

-“সত্যি কিছু হবে না?”

-“কিছুই হবে না।আপনি যেটা পড়ে কমফোর্ট ফিল করেন সেটা পড়ুন।”

-“ওকে।আমি শার্ট পড়ে নিচ্ছি।”

-“আপনার ইচ্ছা।আমি নিচে যাচ্ছি। তৈরি হয়ে চলে আসুন। বলেই মিরা চলে গেল।তাশফী ছোট শ্বাস ফেলে বলল,,

-“মেয়েদের মন বোঝা,,, নয় রে নয় সোজা।”

চলবে?????

(আসসালামুআলাইকুম।কেমন আছেন সবাই?আমিও ভালো আছি।ধন্যবাদ গত পর্বে নিজেদের মন্তব্য দেয়ার জন্য।এভাবেই আমার পাশে থাকবেন।নিজেদের মন্তব্য প্রকাশ করবেন।ভালোবাসা নিবেন ❤️❤️)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here