প্রিয়অপ্রিয়ের_সংসার #লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান) #পর্ব_১২

0
107

#প্রিয়অপ্রিয়ের_সংসার
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_১২

“শুনেন আজ বাহিরে যাইয়েন না। বাচ্চাদেরও স্কুল কলেজ বন্ধ। কারফিউ চলছে। আপনার দোকান কয়েকদিন বন্ধ রাখেন!”

“দেখো দোকানের টাকায় আমাদের পেট চলে। দোকান বন্ধ রাখিলে শেহরীনা ফিও দিতে পারব না। তার ফি নাসমা- নাজমুর এর চেয়েও বেশি। তাগো পরে দিলেও সমস্যা নাই। কিন্তু শেহরীনার পরে দিলে তার ভার্সিটির লোকেরা বহুত কথা হুনায়।”

রূপালি বেগম তপ্ত শ্বাস ফেললেন। প্রাকৃতিক ভাবে পরিবেশ দূযোগ মুক্ত থাকলেও প্রতিকূলে পড়েছে কিছু কীট জাতীয় লোকদের কারণে। মাঠঘাটে নেমেছে দুদল। এর দ্বারা চারপাশ জুড়ে যাকে হাতের নাগাল পাচ্ছে হয় স*ন্ত্রা*সী দাবি করে নিয়ে যাচ্ছে না হয় গু*লি*বিদ্ধ করে বুকটা ঝাঁজরা করে দিচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। রূপালি বেগম সময় দেখলেন। শেহরীনাকে ডেকে তুলতে তার রুমে গেলেন। মেয়েটার চোখমুখে আঁধার ছড়িয়ে আছে। কয়েকদিন ধরে বিষয়টা তিনি লক্ষ্য করছেন। তবে মুখ ফুটে মাকে না সে বলছে আর না তিনিও নিজ মুখে জিজ্ঞেস করতে পারছেন। মা-মেয়ের সম্পর্কটা এতটা জটিল কেনো তাদের? কেনো তিনি মেয়েটাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে কান্না করতে পারেন না? রূপালি বেগম এর কাঁধে কেউ হাত রাখায় চমকে পিছু মোড়লেন। নাজমুর মায়ের অশ্রুসিক্ত চোখে দেখে নরম হাতে সেই চোখের জল মুছে বলে,

“মা তুমি কেঁদো না প্লিজ! আপুর সাথে আমি কথা বলছি। তুমি কোনো চিন্তা করিও না।”

ছেলের কথায় রূপালি বেগম এর মুখে হাসি ফুটল। তিনি মাথা নেড়ে ছেলেকে যেতে ইশারা করে তিনি চটজলদি রান্নাঘরে গেলেন। ছেলে-মেয়ে দুটো কথা বলার মাঝক্ষণে তিনি স্যুপ বানিয়ে তাদের কাছে যাবেন। যাতে একটু হলেও তার মেয়েটা তার সাথে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলে। নাজমুর হাসি হাসি মুখ করে তার বড় বোনের দরজায় কড়া নাড়ল। শেহরীনার ঘোর কাটল। হাত থেকে ফোনটা নিচে পড়ে যায়। সে কপাল চাপড়ে ফোনটা নিয়ে একপলক দেখে বিছানায় রাখে। উঠে গিয়ে দরজাটা খুলে দেয়। সামনে নাজমুর কে দেখে মৃদু হেসে জিজ্ঞেস করে।

“কী হলো ভাই কিছু লাগবে?”

“না আপু তুমি সকালে নাস্তা করে সেই যে দরজা লাগিয়ে বসে আছো। কারণ কী? তোমাকে খুব অস্বাভাবিক লাগছে কেনো?”

শেহরীনা তার মনো যন্ত্রণা লুকিয়ে কৃত্রিম হেসে বলে,

“কই কোথায় লুকিয়েছি? এতো আছি ঠিকাছি আমি।”

“সত্যি তো আপু?”

শেহরীনা হ্যাঁ বোধময় মাথা নাড়ে। নাজমুর হাত ভেতরের দিকে দেখিয়ে বলে,
‘আসতে পারব কী?’

“আরে সরি এটা আবার বলতে হয় নাকি? আয় ভেতরে আয়। বস একসাথে গল্প করি।”

নাজমুর আঁটসাঁট হয়ে উৎফুল্ল মুখে বসল বোনের বিছানায়। শেহরীনা ফোনটা তৎক্ষণাৎ চার্জে লাগিয়ে অস্বাভাবিক হাসল। নাজমুর খেয়াল করলেও দমিয়ে রাখল মনে। শেহরীনা ভাইয়ের কাছে বসলে নাজমু্র হুট করে বলে,

“সারোয়ার ভাইয়া মিছিলে যোগ দিয়েছে। শুনেছিলে আপু?”

থমকে গেল শেহরীনা। চমকানো চেহারা করে ভাইয়ের দিকে তাকাল সে। নাজমুর তার পকেট হাতড়ে তার নিজের ফোন বের করে ফেসবুক এ ঢুকল। শেহরীনা নির্জীব ভঙ্গিতে তাকিয়ে রইল। নাজমুর এর সঙ্গে সারোয়ার এর মিউচুয়াল ফ্রেন্ড দেখে কিছুটা অবাক হলো সে। ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে।

“তোর সাথে সারোয়ার কখন থেকে এড আছে-রে? মিউচুয়াল ফ্রেন্ড দেখাচ্ছে কেনো তোর আইডিতে?”

নাজমুর থমথমে মুখে বলে,’আরে কয়েকদিন আগেই এড হয়ছেন উনি। কথাবার্তায় চিনলাম উনিই সেই যাকে তুমি রিজেক্ট করেছিলে।’
ভাইয়ের কথায় শেহরীনা‌ কিছুটি বলল না। সন্দেহটা নিভে গেল তার মন থেকে। তার একটু হলেও সন্দেহ হয়েছিল তবে কী তার ভাইয়ের সাথে সারোয়ার এর কথা হয়? এমনটা সন্দেহের ভিত্তিতে প্রশ্ন করে শেহরীনা। নেতিবাচক উত্তর পেয়ে আর ঘাঁটল না ব্যাপারটা। নাজমুর সারোয়ার এর প্রোফাইলে ঢুকে কিছু শেয়ারকৃত পোস্ট দেখাল।
‘সারোয়ার ভাইয়া আন্দোলনে যেমন যোগ দিয়েছে তেমন পোস্ট করে এখনকার ট্রেন্ডের হিসেবে সেভ_বাংলাদেশি_স্টুডেন্টস লিখে যত পারছেন শেয়ার কমেন্ট করতছেন। ভাইয়ার এই নেতৃত্বাধীন আর মানবতা দেখে আমি মুগ্ধ।’

শেহরীনার মুখটা মলিন হয়ে গেল। মৃদু গলায় জিজ্ঞেস করে।

“আন্দোলনের মধ্যে আঘাত পেয়েছে কোনো?”

“এখনো কোনো খবর পায়নি। তবে মনে হচ্ছে পায়নি।”

“শুন তোর তো এখন কোনো কাজ নেই। যাহ তো বাহিরে কিছু ধান রাখা আছে। সেগুলো ঝেড়ে ঝেড়ে ভালো করে চাল বের করে নেহ্। এক বস্তার মত হবে। গতকাল আমার বান্ধবীর বাবা পাঠিয়েছে ধানগুলো।”

নাজমুর এরও বাসায় সময় কাটছিল না। আন্দোলনের কারণে বাহিরের দিকে যাওয়ার সুযোগ তার হচ্ছিল না মায়ের নিষেধাজ্ঞার কারণে। বিধেয় সে বোনের কথায় দুপায়ে রাজি হয়ে চলে গেল। শেহরীনা ঠোঁট কামড়ে ফোন হাতে নিল। সারোয়ার এর আইডির মেসেঞ্জারে ঢুকে মেসেজ করার চিন্তাভাবনা করছে। কিন্তু সাহসে কুলোয় পাচ্ছে না সে। পরক্ষণে বাহিরের অবস্থা ভেবে মেসেজ করল।
‘নিজের খেয়াল রাখিয়েন। মনে রাখবেন আপনার প্রতিক্ষার কথা।’
মেসেজটা পাঠিয়ে চট করে ডাটা বন্ধ করে দিল। হঠাৎ জোরালো শব্দ শুনে জানালার বাহিরে তাকাতে গেল শেহরীনা। তখনি রূপালি বেগম তাকে টেনে জানালা লাগিয়ে দিল। ফিসফিসিয়ে বলে,’একটুও জানালা খুলিস না মা।’
এই বলে তিনি দৌড়ে বাহিরে গিয়ে দরজা খুললেন। নাজমুর কে এদিক ওদিক ভালো মত খোঁজ করলেন। তাকে না পেয়ে উদগ্রীব হয়ে ঘরের ভেতর এলেন। শেহরীনার মুখে আতঙ্ক ছড়িয়ে গেল। নাজমুর কে সে বাহিরে যেতে বলেছে এখন তাকেই খোঁজে পেলো না তার মা। শেহরীনা দৌড়ে বাহিরে যেতে নিল রূপালি বেগম তাকে দেখে চেঁচিয়ে বলেন,

“একপাও যদি ঘরের বাহিরে দিস তাহলে আর কখনো আমার মুখ দেখবি না বলে দিলাম।”

শেহরীনার পা ঘরের চৌকাঠে এসে থেমে যায়। ছলছলে মায়ের দিকে তাকায়। রূপালি বেগম গম্ভীর হয়ে শেহরীনার বাহু ধরে তাকে তার রুমে টেনে নিয়ে গেল। তাকে বিছানায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দরজা লাগিয়ে দিলেন রূপালি বেগম। শেহরীনা চিৎকার দিয়ে দরজা খুলতে বলছে।
‘মা ওমা আমাকে বাহিরে যেতে দাও। নাজমুর বিপদে মা। ওমা আমাকে বের হতে দাও না। আমার ছোট ভাইটা বিপদে আছে মা। তাকে মে*রে দেবে তারা। প্লিজ মা আমাকে যেতে দাও না!’
রূপালি বেগম নিস্তেজ রূপে ঘরের চৌকাঠ ঘেঁষে বসে পড়লেন। তিনি নাজমুর কে বাহিরে যেতে দেখে তখনি থামাতে চেয়ে ছিলেন। তবে ছেলের মনোভাব দেখে তিনি অবাক। ছেলে তার অধিকারের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ল। সাধারণ শিক্ষার্থীর অসীম প্রেম দেশের মায়ায় প্রতিফলিত। নাজমুর কে থামাতে পারেননি রূপালি বেগম। ছেলে তাদের ফাঁকি দিয়ে চলে গেল আর কখনো ফিরবে না সে। রূপালি বেগম এর চোখে থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। শেহরীনা গুটিয়ে আছে দরজার পাশ ঘেঁষে। ছোট ভাইটার জন্য তার হৃদয় ফ্যাল ফ্যাল করে কাঁপছে। তৎক্ষণাৎ সময় বিলম্ব না করে ফোন হাতে নিয়ে সারোয়ার কে কল দিল।
সারোয়ার তার হাতের ক্ষত মুছে ব্যান্ডেজ করেছে। হা*মলা*য় সেও একটুখানি আহত। গুরুতর আহত দু-তিন জন হয়েছে সারোয়ারদের দলেও। তবে শত্রুদল তাদের সাথে পারেনি। তাদের প্রায় কয়েকজন নিহত হয়েছে।
হঠাৎ ফোনটা শব্দ করে উঠায় সারোয়ার এর ধ্যান গিয়ে পড়ল ফোনের উপরে। স্ক্রিনে শেহরীনা নামটা ভেসে উঠতে দেখে তার মুখে উৎফুল্ল তা ছড়িয়ে গেল। খোশমনে ফোন উঠাতেই শেহরীনার কান্না শুনে স্তদ্ধ হয়ে গেল। চিন্তিত গলায় জিজ্ঞেস করে।
‘কী হলো শেহরীনা আপনি কাঁদছেন কেনো? কী হয়েছে আমাকে বলুন। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনার সাহায্যে এগিয়ে আসতে।’

শেহরীনা‌ ভরসা পেল। কান্না মিশ্রিত গলায় বলে,
‘আআমার ভাই নাজমুর বাহিরে চলে গেছে। এখানে মি*ছিল লাগছে আবারো। অনেক গু*লাগু*লির শব্দ হচ্ছে। একটু আমার ভাইকে বাঁচিয়ে আনুন প্লিজ! আপনি তাকে এনে দিলে আপনি যা বলবেন আমি তাই করব।’

শেহরীনার কথা শুনে সারোয়ার চিন্তিত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে যায়। সঙ্গেই মুখ থেকে ‘আহ’ শব্দ বেরিয়ে আসে তার। শেহরীনার কানে শব্দটা প্রতিধ্বনিত হয়। সে কপাল কুঁচকে জিজ্ঞেস করে।

“আপনার কী হয়েছে? আপনি কী আঘাত পেয়েছেন?”

সারোয়ার জবাব দিতে চেয়েও দিল না মুচকি হেসে বলে,’না যদি আমার জন্য দোয়া স্ত্রীর অন্তরে থাকে। তাহলে আমি আঘাত পাবো না ইন শা আল্লাহ।’
শেহরীনা চিন্তিত ভাব তখনো কাটেনি। তবুও সারোয়ার এর জবাব শুনে তার অন্তর ভেদ করে মুখ থেকেও বেরিয়ে এলো ‘ইন শা আল্লাহ’। সারোয়ার শুনে চোখ বুঁজে তৃপ্তির শ্বাস নিল।লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)মেয়েটা একটু হলেও তাকে তার মনে জায়গা দিয়েছে এই যেনো ঢের। সময় বিলম্ব না করে সে শেহরীনাকে বলে,

“দেখুন নিজের আর আন্টির খেয়াল রাখুন। আঙ্কেল কেও চলে আসতে বলুন। ছোট নাসমাও যেনো বাহিরে না যায়। আমি আসছি নাজমুর কে খোঁজার বন্দোব্যবস্থা করছি।”

শেহরীনা কল কাটতে গিয়েও থেমে মৃদু গলায় বলে,’নিজের খেয়াল রাখবেন প্লিজ!’
সারোয়ার জবাবে নিশ্চয়তা দিতে পারল না তবে সেও মৃদু গলায় বলে, ‘হুম ইন শা আল্লাহ আল্লাহ ভরসা’।
কল কেটে গেল দু পক্ষের।

___
নাছির উদ্দিন দোকানের ভেতর বসে আছেন। দোকান খুললেও মি*ছিলের কারণে দোকানপাট বন্ধ করতে হয়েছে। তিনিও এখন দোকানে আটকে পড়ে আছেন। যতক্ষণ না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ততক্ষণ অব্দি তিনি দোকান খুলতে পারবেন না। তার পাশ্ববর্তী দোকানপাটের লোকদের ও একই অবস্থা। ক্যাশ কাউন্টারে বসে তিনি প্রহর গুনছেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার।
অন্যত্রে ধুপির দোকানে মোঃ আবু সিদ্দিক আটকা পড়েছেন। তিনি একদুয়েক কোট ধুপির দোকানে দিয়ে ছিলেন। তা নিতে এসেছিলেন আজ। চলে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তেই পরিস্থিতি প্রতিকূলে চলে গেল। তিনি অসহায়ত্ব আপন করে নিয়ে বেঞ্চে গাঁ হেলিয়ে দিলেন। ফোন হাতে নিয়ে ছেলে সারোয়ারের নাম্বারে কল লাগালেন। ছেলের ফোন বন্ধ পেয়ে বুঝছেন ছেলে অবশ্য কোনো কাজে ব্যস্ত। তিনি কল লিস্টের মধ্যে থাকা তার নিজের স্ত্রীর নাম্বারটা নজরে এলো। তিনি শতভাগ স্ত্রীর খেয়ালে মগ্ন হয়ে যান প্রতিবার প্রতি ক্ষণে। কী করবেন ভালো যে বাসেন প্রচুর। ফোনের গ্যালারিতে গিয়ে একঝলক বিয়ের ছবি বের করেন। সেখানে মলিন চেহারায় পূর্ণ বিবাহিত বধুর বেশে দাঁড়িয়ে থেকে কাপল পিক তুলেছিলেন তারা। এর পর থেকে কাছাকাছি আসার গল্প , কাছে এসেও দূরত্ব এর আভাস কেনো যেনো তিনি অনুভব করতেন। সন্তান এলো পৃথিবীতে তিনি বাবা হলেন তবুও অনুভবে আদৌ চিন্তা করেন তার স্ত্রী কী তাকে মন থেকে আপন করে ছিল? এই এক প্রশ্নের উত্তর একটাই হোক সেই আকাঙ্ক্ষার রেশ ধরে এতটা বছর তিনি আশাবুন্ধে বসে আছেন। স্ত্রীর ছবির দিকে তাকিয়ে থাকা অবস্থায় তিনি হট্টগোল শুনতে পেলেন। জোরালো গু*লিবি*দ্ধ শব্দ শুনে তিনি দাঁড়িয়ে যান। ধুপিওয়ালা ভয়ে গুটিয়ে গেল। দোকান বন্ধ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় আছে সেও। কিন্তু একজন সৎ প্রফেসর হিসেবে মায়া প্রেম তার হৃদয়ে অটল। তিনি তৎক্ষণাৎ বাহিরে যাওয়ার কথা ভাবলেন। তখনি তার ফোনে টুং করে শব্দ হলো। তিনি ফোন চোখের সামনে ধরলেন। ফেসবুকে নোটিফিকেশন আসছে। এ দেখে তিনি ফেসবুক চালু করতেই দেখতে পেলেন অহরহ কোটা বিষয় নিয়ে পোস্ট হচ্ছে। এসব দেখে তিনি ঘাবড়ে গেলেন। তৎক্ষণাৎ ছেলের ফোনে লাগাতার কল দিতে লাগলেন।

____
নাছির উদ্দিন অস্থির হয়ে বসে কান পেতেছেন দোকানের সাটারে। গু*লিবিদ্ধ মা*রপি*ট স্লোগানের মধ্যেই আরম্ভ হচ্ছে। তবে হঠাৎ তার দোকানে কেউ জোরালো ভাবে হাত পেটাতে আরম্ভ করলো। তিনি অবাক ভয়ভীতি নিয়ে গুটিয়ে গেলেন। দোকানের সাটার তুলবে না বলেই পণ করে রেখেছেন তিনি।

চলবে……..
(সবাই ক্ষমা করবেন। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বইটই এ বই পাবলিশ হওয়া বন্ধ থাকবে। আপাতত শুধু প্রচারণা চলবে। বই প্রকাশ হলেই আমি জানিয়ে দেবো ইন শা আল্লাহ। আমার লেখা নতুন প্রথম গল্প বইটই এ আসবে ‘হৃদয়ের সঙ্গমে অভিমান’ দাম মাত্র ৪০ টাকা। গল্পের কিছু অংশ দিলাম। কেমন লেগেছে জানাবেন অবশ্যই।)

রিজওয়ান রেগে বসা থেকে উঠতে চাইলে অরনিয়া স্বামীর হাত চেপে ধরে। রিজওয়ান থেমে যায়। মেয়েটার শরীরের উষ্ণতা তার শরীরের উষ্ণতা সমেত হৃদয় নিংড়ে দেয়। আজ মেয়েটার শরীরের উষ্ণতায় তার ভস্ম হওয়ার ভয় আছে। ঢোক গিলে কাঁপা শক্তপোক্ত হাতে অরনিয়ার নরম হাত সরিয়ে তার শিউরে বসে। অরনিয়া দেখে অন্য কিছু ভেবে নেয়। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে। রিজওয়ান বোকার মত চেয়ে রইল। অবাক তর গলায় জিজ্ঞেস করে।

“কী হলো কাঁদছো কেনো?”

“আপনি আমার হাত সরিয়ে দিয়েছেন কেনো? আমি কী খুব বড় অন্যায় করেছি? আর আমি কোনো শাড়ি পরিনী। এই দেখেন এটা থ্রিপিসের জর্জেট উড়না।”

জ্বরে ভোগান্তি অরনিয়া অবুঝের মত স্বামীকে প্রমাণ দেখাতে শরীরে পেঁচানো উড়নাটা সরিয়ে নেয়। এতে তার ব্লাউজ আর পেটিকোট দৃশ্যমান হয়ে যায়। ফর্সা কোমল পেটের মধ্য অংশের গর্তটির পাশে বাদামী তিল দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। এমুহুর্তে কান্নাময়ী নারীটিকে কোনো অপ্সরা থেকে কম মনে হচ্ছে না রিজওয়ান এর কাছে। আবেদনময়ী লাগছে মেয়েটাকে। না চেয়েও মেয়েটার উপর তার নিষেধ ভালোবাসা প্রকাশ করার তীব্র বাসনা জাগছে। অরনিয়ার বন্ধ কান্নারত চোখের উপর ঝুকে আসে রিজওয়ান। অরনিয়া নিজের মুখের উপর স্বামীর মুখের আদল অনুভব করে কান্না থামিয়ে ফেলে। বন্ধ চোখে স্বামীর নৈকট্য অনুভব করতে সক্ষম। ঢোক গিলে নিজের ঠোঁটজোড়া কামড়ে ধরে অরনিয়া। এ দৃশ্যটা যেন রিজওয়ান এর বুকে আগুনের ন্যায় লাভার বর্ষণ করতে উদ্যত করে চলেছে। আকস্মিক দুজনের মাঝে নিরবতা ভর করে। দুজনে নিজেদের ঘন নিশ্বাসের প্রতি আবেগ বয়ে নিচ্ছে। দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে অরনিয়া চট করে তার মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নেয়। জোরে জোরে শ্বাস ফেলছে মেয়েটা। রিজওয়ান এর ঠোঁটে চমৎকার হাসি। তার শুকনো, উস্কো ঠোঁটজোড়া মেয়েটা ভিজিয়ে সতেজ করে দিয়েছে। অথচ এ মেয়েটা কিনা আবার তালাকনামা চাই ভাবা যায়! মিটমিটে হাসল মেয়েটার অবুঝ কথাগুলো স্মরণ করে। রিজওয়ান নিজের বউকে আর লজ্জায় ফেলল না।

আমার নতুন গল্প ‘হৃদয়ের সঙ্গমে অভিমান’ বইটই এপ্যাসে প্রকাশিত হবে ইন শা আল্লাহ। দাম মাত্র ৪০ টাকা তার বেশি হবে না।

(কালকে #তুমিময়_বধুকন্যা গল্পটা দেবো ইন শা আল্লাহ। এক_উম্মাদনায়_প্রেম দুই পর্ব একসাথে দেবো তাই একটু রিচেক দিতে হবে লিখা আছে গল্পের নতুন পর্ব দুটো ইন শা আল্লাহ পেয়ে যাবেন।🥰)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here