প্রিয়অপ্রিয়ের_সংসার #লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান) #পর্ব_০২

0
121

#প্রিয়অপ্রিয়ের_সংসার
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_০২

“শুনো মা আমি বলি কী ঐ পাত্রীর বাবাকে কল করে বিয়ের জন্য মানা করে দাও। আরে ভাইয়ার জন্য আমার নিজের ননদ মাইমুনার চেয়ে রূপে,গুণে গুণান্বিত অন্য কাউকে পাবে না। হ্যাঁ এটা মানছি যে সে অল্প শিক্ষা অর্জন করেই বাসায় বসে সোশ্যাল জগতে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছে। তার মানে এই না যে সে কিছুই করতে পারে না। জানো মা সে পড়াশুনা ছাড়লেও কাজের হাত তার খুব পটু। তুড়ি বাজাতেই সব কাজ শেষ। তাকে রেখে তুমি কেনো অন্য কোথাও মেয়ে খুঁজতে যাও বুঝি না আমি। কতবার বলেছি মাইমুনার দিকে ভাইয়াকে ভিড়িয়ে নাও। কিন্তু না তুমি তো মানোই না আমার কথা।”

জাহানারা পুষ্প কপাল চাপড়ে মেয়ের মাথায় চাপড় মারেন। সারোয়ার এর বোন সাজিয়া কপাল কুঁচকে মায়ের দিকে অভিমানী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,

“হ্যাঁ হ্যাঁ এখন আমাকেই বুঝাবে তুমি।‌ আর‌ বুঝানোর দরকার নেই। আমি তোমার সারাজীবন এর শান্তির জন্য সুপুত্রী খুঁজে বেড়ায় আর তুমি তাদের কে ছাঁটাই করে আমার মুখের মধ্যে থা*প্প*ড় দাও।”

“দেখ মা আমি তোর ভাইয়ার মুখের উপর কথা বলতে পারুম না। দেখলি না পাত্রীর বাসার থেকে বের হতেই মানা করছিলাম শুনছিল তোর ভাইয়ে? শুনেনি উল্টো নিজ মুখী কথায় অটুট থেকে আমায় চুপ করিয়ে দিয়ে ছিল। পারলে তুই নিজে গিয়ে বল যাহ্।”

সাজিয়া মায়ের কথা শুনে দমে গেল। এতক্ষণের উচ্চ আওয়াজ মিইয়ে গেল। সে তার ভাইকে জঙ্গের মত ভয় পায়। কেননা একদা সময় তার স্বামী দেওয়ান শেখর এর কথা অমান্য করে সে বাপের বাড়িতে চলে এসে ছিল। তার পিছু পিছু তার স্বামী দেওয়ান ও আসে। এতে সাজিয়ার দাপট দ্বিগুণ বেড়ে যায়। সে দেওয়ানের উপর মানসিক অত্যাচার শুরু করে। তখন বাড়িতে তার ভাই সারোয়ার ছিল না। রাজনৈতিক সুখ্যাত এক ব্যক্তির কেইসের তদন্তে ব্যস্ত ছিল। দেওয়ান কে একলা পেয়ে সে তার মাথায় খালি এক কথা ঢুকানোর চেষ্টা করে।
‘মাইমুনাকে ভাইয়ার সাথে বিয়ে করাতে রাজি করাও। এতে আমাদের লাভ বেশি। আমার বাবা জমির অর্ধশতাধিক অংশ ভাইয়ার নামে করে রেখেছে। ভাইয়ার সাথে মাইমুনার বিয়ে হলে সে রানীর মত রাজ করবে। আর তোমার মায়ের বয়সও হয়েছে অনেক। তারও তো বিশ্রামের দরকার। এমনিতে উনি থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। উনার সুষ্ঠু চিকিৎসা না হলে আগের চেয়েও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়বে। তাই বলছিলাম কী উনাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠালে ভালো হবে। দেখো না আমিও বাচ্চার পেছনে লেগে থাকি আর তুমিও অফিসের কাজে শহরের বাহিরে চলে যাও। সব সামলে উঠতে আমার কষ্ট হয়।’

একদিকে বউয়ের ইমোশনাল কথাবার্তা আরেকদিকে মায়ের অসুস্থতার চিন্তা দুদিকের বেড়াজালে আটকে পড়ে দেওয়ান। সাজিয়াও সুযোগ বুঝে তীর মারতে ভুলেনি। মানসিক ভাবে চাপ দিয়ে স্বামীকে রাজি করিয়েই ছাড়ে। দেওয়ান নিজ মনে না চেয়েও বউয়ের কথার পরিপ্রেক্ষতা সঠিক বিবেচনা করে সর্বপ্রথম তার মাকে বৃদ্ধাশ্রমে নেওয়ার ব্যবস্থা করে। এর মাঝে দুদিনের ছুটিতে বাড়িতে আসে সারোয়ার। তার হাসিমাখা মুখে গম্ভীরতা ছড়িয়ে পড়ে যখন সে জানতে পারে সাজিয়া বাড়িতে চলে এসেছে সামান্য এক তর্কের ভিত্তিতে। তার চেয়েও বড় ব্যাপার মেয়েটা কী বুঝে ঐ বৃদ্ধ মহিলাকে সন্তান ছাড়া করতে চাইছে সারোয়ার খুঁজে পেল না। পরক্ষণে ঘোর ভাবে ভাবার পর সারোয়ার তার বোনের শয়তানি বুদ্ধির বিষয়টা বুঝতে পারে। তখনি সকলের সামনে থেকে বোনকে আঁকড়ে ধরে রুমে এনে দরজা আটকে দু দুবার চ’ড় দেয়। সেদিন সাজিয়ার ঠোঁট ফেটে রক্ত গড়িয়েছিল। কিছু উচিৎ কথা শুনিয়ে দেওয়ানকে বুঝিয়ে সাজিয়াকে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে ছিল। এ নিয়ে কান্নাকাটি করেও লাভ হয়নি সাজিয়ার। সারোয়ার এক কথার মানুষ। সাজিয়া পরবর্তীতে ক্ষমা চেয়ে ছিল। সারোয়ার তখনো তার জেদের কাছে অটল। তার মাসখানেক পরে অবশ্যই সারোয়ার ক্ষমা করে দিয়ে ছিল। বিধেয় সে আবারো তার বাপের বাড়িতে অবস্থান করতে পারছে।

“কী হলো আগের ঘটনা কল্পনা করা শেষ?”

মায়ের কথায় সাজিয়া চোখ নিচে করে নিল। হাত মুষ্টিবদ্ধ করে মাথা নেড়ে হ্যাঁ জানায়। জাহানারা পুষ্প মৃদু হেসে দেওয়ালের দিকে মুখ করে বলেন,

“তোর ভাইকে আমি সবচেয়ে ভালো চিনি। তার প্রতিটা রূপ-আচরণের মূলভিত্তি হলো তোর বাবা। তার রগ পেয়েছে ছেলেটা। মায়ের কোনো কিছুই পায়নি সে। তার একটাই কথা আমিই ভুল আর তার বাবা সঠিক।”

“এটা তোমার ভুল ধারণা মা।”

ভাইয়ের রূফ গলায় কথাটা শুনে ইতস্তত করে মায়ের সাথে গাঁ ঘেঁষে বসে পড়ে সাজিয়া। যেনো ভাইকে বসতে জায়গা করে দিলো মায়ের সামনের আসনে। সারোয়ার রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। দরজায় টোকা দিয়ে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ভেতরে আসার অনুমতি চাইল। ছেলেটার ভদ্রতা সবচেয়ে বড় তার নিকট। জাহানারা পুষ্প আমতা আমতা করে আসার অনুমতি দিলেন। সারোয়ার এসে মা-বোনের কাছ থেকে যথেষ্ট দূরত্ব রেখে সিঙ্গেল চেয়ার টেনে বসল। হাঁটুর উপর হাত রেখে কপাল কুঁচকে মা-বোনের দিকে সূক্ষ্ম দৃষ্টি রাখল। জাহানারা পুষ্প ঢোক গিলে বলেন,

“বাবা সাজিয়ার কথায় কিছু মনে করিস না। সে তোর ভালো চাই দেখেই মাইমুনার সাথে তোর বিয়ের বন্দোবস্ত করতে চাই।”

“মা প্রথমত আপনি জানেন আমার বয়স কত? মা হিসেবে আপনার কাছেই আমার বয়সের সঠিক উত্তর থাকার কথা কিন্তু সেই উত্তর আপনার জানা নেই। হয়ত বয়সের আর সংসারের টানাপোড়েনে সেই উত্তর অজানা থাকার কথাই। এতে অবশ্য আমি দোষ দিচ্ছি না। আপনারা শেহরীনা কে দেখতে পারেন তবে মাইমুনা কে নয়। মাইমুনার বয়স আর আমার বয়সের তফাৎ খেয়াল করেছেন? সে আমার থেকে বারো বছরের ছোট একটা মেয়ে। তাকে আমি সাজিয়ার মত বোনের চোখেই দেখে থাকি। সেই স্বল্প বয়সী মেয়ের বুঝজ্ঞান কতটুকু হতে পারে ভাবেন তো দেখি!”

জাহানারা পুষ্প এবার যেনো গলে গেলেন। ছেলের কথায় সত্যতা লুকিয়ে আছে। মাইমুনা মেয়েটি চঞ্চল আর খুব জেদি প্রকৃতির। তার কাছে শিক্ষা মর্যাদা নেই বললেই চলে। এসবের দিক থেকে আবার এগিয়ে আসে শেহরীনা মেয়েটি। মায়ের অবিচল মুখশ্রী দেখে সারোয়ার মৃদু গলায় বলে,

“আপনি এতটা চিন্তা করবেন না মা। সবটা আপনার এই সন্তান সামলে নেবে। যেহেতু আমি শেহরীনার বাবার কাছ থেকে একসপ্তাহ সময় নিয়ে ফেলেছি। সেহেতু আমি শেহরীনাকে পর্যবেক্ষণ করে যাচাই করে নিজের জন্য বাছাই করতে চাই।”

সাজিয়া শুনে মুখ বাঁকিয়ে বলে,

“শুনেন ভাইয়া বয়স নিয়ে এতো মাতামাতি কিসের? মেয়ের অল্প বয়সে বিয়ে করাই উত্তম। নাহলে বয়স বাড়তেই যৌবনের ভিন্ন রঙিন মোহে পড়ে বিপথে চলে যায়। আমার কেনো যেনো মনে হয় ঐ শেহরীনা মেয়েটার ও কোথাও চক্কর চলছে। দেখেননি কীভাবে আপনাকে রিজেক্ট করল! এতো বড় ব্যারিস্টার পদবী প্রাপ্ত ব্যক্তিকে কেউ মুখের উপর না করতে পারে? অবশ্য যে করে তার অন্য কোথাও চক্কর নিশ্চয় চলছে। এদিকে মাইমুনা কে দেখেন তার মনের মত নিষ্পাপ মেয়ে আমি আর দুটো কোথাও দেখিনি।”

সারোয়ার নির্লিপ্ত হয়ে বসে রইল। বোনের কথার প্রসঙ্গে জবাব দেওয়ার মন ইচ্ছে পোষণ করল না। বোনের অহেতুক কথাবার্তা তার কাছে নতুন কিছু নয়। মায়ের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বলে,

“আমার আজ মন্ত্রিসভায় মিটিং আছে। নতুন কেইস হাতে এসেছে। সেই কেইসের তদন্তে বের হচ্ছি। বাড়ি আসতে রাত হতে পারে আপনারা খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে যাইয়েন। আমার কাছে এক্সট্রা চাবি আছে। নিজ দায়িত্বে রুমে আসতে পারব।”

জাহানারা পুষ্প মৃদু হাসলেন। ছেলের স্বভাব অবিকল তার স্বামীর মতন। ঐ মানুষটাও বিন্দুমাত্র কষ্ট দিতে চাই না তার স্ত্রীকে। সাজিয়া তার মায়ের মন গলেছে দেখে দাঁতে দাঁত চেপে মায়ের পাশ থেকে সরে উঠে পড়ল। জাহানারা পুষ্প গোলগাল মুখ করে মেয়ের দিকে তাকান। সাজিয়া ফোঁস ফোঁস করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। মা হয়ে জাহানারা পুষ্প মেয়েকে কিছুটি বললেন না। তার মধ্যে বাপের বাড়িতে কয়েক দিনের জন্য বেড়াতে আসা মেয়েটার। ফলে চুপটি করে ছেলে-মেয়েদের কাণ্ড দেখে গেলেন।

____
শেহরীনার খুব খিদে পেয়েছে। কোনো মতে আইন প্রচ্ছদের ক্লাস শেষ করে বেরিয়ে পড়ে সে। তার পিছু পিছু তার ফাজিল বন্ধুগণ চলে এলো। শেহরীনা উত্তপ্ত লাভার মত ভড়কে পড়ে তাদের উপরে। শেহরীনার বান্ধবী ইপশিতা কোমরে হাত রেখে ঠোঁট কামড়ে বলে,

“এটা কোনো কথা তুই ব্যারিস্টার কে বিয়ে করতে মানা করলি? মানে তোর মাথায় এতটা ঘিলু ভরা যে এত বড় পদবীর মানুষ কে রিজেক্ট করে বসে আছিস। আমি হলে তো তার কোলে বসে যেতাম।”

শেহরীনা দাঁতে দাঁত চেপে ইপশিতার বাহুতে চাপড় দেয়। সে ‘আউচ’ করে বাহুতে মালিশ করে কাঁদো কাঁদো মুখ করে তাকায়। শেহরীনার বন্ধু ফারদিন ইপশিতাকে ঠ্যালা মেরে সরিয়ে শেহরীনার গাঁ ঘেঁষে বসল। ইপশিতাকে উদ্দেশ্য করে বলে,

“আসলে তোরই মাথায় বুদ্ধিসুদ্ধি নাই ইপু। শেহু যদি ইজিলি ঐ ব্যারিস্টার কে হাতে নিয়ে চেপে ধরে তাহলে ব্যারিস্টার কী কোনো পাগলও তার সাথে বিয়ে করতে চাইবে না।”

শেহরীনা শুনে ভ্রু কুঁচকে ফারদিনের তাকায়। ফারদিন এর সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা জাফরান ও একই ভঙ্গিতে তাকিয়ে আছে। সকলের দৃষ্টিজোড়া দেখে ফারদিন আমতা আমতা করে বলে,

“আরে আমার কথার অর্থ হলো শেহরীনার বয়স এখনো বেশি হয়নি। ব্যারিস্টার হলেও তার চারিত্রিক গুণ সম্পর্কে আমরা জানি না। সে যদি ভবিষ্যতে বিয়ের পর শেহরীনাকে পড়তে না দেয় তখন? তখন তো বেচারীর স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে যাবে। তাই আমার মনে হয় তার বেয়াদবি করাটা একেবারে উচিৎ হয়েছে।”

শেহরীনা আনমনে ফারদিনের কথাটি ভাবল। তার কাছে অবশ্য মনে হচ্ছে না যে সারোয়ার তাকে পড়াবেন না অথবা ঘরকুনো বউ বানিয়ে রাখবেন তবুও মনের কথায় সাড়া দিলে চলবে না। এই ভেবে সেও তার কথায় অটল রইল।
হঠাৎ তাদের মাঝে খাবারের অর্ডার নিতে ছেলে একটা আসল। তারা তাদের মত খাবার অর্ডার দিয়ে আড্ডায় মশগুল হলো। কথার ছলে জাফরান এর নজর পড়ল শেহরীনার পেছনের টেবিলে বসা অন্য একটি গ্যাং এর দিকে। তারাও আইন বিভাগের ছাত্র ছাত্রী তবে এক সেমিষ্টার আগে রয়েছে তারা। সিনিয়র ব্যাচ হলেও তাদের শয়তানি কাণ্ডকীর্তি সকলের জানা। এদের কী ভেবে আইন বিভাগে ভর্তি করানো হয়েছে কে জানে? জাফরান তার হাত দিয়ে টোকা দিয়ে সর্তক বাণী ইঙ্গিত করে সবাইকে। শেহরীনা দেখে চুপচাপ গল্পে মেতে রইল। ইপশিতা প্রচুর কথা বলে। তার কথার মাঝে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে শেহরীনা।
তখনকার ছেলেটা খাবার নিয়ে এলো। যে যার মত খাবার নিয়ে নেয়। শেহরীনা যেই না তার খাবারটুকু মুখে নিতে গেল তখনি তার হাত চেপে ধরে সেই খাবারটুকু খেয়ে নিলো এক যুবক। শেহরীনা ভ্রু কুঁচকে বিকৃত মুখ করে নিলো। হাতটা ছাড়িয়ে টেবিলে থাবা মেরে তাকাল যুবকের দিকে। তার পরণে বাদামী রঙের শার্ট আর কালো জিন্স,মুখের আদল দেখে বোঝা ভার তার মনে কী চলছে? ভাঁজ করা চুলের অর্ধেক অংশ বাতাসের তালে উড়ছে তাকে বেবি হেয়ার বলে। যুবকটি ভ্রু নাচিয়ে বলে,

“পছন্দ হয়েছে কী কুমারিনী?”

“অলুক মানুষ কে আমার কস্মিনকালেও পছন্দ নয়।”

“ইশ এভাবে বলো না কুমারিনী। সিনিয়র কে সম্মান দিয়ে পছন্দ হয়েছে বলতে হয় বুঝেছো?”

“সেইটা আপনার ব্যাপার। আইম নট ইন্টারেস্টেড।”

“ওহ কুমারিনী বুঝি রেগে গেল? কী তোমার হাত থেকে একটু ভালোবাসাময় আদর খেয়েছি এতেই এতো রাগ বাবা। বিয়ে হলে তখন কী করবে শুনি?”

ফারদিন রেগে দাঁড়িয়ে যেতে চাইলে শেহরীনা তার হাত দেখিয়ে থামিয়ে দিলো। সে ভার্সিটিতে কোনো ধরনের ঝগড়া বিবাদ চাইছে না। এটা কোনো কোর্ট ক্যাচালির স্থান ও নয় , উপযুক্ত সময় ও নয় তথাপি কথার তালে কথা বেড়ে হাতাপায়ি হতে পারে। শেহরীনার ধৈর্য্য দেখে যুবকটি তার বুকের উপর হাত রেখে বলে,

“উফ মেরে ফেললা। এত ধৈর্য কেমনে আসে তোমার? আমি হলে কতক্ষণে চ’ড় লাগিয়ে দিতাম।”

শেহরীনা ভ্রু কুঁচকে বলে,’চ’ড় মা*রা*র এই স্থান উপযুক্ত নয় মিস্টার কায়েসাম তাহর এখন যদি আমি হাত তুলি তাহলে তা আপনার জন্য বেশি একটা সুবিধার হবে না। আফটার অল জুনিয়রের হাতে সিনিয়র এর চ’ড় খাওয়াটা বেমানান।’

কায়েসাম তাহর হাত মুষ্টিবদ্ধ করে অপমান টুকু গিলে নিল। দাঁত দেখিয়ে হেসে বলে,’ওয়াও নাইচ এটটিটিউড গার্ল। তাই তুমি আমার এতটা পছন্দের।’

“আপনি আমার ততটা অপছন্দের যতটা আপনি আমায় পছন্দ করেন। নাউ প্লিজ আমার সাথে খাবারটুকু শেয়ার করুন। আমি আবার বেশি দয়ালু কেউ খেতে চাইলে ভিক্ষা চাওয়া ছাড়াই দিয়ে দেয়।”

কায়েসাম এর অপমানিত রূপ দেখে তার বন্ধু এগিয়ে আসতে চাইলে সে থামিয়ে দেয়। শেহরীনার মুখের আদলের দিকে তাকিয়ে থেকে জবাব দিলো।

“এই দয়ালু ব্যক্তির জন্য ভিক্ষুক হলেও আমার সমস্যা নেই।”

ফারদিন গলা উঁচিয়ে বলে,’তাহলে কোন মুহুর্তের অপেক্ষা করছেন ভাইয়া এখনি ভিক্ষা করতে শুরু করেন। আমরাও এর বিনিময়ে কিছু পয়সা দিয়ে সওয়াব কামানোর সুযোগ পেতে চাই।’

কায়েসাম মৃদু হাসল ফারদিনের দিকে একপলক তাকিয়ে শেহরীনাকে ‘বাই জান’ বলে ক্যান্টিন থেকে চলে গেল। শেহরীনা পাত্তা অব্দি দিলো না উল্টো ফারদিনের কথায় হাসতে লাগল। কায়েসাম মেয়েলী হাসির শব্দে পেছন ফেরে শেহরীনার দিকে তাকায়। সেও খেয়াল করে পানির বোতল নিয়ে তার হাত ধুতো করল। এতে গম্ভীর হয়ে গেল কায়েসাম এর মুখশ্রী। কেননা শেহরীনার যেই হাত সে ছুঁয়ে ছিল সেই হাতই শেহরীনা তাকে দেখিয়ে ধুয়েছে। গম্ভীর মুখখানা নিয়ে কায়েসাম ক্যান্টিন ত্যাগ করল।

চলবে……..
(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমার পেইজ লিঙ্ক ফলো এন্ড লাইক করে নিন সবাই
https://www.facebook.com/tasmihaalraiyan?mibextid=ZbWKwL)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here