প্রিয়অপ্রিয়ের_সংসার #লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান) #পর্ব_১১

0
90

#প্রিয়অপ্রিয়ের_সংসার
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_১১

নাছির উদ্দিন রেগেমেগে রুমের ভেতর পায়চারী করছেন। রূপালি বেগম স্বামীকে অত্যাধিক রাগান্বিত দেখে থমকে দাঁড়িয়ে রইলেন। রুমে যেতে তিনি ভয় পাচ্ছেন। তবুও স্বামী বাড়ি ফিরেছেন। দেখা না করেও পাচ্ছেন না। তৎক্ষণাৎ রান্নাঘরে গিয়ে গ্লাসে পাউডার দুধ, দই আর তরল দুধ মিশিয়ে সেখানে বরফ দুটো দিয়ে লাচ্ছি বানিয়ে রুমের দিকে চলে আসলেন। দরজায় টোকা দিয়ে ভেতরে ঢুকলেন। নাছির উদ্দিন এর চেহারা অমাবস্যার‌ ন্যায় কালো বর্ণে ছেয়ে আছে।
রূপালি বেগম হাত এগিয়ে গ্লাসটা দিলেন। নাছির উদ্দিন দেখে ছুঁ মেরে গ্লাসটি নিয়ে এক চুমুকে শেষ করে ফেললেন। বরফ দুটো গ্লাসের মধ্যে গলিয়ে গিয়েছে। ছোট অংশ বিদ্যমান। তিনি চোখ বুঁজে জোরালো শ্বাস ফেলে বিছানায় লম্বা হয়ে টান টান করে শুইয়ে পড়লেন। রূপালি বেগম অবাক হচ্ছেন। আজ প্রথম স্বামীকে রেগে এসে শান্তভাবে শুয়ে পড়তে দেখলেন। তিনি ইতস্তত বোধ করছে প্রশ্ন করতে। কিন্তু মনে সাহস জুগিয়ে তিনি স্বামীর পাশে ঘেঁষে বসলেন। নাছির উদ্দিন উল্টো দিক মুখ ফিরিয়ে নিলেন। যথাসাধ্য নিজ স্ত্রীকে এড়িয়ে যাওয়ার দিক প্রকাশ পেয়েছে নাছির উদ্দিন এর কাণ্ডে। রূপালি বেগম হাত এগিয়ে ছুঁয়ে দেখলেন না। শুধু মৃদু গলায় শোনান।

“আপনার কী হয়েছে জানি না। তবে যা হয়েছে উচিৎ সময়ের শিক্ষা ভেবে সামনে থেকে ভুল সংশোধন করে ফেলেন।”

নাছির উদ্দিন শুনে কোনো প্রতিক্রিয়া করলেন না। পিনপতন নীরবতা বিদ্যমান। রূপালি বেগম পুনরায় সাহস করে আংশিক মনের ভাব প্রকাশ করেন।

“আমি এটুকু জানি আপনি সামনাসামনি শেহরীনাকে মানসিক অত্যাচার করে তৃপ্তি পেতে চান। এতে আপনি নিজেও অতৃপ্তি পান। কারণ আপনি জানেন সে আপনারও অংশ। আপনার রক্ত ও তার শরীরের মধ্যে বয়ে যাচ্ছে। এটা মানি আমি যে, তার আপন বাবা মা মেয়েকে মাঝ পথে ফেলে চলে গেলে। সেই মা অসহায় হয়ে বাড়ি ফেরে আসে। তখন সেই মায়ের বাবা অন্যায় রাস্তা বেছে আপনার মত গুণ মান্য পুরুষের গলায় বিয়ের তর্কমা পড়িয়ে দিলেন। আপনাকে বিয়ের আগে বলার চেষ্টা করলেও তারা আমায় বন্দি করে রাখে। আপনিও পরোয়া না করে আমায় অত্যাচার করলেন। করেও যাচ্ছেন তাও আমি কিছু বলছি না। কারণ এই আমার সহনশীল হয়ে গিয়েছে। শেহরীনা গাঁয়ে পিঠে বড় হয়েছে কিন্তু জ্ঞান বুদ্ধির ক্ষেত্রে সে এখনো অবুঝ। আমাদের মা মেয়ের সাথে আপনার ওমন ব্যবহারের কারণ একটাই আপনার অমতে বিয়ে পড়ানো। সেটার জন্য আমি দীর্ঘ কয়েক বছর মুখে কুলুপ এঁটে সংসার করেই যাচ্ছি। অথচ আমিও প্রেমে পড়েছিলাম একজনের , আপনিও পড়েছিলেন তেমনি একজনের প্রেমে। প্রেম বড্ড বিষাদময়।”

রূপালি বেগম এর চোখে তার প্রথম ভালোবাসার মানুষটার ছবি ভেসে উঠে। তার সাথে কাটানো রঙিন সোনালী মুহূর্ত স্মৃতি হয়ে তার মনের কেন্দ্রে ভেসে উঠল। দৃশ্যপটে রূপালি বেগম এর ষোল বছরের কিশোরী আবেগের জোয়ার প্রবল থাকে। সেসময় বিশ বছরের এক যুবক তার হাতে এক বক্স আইসক্রিম ধরিয়ে বলে,’এটা আমার সুন্দরী রূপকন্যার জন্য।’ যুবকের আদুরীয় ভঙ্গিতে বলায় রুপালি লাজুক লতার ন্যায় মিইয়ে উঠল। বক্সটি হাতে নিতেই যুবকটা তার হাতে চামচ ও দিলো। রূপালি খোশমনে এক চামচ আইসক্রিম নিয়ে প্রথম মুখ পান করাল তার প্রেমিক পুরুষকে। সেই প্রেমিক পুরুষ পরবর্তীতে তার আবেগপূর্ণ প্রেমিকাকে খাইয়ে দিলো। প্রচণ্ড গরমের মাঝে শীতল হয়ে আইসক্রিম খাওয়ার ব্যাপারটা দারুন।

“আমি প্রেম করে ছিলাম কী না তুমি জানো নাকি?”

আচমকা নাছির উদ্দিন এর করা প্রশ্নে ধ্যান চ্যুত হলো রূপালি বেগম এর। তিনি চোখ ফিরিয়ে দেখেন নাছির উদ্দিন তখনো মুখ ফিরিয়ে আছেন। এ সুযোগে তিনি নিজের চোখের অবাঞ্ছিত জল মুছে নিলেন। অবাঞ্ছিত জল বলে আখ্যায়িত করায় তিনি প্রচণ্ডভাবে হৃদয়ে কম্পন অনুভব করলেন। অবাঞ্ছিত জল যেই জলের কোনো অনুভূতি নেই, যেই জল মুছে আগলে নেওয়ার মত কারো স্পর্শ নেই, যেই জলে সন্দেহের বীজ রোপণ হয়, যেই জল সংসার জীবনে অতীত মনে করিয়ে দিতে সক্ষম। সেই জল অস্তিত্ব হীন বটে।

“হুম বলো শুনো নাই আমার কথা?”

স্বামীর কথায় হকচক করে তিনি আঁচল দিয়ে মুখ মুছে স্বাভাবিক হয়ে বলেন,

“আপনার হাবভাব দেখে অনুমান করলাম।”

“মানুষের হাবভাব দেখলে কী বোঝা যায়? আমি প্রেম করে ছিলাম?”

“হুম প্রেমে আর যাই হোক প্রেম ত্যাগের চেয়ে প্রেম হারিয়ে ফেলার যন্ত্রণা চিরঞ্জীব।”

নাছির উদ্দিন পুনরায় কথা বললেন না। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন,

“আজ শেহরীনা বাসায় এলে একসাথে খেতে বসব। তার না আসা অব্দি শুকনো তেল ছাড়া একটা রুটি দাও সাথে ফ্রিজে খুলে দেখো সেখানে গত রাতে খেজুর গুড় এর বোতল রেখেছিলাম। গুড় বের করে বাটিতে রাখো আমি আসতেছি মুখহাত ধুয়ে।”

রূপালি বেগম ‘হুম আচ্ছা’ বললেন। নাছির উদ্দিন শুয়া থেকে উঠে ওয়াশরুমে গেলেন। রূপালি বেগম বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লেন। সামান্য অগোছালো হয়েছে। কাঁথা ঠিক করে বালিশ জায়গা মত রাখার সময় তিনি বালিশের কভার ধরে হতভম্ব হয়ে গেলেন। যেই বালিশে তার স্বামী মাথা রেখে শুয়ে ছিলেন সেই বালিশের কভার ভিজে আছে। ভিজে অনুভব হওয়া অংশে বার কয়েক হাত চেপে গন্ধ শুঁকে নেয়। রূপালি বেগম এর অনুমান সত্য হলো। তার স্বামী তার অগোচরে কাঁদছিল। তবে কী তিনিও কষ্ট পেয়ে কেঁদে তৃপ্তি পান? না হয় কান্নার তো অন্য কারণ তিনি দেখছেন না। মুখ ফুটে জিজ্ঞেস করলে লজ্জায় সামনে অব্দি আসবেন না তিনি। তখন পরিস্থিতি হিতে বিপরীত হবে। বালিশের কাভারের ভেতর শক্ত পাথর রেখে সূর্য বরাবর রশ্নি পড়ে মত রাখতে তিনি চেয়ার এনে রাখেন। ভাবনা অনুযায়ী কাজ করে স্বামীর কথামত রান্নাঘরে গেলেন।

___
“ইপশু মা শোন তোর বাবার কথা কী রাখবি?”

ইপশিতা ফ্রক পরিহিত অবস্থায় হিজাব বাঁধছিল মাথায়। তখনি পেছন থেকে তার বাবা যুবুন মিয়া মেয়েকে দেখে আহ্লাদী কণ্ঠে কাছে গিয়ে তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন। বাবার হঠাৎ করুন কণ্ঠস্বর শুনে থমথমে মুখে বাবার দিকে ফিরল সে। যুবুন মিয়া মেয়ের হাত ধরে বিছানায় বসলেন। রুমে তখন তিন মগ দুধের চা বানিয়ে ট্রে সমেত প্রবেশ করলেন ইপশিতার মা হেনিন ইয়াসমিন। মাকে দেখে ইপশিতা নিজেই মায়ের হাত থেকে ট্রে নিয়ে মিনি সাইজ টেবিলের উপর রাখল। যুবুন মিয়া একপলক নিজ স্ত্রীর দিকে তাকান। হেনিন ইয়াসমিন মাথা নেড়ে সাড়া দেন। বাবা-মায়ের হাবভাব সন্দেহজনক লাগছে ইপশিতার কাছে। ঢোক গিলে কোনোভাবে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সুরাহা খুঁজতে লাগল মনে মনে। পরক্ষণে তার প্রাণপ্রিয় বান্ধবী শেহরীনার কথা স্মরণে এলো তার। তার বন্ধুমহল নিশ্চিত এখনো ভার্সিটির মধ্যে থাকবে। কেননা সময়ই হয়েছে সবে বারোটা বিশ বাজে। ভার্সিটির প্রাঙ্গণ চারটা অব্দি খোলা থাকে। সে নিজেই জরুরি জিনিস কিনতে তাদের মাঝখান থেকে উঠে চলে গিয়ে ছিল। সুযোগ বুঝে শেহরীনাকে মেসেজ পাঠায়।
‘দোস্ত হেল্প কর। এখনি আমাকে কল দিয়ে বল দোস্ত বড় সমস্যা হয়ে গেছে ভার্সিটির মধ্যে। তোকে লাগবে এখনি চলে আয়। কথাটুকু বলতে ফোন কর এখনি প্লিজ!’
মেসেজ পাঠিয়ে স্বাভাবিক মুখ ভঙ্গি করে বাবা মায়ের দিকে তাকালো। তারা এখনো নিজেদের মাঝে সাহস সঞ্চার করছেন। হয়ত এমন কোনো কথা বলতে চাইছেন যা ইপশিতার মুখের রঙ উড়িয়ে দেবে। তবে ইপশিতা একটুও চাই না তার সুন্দর হাসির রঙ উড়ে গিয়ে ছ্যাঁকা খেয়ে বাঁকা হোক । ভ্রু নেড়ে আপনমনে শেহরীনার কলের অপেক্ষায় অস্থির হচ্ছে সে।
‘এই হারামী বেডি এখনো কল দিচ্ছে না। এর তো ঘাড় ভেঙ্গে দেবো।’
কথার বিড়বিড় এর মাঝে ইপশিতার বাবা যুবুন মিয়া কেশে মেয়ের মনো দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন। ইপশিতা স্বাভাবিক নজরে তাকাল।
হেনিন ইয়াসমিন স্বামীর হেঁয়ালিপূর্ণে বিরক্ত হয়ে পড়েছেন। মেয়ে হয়ে জন্মেছে সেহেতু বিয়ে সাদি করে পরের ঘরে যেতেই হবে এখানে এতো আহ্লাদ দেখানোর কী আছে তিনি বুঝেন না। দাঁতে দাঁত চেপে স্বামীকে চোখ রাঙানি দিলেন তিনি। এতে অসহায় মুখ করে যুবুন মিয়া ‘মা তুমি’ এটুকু বলার মাঝে ইপশিতার ফোন বিস্ফোরণ ঘটানোর ন্যায় শব্দ করে বেজে উঠল। অন্তিম মুহূর্তে সংযোগ পেয়ে মনে মনে উৎফুল্ল হলো সে। তবুও খোশমেজাজ নিয়ন্ত্রণ করে ফোন ইচ্ছে করে লাউড স্পিকার দিয়ে উঠায়। শেহরীনাকে মেসেজ করা কথাটাই সে বলেছে। ইপশিতাও আতঙ্কিত ভাব করে তৎক্ষণাৎ বেরিয়ে পড়ে। হেনিন ইয়াসমিন মেয়ের যাওয়ার মাঝে থামাতে চাইলে যুবুন মিয়া স্ত্রীকে চেপে ধরে আঁটকে নিলেন। বিড়বিড় করে বলেন,

“থাক না এখন ইপশুর মা। মেয়ের জরুরি কাজ পড়ছে ভার্সিটির মধ্যে। গেলে যাক এখন। রাতেও তো সময় পাবো তাই না?”

“হ্যাঁ সময় পাবেন পাবেন বলে দামড়ি মেয়েকে মাথায় তুলেন আরো। দেখিয়েন মেয়ে আবার উচ্ছেন্নে না যায়। সময় থাকতে আমার কথার মূল্য দিন। নাহলে মেয়ে হাত ছাড়া হয়ে পড়বে হুহ।”

যুবুন মিয়া স্ত্রীর রাগে বলা কথা মনে নিলেন না বরং মুচকি হেসে চুপচাপ হজম করে নিলেন।

___
ইপশিতাকে পেয়ে চেপে বসে বন্ধুমহল। সে খোলাসা করে জানায়। ফারদিনের মুখে কিছুটা চিন্তিত ভাব দেখা গেল। যা শেহরীনাকে অবাকের মাঝে ফেলে দিল।লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)ফারদিন ইপশিতার বাহু আলতো করে চেপে ধরে তার মুখোমুখি টেনে এনে বলে,

“তুই কী ভালো পাত্র পেলে বিয়ে করে ফেলবি?”

ফারদিনের প্রশ্নে ইপশিতার হৃদয়ে কামড় পড়ল। মাটি কামড়ে থাকার মত প্রবণতা তার হৃদয়ের মাঝে উত্তপ্ত হলো। ফারদিনের মুখে এ প্রশ্ন শোনা যেনো ইপশিতার হাতে চাঁদ পাওয়ার সমান। মোহের ঘোরে ‘না’ বলে দেয়। ফারদিন এতেই ফিক করে হেসে শেহরীনার পাশ ঘেঁষে বসে বলে,

“দেখলি এরে আমি ভালো করে চিনি। এই কী বিয়ে করবে? তোর মনে হয়? অন্য কেউ করুক আর না করুক এই মেয়ের বিয়ের নাম থেকেই এলার্জি দেখলি না অকপটে না বলে দিলো।”

একটু আগেও যেই খুশি বিরাজ করছিল ইপশিতার মনে তা আড়পলকে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইল ফারদিনের দিকে। তার হাসিমাখা মুখ দেখে ইপশিতার গলায় কান্না আটকে আসছে। তবুও সে নিয়ন্ত্রণ করে নিলো। মেকি হেসে সেও শেহরীনার অপরপাশে বসে তার হাত ধরে বলে,

“তোর বিয়ের পরপর আমিও বিয়ে করব। তার আগে না। আর যদি কখনো আমার আগে হয়ে যায় তাহলে তোরা আছিস আমার বিয়েতে বুঝলি?”

ফারদিন মাছি তাড়ানোর মত হাত নেড়ে ইপশিতার নাক টিপে বলে,

“তোর কখনো বিয়ে হতো না দেখিস ডাইনি একটা। ডাইনির কখনো বিয়ে হয় না।”

“হারামীর লেজ কোথাকার তোর কখনো বিয়ে হবে না মিলিয়ে নিস আমার কথা। তোকে তো যে বিয়ে করবে সেই তোকে পাগল বানিয়ে পাগলা গরাধে ফেলবে হুহ।”

রাগ দেখিয়ে কথা বলে মুখ লটকে বসল ইপশিতা। তখনি কারো গলা ঝাড়ার শব্দে সকলের দৃষ্টি পেছনের দিকে গেল। ব্যক্তিকে আচমকা দেখে ইপশিতা লজ্জা পেল। সারোয়ার কে দেখে চোয়াল ফাঁকা হলো শেহরীনার। সারোয়ার তার নিকটে এসে মোলায়েম গলায় বলে উঠে।

“তবে আমার আত্মবিশ্বাস জিতলো। আপনি আমার অপেক্ষায় না থাকতে চেয়েও থেকেই গেলেন। এতে হয়ত আমার অনুরোধের জয় হলো থ্যাংকিউ মিস।”

ফারদিন মিটমিটে হেসে বলে,’তাহলে ব্রো ফাইনালি ডেটে যাচ্ছো তাও কী না উগান্ডার বান্দরনীর সাথে তুমিও পারো ব্রো দুনিয়ায় এতো মেয়ে থাকতে শেষমেশ এই বান্দরনীকে ডেট করছো? আই হোপ এবার ডেট কনফার্ম লিখে রাখো তুমি।’

শেহরীনার রাগ পেলো। তারই বন্ধু কী না তার নামে কুটনামি করছে। রেগেমেগে বন্ধুর পায়ের উপর পা দিয়ে পাড়া দিল। বেচারা ‘উহ আহ আহ ডাইনি একটা দিলি তো মেরে’ এই বলে ফারদিন বসে পা মাটিতে ঘষতে লাগল। ইপশিতা কপাল চাপড়ে ফারদিন কে টেনে অন্যখানে নিয়ে যায়। জাফরান ইপশিতা আসার সময় চলে গিয়ে ছিল। তার বাসায় তার মা অসুস্থ এজন্য জলদি চলে গিয়েছে। শেহরীনা একা হয়ে পড়ল সারোয়ার এর সামনে। হাত কচলে তার সঙ্গে যাবে কী না তা নিয়ে দোটানায় ভোগছে। সারোয়ার দেখে তপ্ত শ্বাস ফেলে বলে,

“আসেন আপনাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। ডেট যেদিন আপনার স্বাভাবিক মনে চাই সেদিন হবে।”

“আজকেই যায়!”

মুখ চেপে ধরল নিজের শেহরীনা। অতিরিক্ত উত্তেজনায় মুখ ফসকে সে কী বলে ফেলল? লজ্জা একরাশ তাকে ঘিরে ধরেছে। সারোয়ার জবাব দিল না চমৎকার হাসি দিলো। লোকটার গালে কোনো দাড়ি নেই আছে মোচ। কাঁটাময় মোচের মাঝে যেই হাসি দিল দন্তময় দাঁত দৃশ্যমান হলো। মুগ্ধ চোখে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকল শেহরীনা। সারোয়ার মিটমিটে হেসে তার মুখের উপর তুড়ি বা*জা*ল। শেহরীনার হুঁশ আসতেই লজ্জার মাথা খেয়ে সে নিজেই দৌড়ে গিয়ে গাড়িতে বসে পড়ল।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here