প্রেমসুধা #সাইয়্যারা_খান #পর্বঃ২৬

0
166

#প্রেমসুধা
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ২৬

[পর্বটি রোম্যান্টিক। চাইলে স্কিপ করতে পারেন]

রুম জুড়ে একদমই নীরবতায় আচ্ছন্ন এক পরিবেশ। মৃদু হলদেটে আলোয় জ্বলজ্বল করছে পৌষ’র মুখটা আর তাতেই অনির্মেশ তাকিয়ে আছে তৌসিফ। জানালার ফাঁক গলিয়ে সুর সুর করে বাতাস বইছে। বাইরে বৃষ্টি বৃষ্টি একটা ভাব অথচ বিকেল অব্দি ছিলো মিষ্টি রোদের ঝলক। পরিবেশ বাইরে ঠান্ডা হলেও ভেতরে খুবই উত্তপ্ত। তৌসিফ প্রায় মিনিট পাঁচ সময় লাগালো পৌষ’কে দেখতে। লজ্জায় ডুবে ম’রা বাকি পৌষ’র অথচ ও ঠাই বসে আছে। তার রূপের আগুনে হাত ছানি দিয়ে ডাকছে তৌসিফ’কে। ভাবা যায় তৌসিফ’কে? এক তাগড়া জোয়ান সুপুরুষ’কে সে এভাবে ডাকছে, সে কি জানে এই মুহুর্তে তৌসিফ তাকে কি করতে পারে? ঠিক কতটা সহ্য করার ক্ষমতা তার আছে? তৌসিফ ওর দিকে তাকিয়ে ভাবলো। নজর না সরিয়েই নিজের পরণে থাকা টিশার্ট এক টানে খুলে নিলো। অবহেলায় তা গিয়ে পরলো ফ্লোরে। তৌসিফ কিন্তু নজর হটালো না। এদিকে পৌষ মৌন। তৌসিফ চালাক পুরুষ। চতুরতা দিয়েই আজ এতদূর সে। হাত বাড়াতেই নিজের কম্পমান হাতটা ওর দিকে দিলো পৌষ। তৌসিফ না তাকিয়েই শক্ত করে ধরলো। তাকানোর সময় কই? তার নজর তো এই বিশ বছর বয়সী নারীর পানে যে তার পা’গল করা রুপে ঝলসাতে চাইছে তৌসিফ’কে?
আচমকাই পৌষ’কে নিজের দিকে টেনে নিলো ও। একদম নিজের কোলের উপরে তুলে দুই গাল চেপে ধরলো নিজের দুই হাতে। মুখ তুলে পৌষ আর তাকে অপলক দেখে তৌসিফ। বাঁকা হেসে মুখ এগিয়ে নিতেই পৌষ চোখ বুজে ফেলে। চুমু পরলো ঠিকই কিন্তু থুতনিতে। এই চুমুতেই যেন পৌষ পা’গল হয় বেশি। তৌসিফ সরে নি, সে সরবেও না। লাগাদার থুতনিতে একের পর এক ওষ্ঠের ছোঁয়া অতঃপর হঠাৎ ই ব্যথায় “আহ” শব্দ করে পৌষ। না চাইতেও চোখ গলিয়ে পানি বেরুলো তার। থুতনিতে কামড়ে ধরেছে তৌসিফ। তার সুক্ষ্ম দাঁতের এহেন কামড়ে পৌষ’র জান যায় যায় অবস্থা অথচ সে থামাচ্ছে না। তার মাথায় জেদ এখন একটাই। সে বিনিময়েই থাকবে এখানে। মাগনা না৷

তৌসিফ অবাক ই হচ্ছে। পৌষ থামাচ্ছে না তাকে তাই তো এবার জোড়ে কামড়ে দিলো৷ মুখে “উমম” শব্দ করে চাদর খামচে ধরে পৌষ৷ ওর মনে হচ্ছে থুতনি দিয়ে র’ক্ত বেরিয়ে আসবে। তৌসিফ নিজেই ছেড়ে দিলো। পৌষ’র পিঠে হাত দিয়ে একদম নিজের কাছে নিয়ে গালে গাল মিশিয়ে নেশালো গলায় বললো,

— হানিইইইই, ক্যান আই হ্যাব মোর?

— হুমম।

অনুমতি পত্র সাক্ষর পৌষ’র সাথে মুখেও স্বীকারোক্তি কোথায় যাবে তৌসিফ। মন তো চাইছে এখানেই নিজের সমাধি দিতে। এত বছরের যাতনা এখানেই পৌষ’র মাঝে বিলিয়ে দিতে মন চাইলো তার। না পেরে হুট করেই ওষ্ঠেই আঘাত হানলো ও। পৌষ তখন খেই হারাচ্ছে কারণ ওর পিঠ জুড়ে তখন তৌসিফে’র হাতের বিচরণ। তৌসিফে’র মতো পুরুষ’কে পৌষ’র হার মানাতে হলে আরো শিক্ষা দরকার কারণ তৌসিফ ই তাকে ছক্কা মে’রে বশে এনে ফেলেছে। ওষ্ঠ ছেড়ে গলায় কিছুক্ষণ উৎপীরণ চললো। পৌষ ও যখন দুই হাত বাড়িয়ে তৌসিফ’কে ধরলো ঠিক সেই চরম মুহুর্তে তাকে ছেড়ে দিলো তৌসিফ। পৌষ তখন বৈঠা হীন এক নৌকা। কোথায় যাবে তার জানা নেই। তৌসিফ’কে ও নিজেই আটকাতে চাইলো কিন্তু পারলো না৷ এত বড় মানুষটাকে ও বাগে আনতে পারলো না। নারী তো সব পারে। পুরুষ নারীর কাছে বাঁধা এই দিক দিয়ে তাহলে কেন পৌষ পারলো না? রাগে, দুঃখে কান্না আসে ওর। হঠাৎ ই পেটে খামচে ধরে তৌসিফ। পৌষ’র মনে হলো নখ দাবিয়ে দিয়েছে সেখানে তৌসিফ। ওর উপরে উঠে শুয়ে কাঁধে চুমু খেয়ে ফিসফিস করে তৌসিফ জিজ্ঞেস করলো,

— ইউ নিড মোর হানি?

কান্না আটকালো পৌষ। পেটে হাত দিতে চাইলেও পারলো না। তৌসিফ আরো এগিয়ে এসে ওর কানের কাছে মুখ নিলো। এক চুমু খেলো লতিতে অতঃপর সেখানে ও কামড়ে দিলো। নরম জায়গায় কামড় খেয়ে পৌষ না পেরে কেঁদে দিলো। ভীষণ জ্বলছে সেখানে। দম আটকে আসছে যেন। তৌসিফ একদম সরে গেলো। কান ধরে উঠে বসলো পৌষ। সত্যি ই কানে জোরে কামড়ে দিয়েছে তৌসিফ। পৌষ’র মনে হলো র’ক্ত বের হচ্ছে সেখান থেকে। তৌসিফ সরে বসা ওর থেকে। দম ফেলে তৌসিফ বলে উঠলো,

— বলেছিলে কাঁদবে না।

পৌষ নিজের মুখ চেপে ধরলো। হিচকি উঠে গিয়েছে ওর। কোনমতে বলে উঠলো,

— ভ..ভুলে ভুলে কেঁদেছি। আর হবে না। আসুন আপনি।

— উহু হানিই। এভাবে তো হচ্ছে না।

— ক..কি করব আমি?

— আমার সামনে এসো।

উঠে তৌসিফে’র সামনে গিয়ে দাঁড়ালো ও। কান চেপে দাঁড়িয়ে আছে পৌষ। তৌসিফ পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে বললো,

— কান ছেড়ে দাঁড়াও।

পৌষ তাই করলো। অল্প হেসে তৌসিফ বললো,

— যা দেখাচ্ছো এর থেকে বেশি দুই দিন আগে দেখেছি।

পৌষ নিজের দিকে তাকালো। ওর পরণে শুধু হাতা কাটা পেট পর্যন্ত ইনার। পৌষ প্রশ্ন করলো,

— খ..খুল..ব?

তৌসিফ চোখ তুলে তাকালো। আচমকাই বলে উঠলো,

— আজ কি যা বলব সবই করবে?

— আজ না সারাজীবন শুনব।

ভ্রুঁ কুঁচকালো তৌসিফ। পৌষ’র মনে কি চলছে তা বুঝছে না ও। হঠাৎ ই বললো,

— যা কষ্ট দিলাম তার থেকে ও অনেক দিব।

— আচ্ছা।

রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে আসে তৌসিফে’র। এই মেয়ে কাকে তেঁজ দেখায়? তৌসিফ কে? ও কি জানে তৌসিফ কি করবে? হঠাৎ পরিবর্তনের কারণ টাই বা কি? তৌসিফ তো বললো কেন তখন রাগ করলো তবুও এই আচরণ কেন দেখতে হচ্ছে ওকে?
আঙুলের ইশারায় ডাকতেই পৌষ কাছে এলো। ওর হাত ধরে প্রায় ছুঁড়ে মা’রলো তৌসিফ বিছানায়। মুখের উপর পরলো পৌষ। কান্না করতে গিয়ে ও করলো না। আচমকাই ওকে সুযোগ না দিয়ে তৌসিফ হামলে পরলো ওর উপর।
.
তৌসিফ পৌষ’র গালে আদরের সহিত চুমু দিয়ে বললো,

— এবার বলো কি হয়েছে?

— কিছু হয় নি।

— রাগ উঠাচ্ছো হানি।

— যা বলবেন সব করব। ঐ দিন ফিরিয়ে দিয়েছিলাম তাই আজ কাছে টানছি।

— ওহহো পৌষরাত। হঠাৎ কি হয়েছে? বলো আমাকে। তখনকার আচরণের কারণ তো বললাম ই।

— কিছু হয় নি সত্যি বলছি।

পৌষ’কে এবার নিজে বুকে জড়ালো তৌসিফ। এতক্ষণ ওর উপর ঝুঁকে ছিলো। তখন ওভাবে ঝাপিয়ে পরাতে মেয়েটা ভরকে গিয়েছিলো। তাই তো মাথায় হাত বুলিয়ে শান্ত করলো। তৌসিফ শুরুতেই বুঝেছিলো পৌষ’র মতো মেয়ে মুখ ফুটে তৌসিফ’কে ডাকার নয়।
তৌসিফের বুকেই রইলো পৌষ। তৌসিফ ছাড়বার পাত্র নয় তাই তো মাথায় চুমু দিয়ে আদুরে গলায় ডাকলো,

— আমার তোতাপাখি?

— হুউ।

— এমন করছো কেন হানি?

— কেমন করছি আমি? আজ থেকে যা বলবেন তাই করব। বুয়ারা যেমন কাজের বিনিময়ে টাকা পায় তেমনই আমাকে খাওয়ানো, পড়ানোর, এত বিলাসিতা দেয়ার বিনিময়ে আপনার সজ্জা শায়ী হব আমি। যা বলবেন তাই করব। মাগনা আর কত অন্যদের ঘাড়ে বসে খাব। আপনিই তো বললেন আমি বাধ্য আপনার কথা শুনতে। কেউ কাউকে মাগনা রাখে না। আমার বাবা’র বাড়ী থাকতাম আমি অথচ দেখুন চাচারা রাখলো না। আমাকে পেলেছে এই খোঁটা দিয়ে বিদায় করলো আমাকে। বাবা-মা থাকলে হতো না এটা। আসলে আমার মতো এতিমদের এত মুখ চালানো উচিত না। এটা চাচির বোন ও বলতো কিন্তু কি করব ছোট থেকেই মুখ চলে বেশি। এতিম তো তাই শাসনের অভাবে বিগরানোই রয়ে গেলাম।

বেশ ঠান্ডা গলায় কথাগুলো বলে গেলো পৌষ অথচ তীরের বর্শা’র গিয়ে বিধলো তৌসিফে’র বুকে। বুয়াদের সাথে পৌষ তুলনা দিলো নিজের? নিজেকে কোন পর্যায়ে দাঁড় করালো ও? বিনিময়ে নাকি নিজের দেহ দিবে ও তৌসিফ’কে। সেই হিসেবে পৌষ কোথায় দাঁড়ালো? ও কি আদৌ বুঝলো নিজেকে কোন কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়েছে ও?
তৌসিফ খেয়াল করলো ওর বুকে নরম ঠোঁটের স্পর্শ। চোখ বুজে নিলো তৌসিফ। তার এই বুকটাতে জীবনে দুটো নারীকেই অধিকার দিয়েছিলো ও। এখন যুক্ত হলো পৌষরাত। মা তাকে ছেড়ে চলে গেলো অন্যদিকে মাঝ রাস্তায় পিয়াসী। সে ও বহু বছর আগে এভাবে তৌসিফের বুকে চুমু দিতো। যখন ই নতুন কোন গোল্ডের কিছু দেখলো তখনই এই আদর পেতো তৌসিফ অথচ আজ নারী আর পরিস্থিতি ভিন্ন। পৌষ’র মাথায় হাত দিয়ে মোলায়েম গলায় বললো,

— আর কত নিজেকে নিচে নামাবে পৌষরাত? এবার থেমে যাও হানি।

পৌষ থেমে গেলো। ও এখনও বুকেই আছে। তৌসিফ ওকে বুকে রেখেই অলস গলায় বললো,

— সেদিন রাতে যখন কাঁদলে অসহায় ভাবে তখনই জানিয়েছিলাম মনের কথা তোমাকে। জানি না তোমার মনে আছে নাকি নেই। কিন্তু আজ কি বললে পৌষরাত? নিজেকে বিক্রি করতে চাইছো তুমি আমার কাছে? বিনিময়ে তোমাকে দিবে? বিনিময়ে তো দেহ পাওয়া হয় হানি মানুষ না। আমি তো মানুষ চেয়েছিলাম। নিজেকে এত ছোট কেন বানা…..

— আমি ছোটই। এতিম রা এমনই হয়। এদের উপর সবাই শুধু রোপ ঝাড়ে। ব্যাস। মায়া দেখানো ছেড়ে দিন আমাকে। চিন্তা নেই কিন্তু। লাত্থি, উস্টা খেয়েও ছেড়ে যাব না৷ এখানেই থাকব। এত সুখ ছেড়ে তো পা’গল ও যাবে না।

তৌসিফ এই দফায় ঠিক রইলো না৷ পৌষ’কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে অস্থির হয়ে গেলো ও,

— এই? এই পৌষরাত, তুমি এমন বলছো কেন? আর কিভাবে বুঝাব তোমাকে? মাফ চাইছি তো। সহজ হও আমার সাথে। এভাবে কথা বলো না প্লিজ। আমি সহ্য করতে পারছি না পৌষরাত। তুমি ছাড়া আর কেউ নেই হানি। তুমি যদি বলো ওয়াদা করব আমি আজীবন স্বামী’র অধিকার ফলাব না। আমি নারী থাকা থাকতে পারি পৌষরাত। অনেক বছর থেকেছি। বছরের পর বছর পার করেছি এই একা বিছানায়। চাইলেই কত শয্যা শায়ী হাজির কিন্তু কখনো কাউকে চাই নি। এই প্রথম তোমাকে চেয়েছিলাম। তোমাকে ছোট করতে চাই নি আমি। প্লিইইইজ পৌষরাত, ডোন্ট ডু দিস টু মি।

পৌষ নীরব রইতেই অস্থিরতা বাড়লো তৌসিফের,

— জেদ করো, জেদ দেখাও আমাকে হানি৷ আমি সব সয়ে নিব কিন্তু এই নীরবতা না। তুমি কেন বুঝো না তোমাকে ছাড়া চলে না আমার। প্লিজ না পৌষরাত, আমাকে এতটা অসহায় করে তুলো না। নিজেকে ছোট করে আমাকে কষ্ট দিও না। আমি কাছে টানব না আর….

হু হু করে ওর বুকে কেঁদে উঠলো পৌষরাত। কাঁদতে কাঁদতেই তৌসিফে’র পিঠে কিল ঘুষি মা’রতে মা’রতে বলতে লাগলো,

— বজ্জাত লোক, খারাপ পুরুষ। কেন তখন বকেছেন? গাল চেপে ধরেছেন? আমি কষ্ট পাই নি? কি ভেবেছেন, আমার কেউ নেই? ছাড়ুন আমাকে। এখন কেন বুকে ধরেন? দেই বুকে কামড়ে একদম? তখন বুঝবেন কেমন লাগে।

উদাম বুকে এই সন্ধ্যা রাতে বউ নিয়ে অসহায় অবস্থা কাটালো তৌসিফ। মেয়েটার আয়োডিন ডিফেসিয়েন্সি। এমনিতেই দূর্বল তার মধ্যে খায় যত উলোট পালোট। তৌসিফ তো রিপোর্ট দেখেই তখন পা’গল হয়ে ছুটে এলো। ঐ বাচ্চাগুলো’কে ও নিজে স্কুলে পড়ায়। কখনো এতিম বলে ছোট চোখ করে দেখে নি অথচ আজ বউয়ের চোখে কি ইজ্জত টাই না গেলো ওর। আফসোস হয়। বড়ই আফসোস হয় ওর।

নাক টেনে টেনে পৌষ ডাকলো,

— এএই শুনছেন?

ধড়াক করে লাফিয়ে উঠলো তৌসিফে’র বুক। এত রসের ডাক! না জানি কোন মাথায় বাঁশ ফাটানো আবদার এখন করে বসে। এমন এক মুহুর্ত যে তৌসিফ’কে রাস্তায় আন্ডায় ওয়ার পরে নাচতে বললে তৌসিফ তাই করবে এখন। কি মুশকিল! কি মুশকিল! এত তো মহা ঝামেলা। পৌষ ওর বুকের লোম টেনে দিতেই “আউচ” করে উঠলো তৌসিফ। পৌষ লোম টেনে ধরেই বললো,

— একটা দাবি ছিলো।

বলেই ছাড়লো। তৌসিফ বুকে হাত ডলে বললো,

— আপাতত বাঙালি এটা ছাড়া কিছু বুঝে না৷ বলো কি দাবি আমার তোতাপাখির?

— সোহা’কে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিন।

— হানিই, এটা…

— শুনবেন না?

— হুম৷ বিয়ের কথা এগিয়ে রাখব।

— আজ আমাকে অপমান করেছে ও।

— কাল কথা বলব।

আদরে আহ্লাদী পৌষ একটু আদরেই গলে পানি পানি। তাই তো অতি হয়ে বললো,

— কথা শুনবেন একটা?

— শুনব মানে? তুমি যদি এখন আমাকে হুক্কা হুয়া হুক্কা হুয়া ডাকতে বলো আমি তাই করব হানি।

পৌষ গদগদ কণ্ঠে ডাকলো,

— কাল বাসায় যাব।

— কিহ? না। একদমই না৷ আমি থাকাতে পারব না।

— ওওওও মামাতো ভাই, যাই না প্লিইইজ।

#চলবে…..

প্রাণ তেঁতে উঠে প্রিয়’র গাল চেপে ধরলো। হিসহিসিয়ে বললো,

— মনে হচ্ছে অনেক মজা পেয়েছিস? আমার ছোঁয়া দেখছি ভালোলাগে না তোর গতকাল থেকে। কাছে আসতেই বমি করে দিলি। কিরে নতুন লাগবে নাকি তোর? এই কথা বল! বল! আমাকে ভালো লাগে না? নতুন ছোঁয়া চাই?

ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিলো প্রিয়। প্রাণ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে নিতে বললো,

— তুমি যোগ্য ই না। কোন কিছুর যোগ্য না তুমি। নোংরা হয়ে যাচ্ছে তোমার চিন্তা ভাবনা। কিভাবে তোমাকে ভালোবাসলাম আমি? নিজের উপর ঘৃণা হচ্ছে আমার।

— প্রিয়ম!!

— কি? কি প্রিয়ম? কি করবে? কাপুরুষের মতো গায়ে হাতে তুলা ছাড়া কি পারো? পাগল তুমি। অসুস্থ। তোমার মতো অসুস্থর সাথে থেকে আমি ও পাগল হয়ে গিয়েছি। নাহলে কেন পরে আছি এখানে? চলে যাব আজই। পাগলের সংসার কিভাবে করে মানুষ?

প্রাণের চোখ মুখ মুহুর্তের মাঝে রং বদলালো। ফ্যাকাসে হলো মুখটা। দাঁত পিসে বললো,

— চুপচাপ ঘরে বস। মেরে ফেলব একদম।

— এটাই পারবি তুই।

বলেই প্রিয় সরতে চায় ওখান থেকে। তুই তুকারি সহ্য হয় না প্রিয়’র। যদিও তাদের বয়সের পার্থক্য মাত্র এক বছর তবুও কেন জানি প্রাণ প্রিয় থেকে তুই শব্দ টা মানতে চায় না।
হঠাৎ প্রিয়’র হাত ধরে টেনে গালে চড় বসিয়ে দিলো প্রাণ। আচমকা এমন হওয়াতে ছিটকে ফ্লোরে পরে প্রিয়। রেগে গিয়ে হঠাৎ প্রিয় বলে উঠলো,

— এজন্য ই তোঁষা মা তোমার সাথে নেই। মায়ের আদর না পাওয়া ছেলে অন্যের সন্তানের মূল্য কিভাবে জানবে? আজই পাপা’র কাছে চলে যাব। বাবা’কে ও আমাদেরই সাথে নিয়ে যাব। তুই একটা সাইকো। পাগল তুই। একা থাকবি এখন থেকে। জানোয়ার।

মা’কে তুলে কথা বলাতে আর প্রিয় চলে যাবে শুনে জ্ঞান বুদ্ধি লোপ পেলো প্রাণে’র। জোরে চিৎকার করে ড্রয়িং রুমে থাকা কাঠের চেয়ারটা তুলে শক্তি দিয়ে আঘাত করে প্রিয়’কে। ভয়ে চিৎকার করে উঠে প্রিয়। দুই হাতে পেট চেপে ধরলেও আঘাতটা লাগলো পিঠে। মুহুর্তে ই মুখ ছিটকে রক্ত বেরিয়ে এলো। ছিটকে গিয়ে পরলো প্রাণে’র পায়ে। ফ্লোরে তরপাতে লাগলো প্রিয়। হাত পা ছুঁড়ে দাপড়াতে দাপড়াতে নাক দিয়ে ও রক্ত বেরিয়ে এলো।

ই-বুক “প্রাণ প্রিয়” র অংশ বিশেষ। সম্পূর্ণ ই-বুকটি পড়ার লিংক কমেন্টে। এখন ক্রয়ে পাচ্ছেন বইটই অ্যাপে ২৫% ছাড়। ৬০ টাকার বইটি পড়া যাবে মাত্র ৪৫ টাকায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here