#প্রেমসুধা
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ৩১
মাঝারী শরীরে অতি সল্প ই মেদ। সুন্দর করে তাতে কালো শাড়ী পরা। ছোট ছোট সাদা স্টোন তাতে দ্যুতি ছাড়াচ্ছে। মাথায় সাধারণ একটা কালো হিজাব পরা। দেখতে সাধারণ হলেও অতি অসাধারণ সেটা। তৌসিফ যেন ঢোক গিলতেও ভুলে যাচ্ছে। তার পরণে ও কালো প্যান্ট সাদা শার্ট তার উপর কালো ব্লেজার। দাঁত দিয়ে দাঁত চেপে রাখলো তৌসিফ। মানুষ সে ততটা ও ভালো না। না ভালো তার নিজের অতীত। শুধু মাত্র এই মেয়েটাকে দেখার পর থেকে তার মধ্যে পরিবর্তন আসা শুরু করলো নাহয় তৌসিফ তালুকদারের রগে রগে শয়তান চলে অনেকেই আগেপিছে তা বলে বেড়ায়। পা বাড়িরে এগিয়ে ভ্যানিটির সামনে গেলো তৌসিফ। সেখানেই বাক্সে রাখা ডায়মন্ডের চারটা চুড়ি। তৌসিফ তা নিয়ে পৌষ’র সামনে এসে হাতের কবজি ধরে দুটো দুটো করে পরালো। দুই আঙুলে দুটো আংটি পরিয়ে তাকালো সরাসরি মুখের দিকে। সাজ অতি নগন্য। পৌষ যে ততটা সাজগোছ পছন্দ করে না তা এতদিনে তৌসিফ বুঝে গিয়েছে অথচ সামান্য সাজে পৌষ’র মুখের আদল ঘুরে গিয়েছে। তৌসিফে’র বাগানে যেন স্বয়ং জোছনা নামলো আলো ছড়াতে। তপ্ত হওয়া ওষ্ঠ দুটো আর টিকতে চাইলো না। পৌষ’র থুতনিতে তারা নিজেদের স্থান ও খবরদারি দেখালো। পৌষ আস্তে করেই জিজ্ঞেস করলো,
— বের হবেন না?
— হুম। সু পরিয়ে দাও।
বলেই কউচে বসলো। শাড়ি পরা অবস্থায় কাজটা মুশকিল বটে কিন্তু তৌসিফ সেদিকে নজর দিলো না। বলেই যেন খালাস।
পৌষ কালো সু নিয়ে সামনে এলো। শাড়ী পরা অবস্থায় ওভাবে বসাটা সম্ভব হলো না। পাশ থেকে টুল নিয়ে তাতে বসে তৌসিফে’র পা নিজের কোলে তুলে পরালো জুতা। পৌষ’র এতে ভালোই বেগ পেতে হলো কিন্তু এই বিষয়টা নিয়ে তর্ক করতে পারলো না। নিজের ঘাড়ে সে নিজের কো’প মে’রেছে। একদিন সোহা জুতা চুজ করে দেয়ার পরই তো পৌষ কান্ড করলো এখন ঠেলা সামলা পৌষরাত, ঢেলা সামলা।
তৌসিফ একটা স্টোনের পার্স পৌষ’র হাতে দিয়ে ওর হাত ধরে হাটা দিলো। গাড়িতে উঠেই তৌসিফ আজ ড্রাইভার’কে বললো,
— ইউ ক্যান লিভ।
ড্রাইভার সরে দাঁড়ালো। মাঝে মধ্যে ই ওর স্যার একা ড্রাইভ করে। গাড়ির ডোর খুলে পৌষ’কে জায়গা দিলো তৌসিফ। শাড়ী সামলে উঠতেই ওর আঁচল ধরে কোলে দিলো তৌসিফ। নিজে বসলো ড্রাইভিং সিটে।
গাড়ি চলতে শুরু করেছে। ছোট্ট করে তৌসিফ শুধালো,
— এত আনইজির কিছু নেই হানি। আ’ম উইথ ইউ না?
পৌষ হু হা কিছুই করলো না। তৌসিফ ডান হাত স্ট্রেরিং এ রেখে বা হাতে পৌষ’র হাত ধরে টেনে নিজের হাতের মুঠোয় নিলো। ওভাবে রেখেই বললো,
— কি হয়েছে?
— বাসায় আসার পর আপনার সাথে কথা আছে আমার। একটু জরুরি।
পৌষ’র ভাষা প্রকাশ করছে মামলা সিরিয়াস। তৌসিফ বুঝলো এখন বউ’কে ঘাটতে গেলেই ঝামেলা হবে তাই মাথা নেড়ে ড্রাইভিং এ মনোযোগ দিলো। ঘন্টা খানিকের মাঝেই নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছল ওরা। একজন কালো সুট বুট পরা বিশাল দেহের লোক এসে গাড়ির ডোর খুলে দিলো। তৌসিফ বের হয়ে অপর পাশের ডোর খুলে পৌষ’র হাত ধরে বের করলো। শাড়ীর আঁচল গুছিয়ে দিয়ে নিজের বাহুর ভাজে ওর হাতটা নিয়ে হাটা দিলো সামনে। তৌসিফের অপেক্ষায় ছিলো সকলে। ও আসা মাত্র ই ওর বন্ধু রওনাক এগিয়ে এলো। তৌসিফের সাথে হাগ করে তাকালো পৌষ’র দিকে। পৌষ অবাক চোখে এদিক ওদিক দেখছে। এই রকম পরিবেশে সে কখনোই আসে নি। চারদিকে চোখ ধাধানো, মনমাতানো চাকচিক্য। মানুষের সমারোহ অনেক কিন্তু জায়গাটা এতই বিশাল যে বুঝা যাচ্ছে না। রওনাক পৌষ’র দিকে হাত বাড়িয়ে হাসি মুখে বললো,
— আমাদের ভাবী?
বাড়ানো হাতটা অবলীলায় তৌসিফ ধরে নিজে হ্যান্ডশেক করলো। হাসি মুখেই জানালো,
— হ্যাঁ ও পৌষরাত।
রওনাক বুঝলো তৌসিফ তার বউ নিয়ে সিরিয়াস। হাত পর্যন্ত ছুঁতে দিবে না। অল্প হেসে রওনাক বললো,
— বস তারাতাড়ি আয়। তোর জন্য ই অপেক্ষা করছিলাম।
তৌসিফ মাথা নাড়লো। বাদ বাকিদের সাথে শুধু চোখের দেখা হলো। সময় অনেকটা অতিক্রম হওয়াতে আগে ওরা উদ্ভাবনের কাজটাই সারলো। প্রেস মিডিয়া থাকায় পৌষ’কে আগেই সাইডে বসিয়ে এসেছে তৌসিফ। পৌষ যে অসস্তি বোধ করছিলো তা তৌসিফ বুঝতে পেরেছিলো। পৌষ সাইড থেকে সবটা স্পষ্ট দেখতে পেলো। লাল রিবন কেটে তৌসিফ তালুকদার প্রবেশ করেছে। এত এত মানুষের ভীরে বন্ধুর কাজের আর শোরুমের ম্যাটারিয়ালের প্রশংসা করছে। পৌষ’র চোখের পলক যেন পরে না। এই লোক এতটা গুছিয়ে কথা বলে। হাত নাড়ানোর ভঙ্গি ও অদ্ভুত সুন্দর। পরিপাটি এক মানুষ অথচ এর নামের আগে পরে কত কালির দাগ পরেছে। পৌষ’র আজ কিছু উত্তর চাই।
হঠাৎ একটা যুবতী মেয়ে এসে দাঁড়ালো পৌষ’র সামনে। পৌষ তাকাতেই দেখা মিললো সুন্দরী রমণীর। হাই সোসাইটির হাই পরা মেয়ে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে বয়স তার আঠারো কি উনিশ। পৌষ’কে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে প্রশ্ন করলো,
— তুমি পৌষরাত?
পৌষ মাথা নাড়তেই মেয়েটা ঠোঁট গোল করে বললো,
— ওও।
বলেই আবারও খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো। পৌষ বিরক্ত হলো বটে। জিজ্ঞেস করলো,
— কিছু বলবে?
আরশি চুলগুলো পেছনে সরিয়ে বললো,
— তুমি জানো তৌসিফ আমাকে পছন্দ করতো? তার সাথে আমার বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো?
— বিয়ে হলো না কেন?
আরশি অবাক হলো বটে। মেয়েটা রিএক্ট করলো না কেন? আরশি পুণরায় বললো,
— উই ওয়ার ইন ডিপ লাভ।
— বাপের বয়সী তোমার সে। লজ্জা লাগে না?
কাটখোট্টা এই জবাবে আরশির চোখ কোটর থেকে বের হওয়ার উপক্রম। এত বড় কথা শুনেও এই মেয়ে এত শান্ত! আরশি পাশে বসলো ওর। অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করলো,
— কিছু বলবে না তুমি?
— কি শুনতে চাও?
— এই যে আমি বললাম।
— বাইরের মানুষের কথা কানে তুলে নিজের সংসারে কেন অশান্তি করব? আমি কি পা*গল?
আরশি পুণরায় বললো,
— তৌসিফ আমাকে……
ওকে থামিয়ে পৌষ বললো,
— তোমাকে কি? বিয়ে করেছে? করলে ও আমার সমস্যা নেই। তার নামে অনেক কিছুই বিয়ের আগে শুনেছি। এখন নাহয় বিয়ের পরই শুনলাম।
বলেই দাঁড়িয়ে গেলো পৌষ। চোখের পানি লুকাতে অন্য সাইডে চলে গেলো ও। ক্লাচ থেকে টিস্যু বের করে চোখের কোণা মুছে নিলো অতি সাবধানে। পুরো তৌসিফ তালুকদার এক জলজ্যান্ত রহস্য যাকে খোলাসা করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত তাতে ডুবে যাচ্ছে পৌষ।
আরশি অবাক হলো বটে। মেয়েটা কিভাবে মুখের উপর বলে দিলো তৌসিফ তালুকদার তার বাবার বয়সী। সে কি জানে, রওনাকের ভাতিজি ও? ফাঁকা ঢোক গিললো আরশি। যদি চাচ্চুকে বলে দেয় এই মেয়ে? কিন্তু এটাও সত্যি আরশি ভালোবেসেছিলো তৌসিফ তালুকদারকে। তার ব্যাক্তিত্বের কাছে তার নামে রটা সকল কথা আর বয়স কোন ম্যাটার করে না।
তৌসিফ কথা শেষ করেই পৌষ’কে খুঁজতে এলো। বন্ধুরা সব জ্বালিয়ে মা’রছে তাকে। বউ দেখবে তারা। সবগুলো মুখিয়ে আছে একদম। পৌষ’কে নিদিষ্ট জায়গায় না পেয়ে তৌসিফে’র ভ্রুঁ কুঁচকালো। এদিক ওদিক মাথা ঘুরিয়ে তাকাতেই দেখা মিললো তার নিদিষ্ট রমণীর। ঐ তো কোণায় দাঁড়িয়ে আছে। ডাগর ডাগর চোখে আশপাশ দেখছে। তৌসিফ ওইদিকে পা বাড়াতেই একটা ওয়েটার এলো পৌষ’র সামনে। ট্রেতে কিছু ড্রিংক রাখা সাথে ফ্রুট সালাদ। অফার করতেই পৌষ হাত বাড়ালো নিতে। গলা শুকিয়ে গিয়েছে তার। যেই না নিবে ওমনিই ওর বাড়ানো হাতটা ধরে ফেললো তৌসিফ। পৌষ অসন্তোষ প্রকাশ করে বললো,
— কি হয়েছে?
— কি খাবে আমাকে বলো।
— নিচ্ছিলাম ই তো।
ওয়েটারের দিকে তাকিয়ে তৌসিফ বললো,
— ফ্রুট জুস নিয়ে আসো। গো।
মাথা নেড়ে চলে গেল ওয়েটার। পৌষ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
— ছিলোই তো।
— অ্যালকোহল ছিলো ওগুলো।
বড় বড় চোখ দিয়ে তাকালো পৌষ। চোখ মুখ বিকৃত করে বললো,
— কিহ?
— জ্বিহ মাই হানি। কাম তোমার জন্য অনেকে অপেক্ষা করছে।
— এখানে ভালো লাগছে না।
— লাগবে। চলো।
গোমড়া মুখ করেই গেলো পৌষ। তৌসিফে’র বন্ধুরা হা করে তাকিয়ে রইলো। এত ছোট মেয়ে বউ করেই তাহলে তাদের হট্টা কাট্টা বন্ধু এমন ঘর কোণা হলো বুঝি? আড্ডা দিতেও সময় থাকে না তার। রওনাক ফিসফিস করে তৌসিফে’র কানে বললো,
— এই আটত্রিশ বছর বয়সে এসে বিশ বছর বয়সী বউ নিয়েই তাহলে ঘর মুখী হলি তুই?
তৌসিফ চোখ রাঙালো। তাতেই রওনাক চুপ করে গেলো তবে বাকিরা থেমে নেই। তারা পৌষ’কে আপ টু টো দেখেই নানান প্রশ্ন করে যাচ্ছে। তৌসিফ ওদের থামিয়ে বললো,
— ঐ দিকে চল। বসে কথা হোক।
একদম সাইডে বিশাল বড় বসার জন্য খালি জায়গা। ওরা গিয়ে বসলো সেখানে। রওনাকের বউ পৌষ’কে দেখেই মিষ্টি মুখে বললো,
— এতো অনেক ছোট তৌসিফ। তা পৌষরাত সামলাতে পারছো তো আমাদের তৌসিফ’কে?
পৌষ উত্তর করার আগেই হামজা নামের একজন বলে উঠলো,
— পারে নি আবার? আমাদের তৌসিফ ঘর ছাড়া আজকাল কিছু বুঝে?
পৌষ’র চিন্তা হলো। তাদের কথা অনুযায়ী তৌসিফ আগে বাসায় বেশি থাকতো না তাহলে সোহা যা যা বললো আজ তা কি মিথ্যা? সোহা’র কথা অনুযায়ী তো কথা মিলছে না। তবুও তারাহুরো করে না পৌষ। পুণরায় একজন প্রশ্ন করলো,
— ব্যাটা বউ তো তোর ছোট ছোট। মজা নিতেও পারছি না ভাবী বলে।
পৌষ’র ছুটন্ত মুখটা আর আটকে রইলো না। ফুরুৎ করে কথা বেরিয়ে এলো,
— এতক্ষণ ধরে তো মজা নিচ্ছেন আপনারা। আরো বাকি আছে?
সবগুলো হা করে তাকিয়ে রইলো। পরক্ষণেই হু হা শব্দে হেসে উঠলো। তৌসিফ মুচকি হাসলো। তার তোতাপাখিটা আজ চুপচাপ ছিলো যা দেখে তার মনের কোথাও ও কষ্ট হচ্ছিলো। এখন কথা বলাতে শান্তি শান্তি লাগছে। ওদের কথার মাঝেই জুস এলো। তৌসিফ পৌষ’র হাতে দিয়ে বললো,
— ক্ষুধা লেগেছে?
পৌষ উত্তর করার আগেই বাকিরা মজা নেয়া শুরু করলো। জুসে চুমুক দিলো পৌষ। তার বিরক্ত লাগছে। এই এত বড় বড় দামড়া দামড়া ব্যাটাগুলো এমন ভাবে কথা বলছে যেন এরা ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে। বউগুলো ও তো কম না। এই যে পৌষ জুস খাচ্ছে তার মধ্যে ই একজন তার কানে কানে ফালতু এক কথা জিজ্ঞেস করলো। পৌষ তার কথায় শুধু মুচকি হাসলো। তৌসিফে’র পেটে গুতা দিতেই তৌসিফ ওকে পাশ থেকে জড়িয়ে ধরলো। আরেকজনের বউ সরাসরি ই জিজ্ঞেস করলো,
— তো পৌষ বিবাহিত জীবন কেমন লাগছে?
পৌষ মাড়ি শক্ত করে হাসি মুখেই বললো,
— জ্বি, আলহামদুলিল্লাহ। খুবই ভালো যাচ্ছে। সকাল থেকে রাত জামাই নিয়ে খুবই সুখে আছি। আপনার কেমন যাচ্ছে?
মহিলাটি হকচকালো। এই বয়সে তাদের সংসারে মন নেই। দু’জন ই কাজে ব্যাস্ত। বাচ্চাগুলো ও বড় হয়েছে। এই তো। উত্তরে তিনি হাসলেন। বললেন,
— তোমার ই তো সময় এখন৷ জামাই আঁচলে বেঁধে রাখো। এত সুন্দর জামাই ছুটে গেলে সমস্যা।
মুচকি হাসলো পৌষ। বললো,
— যে আমার সে দিনশেষে আমার কাছেই ফেরত আসবে। তাকে বেঁধে রাখার প্রয়োজন নেই।
পৌষ’র এহেন উত্তরে তৌসিফ অবাক হলো বেশ। পৌষ কি তবে তৌসিফ’কে নিজের ভাবে?
বাকিরাও ওর উত্তরে মুগ্ধ হলো। তারা মন থেকে চায় তৌসিফ ভালো থাকুক। পিয়াসী তার জীবনের অনেকটা সময় কেড়ে নিয়েছে।
.
ডিনার করতে বসতেই দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র। পৌষ’র প্লেট থেকে চামচ দিয়ে কিছু কিছু নিয়ে তৌফিক খাচ্ছে আবার নিজের প্লেট থেকেও পৌষ’কে খাওয়াচ্ছে। এদের কারো মনে এঁটো খাবারের প্রতি তিক্ততা নেই। হঠাৎ ই তাদের মনে পরলো পিয়াসীর কথা। তখনও তারা ডিনার করছিলো। তৌসিফ শুধু নিজের ছিঁড়া একটা চিকেন পিয়াসী’র প্লেটে তুলে দিয়েছিলো। কারণ ছিলো পিয়াসীর চিকেনটা বেশি ই পছন্দ। অবাকের বিষয় ছিলো পিয়াসী তা ছুঁয়েও দেখে নি বরং সেই খাবার ও খেলো না। তৌসিফ তখন বন্ধুদের সামনে বউ’কে উঁচু রাখতে সুন্দর করে মিথ্যা বলেছিলো,
— আরে ওর ওসিডি আছে।
অথচ সবাই তৌসিফে’র চোখের ভাষা বুঝেছিলো। এত এত আদর, যত্নের পর এহেন আচরণ কোন পুরুষ ই সহ্য করতো না অথচ প্রেমিক পুরুষ করেছিলো।
বাস্তব চিত্রটা আরো সুন্দর হলো। ফ্রুটস সালাদ খাবে না দেখে তৌসিফ চোখ গরম দেখিয়ে পৌষ’র মুখে দিচ্ছে। লিপস্টিক ব্র্যান্ডের হওয়াতে ঠোঁটেই কিন্তু আছে তবুও টিস্যু দিয়ে মুছে মুছে দিয়ে তৌসিফ বলছে,
— পকেটে করে নিয়ে এসেছি। খাও এরপর লাগিয়ে দিব।
দুই চামচ খেয়ে আর খেলো না পৌষ। তৌসিফ খাচ্ছে বাকিটা। তৌসিফে’র খাওয়া শেষ শুধু একটা চিকেন বল আধ খাওয়া রাখা। অবলীলায় তা চামচে তুলে মুখে দিলো পৌষ। তৌসিফ জিজ্ঞেস করলো,
— ভালো লেগেছে?
পৌষ মাথা নাড়তেই রওনকে’র দিকে তাকিয়ে তৌসিফ বললো,
— প্যাক করিয়ে দিস তো। রাতে ক্ষুধা লাগে ওর তখন খাবে।
রওনাক হাসি মুখে সায় জানালো। এত এত দম্পতির মাঝে দেখা যাচ্ছে শুধু কৃত্রিম সাজসজ্জা আর আভিজাত্য অথচ এই অসমবয়সী জুটিটার মধ্যে আছে শুধু সামঞ্জস্য, অকৃত্রিমতা আর প্রেম যা সকলকে মুগ্ধ করবে। দিগন্ত থেকেও দিগন্ত টেনে নিয়ে যাবে রুপকথার এক জগতে।
#চলবে…..
[আজ রাত ১২ টায় “নৈঃশব্দ্যে তার আগমন” এর পর্ব পর্ব আসবে ইনশা আল্লাহ]